মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল শ্রী রমেশ বাইন্সজি, মুখ্যমন্ত্রী শ্রী একনাথ শিন্ডেজি, উপমুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশজি এবং অজিত দাদা পাওয়ারজি, মহারাষ্ট্র সরকারের অন্য মন্ত্রীগণ, জন প্রতিনিধিরা, শ্রী নরস্বয়া আদমজি এবং সোলাপুরের ভাই এবং বোনেরা, নমস্কার!
আমি পান্থারপুরের শ্রী ভিট্টল এবং সিদ্ধেশ্বর মহারাজকে প্রণাম জানাই। এই সময়টি আমাদের সকলের জন্য ভক্তিতে পূর্ণ। ২২ জানুয়ারি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত আসছে। যখন ভগবান রাম তাঁর অত্যন্ত সুন্দর মন্দিরে প্রকাশিত হবেন। বহু শতাব্দী ধরে আমাদের প্রণম্য দেবতাকে তাঁবুতে কাটানোর দৃশ্যের এবারে সমাপ্তি হতে চলেছে।
রাম মন্দিরে প্রাণ প্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানের আগে কয়েকজন সন্ত-এর নির্দেশিকা মেনে আমি সেই মতো আচার পালন করছি এবং কঠোরভাবে আমার শপথ রক্ষা করছি। আমার আশা, আপনাদের আশীর্বাদে এই ১১ দিনে আমার আধ্যাত্মিক অনুশীলন সফল হবে। যাতে আমি কোনো ভাবেই না পিছিয়ে পড়ি। এই পবিত্র কর্মে অংশ নেওয়ার সুযোগ আপনাদের আশীর্বাদের প্রতীক এবং আমি সেখানে যাবো গভীর কৃতজ্ঞতা সঙ্গে নিয়ে।
বন্ধুগণ,
এটা একটি সমাপতনও যে মহারাষ্ট্রের নাসিকের পঞ্চবটি থেকে আমার এই ব্রত শুরু হয়েছে। ভগবান রামের প্রতি ভক্তিতে পূর্ণ এই আবহ। আজ মহারাষ্ট্রে ১ লক্ষের বেশি পরিবার তাঁদের বাড়িতে প্রবেশ করছেন। এখন আমায় বলুন, এতে আমার আনন্দ বহুগুণ বাড়বে, না না? আপনাদেরও আনন্দ বাড়বে, কী না? আমি খুশি যে, মহারাষ্ট্রে এই ১ লক্ষের বেশি দরিদ্র পরিবার ২২ জানুয়ারি তাঁদের বাড়িতে রামজ্যোতিও জ্বালাবেন। আপনারা প্রত্যেকে সন্ধ্যায় রামজ্যোতি জ্বালাবেন? আপনারা সারা ভারতেও এটা করবেন কী?
এবার ভগবান রামের নামে আপনারা আপনাদের মোবাইল ফোনের আলো জ্বেলে দিন এবং রামজ্যোতি জ্বালাবার শপথ নিন। সকলে মোবাইল ফোনের আলো জ্বালান... প্রত্যেকে। যাঁদের হাতে মোবাইল ফোন আছে এবং যাঁরা অনেক দূরে আমি ভাবতেই পারিনি যে এত মানুষ এখানে আসবেন। এই যে আলো জ্বলেছে, তাতে সব মানুষকে দেখা যাচ্ছে। আপনারা হাত তুলুন এবং বলুন যে, আপনারা ২২ তারিখের সন্ধ্যায় রামজ্যোতি জ্বালাবেন। খুব ভালো!
