ভারত ১৪ আগস্ট তারিখটিকে ‘বিভাজন বিভীষিকা স্মৃতি দিবস’ হিসেবে স্মরণ করার আবেগপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে: প্রধানমন্ত্রী মোদী
গতিশক্তি আমাদের দেশের জন্য একটি এমন নতুন ন্যাশনাল ইনফ্রাস্ট্রাকচারাল মাস্টার প্ল্যান হবে, যা সমন্বয়ী পরিকাঠামোর ভিত্তি স্থাপন করবে: প্রধানমন্ত্রী মোদী
আজ আমরা গৌরবের সঙ্গে বলতে পারি যে, আমাদের বিজ্ঞানীদের জন্য আমরা দুটি 'মেক ইন ইন্ডিয়া' কোভিড ভ্যাকসিন তৈরি করতে পেরেছি এবং বিশ্বের সবচেয়ে বড় টিকাকরণ কর্মসূচি আমাদের দেশে পরিচালিত হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী
ভারতের তরুণ প্রজন্ম টোকিও অলিম্পিকে আমাদের দেশকে গর্বিত করেছে: প্রধানমন্ত্রী মোদী
অমৃত কাল'-এর লক্ষ্য হচ্ছে, ভারত এবং ভারতের নাগরিকদের সমৃদ্ধির সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছে দেওয়া: প্রধানমন্ত্রী মোদী
ভারত কি বিকাশ যাত্রায়, আমাদের সুনিশ্চিত করতে হবে যে, যখন ভারতের স্বাধীনতার ১০০ বছর উদযাপন করব তখন আমাদের আত্মনির্ভর ভারত গড়ার লক্ষ্য পূরণ করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
২০২৪ পর্যন্ত প্রত্যেক যোজনায় প্রাপ্য চাল ফরটিফায়েড করা হবে: প্রধানমন্ত্রী মোদী
আমাদের দেশের ছোট কৃষকদের সম্মিলিত শক্তিকে আরও বাড়াতে হবে: প্রধানমন্ত্রী মোদী
বিকাশের পথে এগিয়ে যাওয়ার পথে ভারতের নিজস্ব শিল্প উৎপাদন আর রপ্তানী দুটোই বাড়াতে হবে: প্রধানমন্ত্রী মোদী
স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির উৎপাদিত পণ্য যাতে দেশে এবং বিদেশে বিরাট বাজার পায়, তার জন্য, তার জন্য সরকার ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম-ও তৈরি করবে: প্রধানমন্ত্রী মোদী
গ্রিন হাইড্রোজেন ক্ষেত্রে লক্ষ্য প্রাপ্তির জন্য আমি আজ এই জাতীয় পতাকাকে সাক্ষী রেখে ন্যাশনাল হাইড্রোজেন মিশন ঘোষণা করছি: প্রধানমন্ত্রী মোদী
আমাদের তরুণরা হল 'ক্যান ডু জেনারেশন', এরা প্রত্যেক লক্ষ্যে পৌঁছনোর ক্ষমতা রাখে: প্রধানমন্ত্রী মোদী

আমার প্রিয় দেশবাসীগণ ,

স্বাধীনতার অমৃত মহোত্সব, ৭৫ তম স্বাধীনতা দিবসের এই সমারোহে যাঁরা উপস্থিত আছেন আপনাদের সবাইকে এবং গোটা বিশ্বে ভারতকে ভালবাসেন, গণতন্ত্রকে ভালবাসেন, এমন সবাইকে অনেক অনেক শুভকামনা জানাচ্ছি। আজ স্বাধীনতার অমৃত মহোত্সবের এই পবিত্র পর্বে দেশ নিজের সমস্ত স্বাধীনতা সংগ্রামী, সমস্ত বীর সেনানী, যাঁরা দেশের সুরক্ষায় দিনরাত এক করে নিজেদের উৎসর্গ করেন, সেই সমস্ত বীরাঙ্গনাদের দেশ আজ প্রণাম জানাচ্ছে।

স্বাধীনতাকে গণআন্দোলনে রূপান্তরিত করা পূজনীয় বাপু থেকে শুরু করে স্বাধীনতার জন্য নিজেদের সমস্ত কিছু বিলিয়ে দেওয়া নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, ভগত সিং, চন্দ্রশেখর আজাদ, বিসমিল এবং আশফাকুল্লাহ খানের মতো মহান মুক্তি সেনানী থেকে শুরু করে ঝাঁসির রাণী লক্ষ্মীবাই, চিত্তুরের রাণী চিনাম্মা, অথবা রাণী গাইদুলু, অথবা মাতঙ্গিনী হাজরার দুঃসাহসী লড়াই, দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত নেহরুজি থেকে শুরু করে দেশকে ঐক্যবদ্ধ রাষ্ট্রে পরিবর্তিত করা সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল, কিম্বা ভারত গঠনের দিশা নির্দেশকারী, পথ নির্মাণকারী বাবাসাহেব আম্বেদকর-সহ প্রত্যেক ব্যক্তি ও ব্যক্তিত্বকে দেশ আজ স্মরণ করছে। দেশ এই সমস্ত মহান মানুষদের কাছে ঋণী।

ভারত তো বহুরত্না বসুন্ধরা! আজ ভারতের প্রতিটি প্রান্তে, প্রতিটি সময় খণ্ডে অসংখ্য মানুষ, যাঁদের নাম হয়তো বা ইতিহাসের পাতায় খুঁজে পাওয়া যাবে না, সেই তাঁরাই এই দেশ গড়েছেন, একে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। আমি এরকম প্রত্যেক মানুষকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছি, তাঁদের অভিনন্দিত করছি।

ভারত বহু শতাব্দী ধরে মাতৃভূমি, সংস্কৃতি এবং স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করেছে। পরাধীনতার গ্লানি, স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা এই দেশ শতাব্দী ধরে কখনই পরিত্যাগ করেনি। সে যতই জয় কিম্বা পরাজয় আসুক, কিন্তু মনের মন্দিরে লালন করে আসা স্বাধীনতার আর্তিকে কখনও ফুরিয়ে যেতে দেয়নি।

আজ সেই সব সংঘর্ষের পুরোধা, বহু শতাব্দী ধরে চলা সংঘর্ষের পুরোধা সকলকেও প্রণাম জানাচ্ছি এবং তাঁরা সেই প্রণাম পাওয়ার অধিকারীও বটে।

বিশ্বব্যাপী করোনা অতিমারিতে আমাদের চিকিত্সক, সেবিকা, প্যারামেডিক্যাল কর্মী, সাফাই কর্মী, টিকা তৈরির কাজে নিয়োজিত আমাদের বিজ্ঞানীরা, সেবার মানসিকতায় এগিয়ে আসা আমাদের কোটি কোটি ভারতবাসী, যাঁরা করোনাকালে নিজেদের জীবনের পল-অনুপল বিলিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা সবাই আমাদের বন্দনার অধিকারী।

আজও দেশের কিছু কিছু এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি রয়েছে। ভূমিধ্বসও হয়েছে। কিছু কিছু দুঃখদায়ক খবরও আসছে। অনেক জায়গাতেই এমন পরিস্থিতি মানুষের সমস্যা বাড়িয়ে দিয়েছে। এই সময়ে কেন্দ্রীয় সরকার থেকে শুরু করে রাজ্য সরকার, প্রত্যেকেই দৃঢ়তার সঙ্গে বিপন্নদের পাশে দাঁড়িয়েছে।

আজকের এই আয়োজনে অলিম্পিকে ভারতের যুব প্রজন্মের যাঁরা দেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন, সেরকম আমাদের অ্যাথলেট, আমাদের খেলোয়াড়রা আমাদের সঙ্গে আছেন। কেউ এখানে আছেন, কেউ সামনে বসে আছেন, আমি আজ ভারতের সমস্ত প্রান্ত থেকে এই সমারোহের সাক্ষী সমস্ত দেশবাসীকে, এখানে যাঁরা আছেন, তাঁদেরও আমি বলছি, আসুন, আমাদের খেলোয়াড়দের কিছুক্ষণ করতালির মাধ্যমে সম্মান জানাই। ভারতের খেলাধুলোকে সম্মান জানাই। ভারতের যুবপ্রজন্মকে সম্মান জানাই। ভারতকে গৌরবান্বিত করা তারুণ্যকে সম্মান জানাই, দেশ, দেশের কোটি কোটি মানুষ আজ করতালির মাধ্যমে আমাদের এই তরুণদের গৌরবোজ্জ্বলতাকে সম্মানিত করছে। এই অ্যাথলেটরা, বিশেষ করে আমরা গর্ব করতে পারি যে, তাঁরা শুধু আমাদের মন জয়ই করেননি, বরং তাঁরা আমাদের আগামী প্রজন্মকে, ভারতের যুব প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করার বিশাল বড় কাজ করেছেন।

আমার প্রিয় দেশবাসী,

আমরা স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করি। কিন্তু দেশভাগের ব্যথায় আজও ভারতের বুক ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। এটা গত শতাব্দীর সবচেয়ে বড় বিপর্যয়কর ঘটনার অন্যতম। স্বাধীনতার পর এই মানুষদের খুব দ্রুত বিস্মৃতির অন্তরালে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। গতকালই ভারত এক আবেগপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন থেকে প্রতি বছর ১৪ আগস্ট তারিখটিকে ‘বিভাজন বিভীষিকা স্মৃতি দিবস’ হিসেবে স্মরণ করা হবে। সাধারণ মানুষ দেশভাগের সময় যে অমানবিক অবস্থার মধ্য দিয়ে জীবন অতিবাহিত করেছেন, যাঁরা অত্যাচার সহ্য করেছেন, যাঁদের সম্মানের সঙ্গে অন্তিম সত্কার পর্যন্ত ভাগ্যে জোটেনি, আমাদের মনে তাঁদের স্মৃতি জাগ্রত রাখাও ততটাই জরুরি। ৭৫তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে ‘বিভাজন বিভীষিকা স্মৃতি দিবস’ এর সিদ্ধান্ত, এমন মানুষদের প্রতি সমস্ত ভারতবাসীর পক্ষ থেকে সাদর শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন।

আমার প্রিয় দেশবাসী,

প্রগতির পথে এগিয়ে চলা আমাদের দেশের সামনে তো বটেই, গোটা বিশ্বের মানুষের সামনেও করোনার এই সময় অনেক বড় সমস্যা হিসেবে সামনে এসে হাজির হয়েছে। ভারতের মানুষ অনেক সংযম, অনেক ধৈর্য সহকারে এই লড়াই চালিয়ে গেছেন। এই লড়াইতে আমাদের সামনে অনেক ধরনের চ্যালেঞ্জ ছিল। কিন্তু প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের দেশের মানুষ অসাধারণ গতিতে কাজ করেছেন। আমাদের বৈজ্ঞানিক, আমাদের শিল্পোদ্যোগীদের তত্পরতারই ফসল হল ভারতে তৈরী টিকা, যার জন্য আজ আমাদের আর কারও ওপর নির্ভরশীল হতে হচ্ছে না। আপনারা ভাবুন, কিছুক্ষণের জন্য চিন্তা করুন তো, যদি ভারতের কাছে নিজেদের তৈরি করা টিকা না থাকতো, তাহলে কি হতো! পোলিওর টিকা পেতে আমাদের কতগুলি বছর লেগে গিয়েছিল।

এতবড় সংকটে, যখন গোটা পৃথিবীতে অতিমারি চলছে, সেই সময় আমরা কোথা থেকে টিকা পেতাম? আর হয়তো পাওয়াও যেত না, আর টিকা পাওয়া গেলেও কবে পেতাম? কিন্তু আজ আমরা গৌরবের সঙ্গে বলতে পারি যে, আজ বিশ্বের সবচেয়ে বড় টিকাকরণ কর্মসূচি আমাদের দেশে পরিচালিত হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ৫৪ কোটিরও বেশি মানুষ টিকার ডোজ পেয়ে গেছেন। কো-উইন এর মত অনলাইন ব্যবস্থা, ডিজিট্যাল সার্টিফিকেট দেওয়ার ব্যবস্থা আজ দুনিয়ার নজর কাড়ছে।

অতিমারির সময় ভারত যেভাবে আশি কোটি দেশবাসীকে বহু মাস ধরে বিনামূল্যে খাদ্যশস্য জুগিয়ে সেই গরিবদের উনুন জ্বালিয়ে রেখেছে, এটাও পৃথিবীর সামনে চমকে যাওয়ার বিষয় এবং এ নিয়ে আলোচনাও চলছে বটে। এটা ঠিক অন্য দেশের তুলনায় ভারতে কম লোক সংকটে পড়েছেন, এটাও ঠিক বিশ্বের অন্য দেশগুলির জনসংখ্যার তুলনায় আমরা এদেশে অনেক বেশি সংখ্যায় মানুষকে বাঁচাতে পেরেছি।

কিন্তু তা আমাদের জন্য পিঠ চাপড়ানোর বিষয় নয়, আত্মতুষ্টিতে নিদ্রা যাবার বিষয়ও নয়। এটা কোন চ্যালেঞ্জই ছিল না, এমনটা বলাও আমাদের প্রগতির পথে চলার অভিমুখ বন্ধ হয়ে যাবার মত বিষয়। দুনিয়ার সমৃদ্ধ দেশগুলির তুলনায় আমাদের এখানে সুবিধাজনক ব্যবস্থা কম আছে, তাঁদের যা আছে আমাদের তা নেই। কিন্তু এই সমস্ত প্রচেষ্টা সত্ত্বেও একটা কথা হল, বিশ্বের তুলনায় আমাদের জনসংখ্যাও অনেক বেশি। আমাদের জীবনযাপন শৈলীও কিছুটা অন্যরকম। সর্বাত্মক প্রয়াস সত্বেও কত মানুষকে যে আমরা বাঁচাতে পারলাম না, কত শিশুর মাথার ওপর থেকে যে আশ্বাসের হাত সরে গেছে, আদর করার, বায়না পূরণের লোক মারা গেছেন। এই অসহ্য যন্ত্রণা সর্বদা আমাদের হৃদয় কাঁপাবে!

