ভারতমাতার জয়! ভারতমাতার জয়!
উত্তরপ্রদেশের জনপ্রিয় কর্মযোগী মুখ্যমন্ত্রী শ্রী যোগী আদিত্যনাথজি, এখানকার কর্মঠ, আমাদের পুরনো সঙ্গী উপ-মুখ্যমন্ত্রী শ্রী কেশব প্রসাদ মৌর্যজি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আমার সহযোগী শ্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াজি, জেনারেল ভি কে সিং-জি, শ্রী সঞ্জীব বালিয়ানজি, শ্রী এস পি সিং বাঘেলজি, শ্রী বি এল ভার্মাজি, উত্তরপ্রদেশ সরকারের মন্ত্রী শ্রী লক্ষ্মীনারায়ণ চৌধরিজি, শ্রী জয়প্রতাপ সিং-জি, শ্রী শ্রীকান্ত শর্মাজি, শ্রী ভূপেন্দ্র চৌধরিজি, শ্রী নন্দগোপাল গুপ্তাজি, শ্রী অনিল শর্মাজি, শ্রী ধর্মসিং সৈনিজি, শ্রী অশোক কাটারিয়াজি, শ্রী জি এস ধর্মেশজি, সংসদে আমার সহকর্মী ডঃ মহেশ শর্মাজি, শ্রী সুরেন্দ্র সিং নাগরজি, শ্রী ভোলা সিং-জি, স্থানীয় বিধায়ক শ্রী ধীরেন্দ্র সিং-জি, মঞ্চে উপবিষ্ট অন্যান্য সকল জনপ্রতিনিধিগণ এবং আমাদের সবাইকে আশীর্বাদ দেওয়ার জন্য এখানে আগত বিপুল সংখ্যক মানুষ, আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা।
আপনাদের সকলকে, দেশের সমস্ত জনগণকে, আমার উত্তরপ্রদেশের কোটি কোটি ভাই ও বোনেদের নয়ডার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভূমিপূজনের জন্য অনেক অনেক অভিনন্দন। আজ এই বিমানবন্দরের ভূমিপূজনের সঙ্গেই দাউজি মেলার জন্য প্রসিদ্ধ জেওয়ারের নামও আন্তর্জাতিক মানচিত্রে লেখা হয়ে গেল। এজন্য দিল্লি এনসিআর এবং পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের কোটি কোটি মানুষ উপকৃত হবেন। আমি সেজন্য আপনাদের সকলকে, সমগ্র দেশকে অভিনন্দন জানাই।
বন্ধুগণ,
একবিংশ শতাব্দীর নতুন ভারত আজ একটার থেকে আরেকটা ভালো আধুনিক পরিকাঠামো নির্মাণ করছে। উন্নত সড়কপথ, উন্নত রেল নেটওয়ার্ক, উন্নত বিমানবন্দর – এগুলিকে নিছকই পরিকাঠামো প্রকল্প বলা যায় না, কারণ এগুলি গোটা অঞ্চলের চেহারা বদলে দেয়। মানুষের জীবনকে সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তিত করে। গরীব থেকে শুরু করে মধ্যবিত্ত, কৃষক থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী, শ্রমিক থেকে শুরু করে শিল্পোদ্যোগী – প্রত্যেকেই এর দ্বারা অনেক অনেক লাভবান হন। পরিকাঠামো প্রকল্পগুলির শক্তি আরও বৃদ্ধি পায় যখন তার সঙ্গে সিমলেস কানেক্টিভিটি বা অবাধ যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে ওঠে, লাস্ট মাইল কানেক্টিভিটি গড়ে ওঠে। নয়ডা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কানেক্টিভিটির দৃষ্টিতে একটি অসাধারণ মডেল হয়ে উঠবে। এখানে আসা-যাওয়ার জন্য ট্যাক্সি থেকে শুরু করে মেট্রো রেল ও রেলপথ – সব ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকবে। বিমানবন্দর থেকে বেরোতেই আপনারা সরাসরি যমুনা এক্সপ্রেসওয়েতে চলে আসতে পারবেন, নয়ডা-গ্রেটার নয়ডা এক্সপ্রেসওয়ে পর্যন্ত চলে আসতে পারবেন। উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি, হরিয়ানা, রাজ্যের যে কোনও জায়গায় যেতে হলে সামান্য দূরেই পেরিফেরাল এক্সপ্রেসওয়েতে পৌঁছে যেতে পারবেন। আর এখন তো দিল্লি-মুম্বাই এক্সপ্রেসওয়েও প্রস্তুত হতে চলেছে। এর মাধ্যমেও অনেক শহরে পৌঁছনো সহজ হবে। শুধু তাই নয়, এখান থেকে ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডরের জন্যও সরাসরি যোগাযোগের সুবিধা থাকবে। একভাবে নয়ডা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর উত্তর ভারতের লজিস্টিক গেটওয়ে বা পণ্য পরিবহণের সিংহদ্বার হয়ে উঠবে। এই সমগ্র এলাকাকে ‘ন্যাশনাল গতিশক্তি মাস্টার প্ল্যান’-এর একটি শক্তিশালী প্রতিবিম্ব করে গড়ে তুলবে।
