“লতা দিদির মতো বোনের ভালবাসা পাওয়ার থেকে বড় প্রাপ্তি আর কী হতে পারে, যিনি প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে মানুষকে ভালোবাসা আর আবেগ দিয়ে গেছেন”
“আমি এই পুরস্কার দেশবাসীকে উৎসর্গ করছি। লতা দিদি সবার, তাই তার নামে যে পুরস্কার আমাকে দেওয়া হল তা সকলের”
“তিনি স্বাধীনতার আগে থেকে গান গাইছেন এবং দেশের ৭৫ বছরের যাত্রা পথে তাঁর কণ্ঠ মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে”
“লতা জি সঙ্গীতের সাধক ছিলেন কিন্তু তাঁর গানের মাধ্যমে তিনি দেশাত্মবোধ ও জাতির প্রতি সেবা করার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন”
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ মুম্বাইয়ে মাস্টার দীননাথ মঙ্গেশকর পুরস্কার বিতরণী সভায় অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল শ্রী ভগৎসিং কোশিয়ারি, মঙ্গেশকর পরিবারের সদস্যরা সহ অন্যান্য বিশিষ্ট জনেরা উপস্থিত ছিলেন।

শ্রী সরস্বত্যৈ নমঃ!

বাণী পরম্পরার এই পবিত্র আয়োজনে আমার সঙ্গে উপস্থিত মহারাষ্ট্রের মাননীয় রাজ্যপাল শ্রী ভগৎ সিং কোশিয়ারিজি, মহারাষ্ট্র বিধানসভার মাননীয় বিরোধী দলনেতা শ্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশজি, মহারাষ্ট্র রাজ্য সরকারের মাননীয় মন্ত্রী শ্রী সুভাষ দেশাইজি, মাননীয়া ঊষাজি, মাননীয়া আশাজি, মাননীয় আদিনাথ মঙ্গেশকরজি, মাস্টার দীনানাথ স্মৃতি প্রতিষ্ঠানের সকল সদস্যগণ, সঙ্গীত এবং সংস্কৃতি জগতের সকল বিশিষ্ট বন্ধুগণ, অন্যান্য সকল সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ, ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ!

এই গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে মাননীয় হৃদয়নাথ মঙ্গেশকরজিরও আসার কথা ছিল, কিন্তু একটু আগেই যেমন আদিনাথজি বললেন, শরীর অসুস্থ থাকার কারণে তিনি এখানে আসতে পারেননি। আমি তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করি। 

