ভারতীয় ইতিহাসে ৫ অগাস্ট তারিখটি তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠছে, কারণ এই দিনটির সঙ্গে ৩৭০ ধারা বাতিল এবং রাম মন্দিরের বিষয়টি যুক্ত রয়েছে : প্রধানমন্ত্রী
আমাদের যুবারা আজ জাতীয় খেলা হকির মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় বড় পদক্ষেপ নিয়েছে : প্রধানমন্ত্রী
আমাদের যুবারা বিজয়ী হওয়ার জন্য গোল করে চলেছে, অন্যদিকে কিছু মানুষ রাজনৈতিক স্বার্থ সিদ্ধির কারণে আত্মঘাতি গোল করছেন : প্রধানমন্ত্রী
ভারতীয় যুবাদের মধ্যে দৃঢ় আস্থা রয়েছে যে, তাঁরা এবং ভারত উভয়েই এগিয়ে চলেছে : প্রধানমন্ত্রী
আমাদের মহান এই দেশ স্বার্থপরতা ও জাতীয়তা বিরোধী রাজনীতির কাছে অবরুদ্ধ হতে পারে না : প্রধানমন্ত্রী
দরিদ্র, বঞ্চিত, পিছিয়ে পড়া শ্রেণী ও আদিবাসী মানুষের জন্য নেওয়া কর্মসূচিগুলি ডবল ইঞ্জিন সরকারের দরুণ উত্তর প্রদেশে দ্রুত রূপায়িত হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী
উত্তর প্রদেশকে সর্বদাই রাজনীতির চশমা পরে দেখা হয়েছে। উত্তর প্রদেশও যে ভারতের অগ্রগতির চালিকাশক্তির ভর কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে, তা সাম্প্রতিক বছরগুলিতে প্রমাণিত হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী
উত্তর প্রদেশে গত সাত দশকের ঘাটতি মেটাতে এই দশক গুরুত্বপূর্ণ : প্রধানমন্ত্রী

নমস্কার,
আজ আপনাদের সবার সঙ্গে কথা বলে আমার খুব আনন্দ হচ্ছে। এজন্য আনন্দ হচ্ছে যে দিল্লি থেকে পাঠানো প্রতিটি শস্যদানা একেকজন সুবিধাভোগীর থালা পর্যন্ত পৌঁছচ্ছে। খুশি এজন্য যে পূর্ববর্তী সরকারের সময় উত্তরপ্রদেশে গরীবদের জন্য বরাদ্দ শস্য লুঠ হয়ে যেত। আজ সেই লুঠের সমস্ত পথ বন্ধ। উত্তরপ্রদেশে যেভাবে প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনাকে বাস্তবায়িত করা হচ্ছে তা নতুন উত্তরপ্রদেশের পরিচয়কে আরও মজবুত করছে। আজ আপনাদের সঙ্গে কথা বলে আমার খুব ভালো লেগেছে। যে সাহসের সঙ্গে, যে বিশ্বাস নিয়ে আপনারা বলছিলেন, যে সততা আপনাদের প্রতিটি শব্দে প্রস্ফুটিত হচ্ছিল তা থেকে আমি খুব আনন্দ পেয়েছি। আপনাদের জন্য কাজ করার উৎসাহ আমার মনে আরও বেড়ে গিয়েছে। আপনাদের সঙ্গে যত কথাই বলি না কেন, তা কম হবে। আসুন, এখন আজকের কর্মসূচি নিয়ে কথা বলি!

