প্রধানমন্ত্রী সহযোগিতা ও সমন্বিত উদ্যোগের জন্য রাজ্যগুলির প্রশংসা করেছেন
মুখ্যমন্ত্রীরা সবধরনের সহযোগিতার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন
মহারাষ্ট্র ও কেরলে সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী হওয়া উদ্বেগের বিষয় : প্রধানমন্ত্রী
নমুনা পরীক্ষা, সংক্রমিতদের শণাক্তকরণ, সংক্রমিতদের সংস্পর্শে যাঁরা এসেছেন, তাঁদের চিহ্নিতকরণ, চিকিৎসা ব্যবস্থা করা এবং টিকাকরণ প্রমাণিত ও পরীক্ষিত কৌশল : প্রধানমন্ত্রী
তৃতীয় ঢেউ প্রতিহত করতে আমাদের সক্রিয়ভাবে সবধরনের ব্যবস্থা নিতে হবে : প্রধানমন্ত্রী
গ্রামাঞ্চলে, বিশেষ করে পরিকাঠামোর ঘাটতি পূরণ করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী
করোনা এখনও চলে যায়নি, আনলক পর্বে যেসব ছবি পোস্ট হচ্ছে, তা যথেষ্ট উদ্বেগজনক : প্রধানমন্ত্রী

নমস্কারজি!
করোনার বিরুদ্ধে দেশের লড়াইয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আপনারা সকলেই নিজেদের বক্তব্য রেখেছেন। দু’দিন আগেই আমার উত্তর-পূর্ব ভারতের সকল মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনার সৌভাগ্য হয়েছে, কারণ, যেখানে যেখানে চিন্তাজনক পরিস্থিতি রয়েছে সেই রাজ্যগুলির সঙ্গে আমি বিশেষভাবে কথা বলছি।
বন্ধুগণ,
বিগত দেড় বছরে দেশ এতবড় মহামারীর মোকাবিলা পারস্পরিক সহযোগিতা এবং ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমেই করেছে। সকল রাজ্য সরকার যেভাবে পরস্পরের কাছ থেকে শেখার চেষ্টা করেছে, বেস্ট প্র্যাক্টিসগুলি বোঝার চেষ্টা করেছে, পরস্পরকে সহযোগিতার চেষ্টা করেছে, আর আমরা অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, এ ধরনের প্রচেষ্টার ফলে আমরা ভবিষ্যতে এই লড়াইয়ে বিজয় লাভ করতে পারব।

বন্ধুগণ,
আপনারা সবাই একথা জানেন যে আমরা এই সময়ে একটি এমন মোড়ে দাঁড়িয়ে আছি যেখানে তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা নিয়মিত আমাদের দরজায় করাঘাত করছে। দেশের অধিকাংশ রাজ্যগুলিতে আক্রান্তের সংখ্যা যেভাবে হ্রাস পেয়েছে এতে কিছুটা স্বস্তি, মানসিক স্বস্তি অনুভূত হচ্ছিল। বিশেষজ্ঞরা এই ডাউনওয়ার্ড ট্রেন্ডকে দেখে আশাও করছিলেন যে দ্রুত দেশ দ্বিতীয় ঢেউ থেকে সম্পূর্ণরূপে বেরিয়ে আসতে পারবে। কিন্তু কিছু রাজ্যে সংক্রমণের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা এখনও দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে।
বন্ধুগণ,
আজ যতগুলি রাজ্য; মোট ছয়টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আজ আমাদের সঙ্গে রয়েছেন, এই আলোচনায় অংশগ্রহণ করেছেন। যে রাজ্যগুলিতে গত সপ্তাহে দেশের মোট সংক্রমণের ৮০ শতাংশ রোগী রয়েছে, আপনারা সেই রাজ্যগুলির প্রতিনিধিত্ব করছেন। ৮৪ শতাংশ দুঃখজনক মৃত্যুও এই রাজ্যগুলিতেই হয়েছে। গোড়ার দিকে বিশেষজ্ঞরা মনে করছিলেন যে যেখান থেকে দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছিল, সেখানকার পরিস্থিতি অন্যদের তুলনায় আগে নিয়ন্ত্রণে এসে যাবে। কিন্তু মহারাষ্ট্র এবং কেরলে সংক্রমণের হার এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এটা প্রকৃতপক্ষে আমাদের সবার জন্য, দেশের জন্য একটি গভীর দুশ্চিন্তার বিষয়। আপনারা সবাই বিষয়টা বুঝতে পারছেন। দ্বিতীয় ঢেউ আসার আগে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে আমরা এই ধরনেরই ট্রেন্ড দেখতে পাচ্ছিলাম। সেজন্য এই আশঙ্কা স্বাভাবিকভাবেই বৃদ্ধি পাচ্ছে যে যদি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসে তাহলে অনেক কঠিন সময়ের মুখোমুখি হতে হবে। যে রাজ্যগুলিতে সংক্রমণ ক্রমবর্ধমান, সেখানে সক্রিয় ব্যবস্থা নিয়ে যে কোনভাবে তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কাকে দূর করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। এটা অত্যন্ত জরুরি।

