“পর্যটনকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিতে আমাদের নির্দিষ্ট গন্ডীর বাইরে বেরিয়ে চিন্তা করতে হবে ও সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে”
“পর্যটন কেবলমাত্র উচ্চবিত্তদের দিশা নির্দেশকারী কোনো পোশাকী শব্দ নয়”
“এ বছরের বাজেটে পর্যটন ক্ষেত্রগুলির সামগ্রিক বিকাশে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে”
“প্রতিটি পর্যটন ক্ষেত্র নিজেদের রাজস্ব অর্জন মডেল গড়ে তুলতে পারে”
“আমাদের গ্রামগুলি এখন পরিকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হচ্ছে”
“এ বছর জানুয়ারি মাসে ৮ লক্ষ বিদেশী পর্যটক ভারতে এসেছেন”
২০২৩ সালের কেন্দ্রীয় বাজেটে ঘোষিত প্রকল্পগুলির যথাযথ রূপায়ণের জন্য পরামর্শ চেয়ে সরকারের তরফে যে ১২টি বাজেট পরবর্তী ওয়েবিনারের আয়োজন করা হয়েছে এটি তার মধ্যে সপ্তম।
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ‘মিশন মোডে পর্যটন ক্ষেত্রে উন্নয়ন’ শীর্ষক এক বাজেট পরবর্তী ওয়েবিনারে ভাষণ দেন।
এখনও পর্যন্ত যে বাজেট পরবর্তী ওয়েবিনারগুলি হয়েছে তাতে উঠে আসা পরামর্শগুলি সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
এ থেকে প্রমানিত হয় নাগরিক সুবিধা, ডিজিটাল যোগাযোগ ব্যবস্থা, হাসপাতাল, ভালো হোটেল এবং অন্যান্য পরিকাঠামোর উন্নতি হলে ভারতে পর্যটন ক্ষেত্র ক্রমশ প্রসারিত হবে।

নমস্কার!

এই ওয়েবিনারে উপস্থিত থাকা সকল গণ্যমান্য ব্যক্তিকে জানাই স্বাগত। বর্তমানে নতুন ভারত এক নতুন কর্মসংস্কৃতির সঙ্গে সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে। এ বছরের বাজেট দেশের জনগণের কাছ থেকে যথেষ্ঠ প্রশংসা পেয়েছে। জনগণ একে সদর্থকভাবে গ্রহণ করেছেন। পুরনো কর্মসংস্কৃতির সময়ে এ ধরণের বাজেট পরবর্তী ওয়েবিনারের কথা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। কিন্তু বর্তমানে আমাদের সরকার বাজেট পেশ করার আগে এবং পরে সকলের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করে। এই ওয়েবিনারগুলি বাজেট প্রস্তাবের সর্বোচ্চ ফলাফল লাভের জন্য বিশেষ কার্যকর। আপনারা জানেন সরকারের প্রধান হিসেবে আমার কাজ করার ২০ বছরের বেশি অভিজ্ঞতা রয়েছে। এই অভিজ্ঞতার পরিপ্রেক্ষিতে আমি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই যাতে কাঙ্খিত ফলাফল লাভ করা যায় সেজন্য নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে সব অংশীদারদের সামিল করি। আমরা দেখেছি বিগত কয়েক দিনে হাজার হাজার মানুষ এই ওয়েবিনারগুলিতে যোগ দিয়েছেন। প্রত্যেকেই সারাদিন চিন্তাভাবনা করে তাদের পরামর্শ দিয়েছেন। আমি বলতে পারি ভবিষ্যতের জন্য এই পরামর্শ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রত্যেকেই বাজেটের দিকে লক্ষ্য রেখে কীভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া যায় তার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন। আজ আমরা দেশের পর্যটন ক্ষেত্রে কী করে পরিবর্তন ঘটানো যায় সে বিষয়ে ওয়েবিনারের আয়োজন করেছি। 

