নমস্কার।
আসাম সরকারে সরকারি চাকরি পাওয়া সমস্ত যুবক - যুবতি ও তাঁদের পরিবারকে আমি অভিনন্দন জানাই। গত মাসে বিহুর সময় আসামে গিয়েছিলাম। সেই জমকালো অনুষ্ঠানের স্মৃতি এখনো আমার মনে তাজা। সেই সময়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানটি ছিল অসমীয়া সংস্কৃতির গৌরবের প্রতীক। আসামের বিজেপি সরকার রাজ্যের যুব সম্পদায়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে যে আন্তরিক তার প্রমাণ আজকের এই কর্মসংস্থান মেলা ‘আসাম রোজগার মেলা’ । এর আগেও এই ‘আসাম রোজগার মেলা’-র মাধ্যমে ৪০ হাজারেরও বেশি যুবককে সরকারি চাকরি দেওয়া হয়েছে। আজও প্রায় ৪৫ হাজার যুবক যুবতির হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয়েছে। আমি সংশ্লিষ্ট সকল যুবক -যুবতির উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করছি।
বন্ধুগণ ,
আজ, বিজেপি সরকারের উদ্যোগে আসাম শান্তি ও উন্নয়নের এক নতুন যুগের সাক্ষী হচ্ছে। উন্নয়নের এই গতি আসামে ইতিবাচকতা ও অনুপ্রেরণা ছড়িয়েছে। আমাকে বলা হয়েছে যে আসাম সরকার সরকারি নিয়োগকে আরও স্বচ্ছ করতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। বিভিন্ন বিভাগে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালানোর জন্য 'আসাম ডাইরেক্ট রিক্রুটমেন্ট কমিশন' গঠন করা হয়েছে । আগের প্রক্রিয়ায় প্রতিটি বিভাগের আলাদা নিয়ম ছিল। এ কারণে অনেক সময় সময়মতো নিয়োগ সম্পন্ন করা যেত না। প্রার্থীদেরও বিভিন্ন বিভাগের পদের জন্য বিভিন্ন পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়েছিল। এখন এই সমস্ত প্রক্রিয়া খুব সহজ করা হয়েছে. এর জন্য আসাম সরকার সত্যিই অনেক অভিনন্দনের দাবি রাখে।
বন্ধুগণ ,
স্বাধীনতার অমৃতকালে আমরা সবাই মিলে আমাদের দেশকে উন্নত জাতি হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার নিয়েছি। অমৃতকালের এই আগামী ২৫ বছর আপনার চাকরিতে সেবাকালের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি এখন প্রত্যেক সাধারণ নাগরিকের কাছে আসাম সরকারের মুখ হয়ে উঠবেন। আপনার আচরণ, আপনার চিন্তাভাবনা, কাজের প্রতি আপনার দৃষ্টিভঙ্গি, সাধারণ জনগণের প্রতি আপনার সেবাবোধ, জনসাধারণের উপর এর প্রভাব এখন বিশাল হবে। এজন্য আপনাকে কিছু বিষয়ে অত্যন্ত যত্ন নিতে হবে। আজ আমাদের সমাজ দ্রুত উচ্চাকাঙ্ক্ষী হয়ে উঠছে। সেই দিনগুলো চলে গেছে যখন মানুষ মৌলিক সুবিধার জন্যও যুগ যুগ ধরে অপেক্ষা করতো। আজকাল কোনো নাগরিক উন্নয়নের জন্য এত অপেক্ষা করতে চায় না। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের এই যুগে দেশের মানুষ দ্রুত ফল চায়। আর তাই সরকারি ব্যবস্থাকেও সেই অনুযায়ী নিজেদের পরিবর্তন করতে হবে। দেশের নাগরিকদের আশা-আকাঙ্খা পূরণে সরকারি কর্মচারীদেরও বড় দায়িত্ব রয়েছে। যে পরিশ্রম ও নিষ্ঠা আপনাকে এখানে নিয়ে এসেছে, সেই পথেই আপনাকে এগিয়ে যেতে হবে। আপনাকে সবসময় শিখতে হবে। এর মাধ্যমে, আপনি সমাজ এবং সরকারি ব্যবস্থা উভয়ের উন্নতিতে অবদান রাখতে সক্ষম হবেন।
বন্ধুগণ ,
