ভারত মাতার জয়,
ভারত মাতার জয়,
কি হল ? আরও জোরে বলুন, যাতে আপনাদের গলার আওয়াজ অম্বাজীর কাছেও পৌঁছে যায়।
ভারত মাতার জয়,
ভারত মাতার জয়,
মঞ্চে উপবিষ্ট গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ভূপেন্দ্রভাই, মন্ত্রীবর্গ, সংসদে আমার সহকর্মীরা, বিধায়কবৃন্দ, গুজরাট বিজেপির সভাপতি সি আর পাতিল, জেলা পঞ্চায়েতের সদস্যবৃন্দ এবং আমার গুজরাটের ভাই-বোনেরা।
আপনাদের মধ্যে আসার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য প্রথমেই আমি গুজরাট সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা জানাই। অনেক পুরোনো কথা মনে আসছে। এই ভূমির ঋণ স্বীকার করি আবারও। আজ ৩০শে অক্টোবর, গোবিন্দ গুরুজীর প্রয়াণবার্ষিকী – যিনি স্বাধীনতার লড়াইয়ে আদিবাসীদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এবং ব্রিটিশকে পরাস্ত করেছিলেন। আগামীকাল সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের জন্মবার্ষিকী।
আমাদের প্রজন্ম সর্দার সাহেবের প্রতি শ্রদ্ধায় নত। আর, আগামী প্রজন্মের মাথা উঁচু হয়ে যাবে যখন তারা স্ট্যাচু অফ ইউনিটির দিকে তাকাবে। গুরু গোবিন্দজী মাতা ভারতীর সেবায় এবং আদিবাসী মানুষের কল্যাণে সারাজীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তাঁর স্মরণে গুজরাট এবং মধ্যপ্রদেশের আদিবাসী এলাকায় মানগড় ধাম তৈরি করেছে আমার সরকার। এটা গর্বের বিষয়।
আমার প্রিয় পরিবারের সদস্যবৃন্দ,
এখানে আসার আগেই মা অম্বার আশীর্বাদ নেওয়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। সেজে উঠেছে ওই এলাকা। আমি শুনলাম গত সপ্তাহে আপনারা অম্বাজীর এলাকায় পরিচ্ছন্নতার কর্মসূচিতে সামিল হয়েছেন সক্রিয় ভাবে। এজন্য আপনাদের এবং এখানকার সরকারকে অভিনন্দন। মন কি বাত অনুষ্ঠানে গতকালই আমি বলেছি, গব্বর পাহাড়ে যেভাবে উন্নয়নমূলক কাজ এগিয়ে চলেছে, তা এককথায় অসাধারণ। আজ এখানে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের সূচনা হচ্ছে। এর লক্ষ্য, কৃষক কল্যাণ কর্মসূচিকে জোরদার করা। উত্তর গুজরাটের বিকাশের প্রশ্নে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার বড় ভূমিকা রয়েছে। মেহসানার আশেপাশে সব জেলাতেই চলেছে উন্নয়ন যজ্ঞ। এর ফলে প্রত্যক্ষভাবে উপকৃত হবে এই অঞ্চল।
আমার প্রিয় পরিবারের সদস্যবৃন্দ,
ভারতের বিকাশ এখন সারা বিশ্বেই আলোচিত। সম্প্রতি চাঁদের মাটিতে নেমেছে এদেশের চন্দ্রযান। চাঁদের যে অঞ্চলে ভারত উপগ্রহ নামিয়েছে সেখানে এর আগে পৌঁছোতে পারেনি কোনো দেশ। জি-২০ দেশগুলির মধ্যে ভারতের উন্নয়ন নিয়েই এখন সম্ভবত সবচেয়ে বেশি মাত্রায় আলোচনা হচ্ছে। জি-২০ সম্পর্কে জানেন না এমন মানুষ নেই এখন।
জি-২০ শিখর সম্মেলনের সময় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের নেতারা ভারতের বিভিন্ন জায়গায় গেছেন। সারা বিশ্ব প্রত্যক্ষ করেছে ভারতের গৌরবগাথা এবং এখানকার মানুষদের দক্ষতা। এদেশে আধুনিক পরিকাঠামো গড়ে উঠছে নজিরবিহীন গতিতে। সড়ক, রেল কিংবা বিমানবন্দর – সব ক্ষেত্রেই যেভাবে বিনিয়োগ হচ্ছে মাত্র কয়েক বছর আগেও তা ছিল কল্পনাতীত।
