ইল্লারিগু! নমস্কারম!
সুত্তুরু সংস্থানবু শিক্ষণ, সামাজিক সেবে, অন্নদা – সোহক্কে, প্রখ্যাতি পড়েদিরুব, বিশ্ব প্রসিদ্ধ সংস্থায়া – গিদে, ই ক্ষেত্রক্কে, আগমি-সিরু-বুদক্কে, ননগে অতীব সন্তোষ বাগিদে।
পূজনীয় শ্রী শিবরাত্রি দেশিকেন্দ্র মহাস্বামীজী, শ্রী সিদ্ধেশ্বরা মহাস্বামীজী, শ্রী সিদ্ধলিঙ্গা মহাস্বামীজী, কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বাসবরাজজী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আমার সহকর্মী শ্রী প্রহ্লাদ যোশীজী, কর্ণাটক সরকারের মন্ত্রীরা, সাংসদ ও বিধায়কগণ, সুত্তুর মঠের সঙ্গে যুক্ত সকল ভক্তবৃন্দ, এবং আমাদের আশীর্বাদ করার জন্য যাঁরা বিপুল সংখ্যায় এসেছেন পূজনীয় সাধু-সন্তবৃন্দ।
আমি মাইসুরুর আরাধ্যা দেবী মাতা চামুন্ডেশ্বরীকে প্রণাম জানাই। তাঁর আশীর্বাদেই মাইসুরুর বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের উদ্বোধন করার সুযোগ আমার হয়েছে। আর এখন এই পবিত্র অনুষ্ঠানে সাধু-সন্তদের মধ্যে উপস্থিত হতে পেরে আমি নিজেকে ভাগ্যবান বলে মনে করছি। আমি মা চামুন্ডেশ্বরীর কাছে গিয়ে তাঁর আশীর্বাদ চাইবো। এই আধ্যাত্মিক অনুষ্ঠানে শ্রী সুত্তুর মঠের মহান ঐতিহ্যকে বজায় রাখার জন্য সমস্ত আচার্য এবং সাধু-সন্তদের প্রণাম জানাই। আমি আদি জগদগুরু শিবরাত্রী শিবযোগী মহাস্বামীজীকে প্রণাম জানাই। তিনি এই আধ্যাত্মিক বৃক্ষের বীজটি বপণ করেছিলেন। আজ সুত্তুর মঠের বর্তমান প্রধান পরমপূজ্য শ্রী শিবারাত্রী দেশিকেন্দ্র মহারাজজী এই মঠের মহান ঐতিহ্য ও আধ্যাত্মিকতাকে বিকশিত করছেন। শ্রী মন্ত্র মহাঋষিজী, শ্রী রাজেন্দ্র মহাস্বামীজীর পথ অনুসরণ করে একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন। বিদ্যালয়ের নতুন ভবনটি আজ উদ্বোধন করা হ’ল। এখানে সংস্কৃত ও ভারতীয় সংস্কৃতির বিষয়ে শিক্ষার সুযোগ পাওয়া যাবে।
বন্ধুগণ,
আজ শ্রী সিদ্ধেশ্বরা স্বামীজী রচিত নারদ ভক্তিসূত্র, শিবসূত্র এবং পতঞ্জলি যোগসূত্রের উপর টীকা সম্বলিত গ্রন্থটির উৎসর্গ করার সুযোগ আমার হয়েছে। ভারতের প্রাচীন যুগের মুনি-ঋষিদের ঐতিহ্যকে পূজ্য শ্রী সিদ্ধেশ্বর স্বামীজী বহন করে চলেছেন। এই ঐতিহ্য ‘শ্রুতি ঐতিহ্য’ হিসাবে লিপিবদ্ধ করা আছে। আন্তর্জাতিক যোগ দিবস উপলক্ষে ভক্তিযোগ ও জ্ঞানযোগকে পতঞ্জলি যোগসূত্র, নারদ ভক্তিসূত্র এবং শিবসূত্রের মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এর ফলে, শুধু ভারতই নয়, সমগ্র বিশ্ব উপকৃত হবে। আজ যখন আমি আপনাদের সকলের মধ্যে উপস্থিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছি, তখন কর্ণাটকের বিদ্বান মানুষদের কাছে আমার অনুরোধ গত চার-পাঁচ শতাব্দী ধরে সমাজ বিজ্ঞানের যেসব বিষয় লেখা হয়েছে, সেগুলি