নমস্কার!
গুজরাটে আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা!
আপনারা কেমন আছেন? আশা করি সকলে ভালোই আছেন। আজ ‘বিকশিত ভারত – বিকশিত গুজরাট’ কর্মসূচির সূচনা হচ্ছে। গুজরাটের ১৮২টি বিধানসভা কেন্দ্রের সবকটি থেকেই লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রযুক্তির মাধ্যমে এই কর্মসূচিতে যুক্ত হয়েছেন বলে আমি জানতে পেরেছি। বিকশিত গুজরাট কর্মসূচিতে যোগদানের ক্ষেত্রে প্রত্যেকের মধ্যে যে উদ্দীপনা নজরে আসছে, তা যথার্থই প্রশংসার যোগ্য। আমি আপনাদের সকলকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।
গতমাসে ভাইব্র্যান্ট গুজরাট শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণের সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। বিকশিত গুজরাটের বিংশতম বর্ষে বিশাল এক অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছিল। বিনিয়োগের নিরিখে এই অনুষ্ঠানটি গুজরাট ও দেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। যখন আমি মুখ্যমন্ত্রী ছিলাম, তখন আমিও এরকম বড় মাপের এক অনুষ্ঠান আয়োজনের পরিকল্পনা করতে পারিনি। এবার আপনারা যেভাবে এ ধরনের একটি অনুষ্ঠান বাস্তবায়িত করলেন, তা দেখে আমার আনন্দ বহুগুণ বেড়ে গেছে। দারুণ এই কাজের জন্য আমি গুজরাটের সকল মানুষকে, গুজরাট সরকারের প্রত্যেককে এবং মুখ্যমন্ত্রীর টিমের সকলকে অভিনন্দন জানাই। আপনারা অত্যন্ত সফলভাবে এটি আয়োজন করেছিলেন।
বন্ধুগণ,
যে কোনও দরিদ্র মানুষের জন্য নিজের একটি বাড়ি উজ্জ্বল ভবিষ্যতকে নিশ্চিত করে। তবে, পরিবারের সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে নতুন বাড়ির চাহিদাও বাড়ে। প্রত্যেক মানুষের মাথায় যাতে পাকা ছাদ থাকে, তা নিশ্চিত করা আমাদের সরকারের কর্তব্য। তাঁদের নিজেদের বাড়ি স্বপ্ন পূরণে সহায়ক হবে। এই ভাবনায় আজ গুজরাটে ১ লক্ষ ২৫ হাজার পরিবার নিজের বাসস্থান পেয়েছেন। এ এক অকল্পনীয় বিষয়। সারা দেশে এর আগে কেউ এই সাফল্য অর্জন করতে পারেননি। ঐ ১ লক্ষ ২৫ হাজার বাড়িতে যেন দীপাবলি উদযাপিত হচ্ছে। ভগবান রাম অযোধ্যায় যেমন তাঁর বাড়ি খুঁজে পেয়েছেন, একইভাবে এই গ্রামগুলির প্রতিটি পরিবার আজ নিজের বাড়ি পেয়েছে। যাঁরা আজ নিজেদের বাড়ি পেলেন, সেই পরিবারগুলিকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন। যখন এই কর্মসূচির বাস্তবায়ন হচ্ছে, তখন সারা দেশ বলছে, মোদীর গ্যারান্টির অর্থ সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হবেই।
ভাই ও বোনেরা,
