কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আমার সহযোগী মাননীয়া শ্রীমতী নির্মলা সীতারমনজি, মাননীয় শ্রী রাও ইন্দ্রজিৎ সিং-জি, মাননীয় শ্রী পঙ্কজ চৌধুরিজি, মাননীয় শ্রী ভাগবৎ কৃষ্ণ রাও করারজি, অন্য সকল সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ, ভদ্রমহিলা এবং ভদ্রমহোদয়গণ!
বিগত বছরগুলিতে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক এবং কেন্দ্রীয় কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রক তাদের নিজেদের কর্মধারায় সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে নিজেদের একটি লিগেসি বা ঐতিহ্য তৈরি করেছে, একটি অসাধারণ যাত্রাপথ অতিক্রম করেছে। আপনারা সবাই এই ঐতিহ্যের অংশ। দেশের সাধারণ মানুষের জীবনকে সহজ করে তোলা থেকে শুরু করে দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করে তোলা; বিগত ৭৫ বছরে আমাদের দেশে অনেক বন্ধু অনেক বড় বড় অবদান রেখে গেছেন।
এই আইকনিক সপ্তাহ এরকম প্রত্যেক বন্ধুকে, অতীতের এরকম প্রতিটি প্রচেষ্টাকে জীবন্ত করে তোলার একটি প্রচেষ্টা। স্বাধীনতার অমৃতকালে আমরা নিজেদের এই অতীত থেকে প্রেরণা গ্রহণ করে আমাদের প্রচেষ্টাগুলিকে যাতে আরও উন্নত করতে পারি এটি এই লক্ষ্যে এটি একটি অত্যন্ত সুদৃঢ় পদক্ষেপ। আজ এখানে ভারতে টাকার বা মুদ্রার গৌরবময় যাত্রাপথকে তুলে ধরা হয়েছে। এই যাত্রাপথকে পরিচিত করানোর জন্য একটি অসাধারণ ডিজিটাল প্রদর্শনীও শুরু হয়েছে, আর স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবের জন্য সমর্পিত বেশ কিছু নতুন মুদ্রাও প্রকাশ করা হয়েছে।
এই নতুন মুদ্রাগুলি দেশের জনগণকে ক্রমাগত অমৃতকালের লক্ষ্য মনে করাবে, তাঁদেরকে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখার জন্য প্রেরণা যোগাবে। আগামী এক সপ্তাহে আপনাদের বিভাগের উদ্যোগে অনেক কর্মসূচির আয়োজন হতে চলেছে। এই অমৃত কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত সকল বিভাগকে, আপনাদের প্রতিটি ছোট, বড় ইউনিটকে আমি অনেক অনেক শুভকামনা জানাই।
বন্ধুগণ,
স্বাধীনতার এই অমৃত মহোৎসব শুধুই ৭৫ বর্ষপূর্তির একটি উৎসব মাত্র নয়, বরং আমাদের স্বাধীনতার নায়ক-নায়িকারা স্বাধীন ভারতের জন্য যে স্বপ্নগুলি দেখে গেছেন, সেই স্বপ্নগুলিকে উদযাপন করা, সেই স্বপ্নগুলিকে বাস্তবায়িত করা, সেই স্বপ্নগুলিকে পূর্ণ করা, সেই স্বপ্নগুলিতে একটি নতুন সামর্থ্য যুক্ত করে আবার সঞ্জীবিত করা আর নতুন নতুন সঙ্কল্প নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার এই সোনালী মুহূর্তগুলি আমরা উদযাপন করছি। স্বাধীনতার দীর্ঘ সংগ্রামে যাঁরাই অংশগ্রহণ করেছেন, তাঁরাই এই আন্দোলনে ভিন্ন ভিন্ন মাত্রা জুড়েছেন, তাঁরা এই আন্দোলনের প্রাণশক্তি বাড়িয়েছেন।
