মঞ্চে উপস্থিত মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল শ্রী ভগৎ সিংজী, জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী শ্রী একনাথ সিন্ধেজী, তিনি এখানকার ভূমিপুত্র এবং মহারাষ্ট্রের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য কঠোর পরিশ্রম করছেন। শ্রী দেবেন্দ্রজী, নীতিনজী, রাওসাহেব দানভে, ডঃ ভারতীয় তাঈ এবং বিপুল সংখ্যায় উপস্থিত নাগপুরের আমার ভাই ও বোনেরা।
আজ ১১ ডিসেম্বর, সংক্রান্তি চতুর্থীর পূর্ণ দিন। মহারাষ্ট্রের বিকাশে আজ ১১টি নক্ষত্রের সম্মেলন ঘটছে। প্রথম নক্ষত্র, হিন্দু হৃদয় সম্রাট বালাসাহেব ঠাকরে মহারাষ্ট্র সমৃদ্ধি মহামার্গ নাগপুর এবং শিরডির জন্য যা সম্পূর্ণ প্রস্তুত। দ্বিতীয় নক্ষত্রটি হ’ল – নাগপুর এইমস্, যা বিদর্ভের এক বিরাট সংখ্যক মানুষের উপকারে আসবে। তৃতীয় নক্ষত্র – ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ ওয়ান হেলথ, যা নাগপুরে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। চতুর্থ নক্ষত্র – আইসিএমআর – এর গবেষণা কেন্দ্র, যা চন্দ্রাপুরে তৈরি হয়েছে। রক্ত সম্পর্কিত রোগ নিয়ন্ত্রণে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পঞ্চম নক্ষত্রটি হ’ল – চন্দ্রাপুরে সিআইপিইটি – এর প্রতিষ্ঠা, যা পেট্রোরসায়ন ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ষষ্ঠ নক্ষত্রটি হ’ল – একটি প্রকল্প, যেটি নাগপুরের নাগ নদীর দূষণ নিয়ন্ত্রণ করবে। সপ্তম নক্ষত্রটি হ’ল – নাগপুরে মেট্রোর প্রথম পর্যায়ের উদ্বোধন এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন। অষ্টম নক্ষত্রটি হ’ল – বন্দে ভারত এক্সপ্রেস, নাগপুর এবং বিলাসপুরের মধ্যে আজ এর যাত্রা সূচনা হ’ল। নবম নক্ষত্রটি হ’ল – নাগপুর ও আজনীর রেল স্টেশনের পুনরুন্নয়ন প্রকল্প। দশম নক্ষত্র – আজনীতে ১২ হাজার অশ্ব শক্তির রেল ইঞ্জিনের রক্ষণা-বেক্ষণ ডিপো এবং একাদশ নক্ষত্রটি হ’ল – নাগপুর – ইTটারসি রেলপথে কোহলী নারখের রুটের উদ্বোধন। এই ১১টি নক্ষত্রের মহাসম্মেলন মহারাষ্ট্রের উন্নয়নে বিশুদ্ধ শক্তি সঞ্চার করবে। মহারাষ্ট্রকে আন্তরিক অভিনন্দন। স্বাধীনতার ৭৫তম বছরে অমৃত মহোৎসবে মহারাষ্ট্রের জনগণের জন্য নিবেদিত ৭৫ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পগুলি।
বন্ধুগণ,
আজকের এই অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ প্রমাণ যে, মহারাষ্ট্রের উন্নয়নে ডবল ইঞ্জিন সরকার কি পরিমাণ গতি সঞ্চার করেছে। নাগপুর ও মুম্বাইয়ের মধ্যে দূরত্ব কমিয়ে আনা ছাড়াও সম্রুদ্ধি মহামার্গ মহারাষ্ট্রের ২৪টি জেলাকে অত্যাধুনিক সংযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে যোগসূত্র রচনা করছে। এর দ্বারা কৃষি ক্ষেত্র ব্যাপকভাবে উন্নতি হবে। ভক্তরা সহজেই বিভিন্ন তীর্থস্থানগুলি ভ্রমণ করতে পারবেন এবং শিল্প ক্ষেত্রেও সমৃদ্ধি আনবে। কর্মসংস্থানেরও বৃদ্ধি পাবে।
