বছর সতেরোর প্রায় সব কিশোর-কিশোরী ভাবে তাদের কেরিয়ারের কথা এবংচেষ্টা করে তাঁদের কম বয়সের শেষ ভাগটুকু উপভোগ করতে। নরেন্দ্র মোদীর বেলায় অবশ্যব্যাপারটা ছিল বেশ অন্যরকম। সতেরোয় তিনি এক অসাধারণ সিদ্ধান্ত নেন, যা কিনাপাল্টে দেয় তাঁর জীবনের ধারা। ঘর ছেড়ে তিনি সারা ভারত ঘুরে দেখার মনস্থ করেন।
এতে জোর আঘাত পেলেও, তাঁর ছোট শহরের গন্ডি ছেড়ে নরেন্দ্রর বেরনোরইচ্ছে মেনে নেয় বাড়ির লোকজন। বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার দিন হাজির হলে, তাঁর মা বানান একমিষ্টি খাবার, যা কিনা বিশেষ উপলক্ষেই তৈরি করা হয় এবং লোকাচার মাফিক তাঁর কপালেদেন তিলক।
তিনি যেসব জায়গায় ঘোরেন তার মধ্যে ছিল হিমালয়(সেখানে তিনি গরুড়চটিতে থাকতেন), পশ্চিমবঙ্গের রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম এবং এমনকিউত্তর-পূর্বঞ্চলও। এসব ঘোরাঘুরি তাঁর কিশোর মনে ফেলে এক গভীর প্রভাব। ভারতেরবিস্তির্ণ অঞ্চল ঘুরেফিরে তিনি তন্নতন্ন করে খোঁজেন দেশের বিভিন্ন অংশের রকমারি সবসংস্কৃতি।
নরেন্দ্র মোদীর শৈশব
আর এস এস-এর ডাক
নরেন্দ্র ফিরে আসেন দু’বছর পর, বাড়ি ছিলেন কিন্তু মাত্র দু’বছর। এবারতাঁর গন্তব্য স্থান ছিল নির্দিষ্ট এবং মিশন বা ব্রতও স্পষ্ট – তিনি যাচ্ছেনআমেদাবাদ, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আর এস এস) সঙ্গে কাজে নেমে পড়ার মনস্থিরকরে। ১৯২৫-এ স্থাপিত আর এস এস, ভারতের আর্থনীতিক ও সাংস্কৃতিক নবজাগরণের লক্ষ্যেকাজ করার এক সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন।
কচি আট বছর বয়সে আর এস এস-এর সঙ্গে তাঁর প্রথম যোগাযোগ। বাড়ির চায়েরদোকানে দিনের কাজ শেষে তিনি হাজির হন সঙ্ঘের স্থানীয় তরুণদের এক জমায়েতে। এহেনসমাবেশে উপস্থিত থাকার সঙ্গে রাজনীতির ছঁয়া ছিল না একটুকুও। এখানেই তাঁর সঙ্গেদেখা হয় তাঁর জীবনে সবচেয়ে জোরাল প্রভাব ফেল লক্ষ্মণ রাও ইনামদারের যিনি ‘উকিলসাহেব’ নামেও পরিচিত।
আরএসএস-এর সময় নরেন্দ্র মোদী
আমেদাবাদ এবং আরও দূরের পথে
এই পটভূমিকা নিয়ে, প্রায় বছর কুড়ি বয়সী নরেন্দ্র পৌঁছলেন গুজরাটেরসবচেয়ে বড় শহর আমেদাবাদ। হলেন আর এস এস-এর সদস্য। তাঁর নিষ্ঠা ও সাংগনিক দখলে উকিলসাহেব ও অন্যান্যদের মনে দাগ কাটল। ১৯৭২-এ তিনি হন এক প্রচারক, দিনরাত কাটে আরএস এস-এর কাজে। থাকতেন অন্যান্য প্রচারবাদের সঙ্গে এবং মেনে চলতেন কঠোর একনিত্যনৈমিত্তিক রুটিন। দিন শুরু হ’ত ৫টার সাতসকালে এবং চলতো গভীর রাত ইস্তক।এহেন প্রচণ্ড কর্মব্যস্ততার মাঝেও নরেন্দ্র রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ডিগ্রি পান। তিনিশিক্ষা ও লেখাপড়ায় গুরুত্ব দিয়ে এসেছেন চিরকাল।