আজ ২ হাজার কোটি টাকার মূল্যের ৭টি অমৃত প্রকল্পের উদ্বোধনও হচ্ছে মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে। আমি সোলাপুরের বাসিন্দা এবং মহারাষ্ট্রের ভাই বোনেদের আমার হার্দিক অভিনন্দন জানাই। আমি মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর কথা শুনছিলাম এবং তিনি বললেন যে, মহারাষ্ট্রের গর্ব উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী মোদীর জন্য। শ্রী সিন্ডে, এটা শুনতে ভালোই লাগে এবং রাজনীতিবিদরা সাধারণত এই ধরনের মন্তব্যের প্রশংসা করেন। তবে, সত্যিটা হল এই যে, মহারাষ্ট্রের নাম উজ্জ্বল হচ্ছে সেটা মহারাষ্ট্রের মানুষের কঠোর পরিশ্রমের জন্য এবং আপনার সরকারের মতো প্রগতিশীল সরকারের জন্য। সেইজন্য সমগ্র মহারাষ্ট্রের অভিনন্দন প্রাপ্য।
বন্ধুগণ,
ভগবান রাম আমাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষার নীতিকে তুলে ধরতে শিখিয়েছেন। আমি খুশি যে, সোলাপুরের কয়ের হাজার দরিদ্র মানুষের জন্য, কয়েক হাজার সহকর্মীদের জন্য যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম তা ফলপ্রসূ হচ্ছে। আজ দেশের পিএম আবাস যোজনায় দেশের বৃহত্তম নির্মিত সোসাইটির উদ্বোধন হচ্ছে, এটা দেখে আমার মনে হচ্ছে “যদি আমার ছোটবেলায় এরকম একটি বাড়িতে থাকার সুযোগ হতো”। এইসব দেখে আমার মনে অত্যন্ত খুশি জাগছে। যখন কয়েক হাজার পরিবারের স্বপ্ন সফল হয়, তখন তাদের আশীর্বাদই হয় আমার সম্পদ। যখন এই প্রকল্পের শিলান্যাস করতে এসেছিলাম, আমি আপনাদের আশ্বাস দিয়েছিলাম যে, আমি ব্যক্তিগতভাবে আপনাদের হাতে বাড়ির চাবি তুলে দেবো। আজ মোদী সেই গ্যারান্টি পূরণ করেছেন। আপনারা জানেন, মোদীর গ্যারান্টি মানে প্রতিশ্রুতি রক্ষার গ্যারান্টি। অন্য কথায় মোদীর গ্যারান্টির অর্থ প্রতিশ্রুতি রক্ষার সম্পূর্ণ গ্যারান্টি।
এখন এই কয়েক লক্ষ টাকার বাড়িগুলি আপনাদের সম্পত্তি। আমি জানি, আজ যাঁরা এই বাড়িগুলি পেলেন, সেইসব গৃহহীন পরিবার বহু প্রজন্ম ধরে অসংখ্য কষ্ট সহ্য করেছে। আমি বিশ্বাস করি যে এই বাড়ি দিয়ে সেই কষ্টের চক্র ভেঙে যাবে। আপনাদের ছেলেমেয়েদের আপনাদের পাওয়া কষ্ট পেতে হবে না। ২২ জানুয়ারি আপনারা বাড়িতে যে রামজ্যোতি জ্বালবেন তা আপনাদের সকলের জীবন থেকে দারিদ্রের অন্ধকারকে সরাতে অনুপ্রেরণা যোগাবে। আমি ভগবান রামের কাছে প্রার্থনা করি যে আপনাদের জীবন সুখের হোক।
আমি এইমাত্র রামজির দারুণ বক্তৃতা শুনলাম এবং আমি দারুণ খুশি। ২০১৯-এ যখন আপনার সঙ্গে দেখা হয়েছিল তখন আপনি রোগা ছিলেন। এখন আপনার দিকে দেখুন, সাফল্য পাওয়ার পর উল্লেখযোগ্যভাবে ওজন বেড়েছে। এবং এটাও মোদীর গ্যারান্টির ফল। আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা আপনারা যে বাড়িগুলি পাচ্ছেন, জীবনের যে নতুন পর্ব শুরু করছেন, আপনাদের সেই জীবন যেন আনন্দে পূর্ণ হয়ে ওঠে, সেটাই আমার ভগবান রামের কাছে প্রার্থনা।