তখন কেউ কেউ সত্যাগ্রহের পথ বেছে নিয়েছিলেন, অন্য কেউ সশস্ত্র সংগ্রামের পথ বেছে নিয়েছিলেন। কেউ আস্থা এবং আধ্যাত্মের পথ বেছে নিয়েছিলেন, আবার অন্য কেউ ইন্টেলেকচ্যুয়ালি স্বাধীনতার অলখ বা অনির্বাণ প্রদীপকে জ্বালিয়ে রাখতে নিজের কলমের শক্তি ব্যবহার করেছেন। কেউ কোর্ট-কাছারিতে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের হয়ে মোকদ্দমা লড়ে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে একটি নতুন শক্তি সঞ্চারের চেষ্টা করেছেন; কিন্তু উদ্দেশ্য ছিল একটাই – স্বাধীনতা! সেজন্য আজ যখন আমরা স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষপূর্তি উৎসব পালন করছি তখন প্রত্যেক দেশবাসীর কর্তব্য হল যে, তাঁরা যেন নিজের নিজের স্তরে, নিজেদের মতো করে নিজেদের বিশিষ্ট অবদান দেশের উন্নয়ন যাত্রায় অবশ্যই যুক্ত করেন।
আপনারা দেখবেন, যদি আমরা রাষ্ট্র হিসেবে দেখি তাহলে ভারত বিগত আট বছরে ভিন্ন ভিন্ন মাত্রায় নিত্যনতুন পদক্ষেপ নিয়ে গেছে, নতুন নতুন উদ্ভাবক চিন্তাভাবনা প্রয়োগের মাধ্যমে কাজ করার চেষ্টা করে গেছে। এই প্রচেষ্টার মাধ্যমে দেশে যে গণ-অংশীদারিত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে সেই গণ-অংশীদারিত্ব দেশের উন্নয়নকে নতুন গতি দিয়েছে। দেশের দরিদ্র থেকে দরিদ্রতম মানুষকে ক্ষমতায়িত করেছে।
‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান’ ভারতের গরীবদের সম্মান নিয়ে বাঁচার সুযোগ করে দিয়েছে। পাকা বাড়ি, বিদ্যুৎ সংযোগ, রান্নার গ্যাস সংযোগ, নলের মাধ্যমে পরিশ্রুত জল, বিনামূল্যে চিকিৎসার মতো অনেক সুবিধা আমাদের গরীবদের গরিমা বৃদ্ধি করেছে। আমাদের নাগরিকদের আত্মবিশ্বাসে একটি নতুন প্রাণশক্তি সঞ্চার করার পাশাপাশি পরিষেবাগুলিও অনেক উন্নত করেছে।
করোনাকালে বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার প্রকল্প ৮০ কোটিরও বেশি দেশবাসীকে অনাহারের আশঙ্কা থেকে মুক্তি দিয়েছে। দেশের অর্ধেক থেকে বেশি জনসংখ্যা যে দেশের উন্নয়নের কর্মধারা থেকে, আনুষ্ঠানিক সরকারি ব্যবস্থা থেকে বঞ্চিত ছিল, এক্সক্লুডেড ছিল, তাঁদেরকে আমরা মিশন মোডে ইনক্লুশন বা অন্তর্ভুক্তিকরণ করেছি। এই অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তিকরণ একটি অনেক বড় কাজ। এত কম সময়ে বিশ্বের কোথাও এত বেশি মানুষের অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তিকরণ সম্ভব হয়নি। আর সবচাইতে বড় কথা, দেশের সাধারণ মানুষকে দারিদ্র্য ও অভাব থেকে বের করে এনে স্বপ্ন দেখতে আর সেই স্বপ্নগুলিকে বাস্তবায়িত করার নতুন সাহস আমরা দেখতে পেয়েছি।
বন্ধুগণ,