বন্ধুগণ,

আমি নিজেকে এই অনুষ্ঠানে অত্যন্ত উপযুক্ত ব্যক্তি বলে মনে করছি না কারণ, সঙ্গীতের মতো গভীর বিষয় সম্পর্কে আমার একদমই জ্ঞান নেই। কিন্তু নিজের সাংস্কৃতিক বোধ থেকে আমি এটা অনুভব করি যে সঙ্গীত যেমন একটি সাধনার ফল, তেমনই সঙ্গীত ভাবনারও প্রকাশ। যা অব্যক্তকে ব্যক্ত করে তাকেই বলে শব্দ। যা ব্যক্তের শরীরে প্রাণশক্তি ভরে দেয়, চেতনা সঞ্চার করে দেয়, তাকে বলে নাদ। আর যা চেতনাকে ভাব এবং ভাবনায় পরিপূর্ণ করে তোলে, তাকে সৃষ্টি এবং সংবেদনার তুরীয় অবস্থানে পৌঁছে দেয়, তা সঙ্গীত। আপনি হয়তো নিস্পৃহ বসে আছেন, কিন্তু সঙ্গীতের একটি স্বর আপনার দু’চোখে অশ্রুধারা বইয়ে দিতে পারে। সঙ্গীতের এমনই সামর্থ্য রয়েছে। কিন্তু সঙ্গীতের স্বর আপনার মনে বৈরাগ্যের বোধও এনে দিতে পারে। আবার সঙ্গীত থেকে আপনার মন বীররসে পরিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। সঙ্গীত কারো মনে মাতৃত্ব এবং মমতার অনুভূতি এনে দিতে পারে। সঙ্গীত আপনাকে রাষ্ট্রভক্তি এবং কর্তব্যবোধের শিখরে পৌঁছে দিতে পারে। আমরা সবাই অত্যন্ত সৌভাগ্যের অধিকারী যে আমরা সঙ্গীতের এই সামর্থ্যকে, এই শক্তিকে লতা দিদি রূপে সাক্ষাৎ মূর্ত হয়ে উঠতে দেখেছি। আমরা নিজেদের চোখে তাঁকে দর্শন করার সৌভাগ্য পেয়েছি, আর মঙ্গেশকর পরিবার প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে এই যজ্ঞে নিজেদের আহুতি দিয়ে চলেছে, আর আমার জন্য এই অভিজ্ঞতা এর থেকেও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই একটু আগেই হরিশজি কিছু খবরের কাগজের হেডলাইন তুলে ধরে আমার সঙ্গে লতাদিদির সম্পর্কের কথা বলছিলেন, কিন্তু আমি ভাবছিলাম যে দিদির সঙ্গে আমার সম্পর্ক ঠিক কবে থেকে, কতটা পুরনো! স্মৃতির গভীরে অনেক দূর যেতে যেতে মনে পড়ছিল যে হয়তো চার-সাড়ে চার দশক আগে মাননীয় সুধীর ফড়কেজি আমাকে তাঁর সঙ্গে পরিচয় করিয়েছিলেন। তখন থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত এই পরিবারের সঙ্গে আমার অপার ভালোবাসার সম্পর্ক নিবিড় থেকে নিবিড়তর হয়েছে। অসংখ্য ঘটনা ও সেগুলির স্মৃতি আমার জীবনের অঙ্গ হয়ে উঠেছে। আমার জন্য লতা দিদি সুর সম্রাজ্ঞীর পাশাপাশি অনেক কিছু; যা বলতে গেলে আমার গর্ব অনুভূত হয় যে তিনি আমার বড় বোন ছিলেন। আমাদের দেশের অনেক প্রজন্মের মনে প্রেম এবং করুণা জাগিয়ে তোলা লতা দিদি আমাকে সর্বদাই তাঁর দিক থেকে একজন বড় বোনের মতোই অপার স্নেহ দিয়ে গেছেন। আমি মনে করি, একজন মানুষের জীবনে এর থেকে বড় সৌভাগ্য কী হতে পারে? হয়তো অনেক দশক পর এই প্রথমবার রাখী উৎসব যখন আসবে, তখন আমার হাতে রাখী বাঁধার জন্য লতা দিদিকে পাব না। সাধারণভাবে কোনও সম্মান সমারোহে যাওয়া থেকে আমি আজকাল দূরেই থাকি, আর এখন যেমন হরিশজি বলছিলেন, কোনও সম্মান গ্রহণ করা – এই ধরনের বিষয় থেকেও আমি দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করি। আমি নিজেকে এই ধরনের অনুষ্ঠানে অ্যাডজাস্ট করতে পারি না। কিন্তু পুরস্কারটি যখন লতা দিদির নামে, আমার লতা দিদির মতো বড় বোনের নামে অলঙ্কৃত, তখন এটি আমার জন্য তাঁর আপনত্বের ছোঁয়ার মতো, আর আমার ওপর মঙ্গেশকর পরিবারের একটা অধিকার আছে। সেজন্য এই পরিবারের মাননীয় সদস্যদের ডাকে সাড়া দিয়ে এখানে আসা এক প্রকার আমার জন্য একটি দায়িত্ব পালন। এই পুরস্কার আমার জন্য ভালোবাসার প্রতীক। আর যখন আদিনাথজির বার্তা আসে, তিনি আমার আজকে কী কী কর্মসূচি আছে, আমি কতটা ব্যস্ত – এসব কিছুই জানতে চান না। আমি বলি, আমি নিজেকেই বলি, ভাই, আগে হ্যাঁ করে দাও তো! এক্ষেত্রে না বলা যে আমার পক্ষে সম্ভবই না। আমি এই পুরস্কারকে সকল দেশবাসীর উদ্দেশে সমর্পণ করছি। যেভাবে লতা দিদি আমার দেশের প্রত্যেক মানুষের ছিলেন, সেভাবে তাঁর নাম অলঙ্কৃত আমাকে দেওয়া এই পুরস্কারও দেশের প্রত্যেক মানুষেরই সম্পত্তি। লতা দিদির সঙ্গে প্রায়ই আমার কথা হত। তিনি নিজে থেকেই আমাকে বার্তা পাঠাতেন, আর আশীর্বাদও পাঠাতেন। হয়তো তাঁর একটি কথা আমাদের সকলের কাজে লাগতে পারে, যেটি আমি ভুলতে পারি না। আমি তাঁকে অত্যন্ত শ্রদ্ধা করতাম, কিন্তু তিনি কী বলতেন? তিনি সব সময়েই বলতেন – “মানুষ তাঁর বয়স দিয়ে নয়, তাঁর কাজ দিয়ে বড় হয়। যিনি দেশের জন্য যতটা করেন, তিনি ততটাই বড়!” নিজের জীবনে সাফল্যের শিখরে পৌঁছে যাওয়া ব্যক্তির এরকম ভাবনায় তিনি যে কত মহান, এটাই আমরা অনুভব করতে পারি। আমি মনে-প্রাণে জানি যে দিদি আমার থেকে বয়সে যেমন বড় ছিলেন, তেমনই কর্মের দিক থেকেও অনেক বড় ছিলেন। 

