Ram belongs to everyone; Ram is within everyone: PM Modi in Ayodhya
There were efforts to eradicate Bhagwaan Ram’s existence, but He still lives in our hearts, he is the basis of our culture: PM
A grand Ram Temple will become a symbol of our heritage, our unwavering faith: PM Modi

সিয়াবর রামচন্দ্র কী জয়!

জয় সিয়ারাম

জয় সিয়ারাম

 

আজকের এই জয়জয়কার শুধু সিয়ারামের নগরীতেই শোনা যাচ্ছে না, এর প্রতিধ্বনি গোটা বিশ্বে গুঞ্জরিত হচ্ছে।

 

সমস্ত দেশবাসীকে, আর সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা কোটি কোটি ভারত ভক্তদের, রাম ভক্তদের, আজকের এই পবিত্র অনুষ্ঠান উপলক্ষে কোটি কোটি শুভেচ্ছা।

 

মঞ্চে বিরাজমান উত্তরপ্রদেশের রাজ্যপাল শ্রীমতী আনন্দিবেন প্যাটেলজি, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথজি, পুজনীয় নিত্যগোপাল দাসজি মহারাজ, আর আমাদের সকলের শ্রদ্ধেয় শ্রী মোহন ভাগবতজি,

 

এটা আমার সৌভাগ্য যে শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্ট আমাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হওয়ার সুযোগ দিয়েছে। আমি এর জন্য অন্তর থেকে শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টকে কৃতজ্ঞতা জানাই।

রাম কাজু কীন্‌হে বিনু মোহি কহাঁ বিশ্রাম।।

 

ভারত, আজ, ভগবান ভাস্করের সান্নিধ্যে সরযুর কিনারায় একটি সোনালী অধ্যায় রচনা করছে।

 

কন্যাকুমারী থেকে ক্ষিরভবানী পর্যন্ত, কোটেশ্বর থেকে কামাক্ষ্যা পর্যন্ত, জগন্নাথ থেকে কেদারনাথ পর্যন্ত, সোমনাথ থেকে কাশী বিশ্বনাথ পর্যন্ত, সম্মেদ শিখর থেকে শ্রাবণবেলোগোলা পর্যন্ত, বুদ্ধ গয়া থেকে সারনাথ পর্যন্ত, অমৃতসর থেকে পাটনা সাহিব পর্যন্ত, আন্দামান থেকে আজমেঢ় পর্যন্ত, লাক্ষাদ্বীপ থেকে লেহ পর্যন্ত আজ গোটা ভারত রামময়। গোটা ভারত রোমাঞ্চিত। প্রত্যেক মন আলোকিত। আজ গোটা ভারত ভাবুক হয়ে উঠেছে। কয়েক শতাব্দীর অপেক্ষা আজ সমাপ্ত হচ্ছে।

 

কোটি কোটি মানুষ আজও এটা বিশ্বাস করতে পারছেন না, যে তাঁরা নিজের জীবৎকালে এই পবিত্র দিন দেখতে পাচ্ছেন।

বন্ধুগণ,

 

বছরের পর বছর ধরে কুড়েঘর এবং তাঁবুর নিচে বসবাসকারী আমাদের রামলালার জন্য এখন একটি অনিন্দ্যসুন্দর মন্দির গড়ে উঠবে। ভেঙে পড়া আর আবার উঠে দাঁড়ানো, শতাব্দীর পর শতাব্দীকাল ধরে এই ব্যতিক্রম থেকে রাম জন্মভূমি আজ মুক্ত হয়েছে। আমার সঙ্গে আরেকবার বলুন, জয় সিয়ারাম! জয় সিয়ারাম!

