“ওয়াটার ভিশন@২০৪৭ আগামী ২৫ বছরের জন্য অমৃতকাল যাত্রার এক গুরুত্বপূর্ণ দিক”
“কোনও অভিযানের সঙ্গে যখন জনগণ যুক্ত হন তাঁরা তখন কাজটির গুরুত্বও বুঝতে পারেন”
“যখন মানুষ স্বচ্ছ ভারত অভিযানে অংশ নিয়েছিল তখন তাঁদের মধ্যে সচেতনতাও জাগ্রত হয়েছিল”
“দেশ প্রতিটি জেলায় ৭৫টি অমৃত সরোবর তৈরি করছে যেখানে এরই মধ্যে ২৫ হাজার অমৃত সরোবর তৈরি হয়ে গেছে”
“প্রতিটি বাড়িতে জল পৌঁছনোর ব্যবস্থা করার ক্ষেত্রে জল জীবন মিশন রাজ্যের পক্ষে একটি গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়নের মাপকাঠি”
“ ‘প্রতি ফোঁটায় আরও শস্য’ অভিযানে দেশের ৭০ লক্ষ হেক্টরের বেশি জমিকে এ পর্যন্ত ক্ষুদ্র সেচ ব্যবস্থার আওতায় আনা গেছে”
“গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির উচিৎ আগামী পাঁচ বছরের জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা যাতে জল সরবরাহ থেকে শুরু করে পরিচ্ছন্নতা এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত থাকবে”
“আমাদের নদীগুলি এবং জলাশয়গুলি সামগ্রিক জল পরিবেশের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ”
“নমামি গঙ্গে মিশনকে মাথায় রেখে নদী সংরক্ষণের জন্য রাজ্যগুলি একই ধরনের অভিযান শুরু করতে পারে”

নমস্কার।

দেশের সমস্ত রাজ্যের জল বিষয়ক মন্ত্রীদের নিয়ে প্রথম অখিল ভারতীয় সম্মেলনের এই আয়োজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আজ ভারত জল সুরক্ষা নিয়ে অভূতপূর্ব কাজ করছে ও বিনিয়োগ করছে। আমাদের সাংবিধানিক ব্যবস্থায় জল বিষয়টি রাজ্যের নিয়ন্ত্রণাধীন। জল সংরক্ষণের জন্য দেশের রাজ্যগুলির প্রচেষ্টা সমগ্র দেশের প্রেক্ষিতে নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সহায়ক হবে। এক্ষেত্রে ‘ওয়াটার ভিশন অ্যাট ২০৪৭’ আগামী বছরের অমৃত যাত্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাত্রা সংযোজন করতে চলেছে।

বন্ধুগণ,

এই সম্মলনে ‘হোল অফ গভর্নমেন্ট’ এবং ‘হোল অফ কান্ট্রি’ – এই দূরদৃষ্টিকে সামনে রেখে নানা পর্যায়ে আলাপ-আলোচনা হওয়া অত্যন্ত স্বাভাবিক এবং প্রয়োজনীয়। ‘হোল অফ গভর্নমেন্ট’ – এর একটি দিক হ’ল – কেন্দ্র ও রাজ্য নির্বিশেষে সমস্ত সরকারগুলিকে একটি ‘সিস্টেম’ – এর মতো, একটি ‘অর্গ্যানিক এনটিটি’র মতো যেন কাজ করে। রাজ্যগুলিতেও বিভিন্ন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রক যেমন – জল মন্ত্রক থেকে শুরু করে সেচ মন্ত্রক, কৃষি মন্ত্রক, গ্রামীণ বিকাশ মন্ত্রক এবং পশুপালন মন্ত্রক থাকে, তেমনই নগরোন্নয়ন মন্ত্রক এবং বিপর্যয় মোকাবিলা ব্যবস্থাপনা মন্ত্রক – এই সমস্ত মন্ত্রকের মধ্যে নিয়মিত সম্পর্ক বার্তালাপ ও তথ্যের আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা থাকা উচিৎ। আমাদের এই দূরদৃষ্টি থাকা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। যদি সরকারি বিভাগগুলির কাছে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলির তথ্য থাকে, সম্পূর্ণ তথ্য থাকে, তা হলে তাদের নিজস্ব পরিকল্পনা রচনা করতেও সুবিধা হয়।