আমার প্রিয় দেশবাসীগণ,

প্রত্যেক দেশের বিকাশ অভিযাত্রায় একটা সময় এমন আসে, যখন দেশ নিজের জন্য নতুন পরিভাষা তৈরি করে। নিজেকে নতুন শপথের পথে এগিয়ে নিয়ে যায়। ভারতের বিকাশ অভিযাত্রাতেও আজ সেই সময় এসে গেছে। ৭৫ বছরের উদযাপনকে নেহাতই একটি সমারোহের সীমানায় বেঁধে ফেললে হবে না। আমাদের নতুন সংকল্পকে ভিত্তি হিসেবে নিতে হবে। এগিয়ে যেতে হবে। এখান থেকে শুরু করে আগামী পঁচিশ বছরের যাত্রা, আমরা যখন স্বাধীনতার একশো বছর উদযাপন করবো, নতুন ভারত গরার জন্য বর্তমান সময়টা অমৃতকাল। এই অমৃত সময়ে আমাদের সংকল্পের সিদ্ধি আমাদের সগৌরবে স্বাধীনতার একশো বছরে পৌঁছে দেবে। গৌরবোজ্জলভাবে নিয়ে যাবে। এই অমৃত সময়ের লক্ষ্য হচ্ছে, ভারতকে সমৃদ্ধির সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছে দেওয়া। এই অমৃত সময়ের লক্ষ্য এমন এক ভারতের নির্মাণ, যেখানে সমৃদ্ধির স্তর এমন হবে, যেখানে গ্রাম ও শহরের বিকাশে কোনও পার্থক্য থাকবে না, যেখানে জনগণের জীবনে সরকার অকারণে নাক গলাবে না, এমন ভারত নির্মিত হবে যেখানে সব আধুনিক পরিকাঠামো থাকবে, আমরা কারও থেকে কম হবো না। এটাই কোটি কোটি দেশবাসীর সংকল্প।

কিন্তু যে কোনও সংকল্প ততক্ষণ পর্যন্ত অধরা থেকে যায়, যতক্ষণ না এর সঙ্গে পরিশ্রম এবং আগ্রাসী সাহসের যুগলবন্দী যুক্ত হয়। এজন্যই আমাদের নিজেদের সব সংকল্পকে পরিশ্রম ও আগ্রাসী সাহসের যুগলবন্দীতে সফল করে তুলতে হবে। আর এই সংকল্প দেশের সীমান্ত পেরিয়ে সমৃদ্ধ ও সুরক্ষিত বিশ্বের জন্যও কার্যকর বিষয় হবে।

অমৃত এই সময় - আগামী পঁচিশ বছরের জন্য। কিন্তু আমাদের লক্ষ্য প্রাপ্তির জন্য এত দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হবে না। আমাদের এখন থেকেই লেগে পড়তে হবে। অপেক্ষায় নষ্ট করার মত একটি মুহূর্তও আর আমাদের কাছে নেই। এটাই ঠিক সময়। আমাদের দেশকে পরিবর্তিত করতে হবে এবং দেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের নিজেদেরকে বদলাতে হবে, পরিবর্তিত সময়ের ধারা অনুসারে আমাদের নিজেদেরও পাল্টাতে হবে। সবার সঙ্গে সবার বিকাশ, সবার বিশ্বাস -- এই সশ্রদ্ধ ভাবনায় আমরা সবাই একজোট হয়েছি।

কিন্তু আজ লালাকেল্লার প্রাকার থেকে এই আহ্বান জানাচ্ছি, সবার সঙ্গে সবার বিকাশ, সবার বিশ্বাস এবং এখন সবার প্রয়াস আমাদের প্রতিটি লক্ষ্যপ্রাপ্তির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিগত সাত বছরে অনেক যোজনার সুফল কোটি কোটি গরিব মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে গেছে। উজ্জ্বলা থেকে আয়ুষ্মান ভারতের শক্তি সম্পর্কে আজ দেশের প্রত্যেক গরিব ওয়াকিবহাল। আজ সরকারী যোজনার গতি বেড়ে গেছে। সেগুলির নির্ধারিত লক্ষ্য প্রাপ্তি হচ্ছে। আগের তুলনায় আমরা অনেক বেশি গতিতে অনেকটাই এগিয়ে গেছি। কিন্তু তো এখানেই শেষ হয় না। এখন আমাদের স্যাচুরেশন পর্যন্ত পৌঁছুতে হবে, পূর্ণতায় পৌঁছতে হবে। একশ শতাংশ গ্রামে সড়ক থাকবে, একশো শতাংশ পরিবারের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকবে, সমস্ত সুবিধাপ্রাপকদের আয়ুষ্মান ভারতের কার্ড থাকবে, উজ্জ্বলা যোজনা এবং গ্যাস সংযোগ থাকবে, সরকারি বিমা যোজনা থাকবে, পেনশন যোজনা থাকবে, আবাস যোজনায় প্রত্যেক এমন ব্যক্তিকে জুড়তে হবে, যা তাদের অধিকারের মধ্যে পড়ে। একশো শতাংশ করার মানসিকতা নিয়ে চলতে হবে।

আমাদের এখানে আজ পর্যন্ত সেই সব বন্ধুদের কথা বলা হয়নি, ঠেলায় করে রাস্তার পাশে ফুটপাতে যাঁরা জিনিস বিক্রি করেন, আমি সেই বন্ধুদের স্বনিধি যোজনার মাধ্যমে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে। আমরা যেমন একশো শতাংশ ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি |ঘরে ঘরে শৌচালয় নির্মাণের প্রামাণ্য প্রয়াস চালিয়েছি। সেভাবেই যোজনা সমূহের স্যাচুরেশনের লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। আজ এজন্যই কাজ শেষ করার মেয়াদ বেশি লম্বা করলে চলবে না। আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই আমাদের সংকল্প সফল করতে হবে।

আজ দেশে প্রতি ঘরে জল পৌঁছানোর মিশন পূর্তির লক্ষ্যে দ্রুত কাজ হচ্ছে। আমি খুশি যে, জলজীবন মিশন পরিচালনার মাত্র দু’বছরেই সাড়ে চার কোটিরও বেশি পরিবার নলের মাধ্যমে জল পেতে শুরু করেছে। কোটি কোটি মা - বোনেদের আশির্বাদই আমাদের পুঁজি। এই একশো শতাংশের লাভ এটাই যে, এর ফলে সরকারী সুবিধা থেকে কেউ বঞ্চিত থাকেন না। যখন সরকার এই লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে চলে যে, আমাদের সমাজের প্রান্তিক মানুষটির কাছে পর্যন্ত পৌঁছাতে হবে, তখন কাজ কিভাবে হয় এবং কোনও দুর্নীতিরও অবকাশ থাকে না।

আমার প্রিয় দেশবাসী,

দেশের প্রত্যেক গরিব মানুষের পুষ্টি নিশ্চিত করাও সরকারের এক দায়িত্ব। দেশের প্রত্যেক মহিলা, প্রত্যেক শিশুর বিকাশে জরুরি পুষ্টিকর উপাদানের অভাব বাধা তৈরি করে। সেটা দেখেই স্থির করা হয়েছে যে, সরকারের নিজের ভিন্ন ভিন্ন যোজনার আওতায় যে চাল দেওয়া হয়ে থাকে, সেগুলিকে আরও গুণমানযুক্ত বা ফরটিফায়েড করা হবে। গরিবদের সেই অতিরিক্ত পুষ্টির চাল বিতরণ করা হবে। রেশনের দোকানে দেওয়া চাল হোক, মিড ডে মিলে বালকদের প্রাপ্য চালই হোক, ২০২৪ পর্যন্ত প্রত্যেক যোজনায় প্রাপ্য চাল ফরটিফায়েড করা হবে।

আমার প্রিয় দেশবাসী,

আজ দেশের প্রত্যেক গরিবকে উন্নততর স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছানোর মত অভিযানও দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। এজন্য চিকিত্সা শিক্ষার ক্ষেত্রেও অনেক বড় সংস্কার আনা হয়েছে। প্রতিরোধক স্বাস্থ্য পরিষেবার প্রতিও ততটাই নজর দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে মেডিকেল সিটের আসন সংখ্যাও অনেকটাই বাড়ানো হয়েছে। আয়ুষ্মান ভারত যোজনার আওতায় দেশের গ্রামগুলিতে পর্যন্ত গুণগতমানের স্বাস্থ্যসেবা সহজলভ্য করা হছে। জনঔষধি যোজনার মাধ্যমে দেশের গরিব, মধ্যবিত্তকে সস্তার ওষুধ সহজলভ্য করানো হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ৭৫ হাজারেরও বেশি হেলথ এন্ড ওয়েলনেস সেন্টার গড়ে তোলা হয়েছে। এখন ব্লকস্তর পর্যন্ত উন্নত মানের হাসপাতাল ও উন্নত গুণমানের ল্যাব নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। খুব শিগগিরই দেশের হাজার হাজার হাসপাতালের কাছে নিজস্ব অক্সিজেন প্ল্যান্টও থাকবে।

আমার প্রিয় দেশবাসী,

একুশ শতকে ভারতকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবার জন্য ভারতের নতুন সক্ষমতাকে ঠিকভাবে, পরিপূর্ণভাবে কাজে লাগানোই বর্তমান সময়ের দাবি এবং তা জরুরিও বটে। এজন্য যাঁরা পিছিয়ে আছেন, যে এলাকাগুলি পিছিয়ে আছে, সেগুলিকে হাতে হাত ধরে এগিয়ে নিতে হবে। প্রাথমিক প্রয়োজনের বিষয়গুলি ভাবনার পাশাপাশি দলিত, অনগ্রসর, আদিবাসী, সাধারণ শ্রেণীর গরিবদের জন্য সংরক্ষণ নিশ্চিত করা হচ্ছে। সম্প্রতি চিকিত্সা শিক্ষার ক্ষেত্রে অল ইন্ডিয়া কোটায় ওবিসি সম্প্রদায়ের জন্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সংসদে আইন পাশ করিয়ে রাজ্যগুলিকে ওবিসি তালিকা তৈরির অধিকার প্রদান করা হয়েছে।