প্রচারকের কাজে তাঁকে ঘুরতে হয়েছে গোটা গুজরাট। ১৯৭২ এবং ১৯৭৩-এরমধ্যে কোনও একটা সময় তিনি থেকে ছিলেন খেড়া জেলার নডিয়াদের শান্তরাম মন্দিরে।১৯৭৩-এ সিধপুরে এক বিশাল শীর্ষ সম্মেলনের জন্য কাজ করার দায়িত্ব দেওয়া তাঁকে।সেখনে তিনি দেখা করার সুযোগ পান সংঘের হর্তাকর্তাদের সঙ্গে।
সক্রিয় কর্মী হিসেবে তাঁর জীবন শুরু করার সময়, গুজরাট তথা ভারতের আবহছিল খুবই অস্থির। তিনি আমেদাবাদ পৌঁছনোর কালে, শহর ছিল ঘোরতর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গারকবলে। ১৯৬৭-র লোকসভা ভোটে অনেকখানি ঘা খাওয়া কংগ্রেস যেন ইন্দিরা গান্ধী ও সিন্ডিকেটএই দুই গোষ্ঠীতে বিভক্ত। শেষোক্ত গোষ্ঠীর নেতাদের মধ্যে অন্যতম গুজরাটের মোরারজিদেশাই। গরিবি হঠাও অভিযানে ভর দিয়ে ১৯৭১-এর লোকসভা নির্বাচনে ৫১৮টি আসনের ৩৩২টিতেজিতে ক্ষমতায় ফিরে এলেন ইন্দিরা গান্ধী।
গুজরাট রাজ্য নির্বচনেও ইন্দিরা গান্ধীর জয়জয়কার। ৫০ শতাংশের বেশি ভোটপেয়ে তার ফল ১৮২টি কেন্দ্রের মধ্যে দখল করে ১৪০টি।
নরেন্দ্র মোদী – প্রচারক
কংগ্রেস ও ইন্দিরা গান্ধীর এই উচ্ছ্বাস অবশ্য বুদ্ধুদের মতোই ফুটে ওঠেও অচিরে মিলিয়ে যায়। গুজরাটে সাধারণ মানুষের মধ্যে দ্রুত সংস্কার ও প্রগতির স্বপ্নভেঙে খানখান। ইন্দুলাল যাজ্ঞিক, জীবরাজ মেটা ও বলবন্ত রাই মেটার মতো বর্ষীয়ানরাজনীতিকের সংগ্রাম ও আত্মোৎসর্গ বলি হয় লোভের রাজনীতির হাড়িকাঠে।
ষাটের দশকের শেশ দিক ও সাত দশকের প্রথমভাগে গুজরাটে কংগ্রেস সরকারেরদুর্নীতি ও ও কুশাসন পৌঁছয় চরমে। ‘গরিবি হঠাও’-এর গালভরা প্রতিস্রুতি ক্রমশ ‘গরিবহঠাও’-এর রূপ নিয়ে ফাঁকা বুলি হয়ে দাঁড়ায়। গরিবদের দশা হয় আরও খারাপ। এর সঙ্গেনিদারুণ খরা ও চড়া দামের দোহারকিতে গুজরাতে তো দুর্দশার একশেষ। নিত্য প্রয়োজনীয়সামগ্রীর জন্যলোকেরা লম্বা সারি, তখন রাজ্যে এক অতি চেনা ছবি। আমজনতার হাঁফ ছাড়ারনেই এতটুকু অবসর।
নবনির্মাণ আন্দোলন : যুবশক্তি
১৯৭৩-এর ডিসেম্বরে তাদের খাবারের বিল মাত্রাতিরিক্ত চড়ায় গুজরাটে মবিইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের কয়েকজন ছাত্র প্রতিবাদ জানায়। মানুষের অসন্তোষ রূপ নেয়ক্ষোভে। রাজ্য জুড়ে শুরু হয় অনুরূপ প্রতিবাদ। অচিরেই এই প্রতিবাদ লোকজনের ব্যাপকসমর্থন পেয়ে সরকারের বিরুদ্ধে নবনির্মাণ আন্দোলনের নামে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে।
