অংশগ্রহণকারী দাবাড়ু : স্যার, এই প্রথমবার ভারতীয় দল অসাধারণ খেলে উভয় বিভাগে সোনা জিতেছে। ছেলেরা ২২-এর মধ্যে ২১ পয়েন্ট পেয়েছেন, মেয়েরা পেয়েছেন ২২-এর মধ্যে ১৯ পয়েন্ট। মোট ৪৪ পয়েন্টের মধ্যে আমরা ৪০ পয়েন্ট দখল করেছি। এই জাতীয় আসাধারণ কৃতিত্বের নজির আগে কখনও দেখা যায়নি।
প্রধানমন্ত্রী : ওখানকার পরিবেশ কেমন ছিল?
অংশগ্রহণকারী দাবাড়ু : আমাদের এই প্রথমবার জয়ের ফলে প্রত্যেকেই আমাদের নিয়ে খুশি ছিলেন এবং আমরাও অনেক আনন্দ করেছি। প্রকৃতপক্ষে বিপক্ষের খেলোয়াড়রাও এসে আমাদের অভিনন্দন জানিয়ে গেছেন। আমাদের নিয়ে তাঁরা সত্যিই খুশি হয়েছিলেন। খুশি হয়েছিলেন আমাদের বিপক্ষরাও !
অংশগ্রহণকারী দাবাড়ু : স্যার, সাম্প্রতিক আমরা দেখেছি, অনেক দর্শক আমাদের হয়ে জয়ধ্বনি দিচ্ছেন। এই ম্যাচ দেখতেই তাঁরা অনেক দূর দূর থেকে এসেছিলেন। এ' রকম আগে কখনও হয়েছে বলে শুনিনি। ফলে আমার মনে হয়, দাবার জনপ্রিয়তা অনেক বেড়েছে। এটা দেখেও ভালো লাগছিল সাধারণ মানুষ আমাদেরকে নিয়ে বড় কিছু প্রত্যাশা করছেন। মাথার ওপর একটা চাপ ছিল। তবে এ জাতীয় সমর্থন পাওয়ার অভিজ্ঞতাও অসাধারণ। আমাদের জয়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রত্যেকে তাঁরা ‘ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়া’! বলে চিৎকার করছিলেন।
অংশগ্রহণকারী দাবাড়ু : এবার ১৮০টি দেশ যোগ দিয়েছিল। চেন্নাইয়ে দাবা অলিম্পিয়াডে পুরুষ মহিলা দল উভয়েই ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন। সেবার শেষ ম্যাচে মহিলা দলের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আমরা তাতে হেরে যাওয়ায় স্বর্ণ পদক জয়ের সুযোগ হাতছাড়া হয়। এবারও কিন্তু আমরা তাদের বিরুদ্ধে খেলেছি এবং ভারতের জন্য সোনা জেতার মানসিকতা আমাদেরকে দারুণভাবে প্রভাবিত করেছিল। তাদেরকে এবার আমাদের হারাতেই হতো।
প্রধানমন্ত্রী : আপনাদের তাহলে তাদেরকে হারাতেই হতো।
অংশগ্রহণকারী দাবাড়ু : ম্যাচটি হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর ড্র হয়। কিন্তু আমরা সোনা জিতি। স্যার, এবারে জয়ী হয়ে দেশে ফিরবো বলেই আমরা সংকল্পবদ্ধ ছিলাম। দ্বিতীয় কোনো পথ খোলা ছিল না।
প্রধানমন্ত্রী : এ রকম সংকল্পবদ্ধ হলেই আপনারা জয়লাভ করতে পারেন। কিন্তু আপনারা যখন ২২-এর মধ্যে ২১ আর ২২-এর মধ্যে ১৯ পয়েন্ট পেলেন, তখন অনুষ্ঠানে অন্যান্য খেলোড়ার এবং আয়োজকদের মধ্যে কী প্রতিক্রিয়া চোখে পড়েছিল?