আমার প্রিয় দেশবাসী,

আমরা যেভাবে এটা সুনিশ্চিত করছি বিকাশের অভিযাত্রায় কোনও মানুষ, কোনও শ্রেণি যেন বিচ্ছিন্ন না থাকে, একই ভাবে দেশের কোন প্রান্ত, কোন ভূখণ্ড যেন বিকাশ থেকে বঞ্চিত না হয়। বিকাশ সর্বব্যাপী হতে হবে। বিকাশ সর্বস্পর্শী হতে হবে। অনগ্রসর ক্ষেত্রগুলির বিকাশে বিগত সাত বছরে যে প্রয়াস চালানো হয়েছে, এখন সেগুলিকে আরও গতিশীল করতে আমরা এগিয়ে চলেছি। আমাদের পূর্ব ভারত, উত্তর-পূর্ব ভারত, জম্মু-কাশ্মীর, লাদাখ সহ গোটা হিমালয় সংলগ্ন অঞ্চল, উপকূলীয় অঞ্চল বা আদিবাসী অঞ্চল অদূর ভবিষ্যতে ভারতের বিকাশে, ভারতের বিকাশ যাত্রায় বিশাল ভিত্তি রচনা করবে। আজ উত্তর-পূর্বে যোগাযোগের নতুন ইতিহাস রচিত হচ্ছে। এই যোগাযোগ হৃদয়ের তো বটেই, পরিকাঠামোরও। খুব শিগগিরই উত্তর-পূর্বের সমস্ত রাজ্যের রাজধানীকে রেল পরিষেবায় যুক্ত করার কাজ সম্পন্ন হতে চলেছে। ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতির আওতায় বাংলাদেশ, মায়ানমার এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সঙ্গেও যোগাযোগ স্থাপিত হচ্ছে। বিগত বছরগুলিতে যে প্রয়াস চালানো হচ্ছিল সে কারণে আমরা উত্তর-পূর্বে স্থায়ী শান্তির জন্য, শ্রেষ্ট ভারত গড়ার জন্য অনেক গুণ বেশি উত্সাহ দেখতে পাচ্ছি। উত্তর পূর্বে পর্যটন, এডভেঞ্চার স্পোর্টস, অর্গানিক ফার্মিং, হারবাল মেডিসিন, অয়েল পাম্প প্রভৃতিতে সম্ভাবনা অনেক বেশি। আমাদের পরিপূর্ণভাবে সেই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে। দেশের বিকাশ যাত্রার অংশীদার করে তুলতে হবে। আর আমাদের তা এই অমৃত সময়ের কয়েক দশকের মধ্যেই সম্পূর্ণ করতে হবে।

সবার সক্ষমতাকে উপযুক্ত গুরুত্ব দেওয়াই গণতন্ত্রের আসল ভাবণা। জম্মু হোক বা কাশ্মির বিকাশের ভারসাম্য বাস্তবে দেখা যাচ্ছে। জম্মু কাশ্মীরেই ডিলিমিটেশন কমিশন গঠন করা হয়েছে। আর ভবিষ্যতে বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতিও চলছে। লাদাখও বিকাশের অসীম সম্ভাবনার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। একদিকে লাদাখ আধুনিক পরিকাঠামোগুলি নির্মাণ হতে দেখছে, অন্যদিকে সিন্ধু সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি লাদাখকে উচ্চশিক্ষার, হায়ার এডুকেশনের কেন্দ্রও বানাচ্ছে। একুশ শতকের এই দশকে ভারত ব্লু ইকোনমির ক্ষেত্রে নিজস্ব প্রয়াসকে আরও গতি দেবে। আমাদের অ্যাকুয়া কালচারের পাশাপাশি সী উইডের চাষে যে নতুন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে, সেই সম্ভাবনারও পুরো লাভ তুলতে হবে। ডিপ ওশান মিশন সমুদ্রের অসীম সম্ভাবনার খোঁজ আমাদের মহত্বাকাঙ্খার প্রমাণ। যে খনিজ সম্পদ সমুদ্রে লুকিয়ে আছে, যে থার্মাল এনার্জি সমুদ্রের জলে আছে, তা দেশের বিকাশকে নতুন উচ্চতা দিতে পারে। দেশের যে জেলাগুলি সম্পর্কে মনে করা হয়েছে যে পিছিয়ে আছে, আমরা সেগুলির আকাঙ্খাকেও জাগিয়েছি। দেশে ১১০টির বেশি প্রত্যাশী জেলা, প্রত্যাশী জেলাগুলিতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি, সড়ক, রোজগারের সঙ্গে সম্পর্কিত প্রকল্পকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে অনেক জেলা আমাদের আদিবাসী এলাকায়। আমরা এই জেলাগুলিতে বিকাশের এক অতন্দ্র স্পর্ধার, একটা উৎসাহের জন্ম দিয়েছি। এই প্রত্যাশী জেলাগুলি যাতে ভারতের অন্য জেলার সমকক্ষ হয়, সেই লক্ষ্যে দ্রুত কাজ হচ্ছে।

আমার সকল দেশবাসী, আর্থিক জগতে পুঁজিবাদ আর সমাজবাদ এর আলোচনা তো অনেক হয়। কিন্তু ভারত সমবায়বাদের উপরেও জোর দেয়। সমবায়বাদ আমাদের ঐতিহ্য আমাদের সংস্কারের অনুকূল। সমবায় ব্যবস্থা, যেখানে আমাদের জনগণের মিলিত শক্তি অর্থব্যবস্থার নিয়ন্ত্রক হিসেবে চালিকা শক্তি হয়। দেশের তৃণমূল স্তরের অর্থনীতির জন্য একটি প্রধান ক্ষেত্র সমবায়। এটা শুধুমাত্র আইন, নিয়মের জঞ্জালের একটি ব্যবস্থা নয়। বরঞ্চ সমবায় একটি প্রাণশক্তি, সমবায় একটি শিষ্টাচার, যৌথভাবে চলার এক মানসিকতা। তাকে যাতে শক্তিশালী করা যায়, আমরা আলাদা মন্ত্রক বানিয়ে সেই লক্ষ্যে পদক্ষেপ নিয়েছি। আর, রাজ্যগুলিতে যে সমবায় ক্ষেত্র আছে, তাকে যতটা জোর দেওয়া যায়, সেই জোর দেওয়ার জন্য আমরা এই পদক্ষেপ নিয়েছি।

আমার সকল দেশবাসী, আর্থিক জগতে পুঁজিবাদ আর সমাজবাদ এর আলোচনা তো অনেক হয়। কিন্তু ভারত সমবায়বাদের উপরেও জোর দেয়। সমবায়বাদ আমাদের ঐতিহ্য আমাদের সংস্কারের অনুকূল। সমবায় ব্যবস্থা, যেখানে আমাদের জনগণের মিলিত শক্তি অর্থব্যবস্থার নিয়ন্ত্রক হিসেবে চালিকা শক্তি হয়। দেশের তৃণমূল স্তরের অর্থনীতির জন্য একটি প্রধান ক্ষেত্র সমবায়। এটা শুধুমাত্র আইন, নিয়মের জঞ্জালের একটি ব্যবস্থা নয়। বরঞ্চ সমবায় একটি প্রাণশক্তি, সমবায় একটি শিষ্টাচার, যৌথভাবে চলার এক মানসিকতা। তাকে যাতে শক্তিশালী করা যায়, আমরা আলাদা মন্ত্রক বানিয়ে সেই লক্ষ্যে পদক্ষেপ নিয়েছি। আর, রাজ্যগুলিতে যে সমবায় ক্ষেত্র আছে, তাকে যতটা জোর দেওয়া যায়, সেই জোর দেওয়ার জন্য আমরা এই পদক্ষেপ নিয়েছি।

আমার প্রিয় দেশবাসী,

এই দশকে, আমাদের গ্রামে নতুন আর্থ ব্যবস্থা নির্মাণের জন্য পুরো শক্তি লাগাতে হবে। আজ আমরা আমাদের গ্রামগুলিকে দ্রুত পরিবর্তিত হতে দেখছি। গত কিছু বছরে গ্রাম পর্যন্ত বিদ্যুৎ আর সড়কের সুবিধা পৌঁছানো হচ্ছে। এই পুরো সময়কালটা আমাদের ছিল। কিন্তু এখন গ্রামগুলিতে অপ্টিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্ক ডেটার শক্তি পৌঁছচ্ছে। ইন্টারনেট পৌঁছোচ্ছে। গ্রামেও ডিজিট্যাল আন্ত্রেপ্রেনার তৈরি হচ্ছে। গ্রামে আমাদের স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে যুক্ত ৮ কোটির বেশি বোনেরা আছেন। তাঁরা একটার চেয়ে আরেকটা ভাল পণ্য উৎপাদন করছেন। তাদের উৎপাদিত পণ্য যাতে দেশে এবং বিদেশে বিরাট বাজার পায়, তার জন্য, তার জন্য সরকার ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম-ও তৈরি করবে। এখন যখন দেশ ভোকাল ফর লোকাল মন্ত্র নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন, এই ডিজিট্যাল প্ল্যাটফর্ম মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর উৎপাদিত পণ্যকে দেশের দূরদূরান্তের এলাকায় এবং বিদেশেও মানুষকে জুড়বে, এবং তার প্রভাবও খুব বিস্তৃত হবে।

করোনার সময়ে দেশে প্রযুক্তির শক্তি, আমাদের বিজ্ঞানীদের শক্তি আর তাদের ক্ষমতাও আমরা দেখেছি। দেশের প্রতিটি এলাকায় আমাদের বৈজ্ঞানিকেরা অনেক চিন্তাভাবনার সঙ্গে কাজ করছেন। এখন সময় এসেছে, আমাদের কৃষিক্ষেত্রেও বৈজ্ঞানিকদের ক্ষমতা আর তাঁদের পরামর্শগুলিকে, কৃষি ক্ষেত্রের সঙ্গে জুড়তে হবে। তার জন্য বেশিদিন অপেক্ষা করা যাবে না। আমাদের এর পুরো লাভ তুলতে হবে। দেশকে খাদ্য সুরক্ষা দেওয়ার সঙ্গেই ফল, সবজি আর তরকারির উৎপাদন বৃদ্ধিতে বিপুল সহায়তা পাওয়া যাবে। আর আমরা বিশ্ব পর্যন্ত পৌঁছতে নিজেদের জোরের সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যাব। এর সঙ্গেই, আমাদের কৃষিক্ষেত্রের একটি বড় চ্যালেঞ্জের দিকে নজর দিতে হবে। সেটা হল, গ্রামের লোকেদের কাছে ক্রমশ কমতে থাকা জমি। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পরিবারগুলি টুকরো হয়ে যাওয়ায় কৃষকের জমি ছোট ছোট হয়ে যাচ্ছে। দেশে ৮০ শতাংশের বেশি এমন কৃষক আছেন, যাদের কাছে জমির পরিমাণ দুই হেক্টরের চেয়েও কম। আমরা যদি দেখি, একশোর মধ্যে ৮০ জন কৃষক, তাদের কাছে দুই হেক্টরের কম জমি, মানে দেশের কৃষক এক অর্থে ছোট কৃষক। আগে দেশে যে নীতিগুলি ছিল, তাতে ছোট কৃষকদের প্রতি যে প্রাথমিকতা দেওয়া হতো, তাদের প্রতি যতটা নজর দেওয়া দরকার ছিল, তা হয়নি। এখন দেশে, এই ছোট কৃষকদের কথা মাথায় রেখেই কৃষির সংস্কার করা হচ্ছে। সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। ফসল বিমা যোজনায় সংস্কার হোক, এমএসপি-কে দেড় গুণ করার গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হোক, ছোট কৃষকদের কিষাণ ক্রেডিট কার্ড দ্বারা সস্তা দরে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণের ব্যবস্থা হোক, সৌর শক্তির সঙ্গে যুক্ত প্রকল্পগুলি চাষের জমি পর্যন্ত পৌঁছনোর ব্যবস্থা হোক, কিষাণ উৎপাদক সংগঠন হোক --- এই সমস্ত প্রয়াস ছোট কৃষকদের শক্তি বাড়াবে। আগামী দিনে ব্লক স্তর পর্যন্ত অয়্যারহাউসের ফেসিলিটি গড়ে তোলার অভিযান চালানো হবে। প্রত্যেক ছোট কৃষকের ছোট ছোট খরচকে মনে রেখে পি এম কিষাণ সম্মান নিধি প্রকল্প চালানো হচ্ছে। ১০ কোটির বেশি কৃষকের ব্যাঙ্ক খাতায় এই পর্যন্ত দেড় লাখ কোটি চেয়েও বেশি টাকা তাদের সরাসরি অ্যাকাউন্টে জমা করানো হয়েছে। ছোট কৃষক এখন আমাদের জন্য আমাদের মন্ত্র, আমাদের সংকল্প, ছোট কিষাণ হোক দেশের সম্মান। ছোট কিষাণ হোক দেশের সম্মান। এটাই আমাদের স্বপ্ন।

