We are not merely reforming India but are transforming India: PM Modi
An India free from poverty, terrorism, corruption, communalism, casteism is being created: PM
Good infrastructure is no longer about roads and rail only. It includes several other aspects that bring a qualitative change in society: PM
We have not shied away from taking decisions that are tough. For us, the nation is bigger than politics: PM
In addition to infrastructure, we are focussing on infraculture, which will help our hardworking farmers: PM Modi

মায়ানমারে বসবাসকারী আমার ভারতীয় এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রিয় ভাই ও বোনেরা,নমস্কার। 

এই কিছুদিন আগেই আপনারা গণেশ চতুর্থী এবং ঈদউৎসব পালন করেছেন; আপনাদের সকলকে আমার পক্ষ থেকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা। আশা করি, এইউৎসবগুলি আপনাদের জীবনে সুখ, সমৃদ্ধি এবং শান্তি আনবে। 

আজ আপনাদের মাঝে আসতে পেরে আমি অত্যন্ত খুশি। এইঐতিহাসিক ও আধ্যাত্মিক গুরুত্বসম্পন্ন শহরে আসার ইচ্ছা আমার দীর্ঘদিনের। ভারতেরসঙ্গে এর সম্পর্ক অনেক শতাব্দী প্রাচীন। আর এখানে, প্রাচ্যের এই ঐতিহাসিক ওঅধ্যাত্মিক দ্বারপথে আপনাদের সঙ্গে সাক্ষাতের ইচ্ছা ছিল, আপনারা প্রতিনিয়ত ভারত ওমায়ানমার – উভয় দেশের হৃদয়ের সেতুবন্ধন রচনা করে যাচ্ছেন। আজ এখানে এসে আমি নিজেরসামনে একটি ‘ক্ষুদে ভারত’ দেখতে পাচ্ছি। ভারতের নানা প্রান্ত থেকে এসে আপনারা একটিমহান দেশের হৃদয়ে আরেকটি মহান দেশের হৃদস্পন্দনের মতো সজীব। আপনাদের সঙ্গে মিলিতহয়ে অত্যন্ত আনন্দিত হওয়ার আরেকটি কারণ হ’ল – গঙ্গা, গোদাবরী, কৃষ্ণা, কাবেরী,ব্রহ্মপুত্র আর ইরাবতীর মতো উদার মায়েদের আঁচলে লালিত সকল বিবিধতাময় ভারতীয়পরম্পরা এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতিনিধিদেরই এখানে একসঙ্গে পাচ্ছি। পাশাপাশি,আপনারা ভারত ও মায়ানমারের হাজার হাজার বছরের সভ্যতা ও সংস্কৃতির আদান-প্রদান,ভূগোল ও ইতিহাসের প্রত্যাশা এবং সাফল্যের ঐতিহ্য বহন করছেন। 

ভারতে মায়ানমারকে ব্রহ্মদেশ বা ভগবান ব্রহ্মারদেশ বলা হয়। বন্ধুগণ, পরবর্তীকালে এই পবিত্রভূমির জনগণ ভগবান বুদ্ধের অনুগামী হন,তাঁর প্রদর্শিত শিক্ষায় শিক্ষিত হন। এদেশের বৌদ্ধ গ্রন্থাবলী এবং ভিক্ষুরা ভারতেরনানা প্রান্তে, ভারতের প্রায় সকল রাজ্যের সঙ্গে সহস্রাধিক বছরের পুরনো সম্পর্কলালন করছেন। শুধু ধর্মই নয়, পালিভাষা, সাহিত্য এবং বিদ্যাচর্চাও এর মধ্যে সামিলরয়েছে। সাম্প্রতিক অতীতে শ্রদ্ধেয় গোয়েঙ্কাজি ভারত ও বিশ্বকে মায়ানমারেরপূণ্যভূমিতে বিপাসনা উপহার দিয়েছেন। আমি খুশি যে, আজ তাঁর সুপুত্রও আমাদের মধ্যেরয়েছেন। 

মায়ানমারে আজও রামায়ণকে ‘য়ামা’ নামে উল্লেখ করাহয়, বিদ্যাদেবী সরস্বতীকে তাঁরা ‘থরুথরী’, শিবকে ‘পরবিজওয়া’ আর বিষ্ণুকে ‘বিথানো’নামে পুজো করা হয়। 

