উত্তরপ্রদেশের জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী শ্রী যোগী আদিত্যনাথজি, আমার মন্ত্রিসভার সহকর্মী শ্রী পুরুষোত্তম রুপালাজি, অন্যান্য মন্ত্রী ও সাংসদগণ, ইন্টারন্যাশনাল ডেয়ারি ফেডারেশনের সভাপতি শ্রী পি. ব্রাজালেজি, আইডিএফ-এর মহানির্দেশক শ্রীমতী ক্যারোলিন ইমন্ডজি, এখানে উপস্থিত অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ!
আমি আনন্দিত যে আজ সারা বিশ্ব থেকে দুগ্ধ বিশেষজ্ঞ এবং উদ্ভাবকরা ভারতে জড়ো হয়েছেন। ভারতের প্রাণীসম্পদ, ভারতের নাগরিক এবং ভারত সরকারের পক্ষ থেকে, আমি বিশ্ব দুগ্ধ সম্মেলনে বিভিন্ন দেশ থেকে আগত বিশিষ্ট ব্যক্তিদের আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই। দুগ্ধ ক্ষেত্রের সম্ভাবনা শুধু গ্রামীণ অর্থনীতিকেই চাঙ্গা করে না, এটি সারা বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের জীবিকার একটি প্রধান উৎসও বটে। আমি নিশ্চিত, এই শীর্ষ সম্মেলন দুগ্ধ ক্ষেত্রের সঙ্গে সম্পর্কিত প্রযুক্তি, দক্ষতা এবং ঐতিহ্যের পরিপ্রেক্ষিতে একে অপরের জ্ঞান বৃদ্ধি এবং পারস্পরিক মতবিনিময় এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
বন্ধুগণ,
আজকের অনুষ্ঠানটি এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে যখন ভারত তার স্বাধীনতার ৭৫ বছর পালন করছে। প্রসঙ্গত, ভারতের ৭৫ লক্ষেরও বেশি গো-পালকরাও প্রযুক্তির মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানে আমাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। এই ধরনের শিখর সম্মেলন থেকে প্রান্তিক কৃষক ভাই-বোনের উপকৃত হবেন। বিশ্ব দুগ্ধ সম্মেলন উপলক্ষে আমি আমার কৃষক বন্ধুদের স্বাগত ও অভিনন্দন জানাই।
বন্ধুগণ,
পশুসম্পদ এবং দুধের ব্যবসা হাজার হাজার বছর ধরে ভারতের সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। আমাদের এই উত্তরাধিকারগত কিছু বৈশিষ্ট্য ভারতের দুগ্ধ ক্ষেত্রকে শক্তিশালী করেছে। অন্যান্য দেশ থেকে এখানে আসা বিশেষজ্ঞদের সামনে আমি এই বৈশিষ্ট্যগুলো বিশেষভাবে উল্লেখ করতে চাই।
বন্ধুগণ,
ভারতের ক্ষুদ্র কৃষকরা দুগ্ধ ক্ষেত্রের চালিকাশক্তি যা বিশ্বের অন্যান্য উন্নত দেশগুলির তুলনায় স্বতন্ত্র। ভারতের দুগ্ধ ক্ষেত্রের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য হল, "গণ-উৎপাদন"-এর পরিবর্তে "জনগণের দ্বারা উৎপাদন"। ভারতে দুগ্ধ ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত অধিকাংশ কৃষকের একটি, দুটি বা তিনটি গবাদি পশু রয়েছে। এই ক্ষুদ্র কৃষকদের কঠোর পরিশ্রম এবং তাঁদের পশুপালনের কারণেই আজ ভারত সারা বিশ্বের বৃহত্তম দুধ উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে পরিগণিত। আজ এই ক্ষেত্রটি ভারতে ৮ কোটিরও বেশি পরিবারকে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে। ভারতীয় দুগ্ধ ক্ষেত্রের এমন স্বতন্ত্রতা আপনি আর কোথাও খুঁজে পাবেন না। আজ আমি বিশ্ব দুগ্ধ সম্মেলনেও এটি উল্লেখ করছি কারণ, এটি বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলির কৃষকদের জন্য একটি দুর্দান্ত ব্যবসায়িক মডেল হয়ে উঠতে পারে।
