দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ছাত্রছাত্রী-অভিভাবক-অভিভাবিকারা প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন

প্রধান শিক্ষক : নমস্কার স্যার!
মোদীজিঃ নমস্কার!
মোদীজি : আমি আপনাদের সবাইকে বিরক্ত করিনি তো? আপনারা সবাই খুব আনন্দের সঙ্গে কথা বলছিলেন তো? আপনারা যেভাবে অনলাইন ক্যালোরি বার্ন করছিলেন!
প্রধান শিক্ষক : নমস্কার স্যার! আর আপনি চলে এলেন। আপনি আমাদের জয়েন করেছেন, সেজন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ স্যার। আমি এখনই এদেরকে বলছিলাম যে একজন বিশেষ অতিথি আসতে পারেন স্যার। এরা হয়তো ভাবেওনি যে…, আর আপনি আসার আগে আপনার সম্পর্কেও অনেক কথা বলছিল। এখানে আপনার অনেক ফ্যান রয়েছে স্যার।
মোদীজি : আচ্ছা, আমি তো হঠাৎই আপনাদের মাঝে চলে এসেছি, কিন্তু আমি আপনাদের বিরক্ত করতে চাই না, কারণ আপনারা বেশ হাসি-খুশি আবহে ছিলেন, আর আমার মনে হচ্ছিল যে এখন আপনাদের মনে পরীক্ষার টেনশন একদমই নেই। সেজন্য আপনাদের আনন্দের আর সীমা পরিসীমা নেই এমনটাই মনে হচ্ছিল। আর আপনারা যার যার বাড়িতে বন্দী থাকার কারণে অনলাইন ক্যালোরি কিভাবে বার্ন করতে হবে সেটাও শিখে নিয়েছেন।
মোদীজি : আচ্ছা তোমরা সবাই কেমন আছ?
ছাত্র : ভালো আছি স্যার! খুব ভালো।
মোদীজি : তোমরা সবাই সুস্থ তো?
ছাত্র : হ্যাঁ স্যার, সবাই সুস্থ।
মোদীজি : তোমাদের পরিবারের সমস্ত সদস্যরা সুস্থ তো?
ছাত্র : হ্যাঁ স্যার।
মোদীজি : আচ্ছা, গত পরশুই তোমরা যখন এটা শুনেছ, তার আগে যত টেনশন ছিল, এখন সেই টেনশন আর নেই, তাই তো?
ছাত্র : হ্যাঁ স্যার! একদম স্যার।
মোদীজি : তার মানে তোমাদের পরীক্ষার জন্য টেনশন হয়।
ছাত্র : হ্যাঁ স্যার! অনেক হয়।
মোদীজি : তাহলে তো আমার বই লেখাটাই বেকার হয়ে গেল! আমি ‘একজাম ওয়ারিয়র’ বইয়ে লিখেছি, কখনও মনের মধ্যে টেনশন রেখো না। তাহলে তোমরা কেন টেনশন করতে?
ছাত্র : স্যার, আমরা যখন রোজ প্রস্তুতি নিতাম তখন টেনশনের নামগন্ধও থাকত না স্যার।
মোদীজি : তাহলে কখন টেনশন হত?
ছাত্র : স্যার, তেমন টেনশন কখনই হয়নি। আর নবীনদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা সবচাইতে প্রয়োজনীয়। সেজন্য এত ভালো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে আমরা আজীবন আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব।
মোদীজি : কিন্তু তুমি বলো তোমার ভালো নাম কী?
ছাত্র : স্যার, হিতেশ্বর শর্মা, পঞ্চকুলা থেকে।
মোদীজি : হিতেশ্বর শর্মাজি, পঞ্চকুলায় থাক?
ছাত্র : হ্যাঁ স্যার!
মোদীজি : কোন সেক্টরে?
ছাত্র : সেক্টর ১০-এ
মোদীজি : আমি সেক্টর ৭-এ থাকতাম। অনেক বছর ছিলাম সেখানে।
ছাত্র : আজকেই জানতে পারলাম স্যার।
মোদীজি : হ্যাঁ, আমি ওখানে থাকতাম।
ছাত্র : হ্যাঁ স্যার, স্যার সেখানে অনেক মানুষ আপনাকে সমর্থন করেন। তাঁরা আবার আপনাকে দেখতে চান।
মোদীজি : আচ্ছা ভাই এটা বলো, তুমি তো দশম শ্রেণীতে টপার ছিলে তাহলে বাড়িতে নিশ্চয়ই ভালোভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছিলে যে দ্বাদশ শ্রেণীতেও টপ করবে। এখন পরীক্ষা না হলে তোমার তো এই পরিশ্রমই বৃথা গেল।
ছাত্র : স্যার আমি এটাই বলছিলাম। প্রত্যাশা ছিল, কিন্তু আমার ভালো লেগেছে, কার্‌ যদি আমি পরীক্ষা দিতাম তাহলেও অনেক চাপে থাকতাম। একটা স্যাচুরেশন পয়েন্টে পৌঁছে গিয়েছিলাম, আর আমরা দেখছিলাম কিভাবে নিরাপত্তাহীনভাবে পরীক্ষার হল-এ যেতে হত। আপনারা খুব ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, আর আমি মনে করি স্যার, যারা টপার কিংবা যারা পরিশ্রম করে, তাদের পরিশ্রম কখনও বৃথা যায় না। সেই জ্ঞান সবসময় আমাদের সঙ্গেই থাকে স্যার। আর যারা নিরন্তর পড়াশোনা করছে, যারা কনসিসট্যান্ট, তারা যে কোনও পরিস্থিতিতে আপনারা যে সিদ্ধান্ত নেবেন সেই পরিস্থিতিতেই তারা সাফল্যের সঙ্গে উত্তীর্ণ হবে। সেজন্য তাদের এত চিন্তা করার প্রয়োজন নেই। কেউ কেউ বলছেন, টপাররা হতাশ। আমি মনে করি, আমাদের সামনে তো সেই বিকল্প রাখা হয়েছে যে আমরা আর একবার পরীক্ষায় বসতে পারি! সেজন্য আমি মনে করি, এটা অত্যন্ত সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত। আর সেজন্য আমরা সারা জীবন আপনার কাছে কৃতজ্ঞ থাকব।
মোদীজি : আচ্ছা বাচ্চারা, তোমাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছে যারা নিজেদের খুব বাহাদুর মনে করে। পালোয়ান মনে করে আর বলে যে আমি মাস্ক পরব না, এই নিয়ম পালন করব না, ওই নিয়ম পালন করব না, তখন তোমাদের কেমন লাগে?
