খুলুমবাই! (নমস্কার)
আসামের রাজ্যপাল শ্রী লক্ষ্মণ প্রসাদ আচার্যজি, মুখ্যমন্ত্রী শ্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মাজি, যাঁরা ভার্চ্যুয়ালি আমাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন এবং মঞ্চে উপস্থিত বিশিষ্ট অতিথিবৃন্দ, ভাই ও বোনেরা!
আজ পবিত্র কার্ত্তিক পূর্ণিমা ও দেব দীপাবলি। এই উপলক্ষে আমি সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই। আজ গুরু নানক দেবজির ৫৫৫তম প্রকাশ পর্ব। আমি বিশ্বের আমাদের শিখ ভাই ও বোন সহ সমগ্র দেশবাসীকে এই উপলক্ষে অভিনন্দন জানাই। এছাড়াও, আজ সারা দেশজুড়ে জনজাতীয় গৌরব দিবস উদযাপিত হচ্ছে। আজ সকালেই আমি বিহারের জামুই-এ ভগবান বিরসা মুন্ডার সার্ধ জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছি। আর এখন এই সন্ধ্যায়, আমরা প্রথম বোড়ো মহোৎসব উদ্বোধন করছি। আসাম সহ দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে বোড়ো সম্প্রদায়ের জনসাধারণ এই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছেন। আমি উপস্থিত বোড়ো ভাই-বোনেদের আমার উষ্ণ অভিনন্দন জানাই। আপনারা শান্তি, সংস্কৃতি এবং সমৃদ্ধির এক নতুন যুগ উদযাপনের জন্য এখানে সমবেত হয়েছেন।
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আপনারা জানেন না, এই অনুষ্ঠানটির সঙ্গে আমার আবেগ কতটা জড়িয়ে রয়েছে। যাঁরা দিল্লিতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে বসে বিভিন্ন তত্ত্ব আওড়ান এবং দেশের জন্য নানা গল্প তৈরি করেন, তাঁরা হয়ত এই অনুষ্ঠানের গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারছেন না। ৫০ বছরের রক্তক্ষয়, হিংসা – ৩-৪টি প্রজন্মের যুব সম্প্রদায়ের স্বপ্ন চুড়মার হয়ে গেছে। বহু দশক পর বোড়ো সম্প্রদায়ের জনগণ আজ এই উৎসবে যোগ দিয়েছেন। তাঁরা রণচণ্ডী নৃত্য উপভোগ করছেন। আমার এক সময়ে মনে সংশয় দেখা দিয়েছিল, যাঁরা দিল্লিতে রয়েছেন তাঁরা কি এই অনুষ্ঠানের গুরুত্ব বুঝতে পারবেন। এই অর্জন রাতারাতি এক রাতে হয়নি। ধৈর্য্য এবং অধ্যবসায়ের সঙ্গে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করা হয়েছে। আজ আপনারা ইতিহাসের এক নতুন অধ্যয় রচনা করছেন।
আমার বোড়ো ভাই ও বোনেরা,
২০২০ সালে বোড়ো শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর আমার কোকরাঝাড় সফর করার সৌভাগ্য হয়েছিল। সেই সময়ে যে ভালোবাসা আপনারা আমাকে দেখিয়েছেন, তা দেখে আমি বুঝতে পেরেছি এ আপনাদের হৃদয়ের প্রকৃত অনুভূতি। অনেক সময়েই বিভিন্ন অনুষ্ঠান হয়ে যাওয়ার পর সে সম্পর্কে আর কোনো আবেগ জড়িত থাকে না। কিন্তু, চার বছর পরেও সেই একই ভালোবাসা, উৎসাহ-উদ্দীপনা আজও আমার হৃদয়কে ছুঁয়ে গেছে। আমি আমার বোড়ো ভাই ও বোনেদের বলছি, বোড়োল্যান্ডে শান্তি ও সমৃদ্ধির এক নতুন প্রভাতের সেদিন যে সূচনা হয়েছিল, তা কোনো ফাঁকা বুলি ছিল না। হিংসাকে সরিয়ে যে