বন্ধুগণ,

আমাদের এটাও বুঝতে হবে যে, সরকারের একক প্রচেষ্টাতেই সাফল্য আসে না। যাঁরা যেখানে সরকারের দায়িত্বে আছেন, তাঁদের সেই ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে যে, তাঁদের একার প্রচেষ্টাতেই প্রত্যাশিত ফল পাবেন। সেজন্য জল সংরক্ষণ সংশ্লিষ্ট অভিযানগুলিতেও সাধারণ মানুষের অংশীদারিত্বকে সুনিশ্চিত করতে হবে। বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও অসামরিক সমাজকেও যত বেশি সম্ভব যুক্ত করতে হবে, আমাদের তাঁদেরকে সঙ্গে নিতে হবে। গণঅংশীদারিত্বের আরেকটি পক্ষ রয়েছে এবং সেটিকেও খুব ভালোভাবে বুঝতে হবে। কিছু মানুষ ভাবেন যে, গণঅংশীদারিত্ব মানে জনগণের ঘারেই সব দায়িত্ব ফেলে দেওয়া। তাঁরা ভাবেন যে, গণঅংশীদারিত্বকে উৎসাহিত করলে সরকারের দায়িত্ব বুঝি কমে যাবে। কিন্তু, এটা বাস্তব নয়। গণঅংশীদারিত্ব বাড়লে সরকারের জবাবদিহিতা হ্রাস পায় না। গণঅংশীদারিত্বের সবচেয়ে বড় লাভ হ’ল – সাধারণ মানুষও এটা জানতে পারেন, এই অভিযানের জন্য নিয়মিত কত পরিশ্রম করতে হচ্ছে আর কত টাকা খরচ হচ্ছে। এর অনেক্ দিক রয়েছে। যখন কোনও অভিযানের সঙ্গে সাধারণ মানুষ যুক্ত হন, তখনই সেই কাজের গুরুত্ব ভালোভাবে বোঝা যায়। তখনই সেই কাজের সামর্থ্যকে অনুভব করা যায়। তার আকার-আয়তন সম্পর্কে টের পাওয়া যায়। এর ফলে, জনগণ যখন তাঁদের চোখের সামনে সবকিছু হতে দেখেন, এর সঙ্গে যুক্ত হন, তখন এ ধরনের প্রকল্প বা অভিযানে একটি ‘সেন্স অফ ওনারশিপ’ আসে। এই ‘সেন্স অফ ওনারশিপ’ই যে কোনও প্রকল্প বা অভিযানের সাফল্যের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় পুঁজি। এখন আপনারা দেখুন, স্বচ্ছ ভারত অভিযান আজ আমাদের সামনে একটি কত বড় উদাহরণ। এই স্বচ্ছ ভারত অভিযানের সঙ্গে যখন সাধারণ মানুষ যুক্ত হয়েছেন, তখন জনমনে একটি নতুন চেতনা জাগ্রত হয়েছে, মানুষ সচেতন হয়েছেন। ময়লা – আবর্জনা দূর করার জন্য যত সম্পদের প্রয়োজন ছিল, যত ধরনের জল পরিশুদ্ধকরণ প্রকল্প গড়ে তুলতে হ’ত, শৌচালয় করতে হ’ত – এরকম অনেক কাজ সরকার করেছে। কিন্তু, এই অভিযানের সাফল্য তখনই সুনিশ্চিত হয়েছে, যখন জনগণের মনে প্রত্যেক নাগরিকের ভাবনায় এই সচেতনতা এসেছে যে, নোংরা করলে চলবে না, ময়লা ফেলে রাখলে চলবে না। জনগণের মনে নোংরা আবর্জনার প্রতি একটি ঘৃণাভাব গড়ে উঠতে শুরু করেছে। তেমনভাবেই আজ গণঅংশীদারিত্বের এই ভাবনাকে আমাদের জল সংরক্ষণের জন্য জাগিয়ে তুলতে হবে। জনগণকে সচেতন করতে হবে। এক্ষেত্রে আমরা জনগণকে যতটা সচেতন করব, ততটাই প্রভাব সৃষ্টি হবে। যেমন – আমরা নানা পর্যায়ে ‘জল জাগরুকতা মহোৎসব’ – এর আয়োজন করতে পারি। স্থানীয় পর্যায়ে আয়োজিত বিভিন্ন মেলায় জল নিয়ে সচেতনতা বিষয়ক নানা ধরনের আয়োজন করতে পারি। বিশেষ করে, নবীন প্রজন্মকে এক্ষেত্রে উৎসাহিত করতে হবে। তাদেরকে যত বেশি সচেতন করা যায়, তা দেখতে হবে। সেজন্য আমাদের পাঠ্যক্রম থেকে শুরু করে স্কুলে বিভিন্ন রকম কর্মপদ্ধতি চালু করতে হবে। আপনারা জানেন যে, দেশের প্রত্যেক জেলায় আমরা ৭৫টি করে অমৃত সরোবর গড়ে তুলছি। আপনারাও নিজেদের রাজ্যে এই অভিযান শুরু করে অনেক কাজ করেছেন। এত কম সময়ের মধ্যে দেশে ২৫ হাজার অমৃত সরোবর গড়ে উঠেছে। জল সংরক্ষণের লক্ষ্যে সারা বিশ্বে এটি এ ধরনের একটি অতুলনীয় অভিযান। আর ইতিমধ্যেই এই অভিযান গণঅংশীদারিত্বে যুক্ত হয়েছে। সাধারণ মানুষ নিজে থেকেই নানারকম উদ্যোগ নিচ্ছেন, স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে আসছেন। এই অমৃত সরোবরগুলি সংরক্ষণের ক্ষেত্রেও যাতে সাধারণ মানুষকে যুক্ত করা যায়, সেই লক্ষ্যে আমাদের নিরলস চেষ্টা করে যেতে হবে।