আজ বনসকান্থার বহু মানুষ এই কর্মসূচিতে যুক্ত হয়েছেন। ১৮২টি বিধানসভা কেন্দ্রের সবকটি থেকেই হাজার হাজার মানুষ এখানে এসেছেন বলে শুনেছি। আমি গুজরাট বিজেপি-র প্রত্যেককে, গুজরাটের জনসাধারণকে এবং গুজরাট সরকারকে এ ধরনের একটি বড় মাপের অনুষ্ঠান আয়োজন করায় অভিনন্দন জানাই। নানা অঞ্চলের মানুষ এই কর্মসূচিতে যুক্ত হয়েছেন। টিভির মাধ্যমে আমি অনেক দূরে থাকা মানুষদের মুখ স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি। প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষরাও এই কর্মসূচিতে সামিল হয়েছেন! দীর্ঘদিন ধরে আমি সংগঠনের কাজ করে এসেছি। আমি জানি যে, বিভিন্ন জায়গার লক্ষ লক্ষ মানুষকে একইসঙ্গে একটি জায়গায় একত্রিত করাটা কোনও ছোট কাজ নয়। এত বিপুল সংখ্যক মানুষের আশীর্বাদ আমাদের সংকল্পকে আরও শক্তিশালী করে তুলছে। আপনাদের অধ্যবসায় আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। আমাদের বনসকান্থা জেলা, আমাদের গোটা উত্তর গুজরাটের মানুষকে জল আনতে ২ কিলোমিটার হাঁটতে হ’ত। কিন্তু, উত্তর গুজরাটে আমাদের কৃষক বন্ধুরা এক ফোঁটা জলে অধিক শস্য উৎপাদন, ড্রীপ ইরিগেশন, অত্যাধুনিক সেচ ব্যবস্থার মতো নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন। এর ফলে, আজ কৃষি ক্ষেত্রে উন্নতি হচ্ছে।
মেহসেনা, অম্বাজী, পাটনের মতো জায়গায় কৃষি কাজ আজ নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। অম্বাজী জলাধারে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। আগামী দিনগুলিতে এখানে বিপুল সংখ্যক তীর্থযাত্রী ও পর্যটক আসবেন। তরঙ্গ পাহাড় এবং অম্বাজীতে যে উন্নয়ন হচ্ছে, তা একবার দেখুন। আমেদাবাদ থেকে আবু রোড পর্যন্ত নতুন রেললাইন প্রকল্পের কথা আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে। এই ব্রডগেজ রেল প্রকল্পটির পরিকল্পনা করা হয়েছিল ১০০ বছর আগে বৃটিশ আমলে। গত ১০০ বছরে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়নি। আজ এই প্রকল্প কার্যকর হচ্ছে। এর ফলে, এখানে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে অজিতনাথ জৈন মন্দিরে সহজেই পৌঁছনো যাবে। অম্বাজী মন্দিরেও দ্রুত পৌঁছনো যাবে। সম্প্রতি আমি খবরের কাগজে পড়লাম যে, প্রত্নত্বত্ত্ববিদরা আমার গ্রাম বড়নগরে বিশ্বের প্রাচীনতম জনপদ খুঁজে পেয়েছেন। আমি নিজেও জানতাম না। প্রায় ৩ হাজার বছর আগে একটা গ্রাম ছিল এখানে। সারা বিশ্বের মানুষের কাছে যা এক বিস্ময়! হাতকেশ্বর দেখতে বহু পর্যটক আসতেন, এখন তাঁরা প্রাচীন যুগের এই জিনিসগুলি দেখতে আসবেন। স্ট্যাচু অফ ইউনিটি, অম্বাজী, পাটন এবং তরঙ্গের মতো এই অঞ্চলও পর্যটকদের কাছে আগ্রহের সৃষ্টি করবে। এখন উত্তর গুজরাটের মানুষও ভারত – পাক সীমান্তে নাবাবেট দেখতে যাচ্ছেন। আজ সর্বত্র উন্নয়ন নজরে আসছে। উত্তর গুজরাট এর থেকে উপকৃত হচ্ছে এবং উন্নয়নের নতুন এক উচ্চতায় পৌঁছেছে।
বন্ধুগণ,