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে মায়ানমারেরভূমিকা অবিস্মরণীয়। এই পবিত্র ভূমিতে দাঁড়িয়েই নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু গর্জে উঠেবলেছিলেন, “তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাকে স্বাধীনতা দেব”! তাঁর এই আহ্বানেসাড়া দিয়ে দেশকে নিজের জীবনের থেকেও বেশি ভালোবেসে শত শত প্রবাসী সৈনিক আজাদ হিন্দফৌজে যোগদান করে, লক্ষ লক্ষ ভারতীয় যুবক-যুবতী এই আজাদ হিন্দ ফৌজের সহযোগী হয়েওঠেন। এখানকার এরকম কয়েকজন অতিবৃদ্ধ মানুষ, যাঁরা তাঁদের যৌবনে নেতাজির ডাকে সাড়াদিয়ে আজাদ হিন্দ ফৌজে যোগ দিয়েছিলেন, আজ এখানে এসে তাঁদের সঙ্গে সাক্ষাত ওআশীর্বাদ লাভের সৌভাগ্য আমার হয়েছে। নেতাজি এখান থেকে আজাদ হিন্দ সরকার ঘোষণা করারপর ভারতে ইংরেজ শাসনের শেকড় নড়বড়ে হয়ে পড়ে। এই পবিত্র ভূমির মান্দালয় কারাগারেবন্দী থেকে বাল গঙ্গাধর টিলক, শ্রদ্ধেয় লোকমান্য টিলকজি ‘গীতা রহস্য’ রচনাকরেছিলেন। এই পবিত্র ভূমিতে মহাত্মা গান্ধী, লালা লাজপত রায় এবং গুরুদেবরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতো মহাপুরুষেরা একাধিকবার এসেছেন। 

যখন বিদেশি শক্তির হাত থেকে ভারতকে মুক্ত করার জন্যস্বাধীনতা সংগ্রামীদের বাড়ি ছেড়ে পালাতে হ’ত, তখন অনেকেই মায়ানমারকে দ্বিতীয় আবাসেপরিণত করতেন। ১৮৫৭ সালে প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রামের পর বাদশাহ বাহাদুরশাহ্‌ জাফর এইমাটিতেই অন্তিমশয্যায় শায়িত। 

আমি যখনই কোনও দেশে যাই, সেখানকার প্রবাসীভারতীয় ও ভারতীয় বংশোদ্ভুতদের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের আশীর্বাদ নিই। বিগত দিনেশ্রীলঙ্কা সফরের সময় জাফনায় গিয়েছিলাম। আমিই প্রথম ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী যে,জাফনায় গিয়েছিলাম। সেখানকার ভারতীয় বংশোদ্ভুত তামিলদের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের জন্যভারত সরকারের আর্থিক সহায়তায় নির্মিত বাসভবন তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ার সৌভাগ্য আমারহয়েছে। এ বছর মে মাসে বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনেদ্বিতীয়বার শ্রীলঙ্কা গিয়ে মধ্য শ্রীলঙ্কাবাসী তামিলদের সঙ্গে সাক্ষাতের সৌভাগ্যহয়েছে। সেখানে ভারত সরকারের সাহায্যে নির্মিত একটি হাসপাতাল উদ্বোধন করার সময় হাজারহাজার মানুষ যেভাবে এসে আমাকে ভালোবাসা জানান, সেদিনের কথা আমি কখনও ভুলতে পারবনা! দক্ষিণ আরবে গিয়ে ভারতীয় নির্মাণকর্মীদের সঙ্গে মিলিত হয়েছি, কেনিয়াতে গিয়েভারতীয় কৃষক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দেখা করেছি, সিলিকন ভ্যালির সিয়োদে – বিশ্বের যেকোনও প্রান্তে বসবাসকারী ভারতীয় ও ভারতীয় বংশোদ্ভুতদের সঙ্গে মিলিত হয়ে আমিআত্মীয়তা অনুভব করি। আমাদের সরকারি ব্যবস্থায় যেমন রাজদূত রয়েছে, আপনারাপ্রত্যেকেই তেমন ভারতের রাষ্ট্রদূত। আমি আপনাদের জন্য গর্ব অনুভব করি, আপনারাযেদেশে থাকেন সেখানকার উন্নয়ন ও সংহতি বৃদ্ধি করেন, পাশাপাশি ভারতীয় সংস্কার এবংমূল্যবোধকেও সঞ্জীবিত রাখেন; এটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। 