বিগত ৯ বছরে দেশ নজিরবিহীন বিকাশের সাক্ষী হয়েছে। নরেন্দ্র মোদী যা বলেন তা করে দেখান। দেশের এই বিকাশ ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে গুজরাটের উন্নয়নেও।
নজিরবিহীন এই উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি হল দেশে সুস্থিতি সরকারের উপস্থিতি। গুজরাটে এই বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে আগেই। একসময় এখানে জলের সমস্যা ছিল। উত্তর গুজরাটের বহু জায়গায় সেচের জল ছিল অমিল। সেই সব সমস্যার কার্যকর সমাধান সম্ভব হয়েছে। তৈরি হয়েছে একের পর এক বাঁধ ও জলাধার। সব ক্ষেত্রেই এই অঞ্চল এগিয়ে চলেছে দ্রুত গতিতে।
আমার প্রিয় পরিবারের সদস্যবৃন্দ,
কোভিডের বিপদ দেখা দেওয়ার পর সারা বিশ্বে দুটি জিনিস নিয়ে বিশেষ চর্চা শুরু হয় – হলুদ এবং ইসবগুল। আজ সারা বিশ্বে ইসবগুলের উৎপাদনের ৯০ শতাংশই হয় উত্তর গুজরাটে। ফল, শাক-সব্জি, আলু, আম, পেয়ারা, লেবু – সবেরই চাষ এখানে হচ্ছে ব্যাপক ভাবে। উত্তর গুজরাটের আলু সারা বিশ্বে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। আমি যখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলাম, তখন কেন্দ্রীয় বিভিন্ন সংস্থা এখানে আলুর খোঁজ করতে আসতো। এখন উন্নতমানের আলু উৎপাদিত হচ্ছে এখানে। তার থেকে তৈরি ফ্রেঞ্চ ফ্রাই যাচ্ছে ভিনদেশে। বনসকান্থায় তৈরি হয়েছে বড় বড় আলু প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র। এখানকার মাটিতে সোনা ফলাচ্ছেন কৃষকরা। মেহসানায় একটি কৃষি খাদ্যপার্ক গড়ে উঠেছে। বনসকান্থায় একটি মেগা খাদ্যপার্ক গড়ে তোলার কাজ চলছে।
আমার প্রিয় পরিবারের সদস্যবৃন্দ,
দুধ উৎপাদনে আমার বোনেদের ভূমিকা বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য। ডেয়ারি ক্ষেত্রের প্রসারের ফলে পরিবারগুলির আয়ে সুস্থিতি এসেছে। গত বছর উত্তর গুজরাটে তৈরি হয়েছে বেশ কয়েকটি পশু হাসপাতাল। গবাদিপশুর স্বাস্থ্যের উন্নতি দুধ উৎপাদন বৃদ্ধির অন্যতম শর্ত। বিগত দুই দশকে গুজরাটে আটশোরও বেশি নতুন সমবায় দুধ উৎপাদন সমিতি গড়ে উঠেছে। দেশের অন্য অঞ্চল এমনকি বিদেশের বিভিন্ন মানুষও আমাদের ডেয়ারি মডেল নিয়ে উৎসাহিত।
আমার প্রিয় পরিবারের সদস্যবৃন্দ,
কোভিডের সময় মোদী সাহেব বিনামূল্যে প্রতিষেধকের ব্যবস্থা করেছিলেন। প্রাণ বেঁচেছে বহু মানুষের। একই ভাবে পশুদের প্রতিষেধকের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। এই লক্ষ্যে আসতে চলেছে ১৫ হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প। শুধু দুধই নয়, গোবর প্রভৃতিও ব্যবসা ও আয়ের বড় উৎস। আমরা হাতে নিয়েছি গোবর ধন প্রকল্প। গোবর থেকে জৈব জ্বালানি তৈরি করার কাজ চলছে জোরকদমে। বর্জ্য থেকে সম্পদ তৈরির এই কর্মসূচি মারফত বাড়ছে কৃষকদের আয়, তৈরি হচ্ছে বিদ্যুৎ।