বন্ধুগণ,
ভারতের দুগ্ধ ক্ষেত্রের আরও একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য রয়েছে। দ্বিতীয় বৈশিষ্ট্য হল ভারতের দুগ্ধ সমবায় ব্যবস্থা। আজ ভারতে দুগ্ধ সমবায়ের এত বিশাল নেটওয়ার্ক রয়েছে যা সারা বিশ্বের আর কোথাও পাওয়া যাবে না। এই দুগ্ধ সমবায়গুলি দেশের ২ লক্ষেরও বেশি গ্রামের প্রায় ২ কোটিরও বেশি কৃষকের কাছ থেকে দিনে দু’বার দুধ সংগ্রহ করে এবং ক্রেতাদের কাছে তা পৌঁছে দেয়। পুরো প্রক্রিয়াটির মধ্যে কোনো মধ্যস্বত্বভোগী নেই এবং গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রাপ্ত অর্থের ৭০ শতাংশের বেশি সরাসরি কৃষকদের কাছে যায়। তাছাড়া গুজরাট রাজ্যের কথা যদি বলি, এই সমস্ত টাকা সরাসরি মহিলাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে যায়। এই অনুপাতের তুলনা সারা বিশ্বে মেলা ভার। এখন ভারতে ডিজিটাল বিপ্লবের কারণে দুগ্ধ ক্ষেত্রের বেশিরভাগ লেনদেন খুব দ্রুতগতিতে হচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি যে ভারতের দুগ্ধ সমবায়গুলির কাজকর্ম বিশ্লেষণ এবং সে সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করলে ও দুগ্ধ ক্ষেত্রে ডিজিটাল পেমেন্টের ব্যবস্থাকে অনুসরণ করলে বিশ্বের অন্যান্য দেশের কৃষকরা উপকৃত হতে পারেন।
ভারতের ক্ষেত্রের আরও একটি বড় শক্তি এবং অনন্যতা হল আমাদের দেশীয় প্রজাতি। ভারতের গরু এবং মহিষের স্থানীয় জাতগুলি সবচেয়ে প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যেও বেঁচে থাকতে সক্ষম। আমি আপনাকে গুজরাটের বান্নি মহিষের উদাহরণ দিতে চাই। বন্নি মহিষগুলি যেভাবে কচ্ছের মরুভূমির অবস্থার সাথে খাপ খাইয়ে থাকে তা দেখে অবাক লাগে। সেখানে দিনের আবহাওয়া খুব গরম এবং রৌদ্রের তাপও প্রবল। তাই রাতের কম তাপমাত্রায় বন্নি মহিষ চড়তে বের হয়। আমাদের বন্ধুরা, যাঁরা বিদেশ থেকে এসেছেন তাঁরাও জেনে অবাক হবেন যে চড়ানোর সময় এই প্রাণীদের সাথে কোন পশুপালক থাকে না। বন্নি মহিষগুলো একাই গ্রামের কাছাকাছি চারণভূমিতে যায়। মরুভূমিতে জল কম থাকায় বান্নি মহিষরা সেই সামান্য জলেই বাঁচতে পারে। বান্নি মহিষ রাতে ১০-১৫ কিলোমিটার পথ হেঁটেও সকালে নিজ থেকেই বাড়ি ফিরে আসে। কারোর বান্নি মহিষ হারিয়ে গেছে বা ভুল বাড়িতে গেছে, এমন কথা খুব কমই শোনা যায়। আমি আপনাদের শুধুমাত্র বান্নি মহিষের উদাহরণ দিয়েছি। তবে ভারতে অনেক প্রজাতির মহিষ যেমন মুরাহ, মেহসানা, জাফরাবাদি, নিলি রাভি, পান্ধরপুরি এখনও তাদের নিজস্ব পদ্ধতিতে জীবনযাপন করছে। একইভাবে, গির গরু, সাহিওয়াল, রাঠি, কাঙ্করেজ, থারপারকার, হরিয়ানা এবং আরও অনেক প্রজাতির গরু রয়েছে, যা ভারতের দুগ্ধ ক্ষেত্রকে এক কথায় অনন্য করে তুলেছে। ভারতীয় প্রজাতির এই প্রাণীরা জলবায়ুর খাপ খাইয়ে নিতে পারে।
বন্ধুগণ,
