“ভারতের বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায় আমাদের দেশের যোগ্য স্থানকে সুনিশ্চিত করবে”
“একবিংশ শতাব্দীর ভারতে ডেটা এবং প্রযুক্তি প্রভূত সহজলভ্যতা বিজ্ঞানকে সাহায্য করবে”
“বিজ্ঞানের মহিলাদের স্বশক্তিকরণই কেবল আমাদের চিন্তা নয়, বরং বিজ্ঞানের স্বশক্তিকরণে মহিলাদের অবদানকে সুনিশ্চিত করা আমাদের লক্ষ্য”
“মহিলাদের বেশি করে অংশগ্রহণই প্রমাণ করে যে দেশে মহিলা এবং বিজ্ঞান উভয়েরই অগ্রগতি সাধন হচ্ছে”
“বিজ্ঞানের প্রচেষ্টা তখনই মহান সাফল্যে পরিগণিত হতে পারে যখন তা পরীক্ষাগার থেকে বেরিয়ে মাটিকে স্পর্শ করে, যখন তার প্রভাব বৈশ্বিক থেকে তৃণমূল স্তরে পৌঁছায়, যখন তার ব্যাপ্তি জার্নাল থেকে বেরিয়ে জমিতে ফলবান হয় এবং যখন পরিবর্তনকে প্রত্যক্ষ করা যায় গবেষণা থেকে বাস্তব জীবন”
“দেশ যদি ভবিষ্যতের ক্ষেত্রগুলিতে অগ্রবর্তী হয় তাহলে চতুর্থ প্রজন্মের শিল্পে আমরা আমাদের নিজেদের জায়গা করে নিতে পারবো”

নমস্কার!

আপনাদের সবাইকে ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রসের এই অধিবেশন আয়োজনের জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা। আগামী ২৫ বছরে ভারত যে উচ্চতায় পৌঁছবে, এতে ভারতের বৈজ্ঞানিক শক্তির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে। বিজ্ঞানে প্যাশন বা আবেগের পাশাপাশি যখন দেশ সেবার সংকল্প যুক্ত হয়, তখন অভূতপূর্বভাবে ফলাফলও পাওয়া যায়। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, ভারতের সায়েন্টিফিক কমিউনিটি বিজ্ঞানচর্চা  সম্প্রদায় ভারতকে একবিংশ শতাব্দীর সেই লক্ষ্যে পৌঁছে দেবে, যে স্থানের জন্য ভারত সর্বদাই উপযুক্ত। আমি আমার এই বিশ্বাসের কারণও আপনাদের জানাতে চাই। আপনারাও জানেন যে, বিজ্ঞানের মূল ভিত্তি হ’ল অবজারভেশন বা পর্যবেক্ষণ। এই পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে আপনাদের মতো বৈজ্ঞানিকরা কোনও কিছুর প্যাটার্ন বা নিদর্শনগুলি অনুসরণ করেন। তারপর সেই নিদর্শনগুলিকে বিশ্লেষণের পরই কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছান।

এই প্রক্রিয়ার মধ্যে একজন বৈজ্ঞানিকের জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে তথ্য সংগ্রহ করা আর সেই তথ্যগুলিকে বিশ্লেষণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। একবিংশ শতাব্দীর আজকের ভারতে আমাদের কাছে দুটি জিনিস পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে। প্রথমটি হ’ল ডেটা বা তথ্য, আর দ্বিতীয়টি হ’ল টেকনোলজি বা প্রযুক্তি। এই দুয়ের সম্মিলিত শক্তিতে ভারত বিজ্ঞানকে নতুন নতুন লক্ষ্যে পৌঁছে দেওয়ার শক্তি ধারণ করে। ডেটা অ্যানালিসিস বা তথ্য বিশ্লেষণের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারত আজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। ফলে, তথ্যগুলিকে অন্তর্দৃষ্টিতে আর বিশ্লেষণকে অ্যাকশনেবল নলেজে পরিবর্তনে সহায়ক হয়ে ওঠে। তা সে প্রথাগত জ্ঞান হোক কিংবা অত্যাধুনিক প্রযুক্তিগত জ্ঞান। এই দুটিই বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবন ও আবিষ্কারের ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। আর সেজন্য আমাদের নিজস্ব বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়াগুলিকে আরও শক্তিশালী করতে ভিন্ন ভিন্ন টেকনিক বা প্রক্রিয়া পদ্ধতির প্রতি অনুসন্ধানের প্রবৃত্তিকে বিকশিত করতে হবে।