ছাত্রী : স্যার এই নিয়মটাতো পালন করতেই হবে। আর যেমনটি আপনি বলেছেন, কেউ কেউ মাস্ক পরে না বা কোভিড আচরণবিধি অনুসরণ করে না, তখন খুবই খারাপ লাগে, কারণ, আমাদের সরকার এই অতিমারী নিয়ে এত সচেতনতা বৃদ্ধির চেষ্টা করে যাচ্ছে, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলিও সচেতনতা বৃদ্ধির বিষয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছে, তারপরেও যখন মানুষ বোঝে না, তখন খুবই খারাপ লাগে। আর আমি আপনাকে বলতে চাইব যে আমরা এবং আমাদের এলাকার কিছু ছেলে-মেয়ে, আমরাও কয়েক মাস আগে একটা সচেতনতা অভিযান চালিয়েছিলাম যখন এখানে আনলক হয়েছিল। আমরা কিছু পথনাটিকা করেছি, আমরা যথাযথ কোভিড নির্দেশাবলী নিয়ে জায়গায় জায়গায় গিয়ে মানুষকে বলেছি যাতে তাঁরা কোভিড নির্দেশাবলী পালন করেন, শারীরিক দূরত্ব রক্ষা করেন, মাস্ক পরেন, নিয়মিত হাত ধোন – এই সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ যেন তাঁরা নেন। আমার মনে হয়, আমাদের লেভেলে সারা দেশে অনেকেই এরকম উদ্যোগ নিলে, কিছু দায়িত্ব পালন করলে, দেশে অনেক পরিবর্তন আসতে পারে।
মোদীজি : আচ্ছা আমি এটা তোমাদের থেকে জানতে চাইব, ১২ মে তোমাদের মনে কী চলছিল, বাড়ির লোকেরা কী ভাবছিলেন, আর গত পরশু সকাল পর্যন্ত তোমরা যে মুডে ছিলে যে আজ এটা পড়ব, কাল ওটা পড়ব, সকাল ৫টায় উঠে পড়ব, ৪টায় উঠে পড়ব, প্রত্যেকে নিজের মতো করে টাইম টেবিল বানিয়েছিলে, হঠাৎ এগুলির আর প্রয়োজন রইল না, একটা শূন্যতা এসে গেল, এখন তোমরা এই শূন্যতাকে কিভাবে ভরবে?
ছাত্রী : নমস্কার স্যার! আমি গুয়াহাটি রয়্যাল নবেল স্কুলের বিধি চৌধুরি।
মোদীজি : গুয়াহাটির ছাত্রী তুমি?
ছাত্রী : হ্যাঁ স্যার!
মোদীজি : গুয়াহাটির ছাত্রী তুমি?
ছাত্রী : হ্যাঁ স্যার, আমি একথা বলতে চাইব, আপনি যেভাবে বলেছেন যে সকাল পর্যন্ত আমরা নানা রকমভাবে পড়ার মুডে ছিলাম, আপনি ‘একজাম ওয়ারিয়র’ বইয়ে যেভাবে নির্দেশ দিয়েছিলেন, আমরা সেটাও পালন করছিলাম। একটা কথা এখানে বলতে চাইব, যখন দশম শ্রেণীতে পড়তাম, দশম শ্রেণীর পরীক্ষার আগে কলকাতা থেকে গুয়াহাটি আসার পথে বিমানবন্দরের বুক স্টলে আপনার এই বইটি দেখেছি। তখনই এটা কিনে নিয়েছি। তারপরই আমার দশম শ্রেণীর পরীক্ষা দিয়েছি। আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, আমি একমাস ধরে এই বইটি পড়েছি। এই বইয়ের শুরুতেই একটা জিনিস ছিল যে পরীক্ষাকে উৎসবের মতো করে পালন কর। তাহলে স্যার উৎসবকে ভয় পাওয়ার কী আছে? তার মানে উৎসবের জন্য আমরা যেমন প্রস্তুতি নিই, আর সেটা যাতে সফল হয়, সেজন্য পরিশ্রম করতে থাকি। আপনি ওই বইয়ে যোগাভ্যাসের যে উপায়গুলি বলেছেন আর বইটি যোগের মন্ত্র দিয়ে শেষও করেছেন। তো স্যার, এই দুটি জিনিসই আমার মনে নিয়মিত চলছিল যে পরিস্থিতি ভালো নয়। কিন্তু পাশাপাশি পরীক্ষার জন্যও প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষার জন্য যেভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, আপনার ওই বইটি সঙ্গে থাকায় আমাকে কোনরকম টেনশনের শিকার হতে হয়নি।
মোদীজি : আচ্ছা! কিন্তু আমার প্রশ্নের জবাব তো দিলে না? আচ্ছা, আর একজন কেউ হাত তুলছে, সে সুযোগ পায়নি। তোমার ভালো নাম কী?
