ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল শ্রী সন্তোষ গাংওয়ার জি, আমার মন্ত্রিসভার সদস্য শিবরাজ সিং চৌহান জি, অন্নপূর্ণা দেবী জি, এবং সঞ্জয় শেঠ জি, সাংসদ বিদ্যুৎ মাহাতো জি, রাজ্যমন্ত্রী ইরফান আনসারি জি, ঝাড়খণ্ড বিজেপি সভাপতি বাবুলাল মারাণ্ডি জি, অল ঝাড়খণ্ড স্টুডেন্টস্ ইউনিয়ন সভাপতি সুদেশ মহাতো জি, বিধায়কগণ, অন্য বিশিষ্ট অতিথি, ভাই এবং বোনেরা,
আমি বাবা বৈদ্যনাথ এবং বৈকুন্ঠনাথের চরণে প্রণাম করি, আমি সাহসী বীরসা মুণ্ডার ভূমিকে শ্রদ্ধা জানাই। আজ অত্যন্ত পবিত্র দিন। বর্তমানে ঝাড়খণ্ড কর্মা উৎসব পালন করছে যা প্রকৃতির পূজা। আজ সকালে যখন আমি রাঁচি বিমান বন্দরে পৌঁছই, তখন এক বোন কর্মা উৎসবের প্রতীক যাভা দিয়ে আমাকে স্বাগত জানান। এই উৎসবে বোনেরা ভাইদের সুস্থতা কামনা করেন। কর্মা উৎসব উপলক্ষে আমি ঝাড়খণ্ডের মানুষকে শুভেচ্ছা জানাই। এই পবিত্র দিনে ঝাড়খণ্ড উন্নয়নের নতুন আশীর্বাদ পেয়েছে। ৬৫০ কোটি টাকার নতুন ৬টি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস, যোগাযোগ এবং ভ্রমণ সুবিধার প্রসার এবং এর সঙ্গে পিএম আবাস যোজনায় ঝাড়খণ্ডের হাজার হাজার মানুষ পাকা বাড়ি পাচ্ছেন। এই পবিত্র দিনে ঝাড়খণ্ড উন্নয়নের পবিত্র আশীর্বাদ পেয়েছে। আমি এই উন্নয়ন কাজের জন্য ঝাড়খণ্ডের মানুষকে অভিনন্দন জানাই। আমি এই বন্দে ভারত ট্রেনগুলি যেসব রাজ্যকে যুক্ত করছে, তাদেরও অভিনন্দন জানাই।
বন্ধুগণ,
একটা সময় ছিল যখন দেশের মাত্র কয়েকটা জায়গা আধুনিক সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্ত হত। ঝাড়খণ্ডের মধ্যে রাজ্যগুলি আধুনিক পরিকাঠামো এবং উন্নয়ন থেকে পিছিয়ে ছিল। তবে ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’-এর মন্ত্র দেশের মনোভাব এবং অগ্রাধিকারের পরিবর্তন ঘটিয়েছে। এখন দেশের অগ্রাধিকার দরিদ্র। এখন দেশের অগ্রাধিকার আদিবাসী। বর্তমানে দেশের অগ্রাধিকার দলিত, বঞ্চিত শ্রেণী এবং অনগ্রসর শ্রেণী। এখন দেশের অগ্রাধিকার নারী, যুবা এবং কৃষক। সেইজন্য ঝাড়খণ্ড অন্য রাজ্যের মতোই বন্দে ভারত এবং আধুনিক পরিকাঠামোর মতো উন্নত প্রযুক্তির ট্রেন পাচ্ছে।
বন্ধুগণ,
আজ প্রত্যেকটি রাজ্য এবং শহর চায় বন্দে ভারতের মতো দ্রুত গতির ট্রেন, দ্রুত উন্নতির জন্য। এইতো কিছুদিন আগে উত্তরাঞ্চল এবং দক্ষিণাঞ্চলের রাজ্যগুলির জন্য ৩টি নতুন বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের যাত্রার সূচনা করেছিলাম। আর আজ টাটানগর থেকে পাটনা, টাটানগর থেকে ওড়িশার ব্রহ্মপুর, রৌরকেলা থেকে টাটানগর হয়ে হাওড়া, ভাগলপুর থেকে দুমকা হয়ে হাওড়া, দেওঘর থেকে গয়া হয়ে বারাণসী এবং গয়া থেকে কোডারমা-পরেশনাথ-ধানবাদ হয়ে হাওড়া। যেহেতু এখন আবাসন বিতরণ কর্মসূচি চলছে, আমি এই বন্দে ভারত ট্রেনগুলিরও যাত্রার সূচনা করলাম এবং সেগুলি তাদের গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছে। পূর্ব ভারতে রেল সংযোগের প্রসার এই অঞ্চলের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে। এই ট্রেনগুলি ব্যবসায়ী এবং ছাত্রদের অত্যন্ত উপকারে লাগবে। এছাড়াও এগুলি অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক কাজকর্ম বৃদ্ধি করবে। আপনারা জানেন, দেশ এবং বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে কাশীতে ভক্তরা আসেন। বন্দে ভারত ট্রেন কাশী থেকে দেওঘরে যাত্রীদের যাওয়ার সুবিধা করবে কারণ অনেকেই চান বৈদ্যনাথ দর্শন করতে। এতে এখানে পর্যটনের প্রসার ঘটবে। টাটানগর দেশে এমনই একটি প্রধান শিল্পতালুক। ভালো পরিবহন ব্যবস্থা শিল্প ক্ষেত্রের উন্নয়নকে আরও গতি দেবে। পর্যটন এবং শিল্পের প্রসারে ঝাড়খণ্ডের যুবাদের কর্মসংস্থানের সুযোগও বাড়বে।
বন্ধুগণ,