শান্তির পথে আপনারা এগিয়েছিলেন, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন, তা আমার মনেও দাগ কেটেছে। আজ সেই একই উৎসাহ-উদ্দীপনা আপনাদের মধ্যে আমি দেখতে পাচ্ছি। আমি নিশ্চিত, বোড়ো জনসাধারণের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের ভিত সেদিনই স্থাপিত হয়েছে। বোড়োল্যান্ডে গত চার বছর ধরে যে উন্নতি হয়েছে, তা অবিশ্বাস্য। শান্তি চুক্তির মাধ্যমে সমগ্র অঞ্চল জুড়ে উন্নয়নের জোয়ার বয়েছে। আজ যখন আমি বোড়ো শান্তি চুক্তির কার্যকর হওয়ার ইতিবাচক প্রভাব দেখতে পাই, তখন আমার মন আনন্দে ভরে ওঠে। আপনাদেরকে বলে বোঝাতে পারব না, সেই আনন্দ কতখানি। এক মা এবং তাঁর একমাত্র ছেলের একটি ঘটনার কথা আপনাদের বলি। মা তাঁর সন্তানকে ভালোবাসা দিয়ে বড় করেছেন। কিন্তু, সেই ছেলে তার বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে অস্ত্র হাতে করে চলে গেছে এবং জঙ্গলে জঙ্গলে ঘুরে বেড়াত। যে হিংসা এবং বিচ্ছিন্নতাবাদের পথ সে অনুসরণ করেছিল, তার ফলে মা-র থেকে সে আলাদা হয়ে যায়, আর সেই মা অসহায়ের মতো তাঁর দিন কাটাচ্ছিলেন। একদিন যখন তিনি জানতে পারেন, তাঁর ছেলে অস্ত্র ত্যাগ করে ঘরে ফিরে এসেছে, তখন যে আনন্দ তাঁর মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে, তা এক কথায় অবর্ণনীয়। গত চার বছর ধরে আমি সেই আনন্দই অনুভব করছি। আমার নিজের লোকেরা, আমার তরুণ বন্ধুরা আমার আহ্বানে সাড়া দিয়ে তাদের অস্ত্র সহ আত্মসমর্পণ করেছে আর এখন ভারতের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য কাজ করে চলেছে। এই চুক্তি আরও বহু চুক্তি কার্যকর করার পথ খুলে দিয়েছে। যদি এটি শুধুমাত্র একটি নথি হত, তাহলে কেউই শান্তির সম্ভাবনার কথা বিবেচনা করত না। কিন্তু এখন আপনাদেরই উদ্যোগে নতুন নতুন পথ খুলেছে। সমগ্র উত্তর-পূর্বাঞ্চল আশায় বুক বেঁধেছে। বন্ধুরা, আপনারা সত্যই অনুপ্রেরণার এক আদর্শ উদাহরণ।
বন্ধুগণ,
এই চুক্তিগুলির কারণে আমি আবারও বলি, তথাকথিত দিল্লির বিশেষজ্ঞরা জানেন না, আসামেই ১০ হাজারের বেশি যুবক-যুবতী তাদের অস্ত্র জমা দিয়েছে, হিংসার পথ থেকে সরে এসেছে এবং উন্নয়নে সামিল হয়েছে। কেউ ভেবেছেন, কার্বি আংলং, ব্রু-বিয়াং চুক্তি অথবা এনএলএফটি – ত্রিপুরা চুক্তি কার্যকর হবে? এগুলি সবই বাস্তবায়িত হয়েছে কারণ আপনারা এগুলি কার্যকর করতে সমর্থন যুগিয়েছেন। আর তাই, আজ যখন সারা দেশজুড়ে জনজাতীয় গৌরব দিবস উদযাপিত হচ্ছে, আমরা ভগবান বিরসা মুন্ডার জন্মবার্ষিকী উদযাপন করছি, সেই সময় এই অনুষ্ঠানেরও সূচনা হল। আমি আপনাদের প্রত্যেককে ধন্যবাদ জানাই এবং আপনাদের পরিবারের সদস্যদের শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। আমি দেশের যুব সম্প্রদায়কে, বিশেষ করে যারা নকশালবাদের পথ অনুসরণ করছে, তাদের আমার বোড়ো ভাইদের কাছ থেকে শেখার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। বন্দুক ছেড়ে দিন, হিংসার পথ ত্যাগ করুন, কারণ অস্ত্র কখনই অভীষ্ট লক্ষ্যে আপনাকে পৌঁছতে দেবে না।
