‘আচরণগত পরিবর্তনের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলা কিভাবে সম্ভব : ব্যক্তির ভূমিকা’ শীর্ষক বিশ্বব্যাঙ্কের এক আলোচনা-বৈঠকে জানালেন প্রধানমন্ত্রী
মিশন লাইফ’-এর মূল কথাই হল এই।
মানুষ যখন উপলবদ্ধি করেন এবং তাঁদের মধ্যে এই চেতনার উন্মেষ ঘটে যে তাঁদের প্রাত্যহিক জীবনে অতি সহজ ও সরল কাজগুলিরও অনেক শক্তি ও ক্ষমতা রয়েছে তখন পরিবেশের ওপর তার এক ইতিবাচক ফল দেখা যায়।
ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্পের আওতায় হাজার হাজার হেক্টর কৃষিজমিতে জলের যোগান দেওয়ার মাধ্যমে জলের বিশেষ সাশ্রয়ও ঘটেছে আমাদের দেশে।
এফএও-র সূত্র অনুযায়ী ২০২০ সালে বিশ্বের প্রাথমিক শস্য উৎপাদনের পরিমাণ ছিল প্রায় ৯ বিলিয়ন টন।

বিশ্ব ব্যাঙ্কের প্রেসিডেন্ট, মরক্কোর সুস্থায়ী উন্নয়ন এবং শক্তি পরিবহণ মন্ত্রী, আমার মন্ত্রিসভার সদস্যা শ্রীমতী নির্মলা সীতারমনজী, লর্ড নিকোলাস স্টার্ন, অধ্যাপক সানস্টেন এবং অন্য অতিথিবৃন্দ

নমস্কার!

বিশ্ব ব্যাঙ্ক জলবায়ু পরিবর্তনের উপর ব্যবহারগত পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় আমি আনন্দিত। এটা আমার সত্যিই মনের বিষয় এবং এটা যে এখন এক আন্তর্জাতিক আন্দোলনের রূপ নিচ্ছে দেখে আমি অত্যন্ত খুশি হয়েছি।

বন্ধুগণ,

ভারতের এক মহান দার্শনিক চাণক্য আজ থেকে প্রায় ২ হাজার বছর আগে লিখেছিলেন, “ जल बिन्दु निपातेन क्रमशः पूर्यते घटः| स हेतुः सर्व विद्यानां धर्मस्य च धनस्य च” অর্থাৎ ছোট ছোট জলবিন্দু যখন একত্রিত হয়, তখন তা একটি পাত্রকে ভরিয়ে তোলে। ঠিক তেমনই জ্ঞান, সুকর্ম অর্থবা সম্পদ ধীরে ধীরে সঞ্চিত হয়। এটা আমাদের কাছে একটি বার্তা-বিশেষ। একক জলবিন্দুকে বিরাট কিছু মনে হয় না। কিন্তু, যখন অনেক বিন্দু একত্রে মিলিত হয়, তখন তার এক প্রভাব ঘটে। ধরিত্রীর জন্য প্রতিটি ভালো কাজ তুচ্ছ মনে হতে পারে। কিন্তু, যখন সারা বিশ্ব জুড়ে শত-সহস্র একত্রে সেই কাজ করে, তখন তার প্রভাব হয় ব্যাপক। আমরা বিশ্বাস করিও যে, আমাদের এই ধরিত্রীর জন্য প্রত্যেক ব্যক্তি যে সঠিক সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, ধরিত্রী রক্ষার স্বার্থে তার মূল্য অপরিসীম। মিশন লাইফ – এর উদ্দেশ্যই হ’ল তাই।

বন্ধুগণ,

এই আন্দোলনের বীজ বপন করা হয়েছিল বহুদিন আগেই। ২০১৫ সালে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণসভায় আমি ব্যবহারগত পরিবর্তন নিয়ে বলেছিলাম। তারপর, আমরা দীর্ঘ পথ অতিক্রম করেছি। ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিব এবং আমি ‘মিশন লাইন’ – এর সূচনা করি। সিওপি-২৭ এ প্রস্তাবনা নথিতে সুস্থায়ী জীবনশৈলী ও অপচয়ের দিক নিয়েও বলা হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের বিশেষজ্ঞরাও এই মন্ত্রকেই গ্রহণ করেছেন – এটি নিঃসন্দেহেই প্রেরণাদায়ক।

বন্ধুগণ,

জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সারা বিশ্বের মানুষ অনেক কিছুই শুনে থাকেন। এ নিয়ে তাঁদের করণীয় কী, তা তাঁরা না জানার ফলে এ ব্যাপারে অনেকেই উদ্বেগের মধ্যে থাকেন। তাঁদেরকে নিরন্তর এটাই বোঝানো হয় যে, কেবল সরকার এবং আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলিরই এক্ষেত্রে ভূমিকা রয়েছে। তাঁরা যদি জানতেন যে, তাঁরাও কোনও অবদান রাখতে পারেন – তা তাঁদের সেই উদ্বেগ কাজে রূপান্তরিত হ’ত।

বন্ধুগণ,

সম্মেলন টেবিলে বসেই জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা সম্ভব নয়। এর জন্য লড়াই করতে হবে প্রতিটি গৃহের নৈশভোজের টেবিল থেকে। আলোচনা টেবিল থেকে কোনও একটা বিষয় যখন নৈশভোজের টেবিলে পৌঁছয়, তখন তা গণআন্দোলনে রূপ নেয়। প্রতিটি পরিবার এবং প্রতিটি ব্যক্তি সাধারণকে তাঁদের পছন্দ সম্বন্ধে সচেতন করা যায়, যা ধরিত্রীর কল্যাণে রাখতে পারে এবং তার উপকারে বিস্তার ও গতি সঞ্চার করতে পারে। মিশন লাইফ জলবায়ু পরিবর্তন আন্দোলনে সেরকমই এক গণতন্ত্রীকরণ। মানুষ যখন সচেতন হন, তাঁদের জীবনের একটি সাধারণ কাজও শক্তি যোগাতে পারে, পরিবেশের উপর তখন তার এক সদর্থক প্রভাব পড়ে।

