নমস্কার!
বন্ধুগণ,
এটা ২০২৩ সালের প্রথম ‘রোজগার মেলা’। এক উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য নতুন আশা নিয়ে শুরু হয়েছে ২০২৩। যে ৭১ হাজার পরিবারের সদস্যরা সরকারি কাজে নিযুক্ত হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন তাদের জন্য এটি একটি আনন্দ উপহার। আমি যারা চাকরি পেয়েছেন তাদের পরিবারের সদস্যদের অভিনন্দন জানাই।
আজকের এই অনুষ্ঠানটি শুধুমাত্র সফল প্রার্থীদের মধ্যে নয়, অন্য কোটি কোটি পরিবারের মধ্যেও আশার আলো ছড়িয়ে দেবে। অদূর ভবিষ্যতে লক্ষ লক্ষ মানুষ সরকারি চাকরিতে নিযুক্ত হবেন।
কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি এনডিএ এবং বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতেও একাধিক রোজগার মেলা আয়োজিত হচ্ছে। এই গতকালই অসম সরকার একটি চাকরি মেলার আয়োজন করে। আমাকে বলা হয়েছে অদূর ভবিষ্যতে মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র এবং উত্তরাখন্ডের মতো বিভিন্ন রাজ্যে এই চাকরি মেলার আয়োজন করা হবে। বর্তমানে চলতি এই চাকরি মেলাগুলি আমাদের সরকারের পরিচয়ে পরিণত হয়েছে।
এ থেকে প্রতিশ্রুতি পূরণের জন্য সরকারের প্রতিশ্রুতবদ্ধতার কথাই প্রমাণিত হয়। আপনাদের নিশ্চয় মনে আছে গত বছর ধনতেরাস উপলক্ষে প্রথম চাকরি মেলার আয়োজন করা হয়েছিল।
আজ চাকরি মেলা থেকে সরকারি চাকরি পাওয়া কয়েকজন তরুণ সহকর্মীর সঙ্গে আলাপ করার সুযোগ পেয়েছি আমি। সন্তুষ্টি ও তৃপ্তির ছাপ স্পষ্ট ধরা পরেছে তাদের মুখে। এদের অধিকাংশই অতি সাধারণ পরিবারের। এমন অনেক যুবক রয়েছেন, বিগত ৫ প্রজন্মের মধ্যে পরিবারের প্রথম সদস্য হিসেবে তিনি সরকারি চাকরি পেয়েছেন। তারা শুধুমাত্র সরকারি চাকরি পেয়েছেন বলেই খুশি নন, বরং মেধা ও যোগ্যতার বিবেচনায় স্বচ্ছ ও ন্যায্য নিয়োগ প্রক্রিয়া হয়েছে বলে তারা সন্তুষ্ট।
আপনারা সবাই নিশ্চয় বুঝতে পেরেছেন যে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছে। আগের থেকে অনেক বদলে গেছে সমস্ত প্রক্রিয়া। যার ফলে নির্দিষ্ট সময় নিয়ম মেনে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে চাকরি পাওয়া যাচ্ছে।
বন্ধুগণ,
নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যে স্বচ্ছতা ও গতি আপনারা লক্ষ্য করছেন তা সরকারের প্রতিটি কর্মকান্ডেই এখন দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। একটা সময় ছিল যখন নানা কারণে নিয়মিত পদোন্নতিতেও বাধা আসতো। আমাদের সরকার বিভিন্ন বিরোধের নিষ্পত্তি করেছে। আদালতে এখনও অনেক মামলা রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা পদোন্নতি ফের চালু করতে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। স্বচ্ছ পদ্ধতিতে নিয়োগ ও পদোন্নতি তরুণদের মধ্যে আস্থা জাগায়। এই স্বচ্ছতা তাদের মধ্যে আরও ভালো প্রস্তুতি নিয়ে প্রতিযোগিতায় নামতে অনুপ্রাণিত করে। আমাদের সরকার অবিরাম এই লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে।
বন্ধুগণ,
আজ যারা নিয়োগপত্র পেয়েছেন তাদের জীবনে এক নতুন যাত্রার সূচনা হল। উন্নত ভারত গঠনের লক্ষ্যে আপনাকে সক্রিয় অংশগ্রহণ করতে হবে ও দায়িত্ব নিতে হবে। আপনাদের মধ্যে অধিকাংশই সরকারি প্রতিনিধি হিসেবে জনগণের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকবেন। তাই তাদের বোঝানোর দায়িত্ব আপনাদের।