বন্ধুগণ,

আমাদের নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রেও জল সংক্রান্ত সমস্ত সমস্যা সমাধান করতে সরকারি নীতি এবং চিরাচরিত আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার বাইরে বেরিয়ে আসতে হবে। আমাদের সমস্যাগুলিকে চিহ্নিত করতে এবং সেগুলির সমাধান খুঁজতে প্রযুক্তির সাহায্য নিতে হবে। সরকারি ও বেসরকারি শিল্পোদ্যোগগুলি, বিশেষ করে স্টার্টআপ-গুলিকে এর সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। ‘জিও সেন্সিং’ এবং ‘জিও ম্যাপিং’ – এর মতো বিভিন্ন অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্য আমাদের এই লক্ষ্য পূরণে অনেক সহায়ক হয়ে উঠতে পারে।

বন্ধুগণ,

প্রত্যেক বাড়িতে নলবাহিত জল পৌঁছে দেওয়ার জন্য ‘জল জীবন মিশন’ আপনাদের রাজ্যে একটি বড় উন্নয়ন সূচক। অনেক রাজ্য এক্ষেত্রে ভালো কাজ করেছে, অনেক রাজ্য এই লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে। এখন আমাদের এটা সুনিশ্চিত করতে হবে যে, একবার এই ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারলে, তখন ভবিষ্যতে এগুলির রক্ষণা-বেক্ষণও ততটাই ভালোভাবে চলতে পারে। আমাদের গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি যেন ‘জল জীবন মিশন’ – এর নেতৃত্ব দেয় আর কাজ সম্পূর্ণ হলে একে শংসায়িত  করে যে, তাদের গ্রাম পঞ্চায়েতে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পৌঁছচ্ছে এবং পরিশ্রুত পানীয় জল পাওয়া যাচ্ছে। প্রত্যেক গ্রাম পঞ্চায়েত তাদের মাসিক বা ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনও অনলাইনে ‘সাবমিট’ করতে পারে যে, তাদের গ্রামে কতগুলি বাড়িতে নলবাহিত পরিশ্রুত পানীয় জল পাচ্ছে। পানীয় জলের গুণমান সুনিশ্চিত করার জন্য নির্দিষ্ট সময়ের অন্তরালে জল পরীক্ষার প্রক্রিয়াও গড়ে তোলা উচিৎ।

বন্ধুগণ,

আমরা সকলে জানি যে, শিল্পোদ্যোগ ও কৃষি দুটি এমন ক্ষেত্র, যেখানে স্বাভাবিক রূপেই অনেক জলের প্রয়োজন হয়। আমাদের এই দুটি ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত মানুষদের নিয়ে বিশেষ অভিযান শুরু করে তাঁদের জল সুরক্ষার প্রতি সচেতন করে তুলতে হবে। জল কতটা পাওয়া যাচ্ছে, তার উপর ভিত্তি করেই বীজ বপণের আগে ফসলের বৈচিত্র্য নির্ধারণ, প্রাকৃতিক চাষকে উৎসাহ দিতে হবে। অনেক জায়গায় এরকমও দেখা গেছে যে, যেখানে প্রাকৃতিক চাষ হয়, প্রাকৃতিক চাষের উপর জোর দেওয়া হয়, সেখানে জল সংরক্ষণের ক্ষেত্রেও প্রভাবও ইতিবাচক।

