রাজস্থানের সকল পরিবার-পরিজনকে অভিনন্দন (রাম-রাম)!
‘বিকশিত ভারত, বিকশিত রাজস্থান’ হল এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি যাতে রাজস্থানের প্রত্যেকটি নির্বাচন কেন্দ্রের হাজার হাজার বন্ধু সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করছেন। আপনাদের সকলকেই আমার আন্তরিক অভিনন্দন। একইসঙ্গে আমি প্রশংসা জানাই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে। কারণ, প্রযুক্তির আশ্রয় গ্রহণ করার জন্য তিনি আমাকে অনুমতি দিয়েছেন। কয়েকদিন আগেই ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টকে আপনারা যেভাবে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছিলেন, তার রেশ শুধুমাত্র ভারতেই নয়, ফ্রান্সেও পৌঁছে গেছে। রাজস্থানবাসীর এ হল এক অনুপম বৈশিষ্ট্য। প্রিয়জনকে স্নেহ ও ভালোবাসার চোখে দেখার গুণ রয়েছে এই রাজ্যের অধিবাসীদের। আমার মনে আছে যে বিধানসভা নির্বাচনের সময় আমি যতবারই রাজস্থান সফরে এসেছি, আপনারা আমাকে অকুন্ঠভাবে সমর্থন যুগিয়েছেন। ‘মোদীর গ্যারান্টি’র ওপর আপনারা সর্বদাই আপনাদের আস্থা স্থাপন করেছেন। এইভাবেই গঠিত হয়েছে রাজ্যের ডবল ইঞ্জিন সরকার। এই সরকারের কর্মপ্রচেষ্টার সুবাদে রাজস্থানে দ্রুত উন্নয়ন ও অগ্রগতির ঘটনাকে আমরা লক্ষ্য করতে পারছি। আজ আমরা প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে বেশ কয়েকটি প্রকল্পের শিলান্যাস ও উদ্বোধন পর্ব প্রত্যক্ষ করেছি। এই অর্থ পুরোটাই ব্যয় করা হবে রাজস্থানের উন্নয়নে। রেল, সড়ক, সৌর-জ্বালানি, জল, রান্নার গ্যাস সহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করা হবে এই অর্থ। এর মধ্য দিয়ে রাজস্থানের হাজার হাজার যুবকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এই উপলক্ষে রাজস্থানের সকল বন্ধুদের জানাই আমার আন্তরিক অভিনন্দন। কারণ, এই প্রকল্পগুলিতে তাঁদের অবদানও কিছু কম নেই।
আমার ভাই ও বোনেরা,
লালকেল্লা থেকে আমি যে কয়েকটি শব্দ উচ্চারণ করেছিলাম তা হয়তো আপনাদের মনে আছে। আমি বলেছিলাম যে সঠিক সময় এখন উপস্থিত। স্বাধীনতা-উত্তরকালে ভারতের পক্ষে এ হল এক সোনালী যুগ। এমন একটি সময়কালে আমরা এখন উপনীত, যখন অতীতের স্মৃতি থেকে আমাদের মোহমুক্তি ঘটেছে। তাই আমাদের বর্তমান যাত্রাপথ আস্থা ও বিশ্বাসের যাত্রাপথ। ২০১৪-র আগের বছরগুলির কথা আপনারা একবার চিন্তা করুন তো! সেই সময় পরিস্থিতি কি ছিল? সংবাদপত্রের পাতা জুড়ে কোন শিরোনামগুলি তখন স্থান দখল করে রাখত? যথেচ্ছাচার, দুর্নীতি এবং কেচ্ছা-কেলেঙ্কারির খবর আমরা পড়েছি দিনের পর দিন। শুধু তাই নয়, যত্রতত্র যথেচ্ছভাবে বোমা বর্ষণের ঘটনাও আমরা ভয় ও আতঙ্কের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি। এক ধরনের অনিশ্চয়তা তখন গ্রাস করেছিল জনজীবনকে। তাঁদের নিজেদের ভাগ্য তথা জাতির ভাগ্য সম্পর্কে দেশবাসী ছিলেন যথেষ্ট সন্দিহান। বেঁচে থাকার জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ লাভের ঘটনা ছিল তখন এক সংগ্রামের মতো, উন্নয়নের কথা না হয় বাদই দিলাম। হ্যাঁ, আমি