এই পাইপলাইন কেরল ও কর্ণাটকের মানুষের জীবনযাপনে মানোন্নয়ন ঘটাবে : প্রধানমন্ত্রী
নীল অর্থনীতি আত্মনির্ভর ভারতের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হয়ে উঠতে চলেছে : প্রধানমন্ত্রী

নমস্কার!

কেরলের রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খানজি, কর্ণাটকের রাজ্যপাল বজুভাই বালাজি, কেরলের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী পিনারাই বিজয়নজি, কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পাজি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আমার সহযোগী শ্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানজি, শ্রী প্রহ্লাদ যোশীজি, শ্রী ভি মুরলীধরনজি, উপস্থিত সমস্ত সাংসদ, বিধায়ক এবং আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা,

৪৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ কোচি-ম্যাঙ্গালুরু প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপলাইন জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করা আমার জন্য অত্যন্ত সম্মানের বিষয়। এটি ভারতের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন বিশেষ করে, কেরল এবং কর্ণাটক রাজ্যের অধিবাসীদের জন্য। এই দুটি রাজ্য এই প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপলাইনের মাধ্যমে যুক্ত হয়েছে। আমি এই রাজ্য দুটির জনগণকে অনেক অনেক অভিনন্দন জানাই। যাঁরা এই পরিবেশ-বান্ধব শক্তি পরিকাঠামো গড়ে তোলার কাজটিকে বাস্তবায়িত করেছেন, সংশ্লিষ্ট সকলকে আমি অভিনন্দন জানাই। আমি নিশ্চিত যে এই পাইপলাইন এই দুটি রাজ্যের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

বন্ধুগণ,

কোচি-ম্যাঙ্গালুরু পাইপলাইন এটাও প্রমাণ করে যে উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়ে সবাই মিলে কাজ করলে কোনও লক্ষ্য পূরণই অসম্ভব নয়। এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত সকলেই জানেন যে ইঞ্জিনিয়ারিং-এর দিক থেকে এটি সম্পূর্ণ করা কতটা কঠিন ছিল। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে অন্যান্য সমস্যাও ছিল। কিন্তু আমাদের শ্রমিক, ইঞ্জিনিয়ার, কৃষক এবং সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারদ্বয়ের সহযোগিতায় এই পাইপলাইন সম্পূর্ণ হয়েছে। আমরা তো একে শুধু একটি পাইপলাইনই বলছি, কিন্তু উভয় রাজ্যের উন্নয়নকে গতি দিতে এটি খুব বড় ভূমিকা পালন করতে চলেছে। আজ দেশ গ্যাস-ভিত্তিক অর্থনীতিতে এত জোর কেন দিচ্ছে? কেন 'এক জাতি এক গ্যাস গ্রিড' গড়ে তুলতে আমরা এত দ্রুতগতিতে কাজ করছি? কেন আত্মনির্ভর ভারতের জন্য গ্যাস-ভিত্তিক অর্থনীতির দ্রুত সম্প্রসারণ এত জরুরি? এইসব কিছু শুধু এই একটি পাইপলাইনের উপকার দিয়েই আপনারা বুঝতে পারবেন।

প্রথমত, এই পাইপলাইন উভয় রাজ্যের লক্ষ লক্ষ মানুষের 'ইজ অফ লিভিং'কে উন্নত করবে। দ্বিতীয়ত, এই পাইপলাইন উভয় রাজ্যের গরীব, মধ্যবিত্ত এবং শিল্পপতিদের খরচ বাঁচাবে। তৃতীয়ত, এই পাইপলাইন অনেক শহরে সিটি গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেমের একটি মাধ্যম হয়ে উঠবে। চতুর্থত, এই পাইপলাইন অনেক শহরে সিএনজি-ভিত্তিক পরিবহণ ব্যবস্থাকে গড়ে তোলার ভিত্তি হয়ে উঠবে। পঞ্চমত, এই পাইপলাইন ম্যাঙ্গালোর কেমিকেল অ্যান্ড ফার্টিলাইজার প্ল্যান্টকে জ্বালানি সরবরাহ করবে। অনেক কম খরচে সার উৎপাদনে সাহায্য করবে। কৃষকদের উপকার হবে। ষষ্ঠত, এই পাইপলাইন ম্যাঙ্গালোর রিফাইনারি অ্যান্ড পেট্রোকেমিকেলকে পরিবেশ-বান্ধব জ্বালানি সরবরাহ করবে। সপ্তমত, এই পাইপলাইন উভয় রাজ্যে পরিবেশ দূষণ হ্রাস করতে বড় ভূমিকা পালন করবে। অষ্টমত, পরিবেশ দূষণ হ্রাস পাওয়ার প্রত্যক্ষ প্রভাব পরিবেশকে নির্মল করবে। যতটা কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ কমবে, তা পেতে লক্ষ লক্ষ গাছ লাগাতে হত।

