Our freedom was not only about our country. It was a defining moment in ending colonialism in other parts of the world too: PM
The menace of corruption has adversely impacted our country's development journey: PM Modi
Poverty, lack of education and malnutrition are big challenges that our nation faces today, says PM Modi
In 1942, the clarion call was 'Karenge Ya Marenge' - today it is 'Karenge Aur Kar Ke Rahenge.'
From 2017-2022, these five years are about 'Sankalp Se Siddhi’, says PM Modi

মাননীয় অধ্যক্ষ মহোদয়া,

আমি আপনাকে ও সংসদের সকল মাননীয় সদস্যের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই আর আজ আমরাসবাই আগস্ট বিপ্লবের জন্য গর্ব অনুভব করছি, আমরা সৌভাগ্যবান যে আজ এই পবিত্র সংসদেউপস্থিত থেকে সেই বীর স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্মরণ করার সুযোগ পেয়েছি। আমাদেরমধ্যে আজও অনেকেই আছেন, যাঁদের স্মৃতিতে জ্বলজ্বল করছে ৯ আগস্ট, আগস্ট বিপ্লব।অন্যদের ক্ষেত্রেও এই বিপ্লবকে স্মরণ করা, এরকম গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাকে বারবার স্মরণকরার প্রয়োজন রয়েছে। ভালো ঘটনা বারবার স্মরণ করলে জীবনে একটি নতুন উদ্দীপনা জেগেওঠে, রাষ্ট্রজীবনকেও নতুন শক্তি যোগায়। তেমনই আমাদের নবীন প্রজন্মের কাছে এ ধরনেরউদ্দীপনা পৌঁছে দেওয়ার কর্তব্য আমাদেরই। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ইতিহাসের একটিসোনালী পৃষ্ঠাকে, তৎকালীন পরিবেশকে, আমাদের মহাপুরুষদের আত্মবলিদানকে, কর্তব্যকে,সামর্থ্যকে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব প্রত্যেকেরই রয়েছে।

আগস্ট বিপ্লবের ২৫তম বর্ষপূর্তি, ৫০তম বর্ষপূর্তিতে সকল দেশবাসী ঐঘটনাগুলিকে স্মরণ করেছে। আজ ৭৫তম বর্ষপূর্তি হচ্ছে, আমি একে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণবলে মনে করি। আর সেজন্য আমি অধ্যক্ষ মহোদয়ার কাছে কৃতজ্ঞ যে আমরা এভাবে উদযাপনেরসুযোগ পেয়েছি।

দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে ৯ আগস্ট শুরু হওয়া এই আন্দোলন এত তীব্র এবংব্যাপক রূপ ধারণ করেছিল যে ইংরেজরা এর কল্পনাও করেনি।

মহাত্মা গান্ধী সহ সকল অগ্রজ নেতাকে ওরা জেলে পুরে দিলে অনেক নতুন যুবকনেতৃত্বের দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে এগিয়ে আসেন, লালবাহাদুর শাস্ত্রী, রাম মনোহর লোহিয়া,জয়প্রকাশ নারায়ণের মতো অনেক নতুন নেতা সেই শূন্যস্থান পূরণ করে আন্দোলনকে এগিয়েনিয়ে যান। ইতিহাসের ঐ ঘটনাগুলি থেকে আমরা কিভাবে জনমানসে একটি নতুন প্রেরণা, নতুনসামর্থ্য, নতুন সংকল্প, নতুন কর্তব্যবোধ জাগিয়ে তুলতে পারি – সেই প্রচেষ্টাপ্রতিনিয়ত চালিয়ে যেতে হবে।