বন্ধুগণ,
আজকের দিনটি আরেকটি অন্য কারণে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। পরিকাঠামো উন্নয়নে সার্বিক দৃষ্টিভঙ্গী আজকের যে প্রকল্পগুলির উদ্বোধনের মধ্যে স্পষ্টতই পরিলক্ষিত হচ্ছে। এইমস্, পরিকাঠামো ক্ষেত্রে নিজেই স্বাতন্ত্র বহন করে এবং সম্রুদ্ধি মহামার্গ হ’ল পরিকাঠামোর অপর এক দৃষ্টান্ত। অনুরূপভাবে, বন্দে ভারত এক্সপ্রেস এবং নাগপুর মেট্রো পরিকাঠামো ক্ষেত্রে ভিন্ন স্বাতন্ত্রতা রয়েছে। কিন্তু এগুলি একত্রে হ’ল – একটি স্তবকে ভিন্ন ভিন্ন ফুলের মতো। উন্নয়নের উদ্ভাস যেখানে জনগণের স্বার্থে নিবেদিত।
উন্নয়নের এই স্তবকে এক বৃহত্তর বাগানের প্রতিচ্ছবি ধরা পড়ছে, যা গত ৮ বছরের কঠোর পরিশ্রমে তৈরি হয়েছে। তা সে সাধারণ মানুষের জন্য স্বাস্থ্যই হোক বা সম্পদ সৃষ্টিই হোক, কৃষকদের সশক্তিকরণই হোক বা জল সংরক্ষণ যাই হোক না কেনো। এই প্রথম দেশে এমন এক সরকার রয়েছে, যা পরিকাঠামোকে মানবিক ছোঁয়া দিয়েছে।
পরিকাঠামো ক্ষেত্রে এই মানবিক প্রকৃতি আজকে প্রত্যেকের জীবনকে স্পর্শ করে যাচ্ছে। আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প, যা প্রত্যেকটি গরীব মানুষকে নিখরচায় ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসার সুবিধা প্রদান করছে। সামাজিক পরিকাঠামোর এটি এক অনন্য উদাহরণ। আমাদের আধ্যাত্মিক বিভিন্ন ক্ষেত্র, যেমন – কাশী, কেদারনাথ উজ্জয়িনী, পান্ধারপুর – এই সমস্ত স্থানের উন্নয়ন সাংস্কৃতিক পরিকাঠামোর নমুনা-স্বরূপ।
জন ধন যোজনা ৪৫ কোটি গরীব মানুষকে ব্যাঙ্কিং পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত করেছে। এটি আর্থিক পরিকাঠামোর নমুনা-স্বরূপ। নাগপুর এইমস্ – এর মতো একটি অত্যাধুনিক হাসপাতাল এবং মেডিকেল কলেজ প্রত্যেকটি জেলায় তৈরির প্রচারাভিযান চিকিৎসা পরিকাঠামো ক্ষেত্রে একটি দৃষ্টান্ত-স্বরূপ এবং এই সমস্ত উদ্যোগের সঙ্গে যা সংযোজিত, তা হ’ল – মানবিক আবেগ, মানবিক ছোঁয়া ও অনুভূতির স্পর্শ। আমরা পরিকাঠামোকে কেবল নির্জীব রাস্তা ও উড়ালপুলের মধ্যে আটকে রাখতে পারি না। এর ক্ষেত্র আরও অনেক বেশি প্রসারিত।
বন্ধুগণ,
পরিকাঠামো উন্নয়ন কাজে যদি কোনও আবেগ সংযোজিত না হয়, কোনও মানবিক স্পর্শ যাতে তাতে না থাকে, কেবল ইঁট, পাথর, সিমেন্ট, চুন আর লোহা – এইগুলিই যদি কেবল দৃশ্যমান হয়, তা হলে দেশের সাধারণ মানুষকে সেই লোকসানের ভার বহন করতে হবে। আমি আপনাদের গোসখুর্দ বাঁধের দৃষ্টান্ত দিতে চাই। ৩০-৩৫ বছর আগে এই বাঁধ নির্মাণ হয়েছিল। সেই সময় এর খরচ হয়েছিল প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। কিন্তু, অতীতে এই অনুভূতিহীন কাজের নমুনা শৈলীর ফলে সেই বাঁধের কাজ বহু বছরেও সম্পন্ন হয়নি। এখন সেই বাঁধের নির্মাণ খরচ ৪০০ কোটি টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকায়। ২০১৭ সালে ডবল ইঞ্জিন সরকার আসার পর এই বাঁধ নির্মাণের কাজে গতি সঞ্চার করা হয় এবং প্রত্যেকটি সমস্যার নিরসন করা হয়। আমি খুশি যে, এই বছর এই বাঁধ নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। শুধু একবার ভেবে দেখুন, এই কাজটি করতে তিন দশকেরও বেশি সময় লাগলো। গ্রামবাসী ও কৃষকরা অবশেষে এর সুবিধা লাভ করতে পারবেন।