নিয়ে গবেষণা করুন । আপনারা দেখবেন, নারদসূত্র সবচেয়ে পুরনো। অর্থাৎ, সমাজ বিজ্ঞানের একটি আকর্ষণীয় উৎস আমরা খুঁজে পেয়েছি। সারা বিশ্বের এটি নিয়ে সমীক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি। যাঁদের পাশ্চাত্য সম্পর্কে ধারণা আছে, তাঁদের নারদ সূত্র অবশ্যই পড়া উচিত। কারণ, সামাজিক ব্যবস্থাপনা এবং মানবিক মূল্যবোধ সম্পর্কে এখান থেকে ধারনা পাওয়া যায়।
বন্ধুগণ,
আমাদের লিপিগুলিতে যা বর্ণিত আছে, তা অত্যন্ত পবিত্র। লিপি থেকে প্রাপ্ত জ্ঞানের কোনও বিকল্প নেই। আমাদের মণীষীরা জ্ঞান ও বিজ্ঞানের সাহায্যে যে সচেতনতা দেশে গড়ে তুলেছিলেন, তাঁর ভিত্তি গবেষণার মাধ্যমে শক্তিশালী হয়েছে। ভারতের সচেতনতা যখনই দুর্বল হয়েছে, আমাদের মুনি, ঋষি ও আচার্যরা দেশের আত্মাকে তখন আবারও জাগ্রত করেছিলেন। পরাধীনতার সময়কালে উত্তরে কাশী থেকে দক্ষিণে নাঞ্জানগুড় পর্যন্ত মন্দির ও মঠগুলি ভারতের জ্ঞানচর্চার ধারাকে বজায় রেখেছিল। মাইশুরুর শ্রী সুত্তুর মঠ, টুমাকুরুর শ্রী সিদ্দাগঙ্গা মঠ চিত্রদুর্গের শ্রী সিরিগেরে মঠ, শ্রী মুরুগারাজেন্দ্র মঠ, চিকমাগালুরের শ্রী রম্ভাপুরি মঠ, হুবলির শ্রী মুরুসাবিরা মঠ বা বিদরের বাসবকল্যাণ মঠ — সর্বত্র এই ধারা বজায় ছিল।
বন্ধুগণ,
সত্যের অস্তিত্ব সম্পদের উপর নির্ভর করে না বরং পরিষেবা ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে তা প্রতিফলিত হয়। এর সব থেকে ভাল উদাহরণ হল শ্রী সুত্তুর মঠ এবং জেএসএস মহাবিদ্যা পীঠ। যখন শ্রী শিবরাত্রী রাজেন্দ্র মহাস্বামীজী সামাজিক পরিষেবা দেবার জন্য বিনামূল্যে একটি ছাত্রাবাস তৈরি করেন, তখন তাঁর কাছে কোন অর্থ ছিল না। একটা ভাড়া বাড়িতে ছাত্রাবাস শুরু হ’ল, অথচ রেশন কেনার জন্যও হাতে টাকা নেই। আমি এরকমও শুনেছি, অর্থাভাবে যখন ছাত্রাবাসের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাওয়া যাচ্ছিল না, তখন স্বামীজী ‘লিঙ্গম কারডিগে’ বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছিলেন। বিশ্বাসের উপর ভর করেই তিনি এই পরিষেবা বজায় রেখেছেন। বহু দশক আগের সেই আত্মত্যাগের কথা আমরা জানতে পারছি। আজ জেএসএস মহাবিদ্যাপীঠ দেশে ও বিদেশে ৩০০-ও বেশি প্রতিষ্ঠান ও ২টি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করছে।
বন্ধুগণ,
কর্ণাটক ও দক্ষিণ ভারত যখন শিক্ষা, গুণমান এবং পরিষেবার প্রসঙ্গ আসে, তখন ভগবান বাসবেশ্বরার আশীর্বাদে এর ব্যাপ্তি প্রসারিত হয়। ভগবান বাসবেশ্বরাজী আমাদের সমাজকে যে শক্তি যুগিয়েছেন, গণতন্ত্র, শিক্ষা ও সাম্য সম্পর্কে যে ধারনা দিয়েছেন, তা ভারতের মূল ভিত্তি। লন্ডনে ভগবান বাসবেশ্বরার প্রতিকৃতি উন্মোচন করার সুযোগ আমার হয়েছিল - সেই সময় আমি বলেছিলাম, যদি আপনারা ভগবান বিশ্বেশ্বরের বাণী ও ম্যাগনা কার্টার মধ্যে তুলনা করেন, তা হলে দেখবেন, ম্যাগনা কার্টার বহু শতাব্দী আগে আমার দেশে সমাজ সম্পর্কে ধারনা একই ছিল।
