নমস্কার,
আমার সামনে এক অপূর্ব দৃশ্য দেখতে পাচ্ছি। যা অনিন্দ্যসুন্দর, বিশাল, বিহঙ্গম দৃষ্টিতে অসাধারণ। আর আজকের এই যে উপলক্ষ, এর পেছনের যে কল্পনা, যাকে আজ আমরা যখন বাস্তবায়িত হতে দেখছি, সেই স্বপ্নকে যখন চোখের সামনে সত্যি হতে দেখছি, তখন আমার মনে একটি বিখ্যাত কবিতার লাইন উচ্চারণের ইচ্ছা জাগছে:-
নতুন সকাল, নতুন ঘটনা, নতুন কিরণ, নতুন জ্যোতি।
নতুন উদ্যম, নতুন ঢেউ, নতুন আশা, নতুন নিঃশ্বাস।
ওঠো পৃথিবীর অমর সুপুত্ররা, আবার নতুন করে গড়ো।
প্রত্যেক মানুষের জীবনে নতুন শক্তি, নতুন প্রাণসঞ্চার করো।
আজকের এই দিব্য ও অনিন্দ্যসুন্দর 'ভারত মণ্ডপম' দেখে প্রত্যেক ভারতবাসী খুশি, আনন্দে ভরপুর এবং গর্ব বোধ করছে। 'ভারত মণ্ডপম' হল ভারতের সম্ভাবনা, ভারতের নতুন শক্তির আহ্বান। 'ভারত মণ্ডপম' হল ভারতের মহিমা এবং ভারতের ইচ্ছাশক্তির একটি মূর্ত রূপ। করোনার কঠিন সময়ে যখন সর্বত্র কাজ বন্ধ ছিল, তখন আমাদের দেশের শ্রমজীবী মানুষ দিনরাত পরিশ্রম করে এর নির্মাণকাজ সম্পন্ন করেছে।
আজ, আমার হৃদয়ের গভীর থেকে, আমি 'ভারত মণ্ডপম' নির্মাণের সাথে জড়িত প্রত্যেক শ্রমিক, ভাই ও বোনকে অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানাই। আজ সকালে আমি এই সমস্ত কর্মীদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেয়েছি, আমাদের এই কর্মীদের সম্মান জানানোর সৌভাগ্য আমার হয়েছে। তাঁদের পরিশ্রমের এই ফসল দেখে আজ সারা ভারত বিস্মিত, সারা ভারত উচ্ছ্বসিত!
আমি এই নতুন আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টার - 'ভারত মণ্ডপম'-এর জন্য রাজধানী দিল্লির জনগণকে এবং দেশের মানুষকে অভিনন্দন জানাই। আজ এখানে দেশের প্রতিটি প্রান্ত থেকে অতিথিরা এসেছেন, আমি তাদের সবাইকে স্বাগত জানাই। আমি সেই কোটি কোটি মানুষকে অভিনন্দন জানাই যারা বর্তমানে টিভি এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আমাদের সঙ্গে যুক্ত আছেন।
বন্ধুগণ,
আজকের দিনটি এমনিতেও প্রত্যেক ভারতবাসীর জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন, আজ কার্গিল বিজয় দিবস। দেশের শত্রুরা যে দুঃসাহস দেখিয়েছিল ভারতমাতার সাহসী পুত্র-কন্যারা পরাক্রম প্রদর্শনের মাধ্যমে তাঁদেরকে পরাজিত করেছিল। একটি কৃতজ্ঞ জাতির পক্ষ থেকে, আমি প্রত্যেক বীরকে শ্রদ্ধা জানাই যাঁরা কার্গিল যুদ্ধে তাঁদের জীবন উৎসর্গ করেছেন।
বন্ধুগণ,
