“সময় বেঁধে নির্বাহের কাজ এবং কর্মসূচি রূপায়ণের প্রেক্ষাপট থেকে বাজেট পরবর্তী বিশ্লেষণ ধর্মী বুদ্ধিচর্চা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। করদাতাদের দেয় অর্থের যথাযথ রূপায়ণ তাতে সুনিশ্চিত হয়”
“গন্তব্যে উপনীত হওয়া সম্পর্কে আমাদের লক্ষ্য আরও সহজে কী সম্পন্ন করতেই সুশাসনের ওপর আমরা অধিক গুরুত্ব দিচ্ছি”
“শেষতম দূরত্বে পৌঁছানোর অভিমুখ এবং সম্পৃক্তির নীতি পরস্পরের পরিপূরক”
“আমাদের লক্ষ্য যখন সকলের কাছে পৌঁছানো তখন বৈষম্য এবং দুর্নীতির কোনো জায়গা নেই”
“গ্রামাঞ্চল এবং আদিবাসীদের উন্নয়নের স্বার্থে শেষ সীমায় পৌঁছানোর মন্ত্রে এ বছরের বাজেট বিশেষ নজর দিয়েছে”
“এই প্রথমবার আমাদের দেশে আদিবাসী সমাজের বিপুল সম্ভাবনার ভান্ডারের সদ্ব্যবহারের বিরাট উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে”
“আদিবাসী সমাজে সব থেকে অবহেলিত শ্রেণীর কাছে দ্রুত সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার বিশেষ লক্ষ্যকে সামনে রেখে দেশের সার্বিক দৃষ্টিভঙ্গী গ্রহণ করা হয়েছে”
“সুবিধাভোগীর কাছে পৌঁছানোর লক্ষ্যে উচ্চাকাঙ্খী জেলা কর্মসূচি এক সফল মডেল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে”

আমাদের দেশের সংসদের বাজেটের পর এ বিষয়ের নানা দিক নিয়ে আলাপ-আলোচনার পরম্পরা রয়েছে। এটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় আর উপযোগীও। কিন্তু, আমাদের সরকার এই বাজেট নিয়ে আলোচনাকে আরেক কদম এগিয়ে নিয়ে গেছে। বিগত কয়েক বছর ধরে আমাদের সরকার বাজেট রচনার আগে একবার আর বাজেটের পর আরেকবার সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে নিবিড় আলাপ-আলোচনার নতুন পরম্পরা চালু করেছে। এই আলোচনা প্রয়োগের দিক থেকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়নের প্রেক্ষিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর ফলে, করদাতাদের কষ্টোপার্জিত প্রতিটি টাকার সঠিক ব্যবহার সুনিশ্চিত হয়। বিগত কয়েকদিন ধরে আমি ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বাজেট পরবর্তী আলোচনা করছি। আজ ‘রিচিং দ্য লাস্ট মাইল’ বা ‘প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছনো’র উদ্দেশ্য নিয়েই এই ওয়েবিনার। মহাত্মা গান্ধীজী বলতেন, আপনাদের নীতি ও প্রকল্পগুলি সমাজের শেষ সীমায় থাকা মানুষটির কাছে কত দ্রুত পৌঁছবে আর কিভাবে পৌঁছবে – এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্য আজ এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে এই আলোচনার ব্যবস্থা যাতে আমাদের বাজেট জনকল্যাণে কাজে লাগে, আমরা সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার সঙ্গে প্রত্যেক সুবিধাভোগীর কাছে একে পৌঁছে দিতে পারি।