সমাজের সব শ্রেণীকে টেনে আনা এই গণআন্দোলনে জড়িয়েপড়েন নরেন্দ্র মোদী। ভ্রষ্টাচারের বিরুদ্ধে এক চিরপরিচিত প্রতিবাদী ও অতি শ্রদ্ধেয়জননেতা জয়প্রকাশ নারায়ণের সমর্থন লাভ করে এই আন্দোলন হয়ে ওঠে আরও ক্ষুরধার।জয়প্রকাশ নারায়ণ আমেদাবাদে এলে তাঁর সঙ্গে নরেন্দ্র দেখা করার সুযোগ পান। ঐবর্ষীয়ান এবং অন্যান্য নেতার ভাষণ যুবক নরেন্দ্রর মনে ফেলে এক গভীর প্রভাব।
ঐতিহাসিক নবনির্মাণ আন্দোলন
শেষতক জয় হয় ছাত্রশক্তির এবং কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী বাধ্য হন ইস্তফাদিতে। এই জয়ের আনন্দ অবশ্য বেশিদিন টেঁকেনি। স্বৈরাচারের আঘাত হেনে ১৯৭৫ সালের ২৫জুন মাঝরাতে জরুরি অবস্থা জারি করেন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী।
জরুরি অবস্থার কালো দিনগুলি
তাঁর নির্বাচন বাতিল করে আদালতের রায়ের দরুন ইন্দিরা গান্ধী ভয়করেছিলেন প্রধানমন্ত্রীর গদি হারাতে হবে এবং ভেবেছিলেন সেই মূহুর্তে জরুরি অবস্থাইমোক্ষম পদক্ষেপ। গণতন্ত্রের গলা টিকে ধরা হয়, কোপ পড়ে মত প্রকাশের স্বাধীনতারধরপাকড় করা হয় অটল বিহারী বাজপেয়ী, লালকৃষ্ণ আডবানী, জর্জ ফার্নান্ডেজ থেকেমোরারজি দেশাই তক তাবড় তাবড় নেতাকে।
জরুরিঅবস্থায় নরেন্দ্র মোদী
জরুরি অবস্থা-বিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণভূমিকা নেন নরেন্দ্র মোদী। স্বেচ্ছাচার প্রতিরোধ করতে গঠিত গুজরাট লোক সংঘর্ষসমিতিতে তিনি অংশগ্রহণ করেছিলেন। তিনি পরে হন সমিতির সাধারণ সম্পাদক। রাজ্যেসক্রিয় কর্মীদের মধ্যে সমন্বয় করাই ছিল তাঁর মূল দায়িত্ব। কংগ্রেস-বিরোধী নেতা ওকর্মীদের ওপর কড়া নজরদারির কথা মাথায় রাখলে এ কাজ ছিল যথেষ্ট কঠিন।
জরুরি অবস্থাকালে নরেন্দ্র মোদীর কাজকর্ম নিয়ে বেশ কিছু কথা চালুআআছে। এর মধ্যে একটি হল স্কুটারে চেপে কিভাবে তিনি পুলিশের চোখে এক সন্দেহভাজন একআর এস এস নেতাকে নিয়ে যান এক নিরাপদ আস্তানায়। ধরা পড়ার সময় আরেক নেতার কাছে ছিলকিছু কাগজপত্র। সেসব কাগজ উদ্ধার না করলেই নয়। থানায় আটক নেতার কাছ থেকে পুলিশেরচোখে ধুলো দিয়ে কাগজ পুনরুদ্ধারের দায়িত্ব পড়ে নরেন্দ্র মোদীর উপর। নানাজি দেশমুখপুলিশের হাতে আটক হবার সময় তাঁর কাছে ছিল আন্দোলনের প্রতি দরদী-সমর্থকদের ঠিকানালেখা এক খাতা। সেই তালিকায় থাকা কেউ যাতে গ্রেপ্তার না হন, সেজন্য প্রত্যেক জনকে নরেন্দ্রমোদী সরিয়ে নিয়ে যান নিরাপদ জায়গায়।