বন্ধুগণ,
আজ দেশে যত দ্রুতগতিতে এভিয়েশন বা বিমান চলাচল ক্ষেত্রটি বর্ধিত হচ্ছে, প্রসারিত হচ্ছে, যে দ্রুতগতিতে ভারতীয় কোম্পানিগুলি শত শত নতুন বিমান কিনছে, তাদের সাফল্যের ক্ষেত্রেও নয়ডা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর অনেক বড় ভূমিকা পালন করবে। এই বিমানবন্দর বিমানগুলির দেখাশোনা, মেরামতি এবং অপারেশনের ক্ষেত্রেও দেশের সব থেকে বড় কেন্দ্র হয়ে উঠবে। এখানে ৪০ একর জায়গায় মেইন্টেন্যান্স, রিপেয়ার অ্যান্ড ওভারহল বা এমআরও পরিষেবা তৈরি হবে, যা দেশ-বিদেশের বিমানগুলিকে এসব পরিষেবা প্রদান করবে আর শত শত যুবকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করবে। আপনারা কল্পনা করতে পারেন, আজও আমরা নিজেদের ৮৫ শতাংশ বিমানকে এমআরও পরিষেবার জন্য বিদেশে পাঠাই আর এ কাজের পেছনে প্রতি বছর ১৫ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়। ৩০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে এই প্রকল্প গড়ে উঠছে। শুধু রিপেয়ারিং-এর জন্য ১৫ হাজার কোটি টাকা প্রতি বছর বিদেশে চলে যায়। হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ হয় যার অধিকাংশ অংশ অন্যান্য দেশে চলে যায়। এখন এই বিমানবন্দর এই পরিস্থিতিকেও বদলানোর ক্ষেত্রে অনেক সাহায্য করবে।
ভাই ও বোনেরা,
এই বিমানবন্দরের মাধ্যমে প্রথমবার দেশে ইন্টিগ্রেটেড মাল্টি-মডেল কার্গো হাবেরও কল্পনা বাস্তবায়িত হচ্ছে। এর মাধ্যমে গোটা দেশের বিকাশ একটি নতুন গতি পাবে, একটি নতুন উড়ানে অভ্যস্ত হয়ে উঠবে। আমরা সবাই এটা জানি, যে যে রাজ্যগুলির সীমা সমুদ্র তটবর্তী, সেগুলির জন্য নতুন নতুন সমুদ্রবন্দর অনেক বড় সম্পদ হয়। উন্নয়নের জন্য এগুলির শক্তি অনেক বড় কাজে লাগে। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের মতো ল্যান্ড-লকড বা স্থলবেষ্টিত রাজ্যগুলির জন্য এই ভূমিকা বিমানবন্দরগুলি পালন করে। এখানে আলিগড়, মথুরা, মেরাঠ, আগ্রা, বিজনৌর, মুরাদাবাদ, বেরিলির মতো অনেক শিল্প সমৃদ্ধ অঞ্চল রয়েছে। এখানে সার্ভিস সেক্টরের বড় ইকো-সিস্টেমও রয়েছে আর কৃষিক্ষেত্রেও পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের গুরুত্বপূর্ণ অংশ রয়েছে। এখন এক্ষেত্রে সামর্থ্যও অনেক বেশি বৃদ্ধি পাবে। সেজন্য এই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রপ্তানির একটি বড় কেন্দ্রকে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত করবে। এখন এখানকার কৃষক বন্ধুরা, বিশেষভাবে ক্ষুদ্র কৃষক ফল, সব্জি, মাছের মতো দ্রুত পচনশীল পণ্যকে সরাসরি রপ্তানি করতে পারবেন।
আমাদের যে খুরজা অঞ্চলের শিল্পীরা রয়েছেন, মেরাঠের ক্রীড়া শিল্প রয়েছে, সাহারানপুরের আসবাবপত্র রয়েছে, মুরাদাবাদের পিতল শিল্প রয়েছে, আগ্রার ফুটওয়্যার আর পেঠা রয়েছে, পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের অনেক অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগগুলিরও বিদেশি বাজার পর্যন্ত পৌঁছতে এখন আরও সুবিধা হবে।