বন্ধুগণ,

আজকের ভারত যেভাবে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ নিয়ে এগিয়ে চলেছে, তার সুফলও আমরা দেখতে পাচ্ছি। বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে ভারত দ্রুতগতিতে বিশ্বের উন্নততম দেশগুলির পঙক্তিতে সামিল হচ্ছে। ২০১৫ সাল পর্যন্ত আমরা ১৩০টি দেশের গ্লোবাল ইনোভেশন ইনডেক্স – এ ৮১ নম্বর স্থানে ছিলাম। কিন্তু ২০২২ সালে আমরা অনেকটা এগিয়ে ৪০তম স্থানে পৌঁছে গেছি। আজ ভারত পিএইচডি ক্ষেত্রে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ তিনটি দেশের অন্যতম। আজ ভারত স্টার্টআপ ইকো সিস্টেমের ক্ষেত্রেও বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ তিনটি দেশের অন্যতম।

বন্ধুগণ,

আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, এবারের ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের মূল ভাবনাও এমন একটি বিষয়, যা নিয়ে সারা পৃথিবীতে আজ সবচেয়ে বেশি আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। বিশ্বের ভবিষ্যৎ আজ সুস্থায়ী উন্নয়নের মাধ্যমেই সুরক্ষিত হতে পারে। আপনারা এই সুস্থায়ী উন্নয়নের বিষয়কে নারী ক্ষমতায়নের সঙ্গে যুক্ত করেছেন। আমি মনে করি যে, ব্যবহারিক দিক থেকেও এই দুটি বিষয় পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত। আজ আমাদের দেশ শুধুই বিজ্ঞানের মাধ্যমে নারী ক্ষমতায়নে সীমাবদ্ধ থাকার কথা ভাবছে না, বরং আমরা মহিলা বিজ্ঞানীদের অংশীদারিত্বে ঋদ্ধ হয়ে বিজ্ঞানকেও ক্ষমতায়িত করতে চাই, বিজ্ঞান ও গবেষণাকে নতুন গতি প্রদান করতে চাই – এটাই আমাদের লক্ষ্য। এ বছর ভারত জি-২০ অন্তর্ভুক্ত দেশগুলির সভাপতিত্বের দায়িত্ব পেয়েছে। এই জি-২০ গোষ্ঠীর প্রধান বিষয়গুলির মধ্যেও মহিলাদের নেতৃত্বে উন্নয়নকে দীর্ঘকাল ধরে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। গত ৮ বছরে ভারত প্রশাসন থেকে শুরু করে সমাজ ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন পর্যন্ত প্রতিটি ক্ষেত্রে লক্ষ্য সাধনে এরকম অনেক অসাধারণ কাজ করেছে, যা নিয়ে আজ সারা পৃথিবীতে ইতিবাচক আলোচনা চলছে। আজ ভারত মুদ্রা যোজনার মাধ্যমে ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের অংশীদারিত্ব বৃদ্ধি থেকে শুরু করে স্টার্টআপ বিশ্বে নেতৃত্ব প্রদান – প্রত্যেক ক্ষেত্রেই ভারতীয় মহিলারা নিজেদের কৃতিত্বের পরিচয় প্রদর্শন করছেন। গত আট বছরে এক্সট্রাম্যুরাল রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের ক্ষেত্রেও মহিলাদের অংশীদারিত্ব ভারতে দ্বিগুণ হয়েছে। মহিলাদের এই ক্রমবর্ধমান অংশীদারিত্ব থেকে প্রমাণ হয় যে, আমাদের সমাজও এগিয়ে চলেছে আমাদের দেশে বিজ্ঞানের অগ্রগতিও অব্যাহত রয়েছে।

