নমস্কার!
সামাজিক ন্যায় মন্ত্রী শ্রী বীরেন্দ্র কুমারজি, দেশের নানা প্রান্তে থাকা সরকারি বিভিন্ন কর্মসূচির সুবিধাপ্রাপকরা, আমাদের সাফাই কর্মী ভাই ও বোনেরা! এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন দেশের প্রায় ৪৭০টি জেলার ৩ লক্ষ মানুষ। সকলকে শুভেচ্ছা।
বন্ধুরা,
দলিত, অনগ্রসর ও প্রান্তিক গোষ্ঠীর কল্যাণের কর্মসূচিতে আজ আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের সাক্ষী হচ্ছে দেশ। ৫০০টি জেলায় বসবাসকারী প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রায় ১ লক্ষ মানুষের কাছে সরাসরি হস্তান্তরিত হচ্ছে ৭২০ কোটি টাকার আর্থিক সহায়তা।
আগের সরকারের আমলে একবার মাত্র বোতাম টিপে দরিদ্র মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো কল্পনাও করা যেতো না। কিন্তু এটা মোদীর সরকার! আমি সুরাজ পোর্টালেরও উদ্বোধন করলাম। অন্য নানা সরকারি প্রকল্পের মতো এর মাধ্যমেও প্রান্তিক মানুষজনের কাছে সরাসরি আর্থিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে। দালাল বা কমিশনের দৌরাত্মের কোনো প্রশ্ন নেই!
আমাদের সাফাই কর্মীদের হাতে আজ তুলে দেওয়া হচ্ছে পিপিই কিট এবং আয়ুষ্মান স্বাস্থ্য কার্ড। তাঁরা এবং তাঁদের পরিবার নিখরচায় ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসার সুযোগ পাবেন। তপশিলি জাতি, উপজাতি এবং অন্যান্য শ্রেণীর কল্যাণের জন্য বিগত ১০ বছরে যে কাজ হয়েছে এ তারই আরেকটি ধাপ।
বন্ধুরা,
কিছুক্ষণ আগে কয়েকজন সুবিধাপ্রাপকের সঙ্গে আমার কথা বলার সুযোগ হয়েছে। প্রান্তিক গোষ্ঠীর কাছে যেভাবে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পৌঁছে যাচ্ছে এবং তাঁদের জীবনযাত্রায় যে পরিবর্তন আসছে তা ব্যক্তিগতভাবে আমায় আনন্দিত করে। বিরোধিরা যখন পরিবার তুলে আমার প্রতি অবমাননাকর মন্তব্য করে তখন আমার মনে পরে আপনাদেরই কথা। আমার পরিবার-পরিজন নেই কে বললো? লক্ষ লক্ষ দলিত ও প্রান্তিক মানুষ আমার পরিবারের সদস্য।
বন্ধুরা,
২০৪৭ নাগাদ ভারতকে উন্নত দেশ করে তোলার সংকল্প গ্রহণ করেছি আমরা। দশকের পর দশক ধরে যাঁরা বঞ্চিত রয়েছেন, তাঁদের উন্নয়ন ব্যাতীত তা সম্ভব নয়। কংগ্রেস সরকার এদিকে কোনো গুরুত্বই দেয়নি। এমন একটা মানসিকতা গড়ে উঠেছিল যেন এইসব প্রান্তিক মানুষজন বঞ্চিত থাকবেন এটাই স্বাভাবিক। ওই মানসিকতা দূর করেছি আমি। ধনীর বাড়ির মতো দরিদ্রেরও থাকতে হবে গ্যাস স্টোভ, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট – সব কিছুই।
বন্ধুরা,
বঞ্চিত এই সব গোষ্ঠীর মানুষ প্রজন্মের পর প্রজন্ম কাটিয়েছেন ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধাও না পেয়ে। ২০১৪-য় আমাদের সরকার গ্রহণ করে ‘সকলের সঙ্গে সকলের বিকাশ’ মন্ত্র। যাঁরা আশা ভরসাটুকুও হারিয়ে ছিলেন, তাঁদের দেশের উন্নয়ন কর্মসূচিতে সামিল করেছে এই সরকার।
মনে আছে বন্ধুরা, আগে রেশনের দোকান থেকে রেশন তুলতে কতটা অসুবিধা পোহাতে হতো? আজ ৮০ কোটি অভাবী মানুষকে আমরা বিনামূল্যে রেশন দিচ্ছি।
নিখরচায় ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসার সুযোগ আমূল বদলে দিচ্ছে দরিদ্র ভাই বোনেদের জীবন। আগে প্রান্তিক মানুষজনের ঠিকানা ছিল বস্তি, ঝুপড়ি কিংবা খোলা মাঠ। বিগত ১০ বছরে এঁদের জন্য মোদী তৈরি করে দিয়েছে পাকি বাড়ি, হয়েছে শৌচালয়ের ব্যবস্থা। সম্মান নিয়ে বাঁচতে পারছেন এঁরা।
বন্ধুরা,
দরিদ্র মানুষের ঘরে ঘরে নিখরচায় রান্নার গ্যাসের সংযোগ পৌঁছে দিতে হাতে নেওয়া হয়েছে উজ্জ্বলা যোজনা। জ্বালানির জন্য দরিদ্র মহিলাদের কাঠ কুড়োতে যেতে হচ্ছে না এখন। এই সব প্রকল্পের ১০০ শতাংশ রূপায়নে আমরা এখন উদ্যোগী।