বন্ধুগণ,
যে কোনও এলাকায় বিমানবন্দর প্রতিষ্ঠা হলে পরিবর্তনের একটি এমন চক্র শুরু হয় যা চতুর্মুখী লাভে রূপান্তরিত হয়। বিমানবন্দর নির্মাণের সময় হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়। বিমানবন্দরকে সুচারু রূপে পরিচালনার জন্যও হাজার হাজার মানুষের প্রয়োজন হয়। পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের হাজার হাজার মানুষকে এই বিমানবন্দর নতুন কর্মসংস্থানও দেবে। রাজধানীর কাছাকাছি হওয়ার ফলে আগে এই ধরনের এলাকাগুলিতে বিমানবন্দরের মতো পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত করা হত না। এটা মনে করা হত যে দিল্লিতেই তো বিমানবন্দর এবং অন্যান্য পরিষেবা রয়েছে। আমরা এই ভাবনাটিকে বদলেছি। আজ দেখুন, আমরা হিন্ডন বিমানবন্দরকে যাত্রী পরিষেবার জন্য চালু করেছি। এরকম হরিয়ানার হিসারেও বিমানবন্দর তৈরির কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে।
ভাই ও বোনেরা,
যখন বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থা বৃদ্ধি পায়, তখন পর্যটনও ততটাই ফুলে-ফেঁপে ওঠে। আমরা সবাই দেখেছি যে মা বৈষ্ণোদেবীর যাত্রা থেকে শুরু করে কেদারনাথ যাত্রাকে হেলিকপ্টার পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত করার পর সেখানে শ্রদ্ধাবান ভক্তদের সংখ্যা নিরন্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের বিখ্যাত পর্যটন এবং আস্থার সঙ্গে যুক্ত বড় বড় কেন্দ্রগুলির জন্য নয়ডা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এই উদ্দেশ্য সাধন করতে চলেছে।
বন্ধুগণ,
দেশ স্বাধীন হওয়ার সাত দশক পর প্রথমবার উত্তরপ্রদেশ সেই জিনিসগুলি পেতে শুরু করেছে যেগুলির দাবিদার ও যেগুলি পাওয়ার অধিকার তাঁদের সর্বদাই ছিল। এখন ডবল ইঞ্জিন সরকারের প্রচেষ্টায় উত্তরপ্রদেশ রাজ্যটি দেশের সর্বাধিক কানেক্টেড এলাকায় পরিবর্তিত হচ্ছে। এখানে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশেও লক্ষ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। র্যাপিড রেল করিডর থেকে শুরু করে এক্সপ্রেসওয়ে, মেট্রো কানেক্টিভিটি বা যোগাযোগ ব্যবস্থা, পূর্ব এবং পশ্চিম সমুদ্রের সঙ্গে উত্তরপ্রদেশকে যুক্ত করা ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডর – এই সব কিছু আধুনিক হতে উদগ্রীব উত্তরপ্রদেশের নতুন পরিচয়ে পরিণত হতে চলেছে। স্বাধীনতার এত বছর পরেও উত্তরপ্রদেশকে নানারকম টিটকিরি শোনার জন্য বাধ্য করে রাখা হয়েছিল। কখনও দারিদ্র্যের জন্য বিদ্রূপ, কখনও জাতিভেদ নিয়ে রাজনীতির বিদ্রূপ, কখনও হাজার হাজার কোটি টাকার অর্থ তছরূপের জন্য বিদ্রূপ, কখনও বাজে সড়কপথের জন্য বিদ্রূপ, কখনও বিভিন্ন শিল্পোদ্যোগ না থাকার জন্য বিদ্রূপ, আবার কখনও স্থগিত থাকা উন্নয়ন কর্মসূচি নিয়ে বিদ্রূপ, কখনও অপরাধী, মাফিয়া এবং রাজনৈতিক দলবদল ও গোষ্ঠী বদলের জন্য বিদ্রূপ। উত্তরপ্রদেশের কোটি কোটি সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের জন্য এটাই প্রশ্ন ছিল যে তাঁরা কি আদৌ কখনও উত্তরপ্রদেশের একটি ইতিবাচক ছবি দেখতে পাবেন?
