মুখ্যমন্ত্রী শ্রী পালানিস্বামী জি
মাননীয় মন্ত্রী কে পান্ডিয়ারাজন জি
বনবিল সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা শ্রী কে রবি
বিশিষ্ট অতিথিবৃন্দ,
বন্ধুগন !
ভানাক্কাম !
নমস্কার !
মহান ভারতীয়ার জন্মদিনে আমি প্রথমেই তাঁকে শ্রদ্ধা জানাই। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে এই বিশেষ দিনে আন্তর্জাতিক ভারতী উৎসবে আমি অংশীদার হওয়ার সুযোগ পেয়েছি। বিশিষ্ট পন্ডিত শ্রী সীনি বিশ্বনাথন জি, যিনি ভারতীর কাজের উপর গবেষণায় তার সারা জীবন নিয়োজিত করেছেন, তাঁকে এবছরের ভারতী পুরস্কার দেওয়ার সুযোগ পেয়ে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। ৮৬ বছর বয়সেও সক্রিয়ভাবে তিনি এই গবেষণার কাজ করছেন। যা অত্যন্ত প্রশংসার দাবিদার। সুব্রমান্য ভারতীকে কিভাবে বিশেষিত করা যায় সেটি একটি কঠিন প্রশ্ন౼ ভারতীয়ারকে একটি মাত্র পেশা বা একটি বিষয়ের সঙ্গে যুক্ত করা যায় না। তিনি ছিলেন কবি, লেখক, সম্পাদক, সাংবাদিক, সমাজ সংস্কারক, স্বাধীনতা সংগ্রামী, মানবতাবাদী এবং আরো অনেক কিছু। যে কেউ তাঁর কাজ, তাঁর কবিতা, তাঁর দর্শন এবং তাঁর জীবন নিয়ে বিষ্মিত হবেন। বারাণসীর সঙ্গে তাঁর নিবিড় যোগ ছিল, সংসদে যেই এলাকার প্রতিনিধিত্ব করার সম্মান আমি পেয়েছি। সম্প্রতি তাঁর কাজ ১৬টি অধ্যায়ে প্রকাশিত হয়েছে বলে আমি শুনেছি। ৩৯ বছরের এই সংক্ষিপ্ত জীবনে তিনি এতো কিছু লিখেছেন, এত কাজ করেছেন এবং সব ক্ষেত্রে উৎকর্ষতা দেখিয়েছেন। তাঁর রচনা আমাদের গৌরবোজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পথ দেখাবে।
বন্ধুগণ,
আমাদের যুব সম্প্রদায় আজ সুব্রমান্য ভারতীর কাছ থেকে অনেক কিছু শিখতে পারেন। সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হল তাঁর সাহস। ভয় কি জিনিস সুব্রমান্য ভারতী তা জানতেন না। তিনি বলেছিলেন,
আমি ভয় করি না। আমার ভয় নেই। যদি সারা বিশ্ব আমার বিরুদ্ধে যায়, তাহলে আমি ভয় পাই না।
আমি, ভারতের যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে এই ভাবনা দেখতে পাই। তাঁরা যখন উদ্ভাবন এবং উৎকর্ষতার শীর্ষে থাকেন, তখন আমি এই উৎসাহ তাদের মধ্যে দেখতে পাই। ভারতের নতুন উদ্যোগগুলি নির্ভীক যুব সম্প্রদায় এগিয়ে নিয়ে চলেছে। যাঁরা মানব জাতিকে নতুন কিছু দেওয়ার জন্য উদ্যোগী হয়েছেন। এই ধরণের “আমি পারবই” মানসিকতায় আমাদের দেশ এবং আমাদের গ্রহে নতুন নতুন জিনিস হচ্ছে।
বন্ধুগণ,
প্রাচীনের সঙ্গে আধুনিকতার এক স্বাস্থ্যকর মেলবন্ধন ভারতীয়ার বিশ্বাস করতেন। তিনি আমাদের শিকড়ের সঙ্গে যুক্ত থেকে ভবিষ্যতের দিকে তাকানোর প্রজ্ঞা দেখিয়েছেন। তাঁর একটি চোখ ছিল তামিল ভাষা আর অন্য চোখ মাতৃভূমি ভারত। প্রাচীন ভারতের মহান দিকগুলি, বেদ ও উপনিষদের মহত্ব, আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের ঐতিহ্য এবং আমাদের গৌরবোজ্জ্বল অতীত নিয়ে তিনি গান গেয়েছেন। কিন্তু একই সময়ে তিনি সবাইকে সতর্ক করে বলেছেন, নিছক অতীতকে আঁকড়ে থাকলে চলবে না, আমাদের জানার মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে, জিজ্ঞাসার ইচ্ছে জাগাতে হবে এবং বিকাশের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