নভেম্বর, ডিসেম্বর এবং জানুয়ারি মাসে দেশ জুড়ে ‘বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা’ সফলভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে। এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে মোদীর গ্যারান্টির গাড়ি বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা-প্রাপকদের কাছে পৌঁছেছে। ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বছর পর এই প্রথম কেন্দ্রীয় সরকার দেশের গ্রামাঞ্চলের লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে সরাসরি পৌঁছে যাচ্ছে। আমাদের গুজরাটেও কোটি কোটি মানুষ এই কর্মসূচিগুলিতে অংশগ্রহণ করেছেন। সরকারের এই উদ্যোগের ফলে গত ১০ বছরে উল্লেখযোগ্য কাজ হয়েছে। এই সময়কালে ২৫ কোটি মানুষ দারিদ্র্যের নাগপাশ থেকে মুক্ত হয়েছেন। সরকার এই ২৫ কোটি মানুষের প্রতিটি মুহূর্তে সঙ্গে ছিল। এরা বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন। তাঁদের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ যথাযথভাবে ব্যবহৃত হয়েছে এবং তাঁরা সফলভাবে দারিদ্র্যকে পরাজিত করেছেন। অর্থাৎ, আমি আরও ২৫ কোটি নতুন বন্ধুকে পেয়েছি, যাঁরা দারিদ্র্যকে পরাজিত করেছেন। আচ্ছা বলুন তো, এর জন্য আমি কি আনন্দিত হবো না? এই প্রকল্পগুলি যে দারিদ্র্য থেকে মুক্তি দিতে পারে, সে বিষয়ে আস্থা বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আগামী দিনে ভারত থেকে দারিদ্র্য নির্মূল করতে আপনাদের সহায়তা আমাদের প্রয়োজন।
আপনারা দারিদ্র্যকে পরাজিত করেছেন। আপনারা আরও দরিদ্র মানুষদের দারিদ্র্যের নাগপাশ থেকে মুক্ত করতে আমাকে সহায়তা করবেন। আপনাদের ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে অন্য দরিদ্র মানুষরাও ক্ষমতাশালী হবেন। কিছুক্ষণ আগে কয়েকজন বোনের সঙ্গে আলাপচারিতার সুযোগ আমার হয়েছে। তাঁদের মধ্যে যে আত্মপ্রত্যয় আমি দেখেছি, বাড়ি পাওয়ার পর তাঁদের জীবনে যে আস্থার সঞ্চার হয়েছে, তা দেখে আমার মনে হ’ল…. আরে বাহ্ …. আমার গুজরাটের মানুষ দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মানুষের মতোই সমৃদ্ধশালী এক জীবনের দিকে এগিয়ে চলেছে।
বন্ধুগণ,
ইতিহাস গড়ার এটিই সময়। আমরা স্বাধীনতা আন্দোলন দেখেছি। স্বদেশী আন্দোলন, ভারত ছাড়ো আন্দোলন অথবা ডান্ডি অভিযান – স্বাধীনতা সংগ্রামের সেই দিনগুলিতে প্রতিটি আন্দোলন সকলের সংকল্পের ফসল ছিল। একইভাবে, বিকশিত ভারত গড়ে তোলার সংকল্প দেশের মানুষ নিয়েছেন, আগামী ২৫ বছরে দেশের প্রতিটি শিশু উন্নত ভারত গড়তে চায়। এই সংকল্পকে বাস্তবায়িত করতে সকলে নিজের সাধ্য মতো কাজ করছেন। গুজরাটের মানসিকতাই এরকম। গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আমি যখন এখানে এসেছিলাম, তখন দেখেছি যে, এই মানসিকতার কারণেই এই রাজ্য দেশকে উন্নয়নে নেতৃত্ব দিয়েছে। বিকশিত ভারতের জন্য বিকশিত গুজরাট তারই অঙ্গ।
ভাই ও বোনেরা,
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা বাস্তবায়নে গুজরাট সবসময়েই সামনের সারিতে ছিল। এই প্রকল্পে শহরাঞ্চলে ৮ লক্ষেরও বেশি গৃহ নির্মাণ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (গ্রামীণ) – এর আওতায় ৫ লক্ষেরও বেশি গৃহ নির্মাণ হয়েছে। দ্রুত গৃহ নির্মাণের জন্য আমরা আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করছি। গুজরাটের রাজকোটে ১ হাজার ১০০-রও বেশি বাড়ি লাইট হাউস প্রকল্পের মাধ্যমে নির্মিত হয়েছে।