ভাই ও বোনেরা,
পূর্ববর্তী সরকারগুলি যে উত্তরপ্রদেশে অভাব এবং অন্ধকার সৃষ্টি করে রেখেছিল, পূর্ববর্তী সরকারগুলি যেভাবে উত্তরপ্রদেশকে সর্বদা মিথ্যা স্বপ্ন দেখিয়েছিল, তেমনই উত্তরপ্রদেশ আজ শুধু জাতীয় নয়, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও ছাপ রেখে যাচ্ছে। আজ উত্তরপ্রদেশে আন্তর্জাতিক স্তরে চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। আজ উত্তরপ্রদেশে আন্তর্জাতিক স্তরের শিক্ষক-শিক্ষণ প্রতিষ্ঠানও গড়ে উঠছে, আন্তর্জাতিক স্তরের হাইওয়ে, এক্সপ্রেসওয়ে, আন্তর্জাতিক স্তরের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা, আজ উত্তরপ্রদেশ মাল্টি-ন্যাশনাল কোম্পানিগুলির বিনিয়োগের কেন্দ্র হয়ে উঠছে। এই সমস্ত কিছু আজ আমাদের উত্তরপ্রদেশে হচ্ছে। সেজন্যই আজ দেশ এবং বিশ্বের বিনিয়োগকারীরা বলেন – উত্তরপ্রদেশ মানেই উন্নত সুবিধা, নিরন্তর বিনিয়োগ। উত্তরপ্রদেশের এই আন্তর্জাতিক পরিচয়কে, উত্তরপ্রদেশের আন্তর্জাতিক বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থা নতুনভাবে মাত্রান্বিত করছে। আগামী ২-৩ বছরে যখন এই বিমানবন্দর চালু হয়ে যাবে এবং কাজ করা শুরু করবে, তখন উত্তরপ্রদেশ পাঁচটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্পন্ন রাজ্যে পরিণত হবে।
বন্ধুগণ,
উত্তরপ্রদেশে এবং কেন্দ্রীয় সরকারে আগে যাঁরা ক্ষমতায় ছিলেন, তাঁরা কিভাবে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের উন্নয়নকে এড়িয়ে গেছেন তার একটি উদাহরণ এই জেওয়ার বিমানবন্দরও। দুই দশক আগে উত্তরপ্রদেশের ভারতীয় জনতা পার্টির সরকার এই প্রকল্পের স্বপ্ন দেখেছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে এই বিমানবন্দর অনেক বছর ধরে দিল্লি এবং লক্ষ্ণৌ-এর পূর্ববর্তী সরকারের কাছে টানাপোড়েনের বিষয় হয়ে ছিল। উত্তরপ্রদেশে আগে যে সরকার ছিল তারা তো দস্তুরমতো চিঠি লিখে তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকারকে বলেছিল, যাতে এই বিমানবন্দর প্রকল্পটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এখন ডবল ইঞ্জিনের সরকারের প্রচেষ্টায় আজ আমরা সেই বিমানবন্দরের ভূমিপূজনের সাক্ষী হয়ে উঠেছি।
এমনিতে বন্ধুগণ, আজ আমি আরেকটা কথা বলব। মোদীজি-যোগীজি যদি চাইতেন তবে ২০১৭ সালে রাজ্যে বিজেপি সরকার গড়ে ওঠার পরেই এখানে ভূমিপূজন করিয়ে দিতে পারতেন, ফটো তোলাতেন, খবরের কাগজে প্রেস নোটও ছেপে যেত। আর যদি আমরা তেমনটা করতাম, তাহলে পূর্ববর্তী সরকারগুলির প্রথাগত অভ্যাসমতো জনগণেরও মনে হত না যে আমরা খারাপ কিছু করছি। আগেকার রাজনৈতিক লাভের জন্য যেখানে সেখানে রেওরি খাওয়ানোর মতো পরিকাঠামো প্রকল্পের ঘোষণা হত। কাগজে দাগ টানা হত। কিন্তু প্রকল্পগুলি কিভাবে