১৯৪৭ সালে দেশ স্বাধীন হয়েছে। ১৮৫৭ থেকে ১৯৪৭ ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনেরনানা পর্যায়ে আমরা অনেকের পরাক্রমের কথা জানি, অনেকে আত্মাহুতি দেন, অনেকউত্থান-পতনও আসে। কিন্তু সাতচল্লিশের স্বাধীনতার পেছনে বিয়াল্লিশের ঘটনাক্রমেরতীব্রতা ও ব্যাপকতার প্রভাব অপরিসীম। সেই ব্যাপক গণআন্দোলন, গণসংঘর্ষের পরস্বাধীনতার জন্য শুধু সময়ের অপেক্ষাই ছিল। ১৮৫৭-র স্বাধীনতা সংগ্রামের সময়ই প্রথমদেশের প্রতিটি প্রান্ত থেকে স্বাধীনতা সংগ্রামের সময়ই প্রথম দেশের প্রতিটি প্রান্তথেকে স্বাধীনতার বিউগল বেজে উঠেছিল। আর তারপর মহাত্মা গান্ধীর বিদেশ থেকে ফিরেআসা, লোকমান্য তিলকের পূর্ণ স্বরাজের সেই বিখ্যাত ঘোষণা – ‘স্বাধীনতা আমার জন্মসিদ্ধঅধিকার’, ১৯৩০ সালে মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে লবণ সত্যাগ্রহ ও ডান্ডী অভিযান,নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর নেতৃত্বে আজাদ হিন্দ ফৌজের প্রতিষ্ঠা, ভগৎ সিং, সুখদেব,রাজগুরু, চন্দ্রশেখর আজাদ, চাপেকর ভাইয়ের মতো অসংখ্য নবীন বীরের আত্মবলিদান – এইসবকিছু মিলেই ভারতের স্বাধীনতার প্রেক্ষিত গড়ে তুলেছিল। ১৯৪২ সালের আন্দোলনেঅংশগ্রহণকারীদের মনে ছিল, ‘এখন না হলে আর কোনও দিনই নয়’ ধরণের মনোভাব। সেজন্যদেশের প্রায় প্রত্যেক মানুষই এই আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন। একটা সময় মনে হ’ত,স্বাধীনতা আন্দোলন বুঝি অভিজাত সম্প্রদায়ের দ্বারা পরিচালিত। কিন্তু বিয়াল্লিশেরবিপ্লবে দেশের এমন কোনও প্রান্ত বাকি ছিল না, এমন কোনও বর্গ বাকি ছিল না, এমন কোনওসামাজিক অবস্থা অবশিষ্ট ছিল না, যারা একে নিজস্ব করে নেয়নি। আর তাঁরা গান্ধীজীরআহ্বানে সাড়া দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন। সেই আন্দোলন, যার অন্তিম স্বর ছিল ‘ভারত ছাড়ো’। সবচেয়ে বড় কথা, নিজের চরিত্র ওভাবধারার বিরুদ্ধে গিয়ে মহাত্মা গান্ধী হুঙ্কার দেন, ‘করেঙ্গে ইয়া মরেঙ্গে’! ঐআন্দোলনের সাফল্যই তাঁর মুখে উচ্চারিত হয়, ‘আজ থেকে আপনারা প্রত্যেকেই নিজেকেস্বাধীন মহিলা কিংবা পুরুষ ভাবেন, আর স্বাধীন মানুষের মতোই কাজ করা উচিৎ। আমিপূর্ণ স্বাধীনতা থেকে কম কিছু নিয়ে সন্তুষ্ট থাকব না। আমরা করব নয়ত মরব’! এইবক্তব্যের মাধ্যমে বাপুজী স্পষ্ট করে দেন যে তিনি অহিংসার পথ ত্যাগ করেন। কিন্তুতৎকালীন পরিস্থিতিতে জনসাধারণের প্রত্যাশার চাপ এতটাই ছিল যে বাপুজীকেও তাদেরপ্রত্যাশার অনুকূল শব্দ প্রয়োগ করতে হয়েছিল।