এক্টু আগেই আমাদের পীযূষ জি বলেছেন, 'ভারত মণ্ডপম'-এর এই নামের পিছনে রয়েছে ভগবান বসভেশ্বরের 'অনুভব মণ্ডপম'-এর অনুপ্রেরণা। অনুভব মন্ডপম মানে বিতর্ক ও সংলাপের গণতান্ত্রিক পদ্ধতি্র বিকাশ, অনুভব মন্ডপম মানে প্রত্যেকের নিজস্ব ও সমষ্ঠিগত অভিব্যক্তি ও মতামত প্রকাশের মাধ্যম। আজ বিশ্ব স্বীকার করছে যে ভারত ‘মাদার অফ ডেমোক্রেসি’ বা গণতন্ত্রের জননী। তামিলনাড়ুর উত্তরমেরু অঞ্চলে পাওয়া শিলালিপি থেকে শুরু করে উত্তর ভারতের বৈশালী পর্যন্ত পাওয়া বিভিন্ন শিলালিপিতে বিধৃত আমাদের নানা গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যের ইতিহাস থেকে উঠে আসা ভারতের স্পন্দিত গণতন্ত্র বহু শতাব্দী ধরে আমাদের গর্ব।
আজ, যখন আমরা স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে অমৃত মহোৎসব উদযাপন করছি, আজকের ভারতীয়দের পক্ষ থেকে আমাদের গণতন্ত্রকে দেওয়া একটি সুন্দর উপহার হল এই 'ভারত মণ্ডপম' । কয়েক সপ্তাহ পরে, এখানে জি-২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির নানা অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে, বিশ্বের প্রধান দেশগুলির রাষ্ট্রপ্রধানরা এখানে উপস্থিত থাকবেন।সমগ্র বিশ্ব এই বিশাল 'ভারত মন্ডপম' থেকে দেখতে পাবে ভারতের এগিয়ে যাওয়ার সপক্ষে নেওয়া নানা পদক্ষেপ এবং অনুভব করবে ভারতের ক্রমবর্ধমান মর্যাদাকে।
বন্ধুগণ,
আজ যখন গোটা বিশ্ব আন্তঃসংযুক্ত, আন্তঃ-নির্ভরশীল, তখন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি ও শীর্ষ সম্মেলনের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে। এ ধরনের অনুষ্ঠান কখনো এক দেশে আবার কখনো অন্য দেশে আয়োজিত হয়। এমতাবস্থায় ভারতের রাজধানী দিল্লিতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের একটি কনভেনশন সেন্টার গড়ে তোলার অত্যন্ত প্রয়োজন ছিল। এখানে যে আয়োজন ছিল, যে হলগুলো ছিল, সেগুলো বহু যুগ আগে গড়ে তোলা হয়েছিল। গত শতাব্দীর সেই পুরনো ব্যবস্থা আজ আর একবিংশ শতাব্দীর ভারতের সঙ্গে তাল মেলাতে পারছে না। একুশ শতকের ভারতে, একুশ শতকের চাহিদা মেটাতে আমাদের এরকম নতুন নতুন অনেক পরিকাঠামো গড়ে তুলতে হবে।
তাই এই বিশাল নির্মাণ, এই 'ভারত মণ্ডপ' আজ আমার দেশবাসীর সামনে গড়ে উঠেছে, আপনাদের সামনে প্রস্তুত। 'ভারত মন্ডপম' ভারত এবং বিদেশ থেকে আগত বড় বড় প্রদর্শকদের অনুকূল পরিকাঠামো প্রদান করবে। 'ভারত মণ্ডপম' দেশে সম্মেলন পর্যটনের একটি প্রধান ধারক হয়ে উঠবে। 'ভারত মন্ডপম' আমাদের স্টার্টআপগুলির শক্তি প্রদর্শনের একটি মাধ্যম হয়ে উঠবে। 'ভারত মন্ডপম' আমাদের সিনেমা-জগত, আমাদের শিল্পীদের অভিনয়ের সাক্ষী হয়ে উঠবে।