বন্ধুগণ,

ভারতের পর্যটন ক্ষেত্রকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিতে আমাদের নির্দিষ্ট গন্ডীর বাইরে বেরিয়ে চিন্তা করতে হবে এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। কোনো পর্যটন ক্ষেত্র গড়ে তোলার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় চিন্তাভাবনা করা প্রয়োজন। ওই জায়গাটির গুরুত্ব কতটা? সেই জায়গার যাতায়াত সহজ করতে কী ধরণের পরিকাঠামো প্রয়োজন? সামগ্রিকভাবে পর্যটন ক্ষেত্রের প্রসারে আমরা আর কী কী উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারি? ভবিষ্যতের পথদিশা তৈরি করতে এই প্রশ্নগুলির জবাব আপনাদের অনেকাংশেই সাহায্য করবে। আমাদের দেশে পর্যটনের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। উপকূল অঞ্চলের পর্যটন, সমুদ্রতট পর্যটন, ম্যানগ্রোভ অঞ্চলের পর্যটন, হিমালয় অঞ্চলে পর্যটন, দুঃসাহসিক অভিযানমূলক পর্যটন, ধর্মীয় পর্যটন, ঐতিহ্যবাহী পর্যটন, বন্যপ্রাণী পর্যটন ছাড়াও বৈবাহিক পর্যটন গন্তব্য ও বিবেচনার মধ্যে রয়েছে। আপনারা জানেন, রামায়ণ সার্কিট, বুদ্ধ সার্কিট, কৃষ্ণ সার্কিট, উত্তরপূর্ব সার্কিট, গান্ধী সার্কিট ইত্যাদিও রয়েছে। আমাদের শিখ গুরুদের ঐতিহ্যবাহী তীর্থক্ষেত্রগুলিও রয়েছে। এই সবকিছুকে মাথায় রেখে আমাদের একযোগে কাজ করতে হবে। ভারতের বেশ কিছু পর্যটন গন্তব্যকে এ বছরের বাজেটে নির্বাচন করা হয়েছে। যথাযথভাবে এই পর্যটন ক্ষেত্রগুলির বিকাশের লক্ষ্য ধার্য করা হয়েছে। এই লক্ষ্যে সমস্ত অংশীদারদের কীভাবে কাজে লাগানো যায় সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা প্রয়োজন।

বন্ধুগণ,

আমরা যখন পর্যটনের বিষয়ে কথা বলি তখন অনেকেই মনে করেন এটি কেবলমাত্র একটি নান্দনিক শব্দ এবং যারা উচ্চ আয় করেন তাদের সঙ্গেই এর যোগাযোগ রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে পর্যটনের সম্ভাবনা অত্যন্ত বিস্তৃত এবং বহু প্রাচীন। বহু শতক ধরেই আমাদের দেশে যাত্রার আয়োজন করা হয়। এটি আমাদের সাংস্কৃতিক-সামাজিক জীবনযাত্রার অন্যতম অংশ। যখন কোনো বিশেষ সম্পদ বা যানবাহন ব্যবস্থা ছিল না তখন থেকেই তা চালু রয়েছে। নানা চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করেই তীর্থযাত্রীরা যাত্রা সম্পন্ন করেন। এই প্রসঙ্গে চারধাম যাত্রা, দ্বাদশ জ্যোর্তিলিঙ্গ যাত্রা বা শক্তিপীঠ যাত্রার কথা স্মরণ করা যেতে পারে। বিশ্বাস এবং আত্মার সঙ্গে জড়িত এ ধরনের নানা স্থান রয়েছে। এই যাত্রাগুলি আমাদের দেশের একতাকে আরও মজবুত করতে সাহায্য করে। অনেক বড় শহরের সামগ্রিক অর্থনীতি এ ধরনের যাত্রার ওপর নির্ভরশীল। শতাব্দী প্রাচীন যাত্রার ঐতিহ্য থাকা সত্ত্বেও এই ধরনের ক্ষেত্রগুলির মানোন্নয়নে কোনো নজর দেওয়া হয়নি। এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের। দাসত্বের বছরগুলিতে এবং তার পরে রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে স্বাধীনতার পরেও এই ক্ষেত্রগুলি উপেক্ষিত হয়েছে। 