আগামী দিনে, আমাদের দেশের ছোট কৃষকদের সম্মিলিত শক্তিকে আরও বাড়াতে হবে। নতুন সুবিধা দিতে হবে। আর দেশের ৭০টির বেশি রেল রুটে কিষাণ রেল চলছে। কিষাণ রেল ছোট কৃষকদের নিজেদের উৎপাদন কম পয়সায়, যাতে পরিবহন খরচ কম হয়, তারা দূরদূরান্তের এলাকায় আধুনিক সুবিধার সঙ্গে নিজেদের ফসল পৌঁছতে পারছে। কমলম হোক বা শাহী লিচু, ভুতজালুকা হোক বা কালো চাল বা হলুদ, আজ দুনিয়ার অনেক অনেক দেশে পাঠানো হচ্ছে। দেশ খুশি হয়, যখন ভারতের জমিতে উৎপন্ন পন্যের সুগন্ধ বিশ্বের আলাদা আলাদা দেশে পৌঁছায়। ভারতের ক্ষেত থেকে আসা সবজি আর খাদ্যশষ্য দিয়ে আজ বিশ্বের টেস্ট তৈরি হচ্ছে।

আমার প্রিয় দেশবাসী,

কিভাবে আজ গ্রামের সামর্থ্য বাড়ানো হচ্ছে, তার একটি উদাহরণ হল স্বামীত্ব যোজনা। আমরা জানি, গ্রামের জমির দামের কী অবস্থা হয়। জমির জন্য ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ দেয় না, নিজে জমির মালিক হওয়া সত্বেও। কারণ, গ্রামে জমির দলিলে বেশ কিছু প্রজন্মে কোনও কাজ হয়নি। মানুষের কাছে তার কোনও ব্যবস্থা নেই। এই অবস্থা বদলের কাজ আজ স্বামীত্ব যোজনা করছে। আজ প্রত্যেক গ্রামের প্রত্যেক পরিবারের প্রত্যেক জমির ড্রোন দিয়ে মানচিত্র আঁকা হচ্ছে। গ্রামের জমির তথ্য আর সম্পত্তির দলিল অনলাইনে আপলোড করা হচ্ছে। এর দ্বারা গ্রামে জমি সম্পর্কিত দ্বন্দ্বই কেবল সমাপ্ত হচ্ছে না, উপরন্তু গ্রামের লোকেদের ব্যাঙ্ক থেকে সহজে ঋণ পাওয়ার ব্যবস্থাও তৈরি হয়েছে। গ্রামের গরিবের জমি বিবাদের নয়, বিকাশের আধার হোক, আজ সেই লক্ষ্যে এগোচ্ছে।

আমার প্রিয় দেশবাসী,

স্বামী বিবেকানন্দ যখন ভারতের ভবিষ্যতে কথা বলেন, নিজের চোখের সামনে ভারতমাতার ভব্যতা যখন দর্শন করেন, তিনি বলতেন, যতদূর সম্ভব অতীতের দিকে দেখো। যতদূর সম্ভব পিছনের দিকে তাকাও। পিছনে যে চিরনতুন ঝর্ণাধারা বহমান, আকণ্ঠ তার জল পান করো। আর তারপর দেখুন বিবেকানন্দ জির বিশেষত্ব --- তারপর সামনের দিকে তাকাও। এগিয়ে যাও আর ভারতকে আগের থেকে আরও বেশি উজ্জ্বল, মহান, শ্রেষ্ঠ বানাও।

স্বাধীনতার ৭৫ তম বর্ষে আমাদের দায়িত্ব হল, দেশের অসীম ক্ষমতার উপর বিশ্বাস রেখে এগিয়ে যাই। আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে, পরবর্তী প্রজন্মের পরিকাঠামোর জন্য। আমাদের মিলিতভাবে কাজ করতে হবে বিশ্বমানের পণ্য উৎপাদনের জন্য। আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে, পরবর্তী প্রজন্মের কাটিং এডজ উদ্ভাবনের জন্য। আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির জন্য।

আমার প্রিয় দেশবাসী,

আধুনিক বিশ্বে প্রগতির ভিত আধুনিক পরিকাঠামোর উপর নির্ভরশীল। সেটাই মধ্যবিত্তের প্রয়োজনীয়তা, আকাঙ্খা পূরণ করে। দুর্বল পরিকাঠামোর বিরাট বড় ক্ষতি বিকাশের গতিরও হয়, শহরের মধ্যবিত্তেরও হয়।

আমার প্রিয় দেশবাসী,

এই বিষয়টা বুঝে জল, স্থল, অন্তরীক্ষ প্রতিটি ক্ষেত্রে দেশ অসাধারণ স্পিড আর স্কেলে কাজ করে দেখাচ্ছে। নতুন জলপথ, ওয়াটারওয়েজ হোক, নতুন নতুন স্থানে সি প্লেনের মাধ্যমে জোড়ার ক্ষেত্রে দেশে খুব দ্রুতগতিতে কাজ হচ্ছে। ভারতীয় রেলও দ্রুত নতুন চেহারায় বদলাচ্ছে। দেশ সংকল্প নিয়েছে যে, স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবে, আপনাদের জানা আছে যে স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবকে ৭৫ সপ্তাহ ধরে পালনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। ১২ মার্চ থেকে শুরু হয়েছে আর ২০২৩-এর ১৫ আগস্ট পর্যন্ত চালাতে হবে, উৎসাহের সঙ্গে এগোতে হবে। এইজন্য দেশ এক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবের ৭৫ সপ্তাহে, ৭৫টি সপ্তাহে ৭৫টি বন্দে ভারত ট্রেন দেশের প্রত্যেক কোনাকে পরস্পরের সঙ্গে জুড়বে। আজ যে গতিতে দেশে নতুন এয়ারপোর্ট নির্মাণ হচ্ছে, উড়ান যোজনা দূরদূরান্তের এলাকাকে জুড়ছে, তা অভূতপূর্ব। আজ আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, উন্নত বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য মানুষের স্বপ্নও নতুন উড়ান দিচ্ছে।

আমার প্রিয় দেশবাসী, ভারত আধুনিক পরিকাঠামোর সঙ্গেই পরিকাঠামো নির্মাণে সমন্বয়ী দৃষ্টিকোণ, অখণ্ড দৃষ্টিকোণ গ্রহণ করা খুব জরুরি। আগামী কিছু দিনেই আমরা কোটি কোটি দেশবাসীর স্বপ্ন পূরণ করার একটি খুব বড় পরিকল্পনা, প্রধানমন্ত্রী গতিশক্তির ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যান দেশের সামনে নিয়ে আসতে চলেছি। সেটি চালু করতে চলেছি। একশো লক্ষ কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে এই পরিকল্পনা লক্ষ লক্ষ যুবক-যুবতিদের জন্য রোজগারের এক নতুন সুযোগ নিয়ে আসবে। গতিশক্তি আমাদের দেশের জন্য একটি এমন নতুন ন্যাশনাল ইনফ্রাস্ট্রাকচারাল মাস্টার প্ল্যান হবে, যা সমন্বয়ী পরিকাঠামোর ভিত্তি স্থাপন করবে। আমাদের অর্থনীতিকে এক নতুন অখণ্ড এবং সমন্বয়ী পথ দেখাবে। এখন আমরা দেখতে পাই যে, আমাদের ট্রান্সপোর্টের কাজকর্মে কোনও যোগাযোগ নেই। গতিশক্তি ঢিমেতালকে ভেঙে দেবে। ভবিষ্যতের রাস্তা থেকে এই সব বাধাগুলিকে, তার সঙ্গেই আরও যে সব সমস্যাগুলি আছে, সেগুলি হটিয়ে দেবে। এজন্য সাধারণ মানুষের জন্য যাতায়াতের সময় কমে যাবে আর আমাদের শিল্পোদ্যোগগুলির উৎপাদনক্ষমতা আরও বেড়ে যাবে। গতিশক্তি আমাদের স্থানীয় উৎপাদকদের আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতায় নামতেও খুব বেশি সাহায্য করবে আর এর দ্বারা ভবিষ্যতে ইকোনমিক জোনগুলি গড়ে তোলার নতুন সম্ভাবনাও বিকশিত হবে। অমৃতকালের এই দশকে গতির শক্তি ভারতের কায়াকল্পের আধার হবে।

আমার প্রিয় দেশবাসী,

বিকাশের পথে এগিয়ে যাওয়ার পথে ভারতের নিজস্ব শিল্প উৎপাদন আর রপ্তানী দুটোই বাড়াতে হবে। আপনারা দেখেছেন, এই কিছুদিন আগেই ভারত তার নিজস্ব স্বদেশী এয়ারক্র্যাফট ক্যারিয়ার আইএনএস বিক্রান্তকে সমুদ্রে ট্রায়াল-এর জন্য নামিয়েছে। ভারত আজ নিজস্ব যুদ্ধ বিমান বানাচ্ছে, নিজস্ব ডুবোজাহাজ বানাচ্ছে। মহাকাশযানও অন্তরীক্ষে ভারতের পতাকা ওড়ানোর জন্য তৈরি হচ্ছে। এগুলি স্বদেশী শিল্প উৎপাদনে আমাদের ক্ষমতাকে প্রকাশ করে।

করোনার পর উদ্ভূত নতুন আর্থিক পরিস্থিতিতে মেক ইন ইন্ডিয়া স্থাপনের জন্য দেশ উৎপাদন ভিত্তিক উৎসাহভাতা ঘোষণা করেছে। এই প্রকল্পে যে পরিবর্তন আসছে, তার উদাহরণ বৈদ্যুতিন শিল্প উৎপাদন ক্ষেত্রে আছে। সাত বছর আগে আমরা প্রায় ৮ বিলিয়ান ডলারের মোবাইল ফোন ইমপোর্ট অর্থাৎ আমদানী করতাম। এখন আমদানী অনেক কমে গেছে, আজ আমরা তিন বিলিয়ান ডলারের মোবাইল ফোন রপ্তানী করছি।

আজ যখন আমাদের শিল্প নির্মাণ ক্ষেত্রে উৎপাদন গতি পাচ্ছে, তো আমাদের মনে রাখতে হবে যে, আমরা ভারতে যেটা বানাবো, সেগুলিকে আমরা শ্রেষ্ঠ উৎকর্ষের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় যেন অংশগ্রহণ করি আর পারলে এক কদম এগিয়ে থাকি, এমনই প্রস্তুতি নিতে হবে আর আন্তর্জাতিক বাজারকে আমাদের টার্গেট করতে হবে। দেশের সব শিল্প উৎপাদকদের আমি অনুরোধ জানাতে চাই, আমাদের শিল্প উৎপাদকদের একথা কখনও ভোলা চলবে না যে, আপনারা যে পণ্য বিদেশে বেচেন, সেটি কেবল আপনাদের কোম্পানির বানানো একটি যন্ত্রাংশ নয়, নিছকই একটি পণ্য নয়, তার সঙ্গে ভারতের পরিচয় যুক্ত আছে, ভারতের সম্মান যুক্ত আছে, ভারতের কোটি কোটি মানুষের বিশ্বাস জুড়ে আছে।

আমার প্রিয় দেশবাসী, আমি এইজন্য শিল্প উৎপাদকদের বলছি, আপনাদের প্রত্যেকটি পণ্য ভারতের ব্র্যান্ড আম্বেসেডর। যতক্ষণ সেই পণ্য ব্যবহারের কাজে লাগছে, তার ক্রেতা বলবেন, খুব গর্ব করে বলবেন, ছাতি ফুলিয়ে বলবেন, হ্যাঁ, এটি মেড ইন ইন্ডিয়া। এই মেজাজটা চাই। এখন আপনাদের মনে বিশ্বের বাজারে ছেয়ে যাওয়ার স্বপ্ন হওয়া চাই। এই স্বপ্ন পূরণ করার জন্য সরকার সব দিক থেকে আপনাদের পাশে দাঁড়িয়ে আছে।