কংগ্রেস আমলের সেই বছরগুলির কথাই বলছি। অতীতের সেই ঘটনাগুলির সঙ্গে আজকের ঘটনার গতি-প্রকৃতির বিষয়টি আপনারা একবার তুলনা করে দেখুন তো! এখন আমাদের লক্ষ্য ও দৃষ্টি কোনদিকে? এক উন্নত ভারত গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমাদের দৃষ্টি এখন নিবদ্ধ। আমাদের স্বপ্ন এখন বিরাট, উচ্চাশামূলক লক্ষ্যও আমরা স্থির করে ফেলেছি এবং সেই লক্ষ্য পূরণে আমরা পরিশ্রম করে চলেছি নিরন্তরভাবে। আমার কাছে ‘উন্নত ভারত’ কল্পনা বিলাস মাত্র নয়, তা হল এমন এক আন্দোলন যা প্রতিটি পরিবারের জীবনযাত্রার মানকে আরও উন্নত করে তুলতে চলেছে। দারিদ্র্যকে নির্মূল করা হবে সম্পূর্ণভাবে, আর দেশের যুবকদের জন্য সৃষ্টি করা হবে অর্থবহ কাজের সুযোগ। দেশজুড়ে পরিকাঠামোর উন্নয়ন এবং সুযোগ-সুবিধার সম্প্রসারণের কাজ এখন চলছে পূর্ণ মাত্রায়। গতকাল রাতেই আমি বিদেশ সফর সেরে দেশে ফিরে এসেছি। সেখানে আমি সংযুক্ত আরব আমিরশাহী এবং কাতারের বড় বড় নেতাদের সঙ্গে মিলিত হয়েছি। ভারত যেভাবে উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে, তাতে তাঁরা সকলেই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তাঁরা এখন আমাদের মতোই আস্থা ও বিশ্বাসের সঙ্গে ভাবতে শুরু করেছেন যে বর্তমান ভারত হল এমন এক ভারত যে শুধুমাত্র বড় বড় স্বপ্নই দেখে না, তাকে সফল করে তোলার জন্য সচেষ্টও থাকে।
আমার ভাই ও বোনেরা,
‘উন্নত রাজস্থানে’র পথে আমাদের যাত্রা এক ‘উন্নত ভারত’ গড়ে তোলার লক্ষ্যমাত্রাকে পূরণ করবে বলেই আমার স্থির বিশ্বাস। রেল, সড়ক, বিদ্যুৎ এবং জলের যোগান প্রত্যেক সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার বিষয়টিকে একটি দ্রুত উন্নয়ন প্রচেষ্টা বলেই আমরা মনে করি। এইভাবে আমরা কৃষকদের কাছে, গবাদি পশুপালকদের কাছে, এমনকি শিল্প প্রতিষ্ঠার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের কাছেও উন্নয়নের সুফল পৌঁছে দিতে আন্তরিকভাবে আগ্রহী। একইসঙ্গে, রাজস্থানে আমরা আরও কল-কারখানা গড়ে তোলার কাজ ও পর্যটনকে উৎসাহিত করতে ইচ্ছুক। আরও বেশি করে বিনিয়োগের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিও হল আমাদের অন্যতম লক্ষ্য। সড়ক তৈরি, নতুন নতুন রেললাইন পাতা, স্টেশনগুলিকে আরও উন্নতভাবে গড়ে তোলা, বঞ্চিত ও অবহেলিত মানুষের স্বার্থে বাসস্থান নির্মাণ এবং জল ও গ্যাসের পাইপলাইন বসানোর কাজে কর্মসংস্থানের সুযোগ আরও বেশি করে প্রসারিত হবে। ফলে, যাঁরা পরিবহণের সঙ্গে যুক্ত তাঁরাও নতুন নতুন কাজের সুযোগ পাবেন। এ বছরের বাজেটে ১১ লক্ষ কোটি টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে পরিকাঠামো উন্নয়নে। এই ঘটনা নিঃসন্দেহে ঐতিহাসিক কারণ, অতীতের কংগ্রেস সরকারগুলির আমলের তুলনায় এই বরাদ্দের পরিমাণ হল ছ’গুণেরও বেশি। আমাদের এই উন্নয়ন প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে রাজস্থানে সিমেন্ট, পাথর ও সেরামিক শিল্পের সঙ্গে যুক্ত সংস্থাগুলি বিশেষভাবে লাভবান হবে।
আমার ভাই ও বোনেরা,