এ পর্যন্ত আমি ভারতের দুগ্ধ ক্ষেত্রের তিনটি অনন্য বৈশিষ্ট্যের কথা বলেছি। সেগুলি হল ক্ষুদ্র কৃষকদের শক্তি, সমবায়ের শক্তি এবং ভারতীয় প্রজাতির গবাদি পশুর শক্তি যা সম্মিলিতভাবে এক সম্পূর্ণ আলাদা শক্তি তৈরি করে। কিন্তু ভারতের দুগ্ধ ক্ষেত্রের একটি চতুর্থ বৈশিষ্ট্যও রয়েছে, যা তেমন আলোচিত হয় না এবং স্বীকৃতিও পায় না। বিদেশ থেকে আসা আমাদের অতিথিরা সম্ভবত জেনে আশ্চর্য হবেন যে ভারতের দুগ্ধ ক্ষেত্রের ৭০ শতাংশ কর্মশক্তির প্রতিনিধিত্ব করে নারীশক্তি। মহিলারাই ভারতের দুগ্ধ ক্ষেত্রের আসল নেতা। ভারতে দুগ্ধ সমবায়ের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি সদস্য মহিলা৷ ভারতীয় দুগ্ধ ক্ষেত্রের চালিকাশক্তি হল ভারতের গ্রামাঞ্চলের মহিলারা, অর্থাৎ আমাদের মা ও বোনেরা। গম এবং চালের মোট উৎপাদন মূল্যের অতিরিক্ত সাড়ে আট লক্ষ কোটি ভারতীয় দুগ্ধ ক্ষেত্র থেকে আসে। আমি বিশ্ব দুগ্ধ শিখর সম্মেলনের সাথে যুক্ত সমস্ত বিশিষ্ট ব্যক্তিদের ভারতের নারীশক্তির এই ভূমিকাকে স্বীকৃতি দেওয়ার এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করব।
বন্ধুগণ,
২০১৪ সাল থেকে আমাদের সরকার ভারতের দুগ্ধ ক্ষেত্রের সম্ভাবনা বাড়ানোর জন্য নিরলসভাবে কাজ করেছে। আজ দুধ উৎপাদনের পাশাপাশি কৃষকদের আয় বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এর ফলাফল পরিলক্ষিত হচ্ছে। ২০১৪ সালে ভারত ১৪ কোটি ৬০ লক্ষ টন দুধ উৎপাদন হত এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১ কোটি টনে। অর্থাৎ প্রায় ৪৪ শতাংশ বেড়েছে! আজ বিশ্বের দুগ্ধ উৎপাদন যেখানে বার্ষিক ২ শতাংশ হারে বাড়ছে, ভারতে সেই বৃদ্ধির হার ৬ শতাংশের বেশি। ভারতে মাথাপিছু দুধের প্রাপ্যতা বিশ্বের গড় থেকে অনেক বেশি। গত ৩-৪ বছরে আমাদের সরকার ভারতের ক্ষুদ্র কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রায় ২ লক্ষ কোটি টাকা সরাসরি হস্তান্তর করেছে। এর একটি বড় অংশ দুগ্ধ ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত কৃষকরা পেয়েছেন।
বন্ধুগণ,
আজ আমাদের লক্ষ্য হল দেশে একটি সুষম দুগ্ধ ইকো-সিস্টেম গড়ে তোলা। এমন এক ইকো-সিস্টেম যেখানে আমাদের লক্ষ্য শুধুমাত্র দুধ এবং সংশ্লিষ্ট পণ্যের গুণমান নয়, অন্যান্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলারও। কৃষকদের অতিরিক্ত আয়, দরিদ্রদের ক্ষমতায়ন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, রাসায়নিকমুক্ত কৃষি, পরিচ্ছন্ন শক্তি এবং পশুর যত্ন - সবই অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। অর্থাৎ, আমরা ভারতের গ্রামগুলির সবুজ এবং স্থায়ী উন্নয়নের জন্য দুগ্ধ ক্ষেত্র এবং পশুপালনকে একটি বড় মাধ্যম হিসেবে তুলে ধরছি। রাষ্ট্রীয় গোকুল মিশন, গোবর্ধন যোজনা, দুগ্ধ ক্ষেত্রের ডিজিটাইজেশন এবং পশুদের জন্য সর্বজনীন টিকাকরণ – এগুলি এই লক্ষ্যের অঙ্গস্বরূপ। এছাড়াও, ভারতে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক নিষিদ্ধকরণের প্রচারাভিযান পশুদের জন্য পরিবেশ সুরক্ষার ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। পশু অধিকাররক্ষা কর্মী এবং পশুপ্রেমীরা যাঁরা পশুদের প্রতি দয়া এবং পশুপালনে বিশ্বাসী, তাঁরা তাদের কল্যাণের বিষয়ে চিন্তা করেন। প্রাণীদের ক্ষেত্রে বিশেষত গরু-মহিষদের ক্ষেত্রে প্লাস্টিক কতটা বিপজ্জনক তা আমরা সকলেই জানি। আমরা একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক নির্মূল করতে নিরলস প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছি।