ছাত্র : স্যার আমার নাম নন্দন হেগড়ে।
মোদীজি : নন্দন হেগড়ে? কর্ণাটক থেকে?
ছাত্র : হ্যাঁ স্যার কর্ণাটক থেকে। বেঙ্গালুরু থেকে স্যার।
মোদীজি : হ্যাঁ বলো।
ছাত্র : স্যার আমি ভেবেছি এই পরীক্ষা আমার জীবনের শেষ পরীক্ষা নয়। ভবিষ্যতেও অনেক পরীক্ষা আসবে। এখন আমাদের সুস্থ থাকতে হবে আর ভবিষ্যতের পরীক্ষাগুলির জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।
মোদীজি : আচ্ছা এখন তোমরা পরীক্ষা থেকে মুক্ত হয়েছ, তাহলে এখন কি আইপিএল দেখে সময় কাটাবে, নাকি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল দেখবে, নাকি ফ্রেঞ্চ ওপেন দেখার কথা ভাববে, নাকি জুলাইয়ে অলিম্পিক শুরু হতে চলেছে, সেই অলিম্পিকের কথা ভাববে? ভারত থেকে অলিম্পিকে যোগদান করতে কারা যাচ্ছেন? তাঁদের ব্যাকগ্রাউন্ড কী? এসব কথা ভাববে, নাকি আগামী ২১ তারিখে যে যোগ দিবস রয়েছে, সেটি উদযাপনের কথা ভাববে!
ছাত্র : এই সবক’টি নিয়ে ভাববো স্যার!
মোদীজি : ওই চশমা পরা মেয়েটা কিছু বলতে চাইছে। অনেকক্ষণ ধরে ও বলতে পারছে না।
ছাত্রী : নমস্কার স্যার! স্যার যখনই জানতে পেরেছি আপনি আমাদের পরীক্ষা ক্যান্সেল করে দিয়েছেন, প্রথমে তো খুব খুশি হয়েছি। সমস্ত চাপ দূরে সরে গেছে। কিন্তু আমরা জানি যে এখন আমাদের বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য পড়াশোনা করতে হবে। আগে মনে প্রস্তুতি ছিল যে বোর্ডের পরীক্ষার প্রস্তুতি সেরে পরীক্ষা দিয়ে তারপর প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেব। এখন আমাদের হাতে সময় বেড়েছে। আমরা খুব ভালোভাবে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে পারব। সেজন্য স্যার, আপনাকে অনেক কৃতজ্ঞতা জানাই।
মোদীজি : তাহলে মাথা থেকে পরীক্ষা এখনও যায়নি।
ছাত্রী : হ্যাঁ স্যার! এত সহজে যাবে না।
মোদীজি : বাড়িতে মা-বাবার সব কথা শোন?


ছাত্রী : ইয়েস স্যার!
মোদীজি : ওঁরা কোথায়? দেখাও!
ছাত্রী : স্যার আমি ডাকছি।
মোদীজি : কোথায় দেখাও?
মোদীজি : নমস্কার!
অভিভাবক : নমস্কার স্যার!
মোদীজি : আপনার কি মনে হয় মেয়ে এখন চাপমুক্ত?
অভিভাবক : স্যার খুব ভালো সিদ্ধান্ত, কারণ, গোটা দেশের পরিস্থিতি খুব খারাপ। আর এই ছেলে-মেয়েরা চাপমুক্ত হওয়ায় ভবিষ্যতের জন্য নিজেদের লক্ষ্য অনুযায়ী প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারবে। আমার খুব ভালো লেগেছে।
মোদীজি : খুব ভালো। আমারও ভালো লেগেছে। আপনারা খুব ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে জিনিসটাকে নিয়েছেন। হ্যাঁ, আর কোনও ছেলে-মেয়ে কিছু বলবে?
ছাত্র : নমস্কার স্যার! আমি কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় বেঙ্গালুরুর ছাত্র। আমি আপনার বড় ফ্যান স্যার!
মোদীজি : থ্যাঙ্ক ইউ!
ছাত্র : স্যার আপনার সিদ্ধান্ত খুব ভালো, কারণ, ‘সর সালামাৎ তো পাগড়ি হাজার’ অর্থাৎ, মাথা অক্ষত থাকলে হাজারটা পাগড়ি পাওয়া যাবে। মাথাটাকে ঠিক রাখতে হবে স্যার।
মোদীজি : হ্যাঁ, স্বাস্থ্যই সম্পদ, আমাদের দেশে বলে না!