বর্তমানে ভারতে এই পরিস্থিতির পরিবর্তন হচ্ছে। সুবিধা বাড়ার ফলে পর্যটন ক্ষেত্রগুলির প্রতি আকর্ষণ কতটা বেড়েছে আমরা তা দেখতে পাচ্ছি। পর্যটনের সংখ্যাতেও ব্যাপক বৃদ্ধি হয়েছে। বারাণসীর কাশী বিশ্বনাথ ধাম পুনর্নির্মাণের আগে বার্ষিক ৭০-৮০ লক্ষ মানুষ সেখানে যেতেন। কিন্তু কাশী বিশ্বনাথ ধাম পুনর্নির্মাণের পর এই সংখ্যা বেড়ে বার্ষিক ৭ কোটি ছাড়িয়েছে। একইভাবে পুনর্নির্মাণের আগে কেদারনাথে প্রতি বছর ৪-৫ লক্ষ মানুষ যেতেন। কিন্তু গত বছর কেদার যাত্রা করেছেন ১৫ লক্ষেরও বেশি ভক্ত। গুজরাট সম্পর্কে আমার একটি পুরনো অভিজ্ঞতা রয়েছে যা আমি আজ আপনাদের সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চাই। গুজরাটের বরদার কাছে বভাগড় নামে একটি তীর্থক্ষেত্র ছিল। ২-৫ হাজার মানুষ এটি দর্শনে যেতেন। কিন্তু পুনর্নির্মাণের পর বর্তমানে গড়ে ৮০ হাজার মানুষ এই মন্দিরে যান। সুবিধা বাড়লে পর্যটকের সংখ্যা বাড়ে এবং সেইসঙ্গে যুক্ত বাণিজ্যও বৃদ্ধি পায়। পর্যটকের সংখ্যার বৃদ্ধি মানে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়া। এই প্রসঙ্গে আমি আপনাদের স্ট্যাচু অফ ইউনিটির উদাহরণ দিতে চাই। বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু এই মূর্তিটি নির্মাণের এক বছরের মধ্যেই প্রায় ২৭ লক্ষ মানুষ তা ঘুরে দেখেছেন। এ থেকে প্রমানিত হয় নাগরিক সুবিধা, ডিজিটাল যোগাযোগ ব্যবস্থা, হাসপাতাল, ভালো হোটেল এবং অন্যান্য পরিকাঠামোর উন্নতি হলে ভারতে পর্যটন ক্ষেত্র ক্রমশ প্রসারিত হবে।

বন্ধুগণ,

আমি যখন আপনাদের সঙ্গে কথা বলছি তখন আমেদাবাদের কাঙ্কারিয়া হ্রদের কথাও বলতে চাই। এই প্রকল্পটি তৈরির আগে খুব কম সংখ্যক মানুষ সেখানে যেতেন। আমরা যে কেবলমাত্র এই হ্রদের সংস্কার করেছি তা নয়, সেখানকার খাবারের দোকানগুলিতে যারা কাজ করেন তাদের দক্ষতা বাড়ানোর দিকেও নজর দিয়েছি। আধুনিক পরিকাঠামোর পাশাপাশি আমরা সেখানে স্বচ্ছতার ওপর জোর দিয়েছি। আপনারা ভাবতে পারেন প্রবেশ মূল্য থাকা সত্ত্বেও প্রতিদিন গড়ে ১০ হাজার মানুষ সেখানে যান। একইভাবে প্রতিটি পর্যটন ক্ষেত্রেই নিজের রাজস্ব আদায় মডেল গড়ে তোলা সম্ভব।

বন্ধুগণ,

বর্তমান সময়ে আমাদের গ্রামগুলিও পর্যটনের কেন্দ্র হয়ে উঠছে। উন্নত পরিকাঠামোর জন্য আমাদের প্রান্তিক গ্রামগুলি পর্যটন মানচিত্রে উঠে আসছে। সীমান্তবর্তী গ্রামগুলিতে কেন্দ্রীয় সরকার বিশেষ প্রকল্প চালু করেছে। আমাদেরও হোম-স্টে বা ছোটখাটো হোটেল-রেস্তোরাঁর সঙ্গে যুক্ত মানুষের বাণিজ্য বাড়াতে যথা সম্ভব সাহায্য করা উচিত। 

