ভারতমাতার জয়!
ভারতমাতার জয়!
ভারতমাতার জয়!
রেলের ক্ষেত্রে আজ একটি ঐতিহাসিক বিপ্লব সংগঠিত হল। জাতির উদ্দেশে নবম এবং দশম বন্দে ভারত ট্রেন উৎসর্গ করার সুযোগ পেয়ে আমি অত্যন্ত আনন্দিত।
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী একনাথজি, উপ-মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্রজি, মন্ত্রিসভায় আমার সহকর্মীবৃন্দ, মহারাষ্ট্র মন্ত্রিসভার সদস্যরা, উপস্থিত সকল সাংসদ, বিধায়ক, বিশিষ্টজন, ভাই ও বোনেরা!
আজ ভারতীয় রেলের জন্য বিশেষ করে, মহারাষ্ট্র ও মুম্বাইয়ের আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমবারের মতো একইসঙ্গে দুটি বন্দে ভারত ট্রেনের যাত্রার সূচনা করা হল। এই বন্দে ভারত ট্রেন দুটি মুম্বাই এবং পুণের মতো অর্থনৈতিক কেন্দ্রের সঙ্গে আধ্যাত্মিক স্থানের মেলবন্ধন ঘটাবে। একইসঙ্গে কলেজের ছাত্রছাত্রী, অফিস যাত্রী, ব্যবসায়ী, কৃষক এবং ভক্তবৃন্দ এর ফলে উপকৃত হবেন।
মহারাষ্ট্রের পর্যটন এবং তীর্থযাত্রার ক্ষেত্রে দারুণ সুবিধা হবে। শিরডিতে সাঁইবাবাকে দর্শন অথবা নাসিকে রামকুণ্ড কিংবা ত্রম্বকেশ্বর এবং পঞ্চবটী দর্শন – সবকিছুই নতুন বন্দে ভারত ট্রেনের সাহায্যে সহজ হবে।
মুম্বাই-সোলাপুর বন্দে ভারত ট্রেনে পান্ধারপুরের ভিট্টল-রাখুমাঈ, সোলাপুরের সিদ্ধাশ্বর মন্দির, অক্কলকোটের স্বামী সমর্থ অথবা আঈ তুলজিভবানীকে সহজেই দর্শন করা যাবে। আর আমি খুব ভালোভাবেই জানি যে সহ্যাদ্রি ঘাট দিয়ে যখন বন্দে ভারত এক্সপ্রেস যাবে তখন সেখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করা আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের সমতুল। নতুন বন্দে ভারত ট্রেনগুলির জন্য আমি মুম্বাই ও মহারাষ্ট্রের নাগরিকদের অভিনন্দন জানাই।
বন্ধুগণ,
আজকের আধুনিক ভারতের অন্যতম নিদর্শন বন্দে ভারত। এর মাধ্যমে ভারতের উন্নয়নের চিত্রটি প্রতিফলিত হয়। আপনারা দেখছেন কিভাবে দেশজুড়ে বন্দে ভারত ট্রেনের যাত্রার সূচনা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই ১০টি ট্রেন যাত্রা শুরু করেছে। আজ দেশের ১৭টি রাজ্যের ১০৮ জেলায় বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চলাচল করছে।
আমার মনে আছে, এমনও একটা সময় ছিল যখন সাংসদরা তাঁদের এলাকার স্টেশনে ১-২ মিনিট কোনও ট্রেন যাতে দাঁড়ায় তার জন্য চিঠি লিখতেন। আর আজ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের সাংসদরা যখন মিলিত হন, তখন তাঁরা বন্দে ভারত ট্রেনের জন্য দাবি জানাতে থাকেন। এই ট্রেন যাতে তাঁদের অঞ্চলেও চলাচল করে, সেই দাবিই তাঁরা জানান। বুঝতেই পারছেন, বন্দে ভারত ট্রেনের চাহিদা কতখানি।
বন্ধুগণ,
মুম্বাইয়ের নাগরিকদের জন্য জীবনযাত্রা আরও সহজ করে তুলতে বেশ কিছু প্রকল্পের সূচনা হয়েছে দেখে আমি আনন্দিত। শহরের পূর্ব এবং পশ্চিম অংশের মধ্যে যোগাযোগের মানোন্নয়নের জন্য আজ এলিভেটেড করিডর উদ্বোধন করা হল। মুম্বাইয়ের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে এই করিডরের অপেক্ষায় ছিলেন। প্রতিদিন ২ লক্ষের বেশি গাড়ি এই করিডর দিয়ে যাওয়া-আসা করবে, মানুষের সময়ও বাঁচবে।
একইসঙ্গে মুম্বাই শহরতলির পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থারও উন্নতি হবে। কুরার আন্ডারপাসটিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলির কাজ শেষ হওয়ার জন্য আমি মুম্বাইবাসীকে আমার অভিনন্দন জানাই।
বন্ধুগণ,
