ভারত মাতা কী জয়!
ভারত মাতা কী জয়!
তেলেঙ্গানার রাজ্যপাল তামিলিসাই সৌন্দরারাজনজি, আমার মন্ত্রিসভার সদস্য তেলেঙ্গানার সন্তান শ্রী অশ্বিনী বৈষ্ণজি, আমার সহকর্মী মন্ত্রী শ্রী জি কিষান রেড্ডিজি এবং এখানে বিপুল সংখ্যায় আসা তেলেঙ্গানার আমার প্রিয় ভাই বোনেরা!
আপনাদের সবাইকে আমার অন্তরের শুভেচ্ছা! মহান বিপ্লবীদের ভূমি তেলেঙ্গানাকে আমি কূর্নিশ জানাই। তেলেঙ্গানার উন্নয়নে গতি আনতে আজ আমি আবার আপনাদের কাছে এসেছি। কিছুক্ষণ আগে তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্রপ্রদেশের মধ্যে সংযোগকারী বন্দে ভারত ট্রেন চালু হয়েছে। এই আধুনিক ট্রেনটি এখন ভাগ্যলক্ষ্মী মন্দিরের সঙ্গে তিরুপতির ভগবান শ্রী ভেঙ্কটেশ্বর ধামকে যুক্ত করবে। এই বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ভক্তি, আধুনিকতা, প্রযুক্তি এবং পর্যটনকে এক সূত্রে বেঁধে রাখবে। এছাড়া আজ ১১০০০ কোটি টাকার বেশি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং শিলান্যাস করা হয়েছে। এই প্রকল্পগুলি তেলেঙ্গানার রেল, রাস্তা এবং স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর সঙ্গে যুক্ত।
বন্ধুগণ,
তেলেঙ্গানা যতদিন পৃথক রাজ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে, কেন্দ্রের এনডিএ সরকারের মেয়াদও ততদিন হতে চলল। তেলেঙ্গানা এবং এই রাজ্যের মানুষের উন্নয়নের স্বপ্ন পূরণ করতে কেন্দ্রের এনডিএ সরকার বদ্ধপরিকর। ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস, সবকা প্রয়াস’, আমরা ক্রমশ এই মন্ত্রের দিকে এগোচ্ছি। ৯ বছর আগে ভারতের উন্নয়নের নতুন যে মডেলের যাত্রা শুরু হয়েছিল, তার বেশিরভাগ যাতে তেলেঙ্গানায় কার্যকর করা যায়, তার জন্য আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়েছি। গত ৯ বছরে শুধু হায়দ্রাবাদে প্রায় ৭০ কিলোমিটার মেট্রো রেল তৈরি করা হয়েছে। তেলেঙ্গানার বহুমুখী পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নয়নে ৬০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
বন্ধুগণ,
চলতি বছরের বাজেটে আধুনিক পরিকাঠামো তৈরি জন্য ১০ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। গত ৯ বছরে তেলেঙ্গানা রেল বাজেট ১৭ গুণ বাড়ানো হয়েছে। সেকেন্দ্রাবাদ এবং মেহবুব নগরের মধ্যে ডবল রেল লাইনের কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। এতে হায়দ্রাবাদ এবং বেঙ্গালুরুর মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হবে। দেশের প্রধান রেল স্টেশনগুলির উন্নয়নের সুবিধা পাচ্ছে তেলেঙ্গানাও।
বন্ধুগণ,
আজ চারটি মহাসড়ক প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। এগুলি হল, ২৩০০ কোটির আক্কালকোট-কুরনুল শাখা, ১৩০০ কোটি মহবুবনগর-চিনচোলি, ৯০০ কোটি কালওয়াকুর্তি-কোলাপুর এবং ২৭০০ কোটির খাম্মাম-দেওয়ারাপল্লি মহাসড়ক। ২০১৪তে যখন তেলেঙ্গানায় জাতীয় মহাসড়কের দৈর্ঘ্য ছিল আড়াই হাজার কিলোমিটার এখন তা বেড়ে হয়েছে ৫ হাজার কিলোমিটার। তেলেঙ্গানায় জাতীয় মহাসড়ক তৈরিতে কেন্দ্র ৩৫ হাজার কোটি টাকা খরচ করছে। এছাড়া এখন তেলেঙ্গানায় ৬০ হাজার কোটি টাকার সড়ক প্রকল্পের কাজ চলছে।
বন্ধুগণ,
তেলেঙ্গানার কৃষি এবং শিল্পের উন্নয়নে কেন্দ্রীয় সরকার বিশেষ জোর দিচ্ছে। দেশের ৭টি বড় বস্ত্রশিল্পের পার্ক তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র, যার একটি তৈরি হবে তেলেঙ্গানায়। তেলেঙ্গানায় একটি এইমস তৈরিরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। বিবিনগর এইমস-এর সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন ধরনের কাজকর্ম শুরু হয়ে গিয়েছে।
কিন্তু বন্ধুগণ,