আমার পরিবারের সদস্যরা,
আমাদের সরকার ভগবান রামের আদর্শ মেনে প্রথম দিন থেকে দেশে সু-প্রশাসন এবং সততার সঙ্গে শাসন বহাল করার চেষ্টা করছে। রাম রাজ্যই ‘সব কা সাখ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস এবং সবকা প্রয়াস’-এর প্রেরণা। সন্ত তুলসীদাস রামচরিত মানসে বলেছিলেন:
জেহি বিধি সুখী হো হিঁ পুর লোগা। করহিঁ কৃপানিধি সোই সংযোগা।।
এর অর্থ ভগবান রাম এমনভাবে কাজ করতেন যাতে মানুষ সুখী হয়। মানুষকে সেবা দেওয়ার থেকে বড় প্রেরণা কী হতে পারে। সেইজন্য ২০১৪-য় আমাদের সরকার যখন ক্ষমতায় আসে, আমি বলেছিলাম আমাদের সরকার দরিদ্রদের কল্যাণে উৎসর্গীকৃত। সেই থেকে আমরা একের পর এক কর্মসূচি রূপায়ণ করেছি, যাতে গরিব মানুষের কষ্ট কমে এবং তাঁদের জীবন যাতে আরও সহজ হয়।
বন্ধুগণ,
বাড়ি এবং শৌচাগারের অভাবে দরিদ্রদের প্রতি পদে অপমানিত হতে হতো। আমাদের মা, বোন এবং কন্যাদের জন্য এটা বিশেষ করে একটি শাস্তি ছিল। সেইজন্য আমাদের লক্ষ্য ছিল দরিদ্রদের জন্য বাড়ি এবং শৌচাগার তৈরি করা। এগুলি শুধুমাত্র শৌচাগার নয়, এগুলো ‘ইজ্জত ঘর’ এবং আমরা মর্যাদার গ্যারান্টি দিয়েছি, বিশেষ করে আমাদের মা, বোনেদের।
আমরা গরিব মানুষকে ৪ কোটির বেশি পাকা বাড়ি দিয়েছি। আপনারা ভাবতে পারেন যাঁরা এখানে বাড়ি পেয়েছেন তাঁদের জিজ্ঞেস করুন, জীবনে কতটা স্বস্তি পেয়েছেন তাঁরা। এখানেই আছেন ৩০ হাজার মানুষ; আমরা ৪ কোটির বেশি মানুষকে বাড়ি দিয়েছি... তাঁদের জীবনে তাহলে কতটা স্বস্তি হয়েছে। দু রকমের ভাবনা আছে, একটি হল সরাসরি রাজনৈতিক লাভের জন্য মানুষকে উষ্কে দেওয়া, আমাদের ভাবনা হলো স্বনির্ভর কর্মী এবং আমাদের ভাবনা গরিব মানুষের কল্যাণ। যাঁরা আজকে নতুন বাড়িতে থাকতে যাচ্ছেন, তাঁদের আমি বলতে চাই, বড় করে স্বপ্ন দেখুন, ছোট স্বপ্ন দেখবেন না এবং মোদীর গ্যারান্টি হল আপনাদের স্বপ্ন হবে আমার সংকল্প।
অতীতে শহরে বস্তি তৈরি হতো। কিন্তু আজ বস্তিতে যাঁরা থাকেন তাঁদের জন্য আমরা পাকা বাড়ি তৈরির কাজ করছি।গ্রাম থেকে জীবিকার জন্য শহরে আসা মানুষদের জন্য যেন ভাড়া করা বস্তিতে না থাকতে হয় আমাদের সরকার সেটাই নিশ্চিত করতে চায়। বর্তমানে শহরে কলোনি তৈরি হচ্ছে, যেখানে কম ভাড়ায় এই ধরনের মানুষকে যথোপযুক্ত আবাসন দেওয়া যায়। আমরা একটা বড় অভিযান চালাচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য মানুষ যেখানে কাজ করে তার আশপাশেই যেন আবাসনের ব্যবস্থা থাকে।
আমার পরিবার সদস্যগণ,