সেই সময় গ্রামে গ্রামে কৃষক, মজুর, শিক্ষক ও ছাত্র সকলেই এই আন্দোলনেঝাঁপিয়ে পড়ে। বাপুজীও উদ্বুদ্ধ হয়ে বলেন, ইংরেজদের হিংসার শিকার হয়ে কোনও ভারতীয়শহীদ হলে তাঁর শরীরে একটি পোস্টার সেঁটে দিতে হবে, ‘করেঙ্গে ইয়া মরেঙ্গে – আর ইনিস্বাধীনতা আন্দোলনে শহীদ হয়েছেন’! এভাবেই বাপুজী সেই আন্দোলনকে নতুন উচ্চতা প্রদানকরেন। তারই পরিণামস্বরূপ ভারতমাতা পরাধীনতার শৃঙ্খলমুক্ত হয়। দেশ সেই মুক্তির জন্যছটফট করছিল। নেতা থেকে নাগরিক কারও ভাবনায় কোনও অন্তর ছিল না, আর আমি মনে করি, দেশযখন উঠে দাঁড়ায়, সমূহের সম্মিলিত শক্তি মহীয়ান হয়ে অঠে, লক্ষ্য নির্ধারিত হয় আরসেই লক্ষ্য পূরণের জন্য মানুষ কৃতসংকল্প হয়ে বীরদর্পে এগিয়ে যায়। ১৯৪২ থেকে ১৯৪৭সালের মধ্যে এই সম্মিলিত শক্তি সকল শৃঙ্খল ভেঙে ফেলে, আর ভারতমাতা মুক্ত হয়। সেইসময় রামবৃক্ষ বেণীপুরী একটি বই লিখেছিলেন, ‘জঞ্জিরেঁ অউর দীওয়ারেঁ’। এতে তিনিলিখেছেন, ‘সারা দেশে একটি অদ্ভুত আবহ গড়ে ওঠে। প্রত্যেক ব্যক্তি নেতা হয়ে ওঠেন আরদেশের প্রত্যেক গ্রাম ও শহরের প্রতিটি চৌ-মাথা ‘করব বা মরব’ আন্দোলনের দপ্তরেপরিণত হয়। গোটা দেশ বিপ্লবের যজ্ঞের আগুনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। বিপ্লবের লাভাস্রোত সারা দেশেধিকি ধিকি থেকে দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে। বোম্বাই পথ দেখায়। আসা-যাওয়ার সকল পথ রুদ্ধহয়ে যায়। কোর্টকাছারি খা খা করে। ভারতীয়দের বীরত্ব আর ব্রিটিশ সরকারের নৃশংসতারখবর সর্বব্যাপী হচ্ছিল। সাধারণ মানুষ গান্ধীজির ‘করব অথবা মরব’ মন্ত্রকে হৃদয়েস্থান দিয়েছিল”।

ঐ বইটি পড়লে সেই সময়কার যে চিত্র উঠে আসে, আর বোঝা যায় যে, ব্রিটিশ শাসকদেরসূত্রপাত ভারতে হয়েছিল তার সমাপ্তি ঘটেছিল ভারতেই। ভারতের স্বাধীনতা শুধু ভারতেরইস্বাধীনতা ছিল না। ১৯৪২-এর পর বিশ্বের যে সকল ভূ-ভাগে আফ্রিকা ও এশিয়ার নানা দেশেঔপনিবেশিক শাসন ছিল – সর্বত্র স্বাধীনতার আন্দোলনের প্রেরণা হয়ে ওঠে ভারতের আগস্টআন্দোলন। সেজন্য ভারতের স্বাধীনতার স্পৃহা সে সকল দেশের মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেস্বাধীন্তা সংগ্রামী করে তোলে। যে কোনও ভারতীয় সেজন্য গর্ব করতে পারেন। ভারতস্বাধীন হতেই তাদের স্বাধীনতার আন্দোলন এত তীব্র হয়ে ওঠে যে একের পর এক দেশ ছেড়েঔপনিবেশিক প্রভুরা নিজেদের দেশে ফিরে যেতে বাধ্য হন। একের পর এক দেশ স্বাধীনতাঘোষণা করে। কয়েক বছরের মধ্যেই বিশ্বের প্রায় সকল দেশ স্বাধীন দেশে পরিণত হয়। এটাআমাদের জন্যও একটি শিক্ষার বিষয় হয়ে ওঠে, যখনই আমরা সবাই মিলে শপথ নিয়ে পূর্ণ সামর্থ্যনিয়ে নির্ধারিত লক্ষ্য প্রাপ্তির জন্য একজোট হই, এই দেশের শক্তি তখন এতটাই বৃদ্ধিপায় যে আমরা দেশকে যে কোনও সংকট থেকে মুক্ত করতে পারি, দেশকে নতুন লক্ষ্যপ্রাপ্তিরজন্য প্রস্তুত করতে পারি, ইতিহাস সাক্ষী আর সেজন্যই সেই সময় এই আন্দোলনের নেতৃত্বপ্রদানকারী বাপুজীর ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে জাতীয় কবি মোহনলাল দ্বিবেদী একটি কবিতাবাপুজীকে উৎসর্গ করেছিলেন। এতে তিনি লিখেছিলেন :

‘চল পড়ে জিধর দো ডগ, মগ মেঁ

চল পড়ে কোটি পগ উসী ওর

গড় গই জিধর ভী এক দৃষ্টি

গড় গয়ে কোটি দৃগ উসী ওর’