অংশগ্রহণকারী দাবাড়ু : স্যার, আমার মনে হয়, গুকেশ এর উত্তর দিতে চাইছে। আমি শুধু বলবো, আমরা অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে জিতেছি, বিশেষ করে ওপেন টিমের বিরুদ্ধে। এবং মনে হয়েছিল যে অন্য কেউ আমাদের এতো কাছাকাছি পৌঁছতে পারেনি। মেয়েদের দলে আমরা একটানা প্রথম ৭টি ম্যাচ জিতি। এর পরের ম্যাচে হারি। কিন্তু দৃঢ়তার সঙ্গে আবার আমরা ঘুরে দাঁড়াই। তবে ওপেন টিমের ক্ষেত্রে স্যার, আমরা যে কতখানি কর্তৃত্ব বজায় রেখেছিলাম, তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। আমার মনে হয়, গুকেশ বোর্ডে থেকে সেই বিষয়টি আরও ভালো ব্যাখ্যা করতে পারবে।
অংশগ্রহণকারী দাবাড়ু : একটা সামগ্রিক দলগত প্রয়াসের এটা এক অভিজ্ঞতা। আমাদের প্রত্যেকেই দারুণ ফর্মে ছিল। সেইসঙ্গে প্রত্যেকেই ছিল দারুণভাবে অনুপ্রাণিত। ২০২২-এর অলিম্পিয়াডে আমরা স্বর্ণপদক জয়ের খুব কাছাকাছি এসে গেছিলাম। আমি একটা খেলায় জিতলে সোনা জয় করা যেত। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত খেলাটিতে আমি হেরে যাই। এটাতে সকলে হতাশ হয়ে পড়েন। ফলে এবার আমরা ছিলাম দারুণভাবে অনুপ্রাণিত। এবং প্রথম থেকে আমরা জয়ের ব্যাপারে ছিলাম স্থির নিশ্চিত। আমি সত্যিই আনন্দিত।
প্রধানমন্ত্রী : আচ্ছা আমাকে বলুন, আপনারা কখনও আপনাদের প্রতিপক্ষের খেলা আরও ভালো করে বুঝতে অথবা আপনাদের নিজেদের খেলায় কোনও সংশোধন ঘটাতে কৃত্রিম মেধার আশ্রয় নেওয়ার কথা ভেবেছেন?
অংশগ্রহণকারী দাবাড়ু : ঠিকই বলেছেন স্যার। কৃত্রিম মেধাকে ঘিরেই দাবা আবর্তিত হচ্ছে। নতুন প্রযুক্তি এসেছে। কম্পিউটারও এখন অনেক বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। দাবায় নতুন নতুন ধারণা দেখা দিচ্ছে। আমরা এর থেকে অনেক কিছু শিখছি। এবং আমার মনে হয় অনেক কিছু শেখাও বাকি রয়েছে।
অংশগ্রহণকারী দাবাড়ু : স্যার, আমার মনে হয়, এটা এখন অনেক সহজলভ্য হওয়ায় সকলের সামনে কৃত্রিম মেধা ব্যবহারের সুযোগ এসেছে, কারণ এর গণতন্ত্রীকরণ হয়েছে। আমরা আমাদের প্রস্তুতিতে নিশ্চিতভাবে এর সাহায্য নিচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী : আরও বিস্তারিত বলুন।
অংশগ্রহণকারী দাবাড়ু : এর থেকে বেশি কিছু নয়, স্যার, এটা একটা অভিজ্ঞতা।
প্রধানমন্ত্রী : এর বেশি কিছু নয়? আপনাদের জিততেই হবে এটার মতই... স্বর্ণপদক কী এতো সহজে এসেছে?