তিন বছর আগে ভারতের উদ্যোগে রাষ্ট্রসঙ্ঘেআন্তর্জাতিক যোগদিবসের প্রস্তাব রাখলে ন্যূনতম সময়ে রেকর্ড পরিমাণ দেশের সম্মতিতেএই প্রস্তাব মঞ্জুর হয়। ফলস্বরূপ, সারা পৃথিবী বিগত তিন বছর ধরে প্রতি বছর ২১ জুনতারিখে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার সঙ্গে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পালন করছে। আর যখনইবিশ্বের যে কোনও প্রান্তে যোগাভ্যাস প্রসঙ্গ ওঠে, তখনই ভারতের কথা উল্লেখিত হওয়াস্বাভাবিক। 

বিশ্বব্যাপী যোগাসনের এই স্বীকৃতি আপনাদেরিসাফল্য, কারণ ভারতীয়রাই এই যোগাসনকে বিশ্বের সকল প্রান্তে পৌঁছে দিয়েছেন। 

ভারতের সঙ্গে আপনাদের কেবলই আবেগের সম্পর্ক নয়,আপনারা ভারতের উন্নয়নযাত্রার সঙ্গেও ওতপ্রোতভাবে জড়িত। অনেক প্রবাসী ভারতীয় আজভারতের উন্নয়নে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁরা নিজেদের কিংবা পূর্বপুরুষদেররাজ্যগুলির উন্নয়ন প্রকল্পসমূহে সহযোগিতা করেছেন। নবীন প্রজন্মের প্রবাসী ভারতীয়রাএক্ষেত্রে অধিক সক্রিয়। নানা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে নিয়মিত দেশের বন্ধুদের সঙ্গেবন্ধুত্ব স্থাপন ও মতবিনিময়ে তাঁরা থেমে থাকেন না, দেশকে আরও জানার ইচ্ছাও তাঁদেরমধ্যে ক্রমবর্ধমান। তাঁদের কথা মাথায় রেখেই আমরা গত বছর বিশ্বময় ‘ Know India’ বা ‘ভারতকে জানো’ শীর্ষক ক্যুইজপ্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিলাম। এই প্রক্রিয়া এখন নিরন্তর চলবে! একথা জেনে আমি খুশিহয়েছি, অবাকও হয়েছি যে পৃথিবীর প্রায় ১০০টি দেশের ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা এইপ্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন। এঁদের মধ্যে অনেকেই দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় প্রজন্মেরভারতীয় বংশোদ্ভূত কিশোর-কিশোরীরা রয়েছেন। 

আপনাদের সঙ্গে দেখা হলে আমি অনুভব করি যে, এখনআর প্রবাসী ভারতীয়দের ভারত সরকারের নানা বিভাগের সম্পর্ক নিছকই ‘ওয়ান ওয়ে ট্রাফিক’নয়। 

এখানে আসার আগে আমি আপনাদের কাজ থেকে নরেন্দ্রমোদী অ্যাপ-এর মাধ্যমে পরামর্শ চেয়েছিলাম। আমি আনন্দিত যে, আপনাদের মধ্যে অনেকেইআমাকে ভালো ভালো পরামর্শ পাঠিয়েছেন, সেজন্য আমি আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ। 