'ভারত মণ্ডপম' আমাদের হস্তশিল্পীদের, কারিগরদের, তাঁতিদের কঠোর পরিশ্রমকে একটি আন্তর্জাতিক মানের মঞ্চ প্রদানের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে উঠতে চলেছে এবং 'ভারত মণ্ডপম' আত্মনির্ভর ভারত এবং স্থানীয় পণ্যের প্রচারের জন্য সোচ্চার হয়ে উঠবে, ‘লোকাল ফর ভোকাল’ অভিযানের প্রতিফলন হয়ে উঠবে। অর্থাৎ অর্থনীতি থেকে বাস্তুশাস্ত্র, বাণিজ্য থেকে প্রযুক্তি, এই ধরনের প্রতিটি আয়োজনের জন্য ব্যাপক প্রচেষ্টার প্রতিফলন এই পরিসরে দেখা যাবে, এক্ষেত্রে এই 'ভারত মণ্ডপম' একটি বিশাল মঞ্চে পরিণত হবে।
বন্ধুগণ,
ভারত মণ্ডপের মতো এরকম পরিকাঠামো কয়েক দশক আগেই এখানে তৈরি হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু আমার মনে হয়, অনেক কাজই আমার হাতে উদ্বোধনের জন্য নির্ধারিত ছিল। আর আমরা দেখি, পৃথিবীর কোনো দেশে অলিম্পিক সামিট অনুষ্ঠিত হলে সেই দেশের প্রোফাইল পুরো বিশ্বে সম্পূর্ণ বদলে যায়। আজকের বিশ্বে এই জিনিসগুলির গুরুত্ব অনেক বড় হয়ে উঠেছে এবং দেশের প্রোফাইলও অনেক ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর এই ধরণের উন্নত মানের পরিকাঠামো গড়ে উঠলে তা-ও এক্ষেত্রে কোনও না কোনও উপায়ে মূল্য সংযোজন করে।
কিন্তু আমাদের দেশে ভিন্ন চিন্তার কিছু মানুষও আছেন। এখানে নেতিবাচক চিন্তাভাবনা করা মানুষেরও অভাব নেই। এই নির্মাণকার্যকে বন্ধ করার জন্য সেই নেতিবাচক চিন্তাবিদরা কত চেষ্টাই না করেছিলেন!নানা মঞ্চে অনেক ঝড় তোলা হয়, কেউ কেউ আদালতের শরণাপন্নও হন, আদালতে ঘুরে বেড়ান। কিন্তু যেখানে সত্য থাকে, সেখানে ঈশ্বরও থাকেন, সহায়ক হন। আর এভাবেই এখন এই অনিন্দ্যসুন্দর ক্যাম্পাস আপনার চোখের সামনে গড়ে উঠেছে।
প্রকৃতপক্ষে, কিছু লোকের মধ্যে একটি প্রবণতা থাকে, তাঁরা প্রতিটি ভাল উদ্যোগকে বন্ধ করার, ভাল কাজকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করতে থাকেন। এখন আপনার মনে থাকবে যখন ‘ কর্তব্য পথ’ তৈরি হচ্ছিল, কী কী গল্প ও গুজব বাতাসে উড়ছিল, এমনকি খবরের কাগজগুলির প্রথম পাতায় ব্রেকিং নিউজে কী কী লেখা চলছিল, আদালতেও কত মামলা হয়েছে জানি না। কিন্তু এখন সেই কর্তব্য পথ তৈরি হয়ে গেছে, সেসব মানুষও আজ চুপিসাড়ে দমিত সুরে বলছেন, ভালো কিছু হয়েছে, দেশের গৌরব বেড়েছে। আজ আমি নিশ্চিত যে কিছু সময় পর, সেই নিন্দুক দলের মানুষেরা এই ‘ভারত মণ্ডপম’ এর পক্ষেও খোলামেলা কথা বলতে পারেন বা না পারলেও তাঁরা মনে মনে এটিকে মেনে নেবেন, এবং এমনকি কেউ কেউ নানা অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে এখানে আসতে পারেন।
বন্ধুগণ,