বন্ধুগণ,

‘প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিঁচাই যোজনা’র মাধ্যমে সব রাজ্যে দ্রুতগতিতে কাজ হচ্ছে। এর মাধ্যমে ‘প্রতি বিন্দুতে অধিক ফসল’ অভিযান শুরু করা হয়েছিল। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশে এখনও পর্যন্ত ৭০ লক্ষ হেক্টরেরও বেশি কৃষি জমিতে ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্পের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। সমস্ত রাজ্যেরই এখন ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্পকে নিয়মিত উৎসাহ যোগানো উচিৎ। এটা জল সংরক্ষণের অনুকূলে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় প্রকল্প। এখন সরাসরি সেচ নালার পরিবর্তে পাইপ লাইন-ভিত্তিক নতুন নতুন প্রকল্প চালু করা হচ্ছে। এই প্রকল্পগুলিকে আরও দ্রুতগতিতে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।

বন্ধুগণ,

জল সংরক্ষণের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ‘অটল ভূগর্ভস্থ জল সংরক্ষণ যোজনা’ শুরু করেছে। এটি একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল অভিযান। এই অভিযানকে ততটাই সংবেদনশীলতা নিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। ভূগর্ভস্থ জল ব্যবস্থাপনার অনুকূলে গড়ে তোলা কমিশন যেন কঠোরভাবে এই লক্ষ্যে কাজ করে, সেদিকে নজর রাখা অত্যন্ত প্রয়োজন। ভূগর্ভস্থ জলস্তর বাড়াতে সমস্ত জেলায় বড় মাত্রায় ‘ওয়াটার শেড’ – এর কাজ করা প্রয়োজন। আমি চাই যে, মনরেগা প্রকল্পের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি কাজ যেন জল সংরক্ষণের জন্যই করা হয়। দেশের পার্বত্য অঞ্চলগুলিতে ও পাহাড়ি এলাকায় ‘স্প্রিং শেড’গুলির পুনরুজ্জীবনের জন্য যে কর্মসূচি শুরু করা হয়েছে, তা নিয়েও দ্রুতগতিতে কাজ করা প্রয়োজন। জল সংরক্ষণের জন্য আপনাদের রাজ্যে অরণ্য সম্প্রসারণ ততটাই জরুরি। এজন্য পরিবেশ মন্ত্রক এবং জল মন্ত্রক মিলেমিশে কাজ করবে। নিরবচ্ছিন্ন জল সরবরাহ বজায় রাখতে সমস্ত স্থানীয় জলের উৎসগুলির সংরক্ষণ সুনিশ্চিত করতে হবে। গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি নিজেদের জন্য আগামী পাঁচ বছরের অ্যাকশন প্ল্যান রচান করুন। জলকে কেন্দ্রে রেখে এই অ্যাকশন প্ল্যানগুলি তৈরি করুন। এতে জল সরবরাহ থেকে শুরু করে পরিচ্ছন্নতা ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার পথচিত্র যেন সামিল থাকে। কোন গ্রামে কতটা জল দরকার আর সেজন্য কী কাজ কতটা করতে হবে, তার ভিত্তিতে কিছু রাজ্যে পঞ্চায়েত স্তরে ‘ওয়াটার বাজেট’ তৈরি করা হয়েছে। এই পদ্ধতি অন্যান্য রাজ্যও চালু করতে পারে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে আমরা দেখেছি যে, ‘জল ধরো, জল ভরো’ অভিযান জনমনে একটি আকর্ষণ সৃষ্টি করেছে। কিন্তু, এক্ষেত্রে সাফল্যের মুখ দেখতে এখনও অনেক কিছু করা বাকি। এজন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হ’ল – এ ধরনের অভিযানকে রাজ্য সরকারের দৈনন্দিন ক্রিয়াকলাপের ক্ষেত্রে একটি সহজ স্বভাবে পরিণত করা। তা যেন রাজ্য সরকারগুলির বার্ষিক অভিযানের অনিবার্য অঙ্গ হয়ে ওঠে। আর এই অভিযান চালু করার জন্য বর্ষার অপেক্ষা না করে বর্ষা আসার আগেই সমস্ত পরিকল্পনা ছকে নেওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন।