আজকের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ যতটা যোগী ততটাই কর্মযোগীও। এহেন জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী, উত্তরপ্রদেশ সরকারের আমাদের সকল মন্ত্রীগণ, সংসদে আমার সহকর্মীগণ, সমস্ত সাংসদ, বিধায়ক, মেয়র, জেলা পঞ্চায়েতের অধ্যক্ষ এবং বিশাল সংখ্যায় উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসে একত্রিত হওয়া আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা, এই আগস্ট মাসটি ভারতের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুরুর দিনটি থেকেই এক ধরনের সাফল্য নিয়ে এসেছে। এমন মনে হয় যেন ভারতের বিজয়ের সূত্রপাত হয়েছে। তার মধ্যেও আজকের এই ৫ আগস্ট তারিখ অত্যন্ত বিশেষ হয়ে উঠেছে, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ইতিহাস এই দিনটিকে অনেক বছর ধরে মনে রাখবে। এই ৫ আগস্ট তারিখেই দু’বছর আগে ভারতবাসী ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’-এর ভাবনাকে আরও মজবুত করেছিল। প্রায় সাত দশক পর আজকের দিনেই ভারতের সংবিধান থেকে ৩৭০ ধারা বাতিল করে জম্মু-কাশ্মীরের প্রত্যেক নাগরিককে সমস্ত ধরনের নাগরিক অধিকার ও সুবিধার অংশীদার করে তোলা হয়েছিল। এই ৫ আগস্ট তারিখেই গত বছর কোটি কোটি ভারতবাসীর কয়েকশ’ বছর অপেক্ষার পর রাম মন্দির নির্মাণের প্রথম সূচনা হয়েছে। আজ অযোধ্যায় দ্রুতগতিতে রাম মন্দির নির্মিত হচ্ছে আর এ বছর আজ ৫ আগস্ট তারিখে আরেকবার আমাদের সকলের জন্য উৎসাহ এবং উদ্দীপনা নিয়ে এসেছে। আজই অলিম্পিকের মাঠে দেশের যুবশক্তি হকিতে নিজেদের গৌরব পুনরুদ্ধারের দিকে বড় লাফ দিয়েছে। প্রায় চার দশক পর এই সোনালী মুহূর্ত এসেছে। যে হকি একদিন আমাদের জাতীয় পরিচয় ছিল, আজ আমাদের যুবকেরা সেই গৌরব পুনরুদ্ধার করার মাধ্যমে দেশকে অনেক বড় উপহার দিয়েছে আর এটাও একটা সংযোগ যে আজকের দিনেই উত্তরপ্রদেশের ১৫ কোটি মানুষের জন্য এত পূণ্য আয়োজন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আমার গরীব পরিবারের ভাই ও বোনেদের ৮০ কোটিরও বেশি মানুষকে প্রায় ১ বছরের বেশি সময় ধরেই বিনামূল্যে খাদ্যশস্য দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু এই কাজে আমাকে শরিক করে এই পূণ্য অনুষ্ঠানে এসে আপনাদের সকলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সৌভাগ্য হয়েছে।