ভাই ও বোনেরা,
আজাদি কা অমৃতকালে উন্নত ভারত গড়ে তোলার মহৎ সংকল্পে ব্রতী হয়ে আমরা এগিয়ে চলেছি। উন্নত ভারত গড়ে তুলতে দেশের সম্মিলিত শক্তির প্রয়োজন আমাদের। উন্নত ভারত গড়ে তোলার মন্ত্রই হ’ল – রাষ্ট্রের বিকাশের স্বার্থে রাজ্যগুলির বিকাশ। অতীতে আমাদের অভিজ্ঞতার নিরিখে বলা যায়, উন্নয়নকে যদি আমরা সঙ্কুচিত করি, তা হলে সুযোগও সঙ্কুচিত হয়ে পড়ে। শিক্ষা যদি কেবলমাত্র কিছু সংখ্যক ও কিছু শ্রেণীর মানুষের মধ্যে সীমায়িত হয়, তা হলে দেশের প্রতিভা সম্মুখে পরিব্যপ্ত হতে পারে না। কিছু সংখ্যক মানুষের যদি কেবলমাত্র ব্যাঙ্কিং সুবিধা পেয়ে থাকেন, তা হলে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রও সীমিত হয়ে পড়ে। কয়েকটি শহরের মধ্যেই যদি কেবলমাত্র উন্নত যোগাযোগ সীমিত থাকে, তা হলে বৃদ্ধির ক্ষেত্রও সঙ্কুচিত হয়ে পড়ে। এর ফলে, দেশের জনসংখ্যার এক বিরাট অংশ উন্নয়নের সুফল থেকে বঞ্চিত হন এবং দেশের প্রকৃত শক্তি বিকশিত হতে পারে না। গত ৮ বছরে আমরা এই চিন্তা ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ পরিবর্তন এনেছি। আমরা জোর দিচ্ছি, ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস এবং সবকা প্রয়াস’ – এর উপর। এবং আমি যখন বলি, সকলের মিলিত প্রচেষ্টার কথা, তখন আমি দেশের প্রত্যেকটি রাজ্যের কথাই বলি। তা ছোট বা বড় – যাই হোক। প্রত্যেকেরই যোগ্যতা ও সক্ষমতাকে যদি বাড়ানো যায়, তা হলেই ভারত উন্নত হতে পারবে। এজন্যই আমরা বঞ্চিত এবং পিছিয়ে পড়া মানুষদের উৎসাহ যোগাচ্ছি। জনসংখ্যার এই অংশ সরকারের কাছে এখন অগ্রাধিকারের ক্ষেত্র।
এই কারণেই আজ ক্ষুদ্র চাষীদের উপর অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। বিদর্ভের কৃষকরা পিএম কিষাণ সম্মান নিধি থেকে প্রভূত উপকৃত হয়েছেন। আমাদের সরকার পশু পালকদের কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা প্রদান করেছে। রাস্তার হকাররা আগে সমাজে একটি অবহেলিত থাকতেন। তাঁরাও ছিলেন বঞ্চিত। আমরা এরকম লক্ষাধিক বন্ধুকে অগ্রাধিকার দিয়েছি, যাঁরা আজ অনায়াসেই ব্যাঙ্ক ঋণের সুবিধা পাচ্ছেন।
বন্ধুগণ,
অগ্রাধিকারের আরও একটি দৃষ্টান্ত হ’ল – উচ্চাকাঙ্খী জেলাগুলি। দেশে এরকম ১০০টিরও বেশি জেলা ছিল, যেগুলি স্বাধীনতার এত বছর পরেও উন্নয়নের সুবিধা সমস্ত রকম মাপকাঠিতে অনেক পিছিয়ে ছিল। এর অধিকাংশই হ’ল আদিবাসী এলাকা, যেগুলিকে হিংসাপ্রবণ অঞ্চল বলে বিবেচিত হ’ত। মারাঠওয়াড়া ও বিদর্ভের অনেক জেলাই এরকম ছিল। গত ৮ বছরে দেশের এই সমস্ত বঞ্চিত এলাকাগুলিকে দ্রুত উন্নয়ন এবং বিকাশে নতুন ক্ষেত্র হিসাবে আমরা চিহ্নিত করেছি। যেসব প্রকল্পের আজ উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হ’ল, তা এই চিন্তারই প্রতিফলন।