কোনও দেশ বা সমাজ, বিচ্ছিন্নভাবে পরিকল্পনা করে, বিচ্ছিন্নভাবে টুকরো টুকরো কাজ করে কখনও সার্বিকভাবে এগিয়ে যেতে পারে না। আজ, এই কনভেনশন সেন্টার, এই 'ভারত মণ্ডপ'ও সেই সত্যের সাক্ষী যে আমাদের সরকার কীভাবে সামগ্রিকভাবে কাজ করছে, অনেক এগিয়ে চিন্তা করছে। এই ধরনের কেন্দ্রগুলিতে আসা যাতে সহজ হয়ে ওঠে, দেশের নানা প্রান্ত এবং বিদেশ থেকে বড় কোম্পানিগুলি যাতে এখানে আসতে পারে, তা সুনিশ্চিত করতে আজ ভারত ১৬০ টিরও বেশি দেশের নাগরিকদের জন্য ই-কনফারেন্স ভিসা পরিষেবা চালু করেছে। অর্থাৎ এটাকে শুধুই এভাবে গড়ে তোলা হয়নি, এর জন্য পুরো সাপ্লাই চেইন বা সরবরাহ শৃঙ্খল ও সিস্টেম চেইন বা ব্যবস্থা শৃঙ্খল সাজানো হয়েছে।
২০১৪ সালে, দিল্লি বিমানবন্দরের ক্ষমতা বার্ষিক প্রায় ৫০ মিলিয়ন যাত্রী ব্যবস্থাপনা পরিচালনা করার উপযোগী ছিল। আজ এতে বার্ষিক প্রায় ৭৫ মিলিয়ন যাত্রী বেড়েছে। টার্মিনাল ২ ও ৪র্থ রানওয়েও চালু হয়েছে। গ্রেটার নয়ডার জেওয়ারে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর শুরু হওয়ার পরে এটি আরও শক্তি পাবে। বিগত বছরগুলিতে, হোটেল শিল্পও দিল্লি-এনসিআরে অনেক প্রসারিত হয়েছে। অর্থাৎ, আমরা খুব পরিকল্পিতভাবে সম্মেলন পর্যটনের জন্য একটি সম্পূর্ণ ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার চেষ্টা করেছি।
বন্ধুগণ,
তাছাড়া এখানে, এই রাজধানী দিল্লিতে বিগত বছরগুলোতে যেসব নির্মাণকাজ হয়েছে সেগুলি নিঃসন্দেহে দেশের গর্ব বাড়িয়ে দিয়েছে। এমন ভারতীয় কে আছেন, যাঁর মাথা দেশের নতুন সংসদ ভবন দেখ্লে উঁচু হবে না! আজ দিল্লিতে গড়ে উঠেছে ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়াল, পুলিশ মেমোরিয়াল ও বাবা সাহেব আম্বেদকর মেমোরিয়াল। বর্তমানে খুব দ্রুতগতিতে কর্তব্য পথের আশেপাশে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের জন্য সমস্ত আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন নতুন নতুন ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। আমাদের কর্ম সংস্কৃতির পাশাপাশি কাজের পরিবেশেও পরিবর্তন আনতে হবে।
আপনারা সবাই নিশ্চয়ই দেখেছেন যে আজকের নতুন প্রজন্ম আমাদের গড়ে তোলা ‘প্রাইম মিনিস্টার্স মিউজিয়াম’ ঘুরে দেখে দেশের সাবেক সমস্ত প্রধানমন্ত্রী ও তাঁদের অবদান সম্পর্কে জানার সুযোগ পাচ্ছে। শীঘ্রই দিল্লিতে গড়ে উঠতে চলেছে বিশ্বের বৃহত্তম জাদুঘর! হ্যাঁ, ঠিকই শুনছেন, এটি আপনাদের জন্য যেমন একটি সুখবর, তেমনি এটি বিশ্বের জন্যও একটি সুখবর যে, শীঘ্রই দিল্লিতে বিশ্বের বৃহত্তম জাদুঘর গড়ে উঠবে। আর আমি যখন বলছি যে বিশ্বের বৃহত্তম জাদুঘর, তখন সত্যিই বিশ্বের বৃহত্তম জাদুঘর ‘যুগে যুগেন’ শীঘ্রই ভারতে গড়ে উঠতে চলেছে।
