বন্ধুগণ, আমাদের সবাইকে এখানে স্বাগত।

 

আগামী পরশু আপনাদের সকলের জন্য অনেক বড় পরীক্ষা, আর আমি জানি যে, আপানারা প্রত্যেকে অনেক ভালো নম্বর পেয়ে পাশ করবেন, সফল হবেন।

 

আমি সাধারণতন্ত্র দিবসের জন্য এবং সাধারণতন্ত্র দিবসে প্যারেডে যোগদানের জন্য আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই।

 

বন্ধুগণ,

 

এখানে আপনারা যতজন বন্ধু একত্রিত হয়েছেন, আপনারা এক প্রকার ছোট ভারতকে দিল্লির রাজপথে তুলে ধরবেন। ভারত আসলে কী, এটা আমাদের দেশবাসী এবং সারা বিশ্বের মানুষ আপনাদের মাধ্যমে বুঝতে পারবেন।

 

এনসিসি এবং এনএসএস – এর মাধ্যমে অনুশাসন এবং সেবার একটি সমৃদ্ধ পরম্পরা রাজপথে প্রদর্শিত হলে দেশের কোটি কোটি যুবক-যুবতী প্রেরণা পান, উৎসাহিত হন। দেশের সমৃদ্ধ কলা-সংস্কৃতি, ভারতের ঐতিহ্যকে তুলে ধরা ট্যাবলোগুলি নিয়ে যখন আপনারা রাজপথে বেরোন, তখন গোটা বিশ্ব মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে দেখে। বিশেষ করে, আমাদের বিভিন্ন জনজাতির বন্ধুরা তাঁদের প্রদর্শনের মাধ্যমে দেশ ও বিশ্ববাসীর সামনে একটি অনুপম ঐতিহ্য তুলে ধরেন।

 

এত হাড়কাঁপানো শীতে আপনাদের এহেন পরিশ্রম, ঐকান্তিকতা, অত্যন্ত প্রশংসনীয়। এবার যখন আমি প্যারেডে থাকবো, এটা ভেবে শান্তি পাবো যে, আমি প্রত্যেক ট্যাবলোর শিল্পীদের সঙ্গে মিলিত হতে পেরেছি, তাঁদের কৃতজ্ঞতা জানাতে পেরেছি।

 

বন্ধুগণ,

 

আপনারা সবাই দেশের বৈচিত্র্যময়তাকে দিল্লি পর্যন্ত তো আনেনই, দিল্লিতে সাধারণতন্ত্র দিবসে যেসব বৈচিত্র্য আপনারা দেখতে পান, সেগুলির বার্তা নিজের নিজের অঞ্চলে নিয়ে যান। আপনারা ‘এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত’ – এর ভাবনাকে সাকার করে তোলেন। আমরা যখন ‘এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত’ – এর কথা বলি, তখন আমাদের এটাও মনে রাখতে হয় যে – ভারত আসলে কী? ভারত কি শুধুই সীমান্তবেষ্টিত ১৩০ কোটি মানুষের বাড়িকে বলা যায়? না, ভারত এমন একটি দেশের পাশাপাশি, একটি জীবন্ত পরম্পরা, একটি ভাবধারা, একটি জীবনশৈলী, একটি বিস্তারের অপর নাম।

 

ভারতের মানে হ’ল – বসুধৈব কুটুম্বকম্‌

ভারত মানে হ’ল – সর্ব পন্থ সমভাব

ভারত মানে হ’ল – সত্যমেব জয়তে

ভারত মানে হ’ল – অহিংসা পরমো ধর্মঃ

ভারত মানে হ’ল – একম্‌ সদ্‌ বিপ্রাঃ বহুধাঃ বদন্তি সত্য, অর্থাৎ সত্য তো একটাই, একে দেখার দৃষ্টিকোণ ভিন্ন ভিন্ন।

ভারত মানে হ’ল – বৈষ্ণব জন তো তেনে কহিয়ে জে পীড় পরায়ী জাণে রে!