আপনারা নিশ্চয় শুনেছেন যে বাণিজ্য জগতে গ্রাহকই সর্বদা সঠিক। একইভাবে সরকারি ক্ষেত্রে আমাদের মন্ত্র হল দেশের নাগরিকরাই সর্বদা সঠিক। আপনার কখনই ভোলা উচিত নয় যে আপনি সরকারি চাকরিতে নিযুক্ত হয়েছেন। তাই আপনার নিজের ১৪০ কোটি দেশবাসীর সেবা করার সুযোগ পেয়ে গর্ব অনুভব করা উচিত।
আপনারা দেখেছেন আমাদের অনেক সরকারি কর্মী, কর্মযোগী ভাইয়েরা অনলাইনে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। ডিজিটাল প্রশিক্ষণ মাধ্যম iGOT কর্মযোগী তাদের ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত হতে সাহায্য করছে। সরকারি প্রশিক্ষণ কর্মসূচি ছাড়াও এই প্ল্যাটফর্মে আরো নানান পাঠক্রম রয়েছে যা থেকে ব্যক্তিগত স্তরে আপনারা উপকৃত হবেন। এটি আপনাদের ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ভারতের ক্ষমতাও বাড়াতে সাহায্য করবে।
দেশে বর্তমানে এই দ্রুত পরিবর্তনশীল পরিস্থিতিতে স্বরোজগারের সম্ভাবনাও ক্রমশ তৈরি হচ্ছে। উন্নয়নের গতি যখন ত্বরান্বিত হয় স্বরোজগারের সম্ভাবনাও তখন বাড়ে। বিগত ৮ বছরে লক্ষ লক্ষ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। কাজের সুযোগ তৈরি করতে পরিকাঠামো ক্ষেত্রে ব্যয় হয়েছে ১০০ লক্ষ কোটি টাকা।
আপনারা জানেন, একটি নতুন সড়ক যখন নির্মাণ হয় তখন কর্মসংস্থানের পথও প্রশস্ত হয়। ওই রাস্তার পাশে নতুন নতুন দোকান চালু হয়। কৃষকদের উৎপাদিত সামগ্রী সহজেই ওই সড়কের মাধ্যমে বাজারে পৌঁছায়।
একইভাবে কোনো স্থান যখন নতুন রেললাইনের সঙ্গে যুক্ত হয় তখন সেখানকার বাজার উন্নত হয়। চলাচলের সুবিধা হওয়ায় পর্যটন ক্ষেত্রেও জোয়ার আসে। বাড়ে কাজের সম্ভাবনা।
বর্তমানে ভারত-নেট প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের প্রত্যেক গ্রামে ব্রডব্যান্ড পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। আমরা যখন ইন্টারনেটনের মাধ্যমে আমাদের গ্রামগুলিকে বিশ্বের সঙ্গে যুক্ত করি তখন নতুন কাজের সুযোগ বেড়ে যায়। যে ব্যক্তি প্রযুক্তি বোঝেন না তিনিও সহজেই এটা বুঝতে পারেন যে এর আগে নানা জায়গায় ছোটাছুটি করতে হত এখন তা মোবাইল ফোন বা কম্পিউটারে একটি ক্লিকের মাধ্যমেই করা সম্ভব।
আমরা অনেক সময় প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিই। সাধারণ মানুষের এই চাহিদা পূরণের জন্য কাজের নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হচ্ছে। বর্তমানে যেভাবে ভারতের ছোট শহরগুলিতে স্টার্টআপ শুরু হচ্ছে তা থেকে নতুন প্রজন্মের আত্মবিশ্বাস পরিলক্ষিত হয়। স্টার্টআপের এই সাফল্য আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে আমাদের যুবশক্তির ক্ষমতাকে বিশেষ স্বীকৃতি দিয়েছে।
বন্ধুগণ,
এই অধিকাংশ ছেলেমেয়েরাই সাধারণ পরিবার থেকে উঠে এসেছেন। এই জায়গায় পৌঁছাতে কঠোর পরিশ্রম করেছেন তারা। তাদের অভিভাবকরাও অনেক যন্ত্রনা সহ্য করেছেন। আজ আপনারা ১৪০ দেশবাসীর সেবা করার সুযোগ পেয়েছেন। সর্বদাই নিজের ইচ্ছাশক্তিকে জাগ্রত রাখুন। শিখতে থাকুন। উন্নতির চেষ্টা অব্যাহত রাখুন ও দক্ষতার মানোন্নয়ন ঘটান।
আমি আপনাদের সকলকে অনেক শুভেচ্ছা জানাই। আপনারা সফল হন, সাফল্য আসুক আমাদের দেশেও। আপনারা সামনের দিকে এগিয়ে যান, একইভাবে উন্নতির পথে এগিয়ে চলুক দেশ। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে আপনার উন্নতির প্রয়োজন। আপনাকে হতে হবে সক্ষম এবং দক্ষ। উন্নতি করতে থাকুন এবং যথা সম্ভব ভালোভাবে দায়িত্ব পালন করুন। আমার শুভেচ্ছা আপনাদের সঙ্গে রইলো।
অনেক ধন্যবাদ।