বন্ধুগণ,
আপনারা যে আস্থা আমার ওপর রেখেছেন, আমার কথাকে সম্মান জানিয়েছেন, আপনারা যে অঙ্গীকার করেছেন, তা পরবর্তী প্রজন্মের জন্য নতুন ভিত স্থাপন করেছে। আমাদের সরকার, আসাম সরকারের সঙ্গে একযোগে আপনাদের উন্নয়নের জন্য কাজ করে চলেছেন।
বন্ধুগণ,
কেন্দ্র এবং আসাম সরকার বোড়ো অঞ্চলের মানুষদের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য দায়বদ্ধ। কেন্দ্রীয় সরকার বোড়োল্যান্ডের উন্নয়নে ১,৫০০ কোটি টাকার বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। আসাম সরকারও উন্নয়নের জন্য বিশেষ প্যাকেজ কার্যকর করছে। এলাকার শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সংস্কৃতি সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের পরিকাঠামোর উন্নয়নে ইতোমধ্যেই ৭০০ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যারা হিংসার পথ ছেড়ে সমাজের মূলস্রোতে ফিরে আসবে, তাদের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প কার্যকর করব। ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট অফ বোড়োল্যান্ডের ৪ হাজার প্রাক্তন সদস্যকে পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছে। আসাম পুলিশে অনেক তরুণকে চাকরি দেওয়া হয়েছে। বোড়োল্যান্ডের দ্বন্দ্বের জন্য যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, সেইসব পরিবারগুলিকে ৫ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয়েছে। আপনারা শুনে খুশি হবেন, আসাম সরকার প্রতি বছর বোড়োল্যান্ডের উন্নয়নে ৮০০ কোটি টাকা ব্যয় করে।
বন্ধুগণ,
এই অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য যুবক-যুবতী এবং মহিলাদের দক্ষতা বিকাশের প্রয়োজন। তাঁদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা পূরণে প্রচুর সুযোগ তৈরি করা হচ্ছে। যখন হিংসা বন্ধ হয়েছে, তখনই বোড়োল্যান্ডে উন্নয়নের বটবৃক্ষ রোপণ করা হয়েছে। এসইইডি মিশনের মাধ্যমে যে পরিকল্পনা করা হয়েছে তা বাস্তবায়নের কাজ চলছে। এসইইডি-র অর্থ – স্কিলিং (দক্ষতা), এন্টারপ্রেনিওরশিপ (উদ্যোগ), এমপ্লয়মেন্ট (কর্মসংস্থান) এবং ডেভেলপমেন্ট (উন্নয়ন)।
বন্ধুগণ,
যে সমস্ত যুবক-যুবতীরা এক সময় বন্দুক নিয়ে ঘুরত, আজ তারা ক্রীড়া জগতে দারুণ সাফল্য দেখাচ্ছেন। কোকরাঝাড়ে ডুরান্ড কাপ দু’বার আয়োজিত হয়েছে। এই কাপ খেলতে বাংলাদেশ, নেপাল এবং ভুটান থেকেও অনেক দল এসেছে। শান্তি চুক্তির ফলে কোকরাঝারে গত তিন বছর ধরে বোড়োল্যান্ড সাহিত্য উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। সাহিত্য পরিষদের কাছে আমি এর জন্য অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। আজ ৭৩তম বোড়ো সাহিত্য সভার প্রতিষ্ঠা দিবসে বোড়ো ভাষা ও সংস্কৃতিকে উদযাপন করা হচ্ছে। আগামীকাল ১৬ নভেম্বর একটি সাংস্কৃতিক মিছিলের আয়োজন করা হয়েছে। এই উপলক্ষে আমি সকলকে শুভেচ্ছা জানাই। দিল্লির মানুষ যখন এই কর্মসূচি দেখবেন, তখন সারা দেশও এটি প্রত্যক্ষ করবে। তাই দিল্লিতে এসে শান্তির বার্তা প্রচারের সিদ্ধান্ত আপনাদের সঠিক।