বন্ধুগণ,

আমাদের দেশে একট পুরনো ধারণা ছিল যে, জনগণের কল্যাণ এবং দেশের উন্নয়ন শুধু টাকা খরচ করলেই হয়। আসলে তা নয়। জনগণের কল্যাণ এবং দেশের উন্নয়নের জন্য অর্থের প্রয়োজন ঠিকই রয়েছে। কিন্তু, ধন – এর পাশাপাশি মন-ও চাই। সরকারি কাজ ও প্রকল্পগুলির সাফল্যের সবচেয়ে অনিবার্য শর্ত হ’ল সুশাসন, সংবেদনশীল শাসন এবং সাধারণ মানুষের প্রতি সমর্পিত শাসন। যখন সরকারের কাজ পরিমাপযোগ্য হয়, তার প্রতিনিয়ত তদারকি হয় আর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লক্ষ্য পূরণ সুনিশ্চিত হয়, তখনই কাঙ্খিত ফলাফল পাওয়া যায়। সেজন্য আমরা সুশাসনের উপর যতটা জোর দেব, তত দ্রুত আমরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রান্তিক মানুষের কাছে সমস্ত প্রকল্পের সুফল পৌঁছে দিতে পারবো। আপনারা মনে করুন, আগে দেশের দূরদূরান্ত এলাকায় টিকাকরণ অভিযান পৌঁছতে কয়েক দশক লেগে যেত। দেশের কোটি কোটি শিশু, বিশেষ করে যারা গ্রামে বা জনজাতি এলাকায় বসবাস করে, তাদের জীবন রক্ষাকারী অনেক টিকার জন্য বহু বছর অপেক্ষা করতে হ’ত। যে কোনও টিকাকে ১০০ শতাংশ সুবিধাভোগীর কাছে পৌঁছতে কয়েক দশক লেগে যেত। আমরা নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে এই কাজ শুরু করি। মিশন ইন্দ্রধনুষের মাধ্যমে সারা দেশে টিকাকরণ প্রক্রিয়ায় সংস্কার আনি। ফলে, বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারীর সময় এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই অতিদ্রুত দেশে দূরদূরান্তে টিকাকরণ সম্ভব হয়। আমি মনে করি, সুশাসন এক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এর শক্তিই করোনা টিকাকরণকে ১০০ শতাংশ সুবিধাভোগীর কাছে পৌঁছে দেওয়ার সাফল্য এনেছে।

বন্ধুগণ,

‘রিচিং দ্য লাস্ট মাইল’ বা ‘প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছনো’র দৃষ্টিকোণ আর ১০০ শতাংশ সুবিধাভোগীর কাছে পৌঁছনোর নীতি পরস্পরের পরিপূরক। একটা সময় ছিল যখন গরীবদের বিভিন্ন পরিষেবার জন্য বিভিন্ন পর্যায়ে সরকারি অফিসে ঘুরে বেড়াতে হ’ত। অনেকে আবার দালালের মাধ্যমেও পরিষেবা পেতেন। ফলে, দুর্নীতি বাড়তো আর জনগণের অধিকারও হনন হ’ত। এখন সরকার গরীবের দরজায় গিয়ে তাঁকে পরিষেবা দিচ্ছে। যেদিন আমরা ঠিক করবো যে, প্রত্যেক মৌলিক পরিষেবা প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রত্যেক নাগরিককে কোনও রকম বৈষম্য না রেখেই পৌঁছে দেব, তবেই দেখবেন, স্থানীয় স্তরেও কর্মসংস্কৃতিতে কত বড় পরিবর্তন আসবে। সম্পৃক্ত বিন্দুতে পৌঁছনোর নীতির পেছনে এই ভাবনাই রয়েছে। যখন আমরা প্রত্যেকের কাছে পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করবো, তখন কোনও বৈষম্য, দুর্নীতি, সজন-পোষনের সুযোগই থাকবে না। তবেই আমরা ‘রিচিং দ্য লাস্ট মাইল’ বা ‘প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছনো’র লক্ষ্য পূরণ করতে পারবো। আপনারা দেখুন, আজ প্রথমবার দেশে পিএম স্বনিধি যোজনার মাধ্যমে ফুটপাতের দু’পাশে দাঁড়িয়ে থাকা হকার, ঠেলাওয়ালা এবং রেললাইনের দু-পাশে পসরা সাজানো হকাররা ব্যাঙ্কিং পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। আজ প্রথমবার দেশে বাঞ্জারা, ঘুমন্তু, অর্ধঘুমন্তু যাযাবরদের জন্য ওয়েলফেয়ার বোর্ড গড়ে উঠেছে। গ্রামে গ্রামে গড়ে ওঠা ৫ লক্ষেরও বেশি কমনসার্ভিস সেন্টার সরকারি পরিষেবাগুলিকে প্রত্যেক গ্রামের প্রান্তিক মানুষের কাছে নিয়ে গেছে। আমি গতকালই ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে বিস্তারিতভাবে বলেছি, কিভাবে দেশে ১০ কোটিরও বেশি টেলিমেডিসিন পরিষেবা বাস্তবায়িত হয়েছে। এটিও আমাদের স্বাস্থ্য নিয়ে ‘রিচিং দ্য লাস্ট মাইল’ বা ‘প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছনো’র প্রতিফলন।