অর্থাৎ, যে পথে গান্ধীজীর পা দুটি এগিয়েছে, নিজে থেকেই কোটি পা সেই পথধরেছে। যেদিকে গান্ধীজী তাকিয়েছেন, কোটি কোটি মানুষ সেদিকে তাকিয়েছেন। আজ ২০১৭সালে আমাদের স্বীকার করতেই হবে যে দেশে গান্ধীজীর মতো ব্যক্তিত্বসম্পন্ন কোনও নেতাআমাদের নেই, কিন্তু ১২৫ কোটি ভারতবাসী বিশ্বাস করেন যে, আমরা সবাই মিলে সেই স্বাধীনতাসংগ্রামীদের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে পারব। ১৯৪২ সালের আন্তর্জাতিক পরিবেশওভারতের স্বাধীনতার অনুকূল ছিল। আর আজ আমরা যখন ২০১৭ সালে ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনের৭৫তম বর্ষপালন করছি সেই সময়ও বিশ্বে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের কল্পনার ভারতগড়ার, দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়ার অনুকূল পরিবেশ গড়ে উঠেছে। আমাদের সকলকে রাজনীতিরঊর্ধ্বে উঠে এই অনুকূল আবহের সুযোগ নিয়ে সাফল্যের পথে এগোতে হবে। আমি মনে করি,দলের থেকে দেশের স্বার্থ বড়, রাজনীতি থেকে রাষ্ট্রনীতি বড়। আমাদের উপরে রয়েছেন ১২৫কোটি দেশবাসী, এই ভাবনা মাথায় নিয়ে আমরা সবাই মিলে এগিয়ে গেলে, মিলেমিশে কাজ করলে,এই সমস্যাগুলির সমাধানে সাফল্য পাবই। একথা আমরা কেউ অস্বীকার করতে পারবো না যে,দুর্নীতি নামক ঘুণপোকা আমাদের দেশকে পেছনে ফেলে রেখেছে। রাজনৈতিক দুর্নীতি,সামাজিক দুর্নীতি কিংবা ব্যক্তিগত দুর্নীতি; গতকাল কী হয়েছে, কবে কে কি করেছেন, এইবিবাদের জন্য আমরা ভবিষ্যতে অনেক সময় পাব, কিন্তু আজ এই পবিত্র লগ্নে আসুন আমরাসকলে মিলিতভাবে শপথ গ্রহণ করি যে, সামনে যত সমস্যা রয়েছে, দারিদ্র্য, অপুষ্টি,অশিক্ষা এগুলি আমরা সমাধান করবোই। মহাত্মা গান্ধীর ‘গ্রাম স্বরাজ’-এর স্বপ্ন ভেঙেখান খান হয়ে গেছে, গ্রামের মানুষেরা কেন দলে দলে গ্রাম ছেড়ে এসে শহরে বসবাস করতেশুরু করেছেন? গান্ধীজির স্বপ্নের সেই গ্রামকে কি আমরা আবার নিজেদের মনে পুনর্জীবিতকরতে পারি? গ্রামের গরিব, কৃষক, দলিত প্রজন্ম, শোষিত ও বঞ্চিতদের জীবনমান উন্নয়নেরজন্য আমরা কি কিছু করতে পারি? এই প্রশ্নে আমরা কি পরস্পরের ওপর দোষারোপ ছেড়ে হাতেহাত ধরে মিলেমিশে কাজ করতে পারি? আমরা সকলেই তো ঐ ১২৫ কোটি মানুষের দ্বারানির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। আমাদের পরস্পরের দিকে হাত বাড়িয়ে দেশবাসীর উন্নয়নেরস্বার্থে, দেশের উন্নয়নের স্বার্থে কাজ করার এটাই উপযুক্ত সময়। এদেশে আমাদের সকলেরঅজান্তেই কখন অধিকারবোধ প্রবল হয়ে উঠেছে আর কর্তব্যবোধ লুপ্ত হতে চলেছে।রাষ্ট্রজীবনে, সমাজ জীবনে অধিকারভাবের এই গুরুত্বকে অক্ষুণ্ন রেখেই আমরা কি নিজেরকাজে, জনমানসে কর্তব্যবোধকে জাগিয়ে তুলতে পারি? সমাজ জীবনে অনেক সমস্যার মূলেরয়েছে আমাদের অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রা। দুর্ভাগ্যবশত আমাদের স্বভাবে এমন কিছু আচরণঢুকে গেছে, যেগুলি ভুল কিন্তু আমরা সেসব ভুল সম্পর্কে অবহিত নই। আমরা সহজেইচৌ-মাথায় এসে ‘লাল সংকেত’ অবজ্ঞা করে গাড়ি চালিয়ে দিতে পারি। যেখানে সেখানে থুতুফেলে আমরা কোনও অপরাধবোধ করি না। অনেক সামান্য ঘটনা হিংসার শিকার হয়ে পড়ে।হাসপাতালে ডাক্তারবাবুর ওষুধে কেউ সুস্থ না হলে এর জন্য সবসময় ডাক্তারবাবু দায়ীথাকেন না, সব মৃত্যুই ডাক্তারের দোষ কিংবা হাসপাতালের গাফিলতিতে হয় না। কিন্তুআত্মীয়রা গিয়ে হাসপাতালে আগুন লাগিয়ে দেন, ডাক্তারকে মারধোর করেন। যে কোনও কারণেসড়ক দুর্ঘটনা হলে কয়েকজন মিলে ড্রাইভারকে পিটিয়ে মেরে ফেলেন। আইন মেনে চলানাগরিকদের কখনই এমনটি করা উচিৎ নয়। অথচ আমাদের স্বভাবে এ ধরনের অনেক ‘কু’ ঢুকেপড়েছে, যাতে আমাদের মনেই হয় না যে আমরা এইভাবে আইন নিজেদের হাতে নিয়ে কোনও অন্যায়করছি! এখন জনপ্রতিনিধিদের ওপর দায়িত্ব বর্তায় সমাজকে এইসব অন্যায় সম্পর্কে সচেতনকরে যথাযথ কর্তব্যের পথ দেখানো, সমাজকে কর্তব্য সচেতন করা!