বন্ধুগণ,
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘ সময় ধরে ক্রমাগত সংক্রমণ বাড়তে থাকলে করোনা ভাইরাসের মিউটেশনের আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়, আর নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্টসের সম্ভাবনাও বাড়ে। সেজন্য তৃতীয় ঢেউকে প্রতিরোধ করতে করোনার বিরুদ্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এজন্য রণকৌশল সেটাই যা আপনারা নিজেদের রাজ্যে আগেও প্রয়োগ করেছিলেন, গোটা দেশে প্রয়োগ করা হয়েছে আর তার অভিজ্ঞতাও আমাদের রয়েছে যা আপনাদের জন্যও পরীক্ষিত এবং প্রমাণিত পদ্ধতি। টেস্ট, ট্র্যাক এবং ট্রিট – এই তিনটি উপায়ের পাশাপাশি এখন টিকাকরণও আমাদের রণনীতিতে অগ্রাধিকার পাচ্ছে। এর গতি আমাদের বাড়াতে হবে। আমাদের বিশেষভাবে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোন তৈরির দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। যে জেলাগুলিতে করোনা পজিটিভ রোগীর সংখ্যা বেশি, যেখানে যেখানে বেশি সংখ্যক রোগীরা সংক্রামিত হচ্ছেন, সেই অঞ্চলগুলিকে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোনে পরিণত করে দ্রুত উপশমের পথে এগিয়ে যেতে হবে। দু’দিন আগেই যখন আমি উত্তর-পূর্ব ভারতের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলছিলাম, তখন একটি বিষয় উঠে এসেছিল যে কয়েকটি রাজ্য লকডাউনই করেনি, কিন্তু মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোনে গুরুত্ব দিয়েছে আর সেজন্য তারা পরিস্থিতি সামলাতে পেরেছে। টেস্টিং-এর ক্ষেত্রেও এই জেলাগুলিতে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে সম্পূর্ণ রাজ্যে যথাসম্ভব বেশি টেস্ট করার দিকে এগিয়ে যেতে হবে। যে জেলাগুলিতে, যে এলাকাগুলিতে বেশি সংক্রমণ রয়েছে সেখানে টিকাকরণের জন্য আমাদের একটি কৌশলগত পদ্ধতি রয়েছে। টিকার কার্যকরী ব্যবহারের ফলে করোনা থেকে উদ্ভূত শারীরিক সমস্যা অনেক হ্রাস পায়। অনেক রাজ্যে এই সময়ে আমরা যে উইন্ডো পাচ্ছি, সেটাকে আমরা সেখানে আরটি-পিসিআর টেস্টিং ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ব্যবহার করছি। এটাও একটি অত্যন্ত প্রশংসনীয় এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। যত বেশি সম্ভব আরটি-পিসিআর টেস্টিং এই সংক্রমণকে রুখতে অনেক কার্যকরী হয়ে পারে।
বন্ধুগণ,
দেশের সকল রাজ্যকে নতুন আইসিইউ বেড বৃদ্ধি, টেস্টিং ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং অন্যান্য প্রয়োজনসাধনের জন্য বিশেষ তহবিল থেকে টাকা পাঠানো হচ্ছে, কেন্দ্রীয় সরকার সম্প্রতি ২৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি ইমার্জেন্সি কোভিড রেসপন্স প্যাকেজ জারি করেছে। আমি চাইব যে, এই বাজেটের ব্যবহার স্বাস্থ্য পরিকাঠামোকে আরও শক্তিশালী করে তোলার জন্য ব্যবহার করুন। যে রাজ্যে পরিকাঠামোগত যত ত্রুটি রয়েছে সেগুলিকে দূর করার ক্ষেত্রে এই তহবিল থেকে পাঠানো টাকা ব্যবহার করতে হবে। পরিকাঠামোগত শূন্যস্থান পূরণ করতে বিশেষ করে, গ্রামীণ এলাকায় আমাদের বেশি পরিশ্রম করার প্রয়োজন রয়েছে। এর পাশাপাশি, সকল রাজ্যে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবস্থা, কন্ট্রোল রুম এবং কল সেন্টারের নেটওয়ার্ক মজবুত করাও ততটাই প্রয়োজনীয়। এগুলির মাধ্যমে সম্পদের তথ্য, এই বিষয়ক যাবতীয় তথ্য নাগরিকরা সহজেই স্বচ্ছভাবে পেতে পারেন। চিকিৎসার জন্য রোগীদের এবং পরিজনদের আর এখানে-ওখানে ছুটতে হবে না।