বন্ধুগণ,
সারা বিশ্ব আজ ভারতের দিকে তাকিয়ে আছে। ভারত আজ সেসব অর্জন করছে যা আগে অকল্পনীয় ছিল, কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। বড় হতে হলে বড় ভাবতে হবে, বড় লক্ষ্য অর্জন করতে হবে। তাই, “Think Big, Dream Big, Act Big” বা ‘বড়ো ভাবো, বড়ো স্বপ্ন দেখো, বড়ো কাজ করো’ নীতি গ্রহণ করে ভারত আজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। আর এটাও বলা হয়েছে- ‘ যতটা উচুতে আকাশ তত উঁচুতে ওঠো!’ আমরা আগের থেকে আরও বড়ো বড়ো নির্মাণ করছি, আমরা আগের থেকে আরও উন্নত মানের নির্মাণ করছি, আমরা আগের থেকে দ্রুত নির্মাণ করছি।
পূর্ব থেকে পশ্চিমে, উত্তর থেকে দক্ষিণে, ভারতের পরিকাঠামো বদলে যাচ্ছে। বিশ্বের বৃহত্তম ‘সোলার উইন্ড পার্ক’ আজ ভারতে তৈরি হচ্ছে। বিশ্বের সর্বোচ্চ রেলসেতু আজ ভারতে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১০ হাজার ফুটেরও বেশি উচ্চতায় বিশ্বের দীর্ঘতম সুড়ঙ্গপথ আজ ভারতে গড়ে উঠেছে। বিশ্বের উচ্চতম মোটরযোগ্য সড়ক পথও আজ ভারতে। বিশ্বের বৃহত্তম ক্রিকেট স্টেডিয়াম আজ ভারতে। বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু মূর্তি আজ ভারতে। এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম রেল-সড়ক সেতুটিও ভারতে। আজ ভারত বিশ্বের সেই সমস্ত দেশের মধ্যে অন্যতম যেখানে ‘গ্রিন হাইড্রোজেন’ বা পরিবেশবান্ধব হাইড্রোজেন নিয়ে এত বড় কাজ করা হচ্ছে।
বন্ধুগণ,
এই মেয়াদে এবং আগের মেয়াদে আমাদের সরকারের কাজের ফল আজ গোটা দেশ দেখছে। আজ দেশের বিশ্বাস দৃঢ় হয়ে উঠেছে যে এখন ভারতের উন্নয়ন যাত্রা থামার নয়। আপনি জানেন যে আমাদের প্রথম মেয়াদের শুরুতে, ভারত বিশ্ব অর্থনীতিতে ১০ নম্বরে ছিল। যখন দেশের মানুষ আমাদের দায়িত্ব দিয়েছে, কাজ দিয়েছে, তখন আমরা দশ নম্বরে ছিলাম। দ্বিতীয় মেয়াদে, আজ ভারত বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি। আর আমি কথার কথা নয়, ট্র্যাক রেকর্ডের ভিত্তিতে একথা বলছি।
আমি দেশকে আশ্বস্ত করব যে তৃতীয় মেয়াদে ভারত বিশ্বের প্রথম তিনটি অর্থনীতির একটি হবে। অর্থাৎ বন্ধুরা, তৃতীয় মেয়াদে ভারত গর্বের সঙ্গে প্রথম তিনটি অর্থনীতির দেশের অন্যতম হয়ে উঠবে। তৃতীয় মেয়াদে- ভারত যে শীর্ষ তিনটি অর্থনীতির অন্যতম হয়ে উঠবেই এটি মোদীর গ্যারান্টি। আমি দেশবাসীকে আশ্বস্ত করছি যে ২০২৪ সালের পর আমাদের তৃতীয় মেয়াদে দেশের উন্নয়নের যাত্রা আরও দ্রুত এগিয়ে যাবে। আর আমার তৃতীয় মেয়াদে, আপনারা নিজেদের চোখের সামনে নিজেদের স্বপ্নগুলি পূরণ হতে দেখবেন।