আমার প্রিয় পরিবারের সদস্যবৃন্দ,
কয়েক দশক আগেও উত্তর গুজরাটে শিল্পের বিকাশ সম্পর্কে কেউই তেমন আশান্বিত ছিলেন না। ধারাবাহিক প্রচেষ্টার ফলে ছবিটা এখন পুরোপুরি পাল্টে গেছে। ভিরামগ্রাম থেকে মান্ডাল, বহুচারিজি থেকে মেহসানা – সর্বত্রই শিল্পের বিকাশ ঘটছে দ্রুত গতিতে। এই অঞ্চলে গাড়ি শিল্পের ব্যাপক প্রসার হওয়ায় কর্মসংস্থানের পালে হওয়া লেগেছে। আগে উত্তর গুজরাটের মানুষ কাজের খোঁজে অন্যত্র যেতেন, এখন অন্য জায়গার মানুষ এখানে আসছেন কাজ করতে। মানুষের আয় হয়েছে দ্বিগুণ। মেহসানা, বনসকান্থা কিংবা সবরকান্থায় ওষুধ এবং ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পেরও ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। সেরামিক শিল্পের ক্ষেত্রেও দ্রুত এগিয়ে চলেছে এই অঞ্চল।
আমার প্রিয় পরিবারের সদস্যবৃন্দ,
গ্রীণ হাইড্রোজেন ক্ষেত্রের প্রসার আগামীদিনে দেশের বিকাশের যাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছে। এবিষয়েও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে উত্তর গুজরাট। এই ক্ষেত্রটিতে কাজের নতুন নতুন সুযোগ তৈরি হচ্ছে। এই অঞ্চল সৌরশক্তি উৎপাদনেরও অন্যতম কেন্দ্র হয়ে উঠছে। মোধেরায় গড়ে উঠেছে সৌরগ্রাম। বাড়ির ছাদে সৌরশক্তি উৎপাদনের যে কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে, তার কল্যাণে বিদ্যুতের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি মানুষ সরকারের কাছে উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ বিক্রি করে উপার্জন করতে পারছেন।
বন্ধুগণ,
রেল ক্ষেত্রের প্রসারে এখন দ্রুতগতিতে কাজ চলছে। উত্তর গুজরাটে রূপায়িত হচ্ছে ৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি মূল্যের রেল প্রকল্প। মেহসানা – আমেদাবাদ ডেডিকেটেড করিডোরের কাজ চলছে জোরকদমে। বলাবাহুল্য এইসব উদ্যোগ এই অঞ্চলে শিল্পের আরও প্রসার ঘটাবে। বাড়বে লজিস্টিক্স পরিষেবা। ট্রেনে পণ্য পরিবহণের সুবিধা কৃষকদের আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি পণ্যের অপচয়ও কমাবে।
বন্ধুগণ,
রেল পরিষেবা জোরদার হলে উত্তর গুজরাটে পর্যটনের পালেও হাওয়া লাগবে। এই অঞ্চলের ভদনগর কাশীর মতই একটি অতি প্রাচীন শহর। এখানে পুরাতাত্ত্বিক খননে পাওয়া গেছে বহু ঐতিহাসিক নিদর্শন। পর্যটনের প্রশ্নে এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে।
আমার প্রিয় পরিবারের সদস্যবৃন্দ,
কচ্ছের কথা আমি মাঝে মাঝেই বলে থাকি। একসময় এই অঞ্চল ছিল অবহেলিত। এখন এখানকার রান উৎসব সারা বিশ্বে পরিচিত। ধরদো গ্রাম সেরা পর্যটন গ্রাম হিসেবে স্বীকৃত। গুজরাট এবং সারা দেশের বিকাশের লক্ষ্যে উদ্যোগী আমরা সকলেই। ২০৪৭ নাগাদ স্বাধীনতার ১০০ বছর উদযাপনের সময় ভারতকে উন্নত দেশের তালিকাভুক্ত করতে কাজ করতে হবে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে। আবার বলুন
ভারত মাতার জয়,
ভারত মাতার জয়,
ভারত মাতার জয়,
অনেক ধন্যবাদ!