নমস্কার জি!
ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমান বিষ্ণুদেও সাঁইজি, রাজ্য সরকারের সকল মন্ত্রী, বিধায়ক ও উপস্থিত অন্যান্য ব্যক্তিরা জয় জোহার (শুভেচ্ছা)!
আমি মাতা দন্তেশ্বরী মা বমলেশ্বরী ও মা মহামায়াকে প্রণাম জানাই। ছত্তিশগড়ের মা ও বোনেদের আমার প্রণাম। দু সপ্তাহ আগে ছত্তিশগড়ে ৩৫ হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেছি। আজ আবার আমার নারীশক্তিকে সক্ষম করে তোলার মহাতারি বন্দন যোজনা উদ্বোধন করার সৌভাগ্য হয়েছে। মহাতারি বন্দন যোজনার আওতায় ছত্তিশগড়ে ৭০ লক্ষের বেশি মা ও বোনেদের প্রতি মাসে ১ হাজার টাকা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। বিজেপি সরকার নিজের প্রতিশ্রুতি পূরণ করছে। আজ মহাতারি বন্দন যোজনার আওতায় ৬৫৫ কোটি টাকা প্রথম দফায় মঞ্জুর করা হয়েছে। আমি স্ক্রিনে দেখতে পাচ্ছি, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লক্ষ লক্ষ বোনেরা এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। আপনাদের সকলকে একসঙ্গে দেখতে পাওয়া, আপনাদের আশীর্বাদ পাওয়া আমার জন্য সৌভাগ্যের বিষয়। আজকের এই অনুষ্ঠান বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। ছত্তিশগড়ে আপনাদের মধ্যে পৌঁছতে পারলে আমি আনন্দিত হতাম। কিন্তু বর্তমানে আমি বিভিন্ন কর্মসূচির জন্য আমি উত্তরপ্রদেশে রয়েছি। মা ও বোনেরা আমি এখন কাশী থেকে কথা বলছি। গত রাতে বাবা বিশ্বনাথকে প্রণাম করে তাঁর পূজার্চনা করেছি ও সকল দেশবাসীর জন্য প্রার্থনা করেছি, আজ দেখুন বাবা বিশ্বনাথের এই ধরিত্রী কাশীর পবিত্র নগরী থেকে আপনাদের সকলের সঙ্গে কথা বলার সৌভাগ্য হলো। আপনাদের সকলকে আমি অভিনন্দন জানাই, বাবা বিশ্বনাথও আপনাদের সকলকে আশীর্বাদ দিচ্ছেন। শিবরাত্রি থাকায় ৮ মার্চ নারী দিবসের অনুষ্ঠান করা সম্ভব হয়নি। তাই একভাবে বলতে গেলে ৮ মার্চ নারী দিবস, শিবরাত্রির দিন এবং আজ বাবা ভোলের এই শহর থেকে তাঁর আশীর্বাদ স্বরূপ ১ হাজার টাকা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। ভোলে বাবার আশীর্বাদও আপনাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। আমি সব মহাতারিকে বলছি, আপনাদের সকলের অ্যাকাউন্টে এখন থেকে প্রতি মাসে কোনো বাধা ছাড়াই এই অর্থ জমা হবে। ছত্তিশগড়ের বিজেপি সরকারের উপর আমার এই ভরসা রয়েছে, তাই আমি এই গ্যারান্টি দিচ্ছি।
মা ও বোনেরা,
যখন কোনো পরিবারের মা ও বোনেরা সক্ষম হয়ে ওঠেন তখন সমগ্র পরিবার মজবুত হয়। এই জন্য ডাবল ইঞ্জিন সরকারের মূল লক্ষ্য আমাদের মা ও বোনেদের কল্যাণ। পরিবারগুলিকে বর্তমানে পাকা ঘর দেওয়া হচ্ছে, তাও আবার মহিলাদের নামে! উজ্জ্বলা যোজনার আওতায় সস্তায় গ্যাস সিলিন্ডার পাওয়া যাচ্ছে তাও আবার মহিলাদের নামে! জনধন যোজনার ৫০ শতাংশের বেশি অ্যাকাউন্টও আমাদের মা বোনেদের নামে!