বন্ধুগণ,
আজ ভারতে নতুন নতুন নির্মাণের বিপ্লব চলছে। গত ৯ বছরে, ভারতে আধুনিক পরিকাঠামো নির্মাণের জন্য প্রায় ৩৪ লক্ষ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। চলতি বছরের বাজেটেও মূলধন ব্যয় রাখা হয়েছে ১০ লক্ষ কোটি টাকা। নতুন নতুন বিমানবন্দর, নতুন নতুন এক্সপ্রেসওয়ে, নতুন নতুন রেল রুট, নতুন নতুন উন্নতমানের সেতু, নতুন নতুন হাসপাতাল, যে গতি ও মাপে ভারত আজ কাজ করছে তা সত্যিই নজিরবিহীন।
বিগত ৭০ বছরে, আমি অন্য কারো সমালোচনা করার জন্য বলছি না, তবে হিসাবের জন্য কিছু প্রসঙ্গ প্রয়োজন। আর তাই সেই রেফারেন্সের ভিত্তিতেই কথা বলছি। স্বাধীনতার পর বিগত ৭০ বছরে ভারতে প্রায় ২০ হাজার কিলোমিটার রেললাইন বৈদ্যুতিকীকরণ হয়েছিল। সেখানে গত ৯ বছরে ভারতে প্রায় ৪০ হাজার কিলোমিটার রেললাইন বিদ্যুতায়িত হয়েছে। ২০১৪ সালের আগে, প্রতি মাসে মাত্র ৬০০ মিটার, কিলোমিটার ভাববেন না, আমাদের দেশে মাত্র ৬০০ মিটার করে নতুন মেট্রো লাইন বসানো হচ্ছিল। আজ, ভারতে প্রতি মাসে ৬ কিলোমিটার করে নতুন মেট্রো লাইনের কাজ সম্পূর্ন করা হচ্ছে।
২০১৪ সালের আগে দেশে ৪ লাখ কিলোমিটারেরও কম গ্রামীণ সড়কপথ ছিল। বর্তমানে দেশে ৭ লাখ ২৫ হাজার কিলোমিটারের বেশি গ্রামীণ সড়ক রয়েছে। ২০১৪সালের আগে, আমাদের দেশে প্রায় ৭০টি বিমানবন্দর ছিল। বর্তমানে দেশে বিমানবন্দরের সংখ্যাও বেড়ে এখন প্রায় দেড়শতে পৌঁছেছে। ২০১৪ সালের আগে, শহরের সিটি গ্যাস বিতরণ ব্যবস্থাও দেশের মাত্র ৬০টি শহরে ছিল। এখন সিটি গ্যাস বিতরণ ব্যবস্থা দেশের ৬০০ টিরও বেশি শহরে পৌঁছেছে।
বন্ধুগণ,
আজ পরিবর্তিত ভারত পুরনো চ্যালেঞ্জগুলোকে দূর করে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা প্রতিটি সমস্যার স্থায়ী সমাধানের ওপর জোর দিচ্ছি। আর এর একটি উদাহরণ প্রধানমন্ত্রী গতিশক্তি ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যান। ইন্ডাস্ট্রির বন্ধুরা এখানে বসে আছেন, আমি চাই যে আপনারা বাড়ি ফিরে গিয়ে সেই পোর্টালটি দেখুন। প্রধানমন্ত্রী গতিশক্তি ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যান দেশে রেলপথ – সড়কপথের মতো ভৌত পরিকাঠামো নির্মাণের ক্ষেত্রে, স্কুল-হাসপাতাল নির্মাণের ক্ষেত্রে, এই ধরনের যাবতীয় সামাজিক পরিকাঠামো নির্মাণের ক্ষেত্রে একটি বিশাল গেম চেঞ্জার হিসেবে প্রমাণিত হতে চলেছে। এতে বিভিন্ন পর্যায়ের ১৬০০ টিরও বেশি বিভিন্ন স্তরের তথ্যাবলীকে ইতিমধ্যেই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে তুলে আনা হয়েছে। চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে দেশের সময় ও দেশের অর্থ যেন আগের মতো নষ্ট না হয়।