বন্ধুগণ,

ভারতের জনজাতীয় এলাকা, গ্রামীণ ক্ষেত্রে প্রান্তিক মানুষের কাছে ‘রিচিং দ্য লাস্ট মাইল’ এর মন্ত্র নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য এবারের বাজেটে বিশেষ লক্ষ্য রাখা হয়েছে। জল জীবন মিশন – এর মাধ্যমে প্রত্যেকের বাড়িতে নলবাহিত জল সরবরাহ সুনিশ্চিত করতে কয়েক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ২০১৯ সাল পর্যন্ত আমাদের দেশের গ্রামীণ এলাকায় মাত্র ৩ কোটি বাড়িতে নলবাহিত জল পৌঁছে যেত। এখন এই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১১ কোটিরও বেশি। মাত্র এক বছরের মধ্যে দেশে প্রায় ৬০ হাজার অমৃত সরোবরের কাজ শুরু হয়েছে। আর আমাকে বলা হয়েছে যে, ইতিমধ্যেই ৩০ হাজারেরও বেশি অমৃত সরোবর গড়ে উঠেছে। এই অভিযান দূরদূরান্তে বসবাসকারী প্রত্যেক ভারতবাসীর জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন ঘটিয়েছে। যাঁরা অনেক দশক ধরে এ ধরনের পরিষেবার প্রতীক্ষায় ছিলেন।

কিন্তু বন্ধুগণ,

আমরা এখানেই থেমে থাকতে চাই না, আমাদের এমন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, যাতে আমরা নলবাহিত জলের নতুন সংযোগে জল ব্যবহারের নমুনা তদারকি করতে পারি। এই সমীক্ষা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। সেজন্য ‘পানী সমিতি’গুলিকে আরও কার্যকরি করে তুলতে হবে। গ্রীষ্মকাল প্রায় এসে গেছে। এখন থেকেই আমাদের ‘পানী সমিতি’গুলিকে জল সংরক্ষণের জন্য কার্যকর করে তুলতে হবে। বর্ষা আসার আগেই ‘ক্যাচ দ্য রেন’ বা ‘বৃষ্টির জল সংরক্ষন’ অভিযানের জন্য জনগণকে প্রশিক্ষিত করতে হবে।

বন্ধুগণ,

এ বছরের বাজেটে আমরা দরিদ্রদের জন্য গৃহ নির্মাণ খাতে প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছি। সকলের জন্য গৃহ – এই লক্ষ্য নিয়ে আমরা দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছি। এই গৃহ নির্মাণ যজ্ঞকে কিভাবে প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত করে কম খরচে বেশি টেকসই এবং মজবুত গৃহ নির্মাণ করতে পারি, পরিবেশ-বান্ধব শক্তি ব্যবহারের উপযোগী, যেমন – এই বাড়িগুলিতে সৌরশক্তির ব্যবহার চালু করা, গ্রুপ হাউসিং – এর নতুন মডেল গ্রাম ও শহরে কার্যকর করা – এইসব বিষয় নিয়ে নিবিড় আলাপ-আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। আপনাদের অভিজ্ঞতার নির্যাস নিয়েই এই কাজে সাফল্য আসবে।