দেশে অনেক দিন ধরেই ‘গরিবি হঠাও’ শ্লোগান দেওয়া হতো। কিন্তু শ্লোগান সত্ত্বেও দারিদ্র কমেনি। এই ধরনের বিষয়গুলি রয়েই গেছে, যেমন “আমরা আধখানা রুটি খাবো”। কেন, ভাই? মানুষ বলতো “আমরা আর্ধেক রুটি খাবো এবং আপনাদের ভোট দেবো”। কেন আধখানা রুটি খাবে? মোদী আপনাদের পুরো খাবার নিশ্চিত করছে। এটাই মানুষের স্বপ্ন, এটাই সংকল্প... এটাই তফাত এবং বন্ধুগণ, সোলাপুর যেমন শ্রমিকদের শহর তেমনই আমেদাবাদ। ওটাও শ্রমিকদের শহর বিশেষ করে বস্ত্র শিল্পের শ্রমিকদের। আমেদাবাদ এবং সোলাপুরের মধ্যে এরকম গভীর সম্পর্ক আছে। আর আমার জন্য সোলাপুরের সংযোগ আরও কাছের। আমেদাবাদে এখানকার মানুষ বিশেষ করে পদ্মশালীরা বাস করেন। আমার সৌভাগ্য আমার প্রথম জীবনে এরকম পদ্মশালী পরিবারগুলিই আমাকে মাসে তিন চারবার খেতে দিতো। তাঁরা ছোট জায়গায় থাকতো, এমন ছোট জায়গা যেখানে তিনজন একসঙ্গে বসতে পারে না, কিন্তু তাঁরা কখনো আমাকে অভুক্ত অবস্থায় শুতে যেতে দেয়নি। আমি চমৎকৃত যে একদিন সোলাপুর থেকে একজন বিখ্যাত ব্যক্তি, যাঁর নাম আমি এতদিন বছর পরে আর মনে করতে পারছি না - তিনি আমাকে একটি সুন্দর ছবি পাঠিয়েছিলেন। খুব দক্ষহাতে বোনা এবং খুব সুন্দরভাবে তৈরি করা ছবিটি পাঠিয়েছিলেন মহারাষ্ট্রের সাতারা থেকে ‘উকিল সাহেব’ নামে পরিচিত লক্ষ্মণ রাও ইনামদার। তিনি আমার জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি তাঁর দক্ষতা দিয়ে শৈল্পিকভাবে তৈরি করে সেই চমৎকার ছবিটি পাঠিয়েছিলেন আমাকে। এমনকি আজও আমার হৃদয়ে সোলাপুরের জন্য একটি বিশেষ স্থান আছে।
আমার পরিবারের সদস্যগণ,
আমাদের দেশে দীর্ঘদিন ধরে “গরিবি হঠাও” শ্লোগান দেওয়া হতো। কিন্তু এই শ্লোগান সত্ত্বেও দারিদ্র কমেনি। এর প্রধান কারণ হল দরিদ্রদের নামে কর্মসূচি তৈরি হলেও সেই সুযোগ প্রকৃত সুবিধাপ্রাপকরা পেতেন না। পূর্ববর্তী সরকারের সময়ে গরিবদের জন্য বরাদ্দ অর্থ প্রায়শই মাঝ পথে হাত সাফাই হতে যেতো। অন্যভাবে বলতে গেলে পূর্বতন সরকারগুলির উদ্দেশ্য, নীতি এবং নিষ্ঠা বিষয়ে প্রশ্নচিহ্ন ছিল। আমাদের উদ্দেশ্য পরিষ্কার। আমাদের নীতি হল দরিদ্রের ক্ষমতায়ন। আমাদের নিষ্ঠা দেশের প্রতি। আমাদের দায়বদ্ধতা ‘বিকশিত ভারত’ তৈরি করার লক্ষ্যে।
সেই জন্য মোদী গ্যারান্টি দিয়েছে যে, সরকারি সুবিধা কোনো মধ্যবর্তী মানুষ ছাড়াই সরাসরি সুবিধাপ্রাপকের হাতে পৌঁছবে। আমরা এই মধ্যবর্তী মানুষদের সুবিধাপ্রাপকদের পথ থেকে সরাবার কাজ করেছি। সেইকারণেই এখন কিছু মানুষ চেঁচায় তাদের অসৎ উপায়ের লাভের উৎস বন্ধ হয়ে গেছে। গত ১০ বছরে আমরা গরিব, কৃষক, মহিলা এবং যুবা সুবিধাপ্রাপকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি ৩০ লক্ষ কোটি টাকার বেশি অর্থ পাঠিয়েছি। জনধন, আধার এবং মোবাইল নিরাপত্তা তৈরি করে আমরা প্রায় ১০ কোটি ভুয়ো সুবিধাপ্রাপকদের বাদ দিয়েছি। যারা না থেকেও আপনাদের কল্যাণের জন্য বরাদ্দ টাকা ব্যবহার করতো। যাঁদের মেয়ে ছিল না, তাঁরাও দেখিয়েছে বিধবা বলে এবং সেই হিসেবে সরকারের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। যে জন্মায়ইনি তাকে দেখানো হয়েছে রুগণ বলে এবং টাকা নেওয়া হয়েছে।
