আপনার আসন্ন সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর সম্পর্কে আমাদের কিছু বলুন
ষষ্ঠ ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্ট সামিট (দুবাইতে অনুষ্ঠিতব্য, ১১–১৩ ফেব্রুয়ারি)–এ ভাষণ দেওয়ার আমন্ত্রণ পেয়েছি। সেই সূত্রেই এই সফর। এবার ভারতকে সম্মানিত অতিথি দেশ হিসেবে সেখানে যোগদান করার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। দুই দেশের গভীর বন্ধুত্বের সুবাদে এই মর্যাদা পেয়েছে ভারত।
সংযুক্ত আরব আমিরাত-এর উপরাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং দুবাইয়ের শাসক মহামান্য শেখ মহম্মদ বিন রশিদ আল-মাকতুম এবং আবু ধাবির রাজপুত্র এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত সশস্ত্র বাহিনীর ডেপুটি সুপ্রিম কমান্ডার শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান-এর সঙ্গে বৈঠক করবো।
আলোচনার প্রধান বিষয়বস্তু হবে ভারতে বিদ্যুৎশক্তি উৎপাদন, নিরাপত্তা এবং পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বিনিয়োগ। এর আগে আমার সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর এবং গত বছর ভারতের সাধারণতন্ত্র দিবসে প্রধান অতিথি হিসেবে মাননীয় শেখ মহম্মদ বিন জায়েদের সফরের সময় একগুচ্ছ উদ্যোগ নেওয়া হয়ছিল। এখন সেই আলোচনা পরিণতি পাচ্ছে।
আরও আনন্দের বিষয় হলো দুই দেশের সরকারের মধ্যে এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে আলাপচারিতা দুই দেশের সম্পর্ক, আর্থিক ক্ষেত্র আরও মজবুত করে তোলার রাস্তা খুলে দেবে।
ইউএই- তে অবস্থিত ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা দুই দেশের মধ্যে সেতুর মতো কাজ করছে এবং আমি আশা করি আমার এই সফর দুই দেশের সম্পর্ক আরও দৃঢ় করবে
ইউএই প্রায় দুই মিলিয়ন ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের বাসস্থান। এই প্রবাসী ভারতীয়রাই দুই দেশের মধ্যে সেতুর মতো সংযোগ স্থাপন করেছে, আমি আশা করি আমার সফরের পরে এই সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে।
আপনি কি সচ্ছলভাবে ছুটির দিন কাটাতে পারেন?
আমি মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কখনও ছুটি পাইনি। যদিও আমার কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকার দরুন আমি সারা ভারত ঘুরতে পারি এবং দেশের মানুষের সঙ্গে কথা বলা, তাঁদের সুখ-দুঃখ এবং আশা সম্পর্কে জানতে পারি। এর ফলে আমি অনেকটাই সতেজ এবং পুনরুজ্জীবিত মনে করি। ২০০১ সালে গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর আমি দেশের প্রত্যেকটি জেলায় ঘুরে বেরিয়েছি। সেটা একটা দারুন এক অভিজ্ঞতা ছিল, এর ফলেই আমি দেশের বিচিত্র সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হয়েছি।
আপনার কি কোনও বিশেষ রাঁধুনি আছে যিনি সারা দেশে আপনার সঙ্গে ঘুরেছে?
না একে বারেই না। কোনও রাঁধুনি আমার ভ্রমন সঙ্গী হয়না। আমি আনন্দের সঙ্গে সেই সব খাবার উপভোগ করি যা আমাকে খেতে দেয়।
আপনি দিনে কতক্ষণ ঘুমতে পারেন?
কাজের চাপের ওপর নির্ভর করে আমার ঘুমের মাত্রা বেশিরভাগ দিন আমি ৪-৬ ঘণ্টা ঘুমাই। কিন্তু প্রতিদিন রাতেই আমার দারুন ঘুম হয়। বিছানায় পরলেই আমি ঘুমিয়ে পরি। আমি কোনও দুশ্চিন্তা নিয়ে ঘুমাই না, প্রত্যেকদিন সুন্দর সকলকে স্বাগত জানিয়ে দিন শুরু করি।
শরীর ও মনের জন্য ঘুম খুব প্রয়োজনীয়। সম্প্রতি আমি তরুণদের জন্য একটি বই লিখছি, এক্সাম ওয়ারিয়র্স, তাতে আমি ঘুমের পরামর্শ দিয়েছি।
সকালে উঠে এবং ঘুমাতে যাওয়ার আগে আপনি শেষ কাজটি কি করেন?