বন্ধুগণ,

আমাদের দেশে জনজাতি সমাজের বিশাল সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে প্রথমবার দেশে এত ব্যাপক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এবারের বাজেটেও জনজাতি উন্নয়নকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। একলব্য মডেল আবাসিক বিদ্যালয়গুলিতে অধিক সংখ্যক শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই বিদ্যালয়গুলিতে নিয়মিত তদারকির মাধ্যমে ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রতিক্রিয়া জানার প্রক্রিয়া চলছে। এই ব্দ্যালয়গুলি থেকে পড়াশোনা করে ছাত্রছাত্রীরা দেশের বড় বড় শহরে কী ধরনের কাজ পাচ্ছেন, এই বিদ্যালয়গুলিতে কিভাবে অধিক সংখ্যক অটল টিঙ্কারিং ল্যাব গড়ে তোলা যায় – এইসব বিষয় নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। এই বিদ্যালয়গুলিতে যদি আমরা এখন থেকেই স্টার্টআপ – এর জন্য, ডিজিটাল মার্কেটিং – এর জন্য কর্মশালা শুরু করাতে পারি, তা হলে আমাদের দেশের জনজাতি সমাজ অনেক উপকৃত হতে পারেন। তবেই একলব্য মডেল স্কুল থেকে পাশ করে ছাত্রছাত্রীরা তাঁদের এলাকার জনজাতি উৎপাদিত পণ্যগুলিকে কিভাবে প্রমোট করবেন আর কিভাবে অনলাইন ব্র্যান্ডিং করবেন – তা নিয়ে আলোচনা করতে হবে।

বন্ধুগণ,

এই প্রথমবার আমরা জনজাতিদের মধ্যেও যাঁরা সবচেয়ে বঞ্চিত, তাঁদের জন্য একটি বিশেষ অভিযান শুরু করেছি। দেশের ২০০টিরও বেশি জেলায় ২২ হাজারেরও বেশি গ্রামে জনজাতি ভাই-বোনদের দ্রুত পরিষেবা পৌঁছে দেবো। তেমনই, আমাদের সংখ্যালঘু সমাজে বিশেষ করে আমাদের মুসলমান সমাজের অন্তর্গত পশমন্দা সমাজে দ্রুত পরিষেবা পৌঁছে দেব, যাঁরা স্বাধীনতার এত বছর পরেও অনেক পেছনে রয়ে গেছে। এবারের বাজেটে তাঁদেরকে সম্পূর্ণ শৃঙ্খল মুক্ত করার লক্ষ্য রাখা হয়েছে। সেজন্য ‘রিচিং দ্য লাস্ট মাইল’ বা ‘প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছনো’র মনোভাবের প্রয়োজন। স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্ট সকলকে দ্রুতগতিতে কাজ করতে হবে।