আমার প্রিয় দেশবাসী,

আজ দেশের আলাদা আলাদা সেক্টর আর দেশের ছোট ছোট শহরেও, টিয়ার টু, টিয়ার থ্রি শহরগুলিতেও নতুন নতুন স্টার্ট আপ তৈরি হচ্ছে। তাদের, ভারতীয় পণ্যকে আন্তর্জাতিক বাজারে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সরকারেরও বড় ভূমিকা আছে। সরকার দেশের এই স্টার্ট আপ -দের সঙ্গে, পূর্ণ শক্তিতে দাঁড়িয়ে আছে। তাদের আর্থিক সাহায্য দিতে হবে, কর ছাড় দিতে হবে, তাদের জন্য নিয়মগুলি সরল করতে হবে, সব কিছুই করা হচ্ছে। আমরা দেখেছি, করোনার এই কঠিন সময়ে হাজার হাজার নতুন স্টার্ট আপ উঠে এসেছে। খুব সাফল্যের সঙ্গে আগে এগোচ্ছে। কালকের স্টার্ট আপ আজ ইউনিকর্ন হয়ে যাচ্ছে। তাদের মার্কেট ভ্যালু হাজার হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত ছুঁয়ে যাচ্ছে।

এরা দেশে এক নতুন ধরণের সম্পদ সৃষ্টিকারী। এরা নিজেদের অভিনব ভাবনাগুলির শক্তিতে নিজেদের পায়ের উপর দাঁড়িয়েছে, এগোচ্ছে, আর বিশ্বের বাজারে চড়িয়ে পড়ার স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলেছে। এই দশকে ভারতে স্টার্ট আপস, ভারতের স্টার্ট আপ বাস্তুব্যবস্থা – কে আমরা গোটা বিশ্বে সর্বশ্রেষ্ঠ বানাবোই, আমাদের এই লক্ষ্যে কাজ করতে হবে, আমাদের থামলে চলবে না।

আমার প্রিয় দেশবাসী,

বড় পরিবর্তন আনার জন্য, বড় সংস্কারের জন্য, রাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তির প্রয়োজন হয়। আজ বিশ্ব দেখছে, ভারতে রাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তির কোনও অভাব নেই। সংস্কার রূপায়নের জন্য দরকার ভাল এবং স্মার্ট গভর্নেন্স। আজ বিশ্ব এই ঘটনার সাক্ষী যে, ভারত নিজের দেশে গভর্নেন্স ক্ষেত্রে একটি নতুন অধ্যায় লিখছে। অমৃতকালের এই দশক আমাদের নেক্সট জেনারেশন সংস্কারকে... আর তাতে আমাদের অগ্রাধিকার হবে, নাগরিকদের যা কিছু প্রাপ্য হয়, যে সার্ভিস ডেলিভারি আছে, তাকে শেষ প্রান্ত পর্যন্ত, শেষ ব্যক্তি পর্যন্ত, অবাধ গতিতে, বিনা সংকোচে, বিনা সমস্যায় পৌঁছানো। দেশের সামগ্রিক বিকাশের জন্য মানুষের জীবনে সরকার আর সরকারি প্রক্রিয়াগুলির বিনা কারণে দখল সমাপ্ত করতে হবে।

আগেকার দিনে সরকার নিজেই ড্রাইভিং সিটে বসে থাকতো। সম্ভবত সেটা সেই সময়ের প্রয়োজনীয়তা ছিল। কিন্তু আজ সময় বদলে গেছে। গত সাত বছরে দেশে তার জন্য প্রয়াসও বেড়েছে যে, দেশের মানুষদের জন্য অনাবশ্যক আইনের জাল, অনাবশ্যক প্রক্রিয়ার জাল থেকে মুক্তি দেওয়া হোক। এখন দেশে শত শত পুরনো আইন সমাপ্ত করা হয়েছে। করোনার এই সময়কালেও সরকার ১৫ হাজারের বেশি কমপ্লায়েনসেস সমাপ্ত করেছে। এখন আপনারা দেখুন, আপনারাও বুঝতে পারবেন যে, একটা ছোট সরকারি কাজ হোক, প্রচুর সংখ্যক কাগজপত্র, বার বার কাগজপত্র, একই জ্ঞাতব্য অনেকবার --- এটাই চলছিল। ১৫ হাজার কমপ্লায়েনসেস আমরা সমাপ্ত করে দিয়েছি।

আপনারা ভাবুন, ২০০ বছর আগে... একটি উদাহরণ আমি দিতে চাই, ২০০ বছর আগে আমাদের একটি আইন চালু হয়েছিল, ২০০ বছর অর্থাৎ, ১৮৫৭-রও আগে, যে কারণে দেশের নাগরিকদের ম্যাপিং অর্থাৎ মানচিত্র বানানোর স্বাধীনতা ছিল না। এখন বিচার করুন, ১৮৫৭ থেকে চলছিল, মানচিত্র বানাতে হলে সরকারের অনুমতি নাও, মানচিত্র কোনও বইতে ছাপতে হলে সরকারের অনুমতি নাও, মানচিত্র হারিয়ে গেলে গ্রেফতারেরও ব্যবস্থা তাতে ছিল। আজকাল প্রত্যেক ফোনে ম্যাপ-এর অ্যাপ আছে। কৃত্রিম উপগ্রহের এতটাই শক্তি আছে যখন, তখন এমন আইনের বোঝা মাথায় নিয়ে দেশকে কি করে আগে বাড়াবো আমরা! কমপ্লায়েনসেস এর এই বোঝা নামানো খুব জরুরি ছিল। ম্যাপিং থেকে শুরু করে মহাকাশ প্রযুক্তি, তথ্য প্রযুক্তি থেকে শুরু করে বিপিও গুলি - এমন অনেক ক্ষেত্রে অনেকগুলি আইনের বেড়াজাল আমরা বাতিল করে দিয়েছি।

আমার প্রিয় দেশবাসী,

অযৌক্তিক আইনের বন্ধন থেকে মুক্তি ‘ইজ অফ লিভিং’ এর পাশাপাশি ‘ইজ অফ ডুয়িং বিজনেস’, এই দুটোর জন্যই খুবই জরুরি। আমাদের দেশের শিল্প আর বাণিজ্য আজ এই পরিবর্তন অনুভব করছে।

আজ কয়েক ডজন শ্রম আইন মাত্র ৪ টি কোডে মিলিয়ে দেওয়া হয়েছে। করের সঙ্গে যুক্ত সমস্ত ব্যবস্থা সহজ এবং ফেসলেস করা হয়েছে। এই ধরণের সংস্কার শুধু সরকারি স্তরে যাতে সীমিত না থাকে, বরং গ্রাম পঞ্চায়েত, পুরসভা, পুরনিগম পর্যন্ত পৌঁছায়, এই বিষয়ে দেশের প্রত্যেকটি ব্যবস্থাকে মিলেমিশে কাজ করতে হবে। আমি আজ আহ্বান জানাচ্ছি, আর খুব আগ্রহ নিয়ে বলছি, কেন্দ্র হোক বা রাজ্য, সকলের দফতরগুলিকেই বলছি, সব সরকারি দফতরকেই বলছি। আপনাদের ওখানে নিয়ম আর প্রক্রিয়ার সমীক্ষা করুন। প্রত্যেকটি নিয়ম, প্রত্যেকটি প্রক্রিয়া, যেগুলি দেশের সামনে বাধা হয়ে, বোঝা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে, সেগুলি আমাদের দূর করতে হবে। আমার জানা আছে, যেগুলি ৭০ থেকে ৭৫ বছর জমা হয়ে আছে, সেগুলি একদিনে বা এক বছরে যাবে না। কিন্তু মন দিয়ে কাজ শুরু করলে আমরা নিশ্চয়ই করতে পারবো।

আমার প্রিয় দেশবাসী,

এই ভাবনার সঙ্গে সরকার আমলাতন্ত্রে জন কেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি উন্নয়নে, দক্ষতা বাড়াতে, সরকার মিশন কর্মযোগী আর ক্যাপাসিটি বিল্ডিং কমিশন চালু করেছে।

আমার প্রিয় দেশবাসী,

দক্ষতা আর ক্ষমতায় ভরপুর, নিজের মাটির জন্য কিছু করে দেখানোর ভাবনায় উদ্দীপিত নবযুবকদের তৈরি করায় ভূমিকা থাকে ... কার থাকে?... বিরাট ভূমিকা থাকে – আমাদের শিক্ষার, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার, আমাদের শিক্ষা পরম্পরার। আজ দেশের কাছে একুশ শতকের প্রয়োজনীয়তা মেটানোর উপযোগী নতুন জাতীয় শিক্ষা নীতিও আছে। এখন আমাদের সন্তান সন্ততিরা আর দক্ষতার অভাবে কোথাও আটকাবে না, আর ভাষার সীমাতেও বাধা পাবে না। দুর্ভাগ্য হল, আমাদের দেশে ভাষা নিয়ে বড় বিভাজন জন্ম নিয়েছে। ভাষার কারণে আমরা দেশের অনেক বড় মেধাবী ছেলেমেয়েদের খাঁচায় পুরে রেখেছি। মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষিত অনেক প্রতিশ্রুতিবান ছেলেমেয়েদের পাওয়া যায়। মাতৃভাষায় পড়াশোনা করা ছেলেমেয়েরা সাহস করে এগিয়ে এলে তাঁদের আত্মবিশ্বাস আরও বাড়বে। যখন গরিবের মেয়ে, গরিবের ছেলে মাতৃভাষায় পড়াশোনা করে সফল পেশাদার হতে পারবে, তখনই আমাদের সার্বিক সামর্থ্যের সঙ্গে ন্যায় হবে।

নতুন জাতীয় শিক্ষা নীতিতে দারিদ্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অস্ত্র ভাষা, এটাই আমি মনে করি। এই নতুন জাতীয় শিক্ষা নীতি এক অর্থে দারিদ্রের বিরুদ্ধে লড়াই করার একটি খুব বড় অস্ত্র হিসেবে কাজ করবে। দারিদ্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ জেতার ভিত্তিও মাতৃভাষায় শিক্ষা, মাতৃভাষার সম্মান, মাতৃভাষার মাহাত্ম্য। দেশ দেখেছে, খেলার মাঠে, আর আমরা অনুভব করছি, খেলার মাঠে ভাষা প্রতিবন্ধক হয়ে ওঠেনি আর তার পরিণাম দেখেছি যে, আমাদের যুবশক্তি প্রস্ফুটিত হচ্ছে। খেলছেও, হাসছেও। এখন এমনটাই জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রেও হবে। নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি - এর আরেকটি বৈশিষ্ট্য আছে। ক্রীড়াকে এক্সট্রা কারিকুলার-এ না রেখে মূল ধারার পাঠক্রমের অংশ করা হয়েছে। জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে যত কার্যকরী মাধ্যম রয়েছে, তার মধ্যে একটি স্পোর্টসও রয়েছে। জীবনে সম্পূর্ণতার জন্য, জীবনে খেলাধূলা থাকা, স্পোর্টস থাকা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। একটা সময় ছিল যখন খেলাধূলাকে মূলধারা মনে করা হতো না। মা-বাবাও ছেলে-মেয়েদের বলতেন, যদি খেলতেই থাক তাহলে জীবন নষ্ট করবে। এখন দেশে ফিটনেস নিয়ে, স্পোর্টস নিয়ে একটি সচেতনতা এসেছে। এবার অলিম্পিকেও আমরা দেখেছি, আমরা অনুভব করেছি এই পরিবর্তন আমাদের দেশের জন্য একটি বড় টার্নিং পয়েন্ট। সেজন্য আজ দেশে খেলায় ট্যালেন্ট, টেকনলজি আর প্রফেশনালিজম আনার যে অভিযান চলছে, এই দশকে একে আমাদের আরও উজ্জীবিত করতে হবে, আরও ব্যাপক করতে হবে। এটা দেশের জন্য গর্বের বিষয় শিক্ষা হোক কিংবা খেলা, বোর্ডের ফল হোক কিংবা অলিম্পিকের ময়দান – আমাদের মেয়েরা আজ অভূতপূর্ব নৈপুণ্য দেখাচ্ছে। আজ ভারতের মেয়েরা তাঁদের জায়গা নেওয়ার জন্য প্রবল আগ্রহী। আমাদের সুনিশ্চিত করতে হবে যাতে প্রত্যেক কেরিয়ার এবং কর্মক্ষেত্রে মেয়েদের সমান অংশগ্রহণ থাকে। আমাদের এটা সুনিশ্চিত করতে হবে যাতে সড়ক থেকে শুরু করে ওয়ার্ক প্লেস পর্যন্ত সর্বত্র মহিলারা নিজেদের নিরাপদ অনুভব করেন, সম্মানভাব থাকে। সেজন্য দেশের সরকার ও প্রশাসনকে, পুলিশ ও বিচার ব্যবস্থাকে, নাগরিকদের, নিজেদের ১০০ শতাংশ দায়িত্ব পালন করতে হবে। এই সঙ্কল্পকে আমাদের স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষের সঙ্কল্প করে তুলতে হবে।

