নমস্কার!
কমিটির সকল সম্মানিত সদস্য এবং বন্ধুরা! গুরু তেগ বাহাদুরজি'র ৪০০তম প্রকাশ পর্বের অনুষ্ঠান আধ্যাত্মিক সৌভাগ্যের এবং রাষ্ট্রীয় কর্তব্যও। গুরুর কৃপায় আমরা এই অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেছি। আমি খুশি যে আমরা সবাই দেশবাসীদের সঙ্গে নিয়ে এই প্রয়াসের দিকে এগিয়ে চলেছি।
এখানে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে আমাদের কাছে কমিটির তরফে মতামত প্রকাশ করলেন। যা পরামর্শ এসেছিল, সেগুলি তুলে ধরা হয়েছে। এই উপস্থাপনায় সারা বছরের কর্মপরিকল্পনার একটি নমনীয় রূপরেখা ছিল, এতে অনেক উন্নতির সম্ভাবনা রয়েছে, পাশাপাশি নতুন ভাবনাচিন্তার সম্ভাবনাও রয়েছে। আপনাদের সদস্যদের তরফ থেকেও অনেক মূল্যবান পরামর্শ এসেছে, খুব বাস্তবিক পরামর্শ পেয়েছি এবং এটি সত্য যে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আমাদের দেশের মূল চিন্তাভাবনাকে জনগণের সামনে তুলে ধরা উচিত। যদিও আজ এখানে এই কমিটির প্রচুর সম্মানিত সদস্য রয়েছেন, প্রত্যেকে তাঁদের মতামত প্রকাশের সুযোগ পাননি তবে আমি বিশ্বাস করি যে সম্মানিত সদস্যরা তাঁদের ভাবনাগুলি লিখিতভাবে পাঠাবেন যাতে তা আরও সমৃদ্ধ হতে পারে এবং ভাল কর্ম পরিকল্পনা করে সারা বছরের জন্য এই কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে।
বন্ধুরা,
গত চার শতাব্দীতে ভারতে এমন কোনও সময়, কোনও কাল আসেনি যা আমরা গুরু তেগ বাহাদুর জির প্রভাব ছাড়া কল্পনা করতে পারি! নবম গুরু হিসেবে আমরা সকলেই তাঁর থেকে অনুপ্রাণিত হই। আপনারা সকলেই তাঁর জীবনের ওঠাপড়ার সঙ্গে জড়িত তবে দেশের নতুন প্রজন্মের জন্য তাঁর সম্পর্কে জানা, তাঁকে বোঝা সমান গুরুত্বপূর্ণ।
বন্ধুরা,
গুরু নানক দেবজি থেকে শুরু করে গুরু তেগ বাহাদুরজি এবং এরপরে গুরু গোবিন্দ সিংজি পর্যন্ত, আমাদের শিখ গুরুদের পরম্পরায় একটি সম্পূর্ণ জীবন দর্শন দেখা যায়। এটি আমাদের সরকারের সৌভাগ্য যে আমরা গুরু নানক দেবজির ৫৫০তম প্রকাশ পর্ব, গুরু তেগ বাহাদুর জির ৪০০তম প্রকাশ পর্ব এবং গুরু গোবিন্দ সিংজির ৩৫০ তম প্রকাশ পর্ব উদযাপন করার সুযোগ পেয়েছি। সারা বিশ্ব যদি সমগ্র জীবনের তাৎপর্য বুঝতে চায়, তবে আমাদের গুরুদের জীবন থেকে তা খুব সহজেই বুঝতে পারবে। তাঁদের জীবনে সর্বোচ্চ ত্যাগও ছিল, সবকিছু জানার ইচ্ছাও ছিল। তাঁদের জীবনে জ্ঞানের আলো যেমন ছিল তেমনি আধ্যাত্মিক উচ্চতাও ছিল।
বন্ধুরা,
গুরু তেগ বাহাদুরজি বলেছেন- "সুখু দুখু দোনো সম করি জানে ওউরু মানু অপমানা" অর্থাৎ সুখ, দুঃখ, সম্মান ও অপমানের ক্ষেত্রে, আমাদের একইরকম ভাবে জীবনযাপন করা উচিত। তিনি জীবনের উদ্দেশ্যও বলেছেন, তার পথও দেখিয়েছেন। তিনি আমাদের দেশের সেবার পাশাপাশি জীবের সেবার পথও দেখিয়েছেন। তিনি আমাদেরকে সমতা, সম্প্রীতি এবং ত্যাগের মন্ত্র দিয়েছেন। আমাদের সকলের কর্তব্য এই মন্ত্রগুলি আপন করে নেওয়া এবং মানুষের কাছে তা পৌঁছে দেওয়া।