শৌচালয় এবং পরিচ্ছন্নতা মজার বিষয় নয়। মা-বোনেদের সমস্যা অনুভব করলেইবুঝবেন যখন বাড়িতে শৌচালয় ছিল না, তাঁদেরকে প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দিতে রাতের অন্ধকারেরজন্য অপেক্ষা করতে হ’ত! সেজন্য আমরা শৌচালয় নির্মাণকে অগ্রাধিকার দিয়েছি। কিন্তুতারচেয়েও বড় কাজ হ’ল সমাজের মানসিকতা পরিবর্তন, জনসচেতনতা বৃদ্ধি। এই কাজ আইনপ্রণয়ন করে হবে না! আইন নিয়ম রক্ষায় সাহায্য করতে পারে, কিন্তু মানুষের মনেকর্তব্যবোধ জাগ্রত করতে পারলে অনেক বেশি ইতিবাচক ফল পাওয়া যাবে। আমরা দেশের মা ওবোনেদের ঘরে বন্দী করে, লেখাপড়া শিখতে না দিয়ে সমাজের বোঝা বানিয়ে রেখেছি।

মা ও বোনেদের শিক্ষিত করে তুলতে পারলে, তাঁদের সামর্থ্যের পূর্ণ বিকাশঘটাতে পারলে, তাদের সমান অংশীদারিত্ব দেশকে কত বেশি শক্তিশালী করে তুলতে পারবে!স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় মহাত্মা গান্ধী মা-বোনেদের অংশগ্রহণকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন,যেখানে যেখানে যতটা সম্ভব দায়িত্ব তিনি তাঁদের সঁপে দিয়েছিলেন। দেশের স্বাধীনতাআন্দোলনে দেশের মা ও বোনেদের অংশগ্রহণ ও নেতৃত্বের ভূমিকা অনস্বীকার্য। আজও জাতীয়জীবনে তাঁদের অবদান কোনও অংশে কম নয়। সেই অবদানকে স্বীকৃতি দিয়ে আরও বেশি সংখ্যকমা ও বোনেদের অংশীদারিত্ব বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করা সম্ভবহবে। এক্ষেত্রেও কর্তব্যবোধকে জাগ্রত করতে হবে।

