উত্তরাখন্ডের রজতজয়ন্তী বছরের আজ সূচনা। অর্থাৎ উত্তরাখন্ড আজ ২৫ বছরে পদার্পণ করল। আমরা যদি সামনের দিকে তাকাই, তাহলে পরবর্তী ২৫ বছরের যাত্রা পথে আমরা সামিল হব। কারণ, ভবিষ্যতের এক উজ্জ্বল ও সমৃদ্ধ উত্তরাখন্ড গঠনে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। এর মধ্যে রয়েছে চমৎকার এক সমাপতন। কারণ, আমাদের অগ্রগতি ঘটছে ভারতের অমৃত কালে, যা হল জাতীয় অগ্রগতির লক্ষ্যে ২৫ বছরের এক গুরুত্বপূর্ণ সময়কাল। এ হল এমন এক মিলন মুখ, যেখানে উন্নত উত্তরাখন্ডের স্রোতোধারা এসে মিশে যাবে উন্নত ভারতের উৎসমুখের সঙ্গে। এই সময়কালে আমাদের মিলিত আশা-আকাঙ্খাই তার বাস্তবায়ন ঘটাবে। আমি একথা জেনে খুবই আনন্দিত যে উত্তরাখন্ডবাসী রাজ্যজুড়ে আয়োজন করছে নানা ধরনের কর্মসূচি। তাঁদের লক্ষ্য হল পরবর্তী ২৫ বছরের যাত্রাপথ। এই সমস্ত ঘটনার অর্থ হল উত্তরাখন্ডের গর্বের এক বিশেষ উদযাপন। উন্নত উত্তরাখন্ডের চিন্তা-ভাবনা অনুরণিত হবে এখানে বসবাসকারী প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে। এই উল্লেখযোগ্য মুহূর্তে এবং এই বিশেষ সংকল্পের অভিঘাতে আপনাদের সকলকেই জানাই আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা। মাত্র ২ বছর আগেই সাফল্যের সঙ্গে অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রবাসী উত্তরাখন্ড সম্মেলন। আমি স্থির প্রত্যয়ী যে, যে সমস্ত উত্তরাখন্ডবাসী অন্য স্থান থেকে এখানে এসে উপস্থিত হয়েছেন বা এখন থেকে অন্যত্র গমন করেছেন তাঁরা সকলেই রাজ্যের এই উন্নয়ন পরিক্রমায় এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন।
বন্ধুগণ,
উত্তরাখন্ডবাসী দীর্ঘদিন ধরে কঠিন সংগ্রাম চালিয়েছিলেন নিজেদের একটি পৃথক রাজ্যের দাবিতে। কারণ, তাঁরা চেয়েছিলেন তাঁদের আশা-আকাঙ্খার বাস্তবায়ন। তাঁদের সেই সংগ্রাম অবশেষে সফল হয়ে উঠল, যখন শ্রদ্ধেয় অটলজীর নেতৃত্বে পরিচালিত এনডিএ সরকার কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসীন হল। আমি খুবই খুশি হচ্ছি একথা ভেবে যে উত্তরাখন্ড গড়ে ওঠার পেছনে যে স্বপ্নের অনুপ্রেরণা একদা কাজ করেছিল, তাই আজ বাস্তবায়িত হয়েছে। রাজ্যবাসী সকলের অফুরন্ত স্নেহ-ভালবাসা বর্ষিত হয়েছে আমাদের সকলের ওপরই, এমনকি সার্বিক ভাবে বিজেপি-র ওপরও। বিনিময়ে উত্তরাখন্ডের নিরলস উন্নয়ন প্রচেষ্টায় বিজেপি আজ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। দেবভূমিকে সেবা করে যাওয়ার নিষ্ঠাই আমাদের এক চালিকাশক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বন্ধুগণ, কেদারনাথ মন্দিরের দরজা মাত্র কয়েকদিন আগেই বন্ধ হয়ে গেছে। কয়েক বছর আগে বাবা কেদারনাথ দর্শন এবং তাঁর পদপ্রান্তে উপবিষ্ট হয়ে আমি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ঘোষণা করেছিলাম যে বর্তমান দশকটি হয়ে উঠবে উত্তরাখন্ডেরই এক দশক। এই রাজ্যটি আমার সেই আস্থা ও