আমরা সবাই যতটা সময় লতা দিদির সঙ্গে কাটিয়েছি, আমরা সবাই জানি যে তিনি সারল্যের প্রতিমূর্তি ছিলেন। লতা দিদি সঙ্গীতে এমন স্থান অর্জন করেছেন যে মানুষ তাঁকে মা সরস্বতীর প্রতিরূপ বলে মানতেন। তাঁর কন্ঠস্বর প্রায় ৮০ বছর ধরে ভারতীয় সঙ্গীত জগতে নিজের ছাপ রেখে গেছে। গ্রামোফোন দিয়ে যাত্রা শুরু করে টেপ রেকর্ডারের ক্যাসেট, তারপর সিডি, তারপর ডিভিডি আর তারপর পেন ড্রাইভ, অনলাইন মিউজিক এবং অ্যাপস পর্যন্ত সঙ্গীত এবং সঙ্গীত প্রেমীরা কয়েক প্রজন্ম ধরে কত বড় যাত্রাপথ লতাজির পাশাপাশি সফর করেছে। ভারতীয় সিনেমার ৪-৫ প্রজন্মকে তিনি তাঁর কন্ঠস্বরে মূর্ত করে তুলেছেন। ভারতরত্নের মতো সর্বোচ্চ সম্মান তিনি দেশকে দিয়েছেন, আর দেশ গৌরবান্বিত হয়েছে। গোটা বিশ্ব তাঁকে সুর সম্রাজ্ঞী মনে করত, কিন্তু তিনি নিজেকে সুরের সম্রাজ্ঞী নয়, একজন একনিষ্ঠ সাধিকা বলে মনে করতেন। আর এটা আমরা অনেকে কাছ থেকেই দেখেছি ও শুনেছি যে তিনি যখনই কোনও গান রেকর্ডিং-এর জন্য যেতেন, তখন নিজের চপ্পলগুলি বাইরে খুলে যেতেন। সঙ্গীতের সাধনা আর ঈশ্বরের সাধনা তাঁর জন্য এক রকমই আরাধনার বিষয় ছিল। 

বন্ধুগণ,

আদি শঙ্করাচার্যের অদ্বৈতের সিদ্ধান্তকে আমরা সবাই যদি শোনার চেষ্টা করি, বোঝার চেষ্টা করি, তাহলে কখনও কখনও এর জটিলতায় পথ হারিয়ে ফেলতে পারি। কিন্তু আমি যখন আদি শঙ্করের অদ্বৈতের সিদ্ধান্তের কথা ভাবার চেষ্টা করি, তখন যদি তাঁর সম্পর্কে আমাকে সরল শব্দ দিয়ে বলতে হয়, সেই অদ্বৈতের সিদ্ধান্তে ঈশ্বরের উচ্চারণও স্বর বিনা অসম্পূর্ণ। ঈশ্বরে স্বর সমাহিত রয়েছে। যেখানে স্বর আছে, সেখানে পূর্ণতা আছে, সঙ্গীত আমাদের হৃদয়ের অন্তঃস্থলে, আমাদের অন্তর্মনে প্রভাব ফেলতে সক্ষম যদি তার উদ্গম লতাজির মতো পবিত্র হয়, তাহলে সেই পবিত্রতা আর ভাবও সেই সঙ্গীতে মিলে, মিশে একাকার হয়ে যায়। লতাজির ব্যক্তিত্বের এই অংশটি আমাদের সকলের জন্য, আর বিশেষ করে, নবীন প্রজন্মের জন্য একটি প্রেরণাস্বরূপ।