আজ আমি কিছু কথা দেশবাসীকে জানাচ্ছি। আমি দেশের লক্ষ লক্ষ মেয়েদের কাছ থেকে আবেদন পাচ্ছিলাম, তাঁরাও সৈনিক স্কুলে পড়তে চায়, তাঁদের জন্য যেন সৈনিক স্কুলের দরজা খোলা হয়। দু আড়াই বছর আগে মিজোরামের সৈনিক স্কুলে প্রথমবার মেয়েদের ভর্তি করার একটি ক্ষুদ্র প্রয়োগ আমরা করি। সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এখন থেকে দেশের সমস্ত সৈনিক স্কুল দেশের মেয়েদের জন্যও খুলে দেওয়া হবে। দেশের সমস্ত সৈনিক স্কুলে এখন মেয়েরাও পড়বে।

বিশ্বে ন্যাশনাল সিকিউরিটির যতটা গুরুত্ব রয়েছে, ততটাই গুরুত্ব এনভিরনমেন্ট সিকিউরিটিকেও দেওয়া শুরু হয়েছে। ভারতের আজ এনভিরনমেন্ট সিকিউরিটি একটি মুখর শব্দ। আজ বায়ো-ডাইভার্সিটি থেকে শুরু ল্যান্ড নিউট্রালিটি, ক্লাইমেট চেঞ্জ থেকে শুরু করে ওয়েস্ট রিসাইক্লিং, অর্গ্যানিক ফার্মিং থেকে শুরু করে গোবর থেকে বায়ো-গ্যাস, এনার্জি কনজারভেশন থেকে শুরু করে ক্লিন এনার্জি ট্রানজিশন পরিবেশের সুরক্ষার লক্ষ্যে ভারতের প্রচেষ্টা আজ সুফল দিচ্ছে। ভারতে অরণ্য ক্ষেত্র বা নতুন জাতীয় অরণ্যের সংখ্যা, বাঘের সংখ্যা আর এশিয়াটিক সিংহের সংখ্যা – সবক্ষেত্রে বৃদ্ধি সমস্ত দেশবাসীর জন্য আনন্দের বিষয়।

আমার প্রিয় দেশবাসী,

ভারতের এসব সাফল্যের মাঝে আরেকটি সত্যকেও আমাদের বুঝতে হবে। ভারত আজও এনার্জি ইন্ডিপেনডেন্ট নয়। ভারত আজও এনার্জি ইম্পোর্টের জন্য বছরে ১২ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি খরচ করে। ভারতের প্রগতির জন্য, আত্মনির্ভর ভারত গড়ে তোলার জন্য ভারতের এনার্জি ইন্ডিপেনডেন্ট হওয়া সময়ের চাহিদা; অনিবার্য প্রয়োজন। সেজন্য আজ ভারতকে এই সঙ্কল্প নিতে হবে যে, আমরা স্বাধীনতার ১০০ বছর পূর্তির আগে ভারতকে এনার্জি ইন্ডিপেনডেন্ট করে তুলবো আর সেজন্য আমাদের রোড ম্যাপ অত্যন্ত স্পষ্ট। Gas based Economy হবে, সারা দেশে সিএনজি পিএনজি-র নেটওয়ার্ক হবে, ২০ শতাংশ ইথানল ব্লেন্ডিং-এর টার্গেট থাকবে। ভারত একটি পূর্ব নির্ধারিত লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে চলেছে। ভারত ইলেক্ট্রিক মোবিলিটির দিকেও কদম বাড়িয়েছে আর রেলওয়ের ১০০ শতাংশ ইলেক্ট্রিফিকেশনের কাজও দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। ভারতীয় রেলওয়ে ২০৩০ পর্যন্ত নেট জিরো কার্বন এমিটর-এ পরিণত হওয়ার টার্গেট রেখেছে। এই সমস্ত প্রচেষ্টার মাধ্যমেই দেশ মিশন সার্কুলার ইকনমিতেও জোর দিচ্ছে। আমাদের ভেহিকেল স্ক্র্যাপ পলিসি তার একটি বড় উদাহরণ। আজ জি-২০ দেশগুলির মধ্যে ভারত একমাত্র দেশ, যারা ক্লাইমেট গোলগুলি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে।

ভারত এই দশকের শেষ পর্যন্ত রিনিউয়েবল এনার্জির ৪৫০ গিগাওয়াট লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। ২০৩০ সাল পর্যন্ত ৪৫০ গিগাওয়াট। এর মধ্যে ১০০ গিগাওয়াটের লক্ষ্যমাত্রা ভারত নির্ধারিত সময়ের আগেই অর্জন করে নিয়েছে। আমাদের এই প্রচেষ্টা বিশ্ববাসীকে একটি ভরসা প্রদান করছে। গ্লোবাল স্টেট ফর ইন্টারন্যাশনাল সোলার অ্যালায়েন্স গঠন এর একটি বড় উদাহরণ। ভারত আজ যত কাজ করছে, তার মধ্যে সবচাইতে বড় লক্ষ্য হল, যা ভারতকে ক্লাইমেট জাম্প এনে দেবে। ক্লাইমেটের ক্ষেত্রে কোয়ান্টাম জাম্প এনে দেবে তা হল, গ্রিন হাইড্রোজেনের ক্ষেত্র। গ্রিন হাইড্রোজেন ক্ষেত্রে লক্ষ্য প্রাপ্তির জন্য আমি আজ এই জাতীয় পতাকাকে সাক্ষী রেখে ন্যাশনাল হাইড্রোজেন মিশন ঘোষণা করছি। অমৃতকালে আমাদের ভারতকে গ্রিন হাইড্রোজেনের উৎপাদন আর রফতানির গ্লোবাল হাবে পরিণত করতে হবে। এই জ্বালানি ক্ষেত্রে ভারতের একটি নতুন প্রগতিকে আত্মনির্ভর করে তুলবে আর গোটা বিশ্বে ক্লিন এনার্জি ট্রানজিশনের নতুন প্রেরণা ক্ষেত্রও হয়ে উঠবে। গ্রিন গ্রোথ থেকে গ্রিন জবের নতুন নতুন সুযোগ আমাদের যুব সম্প্রদায়ের জন্য, আমাদের স্টার্ট-আপগুলির জন্য আজ দরজায় কড়া নাড়ছে।

আমার প্রিয় দেশবাসী,

একবিংশ শতাব্দীর আজকের ভারত বড় লক্ষ্য নির্ধারণ আর সেগুলি বাস্তবায়নের সামর্থ্য রাখে। আজ ভারত সেই সমস্যাগুলিরও সমাধান করছে, যেগুলি সমাধানের জন্য দেশবাসী কয়েক দশক কিংবা কয়েক শতাব্দী ধরে অপেক্ষায় ছিল। আর্টিকেল ৩৭০ বদলের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত থেকে শুরু করে, দেশকে ট্যাক্সের জাল থেকে মুক্তি প্রদানের ব্যবস্থা – জিএসটি, আমাদের ফৌজি সাথীদের জন্য ‘ওয়ান র‍্যাঙ্ক ওয়ান পেনশন’ এর সিদ্ধান্ত, রাম জন্মভূমি বিবাদের শান্তিপূর্ণ সমাধান – এসব কিছু আমরা বিগত কয়েক বছরে বাস্তবায়িত হতে দেখেছি।

ত্রিপুরায় কয়েক দশক পর ব্রূ রিয়াং চুক্তি সম্পাদন থেকে শুরু করে ওবিসি কমিশনকে সাংবিধানিক মর্যাদা প্রদান পর্যন্ত আর জম্মু-কাশ্মীরে স্বাধীনতার পর প্রথমবার বিডিসি এবং ডিডিসি নির্বাচন, ভারতের সঙ্কল্প শক্তি ক্রমাগত বাস্তবায়িত করে চলেছে।

আজ করোনার এই সঙ্কটকালে ভারতে রেকর্ড পরিমাণ বিদেশি বিনিয়োগ আসছে। ভারতের বিদেশি মুদ্রা ভাণ্ডার সর্বকালীন সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে। সার্জিক্যাল স্ট্রাইক এবং এয়ার স্ট্রাইক করে ভারত দেশের শত্রুদের নতুন ভারতের সামর্থ্যের বার্তাও দিয়েছে। এ থেকে বোঝা যায়, ভারত বদলাচ্ছে, ভারত বদলাতে পারে। ভারত কঠিন থেকে কঠিনতর সিদ্ধান্তও নিতে পারে, আর কড়া সিদ্ধান্ত নিতেও ভারত দ্বিধাগ্রস্ত হয় না, থামে না।

আমার প্রিয় দেশবাসী,

সেকেন্ড ওয়ার্ল্ড ওয়ারের পর, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের স্বরূপ বদলে গিয়েছিল। করোনার পরেও পোস্ট-করোনা নতুন ওয়ার্ল্ড অর্ডারের সম্ভাবনা রয়েছে। করোনার সময়ে বিশ্ববাসী ভারতের প্রচেষ্টাগুলি দেখেছে আর প্রশংসাও করেছে। আজ বিশ্ব ভারতকে একটি নতুন চোখে দেখছে। এই দৃষ্টির দুটি গুরুত্বপূর্ণ মাত্রা রয়েছে – একটি সন্ত্রাসবাদ, আর দ্বিতীয়টি বিস্তারবাদ। ভারত এই দুটি সমস্যার বিরুদ্ধে লড়ছে আর বিচক্ষণতার সঙ্গে, অনেক সাহসের সঙ্গে জবাবও দিচ্ছে। আমরা, ভারত তার দায়িত্বগুলি যাতে সঠিকভাবে পালন করতে পারে, সেজন্য আমাদের প্রতিরক্ষা প্রস্তুতিকেও ততটাই সুদৃঢ় থাকতে হবে। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে দেশকে আত্মনির্ভর করে তুলতে ভারতীয়দের, ভারতের কোম্পানিগুলিকে উৎসাহিত করতে, আমাদের পরিশ্রমী শিল্পোদ্যোগীদের নতুন সুযোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের প্রচেষ্টা নিরন্তর জারি রয়েছে। আমি দেশকে আশ্বস্ত করছি যে, দেশের প্রতিরক্ষায় নিয়োজিত আমাদের সেনাদের হাত মজবুত করার ক্ষেত্রে আমরা কোনও চেষ্টার ত্রুটি রাখব না।

আমার প্রিয় দেশবাসী,

আজ দেশের মহান দার্শনিক শ্রী অরবিন্দেরও জন্মজয়ন্তী। ২০২২ সালে তাঁর ১৫০তম জন্মজয়ন্তী পালিত হবে। শ্রী অরবিন্দ ভারতের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন। তিনি বলতেন, আমাদের ততটাই সামর্থ্যবান হয়ে উঠতে হবে, যতটা আমরা আগে কখনও ছিলাম না। আমাদের নিজস্ব স্বভাবগুলি বদলাতে হবে। একটি নতুন হৃদয় নিয়ে নিজেদেরকে আবার জাগ্রত করতে হবে। শ্রী অরবিন্দের এই বাণী আমাদের নিজেদের কর্তব্যগুলিকে মনে করিয়ে দেয়। একজন নাগরিক হিসেবে, একটি সমাজ হিসেবে আমরা দেশকে কী দিচ্ছি, এটাও আমাদের ভাবতে হবে। আমাদের অধিকারগুলিকে আমরা সর্বদাই গুরুত্ব দিয়েছি। সেই সময়ে তার প্রয়োজনও ছিল। কিন্তু এখন আমাদের কর্তব্যগুলিকে সবার উপরে তুলতে হবে, সবার উপরে রাখতে হবে। যে সঙ্কল্পগুলির শপথ আজ দেশ নিয়েছে, সেগুলি বাস্তবায়নের জন্য প্রত্যেককে এগিয়ে আসতে হবে। প্রত্যেক দেশবাসীকে এটা আপন করে নিতে হবে।