বন্ধুগণ,

যে বৈজ্ঞানিকের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হ’ল, তিনি নিজের জ্ঞানকে এমনভাবে প্রয়োগ করবেন, এমন এমন অ্যাপ্লিকেশনে রূপান্তরিত করবেন, যার মাধ্যমে বিশ্ববাসী উপকৃত হবেন। যখন বৈজ্ঞানিক নিজস্ব প্রয়োগ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যান, তখন তাঁর মনে এই প্রশ্নই চলতে থাকে যে, এটার মাধ্যমে কি মানুষের জীবনশৈলী আরেকটু উন্নত হবে? তাঁর অনুসন্ধান কি বিশ্বের প্রয়োজনগুলি মেটাবে। নানা বৈজ্ঞানিক প্রচেষ্টা তখনই বড় বড় সাফল্যে রূপান্তরিত হয়, যখন সেগুলি পরীক্ষাগার থেকে বেরিয়ে ভূমিতে পৌঁছয়। যখন এর প্রভাব আন্তর্জাতিক স্তর থেকে শুরু করে তৃণমূল স্তর পর্যন্ত সঞ্চারিত হয়, যখন এর বিস্তার জার্নালের বাইরে বেরিয়ে ভূমি স্পর্শ করে, সেখানে পরিবর্তন আসে। বৈজ্ঞানিক গবেষণার পরিবর্তনকে যখন তাঁরা বাস্তব জীবনে সফল হতে দেখেন, তখনই বৈজ্ঞানিকরা তৃপ্ত হন।

বন্ধুগণ,

যখন বিজ্ঞানের বড় বড় সাফল্য নানারকম এক্সপেরিমেন্ট বা পরীক্ষা-নিরীক্ষা থেকে শুরু করে জনগণের এক্সপিরিয়েন্স বা অভিজ্ঞতায় রূপান্তরিত হয়, তখন এর মাধ্যমে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা যায়। এই বার্তা যুবসম্প্রদায়কে অত্যন্ত প্রভাবিত করে। তাঁরা ভাবেন যে, বিজ্ঞানের মাধ্যমে তাঁরা গোটা বিশ্বকে প্রভাবিত করতে পারেন। এ ধরনের যুবক-যুবতীদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ইন্সটিটিউশনাল ফ্রেমওয়ার্কের প্রয়োজন হয়, যাতে তাঁদের আকাঙ্খাগুলিকে তাঁরা সম্প্রসারিত করতে পারেন, সেগুলিকে নতুন নতুন সুযোগ দিতে পারেন। আমি চাই যে, এখানে উপস্থিত বৈজ্ঞানিকরা সারা দেশে এরকম ইন্সটিটিউশনাল ফ্রেমওয়ার্ক বিকশিত করুন, যা নবীন প্রতিভাদের আকর্ষিত করবে আর তাঁদের এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে। উদাহরণ-স্বরূপ, ‘ট্যালেন্ট হান্ট’ এবং ‘হ্যাকাথন’ – এর আয়োজনের মাধ্যমে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গীসম্পন্ন শিশুদের খুঁজে বের করা যেতে পারে। তারপর সেই শিশুদের কথা বুঝে একটি যথাযথ পথচিত্রের মাধ্যমে বিকশিত করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে প্রবীণ বিজ্ঞানীরা তাঁদেরকে সাহায্য করতে পারেন। আজ আমরা দেখছি যে, খেলাধূলার ক্ষেত্রে ভারত নতুন নতুন উচ্চতা স্পর্শ করছে। এর পেছনে দুটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে। প্রথমটি হ’ল – ক্রীড়া প্রতিভাগুলিকে উন্নত করার জন্য দেশে ইন্সটিটিউশনাল ফ্রেমওয়ার্ককে আরও শক্তিশালী করে তোলা হয়েছে। দ্বিতীয়ত, খেলাধূলায় গুরু – শিষ্য পরম্পরার অস্তিত্ব এবং প্রভাব। যেখানে নতুন নতুন প্রতিভাগুলিকে চিহ্নিত করে সেগুলিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, যেখানে শিষ্যদের সাফল্যকেই গুরু নিজের সাফল্য বলে মনে করেন। এই পরস্পরা বিজ্ঞানের ক্ষেত্রেও সাফল্যের মূলমন্ত্র হয়ে উঠতে পারে।