বন্ধুগণ,

আমাদের উচ্চাকাঙ্খী জেলা প্রকল্পও এই ‘রিচিং দ্য লাস্ট মাইল’ বা ‘প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছনো’র ক্ষেত্রে একটি সাফল্যের মডেল হয়ে উঠেছে। সেই দৃষ্টিকোণ থেকেই এখন দেশের ৫০০টি পিছিয়ে থাকা ব্লককে নিয়ে উচ্চাকাঙ্খী ব্লক প্রকল্পও শুরু করা হচ্ছে। এই উচ্চাকাঙ্খী ব্লক প্রকল্পের জন্য আমাদের সমস্ত তুলনামূলক মাপদন্ডের কথা মাথায় রেখে সেভাবেই কাজ করতে হবে। যেভাবে আমরা উচ্চাকাঙ্খী জেলা প্রকল্পের ক্ষেত্রে করেছিলাম। আমাদের প্রতিটি উচ্চাকাঙ্খী ব্লকের মধ্যে প্রতিযোগিতার আবহ গড়ে তুলতে হবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এই ওয়েবিনার থেকে ‘রিচিং দ্য লাস্ট মাইল’ বা ‘প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছনো’ সংক্রান্ত নতুন নতুন ভাবনা ও পরামর্শ উঠে আসবে। এই মন্থন থেকে উঠে আসা অমৃত দূরদূরান্তের মানুষের কাছে সমস্ত পরিষেবা দ্রুত পৌঁছে দিতে সহায়ক হবে। আমাদের ভবিষ্যতের জন্য ভাবতে হবে, বাস্তবায়নে জোর দিতে হবে আর প্রযুক্তির সর্বাধিক প্রয়োগের মাধ্যমে স্বচ্ছতা সুনিশ্চিত করতে হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রত্যেকেই যথাযথ পরিষেবা পাবেন - যেদিন প্রত্যেক গরীবের মনে এই বিশ্বাস জন্মাবে, সেদিন থেকে তাঁরা প্রত্যেকেই দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমাদের সৈনিক হয়ে উঠবেন। আমাদের তাঁদের মনে দারিদ্র্যকে পরাস্ত করার শক্তি যোগাতে হবে। প্রত্যেক গরীবকে এই সংকল্প নিতে হবে যে, এখন আমি আর গরীব থাকবো না। আমার পরিবারকে দারিদ্র্য থেকে মুক্ত করতে হবে। সরকার আমার হাত ধরছে – আমি এগিয়ে যাব। আমাদের এমন আবহই গড়ে তুলতে হবে। সেজন্য আপনাদের মতো সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকের কাছে আমি সহযোগিতা প্রত্যাশা করি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, আজকের এই ওয়েবিনার ‘সর্বজন হিতায়, সর্বজন সুখায়’ – এই মন্ত্রের বাস্তবায়নে সংকল্প নিয়ে লক্ষ্য পূরণের কারণ হয়ে উঠবে। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের সকলকে অনেক অনেক শুভকামনা। অনেক অনেক ধন্যবাদ।

 

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
India will have more than 270 mn 5G subs by 2024-end, 970 mn by 2030: Ericsson

Media Coverage

India will have more than 270 mn 5G subs by 2024-end, 970 mn by 2030: Ericsson
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
Text of PM’s address at the Constitution Day celebrations at Supreme Court
November 26, 2024
PM releases the Annual Report of the Indian Judiciary 2023-24
Our constitution is not merely a Book of Law, its a continuously ever- flowing, living stream: PM
Our Constitution is the guide to our present and our future: PM
Today every citizen has only one goal ,to build a Viksit Bharat: PM
A new judicial code has been implemented to ensure speedy justice, The punishment based system has now changed into a justice based system: PM

भारत के मुख्य न्यायधीश जस्टिस संजीव खन्ना जी, जस्टिस बीआर गवई जी, जस्टिस सूर्यकांत जी, केंद्रीय मंत्रिमंडल के मेरे साथी श्रीमान अर्जुन राम मेघवाल जी, अटॉर्नी जनरल श्री वेंकटरमानी जी, बार काउंसिल के अध्यक्ष मनन कुमार मिश्र जी, सुप्रीम कोर्ट बार एसोसिएशन के अध्यक्ष श्री कपिल सिब्बल जी, सुप्रीम कोर्ट के न्यायमूर्ति गण, पूर्व मुख्य न्यायधीश गण, उपस्थित अन्य महानुभाव, देवियों और सज्जनों।

आपको, सभी देशवासियों को संविधान दिवस की बहुत-बहुत शुभकामनाएं। भारत के संविधान का ये 75वां साल, पूरे देश के लिए एक असीम गौरव का विषय है। मैं आज भारत के संविधान को, संविधान सभा के सभी सदस्यों को आदरपूर्वक नमन करता हूं।

साथियों,

हम लोकतंत्र के इस महत्वपूर्ण पर्व का जो स्मरण कर रहे हैं, उस समय ये भी नहीं भूल सकते कि आज मुंबई में हुए आतंकी हमले की भी बरसी है। इस हमले में जिन व्यक्तियों का निधन हुआ, उन्हें मैं अपनी श्रद्धांजलि देता हूं। मैं देश को ये संकल्प भी दोहराता हूं कि भारत के सुरक्षा को चुनौती देने वाले हर आतंकी संगठन को मुंहतोड़ जवाब दिया जाएगा।