 

বন্ধুগণ,

 

আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় অনেক প্রজন্মের মানুষ নিজেদের সবকিছু সমর্পণ করে দিয়েছিলেন। দাসত্বের কালখণ্ডে এমন কোন সময় ছিল না, যখন স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন চলছিল না। দেশের কোন ভূখণ্ড এমন ছিল না যেখানে স্বাধীনতার জন্য কেউ বলিদান দেননি।

১৫ আগস্ট দিনটি সেই অসীম তপস্যার, লক্ষ লক্ষ বলিদানের প্রতীক, স্বাধীনতার সেই উদগ্রীব ইচ্ছা, সেই ভাবনার প্রতীক।

 

ঠিক তেমনভাবেই রাম মন্দিরের জন্য অনেক অনেক শতাব্দী ধরে, অনেক অনেক প্রজন্মের অখণ্ড, অবিরত, একনিষ্ঠ প্রচেষ্টা জারি ছিল। আজকের এই দিন সেই তপস্যা, ত্যাগ এবং সঙ্কল্পের প্রতীক।

 

রাম মন্দিরের জন্য আন্দোলনে অর্পণও ছিল তর্পণও ছিল, সংঘর্ষও ছিল সঙ্কল্পও ছিল। 

 

যাঁদের ত্যাগ, আত্মবলিদান ও সংঘর্ষের ফলে আজকের এই স্বপ্ন সাকার হচ্ছে, যাঁদের তপস্যা রাম মন্দিরের ভিতের মতো জুড়ে আছে, আমি সেইসব মানুষকে আজ প্রণাম জানাই। তাঁদের বন্দনা করি।

 

সম্পূর্ণ সৃষ্টির শক্তি, রাম জন্মভূমির পবিত্র আন্দোলনে যুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তিত্ব যাঁরা যেখানে আছেন, এই আয়োজনকে দেখছেন, তাঁরা এখন ভাব বিভোর। সবাইকে আশীর্বাদ দিচ্ছেন।

বন্ধুগণ,

 

রাম আমাদের মনের মধ্যে স্থাপিত। আমাদের ভেতরে প্রতি কোষে মিশে আছেন। কোন কাজ করতে হলে প্রেরণার জন্য আমরা ভগবান রামের দিকেই তাকাই। আপনারা ভগবান রামের অদ্ভূত শক্তি দেখুন! দালান ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে, অস্তিত্ব মিটিয়ে দেওয়ার অনেক চেষ্টা হয়েছে, কিন্তু রাম আজও আমাদের মনে বাস করেন, আমাদের সংস্কৃতির ভিত্তি।

 

শ্রীরাম ভারতের মর্যাদা, শ্রীরাম মর্যাদা পুরুষোত্তম। এই মর্যাদার আলো দিয়ে অযোধ্যায় রাম জন্মভূমিতে শ্রীরামের এই অনিন্দ্যসুন্দর মন্দিরের জন্য ভূমি পুজোও হল।

 

এখানে আসার আগে, আমি হনুমানগড়ী দর্শন করেছি। রামের সব কাজ হনুমানই তো করতেন। রামের আদর্শগুলিকে কলিযুগে রক্ষা করার দায়িত্বও তো হনুমানজির ওপরই ন্যস্ত রয়েছে। হনুমানজির আশীর্বাদেই শ্রীরাম মন্দির ভূমি পুজোর এই আয়োজন শুরু হয়েছে।

বন্ধুগণ,

 

শ্রীরামের মন্দির আমাদের সংস্কৃতির আধুনিক প্রতীক হয়ে উঠবে, আমাদের শাশ্বত আস্থার প্রতীক হয়ে উঠবে, আমাদের রাষ্ট্রীয় ভাবনার প্রতীক হয়ে উঠবে, আর এই মন্দির কোটি কোটি মানুষের সামগ্রিক সঙ্কল্প শক্তিরও প্রতীক হয়ে উঠবে। এই মন্দির আগামী প্রজন্মগুলির আস্থা, শ্রদ্ধা এবং সঙ্কল্পকে প্রেরণা যোগাতে থাকবে। এই মন্দির নির্মিত হওয়ার পর অযোধ্যার সৌন্দর্য্যই শুধু বৃদ্ধি পাবে না, এই অঞ্চলের সমগ্র অর্থনীতি বদলে যাবে। এই গোটা এলাকায় নতুন সুযোগ গড়ে উঠবে, সমস্ত ক্ষেত্রে সুযোগ বাড়বে।