অংশগ্রহণকারী দাবাড়ু : না স্যার এটা সহজে আসেনি। আমাদের কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে। আমার মনে হয়, ছেলেরা সহ আমাদের দলের সকলেই শেষ পর্যন্ত এই পর্যায়ে পৌঁছতে কঠোর পরিশ্রম করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী : আমি দেখেছি আপনাদের বাবা-মা’রা অনেকেই ডাক্তার।
অংশগ্রহণকারী দাবাড়ু : হ্যাঁ, আমার বাবা-মা দুজনেই ডাক্তার। আমার দিদিও ডাক্তার। আমি যখন ছোট ছিলাম, দেখতাম রাত ২টোর সময়ও তাঁদের কাছে রুগির ফোন আসছে। তখন তাদেরকে দেখতে যেত হতো। তা দেখে আমার মনে হয়েছিল, আমাকে জীবনে অন্য কোনো সুস্থায়ী পদ বেছে নিতে হবে। তবে, সেই সময় আমি উপলব্ধি করেছিলাম, ক্রীড়ার ক্ষেত্রেও প্রচুর দৌড়াদৌড়ির দরকার।
অংশগ্রহণকারী দাবাড়ু : স্যার, আমি সব সময় দেখেছি যে আপনি প্রত্যেক ক্রীড়াবিদ এবং প্রত্যেক খেলায় উৎসাহ ও সমর্থন দেন। খেলাধুলার সাথে আপনার গভীর যোগ রয়েছে বলে মনে হয়। এর পিছনে কী গল্প রয়েছে আমি জানতে চাই- সেটা কী?
প্রধানমন্ত্রী : আমি আপনাদের বলছি। আমার বিশ্বাস, একটা দেশ কেবল তার বিত্ত, শিল্প আর জিডিপি নিয়ে উন্নত হতে পারে না। একটা রাষ্ট্রকে সমস্ত ক্ষেত্রেই শ্রেষ্ঠ হতে হবে। তা যদি চলচ্চিত্র শিল্প ক্ষেত্র হয়, আমাদের লক্ষ্য হবে সব থেকে বেশি অস্কার জেতা। যদি তা বিজ্ঞান হয়, আমরা সব থেকে বেশি নোবেল পুরস্কার জেতার চেষ্টা করবো। ঠিক তেমনি ক্রীড়া ক্ষেত্রেও আমাদের সন্তানরা দেশে সব থেকে বেশি স্বর্ণ পদক জিতে ফিরুন। একটা দেশ যখন সমস্ত ক্ষেত্রেই উৎকর্ষ প্রদর্শন করলে মহান হয়ে ওঠে। আমি যখন গুজরাটে ছিলাম, আমি খেল মহাকুম্ভ অর্থাৎ ক্রীড়া উৎসবের আয়োজন করেছিলাম। তাতে লক্ষ লক্ষ ছেলেমেয়ে যোগ দিয়েছিল। আমি প্রবীণ মানুষদেরও খেলতে উৎসাহিত করি। ফলত, প্রতিভাবান শিশুরা উঠে আসে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে আমাদের যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রভূত সম্ভাবনা রয়েছে। দ্বিতীয়ত আমি মনে করি দেশে একটা ভালো সামাজিক বাতাবরণের জন্য ক্রীড়া মানসিকতাকে সংস্কৃতির অঙ্গ করতে হবে। তা কেবলমাত্র ক্রীড়াবিদদের জন্যই নয়, জীবনের সমস্ত ক্ষেত্রেই তার প্রয়োজন।
অংশগ্রহণকারী দাবাড়ু : আপনি প্রতিদিন এতো বড় বড় সিদ্ধান্ত নেন। চাপের পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠার ক্ষেত্রে আমাদেরকে আপনি কী পরামর্শ দেবেন?