বন্ধুগণ,
ভারতে দুগ্ধ ক্ষেত্রকে বিজ্ঞানের সাথে যুক্ত করে আরও প্রসারিত করা হচ্ছে। ভারত গবাদি পশুর বৃহত্তম তথ্যভাণ্ডার তৈরি করছে। দুগ্ধ ক্ষেত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিটি প্রাণীকে যুক্ত করা হচ্ছে। আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে আমরা প্রাণীদের বায়োমেট্রিক শনাক্তকরণের উদ্যোগ নিচ্ছি। আমরা এর নাম দিয়েছি- 'পশু আধার'। পশু আধারের মাধ্যমে পশুদের ডিজিটাল শনাক্তকরণ করা হচ্ছে, যা তাদের স্বাস্থ্যের দিকে নজর রাখার পাশাপাশি দুগ্ধজাত পণ্যের বাজার সম্প্রসারণে সাহায্য করবে।
বন্ধুগণ,
আজ ভারত পশুপালনের ক্ষেত্রের ব্যবসার প্রসারের দিকে গুরুত্ব দিচ্ছে। আমরা কৃষক উৎপাদক সংস্থা এবং মহিলাদের স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির মাধ্যমে দুগ্ধ ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত ক্ষুদ্র কৃষকদের একত্রিত করে একটি বড় বাজার শক্তি হিসেবে পরিচালিত করছি। আমরা আমাদের তরুণ প্রতিভাকে কৃষি ও দুগ্ধ ক্ষেত্রে স্টার্ট-আপ গড়ে তুলতে ব্যবহার করছি। আপনি জেনে আনন্দিত হবেন যে গত ৫-৬ বছরে ভারতে কৃষি এবং দুগ্ধ ক্ষেত্রে ১ হাজারেরও বেশি স্টার্ট-আপ তৈরি হয়েছে।
বন্ধুগণ,
এই ক্ষেত্রে ভারত কিভাবে কাজ করছে তার এক অনন্য উদাহরণ হল গোবর্ধন প্রকল্প। কিছুক্ষণ আগে, রূপলাজি অর্থনীতিতে গোবরের ক্রমবর্ধমান গুরুত্ব বর্ণনা করেছিলেন। পশুর গোবর থেকে জৈব-গ্যাস এবং জৈব-সিএনজি তৈরির জন্য আজ ভারতে ব্যাপক প্রচার চলছে। আমরা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি যে দুগ্ধ উৎপাদন কেন্দ্রগুলি তাদের বেশিরভাগ বিদ্যুতের চাহিদা গোবর থেকে পূরণ করতে পারে। এটি এমন একটি উপায় যা দিয়ে কৃষকরা বাড়তি আয় করতে পারবেন। এই প্রক্রিয়ায় যে জৈব সার তৈরি হয় তা কৃষকদের চাষের ক্ষেত্রেও সাশ্রয়ী হয়ে উঠবে। এতে চাষের খরচও কমবে এবং মাটিও নিরাপদ থাকবে। ভারতে আজ প্রাকৃতিক চাষের উপর অভূতপূর্ব জোর দেওয়া হচ্ছে যেখানে প্রাণীরা একটি প্রধান ভূমিকা পালন করছে।
বন্ধুগণ,
আমি প্রায়শই বলি যে এক ফসলি চাষই একমাত্র সমাধান নয়। পরিবর্তে বৈচিত্র্য অনেক বেশি প্রয়োজন। এটি পশুপালনের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। তাই, ভারতে আজ দেশীয় প্রজাতির পাশাপাশি হাইব্রিড প্রজাতির ওপরেও জোর দেওয়া হচ্ছে। এতে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতির ঝুঁকিও কমবে।
বন্ধুগণ,