অতীতের দশকটিতে আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন যে রাজস্থানে বিনিয়োগের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে নজিরবিহীনভাবে। গ্রামের রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে জাতীয় মহাসড়ক এবং এক্সপ্রেসওয়েগুলিকেও আরও ভালোভাবে গড়ে তুলতে আমরা অর্থ বিনিয়োগ করেছি। গুজরাট উপকূল, মহারাষ্ট্র ও পাঞ্জাবের সঙ্গে অত্যাধুনিক সড়ক পরিকাঠামোর মাধ্যমে যুক্ত করা হচ্ছে রাজস্থানকে। আজ যে সড়কগুলির উদ্বোধন করা হল তা কোটা, উদয়পুর, টঙ্ক, সোয়াই মাধোপুর, বুদি, আজমেঢ়, ভিলওয়াড়া এবং চিতোরগড়ের মধ্যে সংযোগ ও যোগাযোগ আরও বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করবে। শুধু তাই নয়, এই সড়কগুলির মাধ্যমে সড়ক সংযোগ আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে হরিয়ানা, গুজরাট, মহারাষ্ট্র এবং দিল্লির সঙ্গে। রেল বৈদ্যুতিকরণ এবং সেই লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কারের কাজেও আমরা হাত দিয়েছি। বাঁদিকুই থেকে আগ্রা ফোর্ট পর্যন্ত বর্তমান রেলপথকে ডবল লাইনে রূপান্তরিত করার মধ্য দিয়ে মেহেন্দিপুর বালাজি এবং আগ্রাতে খুব সহজেই পৌঁছনো যাবে। আবার, জয়পুরে খাটিপুরা স্টেশনটির উদ্বোধন হয়ে গেলে আরও বেশি সংখ্যক ট্রেন চলাচলের মধ্য দিয়ে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যও বৃদ্ধি পাবে।
বন্ধুগণ,
ইতিবাচক নীতি রচনায় ব্যর্থতা কংগ্রেসের একটি বড় ত্রুটি হল। কারণ, এগিয়ে যাওয়ার মতো চিন্তাভাবনা এই দলের নেই। ভবিষ্যতের লক্ষ্যে দূরদৃষ্টি এবং কৌশলগত পরিকল্পনার একান্তই অভাব রয়েছে এই দলটির মধ্যে। ফলে, ভারতের বিশেষ অখ্যাতি ছিল এই মর্মে যে এখানে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ পরিকাঠামোর একান্তই অভাব। কংগ্রেস আমলে বিদ্যুতের ঘাটতি ছিল দেশের সমস্ত অঞ্চলেই। ফলে, দেশবাসীকে দীর্ঘক্ষণ ধরে অন্ধকারের মধ্যে সময় অতিবাহিত করতে হত। এমনকি, বিদ্যুতের যোগান চালু হলেও ঘন ঘন তা আবার চলে যেত। ঐ সময়কালে দেশের কোটি কোটি পরিবার বিদ্যুৎ সংযোগের সুযোগ থেকে বঞ্চিত থেকে গিয়েছিলেন।
বন্ধুগণ,
পর্যাপ্ত বিদ্যুতের যোগান ছাড়া কোন দেশের অগ্রগতিই সম্ভব নয়। কংগ্রেস যেভাবে বিদ্যুতের বিষয়টি মোকাবিলা করছিল, তাতে বহু দশক লেগে যেত এর ঘাটতি মেটাতে। কিন্তু, আমরা দেশের দায়িত্বভার গ্রহণের পরেই দেশের বিদ্যুৎ সরবরাহের বিষয়টিকে একটি অগ্রাধিকারের দৃষ্টিতে দেখেছিলাম। এজন্য আমরা সুচিন্তিত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় নীতিও রচনা করেছি। বিদ্যুৎ ঘাটতি সামাল দিতে সৌরবিদ্যুৎ আহরণের বিষয়টিকেও আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছি। বর্তমানে ভারত সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের দিক থেকে বিশ্বের একটি অগ্রণী দেশ রূপে খ্যাতি অর্জন করেছে। আমাদের নিরন্তর প্রচেষ্টার এ হল এক বিশেষ স্বীকৃতি। রাজস্থানে সূর্যালোকের কোনো অভাব নেই। সুতরাং, এই রাজ্যে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা প্রচুর। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ডবল ইঞ্জিন সরকার রাজস্থানকে বিদ্যুতের ক্ষেত্রে স্বনির্ভর করে তুলতে অনলস পরিশ্রম চালিয়ে গেছে। আজ আমরা এমনই একটি সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের উদ্বোধন করেছি। তারই সঙ্গে আরও দুটি বিদ্যুৎ প্রকল্পের শিলান্যাস পর্বও আজ সম্পন্ন হয়েছে। এই প্রকল্পগুলি থেকে শুধু বিদ্যুতের যোগানই পাওয়া যাবে না, সেইসঙ্গে হাজার হাজার যুবক-যুবতীর কর্মসংস্থানও নিশ্চিত হবে।