বন্ধুগণ,

নবম লাভ হচ্ছে, পরিবেশ নির্মল হওয়ার ফলে জনগণের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। অসুখ-বিসুখ কম হলে চিকিৎসার খরচ কমবে। দশম লাভ হবে, বাতাস নির্মল হবে। শহরে গ্যাস-ভিত্তিক ব্যবস্থা থাকলে বেশি পর্যটক আসবে। ফলে পর্যটন শিল্পও উন্নত হবে। এই পাইপলাইনের আরও দুটি লাভ আছে যা নিয়ে আলোচনা করা অত্যন্ত জরুরি। এই পাইপলাইন নির্মাণের সময় ১২ লক্ষ কর্মদিবস সৃষ্টি হয়েছে। এই পাইপলাইন শুরু হওয়ার পরও কর্মসংস্থান এবং স্বরোজগারের একটা নতুন ব্যবস্থা কেরল এবং কর্ণাটকে দ্রুতগতিতে বিকশিত হবে। সারশিল্প, পেট্রো-কেমিকেল শিল্প, বিদ্যুৎ শিল্প – প্রত্যেক শিল্প এর দ্বারা লাভবান হবে। কর্মসংস্থানের সুযোগ গড়ে উঠবে।

বন্ধুগণ,

এই পাইপলাইনের আরেকটি বড় লাভ সমস্ত দেশকে উপকৃত করবে। যখন এই পাইপলাইন পূর্ণ ক্ষমতা নিয়ে কাজ করতে শুরু করবে, তখন দেশের হাজার হাজার কোটি টাকার বিদেশি মুদ্রা সাশ্রয় হবে। ভারত সিওপি-২১-এর লক্ষ্য নিয়ে যে গুরুত্ব সহকারে কাজ করছে, এই প্রচেষ্টা সেক্ষেত্রেও সহায়ক হবে।

বন্ধুগণ,

সারা পৃথিবীর বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য হল, একবিংশ শতাব্দীতে যে দেশ অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং পরিবেশ-বান্ধব শক্তি উৎপাদনকে সবচাইতে বেশি গুরুত্ব দেবে, দ্রুতগতিতে কাজ করবে, তারা দ্রুতগতিতে নতুন উচ্চতায়ও পৌঁছে যাবে। আজ আপনারা যেদিক দিয়েই দেখুন না কেন, মহাসড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা, রেলওয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা, মেট্রো যোগাযোগ, আকাশপথে যোগাযোগ, জলপথে যোগাযোগ, ডিজিটাল যোগাযোগ এবং গ্যাস যোগাযোগ। ভারতে যত কাজ এখন হচ্ছে একসঙ্গে সকল ক্ষেত্রে এত কাজ আগে কখনও হয়নি। একজন ভারতীয় রূপে আমাদের সকলের সৌভাগ্য যে আমরা এই কাজগুলি নিজেদের চোখের সামনে একসঙ্গে হতে দেখছি। আমরা সবাই এই উন্নয়নের নতুন আন্দোলনে অংশগ্রহণ করতে পারছি।

ভাই ও বোনেরা,

বিগত শতাব্দীতে ভারত যে গতিতে চলেছে, তার নিজস্ব কারণ ছিল। আমি এই নিয়ে বিস্তারিত বলতে চাই না। কিন্তু এটা ঠিক যে আজকের যুব ভারত সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ার জন্য অধীর ভারত, আর ধীরে চলতে পারে না। সেজন্যই বিগত বছরগুলিতে দেশ গতি বাড়িয়েছে, পরিমাণ বাড়িয়েছে, তার সঙ্গে সুযোগও অনেক বাড়িয়েছে।