साथियों,

संविधान सभा की लंबी बहस के दौरान भारत के गणतांत्रिक भविष्य पर गंभीर चर्चाएं हुई थी। आप सभी उस डिबेट से भली-भांति परिचित हैं। और तब बाबा साहेब आंबेडकर ने कहा था- Constitution is not a mere lawyers’ document…its spirit is always the spirit of Age. जिस स्पिरिट की बात बाबा साहेब कहते थे, वो बहुत ही अहम है। देश-काल-परिस्थिति के हिसाब से उचित निर्णय लेकर हम संविधान की समय-समय पर व्याख्या कर सकें, ये प्रावधान हमारे संविधान निर्माताओं ने हमें दिया है। हमारे संविधान निर्माता ये जानते थे कि भारत की आकांक्षाएं, भारत के सपने समय के साथ नई ऊंचाई पर पहुंचेंगे, वो जानते थे कि आज़ाद भारत की और भारत के नागरिकों की ज़रूरतें बदलेंगी, चुनौतियां बदलेंगी। इसलिए उन्होंने हमारे संविधान को महज़ कानून की एक किताब बनाकर नहीं छोड़ा...बल्कि इसको एक जीवंत, निरंतर प्रवाहमान धारा बनाया।

साथियों,

हमारा संविधान, हमारे वर्तमान और हमारे भविष्य का मार्गदर्शक है। बीते 75 वर्षों में देश के सामने जो भी चुनौतियां आई हैं, हमारे संविधान ने हर उस चुनौती का समाधान करने के लिए उचित मार्ग दिखाया है। इसी कालखंड में आपातकाल जैसा समय भी आया...और हमारे संविधान ने लोकतंत्र के सामने आई इस चुनौती का भी सामना किया। हमारा संविधान देश की हर जरूरत, हर अपेक्षा पर खरा उतरा है। संविधान से मिली इस शक्ति की वजह से ही...आज जम्मू-कश्मीर में भी बाबा साहेब का संविधान पूरी तरह लागू हुआ है। आज वहां पहली बार संविधान दिवस मनाया गया है।

साथियों,

आज भारत, परिवर्तन के इतने बड़े दौर से गुजर रहा है, ऐसे अहम समय में भारत का संविधान ही हमें रास्ता दिखा रहा है, हमारे लिए गाइडिंग लाइट बना हुआ है।

साथियों,

भारत के भविष्य का मार्ग अब बड़े सपनों, बड़े संकल्पों की सिद्धि का है। आज हर देशवासी का एक ही ध्येय है- विकसित भारत का निर्माण। विकसित भारत का मतलब है, जहां देश के हर नागरिक को एक quality of life मिल सके, dignity of life मिल सके। ये सामाजिक न्याय, सोशल जस्टिस का भी बहुत बड़ा माध्यम है। और ये संविधान की भी भावना है। इसलिए, बीते वर्षों में, देश में लोगों के बीच आर्थिक और सामाजिक समानता लाने के लिए कई कदम उठाए गए हैं। बीते 10 वर्षों में 53 करोड़ से ज्यादा ऐसे भारतीयों का बैंक खाता खुला है...जो बैंक के दरवाजे तक नहीं पहुंच पाते थे। बीते 10 वर्षों में 4 करोड़ ऐसे भारतीयों को पक्का घर मिला है, जो कई-कई पीढ़ियों से बेघर थे, बीते 10 वर्षों में 10 करोड़ से ज्यादा ऐसी महिलाओं को मुफ्त गैस कनेक्शन मिला है, जो बरसों से अपने घर में गैस पहुंचने का इंतजार कर रही थीं। हमें आज के जीवन में बहुत आसान लगता है कि घर में नल खोला और पानी आ गया। लेकिन देश में आजादी के 75 साल बाद भी सिर्फ 3 करोड़ घर ही ऐसे थे, जिनमें नल से जल आता था। करोड़ों लोग तब भी अपने घर में नल से जल का इंतजार कर रहे थे। मुझे संतोष है कि हमारी सरकार ने 5-6 साल में 12 करोड़ से ज्यादा घरों को नल से जल देकर नागरिकों का और विशेषकर महिलाओं का जीवन आसान बनाया है, संविधान की भावना को सशक्त किया है।