আমার সরকার প্রথম দিন থেকেই প্রবাসী ভারতীয়দেরকল্যাণকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। ওসিআইআরপিআইও প্রকল্পগুলিকে একত্রিত করা, দীর্ঘমেয়াদীভিসাধারকদের ঘন ঘন পুলিশে রিপোর্ট করা থেকে রেহাই দেওয়া, পাসপোর্ট পাওয়ারপ্রক্রিয়া সহজ করা, প্রবাসী ভারতীয়দের পুনরুজ্জীবিত করা, নানা অঞ্চলে আঞ্চলিকপ্রবাসী ভারতীয় দিবস পালন; আমরা প্রবাসীদের প্রয়োজন ও ‘ফিডব্যাক’ বিশ্লেষণ করেএরকম অনেক কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আর আমার মনে হয় না যে, বিশ্বের অন্য কোনও দেশেরবিদেশ মন্ত্রী আমাদের বিদেশ মন্ত্রী শ্রীমতী সুষমা স্বরাজের মতো বিদেশে বসবাসকারীকিংবা কোনোভাবে বিপদগ্রস্ত প্রবাসীদের দুঃখ-কষ্টে ঝাঁপিয়ে পড়েন, পাশে দাঁড়ান।বিশ্বের যে কোনও প্রান্ত থেকে একটি ট্যুইটার বার্তায় সুষমাজির কাছে খবর পৌঁছেগেলেই, তিনি ও তাঁর দপ্তর সমস্যা সমাধানে ঝাঁপিয়ে পড়েন। আমিও আপনাদের বলি –পাসপোর্ট, ভিসা, বিদেশে আইনি সহায়তা, যে কোনও রকম সাহায্যের জন্য ভারতীয় দূতাবাসেরদরজা বছরে ৩৬৫ দিনই ২৪ X ৭ ঘন্টা উন্মুক্ত।

বন্ধুগণ, আপনাদের কারণেই আজ ভারত’কে সারাপৃথিবীতে সম্মানের দৃষ্টিতে দেখা হয়, আপনারাই দেশের প্রকৃত রাষ্ট্রদূত আর কারণ হ’ল– ভারতের দ্রুত উন্নয়নের গতি। 

আমরা নিছকই দেশে সংস্কার অভিযান শুরু করিনি,আমরা রূপান্তরণ শুরু করেছি। আমরা শুধু পরিবর্তন আনছি, আমরা নতুন ভারত নির্মাণকরেছি। গত মাসে আমরা ভারতের স্বাধীনতার ৭০তম বর্ষপূর্তি পালন করেছি। পাঁচ বছর পর২০২২ সালে ভারতের স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষপূর্তির আগে আমরা ‘নতুন ভারত’ নির্মাণেরসংকল্প গ্রহণ করেছি। 

আমরা সংকল্প নিয়েছি যে, আমরা গরিবমুক্ত,সন্ত্রাসমুক্ত, সাম্প্রদায়িকতামুক্ত, জাতিপ্রথামুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত, পরিচ্ছন্নভারত নির্মাণ করব আর নির্মাণ করেই ছাড়ব। আপনি আমাদেরকেও ‘নিউ ইন্ডিয়া ওয়েবসাইট’-এএই মহামিশনে সামিল হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। 

বন্ধুগণ, আমি মনে করি যে, একবিংশ শতাব্দীতে একটিদেশ উনবিংশ শতাব্দীর পরিকাঠামো নিয়ে এগিয়ে যেতে পারে না। একবিংশ শতাব্দীতে দেশেরপ্রত্যেক নাগরিককে আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত করে তাঁদের জীবনমানে পরিবর্তনআনতে হবে। গোটা বিশ্বে আজ সৌরশক্তি ব্যবহার বৃদ্ধির বৃহত্তম প্রকল্পগুলি ভারতেইচালু হয়েছে। 

আজ ভারতে রেল, সড়ক, বিমানবন্দরের পরিকাঠামোনির্মাণ ও আধুনিকীকরণের জন্য যত অর্থ বরাদ্দ করা হচ্ছে – তা আগে কখনো হয়নি। দেশেরপ্রতিটি গ্রামে অপটিক্যাল ফাইবার পৌঁছে দিয়ে প্রত্যেক পঞ্চায়েতকে এই নেটওয়ার্কেরসঙ্গে যুক্ত করার কাজে অনেক দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। সমুদ্র তিরবর্তী শহর ওবন্দরগুলির উন্নয়নকল্পে সাগরমালা পরিযোজনার কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। 