তাঁর অন্যান্য দায়িত্বের মধ্যে ছিল জরুরি অবস্থা বিরোধী কর্মীদেরগুজারটে আসা-যাওয়াআর ব্যবস্থাদি করা। এমনও হয়েছে, কেউ যাতে আঁচ করতে না পারেসেজন্য তাঁকে চলাফেরা করতে হয়েছে ছদ্মবেশ ধরে – কোনও দিন হয়তো এক শিখ ভদ্রলোক এবংপরের দিনই দাড়িগোঁফওয়ালা এক বয়স্ক মানুষ।
জরুরি অবস্থার সময় বিভিন্ন দলের নেতা ও কর্মীদের সঙ্গে একযোগে কাজকরার অভিজ্ঞতা চিরকাল তিনি তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করবেন। ২০১৩-র জুনে নরেন্দ্র মোদীতাঁর ব্লগে লিখলেন : আমার মতো যুবকদের সামনে, একই লক্ষ্যের জন্যলড়াইয়ে নামা বিভিন্ন মতাদর্শের বহু বহু সংগঠন ও নেতার সঙ্গে কাজ করার এক চমৎকারমওকা এনে দিয়েছিল জরুরি অবস্থা। আমরা যেসব সংগঠনের ছত্রছায়ায় থেকে বেড়ে উঠেছি তারগন্ডি ছাড়িয়ে তা আমাদের কাজ করতে সক্ষম করেছে। আমাদের পরিবারের বড় মাপের নেতা,অটলজি, আডবানীজি, প্রয়াত দন্ডপন্ত থেনগাড়ি, প্রয়াত নানাজি দেশমুখ থেকে সমাজবাআদীজর্জ ফার্নান্ডেজ, মোরারজি ভাই দেশাই-এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করা ও জরুরি অবস্থায়বীতশ্রদ্ধ রবীন্দ্র বর্মার মতো কংগ্রেসী এহেন সব ভিন্ন মতাদর্শের নেতাদের কাছ থেকেআমরা পেয়েছি প্রেরণা। গুজরাট বিদ্যাপীঠের প্রাক্তন উপাচার্য ধীরুভাই দেশাই,মানবতাবাদী সি টি দারু এবং গুজরাটের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বাবুভাই জশভাই প্যাটেল,চিমনভাই প্যাটেল ও প্রখ্যাত মুসলিম নেতা প্রয়াত হবিব-উর-রহমান – এর মতো মানুষেরকাছ থেকে বহু কিছু শিখতে পেরে আমি ভাগ্যবান। মনে পড়ে, কংগ্রেসের স্বৈরাচারেরবিরুদ্ধে অবিচল প্রতিরোধকারী ও শেষমেশ সে দল ছেড়ে আসা প্রয়াত মোরারজিভাই দেশাই-এরসংগ্রাম এবং দৃঢ়তার কথা।
এক বৃহত্তর মঙ্গলের জন্য এ যেন ছিল চিন্তাভাবনা ও মতাদর্শের এক চনমনেসঙ্গম। জাতপাত, মত, সম্প্রদায় বা ধর্মের ভেদাভেদের উর্ধ্বে উঠে আমরা কাজ করেছি একসাধারণ লক্ষ সামনে রেখে – দেশের গণতান্ত্রিক ভাবসত্তা তুলে ধরতে। ১৯৭৫-এরডিসেম্বরে গান্ধীনগরে সব বিরোধী এমপি-র এক গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলনের জন্য আমরা কাজকরেছি। এতে অংশ নেন প্রয়াত পুরুষোত্তম মবলংকার, শ্রী উমাশঙ্কর যোশী এবং শ্রী কৃষণকান্তেরমতো নির্দল সংসদ সদস্যও।