একবিংশ শতাব্দীর ভারত দ্রুতগতিতে জন-পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটাচ্ছে। আমাদের গণ-পরিবহণ ব্যবস্থা যত আধুনিক হবে, দেশের মানুষের জীবনযাত্রাও তত উন্নত হবে, এর মানোন্নয়ন ঘটবে। এই ভাবনায় আজ অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন ট্রেন চালানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, মেট্রো পরিষেবার সম্প্রসারণ ঘটানো হচ্ছে, নতুন নতুন বন্দর ও বিমানবন্দর গড়ে তোলা হচ্ছে। এই ভাবনাকে শক্তিশালী করে তুলেছে দিনকয়েক আগে পেশ করা এ বছরের সাধারণ বাজেট। আজকের এই প্রকল্পগুলির জন্য আমাদের মুখ্যমন্ত্রী এবং উপ-মুখ্যমন্ত্রী যথেষ্ট প্রশংসার দাবিদার।
ভারতের ইতিহাসে এই প্রথম বাজেটে পরিকাঠামোর উন্নয়নের জন্য ১০ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ৯ বছর আগে এই খাতে যে অর্থ বরাদ্দ করা হত এ বছর তার পাঁচগুণ বেশি অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২ লক্ষ ৫০ হাজার কোটি টাকা রেলের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। এবারের রেল বাজেটে মহারাষ্ট্রের জন্য প্রচুর প্রকল্প বরাদ্দ হয়েছে। আমি নিশ্চিত, ডবল ইঞ্জিন সরকারের দ্বিগুণ উদ্যোগের ফলে মহারাষ্ট্রে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হবে। এর ফলে, আরও দ্রুততার সঙ্গে অত্যাধুনিক পরিবহণ ব্যবস্থার মাধ্যমে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়া যাবে।
বন্ধুগণ,
পরিকাঠামো ক্ষেত্রে একটি টাকা বিনিয়োগ করা হলে নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগও গড়ে ওঠে। নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত সিমেন্ট, বালি, লোহা, যন্ত্রপাতি সহ প্রতিটি শিল্প এক্ষেত্রে উপকৃত হয়। ব্যবসা-বাণিজ্যে যুক্ত মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের মানুষ যেমন এর ফলে লাভবান হন, দরিদ্ররা কাজের সুযোগ পান। ইঞ্জিনিয়াররা যেমন কাজ পান, একজন শ্রমিকও একইভাবে কাজ পেয়ে থাকেন। আর তাই, যখন পরিকাঠামো গড়ে তোলার কাজ চলে তখন প্রত্যেকে আয় করেন। এর ফলে, নতুন শিল্প সংস্থা ও ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নতি হয়।
ভাই ও বোনেরা,
আমি, বিশেষ করে মুম্বাইয়ের জনসাধারণকে জানাতে চাই কিভাবে এবারের বাজেটে মধ্যবিত্ত মানুষেরা লাভবান হবেন। বেতনভুক বা মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ব্যবসায়ী - সকলেই এবারের বাজেটে খুশি। ২০১৪ সালের আগের পরিস্থিতি বিবেচনা করুন। সেই সময় কেউ যদি ২ লক্ষ টাকার বেশি রোজগার করতেন তাহলে তাঁকে কর দিতে হত। বিজেপি সরকার এর আগে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়কর ছাড়ের সুযোগ দেয়। এবারের বাজেটে তা বৃদ্ধি করে ৭ লক্ষ টাকা করা হয়েছে।
ইউপিএ সরকার মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের মানুষের যে পরিমাণ উপার্জিত অর্থের ওপর ২০ শতাংশ কর ধার্য করেছিল আজ উপার্জিত সেই অর্থের ওপর কোনও কর দিতে হবে না। যেসব যুবক-যুবতী নতুন কাজ পেয়েছেন, যাঁদের মাসিক আয় ৬০ থেকে ৬৫ হাজার টাকা, তাঁরা এখন আরও বেশি করে বিনিয়োগ করতে পারবেন। সরকার দরিদ্র এবং মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের মানুষের স্বার্থ বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে।
বন্ধুগণ,
এবারের বাজেটের বিষয়ে আমি আশাবাদী। এই বাজেট ‘সবকা বিকাশ’ থেকে ‘সবকা প্রয়াস’-এর বাজেট। এর মাধ্যমে প্রত্যেক পরিবার লাভবান হবে। উন্নত ভারত গড়তে সকলে উৎসাহিত হবেন। আরও একবার মুম্বাই সহ মহারাষ্ট্রের প্রত্যেকটি মানুষকে এই বাজেট এবং নতুন ট্রেনের জন্য আমি আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। আপনাদের সকলকে আবারও শুভেচ্ছা জানাই। ধন্যবাদ।
প্রধানমন্ত্রীর মূল ভাষণটি ছিল হিন্দিতে