আমি মনে করি, এই প্রচেষ্টাগুলির মাধ্যমে দেশেপরিকাঠামোর পাশাপাশি, একটি নতুন পরিসংস্কৃতি গড়ে উঠবে। আর তার এক এবং অভিন্ন অঙ্গহবে কৃষি। আমাদের সরকার ভারতের কৃষকদের আমদানি দ্বিগুণ করার লক্ষ্যে কাজ করেযাচ্ছে। সেজন্য বীজ থেকে বাজারীকরণ পর্যন্ত আমরা অনেক পদক্ষেপ নিচ্ছি, যেমন –মৃত্তিকা স্বাস্থ্য কার্ড, নিম কোটিং দেওয়া ইউরিয়া, অতিক্ষুদ্র সেচ, শস্য বিমা,খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ পার্ক, কোল্ড স্টোরেজ - এরকম আরও অনেক পদক্ষেপের কথা বলতেপারি। ভারতে সবুজ এবং শ্বেত বিপ্লবের সঙ্গে আমরা সকলেই পরিচিত। কিন্তু আমরা আরওদুটো বিপ্লবে জোর দিচ্ছি, প্রথমটি নীল বিপ্লব আর দ্বিতীয়টি মিষ্টি বিপ্লব। নীলবিপ্লব শুধুই মৎস্যজীবীদের কল্যাণসাধন করবে না, আমাদের সামুদ্রিক সামর্থ্যের নতুনযুগের পথ দেখাবে। তেমনই মিষ্টি বিপ্লব, অর্থাৎ মৌচাষের মাধ্যমে, মধু উৎপাদনবৃদ্ধির মাধ্যমে কৃষকদের আয় প্রভূত বৃদ্ধির সম্ভাবনাকে আমরা লালন করছি, প্রচেষ্টাচালাচ্ছি। পাশাপাশি, আমরা দেশের স্বার্থে বড় বড় কড়া সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে ঘাবড়াইনা। আর তা করতে পারার কারণ হ’ল – আমার কাছে দেশের স্বার্থ, আমার দলের স্বার্থেরথেকেও বড়। আমার জন্য দেশই সব। সার্জিকাল স্ট্রাইক থেকে শুরু করে নোটবাতিল করাকিংবা জিএসটি চালু করা, এই সরকার কোনও ভয় কিংবা সংকোচ ছাড়াই দেশের স্বার্থেসিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেশের অর্থ ব্যবস্থাকে কালো টাকা এবং দুর্নীতিমুক্ত করারপ্রয়োজনে আমরা ১০০০ ও ৫০০ টাকার নোট বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছি। হাতেগোনাকিছু দুর্নীতিবাজের স্বার্থে ১২৫ কোটি মানুষ যে দুর্নীতির শিকার হচ্ছিলেন, তা আমরামেনে নিতে পারিনি। বেইমানির অর্থ কোথা থেকে কোথায় যায়, তা কারও নজরে পড়ে না।

বন্ধুগণ, বিমুদ্রাকরণের পর আজ এমন লক্ষ লক্ষমানুষের কথা জানতে পেরেছি – যাদের অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকা জমা রয়েছে, কিন্তুতারা কখনও আয়কর রিটার্ন জমা দেননি। এমন লক্ষ লক্ষ বিমা কোম্পানি সম্পর্কে জানাগেছে যারা শুধু কালো টাকা লেনদেনের কাজই করতো। আপনারা শুনলে খুশি হবেন যে, মাত্রতিন মাসের মধ্যে দু’লক্ষেরও বেশি কোম্পানির রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হয়েছে, আরতাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও ফ্রিজ করে দেওয়া হয়েছে। 

দু’মাস আগে দেশে জিএসটি চালু হয়েছে। আমিজিএসটি’কে বলি ‘গুড অ্যান্ড সিম্পল ট্যাক্স’। জিএসটি’র মাধ্যমেও দেশে সততার সঙ্গেব্যবসা করার নতুন সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। যে ব্যবসায়ী বিগত ছ’বছরে দেশের কর ব্যবস্থারসঙ্গে যুক্ত ছিলেন না, তাঁরা বিগত ৬০ দিনে যুক্ত হয়েছেন। ৬ বছরের কাজ মাত্র ৬০দিনে করতে পারার এটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ। বিগত তিন বছরে ভারতে পরিবর্তনের প্রতিযোগিতাশুরু হয়েছে, ন্যূনতম সরকার, অধিকতম প্রশাসন-এর সিদ্ধান্ত নিয়ে যাবতীয় প্রক্রিয়াকেসহজ করে তোলা হচ্ছে, সরল করা হচ্ছে, আইন পরিবর্তন করা হচ্ছে, ব্যবসা স্থাপন সহজকরার জন্য নিয়মাবলী সরল করা হচ্ছে। দেশের মানুষের মনে এই আস্থা পুনরুদ্ধার হয়েছেযে, ভারত বদলে যেতে পারে, এগিয়ে যেতে পারে, দশকের পর দশককাল ধরে যে ‘দুর্নীতিগুলি দেশকেআষ্টেপিষ্টে বেঁধে রেখেছিল, সেগুলি থেকে ভারত মুক্তি পাবে – এই বিশ্বাস মানুষেরমনে অঙ্কুরিত হয়েছে। 