বন্ধুগণ,
আমাকে বলা হয়েছে যে আপনাদের রাজ্যগুলিতে যে ৩৩২টি পিএসএ প্ল্যান্ট মঞ্জুর করা হয়েছে সেগুলির মধ্যে ৫৩টি ইতিমধ্যেই কমিশনড হয়ে গেছে। সংশ্লিষ্ট সমস্ত রাজ্যের প্রতি আমার অনুরোধ যে যেখানে ত্রুটি রয়েছে সেই অঞ্চলগুলিতে অগ্রাধিকার দিয়ে সেই ত্রুটি দূর করা হোক। কোনও একজন উচ্চপদস্থ আধিকারিককে দায়িত্ব দিয়ে শুধু এই কাজে লাগান আর ১৫-২০ দিনের মিশন মোডে এই কাজকে আপনারা বাস্তবায়িত করুন, ত্বরান্বিত করুন।
বন্ধুগণ,
আরেকটি দুশ্চিন্তা শিশুদের নিয়ে। শিশুদের করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে আমাদের নিজেদের পক্ষ থেকে সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিতে হবে।
বন্ধুগণ,
আমরা দেখছি যে বিগত দু’সপ্তাহে ইউরোপের অনেক দেশে দ্রুতগতিতে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আমরা যদি পশ্চিম দিকে যাই তাহলে ইউরোপের দেশগুলিতে, পূর্ব দিকে গেলে বাংলাদেশ, মায়ানমার, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড সহ সকল দেশে দ্রুতগতিতে সংক্রমণের সংখ্যা বাড়ছে। কোথাও চারগুণ, কোথাও আটগুণ, কোথাও দশগুণ বেড়েছে। এটা গোটা বিশ্বের জন্য, আর আমাদের জন্যও একটি সতর্ক বার্তাস্বরূপ। একটি অনেক বড় অ্যালার্ট আমাদেরকে বারবার এটা মনে করাতে হয় যে করোনা আমাদের মধ্য থেকে যায়নি। আমরা অধিকাংশ ক্ষেত্র থেকে আনলকের পর যেসব পাচ্ছি সেই দেখে চিন্তা বাড়তে বাধ্য। একথা আমি আমার উত্তর-পূর্ব ভারতের সমস্ত মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলার সময়েও বলেছিলাম। আমি আজ আরেকবার জোর দিয়ে সেই কথারই পুনরাবৃত্তি করছি। আজকে যে রাজ্যগুলি আমার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে, সেগুলিতে অনেক বড় বড় মেট্রোপলিটন শহর আছে, অনেক ঘনবসতিসম্পন্ন এলাকা রয়েছে, সবাইকে এটাও মাথায় রাখতে হবে। সার্বজনিক স্থানগুলিতে ভিড় রোখার জন্য আমাদের সব সময় সজাগ, সতর্ক এবং কঠোর হতে হবে। সরকারের পাশাপাশি অন্যান্য রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন এবং অসরকারি সংস্থা, ও বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে নিয়ে আমাদের ক্রমাগত জনমানসে সচেতনতা বৃদ্ধির কাজ করে যেতে হবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আপনাদের সকলের ব্যাপক অভিজ্ঞতা এই লক্ষ্যে অনেক কার্যকরী বলে প্রমাণিত হবে। আপনারা সবাই এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের জন্য সময় বের করেছেন বলে আপনাদেরকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আর যেমনটি আপনারা সবাই, সমস্ত সম্মানিত মুখ্যমন্ত্রীরা উল্লেখ করেছেন, আমি প্রত্যেক মুহূর্তে হাজির আছি। আমাদের সম্পর্ক বজায় রয়েছে। ভবিষ্যতেও সব সময় অ্যাভেলেবল থাকব যাতে আমরা সবাই মিলেমিশে এই সঙ্কটে মানবজাতিকে রক্ষা করতে এই অভিযানে নিজের নিজের রাজ্যকে যেন বাঁচাতে পারি। আমি আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক শুভকামনা জানাই। অনেক অনেক ধন্যবাদ।

 

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
Mutual fund industry on a high, asset surges Rs 17 trillion in 2024

Media Coverage

Mutual fund industry on a high, asset surges Rs 17 trillion in 2024
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
সোশ্যাল মিডিয়া কর্নার 25 ডিসেম্বর 2024
December 25, 2024

PM Modi’s Governance Reimagined Towards Viksit Bharat: From Digital to Healthcare