ছাত্র : হ্যাঁ স্যার! স্যার আপনি আমার জীবনের প্রেরণা।
মোদীজি : আচ্ছা। ‘সর সালামাৎ তো পাগড়ি হাজার’ এটা ভেবেছ খুব ভালো। কিন্তু মাথা বলতে এখানে কী শুধু মস্তিষ্কের কথা ভেবেছ নাকি গোটা শরীরের কথা ভেবেছ?
ছাত্র : স্যার গোটা শরীরের কথাই ভেবেছি।
মোদীজি : আচ্ছা! তাহলে শরীর সুস্থ রাখার জন্য কী করো? কতটা সময় দাও?
ছাত্র : আমি প্রতিদিন সকালে উঠে ৩০ মিনিট যোগাভ্যাস করি স্যার। যোগাভ্যাস, আর তারপর কসরত। আমি আর আমার ভাই দু’জনে একসঙ্গে করি, আমার ছোট ভাই।
মোদীজি : তোমার বাড়ির লোক কিন্তু শুনছে! ভুল বললে ধরা পড়বে। আমি জিজ্ঞাসা করব।
ছাত্র : না স্যার! আমি প্রতিদিন ৩০ মিনিট করি। আমি আর ভাই প্রতিদিন যোগাভ্যাস করি। তারপর মন হালকা করার জন্য তবলাও বাজাই। আমি এক বছর ধরে তবলার প্রশিক্ষণ নিচ্ছি। রোজ তবলা বাজাই। এতে মন ভালো থাকে স্যার।
মোদীজি : তাহলে তোমার পরিবারে গান-বাজনার চল রয়েছে।
ছাত্র : হ্যাঁ হ্যাঁ! আমার মা সেতার বাজান স্যার, আগে তানপুরা বাজাতেন।
মোদীজি : এজন্য বাড়িতে সঙ্গীতের আবহ রয়েছে।
মোদীজি : আচ্ছা, এতক্ষণ যে কথা বলেনি, এরকম আরেকজনকে কথা বলার সুযোগ দেব। ওই যে মেয়েটা সাদা ইয়ারফোন লাগিয়ে আমার সামনে বসে আছে, কিছু বলতে চাইছে।
ছাত্রী : নমস্কার স্যার! আমার নাম কশিশ নেগি। আমি হিমাচল প্রদেশের সোলানে অবস্থিত এমআরএডিএভি পাবলিক স্কুলে পড়ি। স্যার, আমি আপনাকে বলতে চাই, এ যেন একটি স্বপ্ন সত্যি হল। আমি কখনও ভাবিইনি যে এভাবে আপনার সঙ্গে দেখা হবে! আর স্যার, আপনাকে ধন্যবাদ জানাতে চাইব, আপনি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা যথাযথ সিদ্ধান্ত। কারণ দেড় বছর ধরে আমাদের মতো প্লাস-২-এর ছাত্রছাত্রীদের জীবন একরকম বন্দীত্বের মধ্যে কাটছে। পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হচ্ছিল না। সুরাহাও হচ্ছিল না। আপনি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এতে আমরা খুব খুশি। আপনাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই স্যার।
মোদীজি : ওই যে মেয়েটা আঙুল উঠিয়েছ, বলো কী বলবে?
ছাত্রী : আমি রাজস্থানের জয়পুরের দিল্লি পাবলিক স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী। আমার নাম জন্নত সাক্ষী। দ্বাদশ বোর্ডের পরীক্ষার জন্য আপনি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, আমি তাকে স্বাগত জানাই। বর্তমান পরিস্থিতির নিরিখে এই সিদ্ধান্ত যথাযথ। কারণ ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সর্বোপরি। আমাদের সিবিএসই বোর্ডের ওপর অটুট বিশ্বাস রয়েছে, মূল্যায়নের জন্য যে মানদণ্ডেই ঠিক করুক না কেন, সেটা আমাদের হিতে হবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আমাদের পরিশ্রমের ফল পাব। ধন্যবাদ স্যার।
মোদীজি : আচ্ছা, সমস্ত অভিভাবক-অভিভাবিকাদের বলছি, সবাই স্ক্রিনে চলে আসুন। ছাত্রছাত্রীদের বলছি, মা-বাবাকে ডেকে নাও, কারণ, সবাই হয়তো আসতে চাইছেন, আর তাঁরা থাকলে তোমরা সত্যি কথা না বলে থাকতে পারবে না। হ্যাঁ, আমার সামনে যাদের দেখতে পাচ্ছি, ওই যে সাদা শার্ট ছেলেটি কিছু বলতে চাইছ।
ছাত্র : স্যার আমার মা এখানে নেই। কিন্তু যখন আমার কাছে থাকেন, তখন বলতে থাকেন, ‘মোদীজি করে দেবে, মোদীজি করে দেবে, চিন্তা করিস না। আর লকডাউনের সময় আপনার দাড়ি যেভাবে বাড়ছিল, আমার মা বলছিল, ‘এই লকডাউনে বেচারা কি করে দাড়ি কাটবে’? আমি বলি, মোদীজি হয়তো এরকম দাড়ি বড়োই রাখতে চাইছেন।
ছাত্রী : স্যার আমার নাম শিবাঞ্জলি আগরওয়াল। স্যার আমি নতুন দিল্লির জেএনইউ কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের ছাত্রী। স্যার আমি এটা বলতে চাইব, পরীক্ষা বাতিল হওয়ায় আমরা যতটা অতিরিক্ত সময় পেয়েছি, সেটা বিভিন্ন কলেজের প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রস্তুতি, আমাদের নানা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতিতে কাজে লাগাব। সেজন্য স্যার, এই পরীক্ষা বাতিল করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
মোদীজি : আচ্ছা, আপনারা একটা কাজ করুন। কাগজে নম্বর লিখে বসুন যাতে আমি যে নম্বর বলব তিনি কথা বলবেন। কারণ আমি আপনাদের সবার নাম তো জানি না! হঠাৎ এসে গিয়েছি। আপনাদের সমস্যায় ফেলছি।
অভিভাবক : নমস্কার স্যার! আমরা আপনার অনেক বড় ফ্যান। আপনি যে সিদ্ধান্তই নেবেন তা ছেলে-মেয়েদের হিতে হবে। আমরা আপনার সঙ্গে আছি স্যার। সবসময় আপনার সঙ্গে থাকব।
মোদীজি : নম্বর ১।
অভিভাবক : নমস্কার স্যার! অনেক ধন্যবাদ। আপনার সিদ্ধান্ত আমাদের ছেলে-মেয়েদের জন্য খুব ভাল ছিল। এখন আমাদের কাছে …।
মোদীজি : এখন আমি আপনাদের সবাইকে বলছি,আপনারা এই সিদ্ধান্তের বাইরে যান। পরীক্ষার কথা ছাড়ুন। অন্য কোনও বিষয়ে কথা বলতে পারেন?