 

ভাবুন,

 

সমগ্র বিশ্ব থেকে মানুষ এখানে আসবেন। সমগ্র বিশ্ব প্রভু রাম আর মাতা জানকীর দর্শন করতে আসবে। কত কিছু বদলে যাবে এখানে।

 

বন্ধুগণ,

 

রাম মন্দির নির্মাণের এই প্রক্রিয়া রাষ্ট্রকে ঐক্যবদ্ধ করার প্রচেষ্টা। এই মহোৎসব হল – বিশ্বাসকে বিদ্যমানের সঙ্গে যুক্ত করার, নরকে নারায়ণের সঙ্গে যুক্ত করার, জনগণকে আস্থার সঙ্গে যুক্ত করার, বর্তমানকে অতীতের সঙ্গে যুক্ত করা এবং স্বয়ংকে সংস্কারের সঙ্গে যুক্ত করার। আজকের এই ঐতিহাসিক মুহূর্ত যুগ যুগ ধরে দিক–দিগন্তে ভারতের কীর্তি পতাকা ওড়াতে থাকবে।

আজকের এই দিন কোটি কোটি রাম ভক্তের সঙ্কল্পের সত্যতার প্রমাণ। আজকের এই দিন সত্য, অহিংসা, আস্থা এবং বলিদানকে ন্যায়প্রিয় ভারতের এক অনুপম উপহার।

 

করোনার ফলে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সেখানে ভূমি পুজোর এই কর্মসূচি অনেক মর্যাদা রক্ষা করে করতে হচ্ছে। শ্রীরামের কাজে মর্যাদার যেমন উদাহরণ প্রস্তুত করা উচিৎ ছিল, দেশবাসী তেমনই উদাহরণ প্রস্তুত করেছেন।

 

এই মর্যাদার অনুভব আমরা তখনও করেছিলাম যখন মাননীয় সর্বোচ্চ আদালত তার ঐতিহাসিক রায় শুনিয়েছিল। আমরা তখনও দেখেছি কিভাবে সমস্ত দেশবাসী শান্তির সঙ্গে সমস্ত ভাবনাগুলি মাথায় রেখে নিজেদের সংযত রেখেছেন। আজও আমরা চারিদিকে সেই মর্যাদা রক্ষাই দেখতে পাচ্ছি।

 

বন্ধুগণ,

 

এই মন্দিরের সঙ্গে শুধু নতুন ইতিহাসই রচিত হচ্ছে না, ইতিহাস নিজেই পুনরাবৃত্ত হচ্ছে। এভাবে কাঠবিড়ালি থেকে শুরু করে বানর এবং কেওয়ট থেকে শুরু করে বনবাসী বন্ধুদের ভগবান রামের বিজয়ের মাধ্যম হওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে। যেভাবে ছোট ছোট গোয়ালারা ভগবান শ্রীকৃষ্ণের দ্বারা গোবর্ধন পর্বত ওঠানোর সময় বড় ভূমিকা পালন করেছেন, যেভাবে মাওলে, ছত্রপতি বীর শিবাজির স্বরাজ্য স্থাপনার নিমিত্ত হয়েছিলেন, যেভাবে গরীব পিছিয়ে পড়া মানুষরা বিদেশি আক্রমণকারীদের সঙ্গে লড়াইয়ে মহারাজা সুহেলদেবের সম্বল হয়ে উঠেছিলেন, যেভাবে অনগ্রসর, পিছিয়ে পড়া ও আদিবাসী সমাজের প্রত্যেক ব্যক্তি স্বাধীনতা সংগ্রামে গান্ধীজিকে সহযোগিতা করেছে, তেমনভাবেই আজ সারা দেশের মানুষের সহযোগিতায় রাম মন্দির নির্মাণের এই পূণ্যকর্ম শুরু হয়েছে।

 