বন্ধুগণ,

আজ আপনাদের সামনে আমি আরও কিছু এমন বিষয় তুলে ধরতে চাই, যেগুলি ভারতের বিজ্ঞানকে নতুন লক্ষ্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। ভারতের প্রয়োজনগুলি মেটানোর জন্য ভারতেই বিজ্ঞানের বিকাশ ঘটাতে হবে। এটাই যেন আমাদের বৈজ্ঞানিকদের মূল প্রেরণা হয়ে ওঠে। ভারতের বিজ্ঞান ভারতকে আত্মনির্ভর করে তোলার অনুকূল হওয়া উচিৎ। আমাদের এটাও মাথায় রাখতে হবে যে, আজ বিশ্বের জনসংখ্যার ১৭-১৮ শতাংশ মানুষ ভারতে বসবাস করেন। সেজন্য এ ধরনের বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবন যেগুলির মাধ্যমে ভারতের সাধারণ জনগণের প্রয়োজন মিটবে, তা হলে বিশ্বের ১৭-১৮ শতাংশ মানুষের উন্নয়নে গতি আসবে। এর প্রভাব সম্পূর্ণ মানবতার উপর পড়বে। সেজন্য আমাদের এমনসব বিষয় নিয়ে কাজ করা উচিৎ, যেগুলি আজ সম্পূর্ণ মানবতার স্বার্থে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এক্ষেত্রে ভারতের বৈজ্ঞানিকরা যদি এনার্জি রিকয়ারমেন্ট বা জ্বালানী শক্তির প্রয়োজনীয়তা সংক্রান্ত উদ্ভাবনের কাজ করেন। এর ফলে, দেশ অত্যন্ত উপকৃত হবে। বিশেষ করে, হাইড্রোজেন এনার্জির অপার সম্ভাবনাগুলির কথা ভেবে আমাদের দেশ আমাদের ন্যাশনাল হাইড্রোজেন মিশন কাজ করে চলেছে। এই অভিযানকে সাফল্যমণ্ডিত করে তুলতে ইলেক্টোলাইজারের মতো বিভিন্ন অত্যাবশ্যকীয় উপাদান দেশেই উৎপাদিত হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। এই লক্ষ্যে যদি কোনও নতুন বিকল্পের সন্ধান মেলে, তা হলে সেই লক্ষ্যেও গবেষণা হওয়া উচিৎ। আমাদের বৈজ্ঞানিক এবং শিল্পোদ্যোগগুলির উচিৎ এর জন্য মিলেমিশে কাজ করা।

বন্ধুগণ,

আজ আমরা এমন একটা সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, এমন একটা কালে বেঁচে আছি, যখন মানবতার উপর নতুন নতুন অসুখের সঙ্কট পরিলক্ষিত হচ্ছে। আমাদের নতুন নতুন প্রতিষেধক টিকা প্রস্তুতের জন্য গবেষণা ও অনুসন্ধান উন্নয়নকে উৎসাহ যোগাতে হবে। যেমন আজ আমরা বন্যা ও ভূমিকম্পের মতো ভয়াবহ বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য আগে থেকেই প্রস্তুত থাকি। তেমনই আমাদের ‘ইন্টিগ্রেটেড ডিজিস সার্ভেলেন্স’ বা সংহত রোগ নির্ধারণের মাধ্যমে সতর্কতা অবলম্বন করে সময় থাকতে বিভিন্ন রোগ চিহ্নিতকরণ এবং সেগুলির মোকাবিলা করার উপায় বের করতে হবে। এই লক্ষ্যগুলি পূরণের জন্য ভিন্ন ভিন্ন মন্ত্রককে মিলেমিশে কাজ করতে হবে। লাইফ বা লাইফ স্টাইল ফর এনভাইরনমেন্ট এই বিষয়টি সম্পর্কেও আপনারা, আমার সমসক্সত বন্ধুরা খুব ভালোভাবেই জানেন। আমাদের সায়েন্স কম্যুনিটি এই লক্ষ্যে অনেক বড় সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।