রাজনীতি জগতের বাইরে, সামাজিক সংগঠন ও বেশ কিছু গান্ধীবাদীর সঙ্গে কাজকরার এক সুযোগ পেয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। তাঁর স্পষ্ট মনে আছে, জর্জ ফার্নান্ডেজ(যাকে তিনি উল্লেখ করেছেন ‘জর্জ সাহাব’ বলে) ও নানাজি দেশমুখের সঙ্গে দেখাসাক্ষাতের কথা। সেই অন্ধকার দিনগুলির সময় তিনি লিখে রাখতেন তাঁর অভিজ্ঞতারবৃত্তান্ত, যা দিয়ে পরে বেরোয় এক বই ‘আপৎকাল মে গুজরাট’।
জরুরি অবস্থা ছাড়িয়ে
নবনির্মাণ আন্দোলনের মতো, জরুরি অবস্থার পর জয় হয় জনগণের। ১৯৭৭-এরলোকসভা ভোটে ইন্দিরা গান্ধী গোহারান হারেন। মানুষের ভোট পড়ে পরিবর্তনের পক্ষে।নতুন জনতা পার্টি সরকারে অটলজি ও আডবানীজির মতো জনসঙ্ঘ নেতা হন গুরুত্বপূর্ণমন্ত্রী।
সে সময়, গত কয়েক বছর পর তাঁর সক্রিয়তা ও সাংগঠনিকদক্ষতার স্বীকৃতি হিসেবে নরেন্দ্র মোদীকে করা হয় ‘সম্ভাগ প্রচারক’ (এক আঞ্চলিকসংগঠকের সমতুল)। তিনি পান দক্ষিণ ও মধ্য গুজরাটের দায়িত্ব। তাঁকে তখন দিল্লি ডেকেপাঠানো হয় এবং জরুরি অবস্থাকালে আর এস এস-এর কাজকর্মের কালানুক্রমিক বৃত্তান্তসংকলনের ভার পড়ে তাঁর ওপর। অর্থাৎ রও কাজ এবং আঞ্চলিক ও জাতীয় কর্তব্যের মধ্যেভারসাম্য বজায় যা কিনা বেশ স্বচ্ছন্দ এবং কুশলতার সঙ্গে উতরে দেন নরেন্দ্র মোদী।
গুজরাটের একটি গ্রামে নরেন্দ্র মোদী
আটের দশকের গোড়া বরাবর তাঁর গুজরাট ঘোরাঘুরি শুধুমাত্র বজায় ছিল এমনটিনয় বরং তা বেড়ে যায় আরও। তিনি এর ফলে রাজ্যের প্রতিটি তালুক এবং প্রায় সব গ্রামেঘোরার মওকা পেয়ে যান। এই অভিজ্ঞতা সংগঠক ও মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে খুব কাজে লাগেতাঁর। তিনি মানুষের সমস্যা নিজের চোখে দেখার সুযোগ পান এবং সেই সমস্যা সমাধানে আরওকঠিন পরিশ্রম করতে দৃঢ় হয় তাঁর সংকল্প।
নরেন্দ্র মোদী আনন্দের সঙ্গে ডুবে থাকতেন তাঁরকাজে। আর এস এস এবং নবগঠিত বিজেপি নেতারা চেয়েছিলেন তিনি দায়িত্ব নিন আরও বেশি।নরেন্দ্র মোদীর জীবনে শুরু হয় আরেক অধ্যায়। দলের স্ট্র্যাটেজি বা কৌশল ঠিক করারপাশাপাশি সেই ইস্তক তিনি নেমে পড়েন পথেঘাটেও। তাঁকে কাজ করতে হত দলের নেতা ওকার্যকর্তাদের সঙ্গে।
দেশের সেবা করতে বাড়ি ছেড়ে বেড়িয়ে আসা বড়নগরের কিশোরটি আরও এক বড়সড়উঁচু ধাপে পা ফেলার মুখে, কিন্তু তাঁর কাছে এটা দেশের নারী-পুরুষের মুখে হাসিফোটানোর লাগাতার অভিযান মাত্র। কৈলাশ মানসসরোবর যাত্রার পর, নরেন্দ্র মোদী নেমেপড়েন গুজরাট বিজেপি’র সাধারণ সম্পাদকের কাজে।