দ্রুত উন্নতির জন্য আধুনিক রেল পরিকাঠামো জরুরি। সেইজন্য একাধিক নতুন প্রকল্প আজ শুরু হয়েছে। মধুপুর বাইপাস লাইনের শিলান্যাস করা হয়েছে। সম্পূর্ণ হলে হাওড়া-দিল্লি মেন লাইনে হল্ট স্টেশনের প্রয়োজন হবে না। বাইপাস লাইনের ফলে গিরিডি এবং যশিডির মধ্যে যাতায়াতে সময় কম লাগবে। আজ হাজারিবাগ টাউন কোচিং ডিপোর শিলান্যাসও করা হল। এতে একাধিক নতুন ট্রেন পরিষেবার সূচনা করার সুবিধা হবে। কুরকুরিয়া থেকে কানারোয়ান পর্যন্ত রেল লাইনের ডাবলিং ঝাড়খণ্ডে রেল যোগাযোগ জোরালো করবে। এই ডাবলিং-এর কাজ শেষ হলে ইস্পাত শিল্পে মাল আনা-নেওয়া সহজ হবে।
বন্ধুগণ,
কেন্দ্রীয় সরকার ঝাড়খণ্ডে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে এই রাজ্যের উন্নয়নের জন্য এবং কাজে গতি আনার জন্য। এ বছর ঝাড়খণ্ডে রেল পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য ৭০০০ কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে। ১০ বছর আগের তুলনায় এটি ১৬ গুণ বেশি। আপনারা এই বর্ধিত রেল বাজেটের প্রভাব লক্ষ্য করতে পারবেন; বর্তমানে নতুন রেললাইন, ডাবলিং এবং রাজ্যের স্টেশনগুলিতে আধুনিক সুবিধা দিতে কাজ দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে। বর্তমানে ঝাড়খণ্ড সেইসব রাজ্যগুলির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে যেখানে ১০০ শতাংশ রেললাইন বিদ্যুতায়িত হয়েছে। অমৃত ভারত স্টেশন কর্মসূচির অধীনে ঝাড়খণ্ডের ৫০টি স্টেশনকে ঢেলে সাজানো হয়েছে।
বন্ধুগণ,
বর্তমানে ঝাড়খণ্ডে কয়েক হাজার সুবিধাপ্রাপকদের জন্য পাকা বাড়ি তৈরি করতে প্রথম কিস্তি ছাড়া হয়েছে। পিএম আবাস যোজনায় কয়েক হাজার মানুষকে পাকা বাড়ি দেওয়া হয়েছে। এই বাড়ির সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ এবং গ্যাস সংযোগের মতো সুবিধা। আমাদের মনে রাখতে হবে যখন একটি পরিবার তাদের নিজস্ব বাড়ি পায়, তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ে। তারা তখন শুধুমাত্র বর্তমানে উন্নতি করাই নয়, ভবিষ্যতে উন্নতি করার চিন্তা করে। তারা তখন ভাবে, এই সংকটের সময়েও তাদের নিজেদের বাড়ি হয়েছে। এবং পিএম আবাস যোজনার সঙ্গে সঙ্গে ঝাড়খণ্ডের মানুষ শুধুমাত্র স্থায়ী বাড়ি পাচ্ছেন তাই নয়, গ্রামে-শহরে একাধিক কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হচ্ছে।
বন্ধুগণ,
২০১৪ থেকে দরিদ্র, দলিত, অনগ্রসর এবং আদিবাসী পরিবারের ক্ষমতায়নের জন্য একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পিএম জনধন কর্মসূচি রূপায়িত হচ্ছে দেশের আদিবাসী ভাই এবং বোনেদের জন্য। এই কর্মসূচির লক্ষ্য, অত্যন্ত অনগ্রসর আদিবাসীদের কাছে পৌঁছে যাওয়া। আধিকারিকরা নিজেরাই এইসব পরিবারের কাছে পৌঁছে বাড়ি, রাস্তা, বিদ্যুৎ, জল এবং শিক্ষার সুবিধা করে দিচ্ছে। ‘বিকশিত ঝাড়খণ্ড’ গড়ে তুলতে আমাদের দায়বদ্ধতার অংশ এই প্রয়াস। আমার বিশ্বাস, সকলের আশীর্বাদে এই প্রতিশ্রুতি নিশ্চয়ই পূর্ণ হবে এবং আমরা ঝাড়খণ্ডের স্বপ্ন সফল করতে পারবো। এই অনুষ্ঠানের পরে আমি আর একটি বড় জনসভায় যাচ্ছি। আমি ৫ মিনিটের মধ্যে সেখানে পৌঁছবো। সেখানে অনেক মানুষ আমার জন্য অপেক্ষা করছে। সেখানে আমি ঝাড়খণ্ড সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো। কিন্তু আমি ঝাড়খণ্ডের মানুষের কাছ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করি কারণ, যদিও আমি রাঁচিতে এসেছি, প্রকৃতি সাহায্য করেনি এবং সেই কারণে আমি হেলিকপ্টারে যেতে পারিনি। আমি সেখানে পৌঁছতে পারিনি এবং সেই কারণে আমি আজকের এইসব কর্মসূচি উদ্বোধন এবং উৎসর্গ করছি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে। আমি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জনসভায় ভাষণ দেবো। আরও একবার এখানে আসার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ জানাই। ধন্যবাদ।