বিশ্বাসের মর্যাদা রক্ষা করেছে। প্রমাণিত হয়েছে বিগত বছরগুলিতে আমার ঘোষণার বাস্তবায়ন প্রচেষ্টা। উত্তরাখন্ড আজ উন্নয়নের নতুন নতুন রেকর্ডই শুধু স্থাপন করছে না, একই সঙ্গে আবার তা ভেঙ্গে গিয়ে আরও এক নতুন রেকর্ড গড়ে তুলছে। নিরন্তর উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা সম্পর্কিত সূচক অনুযায়ী এই রাজ্যটি প্রথম স্থান অধিকার করেছে। বাণিজ্যিক কাজকর্ম সহজতর করে তোলার ক্ষেত্রে এই রাজ্য যে আজ সফল, একথাও আর নতুন করে স্বীকৃতির অবকাশ রাখে না। এমনকি, স্টার্টআপ Ranking-এর দিক থেকেও উত্তরাখন্ড হল এক এগিয়ে থাকা রাজ্য। গত দেড় বছরে উত্তরাখন্ডের উন্নয়নের হার বৃদ্ধি পেয়েছে ১.২৫ গুণেরও বেশি। অন্যদিকে, জিএসটি সংগ্রহের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে ১৪ শতাংশের মতো। ২০১৪ সালে উত্তরাখন্ডে মাথা পিছু আয় ও উপার্জনের মাত্রা ছিল বছরে ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা। কিন্তু আজ তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ২ লক্ষ ৬০ হাজার টাকায়। একই ভাবে রাজ্যের মোট জিডিপি ২০১৪ সালে ছিল ১.৫ লক্ষ কোটি টাকার মতো। আজ তা প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৩.৫ লক্ষ কোটি টাকায়। এই সমস্ত পরিসংখ্যানের মাধ্যমে একথারই প্রতিফলন ঘটেছে যে উত্তরাখন্ডের যুবসমাজের জন্য এখন সৃষ্টি হয়েছে নতুন নতুন অনেক সুযোগ সুবিধা এবং একই সঙ্গে ত্বরান্বিত হয়েছে রাজ্যের শিল্পোন্নয়ন প্রচেষ্টা।
সরকারি প্রচেষ্টার সুবাদে উত্তরাখন্ডবাসীর জীবনযাপন এখন হয়ে উঠেছে আগের থেকে অনেকটাই সহজ। বিশেষ করে আমাদের মা, বোন ও কন্যা সন্তানরা তা নিশ্চিত ভাবে উপভোগের সুযোগ পাচ্ছেন। ২০১৪ সালের আগে উত্তরাখন্ডের ৫ শতাংশেরও কম গৃহস্থ বাড়িতে নলবাহিত জলের সুযোগা পাওয়া যেত। কিন্তু আজ ৯৬ শতাংশেরও বেশি পরিবারে এই সুযোগ সম্প্রসারিত হয়েছে। সবকটি পরিবারকেই এর আওতায় নিয়ে আসার কাজ এখন চলেছে। আবার ২০১৪ সালের আগে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার আওতায় এই রাজ্যটিতে সড়ক নির্মাণ করা হয়েছিল মাত্র ৬ হাজার কিলোমিটার। কিন্তু বর্তমানে এই সড়কগুলির মোট দৈর্ঘ্য ২০ হাজার কিলোমিটার অতিক্রম করে গেছে। পার্বত্য অঞ্চলে সড়ক নির্মাণ প্রচেষ্টা যে কতটা সমস্যাবহুল তা আমি ভালো ভাবেই জানি। অথচ এর প্রয়োজনীয়তা কোন অংশেই কম নয়। হাজার হাজার শৌচাগার নির্মাণ, প্রতিটি পরিবারে বিদ্যুতের যোগান, উজ্জ্বলা কর্মসূচির আওতায় অসংখ্য পরিবারে গ্যাসের সংযোগ এবং আয়ুষ্মান কর্মসূচির আওতায় বিনা ব্যয়ে চিকিৎসার সুযোগ পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে আমাদের সরকার সকল বয়সী এবং যে কোনো পরিসর থেকে উঠে আসা মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে।
বন্ধুগণ,