বন্ধুগণ,
মহাকবি ভারতীয়ার বিকাশের সংজ্ঞার মূল চরিত্রই হলেন মহিলারা। তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ধারণা হল, স্বাধীন ও ক্ষমতাশালী মহিলা। মহাকবি ভারতীয়ার লিখেছিলেন যে, নারী তাঁর মাথা উঁচু করে হাঁটবেন, মানুষের চোখে চোখ রেখে কথা বলবেন। আমরা এই আদর্শে অনুপ্রাণিত। নারীদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার জন্য আমরা কাজ করছি। আপনারা শুনে খুশি হবেন যে, আমাদের সরকারের প্রতিটি স্তরে নারীর মর্যাদা রক্ষা গুরুত্ব পায়।
আজ, মুদ্রা যোজনার মতো প্রকল্পে ১৫ কোটির বেশি মহিলা সাহায্য পাচ্ছেন। তারা মাথা উঁচু করে হাঁটছেন, আমাদের দিকে সরাসরি তাকাচ্ছেন এবং কিভাবে তারা আত্মনির্ভর হয়ে উঠেছেন, সেকথা জানাচ্ছেন।
আজ আমাদের সশস্ত্র বাহিনীতে মহিলারা পার্মানেন্ট কমিশনিংএ যুক্ত হয়েছেন। দেশ যে নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছে, তারা সেই আস্থা যোগাচ্ছেন। আজ দরিদ্রতম মহিলা যিনি নিরাপদ শৌচালয়ের সমস্যায় ভুগতেন, ১০ কোটির বেশি নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর শৌচালয়ের সুবিধে তারা পাচ্ছেন।
তারা আর কোনো সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন না। মহাকবি ভারতীয়ার যে স্বপ্ন দেখতে, সেই স্বপ্ন অনুযায়ী তারা মাথা উঁচু করে হাঁটছেন এবং সবার চোখে চোখ রেখে কথা বলছেন। এই যুগ হল নতুন ভারতের নারী শক্তির। তারা সমস্ত বাধা অতিক্রম করে প্রভাব বিস্তার করছেন। সুব্রমান্য ভারতীর প্রতি এটিই নতুন ভারতের শ্রদ্ধার্ঘ্য।
বন্ধুগণ,
মহাকবি ভারতীয়ার উপলদ্ধি করেছিলেন যে, কোনো সমাজ যদি বিভক্ত থাকে, তাহলে সেই সমাজ সাফল্য পায় না। একই সঙ্গে তিনি রাজনৈতিক শূন্যতার বিষয়েও লিখেছিলেন। যার ফলে সামাজিক অসাম্যের সমাধান হয় না এবং সামাজিক সমস্যা দূর হয় না। তিনি বলেছিলেন, এখন আমরা একটি নিয়ম তৈরি করবো, আর সেটি কার্যকরও করবো। যদি কোনো মানুষ অনাহারের সম্মুখীন হন, তাহলে সারা জগতের ধ্বংসের বেদনায় অনুভব করা উচিত। তাঁর শিক্ষা আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে চলার পথ দেখায় এবং প্রতিটি ব্যক্তির ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে উৎসাহ দেয়, বিশেষত দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষদের।
বন্ধুগণ, আমাদের যুব সম্প্রদায়ের ভারতীর কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। আমাদের দেশের সকলের তাঁর কাজের বিষয়ে জানা উচিত, যার মধ্য দিয়ে তাঁরা অনুপ্রাণিত হবেন। ভারতীয়ার বার্তা প্রচারে বনবিল সংস্কৃতিক কেন্দ্র সুন্দর কাজ করার জন্য আমি তাঁদের অভিনন্দন জানাই। আমার দৃঢ় বিশ্বাস এই উৎসব ফলপ্রসূ হবে। যার মধ্য দিয়ে ভারতের নতুন এক ভবিষ্যতে দিকে অগ্রসর হতে সুবিধে হবে।
ধন্যবাদ।
অনেক অনেক ধন্যবাদ।