অভিভাবক : অবশ্যই স্যার, অবশ্যই। আর যদি সত্যি কথা বলি, শাহরুখ খানের সঙ্গে দেখা হলে যতটা ভালো লাগত, আপনার সঙ্গে দেখা হয়ে তার থেকে বেশি ভালো লাগছে। আমার স্বপ্ন সত্যি হয়েছে। আপনি সেরা। এই যে ছেলে-মেয়েদের জন্য ভাবছেন, সময় দিচ্ছেন, দেখবেন এরা এর সঠিক ব্যবহার করবে এবং ভবিষ্যতে নিজেদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ তৈরি করবে।
মোদীজি : ২৬ নম্বর।
অভিভাবিকা : স্যার একজন নর্তকি হিসেবে আমি মনে করি মানসিক স্বাস্থ্য এবং শারীরিক স্বাস্থ্য দুটিই ঠিক থাকতে হবে। সেজন্য আমি নাচ করি। আমি কত্থক নাচি। আর যখন মনে হয় তখন খুব সাইকেল চালাই। আপনার এই সিদ্ধান্ত জানার পর আমি ১২টা পর্যন্ত ঘুমিয়েছিলাম কারণ ছেলে-মেয়েদের পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য সকালবেলাতেই উঠে পড়তে হত। সেদিন ১২টা পর্যন্ত ঘুমিয়েছিলাম স্যার।
ছাত্র : স্যার আমার নাম …। আমি তামিলনাড়ুর ছাত্র। স্যার আমি জানতাম এই বোর্ডের পরীক্ষা ক্যান্সেল হবে। সেজন্য আগে থেকেই খুব একটা পড়াশোনা করিনি। এমনিতে, রাজস্থানী, কিন্তু এখন তামিলনাড়ুতে থাকি।
মোদীজি : তাহলে কি তুমি জ্যোতিষ শাস্ত্র পড়? জ্যোতিষ শাস্ত্র জানো? নাহলে কেমন করে বুঝতে পেরেছ যে এমনটি হবে।
ছাত্র : এমনিই অনুমান করেছি স্যার। খুব ভালো সিদ্ধান্ত ছিল। আর লকডাউনের ফলে বাড়ির সবার সঙ্গে খুব ভালো সময় কাটছে।
মোদীজি : সপ্তাহ খানেকের মধ্যে বাড়ির লোকেরা দেখবে সব বিরক্ত হয়ে যাবে। কিছুই করছিস না, তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠছিস না, ঠিক সময় স্নান করছিস না, তাড়াতাড়ি কর তোর বাবার বাড়ি ফেরার সময় হয়ে গেছে – এরকম বকা খাবে।
ছাত্রী : নমস্কার স্যার! আমার নাম তমন্না। আমি পশ্চিমবঙ্গের ডিএভি মডেল স্কুলের ছাত্রী। আপনি যেমন বলেছেন, সত্যি সত্যি আমাদের হাতে এখন অনেক সময়। সেজন্য লকডাউনে আমি ও আমার এক বন্ধু মিলে একটি ইউটিউব চ্যানেল শুরু করেছি। এখন ওটাতেই মনোযোগ দিচ্ছি আর তার সঙ্গে –
মোদীজি : কী নাম? তোমাদের ইউটিউব চ্যানেলের নাম কী?
ছাত্রী : tamannasharmilee। ওই চ্যানেলে আমরা নানা ধরনের ভিডিও শ্যুট করে ছাড়ি। আমরা একটা ছোট কবিতা আবৃত্তি করে ভিডিও করেছিলাম। একটা শর্ট ফিল্মও তৈরি করেছি। সেটাও দিয়েছি।
মোদীজি : নম্বর ২১। হ্যাঁ বলো!
