নমঃ পার্বতী পতয়ে!
হর হর মহাদেব!
উত্তরপ্রদেশের মাননীয়া রাজ্যপাল আনন্দীবেন প্যাটেল, মুখ্যমন্ত্রী শ্রী যোগী আদিত্যনাথ, আমার মন্ত্রিসভার সহকর্মী শিবরাজ সিং চৌহান, ভগীরথ চৌধুরী, উত্তরপ্রদেশের উপ মুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্য, বিধান পরিষদের সদস্য ব্রজেশ পাঠক এবং ভারতীয় জনতা পার্টির সভাপতি শ্রী ভূপেন্দ্র চৌধারী, রাজ্য সরকারের অন্যান্য মন্ত্রীগণ, জন প্রতিনিধিবৃন্দ, এখানে বিপুল সংখ্যায় হাজির থাকা আমার কৃষক ভাই ও বোনেরা এবং কাশীতে আমার পরিবারের সদস্যরা!
ভোটে জেতার পর এই প্রথম আমি বারাণসীতে এলাম। কাশীর মানুষকে আমার শুভেচ্ছা। বাবা বিশ্বনাথ এবং মা গঙ্গার আশীর্বাদ, কাশীর মানুষের প্রচুর ভালোবাসা নিয়ে আমি তৃতীয়বারের জন্য দেশের প্রধান সেবক হওয়ার সুযোগ পেয়েছি। পর পর তিনবার আমাকে প্রতিনিধি নির্বাচিত করার জন্য কাশীর মানুষের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আমার মনে হচ্ছে, মা গঙ্গা যেন আমাকে দত্তক নিয়েছেন। ব্যাপক গরম সত্ত্বেও বিপুল সংখ্যক মানুষ আশীর্বাদ জানাতে এখানে সমবেত হয়েছেন। আমি তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞ, আমি তাঁদের কাছে ঋণী!
বন্ধুগণ,
১৮ তম লোকসভা নির্বাচন আবার ভারতীয় গণতন্ত্রের ব্যাপকতা, শক্তি এবং গভীর শিকড় বিশ্বের কাছে তুলে ধরেছে। এই নির্বাচনে ৬৪ কোটির বেশি মানুষ ভোট দিয়েছেন, যা বিশ্বের মধ্যে বৃহত্তম। ইতালিতে সাম্প্রতিক জি-৭ শীর্ষ বৈঠকের সময়ে আমি লক্ষ্য করেছি, জি-৭ দেশগুলির মোট ভোটারের চেয়ে ভারতের ভোটারের সংখ্যা দেড়গুণ বেশি। একইভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সব ভোটারের চেয়ে ভারতের ভোটার সংখ্যা আড়াইগুণ বেশি। এই নির্বাচনে ৩১ কোটির বেশি মহিলা অংশ নিয়েছেন, যা বিশ্বের যে কোনো দেশের চেয়ে বেশি এবং আমেরিকার মোট জনসংখ্যার সমান। বারাণসীর মানুষের কাছে এটা অত্যন্ত গর্বের যে, তাঁরা শুধুমাত্র আমাকে সাংসদ নির্বাচিত করেননি, সেইসঙ্গে পর পর তিনবার দেশের প্রধানমন্ত্রীও করেছেন।
বন্ধুগণ,
এই নির্বাচনে দেশের মানুষ যে রায় দিয়েছেন, তা প্রকৃত অর্থে নজিরবিহীন এবং এক নতুন ইতিহাস তৈরি করেছে। পর পর তিনবার একই সরকার নির্বাচিত হয়েছে, যা গণতান্ত্রিক দেশে এক বিরল ঘটনা। ভারতে এই ধরনের হ্যাট্রিকের নজির রয়েছে ৬০ বছর আগে। ভারতের মানুষ যেভাবে আমার উপর আস্থা রেখেছেন, তা আমার কাছে এক বড় সম্পদ। এটি আমাকে নিরলসভাবে কাজ করার এবং দেশকে নতুন উচ্চতায় তুলে নিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা যোগাবে।
বন্ধুগণ,
কৃষক, তরুণ, মহিলা এবং গরিব মানুষরাই হলেন উন্নত ভারতের শক্তিশালী স্তম্ভ। আমার তৃতীয়বারের শাসনে আমি তাঁদের ক্ষমতায়নের উপর নজর দিয়েছি। আমাদের সরকারের প্রথম সিদ্ধান্ত কৃষক এবং গরিব পরিবারের জন্য নেওয়া হয়েছে। গরিবদের জন্য ৩ কোটি নতুন বাড়ি নির্মাণ বা পিএম কিষাণ সম্মান নিধি প্রকল্প, যাই হোক না কেন, এই ধরনের উদ্যোগে দেশের কোটি কোটি মানুষ উপকৃত হবেন। কিছুক্ষণ আগে পিএম কিষাণ সম্মান নিধি প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের লক্ষ লক্ষ কৃষকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ২০ হাজার কোটি টাকা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। ৩ কোটি বোনকে লাখপতি দিদিতে রূপান্তরিত করার লক্ষ্যে আজ এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কৃষি সখী হিসেবে নতুন ভূমিকায় দেখা যাবে বোনেদের, যা তাঁদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা এবং নতুন আয়ের সংস্থান করবে।
বন্ধুগণ,