বন্ধুগণ,
যখন আমাদের সরকার দরিদ্র কল্যাণে অগ্রাধিকার দিয়েছে এবং তাঁদের ভালোর জন্য একাধিক কর্মসূচি শুরু করেছে তার ফলাফল চোখের সামনেই দেখা যাচ্ছে। আমাদের সরকারের ৯ বছরে ২৫ কোটি মানুষ দারিদ্রমুক্ত হয়েছেন। এটা কোনো ছোটো সংখ্যা নয়, এটা ১০ বছরের নিষ্ঠার ফলাফল। গরিব মানুষের জীবনকে উন্নত করতে একনিষ্ঠতার ফলাফল। যখন আপনি সৎ উদ্দেশ্য নিয়ে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করবেন, তখন আপনার চোখের সামনে ফলাফল দেখতে পাবেন। এটা আমার সহ নাগরিকদের মনে আস্থা তৈরি করেছে, যে তাঁরা দারিদ্রকে হারাতে পারে।
বন্ধুগণ,
২৫ কোটি মানুষের দারিদ্রমুক্তির সাফল্য এই দেশের মানুষের জন্য একটা বড় প্রাপ্তি। আমি সবসময় বলেছি যে, যদি দরিদ্র মানুষকে অর্থ এবং কাজ করার সুবিধা দেওয়া যায় তাহলে দারিদ্রমুক্ত হওয়ার শক্তি আছে তাঁদের। সেই কারণে আমরা সবরকম সুবিধা দিয়েছি, অর্থ দিয়েছি এবং দেশের দরিদ্র মানুষের সবরকম উদ্বেগ দূর করতে সততার সঙ্গে চেষ্টা করেছি। একটা সময় ছিল যখন, গরিবের দৈনিক দুবেলা খাবার জোটানোই মুশকিল ছিল। আজ আমাদের সরকার দেশের গরিব মানুষকে অনেক চিন্তা থেকে মুক্তি দিয়েছে, বিনামূল্যে রেশন দিয়ে। যাতে কাউকে না বলতে হয় যে সে একবেলা খেয়ে থাকে।
করোনা ভাইরাসের সময়ে যে কর্মসূচি শুরু হয়েছিল, তা আরও ৫ বছরের জন্য বাড়ানো হয়েছে। আমি দেশের নাগরিকদের আশ্বস্ত করতে চাই, আমি খুশি যে ২৫ কোটি মানুষ দারিদ্র মুক্ত হয়েছেন। আমি এও জানি যে, যাঁরা দারিদ্রমুক্ত হয়েছেন তাঁদের আগামী ৫ বছরে সাহায্য করা প্রয়োজন। যাতে তাঁরা আবার দরিদ্র না হয়ে যান এবং অসুবিধায় না পড়েন। সেইজন্য চলতি কর্মসূচির সুবিধাগুলি তাঁদের কাছে পৌঁছতেই থাকবে, প্রকৃত পক্ষে আমার ইচ্ছে তাঁদের আরও কিছু দেওয়ার। কারণ, সাহসের সঙ্গে আমার সংকল্প পূরণ করতে তাঁরা আমার সহযোগী হয়েছেন। ৫০ কোটি হাত এখন আমার সঙ্গী।
এবং বন্ধুগণ,
আমরা শুধু বিনামূল্যে রেশন দিচ্ছি তাই নয়, রেশন কার্ড সংক্রান্ত সমস্যাগুলিও সমাধান করছি। পূর্বে এক জায়গায় তৈরি রেশন কার্ড অন্য রাজ্যে বৈধ হতো না। যদি কেউ কাজের জন্য অন্য রাজ্যে যেতেন সেখানে তাঁদের রেশন পেতে নানা অসুবিধার মুখোমুখি হতে হতো। আমরা “এক দেশ এক রেশন কার্ড” ব্যবস্থা চালু করেছি। এর অর্থ, একটি রেশন কার্ডই সারা দেশে কার্যকর হবে। যদি সোলাপুর থেকে একজন ব্যক্তি চেন্নাইতে যান কাজ করতে জীবিকার জন্য, তাহলে তাঁকে নতুন করে রেশন কার্ড করতে হবে না। একই রেশন কার্ডে তাঁরা চেন্নাইতে খাবার পাবেন এবং এটাই মোদীর গ্যারান্টি।
বন্ধুগণ,