বন্ধুগণ,

লতাজির সশরীরে যাত্রাপথ একটি এমন সময়ে পূর্ণ হয়েছে যখন আমাদের দেশ তার স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব পালন করছে। তিনি দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে থেকেই ভারতের অনুভূতিকে স্বর দিয়েছেন আর এই ৭৫ বছর ধরে দেশের যাত্রাপথ তাঁর সুরের সঙ্গে জড়িয়েছিল। এই পুরস্কারের সঙ্গে লতাজির পিতা শ্রদ্ধেয় দীনানাথ মঙ্গেশকরজির নামও জড়িত রয়েছে। মঙ্গেশকর পরিবার দেশের জন্য যে অবদান রেখে গেছে তার জন্য আমরা সকল দেশবাসী তাদের কাছে ঋণী। সঙ্গীতের পাশাপাশি দেশভক্তির যে চেতনা লতা দিদির ভেতরে ছিল, তার উৎস ছিলেন তাঁর পিতাই। স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় সিমলায় ব্রিটিশ ভাইসরয়ের কর্মসূচিতে দীনানাথজি বীর সাভারকরের লেখা গান গেয়েছিলেন। ব্রিটিশ ভাইসরয়ের সামনে এই দীনানাথজি এমনটি করতে পারতেন আর সঙ্গীতের মাধ্যমেই করতে পারতেন। তিনি তাঁর থিম বা মুল ভাবনা নিয়ে প্রদর্শনও করেছিলেন আর বীর সাভারকরজি এই গান ব্রিটিশ শাসকদের চ্যালেঞ্জ জানিয়ে লিখে গিয়েছিলেন। এই সাহস, এই দেশভক্তি দীনানাথজি তাঁর পরিবারকে ঐতিহ্য রূপে দিয়ে গেছেন। লতাজি সম্ভবত কোথাও একবার বলেছিলেন যে, আগে তিনি অল্পবয়সে সমাজ সেবার ক্ষেত্রেই কাজ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সঙ্গীতের প্রতি অমোঘ আকর্ষণ থেকে লতাজি সঙ্গীতকে নিজের জীবনের আরাধনা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন। কিন্তু দেশপ্রেম এবং দেশসেবা তাঁর গানগুলির মাধ্যমেই প্রেরণা পেয়ে গেছে। তা সে ছত্রপতি শিবাজী মহারাজকে নিয়ে বীর সাভারকরজির লেখা গান – “হিন্দু নরসিংহা” হোক, অথবা সমর্থ গুরু রামদাসজির প্রথম পদ হোক, লতাজি শিব কল্যাণ রাজার রেকর্ডিং-এর মাধ্যমে তাকে অমর করে দিয়েছেন। “অ্যায় মেরে ওতন কে লোগোঁ, জরা আখোঁ মেঁ ভর লো পানি” আর “জয় হিন্দ কী সেনা …” – এ ধরনের আবেগময় পংক্তি গেয়েছিলেন যা দেশের প্রতিটি মানুষের মনে, প্রত্যেক যুবক-যুবতীর মনে অমর হয়ে রয়েছে। তাঁর জীবনের সঙ্গে জড়িত এরকম অনেক দিক রয়েছে। লতা দিদি এবং তাঁর পরিবারের অবদানকে আমরা যেন অমৃত মহোৎসবে দেশের প্রত্যেক মানুষের সামনে প্রেরণাস্বরূপ তুলে ধরতে পারি, এটা আমাদের কর্তব্য।