প্রধানমন্ত্রী : শারীরিক সুস্থতা সবথেকে বড় বিষয়। আমাদের মধ্যে অনেকেই শারীরিক সুস্থ। আপনাদেরকে সম্ভবত একটি প্রশিক্ষণের মধ্যে দিয়ে যেত হয়। আপনাদের নিশ্চিত কী খাবেন, কোনো খেলার আগে কতটা খাবেন, কী খাবেন না তার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আমি মনে করি এই জাতীয় স্বভাব যদি আমরা গড়ে তুলতে পারি তাহলে সমস্ত রকম সমস্যার মোকাবিলা সহজ হয়ে যাবে। ভালো সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে আপনার প্রচুর তথ্যের প্রয়োজন। তা সদর্থক বা নঞর্থক দুই’ই হতে পারে। মানব প্রকৃতিই হল সুখকর কিছু শুনতে পছন্দ করা। তবে সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে আপনাকে তা ভুল পথে চালিত করতে পারে। আপনার যদি বিভিন্ন ধরনের তথ্য জ্ঞান হয় তাহলে তার প্রেক্ষাপট বুঝতে পারবেন, বিশ্লেষণ করতে পারবেন এবং যা আপনার কাছে অস্পষ্ট, তা নির্দ্বিধায় কোনো বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে জেনে নিলে কোনো চ্যালেঞ্জকে কাটিয়ে ওঠা আপনার অনেক সহজ হয়ে যাবে। আমি যেমন আগেও বলেছি, অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে অনেক কিছু সহজ হয়ে যায। যোগ, ধ্যান-এর মধ্যে নিহিত রয়েছে প্রকৃত শক্তি।
অংশগ্রহণকারী দাবাড়ু : স্যার, ২ সপ্তাহ ধরে আমরা টানা খেলেছি। এখন আমরা ক্লান্ত। কিন্তু আপনি বছরের প্রতিটি দিন নিরলস কাজ করে চলেছেন। ফলে আমাদের জানার ইচ্ছা আপনার এই শক্তির গোপন রহস্য কী? আপনি এতো কিছু জানেন তার পরেও বিশ্বজুড়ে নতুন কিছু জানতে আপনি উৎসুক। আপনি প্রত্যেক ক্রীড়াবিদকে উৎসাহ-অনুপ্রেরণা দিচ্ছেন। আমি আপনার কাছে জানতে চাইবো দাবাকে আপনি কী চোখে দেখেন তা নিয়ে যদি আমাদের কিছু পরামর্শ দেন।
প্রধানমন্ত্রী : দেখুন, জীবনে কখনও কোনো কিছু নিয়ে পরিতৃপ্ত হবেন না। কেননা তাহলে আপনাদের মধ্যে আত্মসন্তুষ্টির বোধ জন্ম নেবে।
অংশগ্রহণকারী দাবাড়ু : এই কারনেই কী স্যার সারা দিনের মধ্যে ঘুমোন আপনি মাত্র ৩ ঘণ্টা !
প্রধানমন্ত্রী : আমাদের মধ্যে সব সময় একটা খিদে থাকতে হবে- নতুন কিছু করার, অনেক কিছু করার।
অংশগ্রহণকারী দাবাড়ু : প্রতিযোগিতায় সবে মাত্র জেতার পর আমরা বাসে করে যখন ফিরছি তখন দেখলাম আপনার সরাসরি ভাষণ। সারা বিশ্বের কাছে আপনি ঘোষণা করছেন ভারত দুটি ঐতিহাসিক স্বর্ণ পদক জয় করেছে। আমরা সকলেই তখন বাসের মধ্যে। সারা বিশ্বের কাছে আপনার সেই ঘোষণা আমাদের সকলকে অত্যন্ত খুশি করেছে। ১৯৯৮ সালে আমি প্রথম অলিম্পিয়াড খেলি। সেই সময় গ্যারি কাসপারভ, কারপভ-এর মতো দাবাড়ুরা খেলতেন। তাঁদের হস্তাক্ষর নিতে আমরা ছুটে যেতাম। সে'সময় তালিকায় ভারত তখন ছিল অনেক নিচে। কিন্তু আমি যখন একজন প্রশিক্ষকের কাছে গিয়েছি, গুকেশ, ব্রহ্মানন্দ, অর্জুন, দিব্য, হারিকাকে আমি আসতে দেখলাম। দেখলাম তাঁদের হস্তাক্ষর নিতে সব মানুষ ছুটে আসছেন। এই যে পরিবর্তন, নতুন প্রজন্মের খেলোয়াড়দের মধ্যে এই যে আস্থাবোধ- আমার মনে হয় ভারতকে এক নম্বর হতে হবে আপনার দৃষ্টিভঙ্গীর এটাই ফলশ্রুতি। স্যার, আমার মনে হয় একটা পরিবর্তন ঘটছে।