এই দেশে বহু যাযাবর এবং অর্ধ-যাযাবর গোষ্ঠীর বসবাস। তাঁদের কল্যাণেও হাতে নেওয়া হয়েছে নানান কর্মসূচি। মানুষের মাধ্যমে বর্জ্য সংগ্রহের অমানবিক প্রথা দূর করতে এবং আমাদের সাফাই কর্মী ভাই বোনেদের জীবনযাত্রার উন্নয়নে সরকার হাতে নিয়েছে নমস্তে প্রকল্প (ন্যাশনাল অ্যাকশন ফর মেকানাইডজ স্যানিটেশন ইকো সিস্টেম)। এর অঙ্গ হিসেবে প্রায় ৬০ হাজার মানুষকে দেওয়া হয়েছে আর্থিক সহায়তা।
বন্ধুগণ,
শুধুমাত্র এই বছরে তপশিলি গোষ্ঠীভুক্তদের কল্যাণে সরকার ১ লক্ষ ৬০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। আগের সরকারের আমলে কোটি কোটি টাকা নয়-ছয় হোত। এখন টাকা খরচ করা হচ্ছে দরিদ্র এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আর্থসামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে।
তপশিলি জাতি, উপজাতি এবং অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণীর যুবক যুবতীদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে বৃত্তিও বাড়ানো হয়েছে। সারা ভারতে মেডিকেল কলেজগুলিতে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণীভুক্তদের জন্য ২৭ শতাংশ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। উচ্চশিক্ষার জন্য চালু হয়েছে ন্যাশনাল ওভারসিস স্কলারশিপ। জাতীয় অনগ্রসর শ্রেণী কমিশনকে দেওয়া হয়েছে সাংবিধানিক মর্যাদা। বাবাসাহেব আম্বেদকরের সঙ্গে জড়িত স্থানগুলিকে নিয়ে গড়ে উঠছে পঞ্চতীর্থ।
বন্ধুরা,
বিজেপি সরকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর যুবক যুবতীদের সামনে এনে দিয়েছে স্বনিযুক্তির সুযোগ। এসেছে মুদ্রা যোজনা – যার মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের কাছে পৌঁছে গেছে ৩০ লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক সহায়তা। প্রাপকদের বেশিরভাগই তপশিলি জাতি, উপজাতি কিংবা অনগ্রসর শ্রেণীভুক্ত। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে ব্যবসায়িক উদ্যোগ বাড়াতে হাতে নেওয়া হয়েছে স্ট্যান্ড আপ ইন্ডিয়া কর্মসূচি ইত্যাদি। আমাদের সরকার চালু করেছে আম্বেদকর স্যোশাল ইনোভেশন অ্যান্ড ইনকিউবেশন মিশন।
বন্ধুরা,
বঞ্চিত মানুষের কল্যাণে আমাদের সরকারের এইসব উদ্যোগে মোটেও খুশি নন ইন্ডি জোটের লোকজন। কংগ্রেস আসলে চায়, দলিত এবং আদিবাসীরা পিছিয়েই থাকুন। এঁরা মুখে সামাজিক ন্যায়ের কথা বলেন, কিন্তু সমাজে বর্ণভেদকে আরও জোরদার করে তোলেন। ডঃ বাবাসাহেব আম্বেদকর, লোহিয়ার মতো মানুষের বিরুদ্ধাচরণ করেছে কংগ্রেস। সম্মান দেয়নি কর্পুরি ঠাকুরকে। তাঁকে ভারতরত্ন দেওয়াও কংগ্রেসের পছন্দ নয়। তারা চায় শুধু তাদের পরিবারের সদস্যরাই ভারতরত্নে ভূষিত হতে থাকুন। রামনাথ কোবিন্দের মতো দলিদ শ্রেণীভুক্ত কিংবা দ্রৌপদী মুর্মুর মতো আদিবাসী গোষ্ঠীভুক্ত কেউ দেশের রাষ্ট্রপতি হোন – এমনটা কখনই চায়নি কংগ্রেস। অন্যদিকে, বিজেপি চায় এযাবৎ বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর মানুষ আসুন নেতৃস্থানীয় ভূমিকায়।
আগামী ৫ বছরেও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কল্যাণে প্রয়াস অব্যাহত থাকবে বলে মোদী আপনাদের কথা দিচ্ছে। এভাবেই আমরা গড়ে তুলবো ‘বিকশিত ভারত’। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা এত বেশি সংখ্যায় মানুষের সঙ্গে মিলিত হওয়া সৌভাগ্যের বিষয়। সকলকে শুভেচ্ছা।
অনেক অনেক ধন্যবাদ।