মঞ্চে উপস্থিত মাননীয় সদস্যবৃন্দ। ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ,
আজ আমরা অনুপ্রেরণাদায়ক ব্যক্তিত্ব মহাত্মা গান্ধী এবং লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর জন্মজয়ন্তী উদযাপন করছি। গতকাল ১ অক্টোবর রাজস্থান সহ সারা দেশ পরিচ্ছন্নতা বিধানে উল্লেখযোগ্য উদ্যোগের সামিল হয়েছিল। স্বচ্ছতার অভিযানকে জনআন্দোলনের রূপ দেওয়া জন্যে সমগ্র দেশবাসীকে আমি আমার কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
বন্ধুগণ,
সম্মানীয় বাপু পরিচ্ছন্নতা, আত্মবিশ্বাস এবং সার্বিক উন্নয়নের প্রবক্তা ছিলেন। বিগত ৯ বছর ধরে আমাদের দেশ বাপুর আদর্শকে সামনে রেখে এইসব মূল্যবোধের প্রসার ঘটিয়েছে। আজ চিত্তোরগড়ে ৭ হাজার ২০০ কোটি টাকার প্রকল্পগুচ্ছের উদ্বোধন এই অঙ্গীকারের মূর্ত রূপ।
বন্ধুগণ,
গ্যাস ভিত্তিক অর্থনীতির ভিত্তিভূমিকে সুদৃঢ় করতে দেশজুড়ে গ্যাস পাইপলাইন স্থাপনের অভূতপূর্ব অভিযান শুরু হয়েছে। মাহেসানা থেকে ভাতিন্ডা পর্যন্ত গ্যাস পাইপলাইন স্থাপন করা হচ্ছে এবং আজ পালি-হনুমানগড়ে এই ব্যবস্থাকে জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করা হচ্ছে। এই সম্প্রসারণ রাজস্থানে শিল্পায়নের প্রসার ঘটাবে। এর পাশাপাশি নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। আমাদের বোনেদের রান্নাঘরে সাশ্রয়ী গ্যাস পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যকে এই অভিযান আরও ত্বরান্বিত করবে।
বন্ধুগণ,
আজ রেল এবং সড়ক পরিকাঠামোর সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পেরও উদ্বোধন হল। এইসব সুবিধা মেবারের মানুষদের জীবনে স্বাচ্ছন্দ্য নিয়ে আসবে, নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে। কোটায় নতুন আইআইটি ক্যাম্পাস স্থাপনের ফলে শিক্ষা হাব হিসেবে এই জায়গার পরিচিতিকে আরও সুদৃঢ় রূপ দেবে।
বন্ধুগণ,
রাজস্থান প্রাচীনকাল থেকে সমৃদ্ধ ঐতিহ্যশালী জায়গা এবং তা বর্তমানের শক্তি এবং ভবিষ্যতের নানা সম্ভাবনায় বলীয়ান। এই ত্রিশক্তি রাষ্ট্রের সামগ্রিক উন্নয়নে শক্তি যোগাচ্ছে। নাথোয়ারা ট্যুরিস্ট ইন্টারপিটেশন এবং ক্যালচারাল সেন্টারেরও উদ্বোধন হয়েছে। এই কেন্দ্রের পাশাপাশি জয়পুরে গোবিন্দ দেবজির মন্দির, সিকারে খাতুশ্যামজি মন্দির এবং নাথোয়ারাকে পর্যটন ক্ষেত্রের মধ্যে নিয়ে আসায় রাজস্থানের খ্যাতি আরও সম্প্রসারিত হবে। সেই সঙ্গে পর্যটন শিল্পের প্রভূত উন্নতিসাধন ঘটবে।
বন্ধুগণ,
চিত্তোরগড়ের কাছে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের উদ্দেশ্যে নিবেদিত সানোয়ারিয়া শেঠ মন্দির যৌথ বিশ্বাসের এক পৃষ্ঠভূমি। প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ ভক্ত এই সানোয়ারিয়া শেঠজির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সমবেত হন। ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের কাছে এই মন্দিরের এক বিশেষ গুরুত্বও রয়েছে। স্বদেশ দর্শন প্রকল্পের আওতায় ভারত সরকার সানোয়ারিয়া জির মন্দিরের সুযোগ-সুবিধাকে আরও অনেক আধুনিক রূপ দিয়েছে। জলে লেজার শো, পর্যটক সুবিধা বিকাশ কেন্দ্র, অ্যাম্পিথিয়েটার, ক্যাফেটারিয়ার মত নানা সুবিধা গড়ে তুলতে কোটি কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। আমার বিশ্বাস ভক্তদের স্বাচ্ছন্দ্য বিকাশে এইসব সুবিধা নানাভাবে কাজ করবে।