বন্ধুগণ,

এবারের বাজেটে কেন্দ্রীয় সরকার বৃত্তাকার অর্থনীতি গড়ে তোলার উপর জোর দিয়েছে। জল সংরক্ষণের ক্ষেত্রেও এই বৃত্তাকার অর্থনীতি অনেক বড় ভূমিকা পালন করবে। যখন পরিশুদ্ধ জলকে পুনর্ব্যবহার করা হয় আর পরিশ্রুত জলকে সংরক্ষণ করা হয়, এই প্রক্রিয়ায় সমগ্র বাস্তু ব্যবস্থা অত্যন্ত লাভবান হয়। সেজন্য জল বিশুদ্ধকরণ, জলের পুনর্ব্যবহার অত্যন্ত প্রয়োজন। রাজ্যগুলি বিভিন্ন কাজে এই পরিশ্রুত জলের ব্যবহার বৃদ্ধি স্বার্থে গড়ে তোলা বিভিন্ন প্রকল্প আর তাতে বর্জ্য থেকে সর্বোত্তম সম্পদ সৃষ্টিও সম্ভব। আপনাদের স্থানীয় প্রয়োজনগুলিরও মানচিত্রায়ন করতে হবে। সেই হিসাবে নানা প্রকল্প রচনা করতে হবে। আমাদের আরেকটি দিকে নজর দিতে হবে। আমাদের নদী, নালা ও সমস্ত জলের উৎসগুলি আমাদের বাস্তু ব্যবস্থার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। আমাদের কোনও নদী এবং জলের উৎস যেন কোনোভাবে দূষিত না হয়, তা সুনিশ্চিত করতে আমাদের প্রত্যেক রাজ্যে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং পয়ঃপ্রণালী নিষ্কাশন ব্যবস্থায় পরিশুদ্ধিকরণের নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে হবে। পরিশুদ্ধ জলকে যেন আবার ব্যবহার করা যায়, তা সুনিশ্চিত করতে আমাদের কার্যকর ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। নমামি গঙ্গে মিশনকে টেমপ্লেট তৈরি করে বাকি রাজ্যগুলিতেও প্রবাহিত সমস্ত নদীর সংরক্ষণ এবং পুনরুজ্জীবনের জন্য আমরা এ ধরনের অভিযান শুরু করতে পারি।

বন্ধুগণ,

জল ব্যবস্থাপনায় উন্নত মানের পারস্পরিক সহযোগিতা ও সমন্বয়কে কাজে লাগিয়ে রাজ্যগুলির মধ্যে সহযোগিতা বাড়াতে হবে। এটা আমাদের সকলেরই দায়িত্ব। আর আপনারা তো দেখছেন যে, আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা, নগরায়নের সমস্যা দ্রুত ফুলে-ফেঁপে উঠছে। অত্যন্ত দ্রুতগতিতে আমাদের জনসংখ্যার একটা বিরাট অংশ নগরায়নের দিকে ঝুঁকছে। সেজন্য নগর উন্নয়ন এত দ্রুতগতিতে সংগঠিত হচ্ছে যে, সেখানে জল ব্যবস্থাপনা নিয়ে এখন থেকেই ভাবতে হবে। পয়ঃপ্রণালী নিষ্কাশন ব্যবস্থা নিয়েও এখন থেকেই সুপরিকল্পিতভাবে এগোতে হবে। পয়ঃপ্রণালীর পরিশুদ্ধকরণের ব্যবস্থাকেও এখন থেকেই পরিকল্পনা রচনা করতে হবে। শহরগুলির এগিয়ে যাওয়ার যে গতি, সেই গতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আমাদের উন্নয়ন যজ্ঞের গতিকেও বাড়াতে হবে। আমি আশা করি, আমরা এই শীর্ষ সম্মেলনে প্রত্যেকের অভিজ্ঞতাকে, সাফল ও ব্যর্থতাকে পরস্পরের সামনে তুলে ধরবো। তা হলেই দেখবেন, এই সম্মেলন অত্যন্ত সার্থক হয়ে উঠবে। এখান থেকে একটি নিশ্চিত কর্মপরিকল্পনা গড়ে উঠবে। আর তা আপনাদের মনে একটি সংকল্পে রূপান্তরিত হবে। আপনারা সেই সংকল্পকে বাস্তবায়িত করতে ও সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছতে এগিয়ে যাবেন। প্রত্যেক রাজ্য তাদের জনগণের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য সুনিশ্চিত করবেন, নাগরিকদেরও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন করবেন। আমরা যদি সরকার থেকে জল সংরক্ষণকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করি, তা হলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, এই ‘ওয়াটার কনফারেন্স’ – এর সাফল্য সুনিশ্চিত করার ক্ষেত্রে আমরা অত্যন্ত আশা নিয়ে এগিয়ে যাব।

আপনাদের সকলকে অনেক অনেক শুভকামনা।

ধন্যবাদ।

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
PM Modi hails diaspora in Kuwait, says India has potential to become skill capital of world

Media Coverage

PM Modi hails diaspora in Kuwait, says India has potential to become skill capital of world
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
সোশ্যাল মিডিয়া কর্নার 21 ডিসেম্বর 2024
December 21, 2024

Inclusive Progress: Bridging Development, Infrastructure, and Opportunity under the leadership of PM Modi