![Quote](https://staticmain.narendramodi.in/images/quoteIconArticle.jpg)
![Quote](https://staticmain.narendramodi.in/images/quoteIconArticle.jpg)
মহামান্য ভদ্রমহোদয়া ও ভদ্রমহোদয়গণ,
নমস্কার!
আমি আপনাদের জি-২০ শিক্ষা মন্ত্রীদের বৈঠকে স্বাগত জানাই। শিক্ষা শুধুমাত্র সভ্যতার ভিত্তিই নয়, এটি মানবসমাজের ভবিষ্যতের স্থপতি। শিক্ষা মন্ত্রী হিসেবে আপনারা শেরপার মতো সকলের উন্নতি, শান্তি ও প্রগতির জন্য আমাদের প্রয়াসে মানবসমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। ভারতীয় শাস্ত্রে শিক্ষার ভূমিকাকে আনন্দের বাহক হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। ‘বিদ্যা দদাতি বিনয়ম, বিনয়াদ ইয়াতি পাত্রতাম। পাত্রত্রয়াত ধনমাপ্নোতি ধনাদ্রমাম ততোঃ সুখম্’।। এর অর্থ – “প্রকৃত জ্ঞান বিনয় দেয়, বিনয় থেকে আসে সক্ষমতা, সক্ষমতা থেকে পাওয়া যায় সম্পদ, সম্পদ একজন মানুষকে ভালো কাজ করতে সক্ষম করে – এইভাবেই আসে আনন্দ। সেই কারণে ভারতে আমরা অমৃত পথে সওয়ার হয়েছি। আমরা বিশ্বাস করি যে, মৌলিক স্বাক্ষরতা আমাদের যুবসমাজের শক্তিশালী ভীত তৈরি করে এবং আমরা এর সঙ্গে প্রযুক্তিকে যুক্ত করছি। এর জন্য আমরা শুরু করেছি ‘ন্যাশনাল ইনিশিয়েটিভ ফর প্রফিশিয়েন্সি ইন রিডিং উইথ আন্ডারস্ট্যান্ডিং অ্যান্ড নিউমেরেসি’ অথবা ‘নিপুণ ভারত’ উদ্যোগ। আমি খুশি যে, আপনারা বুনিয়াদী সাক্ষরতা এবং গণনা পদ্ধতিকে অগ্রাধিকার হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। আমাদের সময় বেঁধে ২০৩০ সালের মধ্যে এ নিয়ে কাজ করার সংকল্প নিতে হবে।
মাননীয়গণ,
আমাদের উদ্দেশ্য সুপ্রশাসনের সঙ্গে উন্নতমানের শিক্ষাদান করা। এই লক্ষ্যে নতুন ই-লার্নিং’কে গ্রহণ করে ব্যবহার করতে হবে। ভারতে আমাদের নিজস্ব অনেক উদ্যোগ আছে। একটি এমন কর্মসূচি হ’ল - ‘স্টাডি ওয়েবস্ অফ অ্যাক্টিভ লার্নিং অর ইয়াং অ্যাসপেয়ারিং মাইন্ডস্’ অথবা নবম শ্রেণী থেকে স্নাতকোত্তর স্তর পর্যন্ত সব পাঠ্যক্রমের অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ‘স্বয়ম’। এখানে দূর শিক্ষার মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীরা লেখাপড়া করতে পারে। ৩৪ মিলিয়নেরও বেশি ছাত্রছাত্রী নথিভুক্ত হয়েছে এবং ৯ হাজারেরও বেশি পাঠ্যক্রম রয়েছে। এটি অত্যন্ত কার্যকরী শিক্ষণ পদ্ধতি হয়ে উঠেছে। আমাদের ‘ডিজিটাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফর নলেজ শেয়ারিং’ অথবা ‘দীক্ষা’ পোর্টালও রয়েছে। এটির লক্ষ্য দূরতম স্থানে বসবাসকারী ছাত্রছাত্রী এবং যারা নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিত হতে পারে না তারা। শিক্ষকরা এটিকে ব্যবহার করে দূর শিক্ষা দিয়ে থাকেন। ২৯টি ভারতীয় ভাষা এবং ৭টি বিদেশি ভাষায় শিক্ষাদানের সুযোগ রয়েছে। ১৩৭ মিলিয়নেরও বেশি ছাত্রছাত্রী পাঠ সম্পূর্ণ করেছে। ভারত খুশি হবে যদি এই অভিজ্ঞতা ও সম্পদ সকলের সঙ্গে অথবা গ্লোবাল সাউথ – এর সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া যায়।