বন্ধুগণ,

আমি আজ আপনাদের ভারত সফররত বিদেশী পর্যটকদের বিষয়ে কিছু বলতে চাই। ভারতের সম্পর্কে বিশ্ববাসীর আগ্রহ ক্রমশ বাড়ছে। ভারত সফররত বিদেশী পর্যটকদের সংখ্যাও ক্রমবর্ধমান। গত বছর জানুয়ারি মাসে মাত্র ২ লক্ষ বিদেশী পর্যটক ভারতে এসেছিলেন। কিন্তু এ বছর জানুয়ারি মাসে ৮ লক্ষের বেশি বিদেশী পর্যটক ভারতে এসেছেন। ভারত সফররত বিদেশী পর্যটকের সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়ে নজর দিতে হবে। বিদেশে বসবাসকারী মানুষের ব্যয় ক্ষমতা বেশি। তাই ভারতের প্রতি তাঁদের আরও বেশি সংখ্যায় আকর্ষিত করতে আমাদের বিশেষ কৌশল তৈরি করতে হবে। এই ধরনের পর্যটকরা খুব স্বল্প সময়ে ভারতে থাকলেও প্রচুর পরিমান অর্থ ব্যয় করেন। বর্তমানে ভারত সফররত কোনো বিদেশী পর্যটক গড়ে ১৭০০ ডলার ব্যয় করেন। আমেরিকা সফররত বিদেশী পর্যটকের ক্ষেত্রে এই পরিমাণ ২ হাজার ৫০০ ডলার এবং অস্ট্রেলিয়ার ক্ষেত্রে তা প্রায় ৫ হাজার ডলার। ভারতেরও পর্যটকদের আকর্ষিত করার নানান সম্ভাবনা রয়েছে। এ কথাকে মাথায় রেখে বিভিন্ন রাজ্যগুলির পর্যটন নীতি পরিবর্তন করা প্রয়োজন। এখন আমি আপনাদের আরও একটি উদাহরণ দেবো। সাধারণভাবে এটি বলা হয় যে একজন পর্যটক যেখানে বেশি দিন থাকেন তিনি পাখি বিলাসী হন। ভারতে নানা প্রজাতির পাখি রয়েছে। এই ধরনের পর্যটকদের কথা ভেবে আমাদের নীতি তৈরি করতে হবে।

বন্ধুগণ,

এসব প্রচেষ্টা ছাড়াও আপনাদের পর্যটন ক্ষেত্রে কিছু মূল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য কাজ করতে হবে। আমাদের দেশে পেশাদার গাইডের অভাব রয়েছে। স্থানীয় কলেজগুলিতে গাইডদের জন্য সার্টিফিকেট পাঠক্রমের ব্যবস্থা থাকা উচিত। এর ফলে প্রতিভাবান যুবক-যুবতীরা এই পেশার দিকে এগিয়ে আসবেন এবং আমরা আরও ভালো বহু ভাষায় কথা বলতে জানা গাইড পাবো। একইভাবে ডিজিটাল গাইড ব্যবস্থাও চালু করতে হবে। কোনো বিশেষ পর্যটন ক্ষেত্রে গাইডের নির্দিষ্ট পোষাক থাকা উচিত। এর ফলে মানুষ সহজেই গাইডকে চিনে নিতে পারবেন। আমাদের এ কথা মনে রাখতে হবে যে কোনো জায়গায় ভ্রমণরত পর্যটকের মনে অনেক প্রশ্ন থাকে। তারা সেগুলি সম্পর্কে তথ্য জানতে চান। এই পরিস্থিতিতে একজন গাইড তাদের সাহায্য করতে পারেন।

বন্ধুগণ,

এই ওয়েবিনারে আপনারা পর্যটন ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত সব বিষয় নিয়ে আরও গভীরভাবে আলোচনা করবেন সে বিষয়ে আমি নিশ্চিত। আলোচনা থেকে আপনারা আরও ভালো সমাধানে পৌঁছাবেন এই আশা আমার রয়েছে।