বন্ধুগণ,

ভারতের আহ্বানে যুক্তরাষ্ট্র এ বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালকে ইন্টারন্যাশনাল ইয়ার অফ মিলেটস্‌ রূপে ঘোষণা করেছে। এটা প্রত্যেক ভারতবাসীর জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়। ভারতের মিলেটস্‌ বা বিভিন্ন প্রকার মোটা দানার শস্য ব্যবহারকে উন্নততর করে তোলার লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। বৈজ্ঞানিক গোষ্ঠীগুলির মাধ্যমে জৈব প্রযুক্তির সাহায্যে পোস্ট হার্ভেস্ট লস বা কৃষি পরবর্তী লোকসান হ্রাস করার লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকরি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

বন্ধুগণ,

আজ ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট বা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রেও বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। মিউনিসিপ্যাল সলিড ওয়েস্ট বা পুরসভার কঠিন বর্জ্য, বৈদ্যুতিন বর্জ্য, জৈব চিকিৎসা বর্জ্য এবং কৃষি বর্জ্যের মতো এরকম অনেক ক্ষেত্র রয়েছে, সেগুলি নিয়মিত সম্প্রসারিত হচ্ছে। সেজন্য কেন্দ্রীয় সরকার গত বছরের বাজেটে সার্কুলার ইকনমি বা বৃত্তাকার অর্থ ব্যবস্থার উপর বেশি জোর দিয়েছে। এখন আমাদের মিশন সার্কিলার ইকনমি বা বৃত্তাকার অর্থ ব্যবস্থা অভিযানকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। সেজন্য আমাদের সকলকে এ ধরনের উদ্ভাবন নিয়ে কাজ করতে হবে, যেগুলির মাধ্যমে বিভিন্ন ধাতু ও প্লাস্টিক বর্জ্যের উন্নত ব্যবহার করা সম্ভব হয়। আমাদের সার্বিক দূষণ হ্রাস ও স্ক্র্যাপ বর্জ্যকে উপযোগী বা পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তুলতে একসঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে হবে।

বন্ধুগণ,

আজ ভারত মহাকাশ ক্ষেত্রেও নতুন নতুন উচ্চতা স্পর্শ করছে। লো কস্ট স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকেল বা সুলভে নির্মিত মহাকাশযান উৎক্ষেপণ যানবাহন ব্যবহারের ফলেই আমাদের ক্ষমতা উত্তরোত্তর বাড়ছে। আর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ আমাদের পরিষেবা ও পরিকাঠামো ব্যবহারের জন্য এগিয়ে আসছে। বিভিন্ন বেসরকারি কোম্পানি আর স্টার্টআপগুলিও এই সুযোগগুলি থেকে উপকৃত হতে পারে। বিভিন্ন আরএনডি ল্যাব ও বিদ্যায়তনিক প্রাতিষ্ঠানিক পরিকাঠামোর সঙ্গে যুক্ত হয়ে স্টার্টআপগুলি আরও দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাওয়ার পথ খুঁজে বের করতে পারে। এমনই আরেকটি বিষয় হ’ল – কোয়ান্টাম কম্প্যুটিং আজ ভারত কোয়ান্টাম ফ্রন্টিয়ার রূপেও সারা পৃথিবীতে নিজের পরিচয় গড়ে তুলছে। কোয়ান্টাম কম্প্যুটার্স, কোয়ান্টাম কেমিস্ট্রি, কোয়ান্টাম কম্যুনিকেশন, কোয়ান্টাম সেন্সার্স, কোয়ান্টাম ক্রিপ্টোগ্রাফি এবং নিউ মেটেরিয়ালাস্‌ – এর লক্ষ্যে ভারত দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। আমি চাই যে, আমাদের নবীন প্রজন্মের গবেষকরা এবং বৈজ্ঞানিকরা কোয়ান্টামের ক্ষেত্রেও ক্রমাগত অনুশীলনের মাধ্যমে বিশেষজ্ঞতা অর্জন করুন এবং ক্রমে এক্ষেত্রে বিশ্বে নেতৃত্ব দিন।