উত্তরাখন্ডে ডবল ইঞ্জিন সরকারের বিভিন্ন সুফল আমরা স্পষ্টতঃই দেখতে পাচ্ছি। কেন্দ্রের কাছ থেকে উত্তরাখন্ড যে আর্থিক সহায়তা পেয়ে থাকে তার পরিমাণ এখন প্রায় দ্বিগুণ। এই ধরনের সরকারি ব্যবস্থাপনায় এইমসের একটি স্যাটেলাইট সেন্টারও স্থাপিত হয়েছে এই রাজ্যে। এই সময়কালে দেরাদুনে গড়ে উঠেছে দেশের প্রথম ড্রোনের ব্যবহার সম্পর্কিত একটি গবেষণা কেন্দ্র। উধম সিং নগরে একটি স্মার্ট শিল্পনগরী গড়ে তোলার পরিকল্পনাও হাতে নেওয়া হয়েছে। সারা উত্তরাখন্ড জুড়ে ২ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্পের কাজ রূপায়িত হচ্ছে। আবার সংযোগ ও যোগাযোগের প্রসারের লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রকল্পের অগ্রগতিও সম্ভব হয়েছে দ্রুততার সঙ্গে। ঋষিকেশ - কর্ণপ্রয়াগ রেল প্রকল্পটির কাজ আগামী ২০২৬ সালের মধ্যে সম্পূর্ণ হওয়ার কথা। অন্যদিকে, উত্তরাখন্ডের ১১টি রেল স্টেশনটিকে অমৃত স্টেশন রূপে গড়ে তোলা হচ্ছে। দেরাদুন - দিল্লি এক্সপ্রেসওয়ের কাজ সম্পূর্ণ হলে দুটি শহরের মধ্যে যাতায়াতের সময় আড়াই ঘন্টার মতো কমে আসবে। সংক্ষেপে বলতে গেলে উত্তরাখন্ডে এখন চলছে উন্নয়নের এক ব্যাপক কর্মকান্ড, যা দেবভূমির গৌরবকে বাড়িয়ে তুলবে অনেক গুণে। পার্বত্য অঞ্চল থেকে অন্যত্র কাজের খোঁজে চলে যাওয়া মানুষের সংখ্যাও হ্রাস পাবে উল্লেখযোগ্য ভাবে।
বন্ধুগণ,
উন্নয়নের কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঐতিহ্য সংরক্ষণেও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ আমাদের সরকার। কেদারনাথ ধামের আধ্যাত্মিক পুনর্গঠনের এক বিশাল কর্মকান্ড দেবভূমির সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধিকে সম্মানের সঙ্গে তুলে ধরছে। বদ্রীনাথ ধামেও দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে চলেছে উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড। মানসখন্ড মন্দিরমালা মিশনের প্রথম পর্যায়ে ১৬টি প্রাচীন মন্দিরকে আবার নতুন করে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। সকল রকম আবহাওয়ার উপযোগী সড়কপথ চারধাম যাত্রাকে এখন আগের থেকে আরও অনেক সহজ করে তুলেছে। পর্বতমালা প্রকল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন ধর্মীয় ও পর্যটন কেন্দ্রকে যুক্ত করা হচ্ছে রোপওয়ে ব্যবস্থায়। এই মুহূর্তে মানা গ্রাম সফরের কথা আমি স্মরণ করতে পারছি। সেখানকার সীমান্ত অঞ্চলে ভাইবোনেদের স্বতস্ফূর্ত স্নেহ আমি লক্ষ্য করেছিলাম। 'প্রাণবন্ত গ্রাম' কর্মসূচির কাজ শুরু হয়েছিল মানা থেকেই। সীমান্তবর্তী গ্রামগুলিকে আমাদের সরকার দেশের প্রথম গ্রাম বলে মনে করে। কোনো ভাবেই সেগুলিকে শেষ গ্রাম বলে চিহ্নিত করে না। উত্তরাখন্ডের প্রায় ৫০টি গ্রামকে আরও উন্নত করে তোলার উদ্যোগ আমরা গ্রহণ করেছি। আমাদের এই প্রচেষ্টা উত্তরাখন্ডের পর্যটন সম্পর্কিত সুযোগ-সুবিধার প্রসারে এক নতুন মাত্রা এনে দিয়েছে। পর্যটনের প্রসারের সাথে সাথে এই রাজ্যে