পিএম কিষাণ সম্মান নিধি হল বিশ্বের বৃহত্তম প্রত্যক্ষ সুবিধা হস্তান্তর প্রকল্প। এ পর্যন্ত কোটি কোটি কৃষক পরিবারের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৩.২৫ লক্ষ কোটি টাকা হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়া বারাণসী জেলায় কৃষকদের অ্যাকাউন্টে ৭০০ কোটি টাকা জমা করা হয়েছে। কয়েক মাস আগে বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রায় ১ কোটির বেশি কৃষক এই প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন। পিএম কিষাণ নিধির সুবিধা বাড়াতে সরকার নিয়ম নীতিও অনেক সহজ করেছে। এর মূল কথা হল কৃষকদের স্বার্থ রক্ষা করা।
ভাই ও বোনেরা,
একুশ শতকের ভারতকে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম আর্থিক শক্তির দেশে রূপান্তরিত করার ক্ষেত্রে কৃষি ব্যবস্থা এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। আমাদের লক্ষ্য হল, ডাল এবং তৈল বীজের ক্ষেত্রে স্বনির্ভরতা অর্জন করা এবং কৃষি রপ্তানিতে নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করা। এখানে আমাদের মা এবং বোনেরা বিপুল সংখ্যায় হাজির হয়েছেন। তাঁদের বাদ দিয়ে কৃষি কাজ কল্পনা করা অসম্ভব। মা এবং বোনেদের ভূমিকা কৃষি কাজের সম্প্রসারণে এক নতুন দিক নির্দেশ করছে। এর উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত হল, নমো ড্রোন দিদি এবং কৃষি সখী। আজ ৩০ হাজারের বেশি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ‘কৃষি সখী’ হিসেবে তাঁদের অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ শংসাপত্র প্রদান করা হয়েছে। বর্তমানে দেশের ১২টি রাজ্যে এই প্রকল্প রূপায়িত করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে দেশে হাজার হাজার এ ধরনের গোষ্ঠী গড়ে উঠবে।
ভাই ও বোনেরা,
গত ১০ বছর ধরে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার কাশীর কৃষকদের জন্য উল্লেখযোগ্যভাবে সুযোগ সুবিধার সৃষ্টি করেছে। গত ৭ বছর ধরে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে চলেছে রাজ্য সরকার। বনাস ডেয়ারি বারাণসীর কৃষক এবং পশু পালকদের ভাগ্য বদলে দিয়েছে। আজ এই ডেয়ারি দৈনিক প্রায় ৩ লক্ষ লিটার দুধ সংগ্রহ করে। আমাদের সরকার বারাণসীর মৎস্য চাষীদের আয় বাড়াতে ধারাবাহিকভাবে কাজ করে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী মৎস্য সম্পদ যোজনায় শত শত কৃষক উপকৃত হচ্ছেন। এখন তাঁদের কিষাণ ক্রেডিট কার্ড দেওয়া হচ্ছে। পিএম সূর্যঘর ফ্রি ইলেক্ট্রিসিটি যোজনায় বারাণসীতে ব্যাপক সাফল্য মিলেছে। প্রায় ৪০ হাজার মানুষ তাঁদের নাম নথিভুক্ত করেছেন। বারাণসীর ২,১০০-র বেশি বাড়িতে সৌর প্যানেল বসানো হয়েছে। আরও ৩ হাজারের বেশি বাড়িতে এই প্যানেল বসানোর কাজ চলছে।
বন্ধুগণ,
বারাণসী এবং এর সংলগ্ন গ্রামগুলিতে পরিকাঠামোগত উন্নতি ঘটানো হয়েছে। কাশীতে গড়ে উঠতে চলেছে দেশের প্রথম শহর রোপওয়ে প্রকল্প। এর কাজ এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে। পর্যটক এবং স্থানীয় মানুষের জন্য কাশী, বেনারস এবং ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনের সংস্কার করা হয়েছে। দীর্ঘকাল ধরে কাশী জ্ঞান ও সংস্কৃতির পীঠস্থান হিসেবে পরিচিত হয়ে আসছে। এখানে ঐতিহ্যের সঙ্গে উন্নয়নের মেলবন্ধন ঘটানো হয়েছে।
বন্ধুগণ,
বাবা বিশ্বনাথের আশীর্বাদকে সঙ্গী করে কাশীর বর্তমান উন্নয়ন প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। আমি আবার সমস্ত কৃষক বন্ধু, ভাই এবং বোনেদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। কাশীর মানুষকেও আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
নমঃ পার্বতী পতয়ে!
হর হর মহাদেব!
প্রধানমন্ত্রী মূল ভাষণটি দিয়েছেন হিন্দিতে।