বন্ধুগণ,
আমি সম্প্রতি এখানে একটি প্রদর্শনীতে বোড়ো শিল্পকলার সমৃদ্ধ দিকগুলি প্রত্যক্ষ করেছি। আরোনাই, দোখোনা, গামোসা, কারাই-ডাখিনি, থোরখা, জাওঘিসি এবং খাম-এর মতো বিভিন্ন ঐতিহ্যশালী জিনিস এই প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে। এগুলি সবই জিআই ট্যাগ পেয়েছে। অর্থাৎ, যখনই পৃথিবীর কোথাও এগুলিকে পাঠানো হবে, তখনই বোড়োল্যান্ড এবং বোড়ো সংস্কৃতির সঙ্গে এর যোগসূত্রের কথা সকলে জানতে পারবেন। বোড়োল্যান্ড সেরিকালচার মিশনের মাধ্যমে আমাদের সরকার বোড়ো সংস্কৃতির ঐতিহ্যবাহী রেশম চাষকে উৎসাহিত করছে। বোড়োদের ঘরে ঘরে তন্তুবায়েরা যে কাজ করে থাকেন, তাকে উৎসাহিত করতে বোড়োল্যান্ড হ্যান্ডলুম মিশন উদ্যোগী হয়েছে। এভাবে এই ঐতিহ্যশালী সংস্কৃতিকে রক্ষা করা হচ্ছে।
বন্ধুগণ,
আসাম ভারতের পর্যটন ক্ষেত্রের এক গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ, আর এই স্তম্ভের অন্যতম উপাদান বোড়োল্যান্ড। আসামের পর্যটন শিল্পের প্রসারে বোড়োল্যান্ডের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। একটা সময় ছিল যখন মানস জাতীয় উদ্যান, রায়মোনা জাতীয় উদ্যান এবং সিখনা জোহাওলাও জাতীয় উদ্যানে বিভিন্ন অনভিপ্রেত কাজকর্ম চলত। আজ এইসব জঙ্গলগুলিতে আমাদের যুব সম্প্রদায়ের উচ্চাকাঙ্ক্ষা পূরণে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এক সময় যে জঙ্গল লুকিয়ে থাকার জায়গা ছিল, আজ আর তার সেই তকমা নেই। বোড়োল্যান্ডে পর্যটন শিল্পের প্রসারের ফলে এই অঞ্চলের যুব সম্প্রদায়ের জন্য নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।
বন্ধুগণ,
আজ যখন আমরা এই উৎসবে যোগ দিয়েছি, তখন স্বাভাবিকভাবেই বোড়োফা উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্ম এবং গুরুদেব কালীচরণ ব্রহ্মের কথা স্মরণ করতে হয়। ভারতের একতার জন্য এবং বোড়ো জনগণের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার জন্য বোড়োফা সব সময় গণতান্ত্রিক পদ্ধতি অনুসরণের কথা বলতেন। গুরুদেব কালীচরণ ব্রহ্ম অহিংসা এবং আধ্যাত্মিকতার পথ অনুসরণ করে এই সম্প্রদায়ের মধ্যে একতার সৃষ্টি করেছেন। আজ যখন আমি দেখতে পাই বোড়ো মা এবং বোনের আর চোখের জল ফেলছেন না, এক উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখছেন, তখন আমার মন আনন্দে ভরে ওঠে। প্রতিটি বোড়ো পরিবার তাঁদের সন্তানের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য আশাবাদী। দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে বোড়ো ব্যক্তিত্বরা সফলভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনার শ্রী হরিশঙ্কর ব্রহ্ম, মেঘালয়ের প্রাক্তন রাজ্যপাল শ্রী রঞ্জিত শেখর মুসাহারির মতো বিশিষ্টজনেরা বোড়োদের গর্ব। বোড়োল্যান্ডের যুব সম্প্রদায় এক সফল কেরিয়ার গড়ার যে স্বপ্ন দেখছেন তাতে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। কেন্দ্র অথবা রাজ্য সরকার বোড়ো পরিবারগুলির পাশে সবসময় থাকবে।