বন্ধুগণ,

ভারতের নতুন প্রজন্মের একটা খুব ভালো গুণ হল, তাঁরা সবকিছুকে তথ্যের ভিত্তিতে যাচাই করেন। আর তার সাফল্য ও বিফলতাকে তুলনামূলকভাবে বিশ্লেষণ করেন। আর প্রত্যেক বিষয়কে তর্ক এবং তথ্যের ভিত্তিতে স্বীকার করেন। ভারতে গ্যাস-ভিত্তিক অর্থনীতি নিয়ে এখন যে কাজ চলছে, তা নিয়েও অনেক তর্ক এবং তথ্য রয়েছে যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বন্ধুগণ,

আমাদের দেশে প্রথম আন্তঃরাজ্য প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপলাইন ১৯৮৭ সালে চালু হয়েছিল। এরপর ২০১৪ সাল পর্যন্ত ২৭ বছরে ভারতে ১৫ হাজার কিলোমিটার প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপলাইন চালু হয়েছে। আজ সারা দেশে পূর্ব-পশ্চিম-উত্তর-দক্ষিণ মিলিয়ে ১৬ হাজার কিলোমিটার থেকেও বেশি নতুন গ্যাস পাইপলাইন সংযোগের কাজ চলছে। এই কাজ আগামী ৪-৬ বছরের মধ্যে সম্পূর্ণ হবে। আপনারা কল্পনা করতে পারেন, যে কাজ ২৭ বছরে সম্পূর্ণ হয়েছে, আমরা তার থেকে বেশি কাজ তার অর্ধেক সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করার জন্য নির্ধারিত লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে চলেছি।

 

 

বন্ধুগণ,

এভাবেই আরেকটি উদাহরণ দিতে পারি সিএনজি স্টেশনের। আমাদের দেশে প্রথম সিএনজি স্টেশন শুরু হয়েছিল ১৯৯২-এর কাছাকাছি সময়ে। ২০১৪ সালের মধ্যে ২২ বছরে আমাদের দেশে সিএনজি স্টেশনের সংখ্যা ৯০০-র বেশি ছিল না। কিন্তু বিগত ছয় বছরে ১,৫০০-রও বেশি নতুন সিএনজি স্টেশন চালু হয়েছে। এখন সরকার এই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে যাতে আমরা দেশে সিএনজি স্টেশনের সংখ্যা ১০ হাজার পর্যন্ত পৌঁছে দিতে পারি। এখন এই যে পাইপলাইনটি চালু হল, এটি কেরল এবং কর্ণাটকের অনেক শহরে প্রায় ৭০০ সিএনজি স্টেশন খুলতে সহায়ক হবে।

বন্ধুগণ,

আরেকটি মজাদার পরিসংখ্যান হল পিএনজি সংযোগ নিয়ে, যেটির মাধ্যমে আপনাদের রান্নাঘরে সরাসরি পাইপের মাধ্যমে গ্যাস পৌঁছে দেওয়া হয়। ২০১৪ সাল পর্যন্ত আমাদের দেশে মোট পিএনজি সংযোগ ছিল ২৫ লক্ষ। আজ দেশে ৭২ লক্ষেরও বেশি বাড়ির রান্নাঘরে পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাস পৌঁছে যাচ্ছে। কোচি-ম্যাঙ্গালুরু পাইপলাইনের মাধ্যমে আরও ২১ লক্ষ নতুন মানুষের রান্নাঘরে এই পরিষেবা চালু হয়ে যাবে।

ভাই ও বোনেরা,

দীর্ঘ সময় ধরে ভারতে এলপিজি-র কভারেজ কিরকম ছিল এটা আমরা সবাই জানি। ২০১৪ পর্যন্ত সারা দেশে ১৪ কোটি এলপিজি সংযোগ ছিল। আর বিগত ছয় বছরে আরও ১৪ কোটি এলপিজি সংযোগ মানুষের রান্নাঘরে পৌঁছে গেছে। উজ্জ্বলা যোজনার মতো প্রকল্পের মাধ্যমে দেশে ৮ কোটিরও বেশি গরীব পরিবারে রান্নার গ্যাস সংযোগ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, এলপিজি-সংশ্লিষ্ট পরিকাঠামো সারা দেশে শক্তিশালী হয়েছে। বন্ধুগণ, এটা করোনার সঙ্কটকালেও দেশে রান্নার গ্যাসের কোনও সমস্যা না হওয়ার একটা বড় কারণ । দরিদ্র থেকে দরিদ্রতম মানুষের রান্নাঘরেও ওই কঠিন সময়ে প্রায় ১২ কোটি গ্যাস সিলিন্ডার বিনামূল্যে পৌঁছে দিতে পেরেছি।