স্বাধীনতার সাত দশক পর এই যে এত বড় পরিবর্তন এসেছে তার কেন্দ্রে রয়েছে জন-কেন্দ্রিক শাসন ব্যবস্থা, তার কেন্দ্রে রয়েছে সুশাসনের ক্রমাগত প্রচেষ্টা। একটা সময় ছিল যখন আমাদের দেশে নীতি এবং সিদ্ধান্ত সরকার-কেন্দ্রিক হত। অর্থাৎ, কোনও প্রকল্প শুরু হওয়ার পর জনগণের দায়িত্ব ছিল যে তাঁরা সরকারের কাছে পৌঁছে সেই প্রকল্পের সুবিধা নেবেন। এভাবে আমাদের সরকারি ব্যবস্থায় সরকার ও প্রশাসন – উভয়েরই দায়িত্ব অনেক হ্রাস পেত। এখন যেমন কোনও গরীব ছাত্রের পড়াশোনার জন্য যদি আর্থিক সাহায্যের প্রয়োজন হত, তাহলে আগে তাকে নিজের পরিবার, নিজের আত্মীয়স্বজন কিংবা নিজের বন্ধুবান্ধবের কাছ থেকে সাহায্য নিতে হত। এই কাজে সরকারের যত প্রকল্প ছিল সেগুলির সুবিধা নিতে হলে যত প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হত তা এত জটিল ছিল যে অনেকেই সাহায্য নেওয়ার জন্য এগিয়ে আসতেন না। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই তাঁরা ক্লান্ত হয়ে পড়তেন।
এভাবে যদি কোনও আন্ত্রেপ্রেনার, কোনও ব্যবসায়ী বা দোকানদারের ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হত তাহলে তাঁকেও অনেক জায়গায় চক্কর লাগাতে হত, অনেক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এগোতে হত। প্রায়ই এমনটি হত যে অসম্পূর্ণ তথ্যের কারণে তাঁরা মন্ত্রকের ওয়েবসাইট পর্যন্তও পৌঁছতে পারতেন না। এই ধরনের সমস্যাগুলির ফল এটাই হত যে ছাত্র থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী অনেকেই তাঁদের উদ্যম হারাতেন, তাঁদের স্বপ্ন মাঝপথেই অসম্পূর্ণ থেকে যেত। সেগুলি বাস্তবায়নের জন্য তাঁরা কোনও পদক্ষেপই নিতে পারতেন না।
আগেকার সময়ে সরকার-কেন্দ্রিক প্রশাসন থাকায় দেশ অনেক বড় লোকসানের সম্মুখীন হয়েছে। কিন্তু আজ একবিংশ শতাব্দীর ভারত জন-কেন্দ্রিক শাসনের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এগিয়ে চলেছে। এবারও কিন্তু সেই জনগণই আমাদেরকে নিজের সেবার জন্য নির্বাচন করে এখানে পাঠিয়েছেন। সেজন্য আমাদের এটা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে যাতে আমরা নিজেরাই জনগণের কাছে পৌঁছই, প্রত্যেক ব্যক্তির কাছে পৌঁছই, তাঁদেরকে সম্পূর্ণ পরিষেবা বা সুবিধা পৌঁছে দিই। আমাদের প্রত্যেকের মাথায় এই দায়িত্ব রয়েছে।
ভিন্ন ভিন্ন মন্ত্রকের ভিন্ন ভিন্ন ওয়েবসাইটে ঘুরে এগুলি খোঁজার চাইতে ভালো যে আপনারা ভারত সরকারের একটি পোর্টালে পৌঁছবেন এবং আপনাদের সমস্যার সমাধান হবে। আজ কেন্দ্রীয় সরকার একটি ‘জন সমর্থ’ পোর্টাল চালু করল। এটি এই লক্ষ্য নিয়েই তৈরি করা হয়েছে। এখন ভারত সরকারের সমস্ত ক্রেডিট লিঙ্কড স্কিম ভিন্ন ভিন্ন মাইক্রো-সাইটে না থেকে এইএকটাই ওয়েবসাইটে থাকবে।