আমি আরও একটি কথা আপনাদের বলতে চাই। উদাহরণ হিসেবে প্রত্যেক রাজ্যে একটি বা দুটি অত্যন্ত ভালো পর্যটন ক্ষেত্র গড়ে তোলার দিকে নজর দিতে হবে। আমরা কী ভাবে এই কাজ শুরু করবো? প্রায় প্রতিটি বিদ্যালয়ই তাদের পড়ুয়াদের জন্য দুই বা তিন দিনের সফরের আয়োজন করে থাকে। প্রাথমিকভাবে আপনারা ভাবতে পারেন যে এ ধরনের কোনো একটি নির্দিষ্ট পর্যটন স্থলে প্রতিদিন ১০০ জন পড়ুয়া সফর করবেন। এই সংখ্যা ধীরে ধীরে বেড়ে ২০০, ৩০০ এবং শেষ পর্যন্ত প্রতি দিনে হাজারে পৌছতে পারে। যারা বিভিন্ন বিদ্যালয় থেকে আসবেন তারা স্বাভাবিকভাবেই কিছু অর্থ ব্যয় করবেন। এর ফলে ওই পর্যটন ক্ষেত্রে বসবাসকারী স্থানীয় মানুষ জল ইত্যাদির মতো দোকান খোলার উৎসাহ পাবেন। তারা যখন একবার বিপুল সংখ্যক পর্যটকের আনাগোনা দেখতে পাবেন তখন নিজেরাই আরো উৎসাহিত হবেন। উদাহরণ হিসেবে আমি বলতে পারি সব রাজ্যগুলির উত্তরপূর্ব ভারতের ৮ টি রাজ্য সফর করার পরিকল্পনা করা উচিত। প্রত্যেক রাজ্য এইজন্য ৮টি বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন করতে পারে। এই ৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা ৫-৭ দিনের জন্য উত্তরপূর্ব ভারতের একটি রাজ্য ঘুরে দেখবেন। আপনি দেখবেন এতে করে আপনার পড়ুয়াদের এই ৮ রাজ্য সম্পর্কে সামগ্রিক ধারনা হবে। 

একইভাবে বর্তমানে বিবাহ গন্তব্য অন্যতম প্রধান বাণিজ্যিক ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। পর্যটন ক্ষেত্র হিসেবে এর ভূমিকাও বিশেষ। জনগণ বিবাহ উপলক্ষে বিদেশে যান। আমরা কী আমাদের রাজ্যে এ ধরনের বিবাহ নির্ভর বিশেষ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারি না? আমি মনে করি আমাদের দেশেও এই ধরনের স্থান গড়ে তোলা উচিত যাতে করে গুজরাটের কোনো মানুষ তামিলনাড়ুকে তার বিবাহের স্থান হিসেবে বেছে নিতে পারেন। কোনো পরিবারে যদি দুটি সন্তান থাকে তাহলে তাদের একজনের বিবাহ অসমিয়া ঐতিহ্য অনুসারে, অন্য জনের বিহার পঞ্জাবি ঐতিহ্য হিসেবে হতে পারে। আপনারা ভাবতে পারছেন এই ধরনের বিবাহ পর্যটনের ক্ষেত্রে বাণিজ্যের সম্ভাবনা কতো বিস্তৃত? আমাদের দেশে উচ্চবিত্ত মানুষ বিবাহের জন্য বিদেশে যান। কিন্তু মধ্যবিত্ত ও উচ্চমধ্যবিত্ত মানুষ আমাদের দেশের বিভিন্ন স্থানকেই এ ধরনের গন্তব্য হিসেবে বেছে নিতে পারেন। আমাদের সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে এই ধরনের পরিকাঠামো তৈরি করতে হবে। গড়ে তুলতে হবে বিভিন্ন সম্মেলনের জন্য স্থান। বিশ্বের বিভিন্ন জায়গা থেকে যখন মানুষ সম্মেলনের জন্য ভারতে আসেন তখন তারা হোটেলে থাকেন। এর ফলে এই আতিথেয়তা ক্ষেত্রের উন্নতি হয়। পাশাপাশি ক্রীড়া পর্যটনও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। আপনারা দেখেছেন সম্প্রতি কাতার ফিফা বিশ্বকাপের আয়োজন করেছিল। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষ ফুটবল খেলা দেখতে কাতারে গেছেন। এর এক বিশেষ প্রভাব পড়েছে কাতারের অর্থনীতির ওপর। আমরা এই লক্ষ্যে ছোট ছোট পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারি। আমাদের পরিকাঠামো উন্নয়নের পন্থা-পদ্ধতি খুঁজে বের করতে হবে। প্রাথমিকভাবে বিপুল সংখ্যায় মানুষ নাও আসতে পারেন। কিন্তু আমাদের স্কুল-কলেজের পড়ুয়াদের বৈঠক আয়োজন করতে হবে। একবার গন্তব্যস্থল হিসেবে পরিচিতি পেলে স্বাভাবিকভাবেই মানুষ সেখানে আসবেন এবং ধীরে ধীরে সব ব্যবস্থা যথাযথভাবে তৈরি হবে।