বাস্তবায়িত হবে, প্রতিকূলতাগুলি কিভাবে দূর করা হবে, অর্থ সংস্থান কোথা থেকে হবে – এইসব ভাবনা কেউ করতেন না। এর ফলেই প্রকল্পগুলি দশকের পর দশক ধরে স্থগিত থেকে যেত, তৈরিই হত না। ঘোষণা হয়ে যেত, প্রকল্পের বিনিয়োগও অনেকগুণ বেড়ে যেত, তারপর নানারকম বাহানাবাজি শুরু হত। বিলম্বের নারকেল অন্যদের মাথায় ভাঙার জন্য নানারকম চেষ্টা করা হত। কিন্তু আমরা এরকম কিছু করিনি, কারণ, পরিকাঠামো আমাদের জন্য রাজনীতির বিষয় নয়, রাষ্ট্রনীতির অংশ। ভারতের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ আমাদের প্রত্যেকের জন্য একটি দায়িত্ব। আমরা এটা সুনিশ্চিত করছি, প্রকল্পগুলি যাতে থেমে না থাকে, ঝুলে না থাকে, বিভ্রান্ত না হয়, আমরা এটা সুনিশ্চিত করার চেষ্টা করছি, যাতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই পরিকাঠামো প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ করা হয়, দেরি হলে আমরা জরিমানার ব্যবস্থাও করেছি।
বন্ধুগণ,
আগে কৃষকদের জমি নিয়ে যে ধরনের দুর্নীতি হত, তাও প্রকল্পগুলির বিলম্বের ক্ষেত্রে অনেক বড় কারণ হয়ে উঠত। তেমনই চারপাশে আগেকার সরকারের সময়কার এরকম অনেক প্রকল্প রয়েছে, যেগুলির জন্য কৃষকদের থেকে জমি তো নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু সেখানে হয় ভর্তুকি সংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে অথবা বছরের পর বছর ধরে সেই জমি পতিত হয়ে পড়ে আছে। আমাদের কৃষকদের কল্যাণে প্রকল্পগুলির বাস্তবায়নে দেশের স্বার্থে এই প্রতিকূলতাগুলিকেও আমরা নিরসন করেছি। আমরা এটা সুনিশ্চিত করেছি যে প্রশাসন, কৃষকদের থেকে যথাসময়ে, সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার সঙ্গে জমি কিনুক। তারপরই গিয়ে এই ৩০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে নির্মীয়মান এই প্রকল্পের ভূমিপূজনের জন্য আমরা এগিয়ে এসেছি।
বন্ধুগণ,
আজ প্রত্যেক সাধারণ দেশবাসীর জন্য উন্নতমানের পরিকাঠামো, উন্নতমানের পরিষেবা সুনিশ্চিত করা হচ্ছে। দেশের সাধারণ মানুষ যাতে সুলভে বিমান যাত্রা করতে পারেন, এই স্বপ্নগুলিও আজ আমাদের ‘উড়ান’ যোজনার মাধ্যমে বাস্তবে পরিণত করে দেখিয়েছি। আজ যখন কোনও বন্ধু খুশি হয়ে বলেন যে তাঁর বাড়ির পাশেই বিমানবন্দর থেকে তিনি তাঁর মা-বাবার সঙ্গে প্রথমবার বিমান যাত্রা করেছেন, যখন তাঁরা নিজেদের ফটো শেয়ার করেন, তখন আমার মনে হয় যে আমাদের প্রচেষ্টা সফল হয়েছে। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, একা উত্তরপ্রদেশই বিগত বছরগুলিতে আটটি বিমানবন্দর থেকে বিমান পরিষেবা চালু করেছে। কয়েকটিতে তো এখনই কাজ শুরু হয়েছে।
ভাই ও বোনেরা,