যেভাবে পাথরের ওপর শ্রীরাম লিখে রাম সেতু বানানো হয়েছিল, তেমনই বাড়ি–বাড়ি থেকে, গ্রামের পর গ্রাম থেকে শ্রদ্ধার সঙ্গে পুজো দেওয়া শিলা এখানে প্রাণশক্তির উৎস হয়ে উঠেছে।

 

সারা দেশের ধামগুলি এবং মন্দিরগুলি থেকে নিয়ে আসা মাটি এবং নদীগুলির জল সেখানকার মানুষ, সেখানকার সংস্কৃতি এবং সেখানকার ভাবনা আজ এখানে এসে শক্তিতে রূপান্তরিত হয়েছে।

সত্যিই, ইয়ে ন ভুতো ন ভবিষ্যতি হ্যায়।।

 

ভারতের আস্থা, ভারতের জনগণের সামগ্রিকতার এই অমোঘ শক্তি, গোটা দুনিয়ার জন্য অধ্যয়নের বিষয়, গবেষণার বিষয়।

বন্ধুগণ,

 

শ্রীরামচন্দ্রের তেজ সূর্যের মতো, ক্ষমায় তিনি পৃথিবীর মতো, বুদ্ধিতে তিনি বৃহস্পতিসদৃশ আর যশে তিনি ইন্দ্রের মতো বলে মনে করা হয়। শ্রীরামের চরিত্র সবথেকে বেশি যে কেন্দ্রবিন্দুর চারিদিকে ঘোরে তা হল সত্যে অটল থাকা। সেজন্যই শ্রীরাম সম্পূর্ণ। সেজন্যই তিনি হাজার হাজার বছর ধরে ভারতের জন্য আলোকস্তম্ভ হয়ে রয়েছেন। শ্রীরামচন্দ্র সামাজিক সমতাকে তাঁর শাসনকালের ভিত্তিপ্রস্তর বানিয়েছিলেন। তিনি গুরু বশিষ্ট থেকে জ্ঞান, কেওয়ট থেকে প্রেম, শবরী থেকে মাতৃত্ব, হনুমানজি এবং বনবাসী বন্ধুদের থেকে সহযোগিতা, আর প্রজাদের থেকে বিশ্বাস পেয়েছেন। এমনকি তিনি একটি কাঠবিড়ালির মহত্বকেও হাসিমুখে স্বীকার করেছেন।

 

তাঁর অদ্ভূত ব্যক্তিত্ব, তাঁর বীরত্ব, তাঁর উদারতা, তাঁর সত্যনিষ্ঠা, তাঁর নির্ভীকতা, তাঁর ধৈর্য্য, তাঁর দৃঢ়তা, তাঁর দার্শনিক দৃষ্টি যুগ যুগ ধরে প্রেরণা জোগাবে। রাম প্রত্যেক প্রজাকে সমানভাবে ভালোবাসতেন। কিন্তু গরীব এবং দীন–দুঃখিদের প্রতি তাঁর বিশেষ কৃপা থাকত। সেজন্যই তো মাতা সীতা রামজিকে বলতেন – “দীনদয়াল বিরিদু সম্ভারী”, অর্থাৎ যিনি দীন, যিনি দুঃখি, তাঁর দুরবস্থা দূর করবেন শ্রীরাম।

বন্ধুগণ,

 

জীবনের এমন কোন বিষয় নেই যা নিয়েরাম রাম আমাদের প্রেরণা দেননি। ভারতের এমন কোন ভাবনা নেই যাতে প্রভু রামের প্রতিফলন থাকে না। ভারতের আস্থায় রাম আছে, ভারতের আদর্শে রাম আছে, ভারতের দিব্যতায় রাম আছে, ভারতের দর্শনে রাম আছে! হাজার হাজার বছর আগে বাল্মীকি রামায়ণে যে রাম প্রাচীন ভারতের পথ প্রদর্শন করেছেন, যে রাম মধ্যযুগে তুলসী, কবীর ও নানকের মাধ্যমে ভারতকে শক্তি যুগিয়েছেন, সেই রাম স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় বাপুজির ভজনে অহিংসা এবং সত্যাগ্রহের শক্তি হয়ে হাজির ছিলেন! তুলসীর রাম সগুণ রাম, তেমনই নানক আর কবীরের রাম নির্গুণ রাম! ভগবান বুদ্ধও রামের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, আর শতাব্দীর পর শতাব্দীকাল ধরে এই অযোধ্যা নগরী জৈন ধর্মেরও আস্থার কেন্দ্র ছিল।