বন্ধুগণ,
এই একই আদর্শ অনুসরণ করে আজ শ্রী সিদ্দাগঙ্গা মঠ ১৫০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছে। এইসব প্রতিষ্ঠান সমাজে শিক্ষা ও আধ্যাত্মিকতাকে প্রসারিত করছে। বর্তমানে সিদ্দাগঙ্গা মঠের বিদ্যালয়গুলিতে প্রায় ১০ হাজার ছাত্রছাত্রী বিদ্যাচর্চা করছে।
আমরা স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষ উপলক্ষে এখন অমৃতকাল উদযাপন করছি। এই সময়ে ‘সবকা প্রয়াস’ – এর উদ্যোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের মুনি-ঋষিরা সহযোগিতার জন্য ‘সবকা প্রয়াস’ – এর ধারনা দিয়েছিলেন। সেটিকে তাঁরা ‘সহনাবাবাতু সহনাভুনকতু’ বলে বর্ণনা করেছেন। বেদের মাধ্যমে ‘সহ বীর্যম করোবাবহাই’ সম্পর্কে ধারনা পাওয়া যায়। হাজার হাজার বছরের সেই আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা এখন বাস্তবে পরিণত হয়েছে।
বন্ধুগণ,
আজ শিক্ষার বিষয়ে ‘জাতীয় শিক্ষা নীতি’ আপনাদের সামনে উপস্থিত। আমাদের দেশে শিক্ষার একটি স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। আমাদের নতুন প্রজন্ম তা অনুসরণ করে এগিয়ে চলে। আজ স্থানীয় ভাষায় লেখাপড়া করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। কন্নড়, তামিল, তেলেগু ভাষার পাশাপাশি, সংস্কৃত ভাষায় লেখাপড়া করার জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে। মাইসুরু হ’ল সেই অঞ্চল, যেখান থেকে দেশের একমাত্র সংস্কৃত দৈনিক সংবাদপত্র ‘সুধর্ম’ প্রকাশিত হয়।
একইভাবে, আজ আয়ুর্বেদ ও যোগের বিষয়ে নতুন পরিচিতি সারা বিশ্বের সামনে উপস্থিত। স্বাস্থ্য ও শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য ভারতের উদ্যোগের কারণেই এটি সম্ভব হয়েছে। আমাদের দায়িত্ব হ’ল – এই ঐতিহ্য সম্পর্কে দেশের প্রতিটি নাগরিককে অবগত করা, যাতে কেউ এর থেকে বঞ্চিত না হন। এই লক্ষ্য পূরণে আমাদের আধ্যাত্মিক প্রতিষ্ঠানগুলির সহযোগিতা অত্যন্ত জরুরি। আসুন, আমরা ভারতমাতা এবং মা বসুন্ধরাকে রাসায়নিক পদার্থের ব্যবহার থেকে মুক্ত করি। এ বিষয়ে আজ আমরা যা করছি, তা মায়ের আশীর্বাদে আগামী শতাব্দীগুলিতে পালন করা হবে।
বন্ধুগণ,
এখানে নানা উদ্যোগে আধ্যাত্মিক সচেতনতা ও আশীর্বাদ যুক্ত হয়েছে, যার সঙ্গে সাধু-সন্তদের প্রয়াস অন্তর্ভুক্ত। আমি মনে করি, দেশের সমস্ত সাধু-সন্তের আশীর্বাদ আগের মতোই ভারত ভবিষ্যতেও পাবে। আজ আমরা একযোগে সকলে মিলে নতুন ভারত গড়ার স্বপ্ন পূরণ করব।
ইয়েল্লারিগু! নমস্কার!
প্রধানমন্ত্রী মূল ভাষণটি হিন্দিতে দিয়েছেন