বন্ধুগণ, ভারত তার উন্নয়নের সুফল শুধু নিজেরমধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখে না। আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের যা আছে, তা সবাই মিলে বন্টনেরমাধ্যমে খেলে তার আনন্দ কয়েকগুণ বৃদ্ধি পায়। আফ্রিকা হোক কিংবা দক্ষিণ এশিয়া কিংবাপ্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপগুলিতে আমাদের ক্ষমতাসমূহ, আমাদের অজ্ঞতা, সবকিছু আমরাখোলা মনে সকল উন্নয়নশীল দেশের সঙ্গে শেয়ার করি। ২০১৪ সালে আমি ‘সাউথ এশিয়ানস্যাটেলাইট’-এর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম আর এ বছর আমরা তা মহাকাশে উৎক্ষেপণ করতেপেরেছি। ভারত ছাড়াও প্রতিবেশী দেশগুলি এর দ্বারা উপকৃত হচ্ছে।

প্রাকৃতিক বিপর্যয় কিংবা অন্যপ্রকার বিপর্যয়েরক্ষেত্রেও আমরা প্রথম সাড়া দেওয়ার ভূমিকা পালন করেছি। হয়তো ভারতের জন্য নয়, যেকোনও মানুষের জন্য, যাকেই সাহায্য করতে পারি; আমরা সবার আগে তাঁদের দিকে সাহায্যেরহাত বাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি! সাহায্যের হাত বাড়ানোর আগে আমরা পাসপোর্টের রং দেখিনা। নেপালের ভূমিকম্পে, মালদ্বীপে হঠাৎ করে পানীয় জলের সমস্যা দেখা দিলে, ফিজিতেসামুদ্রিক ঝড়ে বিপর্যয় নেমে এলে, পশ্চিম এশিয়ায় হিংসাগ্রস্ত অঞ্চল থেকে হাজারহাজার ভারতীয় এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশের মানুষকে উদ্ধার করার কাজে আমরা সবার আগেপৌঁছতে পেরেছি। মায়ানমারে ভয়ানক ঘূর্ণিঝড়ের পর ত্রাণ ও পুনর্বাসনের সাহায্যে আমরাআগে ছুটে এসে প্রতিবেশীর দায়িত্ব পালন করেছি। 

বন্ধুগণ, বসুধৈব কুটুম্বকম অর্থাৎ সারা পৃথিবীএকটি পরিবার, এই ভাবধারাই আমাদের পরম্পরা, আমাদের শিরা-ধমনীতে এই আত্মীয় মনোভাবপ্রবাহিত; সেজন্য আমরা গর্বিত। আজ গোটা বিশ্ব ভারত’কে তৃতীয় নেতৃস্থানীয় দেশহিসাবে মেনে নিতে শুরু করেছে। আন্তর্জাতিক যোগ দিবস হোক কিংবা আন্তর্জাতিকসৌরশক্তি সহযোগিতায় নতুন উদ্যোগ, কিংবা ব্রিক্‌স-এর আগামী ১০ বছরের ‘সোনালী দশক’ভাবনা; আজ গোটা বিশ্বে ভারতের আওয়াজ শোনা যায়, গুঞ্জরিত হয়। একটি নতুন ধরনেরআস্থা, বিশ্বে; ভারতের প্রতি একটি নতুন আশা জেগে উঠেছে। 