 

রামের এই সর্বব্যাপকতা ভারতের বিবিধতার মধ্যে একতার জীবন চরিত্রস্বরূপ। তামিলে ‘কম্ব রামায়ণ’, তেলেগুতে ‘রঘুনাথ আর রঙ্গনাথ রামায়ণ’, ওড়িয়ায় ‘রুইপাদ–কাতেড়পদী রামায়ণ’, আর কন্নড়ে ‘কুমুদেন্দু রামায়ণ’ আছে। আপনারা কাশ্মীরে গেলে সেখানে রামাবতার চরিত পাবেন, মালয়ালামে ‘রাম চরিতম’ পাবেন, বাংলায় ‘কৃত্তিবাস রামায়ণ’ আছে, আর গুরু গোবিন্দ সিং তো নিজেই ‘গোবিন্দ রামায়ণ’ লিখেছিলেন। ভিন্ন ভিন্ন রামায়ণে ভিন্ন স্থানের রাম ভিন্ন ভিন্ন রূপে পাওয়া যাবে, কিন্তু রাম সব জায়গায় আছেন, রাম প্রত্যেকের।

 

সেজন্য,

 

রাম ভারতের বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের সূত্র।

 

বন্ধুগণ,

 

বিশ্বের কতো না দেশ রামের নাম বন্দনা করে। সেখানকার নাগরিক নিজেদের রামের সঙ্গে যুক্ত বলে মানেন। বিশ্বের সর্বাধিক মুসলমান জনসংখ্যা যে দেশে রয়েছে তা হল ইন্দোনেশিয়া। সেখানেও আমাদের দেশের মতো ‘কাকাবিন রামায়ণ’, ‘স্বর্ণদ্বীপ রামায়ণ’, ‘যোগেশ্বর রামায়ণ’–এর মতো বেশ কিছু অদ্ভূত রামায়ণ আছে। রাম আজও সে দেশে পুজনীয়। কম্বোডিয়াতে ‘রমকের রামায়ণ’ আছে। লাওসে ‘ফ্রা–লাক ফ্রা–লাম রামায়ণ’ আছে। মালয়েশিয়াতে ‘হিকায়ত সেরী রাম’ আর থাইল্যান্ডে ‘রামাকেন’ আছে। আপনারা ইরান এবং চিনেও রামের প্রসঙ্গে নানা রামকথার বিবরণ পাবেন। শ্রীলঙ্কায় রামায়ণের কথা ‘জানকী হরণ’ নামে শোনানো হয়। আর নেপালে তো রামের সঙ্গে আত্মীয় সম্পর্ক, মাতা জানকীর সঙ্গে যুক্ত।

 

এমনই বিশ্বের আর না জানি কতো দেশে, কতো প্রান্তে সেখানকার আস্থায় অথবা অতীতে রাম কোন না কোনও রূপে বিরাজমান রয়েছেন।

 

আজকের ভারতের বাইরে কয়েক ডজন এমন দেশ রয়েছে, যেখানকার ভাষায় রামকথা আজও প্রচলিত।

 

আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে আজ এই দেশগুলিতেও কোটি কোটি মানুষ রাম মন্দির নির্মাণের এই কাজ শুরু হতে দেখে অত্যন্ত আনন্দিত হচ্ছেন। আসলে রাম সবার, সবার মধ্যে রয়েছেন।

 

বন্ধুগণ,

 

আমার দৃঢ় বিশ্বাস, শ্রীরামের নামের মতোই অযোধ্যায় নির্মীয়মান এই অনিন্দ্যসুন্দর রাম মন্দির  ভারতীয় সংস্কৃতির দ্যোতক হয়ে উঠবে।