যুব সমাজের কাছে উন্মুক্ত হচ্ছে কর্মসংস্থান সম্পর্কিত আরও বেশি সুযোগ সুবিধা। মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগেই জানানো হয়েছে যে এবছর উত্তরাখন্ড সফরে এসেছিলেন প্রায় ৬ কোটি পর্যটক ও পুণ্যার্থী। ২০১৪ সালের আগে চারধাম দর্শনে আসা পুণ্যার্থীদের রেকর্ড সংখ্যা ছিল ২৪ লক্ষ। কিন্তু গত বছর ৫৪ লক্ষেরও বেশি পুণ্যার্থী চারধাম সফর করেছেন। এর ফলে উপকৃত হয়েছেন অনেকেই, হোটেল ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে হোমস্টে মালিক এবং ট্যাক্সি চালক থেকে শুরু করে বস্ত্র ব্যবসায়ীরা। গত কয়েক বছরে ৫ হাজারেরও বেশি হোমস্টে নথিভুক্ত হয়েছে এই রাজ্যটিতে।
বন্ধুগণ,
আজকের উত্তরাখন্ড এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে এবং গৃহীত নীতির বাস্তবায়ন ঘটাচ্ছে যা সমগ্র জাতির কাছে এক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। পুঙ্খানুপুঙ্খ সমীক্ষার পর অভিন্ন দেওয়ানি বিধি অনুসরণ করা হচ্ছে উত্তরাখন্ডে। এই বিধিটিকে আমি ধর্ম নিরপেক্ষ দেওয়ানি বিধি বলে আমি মনে করি। সারা দেশেই এখন আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি এবং এর গুরুত্ব এখন স্বীকৃতি লাভ করেছে। রাজ্যের যুবসমাজের ভবিষ্যতের সুরক্ষায় প্রতারণা বিরোধী আইনও পাশ হয়ে গেছে উত্তরাখন্ড সরকারের উদ্যোগে। যে সমস্ত মাফিয়া প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত, তাদের বিরুদ্ধে গ্রহণ করা হয়েছে কঠোর ব্যবস্থা। সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার মধ্য দিয়ে এবং সময়ানুবর্তিতা মেনে পরিচালিত হচ্ছে নিয়োগ ব্যবস্থা। এই ক্ষেত্রগুলিতে উত্তরাখন্ডের সাফল্য অন্যান্য রাজ্যের কাছে একটি আদর্শ হয়ে থাকবে বলে আমি মনে করি।
বন্ধুগণ,
আজ ৯ নভেম্বর, এ হল এমন একটি তারিখ যার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে শুভ ৯ সংখ্যাটি, যা হল শক্তি বা ক্ষমতার প্রতীক। আজকের এই বিশেষ দিনটিতে আমি ৫টি আবেদন রাখবো আপনাদের কাছে। এর মধ্যে পাঁচটি উত্তরাখন্ডবাসীর জন্য এবং চারটি এই রাজ্য সফর করতে আসা পর্যটক ও পুণ্যার্থীদের প্রতি।
বন্ধুগণ,
গাড়োয়ালি, কুমায়নি এবং জানুসারির মতো যে সমস্ত ভাষা চালু রয়েছে উত্তরাখন্ডে তা কিন্তু অবিশ্বাস্য ভাবে সমৃদ্ধ। তাই সেগুলির সংরক্ষণ একান্ত জরুরী। উত্তরাখন্ডবাসীদের উদ্দেশে আমার প্রথম আবেদনটি হল এই সমস্ত ভাষায় আপনারা শিক্ষিত করে তুলুন ভবিষ্যৎ প্রজন্মগুলিকে। যাতে এই রাজ্যটির সাংস্কৃতিক পরিচিতি অক্ষুণ্ন থাকে। প্রকৃতি ও পরিবেশের প্রতি উত্তরাখন্ডের গভীর শ্রদ্ধার কথা আজ আর কারোরই অজানা নেই। এটি হল গৌরা দেবীর পীঠস্থান। এখানকার প্রতিটি নারী হলেন মা নন্দার স্বতস্ফূর্ত প্রকাশ। প্রকৃতিকে রক্ষা করা অবশ্য কর্তব্য। তাই আমার দ্বিতীয় আবেদনটি হল মায়ের 'নামে একটি বৃক্ষ' অভিযানকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। প্রত্যেক মায়ের নামে একটি করে বৃক্ষ চারা রোপণ। এই অভিযানটি তাৎপর্যলাভ করেছে সারা দেশজুড়ে। তাই এই অভিযানে উত্তরাখন্ডের সক্রিয় অংশগ্রহণ জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় আমাদের সাহায্য করবে। 