ভাই ও বোনেরা,
একদিকে আমাদের দেশ, আমাদের যুবশক্তি ভারতের জন্য নতুন নতুন সাফল্য অর্জন করছে, জয় সূচক গোলের পর আরও গোল করছে, অন্যদিকে দেশে এমন কিছু মানুষও আছেন যাঁরা রাজনীতির স্বার্থে নিমজ্জিত হয়ে কিছু কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁরা যেন আত্মঘাতি গোল দিতে ব্যস্ত। দেশ কী চায়, দেশ কী অর্জন করছে, দেশ কিভাবে পরিবর্তিত হচ্ছে, তা নিয়ে তাঁদের কোনও মাথাব্যথা নেই। এই মানুষেরা নিজেদের স্বার্থের জন্য দেশের সময় এবং ভাবনা উভয়কেই আহত করার কাজে ব্যস্ত। ভারতের সংসদের জন-ভাবনার অভিব্যক্তির পবিত্র স্থলটিকে এই মানুষেরা রাজনৈতিক স্বার্থের ফলে নিরন্তর অপমান করে চলেছেন। আজ গোটা দেশ মানবতার ওপর হামলে পড়া সবচাইতে বড় সঙ্কটের বিরুদ্ধে, ১০০ বছরের বৃহত্তম বিপর্যয় থেকে বেরিয়ে আসার জন্য লড়াই করছে। একদিকে দেশবাসী একজোট হয়ে বিপর্যয় থেকে মুক্ত হওয়ার চেষ্টা করছে, আর অন্যদিকে এঁরা কিভাবে দেশহিতে করতে থাকা কর্মযজ্ঞে বাধা দেওয়া যায়, তার প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত। কিন্তু বন্ধুগণ, এই মহান দেশ, এই দেশের মহান জনগণ, এরকম স্বার্থপর এবং দেশহিত বিরোধী রাজনীতি ক্রীড়নক হয়ে উঠতে পারে না। এই মানুষেরা দেশকে, দেশের উন্নয়নকে থামানোর যতো চেষ্টাই করুন না কেন, এই দেশ, এই দেশের এগিয়ে যাওয়ার গতিকে তাঁরা আর থামাতে পারবেন না। তাঁরা সংসদকে স্তব্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করছেন, কিন্তু ১৩০ কোটি জনগণ দেশকে এভাবে থামিয়ে দেওয়াকে প্রতিহত করার জন্য এগিয়ে আসবে। প্রতিটি সমস্যাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দেশ প্রত্যেক ক্ষেত্রে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। মাত্র গত কয়েক সপ্তাহের সাফল্য যদি দেখেন তাহলেই বুঝতে পারবেন দেশ কেমন গতিতে নতুন সাফল্য অর্জন করছে। আর কিছু মানুষ দিল্লিতে সংসদকে স্তব্ধ করে দিতে চাইছেন!
গত কয়েক সপ্তাহে যেদিকেই তাকান, ভারতবাসীর সামর্থ্য এবং সাফল্য দেখা যাচ্ছে। অলিম্পিকে ভারতীয় খেলোয়াড়দের অভূতপূর্ব প্রদর্শনে গোটা দেশ উৎসাহিত। ভারত টিকাকরণের ক্ষেত্রেও ৫০ কোটির মাইলফলক পেরোনোর কাছাকাছি এসে পৌঁছেছে। আর অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই তা পেরিয়ে যাবে। এই করোনার কালখণ্ডেও ভারতীয়দের উদ্যম নতুন নতুন সাফল্য আনছে। জুলাইয়ে জিএসটি-র সংগ্রহ কিংবা আমাদের রপ্তানি – উভয় ক্ষেত্রেই ভারত নতুন উচ্চতা স্পর্শ করেছে। জুলাইয়ে ১ লক্ষ ১৬ হাজার কোটি টাকার জিএসটি সংগ্রহ হওয়া এটা দেখায় যে অর্থনীতি পূর্ণ গতিতে এগিয়ে চলেছে। তেমনই স্বাধীনতার পর প্রথমবার কোনও এক মাসে ভারতের রপ্তানি ২.৫ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি হয়েছে। কৃষি রপ্তানিতে আমরা অনেক দশক পর বিশ্বের সর্বোচ্চ ১০টি দেশের তালিকায় সামিল হয়েছি। ভারতকে কৃষি-প্রধান দেশ বলা হয়। কিন্তু অনেক দশক পর রপ্তানিতে সর্বোচ্চ ১০টি দেশের মধ্যে আমাদের নাম এসেছে। ভারতের গৌরব, দেশের প্রথম ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’, বিমানবাহক যুদ্ধজাহাজ ‘বিক্রান্ত’ সমুদ্রে তার মহড়া শুরু করে দিয়েছে। প্রত্যেক সমস্যাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ভারত লাদাখে বিশ্বের সর্বোচ্চ মোটরেবল রোডের নির্মাণ সম্পূর্ণ করেছে। সম্প্রতি ভারত ‘ই-রুপি’ চালু করেছে যা আগামীদিনে ডিজিটাল ইন্ডিয়াকে সশক্ত করবে আর জনকল্যাণ প্রকল্পগুলি সম্পূর্ণরূপে লক্ষ্যসাধনে সফল হবে।
বন্ধুগণ,