বন্ধুগণ,

এটা হ’ল গণআন্দোলন এবং ব্যবহারগত রূপান্তরের বিষয়। ভারতবাসী বিগত কয়েক বছরে অনেক কিছু করেছেন। ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে জনপ্রচেষ্টাতেই লিঙ্গানুপাত উন্নত হচ্ছে। পরিবেশ পরিচ্ছন্নতা আন্দোলনে সাধারণ মানুষই নেতৃত্ব দিয়েছেন। নদী হোক, সমুদ্র সৈকত, রাস্তাঘাট যাতে জঞ্জাল মুক্ত হয়, তা সুনিশ্চিত করতে তাঁরা প্রয়াসী হয়েছেন। এলইডি বাল্বে রূপান্তর ঘটানোকে সফল আন্দোলনে রূপ দিতে জনসাধারণই এগিয়ে এসেছেন। প্রায় ৩৭ কোটি এলইডি বাল্ব ভারতে বিক্রি হয়েছে। এর ফলে, ৩ কোটি ৯০ লক্ষ টন প্রতি বছর কার্বনডাই অক্সাইড নির্গমন এড়ানো সম্ভব হয়েছে। ভারতের কৃষকরা ক্ষুদ্র সেচের আওতায় এনেছেন প্রায় ৭ লক্ষ হেক্টর জমি। ‘প্রতি বিন্দুতে অধিক ফসল’ – এই মন্ত্রের সফল রূপ দিয়ে অনেক জল সঞ্চয় করা গেছে। এরকম আরও অনেক দৃষ্টান্ত রয়েছে।

বন্ধুগণ,

মিশন লাইফ – এর অধীনে আমাদের প্রয়াস বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিস্তৃত। যেমন - স্থানীয় প্রশাসনকে পরিবেশ-বান্ধব করে তোলা অর্থাৎ জলসঞ্চয়, শক্তি সঞ্চয়, বর্জ্য হ্রাস এবং ই-বর্জ্য, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, প্রাকৃতিক উপায়ে চাষ এবং বাজরার প্রসার।

এইসব প্রয়াসের ফলে –

·         ২২ বিলিয়ন শক্তি সাশ্রয় সম্ভব হবে।

·         ৯ ট্রিলিয়ন লিটার জল সাশ্রয় সম্ভব হবে

·         ৩৭৫ মিলিয়ন টন বর্জ্য কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।

·         ১ মিলিয়ন টন ই-বর্জ্যের রূপান্তর সাধন সম্ভব হবে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ১৭৫ মিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত খরচ সাশ্রয় সম্ভব হবে।

 

এছাড়াও, ১৫ বিলিয়ন টন খাবারের বর্জ্য এতে কম করা যাবে। এর প্রভাব যে কতটা অপরিসীম হতে পারে, একটি উদাহরণ দিলে আপনারা বুঝতে পারবেন। এফএও – এর দেওয়া তথ্যানুযায়ী, ২০২০ সালে বিশ্ব প্রাথমিক শস্য উৎপাদন ছিল প্রায় ৯ বিলিয়ন টন।

বন্ধুগণ,

সারা বিশ্ব জুড়ে দেশগুলিকে অনুপ্রাণিত করতে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। আমি জেনেছি যে, বিশ্ব ব্যাঙ্ক গোষ্ঠী জলবায়ু পরিবর্তন রোধে অর্থবিনিয়োগ সার্বিক খরচের ২৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ শতাংশ করছে। জলবায়ু পরিবর্তন রোধে এই অর্থবিনিয়োগে লক্ষ্য হ’ল প্রচলিত দিকগুলির প্রতি সচেতনতা বৃদ্ধি। ব্যবহারগত উদ্যোগের ক্ষেত্রেও যথেষ্ট অর্থবিনিয়োগ প্রক্রিয়ার প্রয়োজন রয়েছে। ‘মিশন লাইফ’ – এর মতো ব্যবহারগত উদ্যোগ ক্ষেত্রে বিশ্ব ব্যাঙ্কের এই সমর্থনে বহুমুখীপ্রভাব পড়তে বাধ্য।

বন্ধুগণ,

বিশ্ব ব্যাঙ্ক টিমকে এই জাতীয় অনুষ্ঠান আয়োজন করার জন্য আমি ধন্যবাদ জানাই। আমি আশাবাদী যে, এই ধরনের বৈঠক ব্যক্তির ব্যবহারগত রূপান্তরের সফল রূপদানের এক সমাধানসূত্র নিয়ে আসবে। আপনাদের অনেক অনেক ধন্যবাদ।

 

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII

Media Coverage

PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...

Prime Minister visited the Indian Arrival monument at Monument Gardens in Georgetown today. He was accompanied by PM of Guyana Brig (Retd) Mark Phillips. An ensemble of Tassa Drums welcomed Prime Minister as he paid floral tribute at the Arrival Monument. Paying homage at the monument, Prime Minister recalled the struggle and sacrifices of Indian diaspora and their pivotal contribution to preserving and promoting Indian culture and tradition in Guyana. He planted a Bel Patra sapling at the monument.

The monument is a replica of the first ship which arrived in Guyana in 1838 bringing indentured migrants from India. It was gifted by India to the people of Guyana in 1991.