মাননীয় রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় সরকারের আমার সহকর্মী এবং এখানকার ভূমিপুত্র সুরেশ গোপি জি !
এই বিপর্যয়ের কথা প্রথমে জানার পর থেকে আমি ক্রমাগত যোগাযোগ রেখে চলেছি এবং পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছিলাম। কোনোরকম বিলম্ব ছাড়াই কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট সমস্ত দপ্তরকে নিযুক্ত করা হয় এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যে আমরা মিলিতভাবে প্রয়াস চালাই।
এটি কোনো সাধারণ বিপর্যয় নয়, এটি অসংখ্য পরিবারের আশা-আকাঙ্খা এবং স্বপ্নকে ধুলিসাৎ করে দিয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে প্রকৃতির এই তান্ডবলীলা প্রত্যক্ষ করেছি এবং ত্রাণ শিবিরগুলিতে বহু ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। সেখানে তাঁদের মুখে এই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা শুনেছি। এছাড়া আমি হাসপাতালে গিয়ে যাঁরা এই ধসে মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন তাঁদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি।
এই সঙ্কটকালে আমাদের সম্মিলিত প্রয়াস ফলপ্রসূ হয়েছে। ভূমিধসের দিন সকালে আমি মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলি এবং প্রয়োজনীয় সাহায্যের ব্যাপারে তাঁকে আশ্বস্ত করি। যত দ্রুত সম্ভব ঘটনাস্থলে প্রয়োজনীয় সাহায্যের ব্যবস্থা করা হয়। আমি একজন প্রতিমন্ত্রীকেও ঘটনাস্থলে পাঠাই। এসডিআরএফ, এনডিআরএফ, সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ, স্থানীয় চিকিৎসা কর্মী এবং এজিও – সবাই ধস বিধ্বস্ত এলাকায় সাহায্যের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পুরোপুরি ক্ষতিপুরণ কোনোদিনই সম্ভব নয়। অনেকে তাঁদের প্রিয়জনকে হারিয়েছেন। আমাদের সবার দায়িত্ব হল, তাঁদের শিশুদের ভবিষ্যৎ এবং স্বপ্নপূরণের জন্য পাশে দাঁড়ানো।
গতকাল আমি ঘটনাস্থলে একটি সমন্বয়কারী দলকে পাঠাই। তাঁরা মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী এবং স্থানীয় আধিকারিকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী আমাকে জানিয়েছেন, তিনি বিস্তারিত তথ্য স্মারকলিপিতে জানাবেন। আমি এই পরিবারগুলিকে আশ্বস্ত করতে চাই যে, তাঁরা একা নয়, এই শোকের মুহূর্তে কেন্দ্রীয় সরকার, রাজ্য সরকার, দেশের সমস্ত নাগরিক, আমরা সবাই তাঁদের পাশে রয়েছি। সরকারি নিয়ম মেনে বিপর্যয় তহবিল থেকে একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে এবং বাকি অর্থ শিগগিরই দেওয়া হবে। স্মারকলিপি পাওয়ার পর কেন্দ্রীয় সরকার সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এক্ষেত্রে অর্থ কোনো বাধা হয়ে দাঁড়াবে না।
যে সব পরিবার তাঁদের প্রিয়জনদের হারিয়েছেন, আমরা তাঁদের পাশে রয়েছি। তাঁদের সাহায্যের জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। আমার বিশ্বাস, রাজ্য সরকারও একটি বিস্তারিত পরিকল্পনা হাতে নেবে এবং কেন্দ্রীয় সরকার অতিরিক্ত সহায়তা প্রদান করবে। ৪০-৪৫ বছর আগে ১৯৭৯ সালে আমি গুজরাটে একই ধরনের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার সাক্ষী হয়েছিলাম। প্রবল বৃষ্টিতে মোরবি বাঁধ পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। গোটা শহর বন্যায় ভেসে গিয়েছিল। বিপর্যয়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন ২,৫০০-র বেশি মানুষ।
বর্তমান পরিস্থিতিও আমি বুঝতে পারছি। কেন্দ্রীয় সরকার চেষ্টার কোনো ত্রুটি করবে না। ঘর-বাড়ি, স্কুল, সড়ক পুননির্মাণ অথবা শিশুদের ভবিষ্যৎ গড়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সব রকম সাহায্য দেওয়া হবে। আমি আপনাদের আশ্বস্ত করে আবার বলতে চাই, মুখ্যমন্ত্রীর প্রত্যাশা মতোই সব কিছু মেটাতে কেন্দ্রীয় সরকার সব ধরনের চেষ্টা চালাবে।
ধন্যবাদ !
প্রধানমন্ত্রী মূল ভাষণটি দিয়েছেন হিন্দিতে।