যাঁরা শুধুই নিজের পদের জন্য বিব্রত, তাঁরা এখন ভারতকে থামিয়ে রাখতে পারবে না। নতুন ভারত পদ না, পদক জিতে বিশ্বে নিজের সম্মান বৃদ্ধি করছে। নতুন ভারতে এগিয়ে যাওয়ার পথ পরিবার নয়, পরিশ্রমের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে। আর সেজন্য আজ ভারতের যুবশক্তি বলছে, ভারত এগিয়ে চলেছে, ভারতের যুবশক্তি এগিয়ে চলেছে।
বন্ধুগণ,
এই পর্যায়ে যোগীজি এবং তাঁর সরকার আজ যে কর্মসূচি রেখেছেন তা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এই কঠিন সময়ে একজন গরীবও যেন এরকম না থাকেন যাঁর বাড়িতে রেশন নেই - এটা সুনিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।
বন্ধুগণ,
১০০ বছরের সবচাইতে বড় বিপর্যয় এই মহামারীই শুধু নয়, পাশাপাশি অনেক দিকে দেশ এবং বিশ্বের কোটি কোটি মানুষকে, সম্পূর্ণ মানবজাতিকে নিজের করাল গ্রাসে নিয়ে নিয়েছে আর তা সবচাইতে বড় বিপর্যয় সৃষ্টি করছে। অতীতে আমরা দেখেছি যখন দেশে এ ধরনের বড় সঙ্কট আসত, যখন দেশের সমস্ত ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ত, মানুষের বিশ্বাসও নড়বড়ে হয়ে যেত, কিন্ত আজ ভারতের প্রত্যেক নাগরিক সম্পূর্ণ শক্তি দিয়ে এই মহামারীর মোকাবিলা করছে। স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত পরিকাঠামো নির্মাণ থেকে শুরু করে বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিনামূল্যে টিকাকরণ অভিযান কিংবা ভারতবাসীকে অনাহার থেকে বাঁচানোর সবচাইতে বড় অভিযান, লক্ষ লক্ষ কোটি টাকার এই কর্মসূচি আজ ভারত সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে চলেছে। মহামারীর এই সঙ্কটের মধ্যে ভারত বড় সংখ্যায় কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী এবং বড় বড় মেগা ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রোজেক্টকেও থামিয়ে রাখেনি। আমি খুব খুশি যে উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তরপ্রদেশের জনগণ দেশের সামর্থ্য বৃদ্ধির জন্য কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছেন। উত্তরপ্রদেশে হাইওয়ে, এক্সপ্রেসওয়ে, ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডর এবং ডিফেন্স করিডরের মতো প্রকল্প যেভাবে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে, এটা তার জলজ্যান্ত উদাহরণ।
বন্ধুগণ,
এত সঙ্কট সত্ত্বেও আজ দেশ রেশন থেকে শুরু করে অন্যান্য খাদ্যও পানীয়ের দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি গোটা বিশ্বে যেভাবে আকাশচুম্বী হয়েছে, ততটা ভারতে হতে দেয়নি। আমরা জানি, ছোটখাটো বন্যা এলেও দুধ এবং সব্জির দাম কতটা বেড়ে যায়। ছোটখাটো বিপর্যয় এলে দ্রব্যমূল্য কিভাবে বেড়ে যায়, আর আমাদের সামনে তো বিশাল সমস্যার পাহাড়। কিন্তু আমি আমার গরীব ও মধ্যবিত্ত ভাই-বোনেদের মনে বিশ্বাস যোগাতে চাই, আমরা সম্পূর্ণরূপে চেষ্টা করছি যাতে দ্রব্যমূল্য আমরা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারি আর এটা আপনাদের সহযোগিতাতেই সম্ভব হবে। করোনাকালেও কৃষি এবং তার সঙ্গে যুক্ত কাজকে আপনারা থামতে দেননি। পূর্ণ সতর্কতার সঙ্গে জারি রেখেছেন। কৃষকদের বীজ থেকে শুরু করে সার পর্যন্ত পেতে আর তাঁদের ফসল বিক্রি করতে যাতে কোনও সমস্যা না হয় তার যথোচিত ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরিণামস্বরূপ আমাদের কৃষকরাও রেকর্ড পরিমাণ ফসল উৎপাদন করেছেন আর সরকারও রেকর্ড পরিমাণ ফসল ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে ক্রয় করে নতুন রেকর্ড স্থাপন করেছে আর আমাদের যোগীজির নেতৃত্বাধীন সরকারও বিগত চার বছরে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে শস্য কেনার ক্ষেত্রে প্রতি বছর নতুন নতুন রেকর্ড বানিয়েছে। উত্তরপ্রদেশে প্রত্যেক বছর গম আর ধান ক্রয়ের ক্ষেত্রে বিগত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ সংখ্যক কৃষকরা ন্যূনতম সহায়ক মূল্য পেয়ে লাভবান হয়েছেন। উত্তরপ্রদেশের ১৩ লক্ষেরও বেশি কৃষক পরিবারকে তাঁদের উৎপন্ন ফসলের মূল্য হিসেবে প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকা সরাসরি তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