প্রত্যেক গরিব মানুষকে সবসময়ে চিন্তিত থাকতে হতো, যে অসুখ হলে কিভাবে চিকিৎসা করা যাবে। কোনো গরিব পরিবারে একবার অসুখ হলে দারিদ্র থেকে মুক্তির সবরকম প্রয়াসই চুরমার হয়ে যায়। অসুস্থতার চিকিৎসায় খরচের কারণে তাঁরা আবার দারিদ্রের জালে আবদ্ধ হয়ে পড়েন। গোটা পরিবারটাই সঙ্কটে পড়ে যায়। এই সমস্যাটি বুঝেই আমাদের সরকার আয়ুষ্মান ভারত যোজনার সূচনা করে, ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়া হয়। আজ এই কর্মসূচি গরিব মানুষকে ১ লক্ষ কোটি টাকা পর্যন্ত খরচ থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছে।
আপনারা ভেবে নিতে পারেন যে, যদি আমি ১ লক্ষ কোটি টাকার পরিকল্পনা ঘোষণা করতাম, তা কাগজে শিরোনাম পেতো এবং ৬-৭ দিন ধরে টেলিভিশনে দেখানো হতো। কিন্তু মোদীর গ্যারান্টির শক্তি অন্যরকম। এই কর্মসূচিতে আপনাদের পকেটের ১ লক্ষ কোটি টাকা বেঁচেছে শুধু তাই নয়, অনেক জীবনও রক্ষা রেয়েছে। বর্তমানে সরকার পিএম জন ঔষধি সেন্টারে ৮০ শতাংশ ছাড়ে ওষুধ দিচ্ছে। এতেও গরিবদের ৩০ হাজার কোটি টাকা বেঁচেছে। গরিব পরিবারে নোংরা জলও অসুখের কারণ। সেইজন্য আমাদের সরকার বর্তমানে জলজীবন মিশন শুরু শুরু করেছে। প্রত্যেকটি বাড়িতে জলের সংযোগ দেওয়া হচ্ছে।
বন্ধুগণ,
এইসব কর্মসূচির বেশিরভাগ সুবিধাপ্রাপকই অনগ্রসর এবং জনজাতি শ্রেণীর। একজন গরিব মানুষকে পাকা বাড়ি, শৌচাগার, বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ, জল সরবরাহ এইসব সুবিধাদান মোদীর গ্যারান্টিতে সামাজিক ন্যায়ের প্রকৃত স্বরূপ। এই সামাজিক ন্যায়ের স্বপ্ন দেখেছিলেন সন্ত রবিদাস। কবিরদাস বলেছিলেন কোনো বৈষম্য ছাড়াই সুবিধাদানের কথা। এই সামাজিক ন্যায়ের পথ দেখিয়েছিলেন জ্যোতিবা ফুলে, সাবিত্রীবাই ফুলে, এবং বাবাসাহেব আম্বেদকর।
আমার পরিবারের সদস্যগণ,
এমনকি দরিদ্রের মধ্যে দরিদ্রতম যাতে আর্থিক নিরাপত্তা পান, এটাও মোদীর গ্যারান্টি। ১০ বছর আগেও গরিব পরিবারগুলি জীবন বীমার কথা ভাবতেই পারতো না। আজ তাঁরা ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দুর্ঘটনা এবং জীবন বীমার সুবিধা পাচ্ছে। এই বীমা কর্মসূচি শুরু হওয়ার পরে ১৬ হাজার কোটি টাকার সংখ্যাটি আপনাদের খুশি করবে। বীমার মাধ্যমে এই টাকা সঙ্কটে পড়া গরিব পরিবারগুলির অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছে।
বন্ধুগণ,
ব্যাঙ্কের গ্যারান্টি দেওয়ার যাদের কিছুই নেই, তাঁদের জন্য আজ তফাত গড়ে দিয়েছে মোদীর গ্যারান্টি। এই সমাবেশে যাঁরা উপস্থিত আছেন, তাঁদের মধ্যে অনেকের ২০১৪ পর্যন্ত কোনো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ছিল না। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টই যদি না থাকে, তাহলে তাঁরা ব্যাঙ্ক থেকে কি করে ঋণ পাবেন। জনধন যোজনা শুরু করে আমাদের সরকার ৫০ কোটি গরিব মানুষকে দেশের ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত করে দিয়েছে। বর্তমানে পিএম স্বনিধি কর্মসূচির ১০ হাজার সুবিধাপ্রাপকও ব্যাঙ্কের সাহায্য পাচ্ছে এবং আমারও এখানে কিছু টোকেন দেওয়ার সুযোগ হয়েছে।