ছাত্র : স্যার, আমার সঙ্গে আমার ঠাকুমা আর বাবা রয়েছেন।
অভিভাবক : স্যার, আপনি আমাদের দেশের জন্য যা যা করেছেন সেজন্য ধন্যবাদ। আমার এর বেশি কিছু বলার মতো শব্দ নেই। আপনি প্রত্যেক ক্ষেত্রে যেভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন, সেজন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
ছাত্র : স্যার আমার ঠাকুমা সবসময় আপডেটেড থাকেন। আপনার প্রতিটি খবর তিনি ফলো করেন আর আমাকে বলতে থাকেন। আজ এটা ঘোষণা হয়েছে, আজ ওটা ঘোষণা হয়েছে। তিনি আপনার অনেক বড় ফ্যান।
মোদীজি : আচ্ছা! তোমার ঠাকুমা সব রাজনীতি জানেন?
ছাত্র : হ্যাঁ স্যার। ঠাকুমা রাজনীতি ভালো জানেন। সমস্ত রাজনীতির খবর আপডেটেড থাকে।
মোদীজি : আচ্ছা, স্বাধীনতার ৭৫তম বছর আসতে চলেছে। স্বাধীনতা সংগ্রামে তোমাদের জেলায় কী কোনও ঘটনা হয়েছিল? স্বাধীনতার সময় তোমার জেলায় অথবা আশপাশের জেলায় কী হয়েছিল তা নিয়ে একটা ভালো প্রবন্ধ লিখতে পারবে?
ছাত্র : হ্যাঁ স্যার, একদম লিখতে পারব।
মোদীজি : খোঁজখবর নিয়ে, গবেষণা করে লিখবে তো?
ছাত্র : অবশ্যই স্যার!
মোদীজি : ঠিক কথা বলছ?
ছাত্র : অবশ্যই স্যার!
মোদীজি : ঠিক আছে, তাহলে তো খুব ভালো।
অভিভাবক : স্যার আমিও আপনার খুব বড় ফ্যান। স্যার আপনি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটা আমার খুব ভালো লেগেছে। আপনি সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের সম্পর্কে যেভাবে ভেবেছেন, এটা খুব ভালো লেগেছে। আপনি কাশ্মীরে সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করেছেন, এটাও আমার খুব ভালো লেগেছে স্যার। সেটাও খুব ভালো সিদ্ধান্ত ছিল।
মোদীজি : ধন্যবাদ জি।
ছাত্র : স্যার আমার সঙ্গে আমার বাবা-মা রয়েছেন।
মোদীজি : সবাই জেনে গেছে তোমরা আমাকে কী কী প্রশ্ন করেছ। এখন অন্য কিছু জিজ্ঞাসা করো।
অভিভাবক : স্যার আমি কিছু বলতে চাই। স্যার আমি আপনার অত্যন্ত গুণগ্রাহী, আর আপনার সততাকে খুব সম্মান করি। কিন্তু স্যার, আপনার প্রতি একটা অনুরোধ, আমাদের দেশে যাঁরা সততা নিয়ে কাজ করতে চান, তাঁদের অনেক শোষণ হয়। দয়া করে এমন কিছু নীতি তৈরি করুন, যাতে সৎ মানুষেরা সম্মান পান এবং তাঁদের উদাহরণ নিয়ে ছেলে-মেয়েরাও অনুসরণ করে, অন্যরাও অনুসরণ করে।
মোদীজি : নীতি তো তৈরি হয়, কিন্তু কিছু মানুষের প্রবৃত্তি এমন যে তাতে বাধা পড়ে। আমরা সবাই মিলে এমন পরিবেশ গড়ে তুলতে চাইলে অবশ্যই হবে। সব ভালো হতে পারে।
মোদীজি : নম্বর ৩১।
ছাত্রী : জয় হিন্দ স্যার!
মোদীজি : জয় হিন্দ! হ্যাঁ বলো তুমি কি বলতে চাও মা।
ছাত্রী : স্যার আমার নাম অরনি সামলে। আমি ইন্দোরের অ্যানি বেসান্ত স্কুলের ছাত্রী। স্যার আপনি এখন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা খুব ভালো। তাছাড়াও …
মোদীজি : তোমাদের ইন্দোর কি জন্য বিখ্যাত?
ছাত্রী : স্যার পরিচ্ছন্নতার জন্য।
মোদীজি : হ্যাঁ, এই পরিচ্ছন্নতার জন্য ইন্দোরের মানুষ এত উদ্যোগ নিয়েছে যে এখন সারা দেশে ইন্দোরের পরিচ্ছন্নতা নিয়ে কথা হয়। আচ্ছা, তোমার নম্বরটা আমি বুঝতে পারছি না বাবা। তোমার কী ৫ নম্বর?
ছাত্র : নমস্কার স্যার! স্যার আমি হিমাচল প্রদেশের মান্ডির জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ের ছাত্র। আমার বাবা আপনার বড় ফ্যান।
মোদীজি : তোমার গ্রাম কোথায়?
অভিভাবক : হিমাচল প্রদেশের মান্ডি জেলায়, মান্ডির কাছেই ৮-৯ কিলোমিটার দূরে। আপনি কেমন আছেন?