বন্ধুগণ,
কেন্দ্রীয় সরকার এবং উত্তরপ্রদেশ সরকারের ডবল ইঞ্জিন সাধারণ মানুষের সুবিধা এবং ক্ষমতায়নের জন্য ক্রমাগত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। করোনার বিপর্যয় আসা সত্ত্বেও গরীবদের জন্য নির্ধারিত কোনও পরিষেবা, কোনও অভিযানের গতি শ্লথ হয়নি। উত্তরপ্রদেশে এখন পর্যন্ত ১৭ লক্ষেরও বেশি গ্রামীণ এবং শহুরে গরীব পরিবারের জন্য নিজস্ব পাকা বাড়ি মঞ্জুর করা হয়েছে। লক্ষ লক্ষ গরীব পরিবার বাড়ির মধ্যেই শৌচালয়ের সুবিধা পেয়েছেন। প্রায় ১.৫ কোটি গরীব পরিবারকে ‘উজ্জ্বলা’ প্রকল্পের মাধ্যমে বিনামূল্যে রান্নার গ্যাস সংযোগ এবং লক্ষ লক্ষ পরিবারকে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক বাড়িতে নলের মাধ্যমে জল পৌঁছে দেওয়ার কাজ মিশন মোডে চলছে। বিগত দু’বছরে উত্তরপ্রদেশে ২৭ লক্ষ গ্রামীণ পরিবারে নলের মাধ্যমে জল পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
ভাই ও বোনেরা,
ডবল ইঞ্জিনের সরকার এটা সুনিশ্চিত করেছে যে গরীব, দলিত, পিছিয়ে পড়া, আদিবাসীদের জন্য রচিত প্রকল্পগুলি দ্রুতগতিতে তৃণমূলস্তরে বাস্তবায়িত হোক। পিএম স্বনিধি যোজনা এর একটা বড় উদাহরণ। করোনায় সৃষ্ট প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও রেল লাইনের পাশে বসা বিক্রেতা এবং ঠেলাওয়ালা ভাই-বোনেদের পেশাকে আবার পথে আনার জন্য তাঁদের জন্য ব্যাঙ্ক ঋণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অত্যন্ত কম সময়ে এই প্রকল্পের মাধ্যমে উত্তরপ্রদেশের প্রায় ১০ লক্ষ বন্ধু উপকৃত হয়েছেন।
বন্ধুগণ,
বিগত দশগুলিতে উত্তরপ্রদেশের পরিচয় কি রকম ছিল? উত্তরপ্রদেশ সম্পর্কে কি বলা হত সেটা হয়তো আপনাদের মনে আছে। উত্তরপ্রদেশকে সর্বদা রাজনীতির চশমা দিয়ে দেখা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশ যে দেশের উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে তা নিয়ে আলোচনা পর্যন্ত হতে দেওয়া হয়নি। দিল্লির সিংহাসনের রাস্তা উত্তরপ্রদেশ হয়ে যায়, এই স্বপ্ন দেখা অনেক মানুষ এসেছেন আর গেছেন। কিন্তু এই মানুষেরা কখনও একথা ভাবেননি যে ভারতের সমৃদ্ধির পথও উত্তরপ্রদেশ হয়েই যায়। এই মানুষেরা উত্তরপ্রদেশকে নিছকই রাজনীতির কেন্দ্র বানিয়ে রেখেছিলেন। কেউ কেউ বংশ পরম্পরায়, কেউ কেউ নিজের পরিবারের হিতে আবার কেউ নিজস্ব রাজনৈতিক স্বার্থে উত্তরপ্রদেশকে কেবল ব্যবহার করেছেন। এই নেতাদের সংকীর্ণ রাজনীতি ভারতের এতবড় রাজ্যকে ভারতের আর্থিক উন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত করেনি। হ্যাঁ, কিছু মানুষ অবশ্যই সমৃদ্ধ হয়েছেন। কিছু পরিবার অবশ্যই ধনী হয়েছে। এই মানুষেরা উত্তরপ্রদেশ নয়, শুধু নিজেকেই সমৃদ্ধ করেছেন। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে আজ উত্তরপ্রদেশ এ ধরনের মানুষদের কু-চক্র থেকে বেড়িয়ে এগিয়ে চলেছে। ডবল ইঞ্জিনের সরকার উত্তরপ্রদেশের সামর্থ্যকে একটি সঙ্কুচিত দৃষ্টিতে দেখার পদ্ধতিই বদলে দিয়েছে। উত্তরপ্রদেশ ভারতের গ্রোথ ইঞ্জিনের পাওয়ার হাউজ হয়ে উঠতে পারে এই আত্মবিশ্বাস বিগত বছরগুলিতে মানুষের মনে জন্ম নিয়েছে। উত্তরপ্রদেশের ইতিহাসে প্রথমবার সাধারণ যুবশক্তির স্বপ্ন সাকার হওয়ার কথা হচ্ছে। উত্তরপ্রদেশের ইতিহাসে প্রথমবার অপরাধীদের মনে ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের ইতিহাসে প্রথমবার গরীবদের অত্যাচার করা, দুর্বল মানুষদের ভয় দেখানো এবং অবৈধ দখলদারদের মনে ভয় ঢুকেছে।