বন্ধুগণ,
আমার কাছে আসাম সহ সমগ্র উত্তর-পূর্বাঞ্চল ভারতের অষ্টলক্ষ্মী। আজ পূর্ব ভারতে উন্নয়নের যে নতুন প্রভাতের সূচনা হয়েছে, তার মধ্য দিয়ে বিকশিত ভারত গড়ার নতুন শক্তি আমরা পাই। আর তাই, উত্তর-পূর্বাঞ্চলে শান্তি বজায় রাখার জন্য আমরা নিরলস উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে যে বিবাদ রয়েছে, তা নিরসনে আমরা সচেষ্ট।
বন্ধুগণ,
গত এক দশক ধরে আসাম সহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের স্বর্ণযুগের সূচনা হয়েছে। বিজেপি-এনডিএ সরকারের নীতির কারণে ২৫ কোটি মানুষ দারিদ্র্যের নাগপাশ থেকে মুক্ত হয়েছেন। এঁদের মধ্যে অনেকেই আসামের বাসিন্দা। বিজেপি-এনডিএ সরকার আসামের উন্নয়নে নতুন মাইলফলকের সূচনা করেছেন। আমরা স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি। গত দেড় বছরে আসামে চারটি হাসপাতাল তৈরি হয়েছে। গুয়াহাটি এইমস এবং কোকরাঝাড়, নলবাড়ি ও নওগাঁও-এ মেডিকেল এই অঞ্চলের স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতি ঘটাবে। আসামে একটি ক্যান্সার হাসপাতাল চালু হওয়ায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মানুষদের অত্যন্ত সুবিধা হয়েছে।
২০১৪ সালের আগে আসামে মাত্র ছ’টি মেডিকেল কলেজ ছিল। আজ সেই সংখ্যা দ্বিগুণ – ১২টি। এছাড়াও, আরও ১২টি মেডিকেল কলেজ গড়ার কাজ চলছে। আসামে নতুন নতুন চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে এই অঞ্চলের যুবক-যুবতীদের কাছে নানা সুযোগ তৈরি হচ্ছে।
বন্ধুগণ,
বোড়ো শান্তি চুক্তি কার্যকর করার মধ্য দিয়ে সমগ্র উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সমৃদ্ধি নিশ্চিত হয়েছে। বোড়োল্যান্ডের সংস্কৃতি শতাব্দীপ্রাচীন। আমরা বোড়োদের এই সমৃদ্ধ সংস্কৃতিকে রক্ষা করব এবং শক্তিশালী করব। আরও একবার এই আনন্দময় বোড়ো উৎসবের জন্য আপনাদের সবাইকে অভিনন্দন জানাই। এখানে অনেকে জড়ো হয়েছে। দিল্লিতে আপনাদের প্রত্যেককে স্বাগত। বন্ধুরা, যে ভালোবাসা আপনারা আমাদের দিয়েছেন, আপনাদের চোখে যে স্বপ্ন দেখতে পাচ্ছি, তার মাধ্যমে নিরলসভাবে কাজ করার অনুপ্রেরণা আমি পাই যার সাহায্যে আপনাদের আশা এবং আকাঙ্ক্ষা আমি পূরণ করতে পারব।
বন্ধুগণ,
আপনারা আমার হৃদয় জয় করেছেন আর তাই আমি সব সময় আপনাদের জন্য রয়েছি। আপনারা আমাকে অনুপ্রাণিত করেন। আপনাদের সবাইকে আবারও শুভেচ্ছা জানাই! অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আসুন, আমরা সকলে একসঙ্গে বলে উঠি -
ভারতমাতার জয়!
ভারতমাতার জয়!
ভারতমাতার জয়!
অনেক অনেক ধন্যবাদ!