মাননীয় সুলতান,
রাজ পরিবারের শ্রদ্ধেয় সদস্যবৃন্দ,
সুধীজন,
মাননীয়া ও মাননীয়গণ,
আমি মাননীয় সুলতান এবং রাজ পরিবারের প্রত্যেক সদস্যকে আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞতা জানাই। আপনারা যে উষ্ণ অভ্যর্থনা আমাকে জানিয়েছেন, তার জন্য আমি অভিভূত। কোনও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর এটিই প্রথম ব্রুনেই সফর। কিন্তু, এখানে যে আপ্যায়ন ও উষ্ণ অভ্যর্থনা আমি পেয়েছি, তা আমাদের দু’দেশের শতাব্দী প্রাচীন সুসম্পর্কের প্রতিফলন।
সুধী,
এই বছর ব্রুনেই – এর স্বাধীনতার ৪০তম বর্ষপূর্তি। আপনার নেতৃত্বে ব্রুনেই ঐতিহ্য এবং পরম্পরার মধ্যে মেলবন্ধন ঘটিয়ে উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে। ব্রুনেই-কে নিয়ে আপনার যে পরিকল্পনা – ‘বাবাসান ২০৩৫’ যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। ১৪০ কোটি ভারতবাসীর পক্ষ থেকে আপনাকে এবং ব্রুনেই – এর জনসাধারণকে শুভেচ্ছা জানাই।
বন্ধুগণ,
ভারত ও ব্রুনেই – এর মধ্যে ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক এক যোগসূত্র রয়েছে। এ বছর আমরা আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৪০তম বর্ষপূর্তি উদযাপন করছি। তাই, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, আমাদের এই সম্পর্ককে অংশীদারিত্বের সম্পর্কে উন্নীত করব।
আমাদের সম্পর্ককে একটি কৌশলগত অংশীদারিত্বের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা সর্বাত্মক আলোচনা করেছি। অর্থনীতি, বিজ্ঞান ও কৌশলগত ক্ষেত্রে আমাদের সহযোগিতাকে আরও শক্তিশালী করতে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। কৃষি-ভিত্তিক শিল্প, ওষুধ শিল্প এবং স্বাস্থ্য ক্ষেত্র সহ আর্থিক প্রযুক্তি বা ফিনটেক এবং সাইবার নিরাপত্তায় আমাদের দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতাকে আরও শক্তিশালী করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জ্বালানী ক্ষেত্রে, এলএনজি-র বিষয়ে দীর্ঘ মেয়াদী সহযোগিতার সম্ভাবনাগুলি আমরা আলোচনা করেছি। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আমাদের সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য আমরা প্রতিরক্ষা শিল্প, প্রশিক্ষণ এবং দক্ষতা বৃদ্ধির মতো বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতার জন্য একটি গঠনমূলক আলোচনা করেছি। মহাকাশ ক্ষেত্রে আমাদের সহযোগিতা বৃদ্ধি করার জন্য কৃত্রিম উপগ্রহ তৈরি, দূর সঞ্চার ব্যবস্থাপনা এবং এ সংক্রান্ত ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণের জন্য দুটি দেশ পরস্পরকে সহযোগিতা করবে। দু’দেশের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিতে খুব শীঘ্রই সরাসরি বিমান পরিষেবার সূচনা হবে।
বন্ধুগণ,
আমাদের দু’দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগই আমাদের সম্পর্কের মূল ভিত্তি। ব্রুনেই – এর সমাজ ও অর্থনীতিতে এদেশে বসবাসরত ভারতীয়রা ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করায় আমি আনন্দিত। গতকাল ভারতীয় হাই কমিশনের নতুন কার্যালয় উদ্বোধনের ফলে এদেশে বসবাসরত ভারতীয় সম্প্রদায় একটি স্থায়ী ঠিকানা পেল। মাননীয় সুলতান এবং তাঁর সরকার ব্রুনেই – এ বসবাসরত ভারতীয়দের কল্যাণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ায় আমরা তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ।
বন্ধুগণ,
ভারতের অ্যাক্ট ইস্ট নীতি এবং ভারত – প্রশান্ত মহাসাগরীয় ভিশন – এর গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার ব্রুনেই। ভারত সর্বদা আসিয়ান গোষ্ঠীকে অগ্রাধিকার দেয় এবং ভবিষ্যতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে। ইউএনসিএলওএস – এর মতো আন্তর্জাতিক আইনানুসারে নৌ এবং বিমান পরিবহণের স্বাধীনতাকে আমরা সমর্থন করি।
এই অঞ্চলের জন্য একটি নিয়ম বিধি চূড়ান্ত করার বিষয়ে আমরা সহমত পোষণ করি। আমরা উন্নয়নের নীতিতে বিশ্বাসী, সম্প্রসারণবাদে নই।
সুধী,
ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রে আপনার যে অঙ্গীকার রয়েছে, তার প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। আমাদের ঐতিহাসিক সম্পর্কের নতুন এক অধ্যায় আজ রচিত হয়েছে। যে শ্রদ্ধা আমাকে দেখানো হয়েছে, তার জন্য আমি আরও একবার আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞতা জানাই। মাননীয় সুলতান, রাজ পরিবারের সদস্যবৃন্দ এবং ব্রুনেই – এর জনসাধারণের সুস্বাস্থ্য ও সমৃদ্ধি কামনা করি।
অনেক অনেক ধন্যবাদ।