 

আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এখানে নির্মীয়মান রাম মন্দির অনন্তকাল ধরে সমগ্র মানবতাকে প্রেরণা যোগাবে।

 

সেজন্য,

 

আমাদের এটাও সুনিশ্চিত করতে হবে যে ভগবান শ্রীরামের বার্তা, রাম মন্দিরের বার্তা, আমাদের হাজার হাজার বছরের পরম্পরার বার্তা কিভাবে গোটা বিশ্বে নিরন্তর পৌঁছয়।

 

কিভাবে আমাদের জ্ঞান, আমাদের জীবন–দৃষ্টির সঙ্গে বিশ্ব পরিচিত হবে এটা আমাদের, আমাদের বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের দায়িত্ব। এই দায়িত্ব বুঝে আর দেশে ভগবান রামের চরণ যেখানে যেখানে পড়েছে, সেখানে রাম সার্কিট গড়ে তোলা হচ্ছে। ভগবান রামের নিজস্ব নগরী! অযোধ্যার মহিমা প্রভু রাম নিজেই বলেছেন, “জন্মভূমি মম পুরী সুহাবনী।।

 

এখানে রাম বলছেন – আমার জন্মভূমি অযোধ্যা অলৌকিক শোভার নগরী। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে আজ প্রভু রামের জন্মভূতির সৌন্দর্য, দিব্যতা বৃদ্ধির জন্য বেশি কিছু ঐতিহাসিক কাজ হচ্ছে।

 

বন্ধুগণ,

 

আমাদের এখানে শাস্ত্র বলা হয়েছে – “ন রাম সদৃশ রাজাপ্রথিব্যাম্‌ নীতিবান অভূত।।” অর্থাৎ, গোটা পৃথিবীতে শ্রীরামের মতো নীতিবান শাসক কখনও আসেননি। শ্রীরামের শিক্ষা হল – “নহিঁ দরিদ্র কোও দুঃখি ন দীনা।।” কেউই দুঃখি থাকবে না, গরীব থাকবে না। শ্রীরামের সামাজিক বার্তা হল – “প্রহৃষ্ঠ নর নারীকঃসমাজ উৎসব শোভিতঃ।।” নর–নারী সকলেই সমান রূপে সুখী হোক। শ্রীরামের নির্দেশ হল – “কচ্চিত্‌ তে দয়িতঃ সর্বেকৃষি গোরক্ষ জীবিনঃ।। ” কৃষক, পশুপালক সবাই সর্বদা আনন্দে থাকুক। শ্রীরামের আদেশ হল – “কশ্চিত্‌ বৃদ্ধান চ বালান চ বৈদ্যান মুখ্যান রাঘব। শ্রীভিঃ এতৈঃ বুভুষসে।।” বয়স্কদের, বাচ্চাদের এবং চিকিৎসকদের সর্বদা রক্ষা করা উচিৎ। শ্রীরামের আহ্বান হল – “জৌঁ সভীত আওয়া সরনাইরখিহঁত ত্রাহী প্রাণ কী নাই।।” যাঁরা শরণে আসে তাঁদের রক্ষা করা সকলের কর্তব্য। শ্রীরামের সূত্র হল – “জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপী গরীয়সী।।” নিজের মাতৃভূমি স্বর্গ থেকেও প্রিয় হয়।

 

আর ভাই ও বোনেরা,

 

এটাও শ্রীরামেরই নীতি – “ভয় বিনু হরি ন প্রীতি।।” সেজন্য আমাদের দেশ যত শক্তিশালী হবে, ততই স্থিতি ও শান্তি বজায় থাকবে। রামের এই নীতি আর রীতি শতাব্দীর পর শতাব্দীকাল ধরে ভারতকে পথ দেখিয়ে যাচ্ছে। রাষ্ট্রপিতা মহাত্মা গান্ধী এই সূত্র এবং এই মন্ত্রগুলির আলোতেই রাম রাজ্যের স্বপ্ন দেখেছিলেন।

 