বন্ধুগণ,
আমি যখন আজ আপনাদের সঙ্গে কথা বলছি, তখন মহারাষ্ট্র তথা দেশের মানুষদের একটি বিষয়ে সতর্ক করতে চাই, তা হ’ল – ভারতীয় রাজনীতিতে এক ধরনের বিকৃতি জায়গা করে নিয়েছে। একে বলা হয় শর্টকাট রাজনীতি। রাজনৈতিক সুবিধার্থে দেশের সম্পদ লুঠ। করদাতাদের কষ্টার্জিত অর্থকে লুঠ করা।
যেসব রাজনৈতিক দলগুলি এই শর্টকাট পন্থা নিয়েছে এবং সেইসব রাজনৈতিক নেতারাই হলেন দেশের প্রত্যেক করদাতার সবচেয়ে বড় শত্রু। যাদের মূল উদ্দেশ্য হ’ল – যেভাবেই হোক ক্ষমতায় টিকে থাকা এবং মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে সরকার গঠন, দেশ গড়ার ক্ষেত্রে যা কোনও কাজেই আসে না। আজ যখন ভারতবর্ষ আগামী ৫ বছরের দিশাকে সামনে রেখে কাজ করছে, কিছু রাজনৈতিক দল তাদের নিজেদের ব্যক্তি স্বার্থ রক্ষায় দেশের অর্থনীতিকে বিনষ্ট করতে চাইছেন।
আমাদের অনেকেরই নিশ্চয়ই মনে আছে যে, প্রথম শিল্প বিপ্লবের সময় ভারত কোনও সুবিধাই নিতে পারেনি। দ্বিতীয় ও তৃতীয় শিল্প বিপ্লবের সময়ও আমরা পিছিয়ে ছিলাম। কিন্তু আজ চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুযোগ ভারত হারাবে না। আমাকে আবার বলতে হচ্ছে যে, এমন সুযোগ দেশের সামনে আর ফিরে আসবে না। কোনও দেশই শর্টকাটের পথে চলতে পারে না। দেশের উন্নতির স্বার্থে দরকার স্থায়ী উন্নয়ন ও স্থায়ী সমাধানসূত্র। দীর্ঘ মেয়াদী দিশা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সুস্থায়ী বিকাশের মূলেই রয়েছে পরিকাঠামো।
এক সময়ে দক্ষিণ কোরিয়া ছিল অত্যন্ত গরীব একটি দেশ। কিন্তু, পরিকাঠামোর উপর ভর করে সে তার ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটিয়েছে। আজ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলি কত এগিয়ে। লক্ষাধিক ভারতীয় শেখানে কর্মরত। এর কারণ, গত তিন – চার দশক ধরে তারা তাদের পরিকাঠামোকে শক্তিশালী করেছে এবং আধুনিকীকরণ করেছে। তাদের পরিকাঠামো ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত।
আজ আপনারা দেখছেন যে, ভারতীয়রা সিঙ্গাপুর ভ্রমণ পছন্দ করেন। কয়েক দশক আগেও সিঙ্গাপুর ছিল একটি সাধারণ দ্বীপরাষ্ট্র। মৎস্যচাষ করে কিছু মানুষ তাঁদের জীবিকা অর্জন করতেন। কিন্তু, সিঙ্গাপুর পরিকাঠামোতে বিনিয়োগ করেছিল, সঠিক আর্থিক নীতি অনুসরণ করেছিল। ফলে, আজ বিশ্ব অর্থনীতির এক বৃহৎ আধার হিসাবে এই দেশ পরিগণিত হচ্ছে। এই সমস্ত দেশগুলি যদি শর্টকাটের রাজনীতি বেছে নিত, করদাতাদের টাকা যদি লুঠ হ’ত – তা হলে কোনোভাবেই এই দেশগুলি উন্নয়নের শিখরে পৌঁছতে পারতো না। আজ সেই সুযোগ ভারতের দ্বারপ্রান্তে উপস্থিত। পূর্ববর্তী সরকারগুলির সময়কালে আমাদের দেশের সৎ করদাতাদের অর্থ দুর্নীতির কবলে পড়ে লুন্ঠিত হ’ত অথবা ভোট ব্যাঙ্ককে শক্তিশালী করতে কাজে লাগানো হ’ত। আজ সময়ের চাহিদা বলছে, প্রতিটি পয়সাই যেন সরকারি খাজানায় যায়। দেশের মূলধন আগামী প্রজন্মের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য খরচ করা হয়।