বন্ধুগণ,
মোদী দরিদ্র মানুষদের গৃহ নির্মাণের জন্য সরকারি কোষাগার উন্মুক্ত করেছে। আমার এখনও সেদিনের কথা মনে আছে, যখন ভালসাদে হলপতি সোসাইটিতে গৃহ নির্মাণে সমস্যা হচ্ছিল। কেউ সেখানে একদিনের জন্যও থাকতে চাইতেন না। এমনকি, হলপতির বাসিন্দারাও সেই বাড়িগুলিতে যেতেন না। আস্তে আস্তে বাড়িগুলি ভেঙ্গেচুড়ে নষ্ট হয়ে গেল। ভাবনগরেও একই অবস্থা। আমরা দেখেছি, সেখানেও কেউ থাকতেন না। আস্তে আস্তে সেই বাড়িগুলির দরজা-জানলাও চুরি হয়ে গেল। আমি কিন্তু আজ থেকে প্রায় ৪০ বছর আগের কথা বলছি। সেই সময় কেউ ঐ জায়গায় থাকতে চাইতেন না। তা হলে বুঝুন কিভাবে বাড়িগুলি তৈরি করা হয়েছিল। ২০১৪’র আগে শেষ ১০ বছরে দরিদ্র মানুষদের গৃহ নির্মাণের জন্য যত অর্থ ব্যয় হয়েছিল, ২০১৪’র পরবর্তী ১০ বছরে এই কাজে ব্যয় হয়েছে ১০ গুণ বেশি অর্থ। এ বছরের বাজেটে আমরা ২ কোটি নতুন বাড়ি তৈরি করবো বলে জানিয়েছি। এরফলে, প্রত্যেকটি দরিদ্র মানুষ পাকা বাড়ি পাবেন।
বন্ধুগণ,
২০১৪’র আগে দরিদ্র মানুষদের জন্য যে হারে বাড়ি নির্মাণ করা হ’ত, ২০১৪’র পর এই কাজে গতি এসেছে বহু গুণ। আগে দরিদ্র মানুষদের জন্য বাসস্থান নির্মাণে অর্থের অভাব ছিল। সেই টাকা আবার মধ্যস্বত্ত্বভোগী এবং বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে ভাগ হ’ত। কেউ নিত ১৫ হাজার টাকা আবার কেউ নিত ২০ হাজার টাকা। এইভাবে টাকা লুঠ হ’ত। আজ বাড়ি নির্মাণের জন্য ২ লক্ষ ২৫ হাজার টাকারও বেশি বরাদ্দ করা হয়। আর এই অর্থ সুবিধা-প্রাপকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি চলে যায়। বর্তমানে দরিদ্র মানুষেরা তাঁদের চাহিদা অনুযায়ী বাড়ি তৈরি করতে পারেন। ফলে, অনেক দ্রুতগতিতে গৃহ নির্মাণের কাজটি হয়। আগে ছোট ছোট বাড়ি তৈরি করা হ’ত। সরকারি আধিকারিকরা নির্ধারণ করতেন কি ধরনের বাড়ি তৈরি করা হবে। বাড়ি যদিও বা তৈরি করা হ’ল, সেই বাড়ির বাসিন্দারা শৌচাগার, বিদ্যুৎ, জল এবং রান্নার গ্যাসের সংযোগ পেতেন বহু বছর পরে। দরিদ্র মানুষদের এগুলির জন্য হাজার হাজার টাকা ব্যয় করতে হ’ত। ফলে, সেইসব বাড়িতে অনেকেই থাকতেন না। কিন্তু আজ যে বাড়ি তৈরি করা হচ্ছে, সেই বাড়িগুলিতে সবধরনের সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা থাকছে। আজ প্রতিটি সুবিধা-প্রাপক আনন্দের সঙ্গে পাকা বাড়িতে গৃহপ্রবেশ করছেন। এই প্রথমবার লক্ষ লক্ষ বোনেদের নামে সম্পত্তি নিবন্ধীকরণ করা হচ্ছে। আগে বাড়ির পুরুষ সদস্যদের নামে নিবন্ধীকরণের কাজ হ’ত। দোকান হোক কিংবা জমি কিংবা বাড়ির কোনও যানবাহন সবকিছুই হ’ত পুরুষ সদস্যের নামে। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, বাড়ির বয়স্ক বোনের নামে নিবন্ধীকরণের কাজ করা হবে। এখন মা ও বোনেরা বাড়িগুলির মালিক।