বন্ধুগণ,

সরকারের এসব প্রচেষ্টা এত দ্রুতগতিতে করা কাজগুলির আরেকটি প্রভাব নিয়ে খুব একটা আলাপ-আলোচনা হয়নি। মনে করুন আমাদের দেশে আগে কেরোসিনের জন্য কত বড় বড় লাইনে দাঁড়াতে হত। রাজ্য সরকারগুলি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে চিঠি লিখত কেরোসিনের কোটা বাড়ানোর জন্য। কেরোসিনের সরবরাহ বৃদ্ধির জন্য কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির মধ্যে সব সময় দ্বৈরথ লেগে থাকত। আজ যখন প্রত্যেকের রান্নাঘরে সহজেই গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে, তখন এই কেরোসিনের চাহিদা অনেক হ্রাস পেয়েছে। আজ দেশের অনেক রাজ্য এবং অনেক কেন্দ্রশাসিত প্রদেশ নিজেদের কেরোসিনমুক্ত ঘোষণা করে দিয়েছে।

বন্ধুগণ,

আমাদের সরকার সংহত শক্তি পরিকল্পনার দৃষ্টিভঙ্গিতে বিশ্বাস করে। আমাদের শক্তি বিষয়ক কর্মসূচি হল সার্বিক অন্তর্ভুক্তিকরণের কর্মসূচি। ২০১৪ সাল থেকে আমরা দেশের তৈল এবং গ্যাস ক্ষেত্রে অনেক সংস্কারসাধন করেছি। এই সংস্কারগুলি নতুন নতুন কূপ অনুসন্ধান এবং উৎপাদন, প্রাকৃতিক গ্যাস, বাজারজাতকরণ এবং বিতরণ সংক্রান্ত সংস্কার। আমরা 'এক জাতি এক গ্যাস গ্রিড' গড়ে তুলতে চাই। আমরা গ্যাস-ভিত্তিক অর্থনীতি গড়ে তুলতে চাই। প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার অনেক পরিবেশ-বান্ধব উপকারসাধন করে। সরকার ভারতীয় শক্তিক্ষেত্রে প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার ৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার জন্য নীতিগত উদ্যোগ নিয়েছে। এই দশকেই তেল এবং গ্যাসক্ষেত্রে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে। গেইল-এর উদ্যোগে এই কোচি-ম্যাঙ্গালুরু প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপলাইন উৎসর্গ করা আমাদের এই 'এক জাতি এক গ্যাস গ্রিড'-এর লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। উন্নত ভবিষ্যতের জন্য নির্মল শক্তি একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এই পাইপলাইন আমাদের নির্মল শক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে অনেক সাহায্য করবে। আমাদের সরকার অন্যান্য ক্ষেত্রেও কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, স্বচ্ছ ভারত অভিযান, এলইডি বাল্বের ব্যবহার বৃদ্ধি এবং বিদ্যুৎচালিত যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি।

বন্ধুগণ,

আজ চেষ্টা করা হচ্ছে দেশের ভবিষ্যতের প্রয়োজনগুলি, ভবিষ্যতের শক্তির প্রয়োজনসাধনের জন্য আজকেই প্রস্তুতি নেওয়া। সেজন্য একদিকে প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলনে জোর দেওয়া হচ্ছে, অন্যদিকে দেশ নিজের অন্যান্য শক্তি উৎসগুলিকেও গুরুত্ব দিচ্ছে। সম্প্রতি গুজরাটে বিশ্বের সর্ববৃহৎ পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদনকেন্দ্রের কাজ শুরু হয়েছে। এভাবে আজ দেশের মধ্যেই জৈব জ্বালানি নিয়েও বড় স্তরে কাজ চলছে। আখ এবং অন্যান্য কৃষিজাত পণ্য থেকে ইথানল উৎপাদনের কাজ গুণিতক হারে বাড়ানো হচ্ছে। আগামী ১০ বছরে দেশে পেট্রোলের সঙ্গে ২০ শতাংশ ইথানল মেশানোর লক্ষ্য রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, বিদ্যুৎচালিত যানবাহনের পরিকাঠামোকে উন্নত করার ক্ষেত্রেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। প্রত্যেক দেশবাসী যাতে পর্যাপ্ত, সুলভ, দূষণমুক্ত জ্বালানি পান, বিদ্যুৎ পান, তা সুনিশ্চিত করতে আমাদের সরকার সম্পূর্ণ দায়বদ্ধতা নিয়ে কাজ করছে।