এই ‘জন সমর্থ’ পোর্টাল ছাত্রদের জন্য, আন্ত্রেপ্রেনারদের জন্য, ব্যবসায়ী ও দোকানদের জন্য, কৃষকদের জীবনকে সহজ করে তোলার জন্য তো বটেই, তাঁদের নিজেদের স্বপ্ন বাস্তবায়িত করার ক্ষেত্রেও সাহায্য করবে। এখন ছাত্ররা সহজেই এই তথ্য পেতে পারবেন যে সরকারের কোন প্রকল্প গ্রহণ করলে তাঁরা সবচাইতে বেশি লাভবান হবেন, আর তাঁরা কিভাবে সম্পূর্ণ পরিষেবা পাবেন। এভাবে আমাদের নবীন প্রজন্মের বন্ধুরা সহজেই এটা ঠিক করতে পারবেন যে তাঁদের কর্মজীবনে প্রবেশের জন্য ‘মুদ্রা’ ঋণ চাই, নাকি ‘স্টার্ট-আপ ইন্ডিয়া’ ঋণ চাই।
‘জন সমর্থ’ পোর্টালের মাধ্যমে এখন দেশের যুব সম্প্রদায়, মধ্যবিত্তরা ‘এন্ড-টু-এন্ড ডেলিভারি’র একটি বড় প্ল্যাটফর্ম পেয়েছেন। আর যখন ঋণ গ্রহণ করা সহজ হবে, ন্যূনতম প্রক্রিয়া থাকবে, তখন অধিকাংশ মানুষও ঋণ নেওয়ার জন্য এগিয়ে আসবেন। এই পোর্টাল স্বনির্ভর প্রকল্পগুলিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে, সরকারের প্রকল্পগুলিকে সকল সুবিধাভোগীদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে চলেছে। আমি এই ‘জন সমর্থ’ পোর্টালের জন্য দেশের যুব সমাজকে আন্তরিকভাবে শুভেচ্ছা জানাই।
আজ এখানে, এই কর্মসূচিতে ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রের যে পণ্ডিত ব্যক্তিরা উপস্থিত রয়েছেন, তাঁদের প্রতি আমার অনুরোধ যে এই সমস্ত ব্যাঙ্কারদেরও আমাদের এই ‘জন সমর্থ’ পোর্টালকে সফল করে তোলার জন্য, যুব সম্প্রদায়কে ঋণদানের প্রক্রিয়া সহজ করে তোলার জন্য নিজেদের অংশীদারিত্ব বেশি করে বাড়ানো উচিৎ।
বন্ধুগণ,
যে কোনও সংস্কার হোক, যে কোনও রিফর্ম হোক, যদি তার লক্ষ্য স্পষ্ট থাকে, তার বাস্তবায়ন নিয়ে উদ্যোগীরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ থাকেন, তাহলে সেই প্রকল্প যে ভালো ফল দেবেই, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। বিগত আট বছরে দেশে যত সংস্কার সাধন হয়েছে তাতে বড় অগ্রাধিকার এমন বিষয়গুলিকে দেওয়া হয়েছে যে আমাদের দেশের যুব সম্প্রদায় তাঁদের নিজস্ব সামর্থ্য দেখানোর সম্পূর্ণ সুযোগ পাচ্ছেন।
আমাদের যুব সম্প্রদায় যাতে নিজেদের মনের মতো কোম্পানি খুলতে পারেন, তাঁরা যাতে নিজেদের শিল্পোদ্যোগগুলিকে সহজে গড়ে তুলতে পারেন, সেগুলিকে সহজে পরিচালনা করতে পারেন, সেদিকেই অত্যন্ত জোর দেওয়া হয়েছে। সেজন্য আমরা ৩০ হাজারেরও বেশি কমপ্লায়েন্সেসকে কমিয়ে ১ হাজার ৫০০-রও বেশি আইনকে সমাপ্ত করে কোম্পানি অ্যাক্ট-এর অনেক ব্যবস্থাকে ‘ডি-ক্রিমিনালাইজ’ করে আমরা এটা সুনিশ্চিত করেছি যে ভারতের কোম্পানিগুলি শুধু এগোবে না, সেগুলি যেন নিজেদের মতো করে নতুন নতুন উচ্চতা অর্জন করে।
বন্ধুগণ,