একথা সত্যি যে ১৮৫৭ থেকে ১৯৪২ – এর মধ্যে স্বাধীনতা আন্দোলন নানা পর্যায়েঅনেক উত্থান-পতন দেখেছে, অনেক মোড় ঘুরেছে, নতুন নতুন নেতৃত্ব এগিয়ে এসেছেন, কখনওবিদ্রোহ-বিপ্লবের পথ আবার কখনও অহিংসার পথ প্রাধান্য পেয়েছে। কখনও উভয় ধারা একেঅন্যের বিরুদ্ধে যুযুধান আবার কখনও পরস্পরের পরিপূরক। কিন্তু ১৮৫৭ থেকে ১৯৪২পর্যন্ত সময়কালকে একসঙ্গে দেখলে অনুভব করব যে সর্বদাই আমাদের দেশের আন্দোলনক্রমবর্ধমান গতিতে স্বাধীনতার স্পৃহাকে বাড়িয়ে গেছে। ধীরে ধীরে এগিয়েছে, ধীরে ধীরেবিস্তার লাভ করেছে, মানুষের যোগদানও ধীরগতিতে বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু ১৯৪২ থেকে১৯৪৭ ক্রমবর্ধমান নয় একেবারে বিধ্বংসী-বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে, আর তা পূর্ববর্তীসকল সমীকরণকে ভাসিয়ে দিয়ে ইংরেজদের ভারত ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করেছে।

আমাদের সমাজ জীবনেও তেমনই গত ১০০-২০০ বছরের ইতিহাস ধীরগতিতে এগিয়ে যাওয়ারইতিহাস। প্রায় সারা পৃথিবীতেই এই অবস্থা ছিল। কিন্তু গত ৩০-৪০ বছরে সারা পৃথিবীতেইদ্রুত পরিবর্তন আসে, সমাজ জীবনে প্রযুক্তি ব্যবহার বৈপ্লবিক মাত্রায় বৃদ্ধি পায়।প্রযুক্তির ব্যবহারে সারা পৃথিবীতে অকল্পনীয় গতিতে সমস্ত কিছু বদলাতে থাকে।ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটতে থাকে।

যেভাবে ক্রমবর্ধমান পরিবর্তনের হার এক লাফে হাইজাম্পের মতো উচ্চতা অতিক্রমকরেছে এই ২০১৭ থেকে ২০২০ হয়ে ২০২২-এর মধ্যে। ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনের ৭৫ বছর থেকেস্বাধীনতা আন্দোলনের ৭৫ বছরের মধ্যের সফরকালেও তেমনই ১৯৪২ থেকে ১৯৪৭-এর মধ্যেরসফরকালের মতো উন্নয়নের হাইজাম্প পরিলক্ষিত হবে। এই সময়কাল আমাদের দায়িত্ব পালনেরসময়কাল হয়ে উঠবে। আমরা যদি ভারত’কে সেই উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারি, তা হলে বিশ্বেরঅনেক দেশকে আমরা সাহায্য করতে পারব, মানবতার উন্নয়নে নেতৃত্ব দিতে পারব,প্রযুক্তির ব্যবহারে নেতৃত্ব দিতে পারব। আর সেজন্য সম্মিলিত ইচ্ছাশক্তিকে জাগ্রতকরতে হবে, দেশকে সংকল্পবদ্ধ করে তুলতে হবে, দেশের মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে, তাঁদেরকেসঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। আর সেজন্য এই পাঁচ বছরে আমরা কিছু বিষয়ে মতৈক্যেরভিত্তিতে উন্নয়নের কাজ করতে পারলে আমার বিশ্বাস আমরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতেপারব।

আমরা সম্প্রতি দেখেছি, জিএসটি’র ক্ষেত্রে; আমি বারবার বলছি যে, এটা আমার কোনও রাজনৈতিক বিবৃতি নয়।এটা আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, জিএসটি কোনও নির্দিষ্ট সরকারের সাফল্য নয়। কোনও রাজনৈতিকদলের সাফল্য নয়। রাজনীতি নির্বিশেষে এই সংসদ ভবনে উপস্থিত সকল সাংসদের ইচ্ছাশক্তিরপরিণাম এই জিএসটি। দেশের সকল রাজ্যের শাসক ও বিরোধী পক্ষের সকল বিধায়কের ইচ্ছাশক্তিরপরিণাম এই জিএসটি। দেশের সাধারণ ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় গড়ে উঠেছে এই অভিন্ন করব্যবস্থা। যে দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্ব নিজেদের রাজনৈতিক মতভেদ ভুলে দেশের স্বার্থেএরকম গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে পারে, নিজেদের দায়িত্বপালন করতে পারে, সে দেশেরদিকে বিশ্ববাসী সমীহ নিয়ে তাকাতে বাধ্য। জিএসটি বিশ্ববাসীর কাছে একটি আশ্চর্য করব্যবস্থা, এদেশের জনসংখ্যা, আকার ও আয়তনের বিশালতা এবং বৈচিত্র্য থাকা সত্ত্বেওআমরা যখন এরকম গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছি, ১২৫ কোটি মানুষের জনপ্রতিনিধিরূপে আমরা একসঙ্গে বসে দেশের স্বার্থে এমনই অনেক সিদ্ধান্তই নিতে পারব। ১২৫ কোটিদেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে ২০২২ সালের মধ্যে নতুন ভারতের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার শপথনিলে, আমার বিশ্বাস, আমরা পরিণাম অর্জন করতে পারবই।