বন্ধুগণ,
বিজেপি সরকার প্রতিটি বাড়িতে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের বিষয়টি নিশ্চিত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। শুধু তাই নয়, উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ বিপণনের মাধ্যমে এই পরিবারগুলির যাতে অতিরিক্ত আয় ও উপার্জন সম্ভব হয়, তার সুযোগ প্রসারেও আমরা বদ্ধপরিকর। এই লক্ষ্য পূরণে কেন্দ্রীয় সরকার ‘প্রধানমন্ত্রী সূর্য ঘর কর্মসূচি’ নামে এক বিশেষ প্রকল্প রচনা করেছে। এর অর্থ হল, প্রতিটি গৃহস্থ বাড়িতে বিনা ব্যয়ে বিদ্যুতের যোগান প্রকল্প। এর আওতায় নির্দিষ্ট পরিবারগুলিতে প্রতি মাসে ৩০০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিনা ব্যয়ে পৌঁছে দিতে সরকার কাজ করে চলেছে। সূচনায়, এই কর্মসূচির আওতায় উপকৃত হবে দেশের ১ কোটির মতো পরিবার। বাড়ির ছাদে সৌরবিদ্যুৎ প্যানেল সংস্থাপনের জন্য পরিবারগুলির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি আর্থিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হবে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে। এই উদ্দেশ্যে ৭৫ হাজার কোটি টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে। মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারগুলি সবচেয়ে বেশি লাভবান হবেন আমাদের এই উদ্যোগ থেকে। কারণ, বিনামূল্যে বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ সম্প্রসারিত হবে এই ধরনের পরিবারগুলিতে। এছাড়াও, সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্যানেল বসানোর কাজে ব্যাঙ্কগুলির পক্ষ থেকেও সহজ শর্তে ঋণ সহায়তা দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। রাজস্থান সরকার স্থির করেছে যে সূচনায় ৫ লক্ষ গৃহস্থ বাড়িতে সৌরবিদ্যুৎ প্যানেল সংস্থাপনের ব্যবস্থা করা হবে। ফলে, বিদ্যুৎ খাতে দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষের আর্থিক বোঝা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় হ্রাস পাবে।
বন্ধুগণ,
‘উন্নত ভারত’-এর স্বপ্নকে সফল করে তুলতে সমাজের চারটি বিভিন্ন অংশের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে আমরা নিরন্তরভাবে কাজ করে চলেছি। এই চারটি অংশ হল – যুব সমাজ, নারী সমাজ, কৃষক সমাজ এবং দরিদ্র সাধারণ মানুষ। তাঁদের কল্যাণের বিষয়টি আমাদের কাছে সর্বাপেক্ষা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমি আনন্দিত যে ‘মোদীর গ্যারান্টি’র পথ অনুসরণ করে ডবল ইঞ্জিন সরকার সমাজের এই স্তরের মানুষদের