ভারত মানে হ’ল – গাছপালায় ঈশ্বরের বসতি

ভারত মানে হ’ল – অপ্প দীপো ভবঃ অর্থাৎ, অন্যের থেকে আশা না করে, স্বপ্রেরণার দিকে এগোও।

ভারত মানে হ’ল – তেন ত্যাক্তেন ভূঞ্জিথা, অর্থাৎ, যিনি ত্যাগ করেন, তিনিই ভোগ পান।

ভারত মানে হ’ল – সর্বে ভবন্তু সুখিনঃ, সর্বে সন্তু নিরাময়াঃ

ভারত মানে হ’ল – জনসেবাই প্রভুর সেবা

ভারত মানে হ’ল – নর করণী করে তো নারায়ণ হো জায়ে অর্থাৎ, কর্তব্য করলে মানুষ ঈশ্বর হতে পারেন।

ভারত মানে হ’ল – নারী তু নারায়ণী

ভারত মানে হ’ল – জননী জন্মভূমিশ্চ সর্গাদপি গরিয়সী, অর্থাৎ, মা ও জন্মভূমি স্বর্গ থেকেও শ্রেষ্ঠ ও মহান।

 

ভারত এমনই অনেক আদর্শ এবং ভাবনার সমাহারে একটি জীবনী শক্তি, প্রাণশক্তির প্রবাহ। সেজন্য যখনই ভারতের ঐক্য এবং শ্রেষ্ঠত্বের কথা বলি, তখন নিজেদের ভৌগোলিক এবং আর্থিক শ্রেষ্ঠত্বের পাশাপাশি এই আদর্শগুলি এবং মূল্যবোধের কথা মনে রেখেই বলি।

 

বন্ধুগণ,

 

ভারতের শ্রেষ্ঠত্বের আরেকটি শক্তি এর ভৌগোলিক এবং সামাজিক বৈচিত্র্যে নিহিত। আমাদের এই দেশ একপ্রকার ফুলের মালা, যেখানে ভারতীয়ত্বের সুতোয় নানা রঙের ফুল গাঁথা হয়েছে।

 

আমরা কখনই একরূপ নয়, একতার পক্ষপাতী। ঐক্যসূত্রকে জীবিত রাখা, ঐক্যসূত্রকে শক্তিশালী করে তোলাই আমাদের প্রচেষ্টা, আর এটাই ঐক্যের বার্তা।

 

রাজ্য অনেক রাষ্ট্র এক, সমাজ অনেক ভারত এক, ধর্ম অনেক লক্ষ্য এক, কথ্যভাষা অনেক স্বর এক, ভাষা অনেক ভাব এক, রঙ অনেক তেরঙ্গা এক, রীতি-রেওয়াজ এক জীবনশৈলী এক, পথ অনেক গন্তব্য এক, চেহারা অনেক স্মিতহাস্য এক – এই একতার মন্ত্র নিয়েই এই দেশ এগিয়ে যাক, এই ভাবনা নিয়েই আমাদের নিরন্তর কাজ করে যেতে হবে।

 

বন্ধুগণ,

 

রাজপথে আপনা দের প্রদর্শন দেখে গোটা বিশ্ব ভারতের এই শক্তি দর্শন করে। এর প্রভাব ভারতের ‘সফট্‌ পাওয়ার’’- এর প্রচার প্রসারেও হয় আবার ভারতের পর্যটন ক্ষেত্রও এতে শক্তিশালী হয়। এই ভাবনা আমাদের ‘ইয়ুথ এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম’ – এর মাধ্যমে আরও শক্তিশালী হয়।

 

বন্ধুগণ,

 

আমাকে বলা হয়েছে যে, এ বছর এনসিসি এবং এনএসএস – এর যুব বন্ধুরা ক্রীড়া থেকে শুরু করে বিপর্যয়ে ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যে নিজেদের কার্যকরী ভূমিকা পালন করছেন। এনএসএস দেশের সর্ববৃহৎ রক্তদান সংস্থা তো বটেই, ফিট ইন্ডিয়া অভিযানের জন্য চালু হওয়া সাইক্লোথোন – এও ৮ লক্ষ যুবক-যুবতী অংশগ্রহণ করেছেন।

 

এভাবে এনসিসি-র ক্যাডে্টরা গান্ধীজীর ১৫০তম জন্মজয়ন্তীতে সারা দেশে ৮ হাজার কিলোমিটার ‘স্বচ্ছতা যাত্রা’ বের করে, প্রশংসনীয় কাজ করেছেন। শুধু তাই নয়, বিহার, কেরল, কর্ণাটক, ওডিশা এবং মহারাষ্ট্রের বন্যা এবং অন্যান্য বিপর্যয়ে ১ লক্ষেরও বেশি এনসিসি ক্যাডেটরা ত্রাণ ও উদ্ধারকার্যে সাহায্য করেছেন।

 

এই পরিসংখ্যান আমি এজন্য বলছি যে, অন্যান্য তৎপরতার মধ্যে এসব প্রশংসনীয় কাজ নিয়ে এতটা আলোচনা সম্ভব হয় না। কিন্তু আপনাদের এই পরিশ্রম এবং দেশের জন্য করা কাজ, আমার জন্যও অনেক বড় প্রেরণার উৎস।

 

বন্ধুগণ,

 