আমাদের ভারতে কমপক্ষে এ ধরনের ৫০টি পর্যটন ক্ষেত্র গড়ে তুলতে হবে। বিভিন্ন রাজ্যের গর্বিত হওয়া উচিত যে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ তাদের রাজ্য ঘুরে দেখতে আসেন। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের পর্যটকদের আমন্ত্রণ জানানোর জন্য রাজ্যগুলির লক্ষ্য স্থির করা উচিত। পর্যটকদের সুবিধার্থে আমরা আমাদের বিদেশে অবস্থিত দূতাবাসগুলিতে পর্যটন স্থলের বিপণন সম্পর্কিত পুস্তিকা পাঠাতে পারি। আমি পর্যটন ক্ষেত্রে সঙ্গে যুক্ত জনগণকেও নতুন চিন্তা-ভাবনা নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানাই। আমাদের অ্যাপগুলিকে আরও আধুনিক করে তুলতে হবে। কোনো একটি নির্দিষ্ট পর্যটন স্থল সম্পর্কে সেই অ্যাপে রাষ্ট্রসংঘের এবং ভারতের সব ভাষায় বিবরণ নথিবদ্ধ থাকা উচিত। কোনো একজন সাধারণ তামিল পরিবারের মানুষ যখন কোনো পর্যটন স্থলে যান, স্বাভাবিকভাবেই তিনি তামিল ভাষায় তথ্য সন্ধান করেন। অ্যাপগুলিতে সহজে তা পাওয়া গেলে এই ধরনের পর্যটকেরা উপকৃত হবেন। এ ভাবেই ছোট ছোট বিষয়গুলিকে গুরুত্ব দিয়ে আমরা বৈজ্ঞানিক উপায়ে আমাদের পর্যটন ক্ষেত্রকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি। 

আমি আশা করবো আজকের ওয়েবিনারে আপনারা বিস্তারিত আলোচনা করবেন। কৃষি, রিয়েল এস্টেট, পরিকাঠামো, বস্ত্রের মতো পর্যটন ক্ষেত্রেও কর্মসংস্থানের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। আজকের ওয়েবিনারের জন্য আমি আপনাদের শুভেচ্ছা জানাই।

আপনাদের অসংখ্য ধন্যবাদ।

প্রধানমন্ত্রীর মূল ভাষণটি ছিল হিন্দিতে।  

 

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
When PM Modi Fulfilled A Special Request From 101-Year-Old IFS Officer’s Kin In Kuwait

Media Coverage

When PM Modi Fulfilled A Special Request From 101-Year-Old IFS Officer’s Kin In Kuwait
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
Under Rozgar Mela, PM to distribute more than 71,000 appointment letters to newly appointed recruits
December 22, 2024

Prime Minister Shri Narendra Modi will distribute more than 71,000 appointment letters to newly appointed recruits on 23rd December at around 10:30 AM through video conferencing. He will also address the gathering on the occasion.

Rozgar Mela is a step towards fulfilment of the commitment of the Prime Minister to accord highest priority to employment generation. It will provide meaningful opportunities to the youth for their participation in nation building and self empowerment.

Rozgar Mela will be held at 45 locations across the country. The recruitments are taking place for various Ministries and Departments of the Central Government. The new recruits, selected from across the country will be joining various Ministries/Departments including Ministry of Home Affairs, Department of Posts, Department of Higher Education, Ministry of Health and Family Welfare, Department of Financial Services, among others.