মহাত্মা গান্ধীর আহ্বান ছিল – ‘করেঙ্গে ইয়া মরেঙ্গে’। ২০১৭ থেকে ২০২২-এরমধ্যে আমাদের শপথ নিতে হবে যে, আমরা দেশ থেকে দুর্নীতি দূর করব আর অবশ্যই করেছাড়ব। আমরা সবাই মিলে দেশের নবীন প্রজন্মের স্বরোজগারের সুযোগ করে দেব এবং করেইছাড়ব। আমরা সবাই মিলে দেশ থেকে অপুষ্টির সমস্যা দূর করব এবং করেই থামব। আমরা সবাইমিলে মহিলাদের এগিয়ে যাওয়ার পথে সকল শৃঙ্খলমুক্ত করব এবং করেই ছাড়ব। আমরা সবাইমিলে দেশ থেকে অশিক্ষা দূর করে তবেই থামব। আরও অনেক বিষয় রয়েছে; তাই সেই সময়েরমন্ত্র যেমন ছিল ‘করেঙ্গে ইয়া মরেঙ্গে’ আর আজ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে আমাদেরমূলমন্ত্র হওয়া উচিৎ ‘করেঙ্গে অউর করকে রহেঙ্গে’। এই সংকল্প নিয়ে আমরা এগিয়ে যাব।এই সংকল্প কোনও দলের নয়, কোনও সরকারের নয়; এই সংকল্পকে ১২৫ কোটি দেশবাসীর সংকল্পেপরিণত করতে, ১২৫ কোটি জনগণের প্রতিনিধি হিসাবে আমাদের মিলিত সংকল্পের ভূমিকাঅপরিমেয়। আমার বিশ্বাস সংকল্প থেকে সিদ্ধির পাঁচ বছরে পরিণত হবে এই ২০১৭ থেকে ২০২২– পাঁচ বছর। আসুন, আজ আগস্ট বিপ্লবের সেই মহাপুরুষদের স্মরণ করে, তাঁদের ত্যাগ,তপস্যা, আত্মবলিদান’কে স্মরণ করে, তাঁদের পুণ্য স্মৃতি থেকে আশীর্বাদ গ্রহণ করেআমরা সবাই মিলে, কিছু বিষয়ে সহমত হয়ে দেশকে নেতৃত্ব দিই, দেশকে সমস্যামুক্ত করি।স্বপ্ন, সামর্থ্য, শক্তি আর লক্ষ্য পূরণের জন্য এগিয়ে যাই! এই প্রত্যাশা নিয়েআরেকবার অধ্যক্ষ মহোদয়াকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রণামজানাই।

 

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
Snacks, Laughter And More, PM Modi's Candid Moments With Indian Workers In Kuwait

Media Coverage

Snacks, Laughter And More, PM Modi's Candid Moments With Indian Workers In Kuwait
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
Prime Minister meets with Crown Prince of Kuwait
December 22, 2024

​Prime Minister Shri Narendra Modi met today with His Highness Sheikh Sabah Al-Khaled Al-Hamad Al-Mubarak Al-Sabah, Crown Prince of the State of Kuwait. Prime Minister fondly recalled his recent meeting with His Highness the Crown Prince on the margins of the UNGA session in September 2024.

Prime Minister conveyed that India attaches utmost importance to its bilateral relations with Kuwait. The leaders acknowledged that bilateral relations were progressing well and welcomed their elevation to a Strategic Partnership. They emphasized on close coordination between both sides in the UN and other multilateral fora. Prime Minister expressed confidence that India-GCC relations will be further strengthened under the Presidency of Kuwait.

⁠Prime Minister invited His Highness the Crown Prince of Kuwait to visit India at a mutually convenient date.

His Highness the Crown Prince of Kuwait hosted a banquet in honour of Prime Minister.