উন্নয়নে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। রাজস্থানের বিজেপি সরকারের প্রথম বছরের বাজেটে যুবকদের কর্মসংস্থানের জন্য ৭০ হাজার শূন্যপদ সৃষ্টির কথা ঘোষণা করা হয়েছে। পূর্ববর্তী সরকারের আমলে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যাওয়ার ঘটনা ছিল প্রায় স্বাভাবিক একটি ঘটনা। কিন্তু রাজস্থানে বিজেপি সরকার গঠিত হওয়ার পর থেকে এই বিষয়টির মোকাবিলায় একটি বিশেষ তদন্তকারী দল, অর্থাৎ সিট গঠন করা হয়। প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় যুক্তদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকেও একটি কঠোর আইন চালু করা হয়েছে।
বন্ধুগণ,
রাজস্থানের বিজেপি সরকার অর্থনৈতিক দিক থেকে অনগ্রসর শ্রেণীর মহিলাদের মাত্র ৪৫০ টাকার বিনিময়ে গ্যাস সিলিন্ডার সরবরাহের সঙ্কল্প গ্রহণ করেছে এবং আনন্দের বিষয়, এই অঙ্গীকার তারা পূরণও করেছে। রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগের ফলে উপকৃত হয়েছেন এই রাজ্যে বসবাসকারী আমার অসংখ্য বোন। ‘জল জীবন মিশন’ কেলেঙ্কারির কারণে পূর্ববর্তী সরকারের আমলে রাজস্থান অনেকটাই পিছিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু, বর্তমান সরকার দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে পরিস্থিতি এখন সম্পূর্ণ বিপরীত। প্রতিটি বাড়িতে পর্যাপ্ত জল পৌঁছে দিতে অনেকগুলি প্রকল্পই এখন রাজস্থানে চালু হয়ে গেছে। ‘প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি’ কর্মসূচির আওতায় রাজস্থানের কৃষক বন্ধুরা ৬ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা পেয়ে আসছিলেন। বর্তমান বিজেপি সরকার এই পরিমাণ আরও ২ হাজার টাকা বৃদ্ধি করেছে। সমাজের সকল স্তরের মানুষের প্রতি আমাদের অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি পূরণে আমরা অবিচলভাবে কাজ করে চলেছি। কারণ, আমাদের প্রতিশ্রুত ও অঙ্গীকারগুলির প্রতি আমরা নিষ্ঠাবদ্ধ। তাই, ‘মোদীর গ্যারান্টি’ – এই কথাটি এখন প্রতিশ্রুতি পালনের সমার্থক হয়ে উঠেছে।
বন্ধুগণ,
প্রতিটি সুফলভোগী যাতে তাঁর বা তাঁদের যোগ্য পাওনা থেকে কখনই বঞ্চিত না থাকেন, তা নিশ্চিত করতে মোদী সরকার কাজ করে চলেছে। ‘বিকশিত ভারত সঙ্কল্প যাত্রা’র আমরা সূচনা করেছি। তাতে রাজস্থানের কোটি কোটি মানুষ স্বেচ্ছায় অংশগ্রহণ করছেন। এই অভিযান চলাকালীন ৩ কোটি মানুষের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে সম্পূর্ণ বিনা ব্যয়ে। মাত্র একমাস সময়কালের মধ্যেই রাজস্থানে দেওয়া হয়েছে ১ কোটি নতুন আয়ুষ্মান কার্ড। অন্যদিকে, ‘কিষাণ ক্রেডিট কার্ড’ কর্মসূচির আওতায় ১৫ লক্ষ কৃষক সুফলভোগী নথিভুক্ত হয়েছেন। আবার, ‘পিএম কিষাণ সম্মান নিধি যোজনা’র জন্য আবেদন করেছেন প্রায় ৬ লক্ষ ৫০ হাজার কৃষিজীবী। ফলে, তাঁদের নির্দিষ্ট ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলিতে অনতিবিলম্বেই সরকারি সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হবে। ‘বিকশিত ভারত সঙ্কল্প যাত্রা’র সময় প্রায় ৮ লক্ষ বোন উজ্জ্বলা গ্যাস সংযোগ লাভের জন্য নথিভুক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ২ লক্ষ ২৫ হাজার সংযোগ ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়েছে। এই বোনেরা ভর্তুকিপ্রাপ্ত ৪৫০ টাকা দামে গ্যাস সিলিন্ডার সংগ্রহের সুযোগ লাভ করেছেন। অন্যদিকে, রাজস্থানের ১৬ লক্ষ মানুষ বিভিন্ন বিমা প্রকল্পের আওতায় তাঁদের নাম নথিভুক্ত করেছেন। এই বিমা কর্মসূচির আওতায় তাঁরা প্রত্যেকেই লাভ করবেন ২ লক্ষ টাকা করে।