আজ, ভারত খুব দ্রুত তার পরিকাঠামো আধুনিকীকরণ করছে। নতুন নতুন হাইওয়ে ও এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ থেকে শুরু করে নতুন নতুন রেললাইন নির্মাণ, নতুন নতুন বন্দর-বিমানবন্দর ও নৌপথ গড়ে তোলা, এসব প্রকল্পে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। প্রতিটি পরিকাঠামো প্রকল্পে, সরকার যে পরিমাণ ব্যয় করছে তা কর্মসংস্থান ও আত্মকর্মসংস্থান বাড়াচ্ছে। যেমন একটি বিমানবন্দর নির্মাণ করতে হলে প্রকৌশলী, প্রযুক্তিবিদ, হিসাবরক্ষক, শ্রমিক, বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি, ইস্পাত ও সিমেন্টের প্রয়োজন হয়। অর্থাৎ একটি নির্মাণের মাধ্যমে অনেক খাতে নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হতে থাকে। রেললাইন সম্প্রসারণ ও বিদ্যুতায়নের মাধ্যমেও তেমনি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। ভারত যে মৌলিক সুবিধার উপর জোর দিচ্ছে এবং জীবনযাত্রার স্বাচ্ছন্দ্য বৃদ্ধি করছে তা দেশের প্রতিটি কোণে কর্মসংস্থানের নতুন সম্ভাবনা তৈরি করেছে। ২০১৪ সাল থেকে আমাদের সরকার দেশে প্রায় চার কোটি পাকা বাড়ি তৈরি করে দরিদ্রদের দিয়েছে। এসব বাড়িতে শৌচাগার, গ্যাস সংযোগ, কলের পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে। এই বাড়িগুলি তৈরি করতে এবং এই পরিষেবাগুলির ব্যবস্থা করতে উত্পাদন খাত, রসদ, দক্ষ শ্রমিক এবং শ্রমিক ভাই-বোনরা অনেকপ্রচুর পরিশ্রম করা হয়েছে। অর্থাৎ বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন খাতে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আয়ুষ্মান ভারত যোজনা কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও একটি বড় ভূমিকা পালন করেছে। আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের কারণে দেশে অনেক নতুন হাসপাতাল ও ক্লিনিক তৈরি হয়েছে। কয়েক সপ্তাহ আগে, আমি AIIMS গুয়াহাটি এবং ৩টি মেডিকেল কলেজ উৎসর্গ করার সুযোগ পেয়েছিলাম। গত কয়েক বছরে আসামে ডেন্টাল কলেজও বিস্তৃত হয়েছে। এর মাধ্যমে চিকিৎসা পেশার সঙ্গে যুক্ত তরুণদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
বন্ধুগণ ,
আজ তরুণরা এমন অনেক ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে, যেগুলো নিয়ে দশ বছর আগে কেউ ভাবতেও পারেনি। গত ৯ বছরে স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম দেশে লক্ষাধিক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। কৃষি, সামাজিক অনুষ্ঠান, জরিপ এবং প্রতিরক্ষা খাতে, ড্রোনের ক্রমবর্ধমান চাহিদা তরুণদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করেছে। দেশে আজ যে স্বনির্ভর ভারত অভিযান চলছে তা-ও অনেক নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করছে। আজ ভারতে কোটি কোটি মোবাইল ফোন তৈরি হচ্ছে, ব্রডব্যান্ড কানেক্টিভিটি প্রতিটি গ্রামে পৌঁছে যাচ্ছে, এটি বৃহৎ পরিসরে কর্মসংস্থান ও স্ব-কর্মসংস্থানকেও উৎসাহিত করেছে। সরকারে কাজ করার সময়, আপনাকে সর্বদা মনে রাখতে হবে যে কীভাবে একটি পরিকল্পনা, একটি সিদ্ধান্ত মানুষের জীবনকে পরিবর্তন করে।
বন্ধুগণ,
বিজেপি সরকারের নীতির কারণে আজ উত্তর-পূর্ব ভারতের বিপুল সংখ্যক যুবক-যুবতি উন্নয়নের মূল স্রোতে আসছে। বিজেপি সরকার যুবকদের স্বপ্ন পূরণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কর্মসংস্থান এবং স্ব-নির্ভর প্রকল্পের ক্ষেত্রে নতুন নতুন সুযোগ প্রদান করে, আমরা একটি নতুন ভারত গড়ার দিকে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছি। আবারও আপনাকে এবং আপনার পরিবারের সকল সদস্যদের অনেক অনেক অভিনন্দন।
ধন্যবাদ।