যে ব্যবস্থাকে দুর্নীতি এবং স্বজনপোষণের ঘুন কুড়ে কুড়ে খাচ্ছিল, সেখানে এখন সার্থক পরিবর্তনের সূচনা হয়েছে। আজ উত্তরপ্রদেশে এটা সুনিশ্চিত করা হচ্ছে যে জনগণের অংশের প্রতিটি টাকা যাতে সরাসরি জনগণের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পৌঁছয়, জনগণ লাভবান হয়। আজ উত্তরপ্রদেশ বিনিয়োগের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। বড় বড় কোম্পানিগুলি আজ উত্তরপ্রদেশে এসে ব্যবসা শুরু করার জন্য লালায়িত। উত্তরপ্রদেশে বিভিন্ন পরিকাঠামো নির্মাণের মেগা প্রোজেক্ট গড়ে উঠছে। ইন্ডাস্ট্রিয়াল করিডর তৈরি হচ্ছে। কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ গড়ে উঠছে।
ভাই ও বোনেরা,
উত্তরপ্রদেশ, এ রাজ্যের পরিশ্রমী মানুষ, আত্মনির্ভর ভারত, একটি বৈভবশালী ভারত গড়ে তোলার অনেক বড় ভিত্তি। আজ আমরা স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষ পালন করছি। স্বাধীনতা অমৃত মহোৎসব পালন করছি। এই মহোৎসব শুধুই স্বাধীনতার উৎসব নয়, আগামী ২৫ বছরের জন্য বড় লক্ষ্য, বড় সঙ্কল্পের পরিসর সৃষ্টি করছে। এই সঙ্কল্পগুলি বাস্তবায়নে উত্তরপ্রদেশের অনেক বড় অংশীদারিত্ব ও দায়িত্ব রয়েছে। বিগত দশকগুলিতে উত্তরপ্রদেশ যা অর্জন করতে পারেনি, এখন সেগুলি অর্জনের সময় এসেছে। এই দশক একভাবে উত্তরপ্রদেশের বিগত সাত দশকে যে অভাব রয়েছে তা পূরণ করার দশক। এ কাজ উত্তরপ্রদেশের সাধারণ যুবকরা, আমাদের কন্যারা, গরীব, দলিত, বঞ্চিত, পিছিয়ে পড়া মানুষদের পর্যাপ্ত অংশীদারিত্বে এবং তাঁদের উন্নত সুযোগ দেওয়া ছাড়া সম্ভব হবে না। ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ অউর সবকা বিশ্বাস’ – এই মন্ত্র নিয়ে আমরা এগিয়ে চলেছি। বিগত সময়ে শিক্ষা সংক্রান্ত দুটি বড় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যা উত্তরপ্রদেশের ছাত্রছাত্রীদের লাভবান করে তুলবে। প্রথম সিদ্ধান্তটি হল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া নিয়ে। ইঞ্জিনিয়ারিং এবং টেকনিক্যাল এডুকেশনের ক্ষেত্রে উত্তরপ্রদেশের গ্রাম ও গরীব সন্তানরা মূলত ভাষা সমস্যার কারণে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বঞ্চিত থেকে যেতেন। এখন আমরা এই বাধ্যতাকে সমাপ্ত করে দিয়েছি। হিন্দি সহ অনেক ভারতীয় ভাষায় ইঞ্জিনিয়ারিং এবং টেকনিক্যাল এডুকেশনের পড়াশোনা শুরু হচ্ছে। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে শ্রেষ্ঠ পাঠক্রম তৈরি করা হয়েছে। দেশের অনেক রাজ্যের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যেই এই সুবিধা চালু করে দিয়েছে।
ভাই ও বোনেরা,
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত মেডিকেল-শিক্ষা সংক্রান্ত। মেডিকেল-শিক্ষায় সর্বভারতীয় কোটা থেকে ওবিসি-কে পিছিয়ে পড়াদের সংরক্ষণের আওতা থেকে বাইরে রাখা হয়েছিল। এই পরিস্থিতি পরিবর্তন করে সম্প্রতি আমাদের সরকার মেডিকেল-শিক্ষার ক্ষেত্রে ২৭ শতাংশ সংরক্ষণ চালু করেছে। শুধু তাই নয়, জেনারেল ক্যাটাগরির গরীব পরিবারের সন্তান-সন্ততির জন্য এখানে ১০ শতাংশ সংরক্ষণ রাখা হয়েছে। এই শিক্ষাবর্ষ থেকেই এই সংরক্ষণ চালু করা হবে। এই সিদ্ধান্তের ফলে চিকিৎসা পেশায় যাঁরা যোগদান করতে চান তাঁদের সুবিধা হবে। একটা বড় ট্যালেন্ট পুলের সামনে সুযোগ আসবে এবং সমাজের প্রত্যেক অংশের মানুষ এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে উৎসাহিত হবেন। গরীব ঘরের ছেলে-মেয়েদের চিকিৎসক হওয়ার পথ খুলেছে।