যে মুদ্রাঋণ পাওয়া যাচ্ছে তার মধ্যে ৬৫ শতাংশের বেশি আমাদের মা ও বোনেরা নিয়েছেন। দেশের মা ও বোনেরা বিশেষ করে তরুণীরা ক্রমশ সামনের দিকে দৃঢ় পদক্ষেপে এগিয়ে চলেছেন। তাঁরা ঋণ নিয়ে নিজেদের কাজ শুরু করেছেন! আমাদের সরকার বিগত ১০ বছরে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ১০ কোটির বেশি মহিলার জীবন বদলে দিয়েছে। আমাদের সরকারের প্রচেষ্টায় এখনও পর্যন্ত সমগ্র দেশে ১ কোটির বেশি লাখপতি দিদি তৈরি হয়েছেন। দেশের গ্রামগুলিতে এ এক বড় অর্থনৈতিক শক্তি হয়ে উঠেছে। এই সাফল্যকে সামনে রেখে আমরা এক বড় পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা সংকল্প গ্রহণ করেছি যে আমরা দেশের ৩ কোটি বোনেদের লাখপতি দিদি বানানোর লক্ষ্য পূরণ করবো। নমো ড্রোন দিদি যোজনায় মহিলাদের ক্ষমতায়নের জন্য নতুন দিশা উন্মোচিত হয়েছে। মা ও বোনেরা, নমো ড্রোন দিদির এক বড় অনুষ্ঠান আমি আগামীকাল করবো। আপনারা অবশ্যই সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত টিভিতে ওই অনুষ্ঠান দেখবেন। তখন দেখতে পাবেন নমো ড্রোন দিদিরা কি দারুণ কাজ করছেন। আপনারাও তা দেখে উৎসাহের সঙ্গে ভবিষ্যতে তাঁদের মতো এই কাজে যুক্ত হতে পারবেন এবং এই ‘নমো ড্রোন দিদি’ এই প্রকল্পের আওতায় বিজেপি সরকার অনেককে ড্রোন দিচ্ছে এবং ড্রোন চালানোর প্রশিক্ষণও দেবে। আমি এক বোনের সাক্ষাৎকার দেখেছি, যেখানে তিনি বলছেন, যে তিনি সাইকেলও চালাতে পারতেন না, কিন্তু বর্তমানে ড্রোন দিদি পাইলট হয়েছেন। দেখুন এর ফলে কৃষি কাজে আধুনিক ব্যবস্থা চালু হচ্ছে এবং বোনেদের অতিরিক্ত রোজগারও হচ্ছে। আগামীকাল দিল্লি থেকে আমি এই প্রকল্পের শুভ সূচনা করবো। তাই আরও একবার আপনাদের সকলকে এই অনুষ্ঠান দেখার আমন্ত্রণ জানাই।
মা ও বোনেরা,
পরিবার সমৃদ্ধ তখনই হয়, যখন পরিবারের সদস্যরা সুস্থ থাকেন। পরিবার সুস্থ তখনই থাকে যখন মহিলারা সুস্থ থাকেন। প্রথম গর্ভধারণের সময়ে মা ও শিশুর মৃত্যু দেশের জন্য এক বড় চিন্তার বিষয় ছিলো। আমাদের বিনামূল্যে টিকাকরণ কর্মসূচি ও গর্ভকালীন সময়ে ৫ হাজার টাকা অর্থ সাহায্য দেওয়ার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনামূল্যে চিকিৎসার সুযোগ পাচ্ছেন। এতদিন পর্যন্ত অনেক বাড়িতেই শৌচালয় না থাকায় মা ও বোনেদের কষ্ট ভোগ করতে হতো ও অসম্মানিত হতে হতো। বর্তমানে প্রতি বাড়িতেই মা ও বোনেদের জন্য শৌচাগার রয়েছে। এর ফলে তাঁদের কষ্ট কম হচ্ছে এবং রোগ থেকেও মুক্তি মিলছে।
মা ও বোনেরা,