साथियों,

आप सभी जानते हैं कि हमारे संविधान की मूल प्रति में प्रभु श्रीराम, माता सीता, हनुमान जी, भगवान बुद्ध, भगवान महावीर, गुरू गोविंद सिंह जी...सभी के चित्र हैं। भारत की संस्कृति के प्रतीक...इन चित्रों को संविधान में इसलिए स्थान दिया गया ताकि वो हमें मानवीय मूल्यों के प्रति सजग करते रहें। ये मानवीय मूल्य...आज के भारत की नीतियों और निर्णयों का आधार हैं। भारतीयों को त्वरित न्याय मिले, इसके लिए नई न्याय संहिता लागू की गई है। दंड आधारित व्यवस्था अब न्याय आधारित व्यवस्था में बदल चुकी है। महिलाओं की राजनीतिक भागीदारी बढ़ाने के लिए नारी शक्ति वंदन अधिनियम का ऐतिहासिक निर्णय हुआ है। हमने third gender को उनकी पहचान और उनका हक दिलाने के लिए भी कदम उठाए हैं। हमने दिव्यांगजनों के जीवन को आसान बनाने के लिए भी व्यवस्थाएं बनाईं हैं।

साथियों,

आज देश का बहुत ज्यादा जोर, देश के नागरिकों की Ease of Living पर है। एक समय था जब पेंशन पाने वाले सीनियर सीटिजन्स को बैंक में जाकर साबित करना होता था कि वो जीवित हैं। आज सीनियर सिटीज़न्स को घर बैठे ही डिजिटल लाइफ सर्टिफिकेट्स की सुविधा मिल रही है। करीब-करीब डेढ़ करोड़ सीनियर सीटिजन्स अब तक इस सुविधा का लाभ उठा चुके हैं। आज भारत वो देश है जो हर गरीब परिवार को 5 लाख रुपए तक के मुफ्त इलाज की सुविधा देता है। आज भारत वो देश है, जो 70 वर्ष से ऊपर के हर बुजुर्ग को फ्री हेल्थकेयर की सुविधा देता है। देश के हजारों जनऔषधि केंद्रों पर आज 80 परसेंट डिस्काउंट पर सस्ती दवाइयां मिल रही हैं। एक समय में हमारे देश में इम्यूनाइजेशन की कवरेज भी 60 परसेंट से भी कम थी। करोड़ों बच्चे हर साल टीकाकरण से छूट जाते थे। आज मुझे संतोष है कि अब मिशन इंद्रधनुष की वजह से भारत में इम्यूनाइजेशन की कवरेज शत प्रतिशत पहुंच रही है। आज दूर-सुदूर के गांवों में भी समय पर बच्चों का टीकाकरण हो पा रहा है। इन प्रयासों ने गरीबों की, मध्यम वर्ग की बहुत बड़ी चिंता कम की है।

साथियों,

आज देश में कैसे काम हो रहा है...इसका एक उदाहरण Aspirational District अभियान भी है। देश के 100 से अधिक ऐसे जिले जिन्हें पिछड़ा कहा जाता था...हमने उन्हें Aspirational District माना और वहां हर पैरामीटर में विकास की गति तेज़ की गई है। आज देश के अनेक Aspirational Districts, दूसरे जिलों से बहुत बेहतर कर रहे हैं। अब इसी मॉडल के आधार पर हमने aspirational block program भी शुरु किया है।