দেশ জল সংরক্ষণের অভিযান শুরু করেছে। এক্ষেত্রে আমাদের কর্তব্য হলো, জল বাঁচানোকে আমাদের অভ্যাসের সঙ্গে যুক্ত করা। দেশ যেখানে ডিজিটাল লেনদেনকে গুরুত্ব দিচ্ছে, সেখানে আমাদেরও কর্তব্য, আমরাও যেন ন্যূনতম লেনদেনের ক্ষেত্রেই ক্যাশ ট্রানজ্যাকশন করি। দেশ যখন ‘ভোকাল ফর লোকাল’এর অভিযান শুরু করেছে, তখন আমাদের দায়িত্ব হলো, বেশি করে স্থানীয় পণ্যগুলিকে কেনা। দেশে যে প্লাস্টিক মুক্ত ভারতের কল্পনা রয়েছে, আমাদের কর্তব্য হলো, সিঙ্গল ইউজ প্লাস্টিকের ব্যবহারকে সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা। এটা আমাদেরই কর্তব্য, যে আমরা যেন নদীগুলিতে নোংরা না ফেলি। আমাদের সমুদ্র তটগুলিকে পরিচ্ছন্ন রাখি। আমাদের স্বচ্ছ ভারত মিশনকেও একটি নতুন লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে হবে।

আজ যখন দেশ স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষ উপলক্ষে স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব পালন করছে, তখন আমাদের এই আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত হওয়া, বেশি বেশি করে অংশগ্রহণ করা, সঙ্কল্পগুলিকে বারবার নিজেদের মধ্যে জাগ্রত করা – এটা আমাদের সকলের কর্তব্য। আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের কথা মাথায় রেখে আজ যাই-ই করব, যেটাই করব, অমৃতের বিন্দুর মতো অবশ্যই পবিত্র হবে আর কোটি কোটি ভারতবাসীর প্রচেষ্টায় গড়ে ওঠা এই অমৃতকুম্ভ আগামী বছরগুলির জন্য প্রেরণা হয়ে উৎসাহ যোগাবে।

আমার প্রিয় দেশবাসী,

আমি ভবিষ্যৎদ্রষ্টা নই, আমি কর্মের মাধ্যমে ফল পাওয়া বিশ্বাস করি। আমার বিশ্বাস আছে আমার দেশের যুবশক্তি ওপরে, আমার বিশ্বাস আছে দেশের বোনেদের ওপর, দেশের মেয়েদের ওপর, দেশের কৃষকদের ওপর, দেশের পেশাদারদের ওপর। এটা ক্যান ডু জেনারেশন, এরা প্রত্যেক লক্ষ্যে পৌঁছনোর ক্ষমতা রাখে।

আমার দৃঢ় বিশ্বাস যখন ২০৪৭, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসব, স্বাধীনতার ১০০ বছর হবে – তখন যিনিই প্রধানমন্ত্রী হবেন, আজ থেকে ২৫ বছর পর যিনিই প্রধানমন্ত্রী হবেন, তিনি যখন জাতীয় পতাকা উত্তোলন করবেন, তখন, আমি আজ বিশ্বাসের সঙ্গে বলছি, তখন, তাঁর ভাষণে তিনি যেসব সাফল্যের কথা বর্ণনা করবেন, সেই সাফল্যগুলি সেগুলিই হবে, যেগুলির সঙ্কল্প আজ দেশ গ্রহণ করছে। এটা আমার বিজয়ের বিশ্বাস।

আজ আমি যা সঙ্কল্পরূপে বলছি, তা ২৫ বছর পর যিনি জাতীয় পতাকা উত্তোলন করবেন, তিনি তাকে সাফল্য রূপে বলবেন। দেশ সাফল্য রূপে হয়তো তাঁর গৌরব গান করবে। যিনি আজ দেশের একজন যুবক, তিনি তখনও দেখবেন যে, দেশ কিভাবে এই অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছে।

একবিংশ শতাব্দীতে ভারতের স্বপ্নগুলি এবং আকাঙ্ক্ষাগুলিকে বাস্তবায়িত করার ক্ষেত্রে কোনও বাধা এখন আমাদের থামাতে পারবে না। আমাদের শক্তিই আমাদের প্রাণচাঞ্চল্য, আমাদের শক্তিই আমাদের ঐক্যবদ্ধতা, আমাদের প্রাণশক্তি ‘রাষ্ট্র সর্বাগ্রে, সর্বদাই সর্বাগ্রে’-র ভাবনা। এই সময় হল মিলিতভাবে স্বপ্ন দেখার। এই সময় হল সবাই মিলে সঙ্কল্প নেওয়ার। এই সময় হল সবাই মিলে চেষ্টা করে যাওয়ার আর এই সময় হল আমাদের বিজয়ের পথে এগিয়ে চলার।

আর সেজন্য আমি আরেকবার বলছি, এই সময় হল,

এই সময় হল … সঠিক সময়, ভারতের অমূল্য সময়!

এই সময় হল সঠিক সময়! ভারতের অমূল্য সময়!

অসংখ্য হাতের শক্তি আছে,

অসংখ্য হাতের শক্তি আছে চারিদিকে দেশের ভক্তি আছে!

অসংখ্য হাতের শক্তি আছে চারিদিকে দেশের ভক্তি আছে …

তুমি ওঠো, ত্রিবর্ণ রঞ্জিত পতাকা ওড়াও,

তুমি ওঠো, ত্রিবর্ণ রঞ্জিত পতাকা ওড়াও,

ভারতের ভাগ্যকে ওড়াও, ভারতের ভাগ্যকে ওড়াও!

এই সময় হল সঠিক সময়! ভারতের অমূল্য সময়!

কিছুটা এমন নয়…

কিছুটা এমন নয়, যা করতে পারবে না,

কিছু এমন নয়, যা পেতে পারবে না,

তুমি উঠে পড়ো …

তুমি উঠে পড়ো, তুমি লেগে পড়ো,

নিজের সামর্থ্যকে চেনো …

নিজের সামর্থ্যকে চেনো,

নিজের সমস্ত কর্তব্যকে জানো …

নিজের সমস্ত কর্তব্যকে জানো!

এই সময় হল সঠিক সময়! ভারতের অমূল্য সময়!

 

যখন দেশ স্বাধীনতার ১০০ বছর পূর্ণ করবে, তখন দেশবাসীর লক্ষ্য বাস্তব হয়ে উঠবে, এটাই আমার কামনা। এই শুভকামনাগুলির সঙ্গে সমস্ত দেশবাসীকে ৭৫তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আরেকবার শুভেচ্ছা জানাই। আপনারা সবাই আমার সঙ্গে হাত ওপরে তুলে বলুন –

জয় হিন্দ,

জয় হিন্দ,

জয় হিন্দ!

বন্দে মাতরম,

বন্দে মাতরম,

বন্দে মাতরম!

ভারতমাতার জয়,

ভারতমাতার জয়,

ভারতমাতার জয়!

 

অনেক অনেক ধন্যবাদ!

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII

Media Coverage

PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
Text of PM Modi's address at the Parliament of Guyana
November 21, 2024

Hon’ble Speaker, मंज़ूर नादिर जी,
Hon’ble Prime Minister,मार्क एंथनी फिलिप्स जी,
Hon’ble, वाइस प्रेसिडेंट भरत जगदेव जी,
Hon’ble Leader of the Opposition,
Hon’ble Ministers,
Members of the Parliament,
Hon’ble The चांसलर ऑफ द ज्यूडिशियरी,
अन्य महानुभाव,
देवियों और सज्जनों,

गयाना की इस ऐतिहासिक पार्लियामेंट में, आप सभी ने मुझे अपने बीच आने के लिए निमंत्रित किया, मैं आपका बहुत-बहुत आभारी हूं। कल ही गयाना ने मुझे अपना सर्वोच्च सम्मान दिया है। मैं इस सम्मान के लिए भी आप सभी का, गयाना के हर नागरिक का हृदय से आभार व्यक्त करता हूं। गयाना का हर नागरिक मेरे लिए ‘स्टार बाई’ है। यहां के सभी नागरिकों को धन्यवाद! ये सम्मान मैं भारत के प्रत्येक नागरिक को समर्पित करता हूं।

साथियों,

भारत और गयाना का नाता बहुत गहरा है। ये रिश्ता, मिट्टी का है, पसीने का है,परिश्रम का है करीब 180 साल पहले, किसी भारतीय का पहली बार गयाना की धरती पर कदम पड़ा था। उसके बाद दुख में,सुख में,कोई भी परिस्थिति हो, भारत और गयाना का रिश्ता, आत्मीयता से भरा रहा है। India Arrival Monument इसी आत्मीय जुड़ाव का प्रतीक है। अब से कुछ देर बाद, मैं वहां जाने वाला हूं,

साथियों,

आज मैं भारत के प्रधानमंत्री के रूप में आपके बीच हूं, लेकिन 24 साल पहले एक जिज्ञासु के रूप में मुझे इस खूबसूरत देश में आने का अवसर मिला था। आमतौर पर लोग ऐसे देशों में जाना पसंद करते हैं, जहां तामझाम हो, चकाचौंध हो। लेकिन मुझे गयाना की विरासत को, यहां के इतिहास को जानना था,समझना था, आज भी गयाना में कई लोग मिल जाएंगे, जिन्हें मुझसे हुई मुलाकातें याद होंगीं, मेरी तब की यात्रा से बहुत सी यादें जुड़ी हुई हैं, यहां क्रिकेट का पैशन, यहां का गीत-संगीत, और जो बात मैं कभी नहीं भूल सकता, वो है चटनी, चटनी भारत की हो या फिर गयाना की, वाकई कमाल की होती है,

साथियों,

बहुत कम ऐसा होता है, जब आप किसी दूसरे देश में जाएं,और वहां का इतिहास आपको अपने देश के इतिहास जैसा लगे,पिछले दो-ढाई सौ साल में भारत और गयाना ने एक जैसी गुलामी देखी, एक जैसा संघर्ष देखा, दोनों ही देशों में गुलामी से मुक्ति की एक जैसी ही छटपटाहट भी थी, आजादी की लड़ाई में यहां भी,औऱ वहां भी, कितने ही लोगों ने अपना जीवन समर्पित कर दिया, यहां गांधी जी के करीबी सी एफ एंड्रूज हों, ईस्ट इंडियन एसोसिएशन के अध्यक्ष जंग बहादुर सिंह हों, सभी ने गुलामी से मुक्ति की ये लड़ाई मिलकर लड़ी,आजादी पाई। औऱ आज हम दोनों ही देश,दुनिया में डेमोक्रेसी को मज़बूत कर रहे हैं। इसलिए आज गयाना की संसद में, मैं आप सभी का,140 करोड़ भारतवासियों की तरफ से अभिनंदन करता हूं, मैं गयाना संसद के हर प्रतिनिधि को बधाई देता हूं। गयाना में डेमोक्रेसी को मजबूत करने के लिए आपका हर प्रयास, दुनिया के विकास को मजबूत कर रहा है।

साथियों,

डेमोक्रेसी को मजबूत बनाने के प्रयासों के बीच, हमें आज वैश्विक परिस्थितियों पर भी लगातार नजर ऱखनी है। जब भारत और गयाना आजाद हुए थे, तो दुनिया के सामने अलग तरह की चुनौतियां थीं। आज 21वीं सदी की दुनिया के सामने, अलग तरह की चुनौतियां हैं।
दूसरे विश्व युद्ध के बाद बनी व्यवस्थाएं और संस्थाएं,ध्वस्त हो रही हैं, कोरोना के बाद जहां एक नए वर्ल्ड ऑर्डर की तरफ बढ़ना था, दुनिया दूसरी ही चीजों में उलझ गई, इन परिस्थितियों में,आज विश्व के सामने, आगे बढ़ने का सबसे मजबूत मंत्र है-"Democracy First- Humanity First” "Democracy First की भावना हमें सिखाती है कि सबको साथ लेकर चलो,सबको साथ लेकर सबके विकास में सहभागी बनो। Humanity First” की भावना हमारे निर्णयों की दिशा तय करती है, जब हम Humanity First को अपने निर्णयों का आधार बनाते हैं, तो नतीजे भी मानवता का हित करने वाले होते हैं।