ভাই ও বোনেরা,

দেশের ভারসাম্যযুক্ত দ্রুত উন্নয়নের ভাবনা আমাদের তটবর্তী এলাকাগুলির উন্নয়নের ক্ষেত্রে স্পষ্টভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে। কেরল, কর্ণাটক কিংবা দক্ষিণ ভারতের প্রত্যেক রাজ্য, যেগুলি সমুদ্রতটে রয়েছে, সেই রাজ্যগুলিতে নীল অর্থনীতি উন্নয়নের জন্য একটি সংহত পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। নীল অর্থনীতি আত্মনির্ভর ভারতের একটি বড় উৎস হয়ে উঠতে চলছে, আমাদের বন্দরগুলি, আমাদের তটবর্তী সড়কপথগুলিকে অন্যান্য যাতায়াতের মাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে। আমরা বহুমুখী যোগাযোগ ব্যবস্থাকে বিশেষ অগ্রাধিকার দিচ্ছি। আমাদের তটবর্তী এলাকাগুলি 'ইজ অফ লিভিং'-এরও মডেল হয়ে উঠছে। আমরা 'ইজ অফ ডুয়িং অর বিজনেস'কে উন্নত করার লক্ষ্য নিয়েও কাজ করে চলেছি।

ভাই ও বোনেরা,

সমুদ্র তটবর্তী অঞ্চলগুলির একটা বড় অংশ আমাদের কৃষক ভাই-বোনেরা এবং মৎস্যজীবীরা শুধুই সমুদ্রসম্পদের ওপর নির্ভরশীল নন, তাঁরা এগুলির বড় সংরক্ষকও। সেজন্য গোটা তটবর্তী বাস্তুব্যবস্থার সুরক্ষা এবং সমৃদ্ধি অত্যন্ত জরুরি। বিগত বছরগুলিতে এক্ষেত্রে অনেক সার্থক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। মৎস্যজীবী ভাই-বোনেদের গভীর সমুদ্রে মৎস্য শিকারের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান, মৎস্যচাষের জন্য একটি স্বতন্ত্র বিভাগ সৃষ্টি, মৎস্য বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত বন্ধুদের সুলভে ঋণের ব্যবস্থার জন্য কিষাণ ক্রেডিট কার্ড প্রদান। এগুলির ফলে সাধারণ থেকে সাধারণতম মৎস্যজীবী ভাই-বোনেরাও উপকৃত হয়েছেন। কয়েক মাস আগে ২০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে মৎস্য সম্পদা যোজনা চালু করা হয়েছে। এর দ্বারা কেরল এবং কর্ণাটকের লক্ষ লক্ষ মৎস্যজীবী বন্ধুরাও প্রত্যক্ষভাবে লাভবান হবেন। আজ মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রেও আমরা দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছি। ভারতকে একটি উৎকৃষ্ট প্রক্রিয়াজাত সামুদ্রিক খাদ্যপণ্য হাব করে গড়ে তুলতে দ্রুত আমরা সমস্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছি। বিশ্বে সি-উইড বা সমুদ্র গুটিকার চাহিদা বাড়ছে। এই চাহিদা পূরণে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। আমাদের কৃষকদের সমুদ্র গুটিকা চাষে যতটা উৎসাহ জোগাতে পারব, তত দ্রুতগতিতে আমরা এক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে পারব।

আমরা সবাই মিলেমিশে, ঐক্যবদ্ধভাবে, সঙ্কল্প নিয়ে কাজ করলে আমরা প্রত্যেক রাষ্ট্রীয় লক্ষ্য দ্রুতগতিতে বাস্তবায়িত করতে পারব। আরেকবার কোচি-ম্যাঙ্গালুরু প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপলাইনের জন্য কেরল এবং কর্ণাটকের সমস্ত নাগরিক ভাই-বোনেদের, এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত সমস্ত সম্মানিত ব্যক্তিদের অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই, অনেক অনেক অভিনন্দন জানাই।

ধন্যবাদ!

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII

Media Coverage

PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
সোশ্যাল মিডিয়া কর্নার 21 নভেম্বর 2024
November 21, 2024

PM Modi's International Accolades: A Reflection of India's Growing Influence on the World Stage