ভাই ও বোনেরা, উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিকেদক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ‘গেটওয়ে’ মানা হয়। আর এই ‘গেটওয়ে’র দরজা মায়ানমারের দিকেখোলে। আর সেজন্যই ভারত এই ‘গেটওয়ে’কে যুক্ত করা সড়কপথ উন্নয়নে দ্রুতগতিতে কাজ করেচলেছে। কয়েক মাস আগে ১,৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ইম্ফল – মোরেহ সেকশনের আপগ্রেডেশনেরকাজ আমরা মঞ্জুর করেছি। মোরেহ’তে একটি ইন্টিগ্রেটেড চেক পোস্ট’ও নির্মাণ করাহচ্ছে। এই প্রকল্পের পর মণিপুর ও মায়ানমারের মধ্যে ব্যবসা বৃদ্ধি পাবে, দু’দেশেরজনগণের আসা-যাওয়া সহজ হবে। আমরা সিত্তবে বন্দর এবং প্যালেটওয়া ইন্‌ল্যান্ড ওয়াটারটার্মিনাল-এর নির্মাণকার্য সম্পূর্ণ করে কালাদান প্রকল্পে নিরন্তর এবং প্রত্যক্ষপ্রগতি সুনিশ্চিত করছি। এখন সড়ক যোগাযোগের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছি। আমিনিঃসন্দেহ যে, এই ট্রান্সপোর্ট করিডর দু’পাশের অঞ্চলগুলিকে ডেভেলপমেন্ট করিডরেরূপান্তরিত করে দেবে। আপার মায়ানমারের চাহিদা অনুসারে ভারত থেকে ট্রাকে করেহাইস্পীড ডিজেল আসা শুরু হয়ে গেছে। আমরা বর্ডার ক্রশিং চুক্তি এবং মোটর ভেহিক্যালসচুক্তি করে শক্তি বাণিজ্যকে আরও অধিক চাঙ্গা করে পারস্পরিক সহযোগিতাকে কয়েক গুণবর্ধিত করতে চাই। আমরা আমাদের উন্নয়ন সহযোগিতা আর ক্ষমতা বৃদ্ধি অংশীদারিত্বেরমাধ্যমে যতটা নিবিড়তা বৃদ্ধি করতে পেরেছি, তা নিয়ে আজ ভারত গর্বিত। 

আজ আমরা মায়ানমারের সঙ্গে ভারতীয় গণতন্ত্রেরঅভিজ্ঞতা বিনিময় করছি। আমাদের সবচাইতে বড় ঐতিহ্য হ’ল – ব্যক্তির সঙ্গে ব্যক্তিরসম্পর্ক এবং সামাজিক সংস্কৃতি; একে মজবুত করার জন্য আমরা ভারত ভ্রমণে ইচ্ছুক যেকোনও মায়ানমার নাগরিককে গ্র্যাটিস ভিসা প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরাআন্তর্জাতিক জলসীমা লঙ্ঘনকারী মায়ানমারের ৪০ জন মৎস্যজীবীকে ভারতের কারাগার থেকেমুক্তিদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আশা করি, অতি সত্ত্বর তাঁরা দেশে ফিরেপরিবার-পরিজনের কাছে ফিরে আসবে! 

আজ আমি বাগান শহরে আনন্দ মন্দিরে গিয়েছিলাম।আনন্দ মন্দির এবং অন্য কয়েকটি ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্বপূর্ণ ভবন গত বছরভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ভারত সরকারের সহযোগিতায় সেগুলির পুনর্নির্মাণহচ্ছে। ভারত ও মায়ানমারের মধ্যে এতো ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে যে, সেগুলি সম্পর্কেঅবগত হওয়া একটি বড় ব্যাপার আর আমার মতে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মানুষদেরও এই সম্পর্কনিয়ে জ্ঞান থাকা উচিৎ। এ বিষয়ে একযোগে গবেষণা চেষ্টা চালাতে হবে। 

আমি মায়ানমার সরকারের কাছে একটি প্রস্তাবরেখেছি। আমরা একযোগে আইএনএ স্মারকগুলি নিয়ে সমীক্ষা করতে পারি। একটি যৌথ ইতিহাসপ্রকল্প স্থাপন করা যেতে পারে, এতে উভয় দেশের মধ্যে মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কআরও মজবুত হবে। 