ভাই ও বোনেরা,
দরিদ্র মানুষ, যুবক-যুবতী, কৃষক, আমাদের মা ও বোনেরা বিকশিত ভারতের স্তম্ভ। তাই, তাঁদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। আমি যখন দরিদ্র মানুষের কথা বলছি, তখন সমাজের সকল শ্রেণীই তার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে। সব শ্রেণীর দরিদ্র মানুষদের জন্যই বাড়ির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বিনামূল্যে রেশনও সব শ্রেণীর মানুষই পাচ্ছেন। বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরিষেবাও দরিদ্র মানুষরা পাচ্ছেন। প্রত্যেক শ্রেণীর কৃষক স্বল্প মূল্যে সার পাচ্ছেন। পিএম কিষাণ সম্মান নিধি সমাজের সকল শ্রেণীর কৃষকের কাছে পৌঁছচ্ছে। সমাজের সকল দরিদ্র পরিবারের কাছে ব্যাঙ্কের দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে, যা আগে বন্ধ ছিল। এখন ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও গ্যারান্টির প্রয়োজন হচ্ছে না। মোদীই তাঁদের গ্যারান্টি। মুদ্রা যোজনায় যে কোনও শ্রেণীর দরিদ্র যুবক-যুবতী ক্ষুদ্র ব্যবসার জন্য ঋণ নিতে পারছেন। আমাদের বিশ্বকর্মা কিংবা রাস্তার হকারদের ঋণের গ্যারান্টি দিচ্ছেন মোদী। ফলে, তাঁদের জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এসেছে। প্রত্যেক প্রকল্পের সুবিধার বেশিরভাগই পৌঁছচ্ছে আমাদের দলিত ভাই ও বোনেদের কাছে, অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণীর ভাই ও বোনেদের কাছে, ‘বকশি পাঁচ’দের কাছে এবং আমাদের আদিবাসী পরিবারগুলিতে। মোদী গ্যারান্টির সুফল পাচ্ছেন এইসব পরিবারের সদস্যরা।
ভাই ও বোনেরা,
মোদী আমাদের বোনেদের লাখপতি দিদিতে উন্নীত করার এক বড় গ্যারান্টি দিয়েছেন। আপনারা হয়তো শুনেছেন, মোদী কিসব যেন করছেন। আমি নিশ্চিত যে, আপনারা শুনেছেন, প্রত্যেক গ্রামে আমরা লাখপতি দিদি তৈরি করবো। এ পর্যন্ত দেশে ১ কোটি লাখপতি লাখপতি দিদি তৈরি হয়েছে। এদের মধ্যে অনেকেই গুজরাটের। আমাদ্দের পরবর্তী উদ্যোগ আগামী বছরগুলিতে আরও ৩ কোটি লাখপতি দিদি তৈরি করা। এর সুফল গুজরাটের বোনেরাও পাবেন। নতুন লাখপতি দিদি দরিদ্র পরিবারগুলিতে নতুন শক্তি যোগাবে। এবারের বাজেটে আমাদের আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি বোনেদের জন্য একটি বড় ঘোষণা করা হয়েছে। এইসব বোনেদের চিকিৎসার জন্য আর ভাবনাচিন্তা করতে হবে না। তাঁদের এবং তাঁদের পরিবারের অন্য সদস্যদের চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন মোদী। আয়ুষ্মান প্রকল্পে সকল আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা করা হবে।
বন্ধুগণ,
দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারের খরচ কমানোর জন্য সাম্প্রতিক বছরগুলিতে আমরা নানা উদ্যোগ নিয়েছি। বিনামূল্যে রেশন, স্বল্প মূল্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা, ব্যয় সাশ্রয়ী মূল্যে ওষুধ এবং মোবাইলের বিল কম হওয়ায় সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলির অর্থ সঞ্চয় হচ্ছে। উজ্জ্বলা যোজনার সুবিধা-প্রাপকরা খুব কম পয়সায় রান্নার গ্যাস পাচ্ছেন। এলইডি বাল্বের জন্য প্রত্যেক পরিবারে বিদ্যুৎ বিলে সাশ্রয় হচ্ছে। এখন আমাদের নতুন উদ্যোগ হ’ল – সাধারণ পরিবারগুলির বিদ্যুৎ বিল যাতে শূন্যে নামিয়ে আনা যায় এবং তাঁরা বিদ্যুৎ থেকে উপার্জন করতে পারেন। কেন্দ্রীয় সরকার তাই একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় প্রথম পর্যায়ে ১ কোটি বাড়ির ছাদে সোলার প্যানেল বসানো হবে। যেমন আমরা কচ্ছের রাধনপুরে একটি বিশাল সোলার ফার্ম তৈরি করেছি, সেইভাবে বাড়ির ছাদে এ ধরনের প্যানেল বসানো হবে। ফলে, বিনামূল্যে সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলি বিদ্যুৎ পাবেন। এই ব্যবস্থার ফলে প্রত্যেক পরিবার ৩০০ ইউনিট বিদ্যুৎ বিনামূল্যে পাবেন। বিদ্যুৎ খাতে হাজার হাজার টাকা সাশ্রয় হবে। আপনি যদি বিদ্যুৎ উৎপাদন করেন, তা হলে সরকার সেই বিদ্যুৎ আপনার কাছ থেকে কিনে নেবে এবং আপনি বিদ্যুৎ বিক্রি করে উপার্জন করবেন। গুজরাটের মোধেরায় একটি সৌর গ্রাম গড়ে তোলা হয়েছে। এখন এ ধরনের প্রকল্প সারা দেশ জুড়ে গড়ে তোলা হবে। কৃষকদের জ্বালানী উৎপাদকে পরিণত করতে আমাদের সরকার উদ্যোগী হয়েছে। অব্যবহৃত জমিতে সৌর পাম্প এবং ছোট ছোট সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তুলতে সরকার সাহায্য করছে। গুজরাটে সৌরশক্তির মাধ্যমে কৃষকদের কাছে পৃথকভাবে বিদ্যুৎ পরিবহণের জন্য আলাদা ফিডার – এর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ফলে কৃষকরা সেচের জন্য দিনের বেলাতেও বিদ্যুৎ পাবেন।
বন্ধুগণ,
গুজরাট ব্যবসা-বাণিজ্যের রাজ্য হিসেবে পরিচিত। গুজরাটের উন্নয়ন যাত্রায় তাই শিল্পোন্নয়নে নতুন মাত্রা এনে দিয়েছে। শিল্প জগতের চালিকাশক্তিদের উপস্থিতির কারণে গুজরাটের যুবসম্প্রদায়ের কাছে অভূতপূর্ব সুযোগ রয়েছে। আজ গুজরাটের যুবক-যুবতীরা প্রতিটি ক্ষেত্রে রাজ্যকে নতুন এক উচ্চতায় পৌঁছে দিচ্ছেন। গুজরাটের যুবসম্প্রদায়ের কাছে নতুন নতুন সুযোগ তৈরি হচ্ছে। তাঁদের উপার্জন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বিকশিত গুজরাটকে উন্নয়নের নতুন স্তরে পৌঁছে দিচ্ছেন। ডবল ইঞ্জিন সরকার আপনাদের জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে রয়েছে। আজ আপনাদের সঙ্গে মিলিত হতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। আরও একবার আজ যাঁরা নতুন বাড়ি পেলেন, তাঁদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা রইল। এই বিশ্বাস রাখুন যে, মোদী আপনাদের সন্তানদের কখনও কোনও সমস্যার মুখোমুখি হতে দেবে না, যেসব সমস্যার সম্মুখীন আপানাদের এক সময় হতে হয়েছিলেন। আমরা গুজরাটকে এভাবেই গড়ে তুলবো, দেশকেও একইভাবে এগিয়ে নিয়ে যাব।
আপনাদের সকলকে শুভেচ্ছা জানাই।
ধন্যবাদ।