বন্ধুগণ,
মোদী যখন তাঁর প্রতিশ্রুতি সফলভাবে পালন করে, তখন কেউ কেউ হয়ে ওঠেন অতিমাত্রায় উদ্বিগ্ন এবং সেই অবস্থাই আমরা লক্ষ্য করছি কংগ্রেস দলের মধ্যে। সম্প্রতি এই দলকে আপনারা একটি উচিত শিক্ষা দিয়েছেন। কিন্তু তা থেকেও তারা শিক্ষা গ্রহণ করতে রাজি নয়। তাদের একমাত্র কর্মসূচি হল মোদীর সমালোচনা। ‘উন্নত ভারত’ কিভাবে গড়ে তোলা যায় সে সম্পর্কে আলোচনার টেবিলে বসতে তারা রাজি নয় কারণ, তারা জানে যে মোদী সর্বদাই ‘উন্নত ভারত’-এর পক্ষে সওয়াল করে যাবে। এমনকি, ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচি সম্পর্কেও খোলাখুলি আলোচনা করতে তারা অপারগ। ‘ভোকাল ফর লোকাল’ – এই প্রশ্নেও তারা নীরবতা পালন করে চলেছে। ভারত যখন বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তি হয়ে উঠেছে, সমগ্র জাতি যখন তাতে উচ্ছ্বসিত, কংগ্রেস তখন বিষয়টি থেকে পুরোপুরি মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এমনকি, মোদী যখন বিশেষ জোর দিয়ে বলে যে বর্তমান সরকারের পরবর্তী মেয়াদকালে ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তি হয়ে উঠতে চলেছে, তখনও কংগ্রেস সদস্যরা হতাশা প্রকাশ করেন। অথচ, সমগ্র জাতির আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে আমাদের অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতির ওপর। আসল কথা হল, মোদী যাই-ই বলুক না কেন, তার বিরোধিতা তাদের করতেই হবে এবং মোদীর বিরুদ্ধাচরণ করার জন্য যদি দলের ক্ষতি হয়, তাও তারা মেনে নিতে প্রস্তুত। অর্থাৎ, কংগ্রেসের কর্মসূচি হল একটাই – মোদী বিরোধিতা, চরম মোদী বিরোধিতা। মোদীর বিরুদ্ধে তারা বিচ্ছিন্নতাবাদী ও বিচ্ছিন্নতাকামী কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করে। এইভাবেই তারা সমাজকে করে তুলতে চায় বহুধাবিভক্ত। তাই, প্রত্যেকেই আজ কংগ্রেসকে পরিত্যাগ করেছে। শুধুমাত্র একটি পরিবারই যুক্ত রয়েছে এই দলের সঙ্গে। তাদের এই ধরনের নীতি নবীন ভারত গঠনের পথকে অবরুদ্ধ করতে চায়। কিন্তু, ‘উন্নত রাজস্থান’ তথা ‘উন্নত ভারত’ গঠনের স্বপ্নকে সফল করে তুলতে আগ্রহী বর্তমান যুব প্রজন্ম। তাই দেশের সর্বত্র প্রতিধ্বনিত হচ্ছে একটিই বাণী – ‘অব কি বার এনডিএ ৪০০ পার’। এর অর্থ হল, এবারের নির্বাচনে এনডিএ জয়ী হতে চলেছে ৪০০টিরও বেশি আসনে। রাজস্থান মোদীর প্রতিশ্রুতি ও অঙ্গীকারের ওপর যে সম্পূর্ণরূপে আস্থাশীল, এই বিশ্বাস আমার রয়েছে। আমি আরও একবার আপনাদের সকলকে অভিনন্দন জানাই আজকের এই উন্নয়ন প্রকল্পগুলির জন্য।
আপনাদের সকলকে জানাই অনেক অনেক ধন্যবাদ!
প্রধানমন্ত্রীর মূল ভাষণটি ছিল হিন্দিতে