‘রিফর্মস’ বা সংস্কারের পাশাপাশি আমরা যে বিষয়টিকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি তা হল ‘সিমপ্লিফিকেশন’ বা সরলীকরণ। কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের অনেক আইনের জালকে এখন জিএসটি নিয়ে নিয়েছে আর এই সরলীকরণের ফলশ্রুতিও দেশবাসী দেখতে পাচ্ছেন। এখন প্রত্যেক মাসে জিএসটি বাবদ দেশের আয় ১ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি, আর এটাকে অতিক্রম করা এখন সহজ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। কর্মচারী ভবিষ্যনিধি প্রকল্প বা ইপিএফও-তে নথিভুক্তিকরণের সংখ্যাও আমরা ক্রমাগত বাড়তে দেখছি। সংস্কার এবং সরলীকরণ থেকে এগিয়ে গিয়ে এখন আমরা সুগম ব্যবস্থা গড়ে তুলছি।
গভর্নমেন্ট ই-মার্কেট প্লেস বা জিইএম পোর্টালের কারণে আন্ত্রেপ্রেনাররা এবং ব্যবসার জন্য সরকারকে নিজেদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করা এখন অনেক সহজ হয়ে গেছে। এর ফলে কেনাকাটার পরিসংখ্যান ১ লক্ষ কোটি টাকা অতিক্রম করছে। আজ দেশে বিনিয়োগের জন্য কোথায় কোথায় কী ধরনের সম্ভাবনা রয়েছে সেই সম্পর্কে তথ্য ‘ইনভেস্ট ইন্ডিয়া’ পোর্টালের মাধ্যমে সহজেই জানতে পারা যাবে।
আজ অনেক ধরনের ক্লিয়ারেন্স-এর জন্য ‘সিঙ্গল উইন্ডো ক্লিয়ারেন্স পোর্টাল’ রয়েছে। এবার ‘জন সমর্থ’ পোর্টালও এক্ষেত্রে দেশের যুব সম্প্রদায়কে, দেশের স্টার্ট-আপগুলিকে অনেক সাহায্য করতে চলেছে। আজ আমাদের সংস্কার, সরলীকরণ, সুগমতার শক্তি নিয়ে এগিয়ে চলতে গেলে পরিষেবাগুলিকে নতুন স্তরে পৌঁছে দিতে হবে। এখন দেশবাসীকে আধুনিক পরিষেবা প্রদান করা এবং সেজন্য ক্রমাগত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া, প্রত্যেক নতুন সঙ্কল্প শুরু করে সেগুলিকে বাস্তবায়িত করা – এই সবকিছু সুষ্ঠুভাবে করা আমাদের দায়িত্ব।
বন্ধুগণ,
বিগত আট বছরে আমরা দেখিয়ে দিয়েছি যে ভারত যদি কোনকিছু মিলেমিশে করার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে তা গোটা বিশ্বের জন্য একটি নতুন আশার সঞ্চার করে। আজ বিশ্বে ভারত শুধুই যে একটি বিরাট বড় কনজিউমার মার্কেটে পরিণত হয়েছে তাই নয়, একটি সমর্থ গেম চেঞ্জার ক্রিয়েটিভ এবং ইনোভেটিভ ইকো-সিস্টেম রূপে আশা এবং প্রত্যাশা নিয়ে সারা পৃথিবী আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। বিশ্বের একটি বড় অংশই ভারতের সমস্যাগুলি নিয়ে এবং সেগুলির সমাধান নিয়ে অপেক্ষায় রয়েছে। এটা সেজন্যই সম্ভব হতে পারছে, কারণ, বিগত আট বছর ধরে আমরা সাধারণ মানুষের মধ্যে গিয়ে ভারতবাসীর বিবেকের ওপর ভরসা করেছি। আমরা জনগণকে গ্রোথ-এর ক্ষেত্রে ইন্টেলিজেন্ট পার্টিসিপ্যান্ট রূপে উৎসাহিত করেছি।