বন্ধুগণ,

আজ দেশ ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’-এর আত্মবিশ্বাস সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে চলেছে। লতাজি ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’-এর মধুর প্রস্তুতির মতোই এর মূর্ত প্রতীক ছিলেন। আপনারা দেখুন, তিনি দেশের ৩০টিরও বেশি ভাষায় হাজার হাজার গান গেয়েছিলেন। হিন্দি হোক কিংবা মারাঠি, সংস্কৃত হোক কিংবা অন্য কোনও ভারতীয় ভাষা – লতাজির আওয়াজ এমনই প্রত্যেক ভাষায় সম্পৃক্ত হয়েছে যে সবাই তাঁকে নিজের ভাবেন। তিনি প্রত্যেক রাজ্য, প্রত্যেক এলাকার জনগণের মনে একাত্ম হয়ে গেছেন। ভারতীয়ত্বের সঙ্গে সঙ্গীত কিভাবে অমর হতে পারে – এই ভাবধারা নিয়ে তিনি জীবনধারণ করে দেখিয়েছেন। ভারতীয়ত্বের পাশাপাশি সঙ্গীত কিভাবে অমর হয়ে উঠতে পারে, এটা তিনি নিজের জীবনে প্রয়োগ করে দেখিয়েছেন। তিনি শ্রীমদ্ভগবৎ গীতা সর্বসমক্ষে পাঠ করেছেন আর তুলসী, মীরাবাঈ, সন্ত জ্ঞানেশ্বর এবং নরসী মেহতার গানগুলিকেও সমাজের মন ও মস্তিষ্কে রোপণ করে গেছেন। রামচরিত মানসের চৌপাইয়া বা চতুষ্পদী থেকে শুরু করে বাপুজির প্রিয় ভজন “বৈষ্ণব জন তো তেরে কহিয়ে” পর্যন্ত সবকিছু লতাজির আওয়াজে পুনরুজ্জীবিত হয়ে উঠেছে। তিনি তিরুপতি দেবস্থানমের জন্য অনেক গান এবং মন্ত্রের একটা সেট রেকর্ড করেছিলেন যা আজও প্রতিদিন ভোরে সেখানে বাজে। অর্থাৎ, সংস্কৃতি থেকে শুরু করে আস্থা পর্যন্ত, পূর্ব থেকে শুরু করে পশ্চিম পর্যন্ত, উত্তর থেকে শুরু করে দক্ষিণ পর্যন্ত, লতাজির সুরগুলি গোটা দেশকে একটি একতার সূত্রে গাঁথার কাজ করেছে। ভারতের বাইরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তিনি আমাদের দেশের সাংস্কৃতিক রাজদূত ছিলেন। তেমনই তাঁর ব্যক্তিগত জীবন ছিল নিষ্কলুষ। পুণেতে তিনি নিজের রোজগারের টাকা দিয়ে  এবং বন্ধুদের সহযোগিতায় মাস্টার দীনানাথ মঙ্গেশকর হাসপাতাল তৈরি করিয়েছেন যা আজও গরীবদের সেবা করে যাচ্ছে আর হয়তো দেশের খুব কমই এমন লোক রয়েছেন যাঁরা এই হাসপাতালের প্রশংসা  শুনতে পাননি। করোনার কালখণ্ডেও দেশের যত সেরা নির্বাচিত হাসপাতাল রয়েছে, যেগুলিতে সর্বাধিক গরীবদের জন্য কাজ হয়েছে, তাদের মধ্যে পুণের এই মঙ্গেশকর হাসপাতাল সবচাইতে বেশি সুনাম অর্জন করেছে।