ভাই ও বোনেরা,
স্বাস্থ্যক্ষেত্রেও বিগত বছরে উত্তরপ্রদেশে অভূতপূর্ব কাজ হয়েছে। কল্পনা করুন, এই করোনার মতো বিশ্বব্যাপী মহামারী যদি ৪-৫ বছর আগে আসত, তাহলে উত্তরপ্রদেশের কি অবস্থা হত। তখন তো সাধারণ সর্দি-কাশি-জ্বর-পেট খারাপের মতো রোগেও জীবন সঙ্কট হয়ে উঠত। আজ উত্তরপ্রদেশ করোনা টিকাকরণের ক্ষেত্রে প্রায় ৫ কোটি ২৫ লক্ষ ছাড়িয়ে যাওয়া প্রথম রাজ্য হয়ে উঠেছে তাও এরকম সময়ে যখন নিছকই রাজনৈতিক স্বার্থে কিছু মানুষ ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ টিকা নিয়ে ক্রমাগত গুজব রটিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের সাধারণ মানুষ এই গুজব, এই মিথ্যাকে নস্যাৎ করেছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে উত্তরপ্রদেশ ‘সবাইকে টিকা বিনামূল্যে টিকা’ অভিযানকে আরও দ্রুতগতিতে এগিয়ে নিয়ে যাবে আর মাস্ক, দু’গজের দূরত্বের নিয়ম নিয়ে গাফিলতি করবে না। আরেকবার পিএম গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনার সমস্ত সুবিধাভোগীদের অনেক অনেক শুভকামনা জানাই আর আগামীদিনে অনেক উৎসব আসছে, দীপাবলি পর্যন্ত উৎসবই উৎসব, আর সেজন্য আমরা ঠিক করেছি এই উৎসবের দিনগুলিতে আমাদের কোনও গরীব পরিবার যেন সমস্যায় না পড়ে, কাউকে যেন খালি পেটে না থাকতে হয় তা সুনিশ্চিত করতে দীপাবলি পর্যন্ত এই বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার অভিযান চালু থাকবে। আমি আরেকবার আপনাদের সবাইকে আগামী সমস্ত উৎসবের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা জানাই। আপনারা সুস্থ থাকুন, আপনাদের পরিবার সুস্থ থাকুক। অনেক অনেক ধন্যবাদ।

 

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
e-Shram portal now available in all 22 scheduled languages

Media Coverage

e-Shram portal now available in all 22 scheduled languages
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
President of the European Council, Antonio Costa calls PM Narendra Modi
January 07, 2025
PM congratulates President Costa on assuming charge as the President of the European Council
The two leaders agree to work together to further strengthen the India-EU Strategic Partnership
Underline the need for early conclusion of a mutually beneficial India- EU FTA

Prime Minister Shri. Narendra Modi received a telephone call today from H.E. Mr. Antonio Costa, President of the European Council.

PM congratulated President Costa on his assumption of charge as the President of the European Council.

Noting the substantive progress made in India-EU Strategic Partnership over the past decade, the two leaders agreed to working closely together towards further bolstering the ties, including in the areas of trade, technology, investment, green energy and digital space.

They underlined the need for early conclusion of a mutually beneficial India- EU FTA.

The leaders looked forward to the next India-EU Summit to be held in India at a mutually convenient time.

They exchanged views on regional and global developments of mutual interest. The leaders agreed to remain in touch.