আমাদের দেশে কিছু রাজনৈতিক দল সর্বদাই তাদের নিহিত স্বার্থকে সবার ওপরে রেখেছে। তাদের ভাবনা ছিল নিজেদের স্বার্থ শুধুই নিজেদের পরিবারের সদস্যরা যেখানে থাকেন সেই এলাকার উন্নতিকেই তারা উন্নয়ন বলে মানত যেখানে আমরা ‘দেশ সর্বাগ্রে’ – এই ভাবনা নিয়ে কাজ করি। ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস, সবকা প্রয়াস’ – এটাই আমাদের মন্ত্র। আজ উত্তরপ্রদেশের জনগণ সাক্ষী, দেশের আপামর জনগণ সাক্ষী, বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে কিছু রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে কী ধরনের রাজনীতি হয়েছে, কিন্তু ভারত উন্নয়নের পথ থেকে সরে দাঁড়ায়নি। কিছুদিন আগেই ভারত ১০০ কোটি কোভিড টিকাকরণ ডোজের কঠিন মাইলফলক পেরিয়ে এসেছে। এই মাসের শুরুতেই ভারত ২০৭০-এর মধ্যে ‘নেট জিরো’র লক্ষ্য ঘোষণা করেছে। কিছু সময় আগেই কুশিনগরে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উদ্বোধন করা হয়েছে। তখন উত্তরপ্রদেশেই একসঙ্গে নয়টি মেডিকেল কলেজ চালু করে দেশের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোকে শক্তিশালী করে তোলা হয়েছে। মাহোবায় নতুন বাঁধ আর সেচ প্রকল্পগুলি উন্মোচনের মাধ্যমে ঝাঁসিতে ডিফেন্স করিডরের কাজও দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। গত সপ্তাহেই পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ে উত্তরপ্রদেশবাসীদের জন্য সমর্পণ করা হয়েছে। তার একদিন আগেই আমরা জনজাতীয় গৌরব দিবস পালন করেছি। মধ্যপ্রদেশে একটি অত্যন্ত সুন্দর এবং আধুনিক রেল স্টেশনও উদ্বোধন করা হয়েছে। এ মাসেই মহারাষ্ট্রের পণ্ঢরপুরে কয়েক হাজার কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়কের উদ্বোধন এবং শিলান্যাস করা হয়েছে আর এখন আজ নয়ডা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভূমিপূজন সম্পন্ন হল। আমাদের দেশভক্তির সামনে, আমাদের দেশসেবার সামনে কিছু রাজনৈতিক দলের স্বার্থনীতিও কখনও টিকতে পারে না।
বন্ধুগণ,
আজ দেশে একবিংশ শতাব্দীর প্রয়োজনগুলি মাথায় রেখে অনেক আধুনিক প্রকল্প নিয়ে দ্রুতগতিতে কাজ এগিয়ে চলেছে। এই গতি, এই প্রগতি একটি সক্ষম এবং শক্তিশালী ভারতের গ্যারান্টি। এই প্রগতি দেশের সমস্ত পরিষেবা সুগম করে তোলা থেকে শুরু করে সাধারণ ভারতবাসীর সমৃদ্ধিকে সুনিশ্চিত করার মতো। আপনাদের সকলের আশীর্বাদে আপনাদের ডবল ইঞ্জিন সরকারের দায়বদ্ধতা থেকে উত্তরপ্রদেশ অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। আমরা সবাই মিলে এগিয়ে যাব। এই বিশ্বাস নিয়েই আপনাদেরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের জন্য আরেকবার অনেক অনেক শুভকামনা জানাই।
আমার সঙ্গে মুষ্টিবদ্ধ হাত তুলে বলুন –
ভারতমাতার জয়!
ভারতমাতার জয়!
ভারতমাতার জয়!
অনেক অনেক ধন্যবাদ।