আজ আমি প্রত্যেক যুবক-যুবতী এবং দেশের প্রত্যেক করদাতাকে বলব যে, তাঁরা যেন এইসব স্বার্থান্বেষী রাজনৈতিক দল এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রকৃত মুখোশ খুলে দেন। সেই সমস্ত রাজনৈতিক দল, যারা “আমদানী আঠানি খরচা রুপাইয়া” অর্থাৎ আয়ের থেকে ব্যয়ের বহর বেশি – এই পন্থা নিয়ে এগিয়ে চলেছে, তারা দেশকে ভেতর থেকে ফোপড়া করে দেবে। পৃথিবীর অনেক দেশকেই আমরা দেখেছি যে, এই নীতির বশবর্তী হয়ে তাদের অর্থনীতি সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। আমাদের একত্রে এই শর্টকাট রাজনীতির কবল থেকে দেশকে মুক্ত করতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, একদিকে যেমন রয়েছে, স্বার্থান্বেষী দিকভ্রষ্ঠ রাজনীতি এবং দিশাহীন খরচের পন্থা অবলম্বনকারীরা। অন্যদিকে রয়েছে, জাতীয় স্বার্থে নিবেদিত প্রাণ এবং স্থায়ী উন্নয়ন ও সমাধানের নিরলস কর্মপ্রয়াস। আজ আমাদের দেশের যুবসম্প্রদায়ের সামনে যে সুযোগ এসেছে, তা কখনই আমরা হেলায় হারাতে পারি না।
আমি খুশি যে, আজ সাধারণ মানুষ দেশের সুস্থায়ী উন্নয়ন ও স্থায়ী সমাধানের জন্য প্রভূত সহায়তা যোগাচ্ছেন। গুজরাটে গত সপ্তাহে নির্বাচনের ফল সুস্থায়ী উন্নয়ন ও স্থায়ী বিকাশের লক্ষ্যে অর্থনৈতিক নীতি এবং উন্নয়ন কৌশলের এক প্রত্যক্ষ প্রমাণ-স্বরূপ।
আমি অত্যন্ত বিনয় ও শ্রদ্ধার সঙ্গে রাজনীতিকদের বলব যে, যাঁরা শর্টকাটের পন্থা অবলম্বন করেছেন, তাঁরা স্থায়ী বিকাশের দিশা কি, তা বোঝা এবং আজকে দেশের গুরুত্বকে বোঝার চেষ্টা করুন। শর্টকাটের পন্থা অবলম্বন না করে স্থায়ী উন্নয়নের পথে এগোলে আপনারা নির্বাচন জিততে পারবেন, বারবার নির্বাচনে জিততে পারবেন। সেই সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলিকে বলব যে, তাদের ভয় পাবার কোনও কারণ নেই। আমি নিশ্চিত যে, দেশের স্বার্থকে সমধিক গুরুত্বপূর্ণ বলে আপনারা প্রকৃতভাবে অনুধাবন করতে পারবেন, তখন আপনারা নিশ্চিতভাবে এই শর্টকাট রাজনীতির পথ পরিহার করবেন।
ভাই ও বোনেরা,
মহারাষ্ট্র সহ দেশের মানুষকে এই সমস্ত প্রকল্পের জন্য আমি আরেকবার অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমার তরুণ বন্ধুদের বলব, এই ১১টি নক্ষত্র, যার উল্লেখ আজ আমি করলাম, তা আগামী দিনে আপনাদের ভবিষ্যৎ রচনা করবে এবং আপনাদের কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ এনে দেবে। আসুন, আমরা "इसहा पंथा, इसहा पंथा" অর্থাৎ ‘এটাই সঠিক পথ, এটাই সঠিক পথ’ – এই মন্ত্রে নিজেদের পূর্ণভাবে নিবেদিত করি। বন্ধুগণ, এই ২৫ বছর ধরে আমাদের সামনে যে সুযোগ অপেক্ষা করে রয়েছে, তাকে আমরা কোনোভাবেই হারাতে দেব না।
অনেক অনেক ধন্যবাদ।