প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, আমার যখন দেশের স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষে প্রবেশ করেছি, তখন আমাদের ঐতিহাসিক বীর-বীরাঙ্গনা, দেশের প্রতি যাঁদের অনেক অবদান রয়েছে, তাঁদের সেই অবদানকে স্মরণ করা আমাদের সকলের কাছেই গুরুত্বপূর্ণ। যাঁরা ভারতের জন্য এবং ভারতীয়ত্বের জন্য তাঁদের সবকিছু উৎসর্গ করেছিলেন, সেই সব মানুষগুলিকে ইতিহাসের পাতায় স্থান দেওয়া হয় নি বলে তিনি দুঃখপ্রকাশ করেছেন। ভারতের ইতিহাস রচয়িতারা ইতিহাস লেখার সময় যে অন্যায় ও অবিচার সেই সব মানুষগুলির প্রতি করেছিল, এখন তা সংশোধনের সময় এসেছে। এই সন্ধিক্ষণে তাঁদের অবদানগুলি স্মরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী আজ উত্তর প্রদেশের বাহেরাইচে চিত্তৌড়া হ্রদের উন্নয়ন প্রকল্প ও মহারাজা সুহেলদেব মেমোরিয়ালের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য রাখছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেছেন, ঔপনিবেশিক শক্তি অথবা ঔপনিবেশিক মানসিকতা সম্পন্ন ব্যক্তিরা যে ইতিহাস লিখেছেন, সেটিই শুধু ভারতের ইতিহাস নয়। সাধারণ মানুষ তাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় যে ইতিহাস রচনা করেছেন এবং যে ইতিহাস প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চর্চিত হয়েছে, সেটিই ভারতের ইতিহাস।
আজাদ হিন্দ সরকারের প্রথম প্রধানমন্ত্রী নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু তার প্রাপ্য সম্মান পেয়েছেন কিনা প্রধানমন্ত্রী সেই প্রশ্ন তোলেন । তিনি বলেন যে, নেতাজীর পরিচিতিকে লালকেল্লা থেকে আন্দামান নিকোবর পর্যন্ত প্রসারিত করে তাঁরা নেতাজীকে স্বীকৃতি দিয়েছেন।
একই ভাবে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ৫০০র বেশি রাজন্য শাসিত রাজ্যকে যিনি ভারত ভুক্ত করেছিলেন, সেই সর্দার প্যাটেলের প্রতিও কি ধরণের আচরণ করা হয়েছে। আজ সর্দার প্যাটেলের মূর্তি গড়া হয়েছে , এই স্ট্যাচু অফ ইউনিটি হল বিশ্বের উচ্চতম মূর্তি ।
সংবিধানের রচয়িতা এবং সমাজের বঞ্চিত, শোষিত, পিছিয়ে পড়া মানুষের কন্ঠ বাবা সাহেব আম্বেদকরকে সবসময়ই রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে বিচার করা হয়েছে। আজ ড. আম্বেদকরের স্মৃতি বিজড়িত ভারত এবং ইংল্যান্ডের সমস্ত জায়গা পঞ্চতীর্থ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “বিভিন্ন কারণে অনেক চিরস্মরণীয় ব্যক্তিত্বকে স্বীকৃতি দেওয়া হয় নি। চৌরি চৌরার সাহসী মানুষদের সঙ্গে যা ঘটেছিল, তা কি আমরা ভুলে যেতে পারি ?”
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, একইভাবে ভারতীয়ত্বর সংরক্ষণের জন্য মহারাজা সুহেল দেবের অবদানও অগ্রাহ্য করা হয়েছে। মহারাজা সুহেল দেব, আওধ, তরাই ও পূর্বাঞ্চলের মানুষের হৃদয়ে বেঁচে রয়েছেন। যদিও তাঁর পাঠ্যপুস্তকে স্থান হয় নি। প্রধানমন্ত্রী, মহারাজ সুহেল দেবের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ এবং সংবেদনশীল শাসক হিসেবে ভূমিকার কথা স্মরণ করেছেন।