দেশে বিভিন্ন জায়গায় ঠেলা গাড়ি বা ফুটপাথে সব্জি, দুধ, খবরের কাগজ, খেলনা, ফুল বেচেন এরকম লক্ষ লক্ষ মানুষের জন্য আগে কেউ ভাবেনি। যাঁদের জন্য কেউ ভাবেনি, মোদী তাঁদের সম্মান দিয়েছে। বর্তমানে এই প্রথম মোদী তাঁদের ভার নিয়েছেন, এগিয়ে এসেছেন তাঁদের সাহায্য করতে। পূর্বে এইসব সাথীরা বাজার থেকে চড়া সুদে ধার করতেন, কেননা, ব্যাঙ্কে গ্যারান্টি দেওয়ার জন্য তাঁদের কিছু ছিল না। মোদী তাদের গ্যারান্টি নিয়েছেন... আমি ব্যাঙ্কগুলিকে বলেছি, এটা আমার গ্যারান্টি, ওদের অর্থ দিন, এই গরিব মানুষরা ঠিক শোধ করে দেবে... আমি গরিব মানুষকে বিশ্বাস করি এবং বর্তমানে এই পথ বিক্রেতারা কোনো গ্যারান্টি ছাড়াই ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পাচ্ছেন। এপর্যন্ত এইসব সাথীরা কয়েক হাজার কোটি টাকার সাহায্য পেয়েছেন।
আমার পরিবারের সদস্যরা,
সোলাপুর একটি শিল্প শহর, কঠোর পরিশ্রমী শ্রমিক ভাই বোনেদের শহর। এখানে আমার সাথীরা নির্মাণকাজ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। সোলাপুর দেশে এবং বিশ্বে বস্ত্র শিল্পের জন্য খ্যাত। সোলাপুর চাদর সম্পর্কে কে না জানে? দেশের ইউনিফর্ম তৈরির সবচেয়ে বড় এমএসএমই গুচ্ছ সোলাপুরে। আমাকে বলা হয়েছে, বিদেশ থেকেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় ইউনিফর্ম তৈরির বরাত আসে।
বন্ধুগণ,
এখানে কাপড় সেলাইয়ের কাজ কয়েক প্রজন্ম ধরে চলে আসছে। প্রজন্মের বদল ঘটেছে, ফ্যাশনের বদল ঘটেছে। কিন্তু যাঁরা কাপড় সেলাই করেন সেইসব সাথীদের কথা কেউ কি ভেবেছেন? আমি তাঁদের আমার বিশ্বকর্মা সাথী বলে মনে করি। এইসব কারুশিল্পীদের জীবনে পরিবর্তন আনতে আমরা পিএম বিশ্বকর্মা যোজনা তৈরি করেছি। আপনারা আমার জ্যাকেট দেখে থাকবেন, এর মধ্যে অনেক জ্যাকেটই সোলাপুরের এক সাথী তৈরি করেছেন। আমি নেবো না বললেও তিনি আমাকে পাঠিয়ে যান। একবার আমি তাঁকে ফোনে বকেছি। “ভাই আমাকে আর পাঠিও না”। তিনি উত্তর দিলেন “না স্যার, আপনার জন্যই আমি সাফল্যের মুই দেখেছি। বস্তুত আমি এটা আপনার কাছে নিয়ে আসছি”।
বন্ধুগণ,
বিশ্বকর্মা যোজনায় এইসব সাথীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, আধুনিক উপকরণ দেওয়া হচ্ছে, তাঁদের কাজের পরিধি বাড়াতে গ্যারান্টি ছাড়াই ব্যাঙ্ক থেকে লক্ষ লক্ষ টাকার ঋণ পাচ্ছেন, সেই জন্য আমি সোলাপুরের বিশ্বকর্মা সাথীদের বলতে চাই, দ্রুত এই কর্মসূচিতে যুক্ত হোন। বর্তমানে বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা প্রত্যেকটি গ্রামে পৌঁছচ্ছে। মোদীর গ্যারান্টি দেওয়া গাড়ি এই যাত্রার সঙ্গে থাকছে। এর মাধ্যমে আপনারা পিএম বিশ্বকর্মা সহ প্রত্যেকটি সরকারি কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত হতে পারেন।