আমি যোগাসনের মাধ্যমে দিন শুরু করি এবং মনে করি শরীর ও মনের জন্য তা অত্যন্ত জরুরি। এর ফলে আমি খুবই স্বাচ্ছন্দে দিন শুরু করি এবং সতেজ অনুভব করি। এর পাশাপাশি আমি সকালে খবরের কাগজ পড়ি, ইমেইল দেখি সেই সঙ্গে কিছু ফোন কলও করি। আমি কিছু মন্তব্য ও পাল্টা মন্তব্যও পাই যা দেশের নাগরিকরা ‘নরেন্দ্র মোদী অ্যাপ’-এর মাধ্যমে করে থাকেন। আমি মনে করি এই ভাবে আমি দেশের নাগরিকদের সঙ্গে অনেক বেশি যুক্ত থাকতে পারি।
আমি প্রযুক্তির বিষয়ে খুবই আশাবাদী কারণ এর ফলে মানুষের ক্ষমতায়ন হয়"
আমি শুতে যাওয়ার আগে আমাকে পাঠানো বার্তাগুলি ভালো করে পড়ি। সেই সঙ্গে পরের দিনের কাজ ও বৈঠক সম্পর্কে ছক কোষে নেই।
আপনার প্রিয় খাবার কি? আপনি সকালে, দুপুরে ও রাতে কি খাবার খেতে পচ্ছন্দ করেন?
আমি খুব খাদ্য প্রিয় লোক নই। আমি সাধারণ শাক-সবজি পছন্দ করি।
ভারত খাদ্য রসিকদের জন্য এক দারুন জায়গা। এমনকি আমাদের দেশের বিভিন্ন জায়গায় নানা ধরণের খাবার পাওয়া যায়। আমি সৌভাগ্যবান যে আমি সারা দেশের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে বেড়িয়েছি সেখানে আমি নানা ধরনের খাবার খেতে পেরেছি।
আপনার সপ্তাহের প্রিয় দিনটি কি এবং কেন?
আমার প্রিয় দিন আজ! আমি সহজ সরল জীবনে বিশ্বাস করি- সব দিনকেই কাজ লাগিয়ে, সম্পূর্ণভাবে বাঁচার চেষ্টা করি। আজকেই একমাত্র দিন যেদিন আমাদের কঠিন কাজ করতে হবে সেই সঙ্গে সব কাজ সম্পন্ন করতে হবে।
কোন মানুষটি আপনাকে সবথেকে বেশি অনুপ্রাণিত করে?
আমাকে অনেক মানুষই অনুপ্রাণিত করে এবং আমি অনেকের সম্পর্কেই আপনাকে আজ বলবো।
আমার শিশুকাল থেকে আমি স্বামী বিবেকানন্দ দ্বারা অনুপ্রানিত। সার্বজনীন সম্প্রীতি এবং শান্তির প্রতি তাঁর অগাধ বিশ্বাস ছিল।
মহাত্মা গান্ধী আরেকজন মানুষ যাঁকে আমি খুব মেনে চলি। তিনি গরিবদের প্রতি আনুগত্যই হোক বা শান্তির প্রতি বিশ্বাস ও অহিংসার প্রতি শ্রদ্ধা এবং দেশের প্রত্যকটি মানুষকে স্বাধীনতার জন্য লড়াই করা শেখিয়েছেন।
আমি সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের কোথাও বলবো যিনি গোটা দেশকে একত্রিত করার ক্ষমতা রাখতেন। শহীদ ভগত সিং তাঁর জীবন দিয়ে আমার মনে গভীর ছাপ রেখে গেছেন।
আমি সহজ মতবাদে বিশ্বাস করি-আজকের দিনটি মধুর হোক, আজকের দিনে সম্পূর্ণ বেঁচে উঠে। আজকের দিনটিতে শুধুমাত্র আমাদের হাঁতে আছে যেদিনে কাজ বাস্তবায়িত করতে হবে।
ডঃ বাবা সাহেব আম্বেদকর বহু ভারতীয়দের আদর্শ, যেমন তিনি উনি আমারও আদর্শ। তিনি আমাদের স্থিরতা সহ্য করার হাঁতে খড়ি দিয়েছেন।
এখানেই শেষ নয়, বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিনের বহুমুখি ব্যক্তিত্ব আমাকে আকর্ষণ করে, বিশেষ করে তিনি যেভাবে দেশের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন।
আপনি আপনার ব্যক্তিগত যোগাযোগে কতটা প্রযুক্তি ব্যবহার করেন?
প্রযুক্তি একটি অসাধারণ মাধ্যম যার সাহায্যে নব্য ভারতীয় তরুণদের আশার আভাশ পাওয়া যায়।
ব্যক্তিগতভাবে আমি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে থাকি (ফেসবুক, টুইটার, লিঙ্কডইন, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব) এবং আমার কাছে এগুলো অন্য মাত্রা রাখে।
আমি সবসময় নরেন্দ্র মোদী মোবাইল অ্যাপে সংযুক্ত থাকি এবং ফোনে বার্তা পড়ি। এখানে এতো ইতিবাচক উত্তর সেই সঙ্গে বিভিন্ন রকমের ধারণা ও পরামর্শ পেয়ে থাকি বিভিন্ন বিষয়ের ওপর। আমার দারুন লাগে।
সোর্স: গল্ফ নিউজ এক্সপ্রেস