साथियों,

हमारी डेमोक्रेटिक वैल्यूज इतनी मजबूत हैं कि विकास के रास्ते पर चलते हुए हर उतार-चढ़ाव में हमारा संबल बनती हैं। एक इंक्लूसिव सोसायटी के निर्माण में डेमोक्रेसी से बड़ा कोई माध्यम नहीं। नागरिकों का कोई भी मत-पंथ हो, उसका कोई भी बैकग्राउंड हो, डेमोक्रेसी हर नागरिक को उसके अधिकारों की रक्षा की,उसके उज्जवल भविष्य की गारंटी देती है। और हम दोनों देशों ने मिलकर दिखाया है कि डेमोक्रेसी सिर्फ एक कानून नहीं है,सिर्फ एक व्यवस्था नहीं है, हमने दिखाया है कि डेमोक्रेसी हमारे DNA में है, हमारे विजन में है, हमारे आचार-व्यवहार में है।

साथियों,

हमारी ह्यूमन सेंट्रिक अप्रोच,हमें सिखाती है कि हर देश,हर देश के नागरिक उतने ही अहम हैं, इसलिए, जब विश्व को एकजुट करने की बात आई, तब भारत ने अपनी G-20 प्रेसीडेंसी के दौरान One Earth, One Family, One Future का मंत्र दिया। जब कोरोना का संकट आया, पूरी मानवता के सामने चुनौती आई, तब भारत ने One Earth, One Health का संदेश दिया। जब क्लाइमेट से जुड़े challenges में हर देश के प्रयासों को जोड़ना था, तब भारत ने वन वर्ल्ड, वन सन, वन ग्रिड का विजन रखा, जब दुनिया को प्राकृतिक आपदाओं से बचाने के लिए सामूहिक प्रयास जरूरी हुए, तब भारत ने CDRI यानि कोएलिशन फॉर डिज़ास्टर रज़ीलिएंट इंफ्रास्ट्रक्चर का initiative लिया। जब दुनिया में pro-planet people का एक बड़ा नेटवर्क तैयार करना था, तब भारत ने मिशन LiFE जैसा एक global movement शुरु किया,

साथियों,

"Democracy First- Humanity First” की इसी भावना पर चलते हुए, आज भारत विश्वबंधु के रूप में विश्व के प्रति अपना कर्तव्य निभा रहा है। दुनिया के किसी भी देश में कोई भी संकट हो, हमारा ईमानदार प्रयास होता है कि हम फर्स्ट रिस्पॉन्डर बनकर वहां पहुंचे। आपने कोरोना का वो दौर देखा है, जब हर देश अपने-अपने बचाव में ही जुटा था। तब भारत ने दुनिया के डेढ़ सौ से अधिक देशों के साथ दवाएं और वैक्सीन्स शेयर कीं। मुझे संतोष है कि भारत, उस मुश्किल दौर में गयाना की जनता को भी मदद पहुंचा सका। दुनिया में जहां-जहां युद्ध की स्थिति आई,भारत राहत और बचाव के लिए आगे आया। श्रीलंका हो, मालदीव हो, जिन भी देशों में संकट आया, भारत ने आगे बढ़कर बिना स्वार्थ के मदद की, नेपाल से लेकर तुर्की और सीरिया तक, जहां-जहां भूकंप आए, भारत सबसे पहले पहुंचा है। यही तो हमारे संस्कार हैं, हम कभी भी स्वार्थ के साथ आगे नहीं बढ़े, हम कभी भी विस्तारवाद की भावना से आगे नहीं बढ़े। हम Resources पर कब्जे की, Resources को हड़पने की भावना से हमेशा दूर रहे हैं। मैं मानता हूं,स्पेस हो,Sea हो, ये यूनीवर्सल कन्फ्लिक्ट के नहीं बल्कि यूनिवर्सल को-ऑपरेशन के विषय होने चाहिए। दुनिया के लिए भी ये समय,Conflict का नहीं है, ये समय, Conflict पैदा करने वाली Conditions को पहचानने और उनको दूर करने का है। आज टेरेरिज्म, ड्रग्स, सायबर क्राइम, ऐसी कितनी ही चुनौतियां हैं, जिनसे मुकाबला करके ही हम अपनी आने वाली पीढ़ियों का भविष्य संवार पाएंगे। और ये तभी संभव है, जब हम Democracy First- Humanity First को सेंटर स्टेज देंगे।

साथियों,

भारत ने हमेशा principles के आधार पर, trust और transparency के आधार पर ही अपनी बात की है। एक भी देश, एक भी रीजन पीछे रह गया, तो हमारे global goals कभी हासिल नहीं हो पाएंगे। तभी भारत कहता है – Every Nation Matters ! इसलिए भारत, आयलैंड नेशन्स को Small Island Nations नहीं बल्कि Large ओशिन कंट्रीज़ मानता है। इसी भाव के तहत हमने इंडियन ओशन से जुड़े आयलैंड देशों के लिए सागर Platform बनाया। हमने पैसिफिक ओशन के देशों को जोड़ने के लिए भी विशेष फोरम बनाया है। इसी नेक नीयत से भारत ने जी-20 की प्रेसिडेंसी के दौरान अफ्रीकन यूनियन को जी-20 में शामिल कराकर अपना कर्तव्य निभाया।

साथियों,

आज भारत, हर तरह से वैश्विक विकास के पक्ष में खड़ा है,शांति के पक्ष में खड़ा है, इसी भावना के साथ आज भारत, ग्लोबल साउथ की भी आवाज बना है। भारत का मत है कि ग्लोबल साउथ ने अतीत में बहुत कुछ भुगता है। हमने अतीत में अपने स्वभाव औऱ संस्कारों के मुताबिक प्रकृति को सुरक्षित रखते हुए प्रगति की। लेकिन कई देशों ने Environment को नुकसान पहुंचाते हुए अपना विकास किया। आज क्लाइमेट चेंज की सबसे बड़ी कीमत, ग्लोबल साउथ के देशों को चुकानी पड़ रही है। इस असंतुलन से दुनिया को निकालना बहुत आवश्यक है।

साथियों,

भारत हो, गयाना हो, हमारी भी विकास की आकांक्षाएं हैं, हमारे सामने अपने लोगों के लिए बेहतर जीवन देने के सपने हैं। इसके लिए ग्लोबल साउथ की एकजुट आवाज़ बहुत ज़रूरी है। ये समय ग्लोबल साउथ के देशों की Awakening का समय है। ये समय हमें एक Opportunity दे रहा है कि हम एक साथ मिलकर एक नया ग्लोबल ऑर्डर बनाएं। और मैं इसमें गयाना की,आप सभी जनप्रतिनिधियों की भी बड़ी भूमिका देख रहा हूं।

साथियों,

यहां अनेक women members मौजूद हैं। दुनिया के फ्यूचर को, फ्यूचर ग्रोथ को, प्रभावित करने वाला एक बहुत बड़ा फैक्टर दुनिया की आधी आबादी है। बीती सदियों में महिलाओं को Global growth में कंट्रीब्यूट करने का पूरा मौका नहीं मिल पाया। इसके कई कारण रहे हैं। ये किसी एक देश की नहीं,सिर्फ ग्लोबल साउथ की नहीं,बल्कि ये पूरी दुनिया की कहानी है।
लेकिन 21st सेंचुरी में, global prosperity सुनिश्चित करने में महिलाओं की बहुत बड़ी भूमिका होने वाली है। इसलिए, अपनी G-20 प्रेसीडेंसी के दौरान, भारत ने Women Led Development को एक बड़ा एजेंडा बनाया था।

साथियों,

भारत में हमने हर सेक्टर में, हर स्तर पर, लीडरशिप की भूमिका देने का एक बड़ा अभियान चलाया है। भारत में हर सेक्टर में आज महिलाएं आगे आ रही हैं। पूरी दुनिया में जितने पायलट्स हैं, उनमें से सिर्फ 5 परसेंट महिलाएं हैं। जबकि भारत में जितने पायलट्स हैं, उनमें से 15 परसेंट महिलाएं हैं। भारत में बड़ी संख्या में फाइटर पायलट्स महिलाएं हैं। दुनिया के विकसित देशों में भी साइंस, टेक्नॉलॉजी, इंजीनियरिंग, मैथ्स यानि STEM graduates में 30-35 परसेंट ही women हैं। भारत में ये संख्या फोर्टी परसेंट से भी ऊपर पहुंच चुकी है। आज भारत के बड़े-बड़े स्पेस मिशन की कमान महिला वैज्ञानिक संभाल रही हैं। आपको ये जानकर भी खुशी होगी कि भारत ने अपनी पार्लियामेंट में महिलाओं को रिजर्वेशन देने का भी कानून पास किया है। आज भारत में डेमोक्रेटिक गवर्नेंस के अलग-अलग लेवल्स पर महिलाओं का प्रतिनिधित्व है। हमारे यहां लोकल लेवल पर पंचायती राज है, लोकल बॉड़ीज़ हैं। हमारे पंचायती राज सिस्टम में 14 लाख से ज्यादा यानि One point four five मिलियन Elected Representatives, महिलाएं हैं। आप कल्पना कर सकते हैं, गयाना की कुल आबादी से भी करीब-करीब दोगुनी आबादी में हमारे यहां महिलाएं लोकल गवर्नेंट को री-प्रजेंट कर रही हैं।

साथियों,

गयाना Latin America के विशाल महाद्वीप का Gateway है। आप भारत और इस विशाल महाद्वीप के बीच अवसरों और संभावनाओं का एक ब्रिज बन सकते हैं। हम एक साथ मिलकर, भारत और Caricom की Partnership को और बेहतर बना सकते हैं। कल ही गयाना में India-Caricom Summit का आयोजन हुआ है। हमने अपनी साझेदारी के हर पहलू को और मजबूत करने का फैसला लिया है।

साथियों,

गयाना के विकास के लिए भी भारत हर संभव सहयोग दे रहा है। यहां के इंफ्रास्ट्रक्चर में निवेश हो, यहां की कैपेसिटी बिल्डिंग में निवेश हो भारत और गयाना मिलकर काम कर रहे हैं। भारत द्वारा दी गई ferry हो, एयरक्राफ्ट हों, ये आज गयाना के बहुत काम आ रहे हैं। रीन्युएबल एनर्जी के सेक्टर में, सोलर पावर के क्षेत्र में भी भारत बड़ी मदद कर रहा है। आपने t-20 क्रिकेट वर्ल्ड कप का शानदार आयोजन किया है। भारत को खुशी है कि स्टेडियम के निर्माण में हम भी सहयोग दे पाए।

साथियों,

डवलपमेंट से जुड़ी हमारी ये पार्टनरशिप अब नए दौर में प्रवेश कर रही है। भारत की Energy डिमांड तेज़ी से बढ़ रही हैं, और भारत अपने Sources को Diversify भी कर रहा है। इसमें गयाना को हम एक महत्वपूर्ण Energy Source के रूप में देख रहे हैं। हमारे Businesses, गयाना में और अधिक Invest करें, इसके लिए भी हम निरंतर प्रयास कर रहे हैं।

साथियों,

आप सभी ये भी जानते हैं, भारत के पास एक बहुत बड़ी Youth Capital है। भारत में Quality Education और Skill Development Ecosystem है। भारत को, गयाना के ज्यादा से ज्यादा Students को Host करने में खुशी होगी। मैं आज गयाना की संसद के माध्यम से,गयाना के युवाओं को, भारतीय इनोवेटर्स और वैज्ञानिकों के साथ मिलकर काम करने के लिए भी आमंत्रित करता हूँ। Collaborate Globally And Act Locally, हम अपने युवाओं को इसके लिए Inspire कर सकते हैं। हम Creative Collaboration के जरिए Global Challenges के Solutions ढूंढ सकते हैं।

साथियों,

गयाना के महान सपूत श्री छेदी जगन ने कहा था, हमें अतीत से सबक लेते हुए अपना वर्तमान सुधारना होगा और भविष्य की मजबूत नींव तैयार करनी होगी। हम दोनों देशों का साझा अतीत, हमारे सबक,हमारा वर्तमान, हमें जरूर उज्जवल भविष्य की तरफ ले जाएंगे। इन्हीं शब्दों के साथ मैं अपनी बात समाप्त करता हूं, मैं आप सभी को भारत आने के लिए भी निमंत्रित करूंगा, मुझे गयाना के ज्यादा से ज्यादा जनप्रतिनिधियों का भारत में स्वागत करते हुए खुशी होगी। मैं एक बार फिर गयाना की संसद का, आप सभी जनप्रतिनिधियों का, बहुत-बहुत आभार, बहुत बहुत धन्यवाद।