বন্ধুগণ,

আপনারাও জানেন যে, বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে নেতৃত্ব তারাই দেন, যাঁরা প্রথম উদ্যোগ নেন। সেজন্য আমাদের এটা তো নিয়মিত দেখতেই হবে যে, বিশ্বের কোথায় কি চলছে। কিন্তু এর পাশাপাশি, যে কাজ কোথাও হচ্ছে না, সেরকম যত ভবিষ্যতমুখী চিন্তাভাবনা রয়েছে, সেগুলিকেও গুরুত্ব দিতে হবে। সেগুলি নিয়েও কাজ করতে হবে। আজ বিশ্বে সর্বত্র এআই, এআর এবং ভিআর – এর সম্ভাবনা নিয়ে নানারকম আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। আমাদের এই বিষয়গুলিকে নিজেদের অগ্রাধিকারে পরিণত করতে হবে। সেমিকন্ডাক্টর চিপস্‌ উৎপাদনের লক্ষ্যেও দেশ বেশ কিছু বড় পদক্ষেপ নিচ্ছে। সময়ের সঙ্গে সেমিকন্ডাক্টর চিপস্‌ – এর ক্ষেত্রেও নতুন নতুন উদ্ভাবনের প্রয়োজন হবে। আমরা কেন না এখন থেকেই দেশের সেমিকন্ডাক্টর পুশকে ফিউচার রেডি বা ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করার লক্ষ্যে ভাবছি না! দেশ যদি এই ক্ষেত্রগুলিতে উদ্যোগ নেয়, তা হলেই আমরা বিশ্বে ইন্ডাস্ট্রি ৪.০-তে নেতৃত্ব প্রদানে সক্ষম হব।

বন্ধুগণ,

আমার দৃঢ় বিশ্বাস, ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের এই অধিবেশনে বিভিন্ন সৃষ্টিশীল বিন্দু নিয়ে ভবিষ্যতের স্পষ্ট পথচিত্র তৈরি করার কাজ হবে। অমৃতকালে আমাদের ভারতকে আধুনিক বিজ্ঞানের সবচেয়ে উন্নত গবেষণাগারে পরিণত করতে হবে। এই আশা নিয়ে আপনাদের সকলকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই। আর এই শীর্ষ সম্মেলনের সাফল্যের জন্য আমার পক্ষ থেকে অনেক অনেক শুভকামনা।

নমস্কার।

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
When PM Modi Fulfilled A Special Request From 101-Year-Old IFS Officer’s Kin In Kuwait

Media Coverage

When PM Modi Fulfilled A Special Request From 101-Year-Old IFS Officer’s Kin In Kuwait
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
Under Rozgar Mela, PM to distribute more than 71,000 appointment letters to newly appointed recruits
December 22, 2024

Prime Minister Shri Narendra Modi will distribute more than 71,000 appointment letters to newly appointed recruits on 23rd December at around 10:30 AM through video conferencing. He will also address the gathering on the occasion.

Rozgar Mela is a step towards fulfilment of the commitment of the Prime Minister to accord highest priority to employment generation. It will provide meaningful opportunities to the youth for their participation in nation building and self empowerment.

Rozgar Mela will be held at 45 locations across the country. The recruitments are taking place for various Ministries and Departments of the Central Government. The new recruits, selected from across the country will be joining various Ministries/Departments including Ministry of Home Affairs, Department of Posts, Department of Higher Education, Ministry of Health and Family Welfare, Department of Financial Services, among others.