নির্বাচনের আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলি বড় বড় প্রতিশ্রুতি দেয়। আকাশ থেকে চাঁদ, তারা এনে আপনাদের চরণে নিবেদন করবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু বিজেপি-র মতো সত্য নিষ্ঠা নিয়ে চলা দল একমাত্র নিজের প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করে, এজন্যই বিজেপি সরকার গঠনের পর এত স্বল্প সময়ে মহাতারি বন্দন যোজনা চালুর এই প্রতিশ্রুতি পূরণ করা হলো। আমি এজন্য আমাদের মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণুদেওজি ও তাঁর সমগ্র দলকে এবং ছত্তিশগড় সরকারকে যতই অভিনন্দন জানাই না কেন, তা কম হবে। একারণেই জনগণ বলেন, মোদীর গ্যারান্টির অর্থ গ্যারান্টি পূর্ণ হওয়ার গ্যারান্টি! নির্বাচনের সময়ে আমরা ছত্তিশগড়ের উন্নয়নের গ্যারান্টিও দিয়েছি, তা পূর্ণ করার জন্য সরকার নিরন্তর কাজ করে চলেছে। আমি গ্যারান্টি দিয়েছিলাম, ছত্তিশগড়ে আমরা ১৮ লক্ষ পাকা বাড়ি তৈরি করবো। সরকার গঠনের দ্বিতীয় দিনেই আমাদের বিষ্ণুদেও সাঁইজি ও তাঁর মন্ত্রিসভা এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ শুরু করেছে। আমি গ্যারান্টি দিয়েছিলাম যে ছত্তিশগড়ের ধানচাষীদের বকেয়া থাকা দু বছরের বোনাস দেওয়া হবে। ছত্তিশগড় সরকার অটলজির জন্মদিনে ৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকার এই বোনাস কৃষকদের অ্যাকাউন্টে পৌঁছে দিয়েছে। আমি গ্যারান্টি দিয়েছিলাম, এখানে আমার সরকার ৩ হাজার ১০০ টাকা প্রতি ক্যুইন্টাল দরে ধান কিনবে। আমি আনন্দিত যে আমার সরকার এই প্রতিশ্রুতি পূরণ করে ১৪৫ লক্ষ টন ধান ক্রয় করার রেকর্ড গড়েছে। এছাড়া কৃষক উন্নয়ন যোজনা শুরু হয়েছে। আগামী ৫ বছরে জনকল্যাণের জন্য এই কাজগুলি চলবে এবং এই কাজে আমার মা ও বোনেদের বিশেষ অংশীদারিত্ব থাকবে। ছত্তিশগড়ের ডাবল ইঞ্জিন সরকার এভাবেই আপনাদের পরিষেবা দিয়ে যাবে ও সব গ্যারান্টি পূরণ করবে বলে আমার বিশ্বাস। আমি আরও একবার বলতে চাই, যে আমার সামনে উপস্থিত লক্ষ লক্ষ মা ও বোনেদের আমি দেখতে পাচ্ছি, যা আমার জন্য এক অভূতপূর্ব অনুভূতি তৈরি করছে। এই দৃশ্য আমার বহুদিন মনে থাকবে। আমি যদি আজ আপনাদের মধ্যে উপস্থিত থাকতে পারতাম, তাহলে আরও বেশি আনন্দিত হতাম। আপনারা সকলে আমায় ক্ষমা করবেন। বাবা বিশ্বনাথ ধাম থেকে আমি আপনাদের সঙ্গে কথা বলছি, কাশী থেকে কথা বলছি। বাবার আশীর্বাদ আপনাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি আমি। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের অনেক অনেক ধন্যবাদ ও শুভকামনা।
প্রধানমন্ত্রীর এই মূল ভাষণটি হিন্দিতে ছিল।