রামের জীবন, তাঁর চরিত্রই গান্ধীজির রাম রাজ্যের পথ।

 

বন্ধুগণ,

 

স্বয়ং প্রভু শ্রীরাম বলেছেন, “দেশকাল অবসর অনুহারী। বলে বচন বিনীত বিচারী।।” অর্থাৎ, রাম সময়, স্থান এবং পরিস্থিতির হিসেবে কথা বলেন, ভাবেন এবং কাজ করেন। রাম আমাদের সময়ের সঙ্গে এগিয়ে যাওয়া শিখিয়েছেন, চলতে শিখিয়েছেন। রাম পরিবর্তনের পক্ষে, রাম আধুনিকতার পক্ষে। তাঁর এইসব প্রেরণার পাশে রামের আদর্শগুলি সঙ্গে নিয়ে ভারত আজ  এগিয়ে চলেছে!

 

বন্ধুগণ,

 

প্রভু শ্রীরাম আমাদের কর্তব্য পালনের শিক্ষা দিয়েছেন, আমাদের কর্তব্যগুলিকে কিভাবে পালন করব তার শিক্ষা দিয়েছেন! তিনি আমাদের বিরোধ থেকে বেরিয়ে এসে বোধ এবং গবেষণার পথ দেখিয়েছেন। আমাদের পারস্পরিক প্রেম এবং সৌভ্রাতৃত্বের বন্ধন দিয়ে রাম মন্দিরের এই শিলাগুলিকে জুড়তে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, যখনই মানবতা রামকে মেনেছে, উন্নয়ন হয়েছে। যখনই পথভ্রষ্ট হয়েছে, বিনাশের পথ খুলেছে।

 

আমাদের প্রত্যেকের ভাবনাকে মাথায় রাখতে হবে। আমাদের সকলকে সঙ্গে নিয়ে, সকলের বিশ্বাসকে সঙ্গে নিয়ে সকলের উন্নয়ন করতে হবে। আমাদের পরিশ্রম, আমাদের কল্পনা শক্তি দিয়ে একটি আত্মবিশ্বাসী এবং আত্মনির্ভর ভারত গড়ে তুলতে হবে।

 

বন্ধুগণ,

 

তামিল রামায়ণে শ্রীরাম বলেন, “কালম্‌ তায়োঈণ্ড ইনুম ইরুত্তি পোলাম্‌।।” অর্থাৎ, এখন আর দেরী করলে চলবে না। এখন আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আজ ভারতের জন্যও, আমাদের সকলের জন্যও ভগবান রামের এটাই বার্তা। আমার দৃঢ় বিশ্বাস আমরা সবাই এগিয়ে যাব, দেশ এগিয়ে যাবে।

 

ভগবান রামের এই মন্দির যুগ যুগ ধরে মানবতাকে প্রেরণা জোগাতে থাকবে, পথ দেখাতে থাকবে। এমনিতে করোনার ফলে যেরকম পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, প্রভু রামের মর্যাদার পথ আজ আরও বেশি প্রয়োজনীয়। বর্তমানের মর্যাদা হল, দুই গজের দূরত্ব – মাস্কের গুরুত্ব।

 

মর্যাদা পালন করে সমস্ত দেশবাসীকে যেন প্রভু রাম সুস্থ রাখেন, সুখী রাখেন, এটাই আমার প্রার্থনা।

 

সমস্ত দেশবাসীর ওপর মা সীতা এবং শ্রীরামের আশীর্বাদ বজায় থাকুক, এই শুভেচ্ছা জানিয়ে সকল দেশবাসীকে আরও একবার শুভচ্ছা জানাই।

 

বলো সিয়াপতি রামচন্দ্রকি … জয়!

 

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
Mutual fund industry on a high, asset surges Rs 17 trillion in 2024

Media Coverage

Mutual fund industry on a high, asset surges Rs 17 trillion in 2024
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
সোশ্যাল মিডিয়া কর্নার 25 ডিসেম্বর 2024
December 25, 2024

PM Modi’s Governance Reimagined Towards Viksit Bharat: From Digital to Healthcare