আমার পরিবারের সদস্যরা,
‘বিকশিত ভারত’-এর জন্য আত্মনির্ভর ভারত গড়া প্রয়োজন। ‘আত্মনির্ভর ভারত’-এর জন্য আমাদের ক্ষুদ্র, মাঝারি এবং কুটির শিল্পের সক্রিয় অংশগ্রহণ জরুরি। সেই জন্য কেন্দ্রীয় সরকার লাগাতার এমএসএমইগুলিকে সহায়তা করছে এবং তাদের প্রসার ঘটাচ্ছে। কোভিড ১৯ অতিমারির সঙ্কটপূর্ণ সময়ে যখন এমএসএমইগুলি বিপদের সম্মুখীন হয়েছিল, সরকার কয়েক লক্ষ কোটি টাকার সহায়তা দিয়েছিল তাদের। এতে ক্ষুদ্র শিল্পগুলিতে ব্যাপকহারে কর্মহীনতা রোধ করা গেছিল।
বর্তমানে সরকার দেশে প্রতিটি জেলায় ‘এক জেলা এক পণ্য’ কর্মসূচি শুরু করেছে। আমাদের ছোট শিল্পগুলির জন্য ‘ভোকাল ফর লোকাল’ অভিযান সচেতনতা গড়ে তুলছে। সারা বিশ্বে যেভাবে ভারতের প্রভাব বাড়ছে, তাতে ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’-র সম্ভাবনাও বাড়ছে। সোলাপুরের মানুষ কেন্দ্রীয় সরকারের এইসব অভিযান থেকে সুবিধা পাচ্ছেন এবং স্থানীয় শিল্পে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
আমার পরিবারের সদস্যরা,
আমাদের কেন্দ্রীয় সরকারের তৃতীয় দফায় বিশ্বে শীর্থ তিনটি অর্থনীতির একটি হতে চলেছে ভারত। আমি নাগরিকদের আশ্বস্ত করতে চাই, যে আমার আগামী সরকারে আমি বিশ্বে ভারতকে শীর্ষ তিনটি দেশের মধ্যে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে কাজ করবো, এই গ্যারান্টি দিয়েছেন মোদী এবং আমি বিশ্বাস করি যে আপনাদের সমর্থনে আমার গ্যারান্টি পূরণ হবে। আপনাদের আশীর্বাদ এর শক্তি। মহারাষ্ট্রের সোলাপুরের মতো শহরগুলির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে অর্থনীতির প্রসারে।
ডাবল ইঞ্জিন সরকার লাগাতার কাজ করছে এইসব শহরগুলিতে জল এবং নিকাশীর মতো সুবিধাগুলির উন্নতি করতে। শহরগুলিকে আরও ভালো সড়ক, রেল পথ এবং আকাশ পথে যুক্ত করতে দ্রুত গতিতে কাজ চলছে। সে সন্ত দ্যানেশ্বর মহারাজ পালকি মার্গ অথবা সন্ত তুকারাম পালকি মার্গ হোক এইসব রাস্তায় দ্রুত গতিতে উন্নয়ন কাজ চলছে। রত্নগিরি, কোলাপুর এবং সোলাপুরের মতো চার লেনের রাস্তা তৈরির কাজ শীঘ্রই শেষ হবে। আপনারা আমার পরিবারের সদস্যরা সকলে এই সব উন্নয়নের উদ্যোগের জন্য আশীর্বাদ করেছেন।
আপনাদের আশীর্বাদ এভাবেই বর্ষিত হোক, এবং এই বিশ্বাস নিয়ে আমি সেইসব সাথীদের অভিনন্দন জানাই, যাঁরা আজ তাঁদের নিজস্ব পাকা বাড়ি পেলেন। দুই হাত তুলে আমার সঙ্গে বলুন:
“ভারত মাতা কি জয়”- এই আওয়াজ যেন মহারাষ্ট্রের সব জায়গায় পৌঁছয়।
ভারত মাতা কি – জয়
ভারত মাতা কি – জয়
ভারত মাতা কি – জয়
দেশের প্রত্যেকটি গরিব মানুষের মনে নতুন আস্থা স্থাপনের শক্তি আছে আপনাদের আওয়াজে।
অনেক ধন্যবাদ।