বন্ধুগণ,
ভারতের সামনে আজ বিশাল সুযোগ। আজ থেকে একশো বছর আগে, আমি গত শতাব্দীর কথা বলছি, ১০০ বছর আগে যখন ভারত স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছিল, গত শতাব্দীর সেই তৃতীয় দশকের পরিস্থিতির দিকে আমি আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। মনে রাখবেন ১৯২৩- ১৯৩০ সময়কালটি, গত শতাব্দীর তৃতীয় দশকটি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। একইভাবে একবিংশ শতাব্দীর এই তৃতীয় দশকও সমান গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
গত শতাব্দীর তৃতীয় দশকে আকাঙ্ক্ষা ছিল স্বাধীনতা, লক্ষ্য ছিল স্বশাসন, আর আজ লক্ষ্য হল একটি সমৃদ্ধ ভারত, একটি উন্নত ভারত। গত শতাব্দীর তৃতীয় দশকে দেশ মুক্তির পথে যাত্রা করেছিল, স্বাধীনতার প্রতিধ্বনি শোনা গিয়েছিল দেশের আনাচে কানাচে। স্বরাজ আন্দোলনের সমস্ত ধারা, সমস্ত ধারণা – তা সে বিপ্লবের পথ হোক বা অসহযোগের পথ; সমস্ত পথই ছিল সম্পূর্ণ সচেতন, শক্তিতে পরিপূর্ণ, যার ফলশ্রুতিতে ২৫ বছরের মধ্যে দেশ স্বাধীন হয়েছে। , আমাদের স্বাধীনতার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আর বর্তমান শতাব্দীর এই তৃতীয় দশকে, আগামী ২৫ বছরের জন্য আমাদের লক্ষ্য রয়েছে দেশকে একটি আত্মনির্ভর ও উন্নত দেশে পরিণত করা। আমরা ইতিমধ্যেই একটি আত্মনির্ভর ভারত, একটি উন্নত ভারতের স্বপ্ন নিয়ে যাত্রা শুরু করেছি। আগামী ২৫ বছরে আমাদের ভারতকে সেই উচ্চতা দিতে হবে, আমাদের সেই সাফল্যে পৌঁছতে হবে, যার স্বপ্ন প্রত্যেক স্বাধীনতা সংগ্রামী দেখেছিলেন।
আজ সমস্ত দেশবাসী, ১৪০ কোটি ভারতীয়কে এই সংকল্প বাস্তবায়নের জন্য দিনরাত এক করে কাজ করতে হবে। আর বন্ধুরা, নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, চোখের সামনে একের পর এক সাফল্য দেখেছি। আমি দেশের শক্তিকে ভালো করেই বুঝেছি, দেশের সম্ভাবনাকে জানি এবং তার ভিত্তিতেই বলছি, আমি অনেক আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলি, ভারত মণ্ডপে দাঁড়িয়ে, আমি এই যোগ্য লোকদের সামনে বলছি যে ভারত উন্নয়ন করতে পারে, ভারত অবশ্যই উন্নত দেশে পরিণত হতে পারে। ভারত দারিদ্র্য দূর করতে পারবে, অবশ্যই পারবে। আর আজ আমি আপনাদের বলতে চাই যে আমার এই বিশ্বাসের পেছনের কী ভিত্তি রয়েছে!