মোদীজি : আমি ভালো আছি। আগে আপনি বলুন আপনাদের ওখানে সেওবড়ি পাওয়া যায়? ঠিক আছে আমার খুব ভালো লেগেছে।
খুব ভালো লেগেছে। আপনাদের সবার সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হয়েছে, আর আমার এই বিশ্বাস আরও দৃঢ় হয়েছে যে ভারতের নবীন প্রজন্ম ইতিবাচক ও বাস্তব বুদ্ধিসম্পন্ন। নেতিবাচক ভাবনা মাথায় না রেখে আপনারা প্রত্যেক সমস্যা এবং প্রতিস্পর্ধাকেও নিজেদের শক্তি করে তুলেছেন। এটা আমাদের দেশের নবীন প্রজন্মের একটি বৈশিষ্ট্য। আমি ছাত্রছাত্রীদের বলছি, বাড়িতে থেকে তোমরা যত নতুন নতুন উদ্ভাবন করেছ, যত নতুন নতুন জিনিস শিখেছ, তা তোমার মনে নতুন আত্মবিশ্বাস গড়ে তুলেছে। আর আমি এটা দেখছিলাম, আজ আমি হঠাৎ করেই তোমাদের আলোচনায় ঢুকে পড়েছি। তোমরা জানতেও না। তবুও তোমরা কেউ কথা বলতে গিয়ে তোতলাওনি আর যেভাবে রোজ নিজেদের শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলো কিংবা নিজেদের মা-বাবার সঙ্গে কথা বলো, তেমনভাবেই আমার সঙ্গে কথা বলছিলে। এই আন্তরিকতা আমাকে অত্যন্ত আনন্দ দিয়েছে। এই অভিজ্ঞতা অত্যন্ত আনন্দদায়ক। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বাড়িতে বসে বাচ্চারা এত সহজভাবে আমার সঙ্গে কথা বলছিল। অন্যথা এরকম কখনও হয় যে চমকে গিয়ে বা ঘাবড়ে গিয়ে অনেকে কথাই বলতে পারে না। কিন্তু আমি দেখতে পাচ্ছি যে তোমরা অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কথা বলছিলে। এটা আমার জন্য খুব ভালো অভিজ্ঞতা।
বন্ধুগণ,
তোমাদের অভিজ্ঞতা জীবনের প্রত্যেক স্তরে তোমাদের অনেক কাজে লাগবে। কঠিন সময়ের যখন মুখোমুখি হবে তখন বারবার তাকে মনে করে কান্নাকাটি করে সময় নষ্ট করবে না। কঠিন সময় থেকেও হয়তো অনেক কিছু শিখেছ। সেই শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে গেলে জীবনে অনেক শক্তি পাবে। তোমরা যে ক্ষেত্রেই যাও না কেন, সেখানে অনেক নতুন কিছু করতে পারবে। তোমরা হয়তো দেখেছ, স্কুলে, কলেজে আমাদের টিম স্পিরিট সম্পর্কে বারবার বলা হয়, শেখানো হয়। আমাদের ঐক্যবদ্ধ শক্তি এবং সম্পর্কের শিক্ষা দেওয়া হয়। কিন্তু করোনার কঠিন সময়ে আমরা এই সম্পর্ককে কাছে থেকে দেখা, বোঝা এবং তাকে ভালোভাবে উপভোগ করার নতুন নতুন পদ্ধতি শিখেছি এবং সুযোগ পেয়েছি। কিভাবে আমাদের সমাজের প্রত্যেকেই সংকটের সময় পরস্পরের কাজে লেগেছি, কিভাবে দেশের টিম স্পিরিট এত বড় সমস্যার মোকাবিলা করেছে, এ সবকিছু আমাদের অভিজ্ঞতায় সঞ্চিত হয়েছে। গণ-অংশীদারিত্ব এবং টিম হিসেবে কাজ করার এই অভিজ্ঞতা তোমাদের একটি নতুন শক্তি যোগাবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
বন্ধুগণ,
কঠিন সময়েও আমাদের দেশের মানুষ যেভাবে বুক চিতিয়ে এগিয়ে গেছে, আমরা ইতিহাসে যেমন দেখেছি, এবারেও তেমনই যা সঙ্গেই কথা বলি, যেমন একটু আগেই একটি মেয়ের সঙ্গে কথা বলছিলাম, এই বিপর্যয়ে তার বাড়ির দু’জন সদস্যকে সে হারিয়েছে। এটা কম কথা নয়। জীবনে প্রিয়জনদের হারানো অত্যন্ত দুঃখের। কিন্তু তবুও তার চোখে আমি বিশ্বাসের ঝলক দেখতে পেয়েছি। আমি জানি, তোমরা অনেকেই ভাবছ, বিপর্যয় এসেছে ঠিকই, কিন্তু আমরা অবশ্যই এই বিপর্যয়কে জয় করব। প্রত্যেক ভারতবাসীর মুখে আজ এই কথাই শোনা যাচ্ছে। এরকম বিশ্বব্যাপী মহামারীর সঙ্কট বিগত এক শতাব্দীতে আসেনি। গত ৪-৫ প্রজন্মের কেউ এরকম বিপত্তির কথা শোনেননি, এরকম সঙ্কট দেখননি, কিন্তু আমরা এই কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি, কিন্তু তবুও প্রত্যেক ভারতবাসীর মুখ থেকে একটাই শব্দ বেরোচ্ছে – আমরা একে হারাব, আমরা এই বিপর্যয়কে জয় করব, আর নতুন প্রাণশক্তি নিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব। আমরা সবাই মিলেমিশে এগিয়ে যাব এটাই তো আমাদের সঙ্কল্প, আর আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে তোমরা ভবিষ্যতে যেখানেই যাবে এভাবে মিলেমিশে এগিয়ে যাবে আর দেশকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবে।