আরেকটি বড় সমস্যা হল পশুদের রোগ। যখন একটি গবাদি পশু অসুস্থ হয়, তা কৃষকের জীবনকে প্রভাবিত করে, প্রভাবিত করে তাঁর আয়কেও। এটি পশুর কার্যক্ষমতার পাশাপাশি তার দুধ এবং অন্যান্য দুগ্ধজাত পণ্যের গুণগত মানকেও তা প্রভাবিত করে। তাই ভারতেও আমরা পশুদের সার্বজনীন টিকা দেওয়ার ওপর জোর দিচ্ছি। আমরা স্থির করেছি যে ২০২৫ সালের মধ্যে আমরা ১০০ শতাংশ প্রাণীকে পা এবং মুখের রোগ এবং ব্রুসেলোসিসের প্রতিরোধে টিকা প্রদান করব। আমরা এই দশকের শেষ নাগাদ এই রোগগুলি সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে চলেছি।
বন্ধুগণ,
আজ আপনাদের সাথে এই আলোচনা করার সময়, আমি দুগ্ধ ক্ষেত্রের সর্বশেষ চ্যালেঞ্জটির উল্লেখ করতে চাই। সাম্প্রতিক অতীতে, ভারতের অনেক রাজ্যে লাম্পি নামক রোগের কারণে গবাদি পশুদের প্রভূত ক্ষতি হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার, বিভিন্ন রাজ্য সরকার একত্রে এটি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছে। আমাদের বিজ্ঞানীরা লাম্পি চর্মরোগের জন্য একটি দেশীয় টিকাওও তৈরি করেছেন। টিকার পাশাপাশি এই রোগের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান এবং প্রাণীদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে।
বন্ধুগণ,
পশুর টিকা বা অন্যান্য প্রযুক্তি হোক না কেন, ভারত সব সময়েই সারা বিশ্বের দুগ্ধ ক্ষেত্রে অগ্রবর্তী স্থান ধরে রাখতে এবং তার সমস্ত অংশীদার দেশের কাছ থেকে শিখতে প্রস্তুত। ভারতেও খাদ্য নিরাপত্তার মান সুনিশ্চিত করতে দ্রুত কাজ চলছে। আজ ভারত প্রাণীসম্পদ ক্ষেত্রে এমন এক ডিজিটাল সিস্টেমে তৈরি করছে যা এই ক্ষেত্রে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত কার্যকলাপগুলিকে ধরে রাখবে। এটি এই ক্ষেত্রের উন্নতিতে প্রয়োজনীয় ও সঠিক তথ্য সরবরাহ করবে। সারা বিশ্বজুড়ে এই ধরনের প্রযুক্তিগত যে কাজ চলেছে, এই শিখর সম্মেলন তার ওপর আলোকপাত করবে। এটি এমন উপায়গুলি সুপারিশ করবে যার মাধ্যমে আমরা এ সম্পর্কিত দক্ষতা বিনিময় করতে পারি। আমি দুগ্ধ শিল্পের বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে ভারতের দুগ্ধ ক্ষেত্রের ক্ষমতায়নের অভিযানে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানাই। আমি আন্তর্জাতিক দুগ্ধ ফেডারেশনকে তাদের চমৎকার কাজ এবং অবদানের জন্য প্রশংসা করি। আবারও যারা বিদেশ থেকে এসেছেন তাঁদের সবাইকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন! দীর্ঘ প্রায় পাঁচ দশক পর আপনাদের সকলকে স্বাগত জানানো এবং বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করার ভারত সুযোগ পেয়েছে। এই সম্মেলন থেকে যে অমৃত বের হবে তা এই 'অমৃতকাল'-এ দেশের গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নে এবং দেশের গবাদি পশুর সক্ষমতা আরও শক্তিশালী করতে ও দরিদ্রতম ব্যক্তিদের ক্ষমতায়নে সহায়তা করবে। এটা একটি মহান অবদান হবে! এই প্রত্যাশা এবং আশা নিয়ে, আপনাদের সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
অনেক অনেক শুভ কামনা। ধন্যবাদ।
মূল ভাষণ হিন্দিতে দেওয়া হয়েছে