আমরা দেশের জনগণের ওপর সম্পূর্ণ বিশ্বাস রেখেছি যাতে যত ধরনের প্রযুক্তি সুশাসনের জন্য প্রয়োগ করা হবে, সেগুলি দেশের জনগণ স্বীকারও করে নেন, আর প্রশংসাও করেন। জনগণের ওপর এই বিশ্বাসের পরিণাম বিশ্বে সর্বশ্রেষ্ঠ ডিজিটাল ট্রানজ্যাকশন প্ল্যাটফর্ম, ইউনিফায়েড পেমেন্টস ইন্টারফেস বা ইউপিআই রূপে সকলের সামনে উপস্থিত। আজ দূরদুরান্তের গ্রাম থেকে শুরু করে শহরের অলিগলিতে, রাস্তার ফুটপাথে কিংবা যাঁরা ঠেলা চালান, রেললাইনের দু’পাশে পসরা সাজিয়ে বসেন, তাঁরাও ১০-২০ টাকা থেকে শুরু করে লক্ষ টাকার লেনদেন জিজিটাল মাধ্যমে অত্যন্ত সহজেই করছেন।
আমাদের ভারতের যুব সম্প্রদায়ের উদ্ভাবন এবং আন্ত্রেপ্রেনিওরশিপ নিয়ে তাঁদের মধ্যে যে উৎসাহ ও উদ্দীপনা রয়েছে তার ওপর আমাদের অনেক বেশি ভরসা ছিল। দেশের নবীন প্রজন্মের মনের এই লুক্কায়িত বা সুপ্ত উৎসাহ ও উদ্দীপনাকে প্রকাশের পথ করে দেওয়ার জন্য স্টার্ট-আপ ইন্ডিয়া প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। আজ দেশে প্রায় ৭০ হাজার স্টার্ট-আপ রয়েছে, আর প্রত্যেকদিন এতে কয়েক ডজন নতুন সদস্য যুক্ত হচ্ছেন।
বন্ধুগণ,
আজ দেশ যা যা অর্জন করছে এতে নবীন প্রজন্মের নিজস্ব প্রেরণা, সকলের মিলিত প্রচেষ্টা এবং ‘সবকা প্রয়াস’-এর অনেক বড় ভূমিকা রয়েছে। দেশবাসী আত্মনির্ভর ভারত অভিযানের মাধ্যমে ‘ভোকাল ফর লোকাল’-এর মতো অভিযানের সঙ্গে মানসিকভাবে আবেগতাড়িত হয়ে যুক্ত হয়েছেন। এতে এখন আপনাদের সকলের, আমাদের দেশের কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক এবং কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের ভূমিকাও অনেক বেড়ে গেছে। এখন আমাদের সমস্ত প্রকল্পকে স্যাচুরেশন-এর দিকে দ্রুতগতিতে নিয়ে যেতে হবে।
আমরা অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তিকরণের জন্য অনেক প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছি। এখন আমাদেরকে এগুলির সদ্ব্যবহারের জন্য সচেতনতা বাড়াতে হবে। যে অর্থনৈতিক সমাধান ভারতের জন্য যথোপযুক্তভাবে তৈরি করা হয়েছে, সেগুলি এখন বিশ্বের অন্যান্য দেশের নাগরিকদেরকেও যেন সমাধানের পথ দেখায় সেজন্য চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
আমাদের ব্যাঙ্ক, আমাদের কারেন্সি বা মুদ্রা আন্তর্জাতিক সরবরাহ শৃঙ্খলের বা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ব্যাপক অংশ কিভাবে হয়ে উঠবে তার ওপরও গুরুত্ব দেওয়া অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে স্বাধীনতার অমৃতকালে উন্নত ফাইন্যান্সিয়াল এবং কর্পোরেট গভর্ন্যান্সকে আপনারা ক্রমাগত উৎসাহ যুগিয়ে যাবেন। আজ এই সমারোহ আয়োজনের জন্য আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই আর ৭৫টি স্থান থেকে যে বন্ধুরা প্রযুক্তির মাধ্যমে আমার বক্তব্য শুনছেন তাঁদের সবাইকেও অনেক অনেক শুভকামনা জানিয়ে আমার বক্তব্যকে বিরাম দিচ্ছি।
অনেক অনেক ধন্যবাদ!