অংশগ্রহণকারী দাবাড়ু : অত্যন্ত অল্প সময়ের নোটিশে আমাদের সঙ্গে আপনার এই সাক্ষাতের জন্য ধন্যবাদ। আপনি মার্কিন য়ুক্তরাষ্ট্রে ছিলেন, তার মধ্যেও আপনি আমাদের জন্য সময় বের করেছেন। এতে আমরা সত্যই অনুপ্রাণিত।
প্রধানমন্ত্রী : আমার মূল্য আপনাদের মধ্যেই নিহিত। আমি মনে করি এটা কেবল আমাদের কাছেই গুরুত্বপূর্ণ তা নয়, যাঁরা দাবা খেলেন, সকলের কাছেই তা গভীর অনুপ্রেরণার কারণ হতে পারে। তারা খেলতে আরও বেশি উৎসাহিত হবেন। এরপর আপনাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ তাঁদেরকে আরও উৎসাহিত করবে।
হ্যাঁ, ঠিকই। অন্যদেরকে সফল হতে দেখে আমাদেরও মনে হয় তার যদি এটা করতে পারে আমরাও তা করতে পারি। গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন আমি এক বিরাট মাপের দাবা প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিলাম।
অংশগ্রহণকারী দাবাড়ু : সেই অনুষ্ঠানে ২০,০০০ মানুষ একসঙ্গে দাবা খেলেছিলেন। এবং অংশগ্রহণকারীদের এমনও অনেকে ছিলেন, যারা আগে কখনও দাবাই খেলেননি।
প্রধানমন্ত্রী : আজকের অনেকের হয়তো সেই সময় জন্মই হয়নি ! লোকে তে অবাক, ভাবছে মোদী কী করছে। ২০,০০০ লোকের বসতে বিরাট জায়গার দরকার। ফলে আমি এক বিরাট তাঁবু বানালাম। আধিকারকদেরও অনেকে জানতে চাইলেন কেন এত টাকা খরচ করা হচ্ছে। আমি তাদের উত্তরে বলেছিলাম ‘ঠিক এই পরিমাণ টাকায় আমি এতে খরচ করবো’।
অংশগ্রহণকারী দাবাড়ু : স্যার, আপনি সে সময় আমাদের এতো উৎসাহ দেওয়ায় আমি তো খুবই খুশি হয়েছিলাম। আমি নিজে নিজেই নিজেকে সেই সময় বলেছিলাম দাবার জন্য আমার জীবন নিয়োজিত। সেই সময় থেকে আমার লক্ষ্য ছিল ভারতের জন্য পদক জয়। ফলে আমি যারপরনাই খুশি।
প্রধানমন্ত্রী : ও আপনি ওখান ছিলেন !
অংশগ্রহণকারী দাবাড়ু : হ্যাঁ, আপনি যখন এর আয়োজন করেন, সেই অনুষ্ঠানে অনেক মেয়েরাও অংশ নিয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী : বাহ্। তারা আপনাকে সেই অনুষ্ঠানে নিয়ে এলো কী করে?
অংশগ্রহণকারী দাবাড়ু : এশিয়ান অনুর্দ্ধ- ৯ প্রতিযোগিতায় আমি জয়ী হই। সেই সময়, গুজরাটের গান্ধী নগরে এক বিরাট অনুষ্ঠানের কথা আমার মা কে কেউ বলেছিলেন। তারপর আমি সেখানে আমন্ত্রণ পাই।
প্রধানমন্ত্রী : আমি কী এটা নিজের কাছে রাখতে পারি?
অংশগ্রহণকারী দাবাড়ু : হ্যাঁ, স্যার। এটা ফ্রেমে বাঁধিয়ে আপনাকে উপহার দেওয়ার কথা ছিল। তবে...
প্রধানমন্ত্রী : চিন্তা করবেন না, এটা আমার কাছে বিশেষভাবে স্মরণীয়। আমি যে শালটা আপনাকে দিয়েছিলাম সেটা কী রেখেছেন?
অংশগ্রহণকারী দাবাড়ু : হ্যাঁ স্যার, আমি তা যত্ন করে রেখেছি।
প্রধানমন্ত্রী : দারুণ। আমি সত্যিই খুব খুশি। আপনাদের সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা। জীবনে ক্রমাগত এগিয়ে যান !