আমার প্রিয় নবীন বন্ধুগণ,
পালি-তে নিজেদের ক্রীড়া প্রতিভার অসাধারণ প্রদর্শন করতে আসা সমস্ত খেলোয়াড়কে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই। খেলায় পরাজয় কখনই হয় না। খেলায় হয় আপনি জেতেন, অথবা আপনি শেখেন। সেজন্য আমি সমস্ত খেলোয়াড়, তাঁদের সঙ্গে উপস্থিত সমস্ত প্রশিক্ষক ও অভিভাবক-অভিভাবিকাদেরও আমার শুভকামনা জানাই।
বন্ধুগণ,
সাংসদ খেল মহাকুম্ভ-এর আয়োজনে যে উৎসাহ সঞ্চারিত হয়েছে, যে আত্মবিশ্বাস পরিলক্ষিত হচ্ছে, তা আজ এখানে উপস্থিত প্রত্যেক খেলোয়াড়, প্রত্যেক তরুণ-তরুণীর এই উৎসাহ, এই উদ্দীপনাকে আনন্দে পর্যবসিত করেছে। আজ বিভিন্ন প্রকার ক্রীড়ার জন্য সরকারের মধ্যেও যে প্রাণশক্তি আমরা দেখতে পাচ্ছি, একইরকম প্রাণশক্তি আমরা মাঠে খেলোয়াড়দের মধ্যেও দেখতে পাচ্ছি। আমাদের খেলোয়াড়রা সব সময়েই চান যে তাঁরা যেন তৃণমূল স্তরে যত বেশি সম্ভব খেলার সুযোগ পান। তাঁরা যেন নিজেদের গ্রামে খেলতে পারেন, স্কুলে খেলতে পারেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে খেলতে পারেন, আর তারপর রাজ্য, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরেও খেলার সুযোগ পান। খেলোয়াড়দের এই ভাবনাকে আজ ভারতীয় জনতা পার্টি সাংসদ খেল মহাকুম্ভ-এর মাধ্যমে নতুন উদ্দীপনা যুগিয়েছে। আমি ভারতীয় জনতা পার্টির এই উদ্যোগের জন্য বিশেষ প্রশংসা করব যে এই দল নিজেদের সাংসদদের মাধ্যমে এ ধরনের খেল মহাকুম্ভ-এর আয়োজন করছে। আর এই পরম্পরা বিগত কয়েক বছর ধরে লাগাতার করে চলেছে। আজ এই বিজেপি সাংসদ খেল মহাকুম্ভ-এর মাধ্যমে দেশের জেলায় জেলায়, রাজ্যে রাজ্যে লক্ষ লক্ষ দক্ষ খেলোয়াড় তৈরি হচ্ছে, তাঁরা খেলার সুযোগ পাচ্ছেন। এই খেল মহাকুম্ভ নতুন ক্রীড়া প্রতিভা অন্বেষণ এবং খেলোয়ারদের আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ প্রদানেরও বড় মাধ্যম হয়ে উঠছে। আর এখন তো ভারতীয় জনতা পার্টির সাংসদরা মেয়েদের জন্যও বিশেষ খেল মহাকুম্ভ-এর আয়োজন করতে চলেছে। আমি ভারতীয় জনতা পার্টিকে, এই দলের সাংসদদের এই গুরুত্বপূর্ণ অভিযানের জন্য শুভেচ্ছা জানাই।
বন্ধুগণ,
আমাকে বলা হয়েছে যে, পালি-তেও ১,১০০-রও বেশি স্কুলের শিশুরা এই সাংসদ খেল মহাকুম্ভ-এ অংশগ্রহণ করেছে। ২ লক্ষেরও বেশি খেলোয়াড় অংশগ্রহণের জন্য এগিয়ে এসেছেন। এই ২ লক্ষ খেলোয়াড় এ ধরনের খেল মহাকুম্ভ-এর মাধ্যমে যে এক্সপোজার পেয়েছেন, নিজের প্রতিভা প্রদর্শনের যে সুযোগ পেয়েছেন, তা অভূতপূর্ব। আমি সংসদে আমার সহযোগী পি পি চৌধরিজিকে শুভেচ্ছা জানাই। তিনি এত অসাধারণ একটি আয়োজনের কাণ্ডারী। রাজস্থানের বীরভূমির তরুণ-তরুণীরা সর্বদাই সেনাবাহিনী থেকে শুরু করে ক্রীড়া ময়দান পর্যন্ত সর্বত্র দেশের মান বাড়িয়েছেন। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এখানে উপস্থিত সমস্ত খেলোয়াড় এই ঐতিহ্যকে এভাবেই নিরন্তর এগিয়ে নিয়ে যাবেন। আপনারা জানেন, যে কোনো ক্রীড়ার ক্ষেত্রে সবচাইতে মজার কথা হল, জয়ের অভ্যাস তৈরি করা। আর যদি জয় না পান, তাহলেও এ থেকে আপনারা প্রতিনিয়ত নতুন কিছু শেখার সুযোগ পান। ক্রীড়াই জীবনে এমন একটি সুযোগ এনে দেয়, ক্রীড়াই শেখায় যে সর্বশ্রেষ্ঠত্বের কোনো শেষ সীমা নেই। আমাদের সম্পূর্ণ শক্তি দিয়ে চেষ্টা করে যেতে হবে। সেজন্য এই খেল মহাকুম্ভ একদিক থেকে দেখতে গেলে আপনাদের জীবন বদলানোর একটি অত্যন্ত বড় মহাযজ্ঞও।
বন্ধুগণ,
যে কোনো ক্রীড়ার একটি প্রধান ক্ষমতা হল, তা আমাদের অনেক খারাপ অভ্যাস থেকে বাঁচিয়ে রাখে। খেলার মাধ্যমে আমাদের ইচ্ছাশক্তি মজবুত হয়, একাগ্রতা বাড়ে, আমাদের ফোকাস স্পষ্ট থাকে। ক্রীড়া ড্রাগস-এর জাল থেকে শুরু করে অন্যান্য কু-অভ্যাস ও নেশা থেকে খেলোয়াড়দের দূরে রাখে। সেজন্য খেলাধূলা ব্যক্তিত্ব বিকাশের ক্ষেত্রেও বড় ভূমিকা পালন করে।
আমার প্রিয় বন্ধুগণ,
বিজেপি সরকার, তা সে রাজ্যের হোক কিংবা কেন্দ্রের, সর্বদাই নবীন প্রজন্মের কল্যাণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়। খেলোয়াড়দের যত বেশি সম্ভব সুযোগ দেওয়া যায় তার চেষ্টা করে, খেলোয়াড়দের চয়ন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বজায় রাখে, সরকার নিজে থেকেই সমস্ত ধরনের পরিকাঠামো ও সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করে, যা থেকে ভারতের খেলোয়াড়রা এখন নিজেদের গড়ে তোলার সবচাইতে ভালো সুযোগ পাচ্ছেন। আমরা বিগত ১০ বছরে ক্রীড়াক্ষেত্রে বাজেট বরাদ্দ আগের তুলনায় তিনগুণ বাড়িয়েছি। হাজার হাজার অ্যাথলিট আজ ‘টপস’ প্রকল্পের মাধ্যমে দেশ-বিদেশে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন, কোচিং-এর সুবিধা পাচ্ছেন। ‘খেলো ইন্ডিয়া গেমস’-এর মাধ্যমেও ৩ হাজারের বেশি খেলোয়াড়কে মাসে ৫০ হাজার টাকা সাহায্য করা হচ্ছে। তৃণমূল স্তরে প্রায় ১ হাজারেরও বেশি ‘খেলো ইন্ডিয়া সেন্টার’-এ লক্ষ লক্ষ খেলোয়াড় প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। আর এর পরিণাম এখন আমাদের সামনে রয়েছে। এ বছর এশিয়ান গেমস-এ আমাদের দেশের খেলোয়াড়রা ১০০টিরও বেশি পদক জিতে রেকর্ড তৈরি করেছেন। এশিয়ান গেমস-এ পদক জয়ী খেলোয়াড়দের অধিকাংশই ‘খেলো ইন্ডিয়া’ গেমস-এর মাধ্যমে উঠে এসেছেন।
আমার প্রিয় খেলোয়াড়গণ,
যে কোনো খেলোয়াড় যখন কোনো দলের জন্য খেলেন, তখন তাঁদের ব্যক্তিগত লক্ষ্য থেকে তাঁদের দলের লক্ষ্যকে বেশি অগ্রাধিকার দিতে হয়। তাঁদেরকে তখন নিজের দল, নিজের রাজ্য কিংবা নিজের দেশের প্রতিনিধিত্বকারী দলের লক্ষ্যের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলতে হয়। আজ স্বাধীনতার অমৃতকালে আমাদের দেশও এই যুব ভাবনাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। গত ১ তারিখেই যে বাজেট পেশ করা হয়েছে, সেটিও এক প্রকার দেশের যুব সম্প্রদায়ের প্রতি সমর্পিত। সরকার