বন্ধুরা,
এখানে যেমন আলোচনা হয়েছে, ৪০০তম প্রকাশ পর্ব উপলক্ষে সারা বছরই দেশে অনুষ্ঠান আয়োজন করা উচিত এবং আমাদেরও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের কাছে তা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করা উচিত। এই উদ্যোগের ফলে শিখ পরম্পরার সঙ্গে যুক্ত সমস্ত তীর্থস্থানগুলি, শ্রদ্ধাস্থলগুলিতে যাবার আরও উৎসাহ তৈরি হবে। গুরু তেগ বাহাদুরের বাণী, তাঁর রাগের স্তব, তাঁর সঙ্গে জড়িত সাহিত্য, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, এগুলি মানুষকে অনুপ্রাণিত করবে। এতে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে এই বার্তা সারা বিশ্বে নতুন প্রজন্মের কাছে সহজেই পৌঁছে যাবে এবং আমি আনন্দিত যে আজ এখানে বেশিরভাগ সদস্যই ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বাধিক ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন, এটিও নতুন ভারতের প্রতিচ্ছবি। এই সমস্ত প্রচেষ্টায়, আমাদের আরও বেশি সংখ্যক মানুষকে এর সঙ্গে জুড়তে হবে।
বন্ধুরা,
এই পুরো অনুষ্ঠানে, গুরু তেগ বাহাদুরজির জীবন ও শিক্ষার পাশাপাশি আমাদের সমগ্র গুরু পরম্পরাকে বিশ্বের দরবারে নিয়ে যাওয়া উচিত। কীভাবে সারা বিশ্ব জুড়ে শিখ সম্প্রদায়ের মানুষ, এবং আমাদের গুরুদের কোটি কোটি অনুগামী তাঁদের পথ অনুসরণ করে চলেছে, শিখ সমাজ এত বড় বড় সেবামূলক কাজ কীভাবে করছে, কীভাবে আমাদের গুরুদ্বারগুলি মানবসেবার কেন্দ্র হয়ে উঠেছে, যদি আমরা এই বার্তা পুরো বিশ্বে পৌঁছে দিতে পারি, তবে আমরা মানবজাতিকে অনুপ্রাণিত করতে সক্ষম হব। আমি চাই এর গবেষণা করে নথিভুক্ত করা হোক। আমাদের প্রচেষ্টা ভবিষ্যতের প্রজন্মকেও পথ প্রদর্শন করবে। এটি একভাবে গুরু তেগ বাহাদুরজি সহ সমস্ত গুরুদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলিও দেওয়া হবে, কর্মাঞ্জলীও দেওয়া হবে। এটাও গুরুত্বপূর্ণ যে এই অতি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে, দেশ যখন স্বাধীনতার অমৃত উৎসব পালন করছে ౼ আমাদের স্বাধীনতার ৭৫ তম বছর। আমি নিশ্চিত, গুরুর আশীর্বাদে আমরা অবশ্যই আমাদের সকল অনুষ্ঠানে সফল হতে পারব। আপনাদের উত্তম পরামর্শের জন্য আমি আপনাদের সকলের প্রতি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ এবং আগামীর সময়েও আপনার সক্রিয় সমর্থন এই মহান পরম্পরাকে আগামী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে এক বিরাট অবদান রাখবে। এই পবিত্র উৎসবে গুরুদের সেবা করার যে সৌভাগ্য আমাদের হয়েছে, তা আমাদের গর্ব।
এই শুভেচ্ছার সঙ্গে, আপনাদের অনেক অনেক ধন্যবাদ!