নীতি আয়োগের রিপোর্টে প্রকাশ করা হয়েছে যে ভারতে বিগত মাত্র পাঁচ বছরে ১৩.৫ কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমা থেকে বেরিয়ে এসেছে। অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলিও বলছে যে ভারতে চরম দারিদ্র্য শেষ হওয়ার পথে। অর্থাৎ গত ৯ বছরে দেশ যে নীতিমালা আমরা তৈরি করেছি, আমাদের সরকার যে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেগুলি দেশকে সঠিক পথে নিয়ে যাচ্ছে।
বন্ধুগণ,
দেশের উন্নয়ন তখনই হতে থাকে যখন সরকারের সামনে স্পষ্ট উদ্দেশ্য, সঠিক নীতি এবং দেশে অর্থবহ পরিবর্তন আনার উপযুক্ত নীতিমালা থাকে। ভারতের সভাপতিত্বের সময়কালে সারা দেশে আয়োজিত জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের নানা অনুষ্ঠানও এর একেকটি অনুপ্রেরণামূলক উদাহরণ। আমরা জি-২০ কে শুধুমাত্র রাজধানী বা একটি শহর, একটি জায়গায় সীমাবদ্ধ রাখিনি। আমরা দেশের ৫০টিরও বেশি শহরে জি-২০ সম্মেলনের আয়োজন করেছি। আমরা এর মাধ্যমে অন্যান্য দেশের মাননীয় প্রতিনিধিদের সামনে ভারতের বৈচিত্র্যকে তুলে ধরেছি। আমরা বিশ্বকে দেখিয়েছি ভারতের প্রকৃত সাংস্কৃতিক শক্তি কী, ভারতের ঐতিহ্য কেমন, বৈচিত্র্যের মধ্যেও ভারত কীভাবে এগিয়ে চলেছে। ভারত কীভাবে প্রতিনিয়ত বৈচিত্র্যকে উদযাপন করে।
আজ সারা বিশ্ব থেকে মানুষ ভারতে আসছে এসব অনুষ্ঠানে অংশ নিতে। জি-২০ সম্মেলন গুলির জন্য অনেক শহরে নতুন নতুন পরিষেবা গড়ে তোলা হয়েছিল, পুরানো পরিষেবাগুলির আধুনিকীকরণ করা হয়েছিল। এতে দেশের উপকার হয়েছে, দেশের মানুষের উপকার হয়েছে। আর এটাই সুশাসন, এটাই তো গুড গভর্নেন্স। ‘নেশন ফার্স্ট’ বা দেশ সর্বাগ্রে, আর ‘সিটিজেন ফার্স্ট’ বা ‘নাগরিক সর্বাগ্রে’ র চেতনা অনুসরণ করে আমরা ভারতকে উন্নত ভারতে পরিণত করার পথে এগিয়ে চলেছি।
বন্ধুগণ,
इस महत्वपूर्ण अवसर पर आप सबका यहां आना, ये अपने-आप में आपके दिल के कोने में भी भारत के लिए जो सपने पड़े हैं ना, उन सपनों को खाद-पानी देने का ये अवसर है जी। एक बार फिर भारत मंडपम जैसी शानदार सुविधा के लिए दिल्ली के लोगों को, देश के लोगों को मैं बहुत-बहुत बधाई देता हूं। और इतनी बड़ी तादाद में आप आए, मैं आपका फिर से एक बार स्वागत और अभिनंदन करता हूं।
এই গুরুত্বপূর্ণ উদ্বোধন অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে আপনাদের সকলের এখানে আসা মানেই আপনারা নিজেদের হৃদয়ের কোণে ভারতের জন্য যে স্বপ্নগুলি আছে সেগুলিকে লালন পালন করার একটি সুযোগ পেলেন। আর একবার, ভারত মণ্ডপম এর মতো একটি অত্যাধুনিক পরিষেবা সম্পন্ন চমৎকার পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য আমি দিল্লির মানুষকে এবং দেশের মানুষকে অভিনন্দন জানাই। আর আপনারা এখানে এত বিপুল সংখ্যায় এসে হাজির হয়েছেন,সেজন্যে আমি আবারও আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাই এবং অভিনন্দন জানাই।
ধন্যবাদ!