'নাউল ধারা'র পূজার্চনার যে ঐতিহ্য চালু রয়েছে এই রাজ্যটিতে, তা অবশ্যই অক্ষুণ্ন রাখতে হবে। আপনাদের সকলের কাছে আমার তৃতীয় আবেদনটি হল আপনারা নদী এবং নাউলের সংরক্ষণে উদ্যোগী হন। জলের বিশুদ্ধতা সম্পর্কেও আপনারা গৃহীত যে কোন উদ্যোগকে সমর্থন করুন। আমার চতুর্থ আবেদনটি হল এই যে নিয়মিত ভাবে গ্রাম পরিদর্শনের মাধ্যমে আপনারা মূল শিকড়টিকে কখনই বিস্মৃত হবেন না। কারণ, তা আমাদের বন্ধনকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে। তিওয়ারি নামে গ্রামের প্রাচীন বাড়িগুলিকে সংরক্ষণের জন্য আপনারা এগিয়ে আসুন। সেগুলিকে আপনারা পরিত্যাগ করে যাবেন না। পরিবর্তে আয় ও উপার্জনের একটি উপায় হিসেবে সেগুলিকে হোমস্টে রূপে আপনারা সাজিয়ে তুলুন। এটাই হল আপনাদের কাছে আমার পঞ্চম আবেদন।
বন্ধুগণ,
উত্তরাখন্ডে পর্যটনের প্রসার ঘটছে দ্রুততার সঙ্গে। সারা দেশ এমনকি বহির্বিশ্ব থেকেও পর্যটকরা উপস্থিত হচ্ছেন এই রাজ্যটিতে। তাই, সকল পর্যটকের কাছে রইল আমার চারটি আবেদন। প্রথমত, আপনারা যখন সুউচ্চ হিমালয় সফরে আসবেন, তখন পরিচ্ছন্নতার বিষয়টিকে আপনারা রাখুন অগ্রাধিকারের তালিকায়। একবারমাত্র ব্যবহারযোগ্য প্ল্যাস্টিকের পুনর্ব্যবহার আপনারা এড়িয়ে চলুন। দ্বিতীয়ত, 'ভোকাল ফর লোকাল' মন্ত্রটিকে সম্বল করে আপনাদের বাজেটের অন্তত ৫ শতাংশ ব্যয় করুন স্থানীয় ভাবে উৎপাদিত বিভিন্ন সামগ্রীর জন্য। তৃতীয়ত, পার্বত্য অঞ্চলে ট্রাফিক আইন আপনারা যথাযথ অনুসরণ করুন। কারণ, নিরাপত্তার বিষয়টি হল সর্বোচ্চ। চতুর্থত, ধর্মীয় স্থানগুলির রীতিনীতি ও বিধিনিষেধ সম্পর্কে আপনারা সজাগ থাকুন। অক্ষুণ্ন রাখুন সেখানকার মর্যাদা ও রীতিনীতি। উত্তরাখন্ডবাসী নিশ্চই সানন্দে আপনাদের এই বিষয়ে সাহায্য করতে এগিয়ে আসবেন। উত্তরাখন্ডবাসীর জন্য আমার এই পাঁচটি আবেদন এবং পর্যটক ও দর্শনার্থীদের জন্য আমার এই চারটি অনুরোধ রক্ষা করলে দেবভূমির পরিচিতি যেমন তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে প্রতিভাত হবে, একই সঙ্গে তা উন্নয়ন প্রক্রিয়ার ধারাকে অব্যাহত রাখার কাজেও সাহায্য করবে।
বন্ধুগণ,
দ্রুত উন্নয়নের পথে আমাদের অবশ্যই উত্তরাখন্ডকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আমি স্থির প্রত্যয়ী যে আমাদের উত্তরাখন্ড সমগ্র জাতির লক্ষ্য পূরণে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। উত্তরাখন্ড প্রতিষ্ঠার রজতজয়ন্তী উপলক্ষে আমি আরও একবার শুভেচ্ছা জানাই প্রত্যেক রাজ্যবাসীকে। বাবা কেদারনাথের আশীর্বাদে আপনাদের সকলের জীবনে নেমে আসুক সুখ ও সমৃদ্ধি। সকলের প্রতি রইল আমার অসংখ্য ধন্যবাদ।