বন্ধুগণ,

আজ স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবে দেশ তার নিজস্ব অতীতকে মনে করছে, আর দেশ ভবিষ্যতের জন্য নতুন সঙ্কল্প নিয়ে আসছে। আমরা আজ বিশ্বের সর্ববৃহৎ স্টার্ট-আপ ইকো-সিস্টেমের মধ্যে অন্যতম। আজ ভারত প্রত্যেক ক্ষেত্রে আত্মনির্ভর হয়ে ওঠার লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে। নিরন্তর উন্নয়নের এই যাত্রা আমাদের সঙ্কল্পগুলির অঙ্গ। কিন্তু উন্নয়ন নিয়ে ভারতের মৌলিক দৃষ্টি সব সময়েই আলাদা। আমাদের জন্য উন্নয়নের অর্থ হল – ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস অউর সবকা প্রয়াস’। ‘সবকে সাথ’ এবং সকলের জন্য বিকাশের এই ভাবনায় ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’ ভাবনাও সামিল রয়েছে। আমরা চাই গোটা বিশ্বের উন্নয়ন, সম্পূর্ণ মানবতার কল্যাণ  -  এসব শুধুই ভৌতিক সামর্থ থেকে হাসিল করা যায় না। এর জন্য প্রয়োজন হয় মানবিক মূল্যবোধের। এর জন্য প্রয়োজন হয় আধ্যাত্মিক চেতনার! সেজন্য আজ ভারত বিশ্বকে যোগ এবং আয়ুর্বেদ থেকে শুরু করে পরিবেশ রক্ষার মতো বিষয়গুলি নিয়ে দিশা দেখাচ্ছে। আমি মনে করি, মানবতার কল্যাণে ভারতের এই অবদানের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ আমাদের ভারতীয় সঙ্গীতও। এই দায়িত্ব আপনাদের হাতে রয়েছে। আমরা নিজেদের এই ঐতিহ্যকে সেই মূল্যবোধগুলির সঙ্গে যাতে জীবন্ত রাখতে পারি এবং এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি, আর বিশ্ব শান্তির একটি মাধ্যম করে তুলতে পারি, এটাই আমাদের সকলের প্রধান দায়িত্ব। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আপনাদের মতো যাঁরা সঙ্গীত জগতের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন, তাঁরা সবাই এই দায়িত্বকে নির্বাহণ করবেন এবং একটি নতুন ভারতকে দিশা দেবেন। এই বিশ্বাস নিয়েই আমি আপনাদের সবাইকে হৃদয় থেকে ধন্যবাদ জানাই। মঙ্গেশকর পরিবারকেও আমি হৃদয় থেকে ধন্যবাদ জানাই যে, আপনারা দিদির নামে ঘোষিত এই পুরস্কারের প্রথম গ্রহীতা হিসেবে আমাকে বেছে নিয়েছেন। কিন্তু হরিশজি যখন সম্মানপত্রটি পড়ছিলেন, তখন আমি একথা ভাবছিলাম যে আমাকে এই কথাগুলি অনেকবার পড়তে হবে, আর ভালোভাবে পড়লে তবেই নোট করতে পারব যে এখন আমার এর মধ্যে কতটা জানা বাকি, কতটা পাওয়া বাকি, এখন আমার মধ্যে কতটা ত্রুটি রয়েছে, তা আমি কিভাবে শুধ্রাবো, কিভাবে নিজেকে সম্পূর্ণ করব। লতা দিদির আশীর্বাদে আর মঙ্গেশকর পরিবারের ভালোবাসায় আমার মধ্যে যত ত্রুটি রয়েছে, সেই খামতিগুলিকেই আজ আপনারা আমার সম্মানপত্র রূপে প্রস্তুত করেছেন। সেই খামতিগুলিকে আমি সম্পূর্ণ করার চেষ্টা করব।

অনেক অনেক ধন্যবাদ!

নমস্কার!

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
Annual malaria cases at 2 mn in 2023, down 97% since 1947: Health ministry

Media Coverage

Annual malaria cases at 2 mn in 2023, down 97% since 1947: Health ministry
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
Prime Minister condoles passing away of former Prime Minister Dr. Manmohan Singh
December 26, 2024
India mourns the loss of one of its most distinguished leaders, Dr. Manmohan Singh Ji: PM
He served in various government positions as well, including as Finance Minister, leaving a strong imprint on our economic policy over the years: PM
As our Prime Minister, he made extensive efforts to improve people’s lives: PM

The Prime Minister, Shri Narendra Modi has condoled the passing away of former Prime Minister, Dr. Manmohan Singh. "India mourns the loss of one of its most distinguished leaders, Dr. Manmohan Singh Ji," Shri Modi stated. Prime Minister, Shri Narendra Modi remarked that Dr. Manmohan Singh rose from humble origins to become a respected economist. As our Prime Minister, Dr. Manmohan Singh made extensive efforts to improve people’s lives.

The Prime Minister posted on X:

India mourns the loss of one of its most distinguished leaders, Dr. Manmohan Singh Ji. Rising from humble origins, he rose to become a respected economist. He served in various government positions as well, including as Finance Minister, leaving a strong imprint on our economic policy over the years. His interventions in Parliament were also insightful. As our Prime Minister, he made extensive efforts to improve people’s lives.

“Dr. Manmohan Singh Ji and I interacted regularly when he was PM and I was the CM of Gujarat. We would have extensive deliberations on various subjects relating to governance. His wisdom and humility were always visible.

In this hour of grief, my thoughts are with the family of Dr. Manmohan Singh Ji, his friends and countless admirers. Om Shanti."