এটা আমাদের ৭১তম সাধারণতন্ত্র দিবস। বিগত ৭০ বছরে আমরা একটি সাধারণতন্ত্র রূপে, গোটা বিশ্বের সামনে একটি অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পেরেছি।

 

এজন্য আমাদের দেশের সংবিধানের এমন একটি দিকে লক্ষ্য রাখার প্রয়োজন রয়েছে, যার দিকে বিগত সাত দশক ধরে ভালোভাবে দেখা সম্ভব হয়নি। একজন নাগরিক রূপে আমাদের প্রত্যেককে প্রাধান্য ও অগ্রাধিকার দিতে হবে। আমরা যদি ঠিকভাবে নিজেদের কর্তব্য পালন করতে পারি, তা হলে আমাদের নিজেদের অধিকার অর্জনের জন্য লড়াইয়ের প্রয়োজন হ’ত না।

 

এখানে যত যুব সাথী এসেছেন, তাঁদের প্রতি আমার অনুরোধ, আপনারা রাষ্ট্রের প্রতি নিজেদের কর্তব্যগুলি নিয়ে বেশি আলাপ-আলোচনা করুন। শুধু আলাপ-আলোচনা নয়, নিজেরা কর্তব্য পালন করে, দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন। আমাদের এহেন প্রচেষ্টাই ‘নতুন ভারত’ নির্মাণ করবে।

বন্ধুগণ,

 

রাষ্ট্রপিতা মহাত্মা গান্ধী ‘আমার স্বপ্নের ভারত’ শিরোনামে একটি প্রবন্ধ লিখেছিলেন। এতে তিনি লিখেছিলেন যে, ‘সর্বোচ্চ আকাঙ্খা রাখা কোনও ব্যক্তির বিকাশের জন্য যা যা প্রয়োজন, সেসব কিছু তিনি ভারতে পেতে পারেন’।

 

আপনারা সবাই গান্ধীজীর এই স্বপ্ন, এই ভাবনার অংশ। আমরা যে ‘নতুন ভারত’ – এর দিকে এগিয়ে চলেছি, সেখানে এসব আকাঙ্খা, এসব স্বপ্নই আমাদের বাস্তবায়িত করতে হবে। ভারতের কোনও ব্যক্তি, কোনও অঞ্চল যাতে পিছিয়ে না থাকে, তা আমাদের সুনিশ্চিত করতে হবে। সাধারণতন্ত্র দিবসের প্যারেডের এটাই উদ্দেশ্য।

 

আমাদের সবাইকে রাষ্ট্রের সামগ্রিক সংকল্পের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত রাখতে হবে। দেশের প্রত্যেক নাগরিকের জীবনকে সহজ করে তুলতে সবাইকে মিলেমিশে চেষ্টা করতে হবে। আপনাদের মধ্যে অনেক বন্ধু, কিছুদিন পর পরীক্ষায় বসতে চলেছেন। এটা আপনাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়।

 

আমি আপনাদের আগামী পরীক্ষার জন্য শুভেচ্ছা জানাই। পাশাপাশি, সাধারণতন্ত্র দিবসের প্যারেডে আপনাদের শ্রেষ্ঠ প্রদর্শনের জন্য কামনা করি। আপনারা এখানে আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন, সেজন্য অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা।

 

ধন্যবাদ। 

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
Annual malaria cases at 2 mn in 2023, down 97% since 1947: Health ministry

Media Coverage

Annual malaria cases at 2 mn in 2023, down 97% since 1947: Health ministry
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
PM to distribute over 50 lakh property cards to property owners under SVAMITVA Scheme
December 26, 2024
Drone survey already completed in 92% of targeted villages
Around 2.2 crore property cards prepared

Prime Minister Shri Narendra Modi will distribute over 50 lakh property cards under SVAMITVA Scheme to property owners in over 46,000 villages in 200 districts across 10 States and 2 Union territories on 27th December at around 12:30 PM through video conferencing.

SVAMITVA scheme was launched by Prime Minister with a vision to enhance the economic progress of rural India by providing ‘Record of Rights’ to households possessing houses in inhabited areas in villages through the latest surveying drone technology.

The scheme also helps facilitate monetization of properties and enabling institutional credit through bank loans; reducing property-related disputes; facilitating better assessment of properties and property tax in rural areas and enabling comprehensive village-level planning.

Drone survey has been completed in over 3.1 lakh villages, which covers 92% of the targeted villages. So far, around 2.2 crore property cards have been prepared for nearly 1.5 lakh villages.

The scheme has reached full saturation in Tripura, Goa, Uttarakhand and Haryana. Drone survey has been completed in the states of Madhya Pradesh, Uttar Pradesh, and Chhattisgarh and also in several Union Territories.