এতো চেষ্টা সত্ত্বেও আমি দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, রাজ্য সরকারের অসহযোগিতার কারণে অধিকাংশ কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কাজ বিলম্বিত হচ্ছে। এর ফল ভোগ করছেন তেলেঙ্গানার মানুষ। উন্নয়নের কাজে বাধা না দেওয়ার জন্য আমি তেলেঙ্গানা সরকারের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি।
ভাই ও বোনেরা,
আজকের নতুন ভারতে দেশবাসীর আশা-আকাঙ্খা এবং স্বপ্ন পূরণই আমাদের সরকার সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দিচ্ছে। আমরা দিন-রাত কাজ করছি, কিন্তু কিছু লোক উন্নয়নের কাজে বাধা সৃষ্টি করছে। এ ধরনের লোকজন পারিবারিক শাসন, স্বজনপোষণ এবং দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিয়ে এসেছে। দেশের এবং সমাজের উন্নতির সঙ্গে এদের কোনো সম্পর্ক নেই। প্রত্যেকটি প্রকল্পে এরা নিজেদের পরিবারের স্বার্থ দেখে।
ভাই ও বোনেরা,
দুর্নীতি এবং স্বজনপোষণ আলাদা কিছু নয়। যেখানে পারিবারিক শাসন এবং স্বজনপোষণ রয়েছে সেখানে সব রকমের দুর্নীতি ছড়াতে থাকে। পারিবারিক শাসনের মূল মন্ত্র হল সব কিছুর ওপর নিয়ন্ত্রণ কবজা করা। তাদের নিয়ন্ত্রণের বিরুদ্ধে কেউ চ্যালেঞ্জ করুক, এটা তারা চাইনা। এখন কৃষক, পড়ুয়া এবং খুব ছোট ব্যবসায়ীরা সরকারের কাছ থেকে সরাসরি আর্থিক সহায়তা পাচ্ছেন। আমরা ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থাকে প্রসারিত করেছি।
কেন এগুলো আগে হয়নি? কারণ এরজন্য দায়ী পরিবার তন্ত্র, যারা সবকিছুর ওপর নিয়ন্ত্রণ চায়। তারা তিনটি স্বার্থের দিকে লক্ষ্য রাখে। প্রথমটি হল, পরিবারের ক্রমাগত প্রশংসা। দ্বিতীয়টি হল, দুর্নীতির টাকা একটি বিশেষ পরিবারের কাছেই যাক। এবং তৃতীয়টি হল, যে টাকা গরিবদের দেওয়ার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল, তা যেন এই দুর্নীতি ব্যবস্থার মধ্যেই বন্টন করা হয়।
আমাদের কি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করা উচিত? আমাদের কি দেশকে দুর্নীতি মুক্ত করা উচিত নয়? তাদের দুর্নীতি যাতে প্রকাশ্যে না আসে, সেইজন্য কয়েকটি রাজনৈতিক দল কিছুদিন আগে আদালতে গিয়েছিল। সেখানে তারা ধাক্কা খেয়েছে।
ভাই ও বোনেরা,
‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’ এই মন্ত্রকে সামনে রেখে যখন কাজ করা হবে তখন প্রকৃত অর্থে দেশের গণতন্ত্র শক্তিশালী হবে। বঞ্চিত, শোষিতরা অগ্রাধিকার পাবেন। এটাই সংবিধানের মূল কথা। গত ৯ বছরে দেশের ১১ কোটি মা-বোন এবং কন্যা শৌচাগারের সুবিধা পেয়েছেন। এরমধ্যে তেলেঙ্গানার ৩০ লক্ষের বেশি পরিবার এই সুবিধা পেয়েছেন। তেলেঙ্গানার ১১ লক্ষের বেশি গরিব পরিবার বিনা খরচে উজ্জ্বলা গ্যাস সংযোগ পেয়েছে।
বন্ধুগণ,
পরিবারতন্ত্র রেশন সহ দেশের কোটি কোটি গরিব বন্ধুর ওপর লুটপাট চালিয়েছে। আজ ৮০ কোটির বেশি দেশবাসী নিখরচায় রেশন পাচ্ছেন। এই প্রথম তেলেঙ্গানার ১ কোটি পরিবার জনধন অ্যাকাউন্ট খুলেছেন। এখানে ৫ লক্ষ হকারকে প্রথমবারের জন্য ব্যাঙ্ক ঋণ দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধির অধীনে তেলেঙ্গানার ৪০ লক্ষের বেশি ক্ষুদ্র কৃষক ৯০০০ কোটি টাকা পেয়েছেন।
বন্ধুগণ,
তেলেঙ্গানা সহ আজ গোটা দেশ আজ উন্নয়নের পথে। ‘আজাদি কা অমৃতকাল’ এই শ্লোগানের বাস্তবায়নে তেলেঙ্গানার দ্রুত উন্নয়নও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আগামী ২৫ বছর তেলেঙ্গানার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের একসঙ্গে তেলেঙ্গানার উন্নয়নের স্বপ্ন পূরণ করতে হবে। তেলেঙ্গানার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ এবং বিকাশের জন্য আমাদের আশীর্বাদ করুন, আমাদের সঙ্গে থাকুন।
ভারত মাতা কী- জয়!
ভারত মাতা কী- জয়!
ভারত মাতা কী- জয়!
আপনাদের অসংখ্য ধন্যবাদ!
প্রধানমন্ত্রীর মূল ভাষণটি হিন্দিতে।