যেভাবে রেল ও সড়কপথ উন্নয়নে বিনিয়োগ করছে, আধুনিক পরিকাঠামো গড়ে তুলতে ১১ লক্ষ কোটি টাকা ব্যয় করতে চলেছে, তার ফলে সবচাইতে বেশি লাভবান হবেন আমাদের নবীন প্রজন্মের মানুষেরাই। ভালো সড়কপথের স্বপ্ন কারা সবচাইতে বেশি দেখেন? আমাদের নবীন প্রজন্ম। নতুন বন্দে ভারত ট্রেনগুলিকে দেখে কারা সবচাইতে বেশি খুশি হন? আমাদের নবীন প্রজন্ম, আমাদের যুবক-যুবতীরা। বাজেটে যে ৪০ হাজার বন্দে ভারত-এর মতো উচ্চ মানের রেল কামরা নির্মাণের কথা ঘোষণা করা হয়েছে, তার মাধ্যমে কারা সবচাইতে বেশি লাভবান হবেন? আমাদের নবীন প্রজন্ম। ভারত যে আধুনিক পরিকাঠামো নির্মাণে ১১ লক্ষ কোটি টাকা খরচ করতে চলেছে, তা থেকেও নবীন প্রজন্মের জন্যই সবচাইতে বেশি রোজগারের নতুন সুযোগ গড়ে উঠবে। ভারতের নবীন প্রজন্ম যাতে নতুন নতুন উদ্ভাবন করতে পারেন, ক্রীড়াক্ষেত্র থেকে শুরু করে অন্যান্য ক্ষেত্রে যাতে সাফল্য পান, নিজেরাই যেন অনেক বড় বড় কোম্পানি গড়ে তুলতে পারেন, তা সুনিশ্চিত করতে ভারত সরকার ১ লক্ষ কোটি টাকার একটি তহবিল গঠন করেছে। সরকার স্টার্ট-আপগুলির জন্য কর-এর ক্ষেত্রে ছাড়ের নির্ধারিত সীমাকে আরও বিস্তারিত করার ঘোষণা করেছে।
বন্ধুগণ,
চতুর্মুখী উন্নয়ন কর্মের ফলে এই পালি-র ভাগ্যও বদলেছে, পালি-র চেহারাও বদলে গেছে। আপনাদের পালি লোকসভাতেই প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে বেশ কিছু সড়কপথ নির্মাণ করা হয়েছে। তাছাড়া রেলের ক্ষেত্রে স্টেশনগুলির পরিষেবা ও পরিকাঠামো উন্নত করা, রেলওয়ে ব্রিজ নির্মাণ, রেললাইন ডাবলিং করা - এরকম অনেক উন্নয়ন কর্মের থেকে আপনারাই সবচাইতে বেশি লাভবান হচ্ছেন। পালি-র ছাত্রছাত্রী এবং নবীন প্রজন্মের ছেলে-মেয়েদের যত বেশি সম্ভব সুযোগ প্রদান এবং তাঁদের দক্ষতা উন্নয়নের ক্ষেত্রেও সরকার অনেক ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছে। পালি-তে বেশ কিছু নতুন আইটি সেন্টার গড়ে তোলা হয়েছে। দুটি কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ও খোলা হয়েছে। সরকারি স্কুলগুলিতে নতুন নতুন শ্রেণীকক্ষ নির্মাণ, নতুন নতুন কম্পিউটার ল্যাব নির্মাণ - প্রত্যেক দিকে সম্পূর্ণ প্রচেষ্টা করা হচ্ছে। এখানে মেডিকেল কলেজ নির্মাণ থেকে শুরু করে পাসপোর্ট কেন্দ্র গড়ে তোলা, গ্রামে গ্রামে সৌরবিদ্যুৎ সরবরাহ চালু হওয়ায় পালি জেলার মানুষের জীবন আরও সহজ হয়েছে। আমাদের চেষ্টা থাকবে যাতে ডবল ইঞ্জিন সরকারের মাধ্যমে পালি সহ সমগ্র রাজস্থানের সমস্ত নাগরিকের ক্ষমতায়ন হয়, তাঁদের জীবন যেন সফল হয়। ভারতীয় জনতা পার্টির নেতৃত্বাধীন সরকারের এই প্রচেষ্টাগুলির মাধ্যমে পালি এবং এই গোটা এলাকার নবীন প্রজন্মের মানুষের জীবনও সহজ হয়ে উঠেছে। আর যখন জীবন থেকে প্রতিকূলতা দূর হতে থাকে, তখন খেলাধূলাতেও মন বসে, জেতার সম্ভাবনাও বাড়ে। আমি আরও একবার সমস্ত খেলোয়াড়দের শুভেচ্ছা জানাই। অনেক অনেক ধন্যবাদ।