साथियों,

लोगों की रोजमर्रा की जिंदगी से परेशानियां खत्म करने पर भी आज देश का बहुत ज्यादा जोर है। कुछ साल पहले तक भारत में ढाई करोड़ घर ऐसे थे, जो शाम होते ही अंधेरे में डूब जाते थे, उन घरों में बिजली कनेक्शन ही नहीं था। सबको बिजली का मुफ्त कनेक्शन देकर, देश ने उनके जीवन को रोशन कर दिया है। बीते वर्षों में दूर-सुदूर इलाकों में भी हजारों की संख्या में मोबाइल टावर्स लगाए गए हैं...ताकि लोगों को 4G/5G कनेक्टिविटी मिलती रहे। पहले कभी आप अंडमान या लक्ष्यद्वीप जाते थे तो वहां ब्रॉडबैंड कनेक्टिविटी नहीं मिलती थी। आज अंडरवॉटर ऑप्टिकल फाइबर ने ऐसे द्वीपों तक भी अच्छी स्पीड वाला इंटरनेट पहुंचा दिया है। हमारे यहां गांव के घरों, गांव की ज़मीन से जुड़े कितने विवाद होते रहे हैं...ये भी हम भली-भांति जानते हैं। पूरी दुनिया में विकसित देशों के सामने भी लैंड रिकॉर्ड एक बहुत बड़ा चैलेंज रहा है। लेकिन आज का भारत, इसमें भी लीड ले रहा है। पीएम स्वामित्व योजना के तहत, आज गांव के घरों की ड्रोन मैपिंग की जा रही है और लीगल डॉक्यूमेंट इश्यू किए जा रहे हैं।

साथियों,

देश के विकास के लिए आधुनिक इंफ्रास्ट्रक्चर का तेज निर्माण भी उतना ही जरूरी है। इंफ्रास्ट्रक्चर के प्रोजेक्ट्स समय पर पूरे होने से देश का धन भी बचता है...और प्रोजेक्ट भी, उसकी उपयोगिता भी बहुत बढ़ जाती है। इसी सोच के साथ प्रगति नाम से एक प्लेटफॉर्म बनाया गया है जिसमें इंफ्रा प्रोजेक्ट्स का रेगुलर रिव्यू होता है। और इनमें से कुछ प्रोजेक्ट्स तो ऐसे थे जो 30-30, 40-40 साल से पेंडिंग थे। मैं खुद इसकी मीटिंग्स को चेयर करता हूं। आपको जानकर अच्छा लगेगा कि अभी तक 18 लाख करोड़ रुपए के ऐसे प्रोजेक्ट्स को रिव्यू करके, उनके सामने की अड़चनों को दूर किया जा चुका है। समय पर पूरे हो रहे प्रोजेक्ट्स लोगों के जीवन पर बहुत सकारात्मक प्रभाव डाल रहे हैं। देश में हो रहे ये प्रयास...देश की प्रगति को भी गति दे रहे हैं और संविधान की मूल भावना को भी सशक्त कर रहे हैं।

साथियों,

मैं अपनी बात डॉक्टर राजेंद्र प्रसाद जी के शब्दों के साथ समाप्त करना चाहूंगा...26 नवंबर...आज के ही दिन 1949 में संविधान सभा में अपने समापन भाषण में डॉक्टर राजेंद्र प्रसाद जी ने कहा था...“भारत को आज ईमानदार लोगों के एक समूह से ज्यादा कुछ नहीं चाहिए जो अपने हितों से आगे देश का हित रखेंगे। नेशन फर्स्ट, राष्ट्र सर्वप्रथम की यही भावना भारत के संविधान को आने वाली कई-कई सदियों तक जीवंत बनाए रखेगी। मैं, संविधान ने मुझे जो काम दिया है, मैंने उसी मर्यादा में रहने का प्रयास किया है, मैंने कोई encroachment की कोशिश नहीं की है। क्योंकि संविधान ने मुझे वो काम कहा इसलिए मैंने अपनी मर्यादाओं को संभालते हुए अपनी बात को रखा है। यहां तो इशारा ही चल रहा होता है ज्यादा कुछ कहने की जरूरत नहीं होती है।

बहुत-बहुत धन्यवाद।