আর যেমনটি আগে বলেছি, আগামী ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস। সেদিন পরিবেশের জন্য কিছু না কিছু অবশ্যই করবে! কারণ এই পৃথিবী, এই প্রকৃতিকে বাঁচানো আমাদের সকলের দায়িত্ব। তেমনই আগামী ২১ জুন তোমাদের নিশ্চয়ই মনে আছে, সেদিন আন্তর্জাতিক যোগ দিবস। আর তোমরা নিশ্চয়ই জানো রাষ্ট্রসঙ্ঘ যত সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এই যোগ দিবসের ক্ষেত্রে বিশ্বের সব থেকে বেশি দেশ এই প্রস্তাবকে সমর্থন করেছিল। রাষ্ট্রসঙ্ঘের প্রায় সমস্ত সদস্য দেশ একে সমর্থন করেছে। আগে কখনও এরকম হয়নি। এহেন যোগ দিবসে তোমরাও নিজেদের পরিবারে থেকে অবশ্যই যোগাভ্যাস করবে। আর আমি অনেক কিছু বলেছি যেমন এতগুলি ক্রীড়া প্রতিযোগিতা হবে, অলিম্পিক হবে। তোমাদের জানা থাকা উচিৎ আমাদের দেশের কোন কোন প্রতিভাশালী খেলোয়াড় এবার অলিম্পিকে অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছেন। অলিম্পিকে অংশগ্রহণকারী খেলোয়াড়রা নিজেদের যোগ্য করে তুলতে কত না পরিশ্রম করেছেন, কেমন কঠিন পরিস্থিতিতে তাঁরা নিজেদের প্রস্তুতি নিয়েছেন! এসব জানলে আমরা একটি নতুন প্রেরণা পাব। এই নতুন প্রেরণা আমাদের নতুন শক্তি দেবে। আর সেজন্য আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আমার সমস্ত নবীন বন্ধুরা এই সময়টার অত্যধিক সদ্ব্যবহার করবে।
এই করোনার কালখণ্ডে যেভাবে টিকাকরণ অভিযান এগিয়ে চলেছে, তোমার পরিবারের কারোর কারোর টিকা হয়েছে। যাঁদের হয়নি তাঁদের নাম নথিভুক্ত করার কাজটা তোমরা করে দিতে পার। প্রতিবেশীদের নাম নথিভুক্তকরণের কাজও তোমরা করতে পার। যেভাবে টিকা উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেভাবে আরও বেশি মানুষ একসঙ্গে টিকা পাবেন। তোমরা মনের মধ্যে সেবা ভাব রেখে অবশ্যই এই অভিযানকে সাফল্যমণ্ডিত করে তোলার ক্ষেত্রে নিজেদের অবদান রাখতে পার। তোমাদের সবাইকে আমার অনেক শুভকামনা জানাই। তোমাদের মাথার ওপর যেন সবসময় তোমাদের মা-বাবার আশীর্বাদ বজায় থাকে। নিজের নিজের স্বপ্ন নিয়ে তোমরা বাঁচো, আর সেই স্বপ্নের জন্য তোমাদের বাবা-মা যেন তোমাদের নিয়ে গর্ব করেন। আমার দৃঢ় বিশ্বাস তাঁরা তা করবেন। আমি হঠাৎ করে তোমাদের আলোচনায় ঢুকে পড়েছি। কিন্তু তোমাদের সঙ্গে কথা বলে আমার খুব ভালো লেগেছে। তোমরা নিজেদের মধ্যে হাসি-মজা করছিলে, হাস্যকৌতুক করছিলে, কিন্তু আমি এসে একটু তোমাদের বিরক্ত করেছি। কিন্তু আমার খুব ভালো লেগেছে। আমি তোমাদের প্রতি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।
অনেক অনেক ধন্যবাদ!

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
Annual malaria cases at 2 mn in 2023, down 97% since 1947: Health ministry

Media Coverage

Annual malaria cases at 2 mn in 2023, down 97% since 1947: Health ministry
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
Prime Minister condoles passing away of former Prime Minister Dr. Manmohan Singh
December 26, 2024
India mourns the loss of one of its most distinguished leaders, Dr. Manmohan Singh Ji: PM
He served in various government positions as well, including as Finance Minister, leaving a strong imprint on our economic policy over the years: PM
As our Prime Minister, he made extensive efforts to improve people’s lives: PM

The Prime Minister, Shri Narendra Modi has condoled the passing away of former Prime Minister, Dr. Manmohan Singh. "India mourns the loss of one of its most distinguished leaders, Dr. Manmohan Singh Ji," Shri Modi stated. Prime Minister, Shri Narendra Modi remarked that Dr. Manmohan Singh rose from humble origins to become a respected economist. As our Prime Minister, Dr. Manmohan Singh made extensive efforts to improve people’s lives.

The Prime Minister posted on X:

India mourns the loss of one of its most distinguished leaders, Dr. Manmohan Singh Ji. Rising from humble origins, he rose to become a respected economist. He served in various government positions as well, including as Finance Minister, leaving a strong imprint on our economic policy over the years. His interventions in Parliament were also insightful. As our Prime Minister, he made extensive efforts to improve people’s lives.

“Dr. Manmohan Singh Ji and I interacted regularly when he was PM and I was the CM of Gujarat. We would have extensive deliberations on various subjects relating to governance. His wisdom and humility were always visible.

In this hour of grief, my thoughts are with the family of Dr. Manmohan Singh Ji, his friends and countless admirers. Om Shanti."