বন্ধুগণ,
রাজস্থানের উন্নয়ন ভারত সরকারের অগ্রাধিকারের তালিকায় শীর্ষস্থান দখল করে আছে। এক্সপ্রেসওয়ে, মহাসড়ক এবং রাজস্থানের রেলপথ সম্প্রসারণ সহ আধুনিক পরিকাঠামো গড়ে তুলতে আমরা জোর দিয়েছি। দিল্লি - মুম্বাই এক্সপ্রেসওয়ে বা অমৃতসর - জামনগর এক্সপ্রেসওয়ে যেটাই হোক – এইসব প্রকল্প রাজস্থানের লজেস্টিক ক্ষেত্রে নতুন শক্তি সঞ্চার করবে। সম্প্রতি উদয়পুর – জয়পুর বন্দে ভারত ট্রেনেরও উদ্বোধন হয়েছে। রাজস্থান এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য, যা ভারতমালা প্রকল্প থেকে নানা ভাবে উপকৃত হচ্ছে।
বন্ধুগণ,
রাজস্থানের ইতিহাস আমাদেরকে শিক্ষা দেয় বীরত্বের সঙ্গে, গরিমার সঙ্গে এবং হাতে হাত রেখে উন্নয়নের পথে এগিয়ে যেতে। আজকের দিনে ভারত এই সংকল্প পথে এগিয়ে চলেছে। ‘সবকা প্রয়াস’ (সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টা)-এর মাধ্যমে আমরা উন্নত ভারত গড়ে তোলার কাজে নিয়োজিত। ফলে, যেসব এলাকা বা জনগোষ্ঠী পিছিয়ে রয়েছে অথবা অতীতে যারা উন্নয়ন থেকে বঞ্জিত বা প্রান্তিক, তাদের উন্নতিসাধন আমাদের দেশের অগ্রাধিকারের তালিকায়। গত ৫ বছর ধরে উচ্চাকাঙ্খী জেলা কর্মসূচি সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে চলেছে। এই প্রকল্পের আওতায় মেবারের বিভিন্ন জেলা এবং রাজস্থানের উন্নতিসাধন ঘটানো হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকার এই কর্মপরিকল্পনার আরও প্রসার ঘটিয়ে উচ্চাকাঙ্খী ব্লকগুলিকে চিহ্নিত করে তাদের দ্রুত উন্নতিবিধানের ওপর জোর দিচ্ছে।
আগামীদিনে এই প্রকল্পের আওতায় রাজস্থানের বিভিন্ন ব্লকের উন্নতিসাধন হবে। কেন্দ্রীয় সরকার উজ্জীবিত গ্রামকর্মসূচি চালু করেছে। যেখানে পিছিয়ে পড়াদের উন্নতিবিধান সুনিশ্চিত করাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। সীমান্তবর্তী গ্রাম, যেগুলিকে অতীতে দূরবর্তী গ্রাম হিসেবে মনে করা হত, এখন সেগুলিকে প্রথম গ্রাম হিসেবে মর্যাদা দিয়ে উন্নয়নের সুফল সেখানে পৌঁছে দেওয়ার কাজকে সুনিশ্চিত করা হচ্ছে। এর ফলে রাজস্থানের কয়েক ডজন সীমান্তবর্তী গ্রামের প্রভূত উন্নতি হয়েছে। আমি এই সব বিষয়ে আরও বিস্তারিত এবং আরও খোলামেলা ভাবে কয়েক মিনিট পরে বলবো। তার কারণ খোলামেলা আলোচনায় এইসব জিনিসের ব্যাখ্যা অনেক বেশি আনন্দদায়ক। এখানেও অনেক প্রতিবন্ধক রয়েছে। ফলে, এইসব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনারও প্রয়োজন রয়েছে। আমি চাই রাজস্থানের বিকাশে আমাদের সংকল্পের সফল রূপায়ন। মেবারের অধিবাসীদের অনেক নতুন প্রকল্পের জন্য হার্দিক অভিনন্দন জানাচ্ছি।
আপনাদের সকলকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
(প্রধানমন্ত্রীর মূল ভাষণটি হিন্দিতে)