মাননীয়গণ,
আমাদের যুবসমাজকে ভবিষ্যতের জন্য তৈরি করতে তাদের নিয়মিত দক্ষ, পুনর্দক্ষ ও আরও দক্ষ করে তুলতে হবে। তাদের দক্ষতার সঙ্গে কাজের সুযোগের সমন্বয় ঘটানো প্রয়োজন। ভারতে আমরা স্কিল ম্যাপিং – এর কাজ শুরু করেছি। শিক্ষা, দক্ষতা এবং শ্রম মন্ত্রক একসঙ্গে এই উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছে। জি-২০ দেশগুলি আন্তর্জাতিক স্তরে স্কিল ম্যাপিং-কে নিয়ে যেতে পারে এবং ফাঁকগুলিকে বোজাবার চেষ্টা করতে পারে।
মাননীয়গণ,
ডিজিটাল প্রযুক্তি সাম্য আনতে পারে এবং অন্তর্ভুক্তিকরণ করতে পারে। এতে শিক্ষার সুযোগ বাড়ে এবং ভবিষ্যতের উপযোগী হয়ে ওঠা যায়। শিক্ষণ, প্রশিক্ষণ এবং দক্ষ করে তোলার ক্ষেত্রে বর্তমানে কৃত্রিম মেধার প্রভূত গুরুত্ব রয়েছে। প্রযুক্তির সুবিধা যেমন রয়েছে, তেমনই অসুবিধাও রয়েছে। আমাদের সঠিক ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে। এক্ষেত্রে জি-২০ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে।
মাননীয়গণ,
ভারতে আমরা গবেষণা ও উদ্ভাবনের উপরও জোর দিয়েছে। আমরা সারা দেশে ১০ হাজার অটল টিঙ্কারিং ল্যাব চালু করেছি। আমাদের স্কুল ছাত্রছাত্রীদের জন্য গবেষণা ও উদ্ভাবনের আতুড়ঘর হিসেবে কাজ করছে। এইসব ল্যাবগুলিতে ৭.৫ মিলিয়নেরও বেশ ছাত্রছাত্রী ১.২ বিলিয়ন উদ্ভাবনী প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে। জি-২০ দেশগুলি তাদের সাধ্যমতো গবেষণা ও উদ্ভাবনের প্রসারে বিশেষ করে গ্লোবাল সাউথ – এর দেশগুলির মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। আমি আপনাদের সকলকে গবেষণা ক্ষেত্রের সহযোগিতা বৃদ্ধির পথ তৈরি করার আহ্বান জানাচ্ছি।
মাননীয়গণ,
আপনাদের এই বৈঠক আগামী দিনের শিশু ও যুবসমাজের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমি খুশি যে, আপনাদের গোষ্ঠী দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনে সবুজে রূপান্তর, ডিজিটাল রূপান্তর এবং মহিলাদের ক্ষমতায়নকে চিহ্নিত করেছে। এই সকল প্রয়াসের মূলে রয়েছে শিক্ষা। আমার বিশ্বাস, এই গোষ্ঠী একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক কার্যকরী এবং ভবিষ্যৎমুখী শিক্ষা কর্মসূচি তৈরি করতে পারবে। এটি সারা বিশ্বের মঙ্গল করবে ‘বসুধৈব কুটুম্বকম্’ – ‘এক বিশ্ব, এক পরিবার, এক ভবিষ্যৎ’ – এর মহান আদর্শকে অনুসরণ করে। আমি আপনাদের ফলপ্রসূ ও সফল বৈঠকের জন্য শুভেচ্ছা জানাই।
ধন্যবাদ।