আমি আপনাদের আনন্দের সঙ্গে বলছি যে, আমরান্যাশনাল রেজিস্ট্রেশন কার্ডের মাধ্যমে ওসিআই প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। উভয়দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক সম্পর্কগুলিকে আরও নিবিড় করতে ভারত সরকার ইন্ডিয়ানকাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশনস্‌-এর বৃত্তিপ্রদানের সংখ্যা বৃদ্ধির সিদ্ধান্তনিয়েছি। 

বন্ধুগণ, আমি কোথাও পড়েছিলাম যে, ভারত আরমায়ানমারের সম্পর্কের ভিত্তি হ’ল ফাইভ-বি। অর্থাৎ - বৌদ্ধধর্ম, বিজনেস, বলিউড,ভারতনাট্যম আর বার্মা টিক। কিন্তু আমার মনে হয়, এগুলির থেকে গুরুত্বপূর্ণ আরেকটি‘বি’ রয়েছে, আর তা হ’ল ‘ভরসা’। ভারত আর মায়ানমারের পরস্পরের প্রতি ভরসা। এইঅবস্থার বুনিয়াদ হাজার বছর ধরে মজবুত হয়েছে আর সময়ের সঙ্গে আরও মজবুত হইয়ে চলেছে। 

ভাই ও বোনেরা, আমাদের সরকার যে ‘সকলের সঙ্গে,সকলের উন্নয়ন’ মন্ত্র নিয়ে এগিয়ে চলেছে, সেই নীতি দেশের সীমার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।সকলের সঙ্গে অর্থাৎ সকল দেশের সঙ্গে, সবার উন্নয়ন বলতে আমরা বুঝি – সকল দেশেরউন্নয়ন। ভারত উন্নয়নের কাজে মায়ানমারের পাশাপাশি চলার ক্ষেত্রে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। 

এখানে সমবেত হয়ে আমাকে আশীর্বাদ জানানোর জন্যআপনাদের সকলকে প্রণাম জানাই। আপনাদের দর্শনলাভের সৌভাগ্য হ’ল, সেজন্য আপনাদেরসবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। এত বিপুল সংখ্যায় আপনারা দূর দূর থেকে এসেছেন, নিজেরদেশে কথা শুনতে, দেশের প্রতি আপনাদের টান, দেশের সঙ্গে জুড়ে থাকার ইচ্ছে আপনাদেরএখানে টেনে এনেছে। আমি আরেকবার অন্তর থেকে আপনাদের কৃতজ্ঞতা জানাই, এই মাটিকেপ্রণাম জানাই, আপনাদের সকলকে প্রণাম জানাই। অনেক অনেক ধন্যবাদ।

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
Annual malaria cases at 2 mn in 2023, down 97% since 1947: Health ministry

Media Coverage

Annual malaria cases at 2 mn in 2023, down 97% since 1947: Health ministry
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
Prime Minister condoles passing away of former Prime Minister Dr. Manmohan Singh
December 26, 2024
India mourns the loss of one of its most distinguished leaders, Dr. Manmohan Singh Ji: PM
He served in various government positions as well, including as Finance Minister, leaving a strong imprint on our economic policy over the years: PM
As our Prime Minister, he made extensive efforts to improve people’s lives: PM

The Prime Minister, Shri Narendra Modi has condoled the passing away of former Prime Minister, Dr. Manmohan Singh. "India mourns the loss of one of its most distinguished leaders, Dr. Manmohan Singh Ji," Shri Modi stated. Prime Minister, Shri Narendra Modi remarked that Dr. Manmohan Singh rose from humble origins to become a respected economist. As our Prime Minister, Dr. Manmohan Singh made extensive efforts to improve people’s lives.

The Prime Minister posted on X:

India mourns the loss of one of its most distinguished leaders, Dr. Manmohan Singh Ji. Rising from humble origins, he rose to become a respected economist. He served in various government positions as well, including as Finance Minister, leaving a strong imprint on our economic policy over the years. His interventions in Parliament were also insightful. As our Prime Minister, he made extensive efforts to improve people’s lives.

“Dr. Manmohan Singh Ji and I interacted regularly when he was PM and I was the CM of Gujarat. We would have extensive deliberations on various subjects relating to governance. His wisdom and humility were always visible.

In this hour of grief, my thoughts are with the family of Dr. Manmohan Singh Ji, his friends and countless admirers. Om Shanti."