নমস্কার!
আপনারা সবাই জানেন যে আমরা গত দু’বছর ধরে একটি নতুন পরম্পরা শুরু করেছি। প্রথমটি হল, আমরা বাজেটকে এক মাস আগে ‘প্রি-পোন’ করেছি বা এগিয়ে এনেছি। ফলে, প্রতিবছর ১ এপ্রিল থেকে যখন বাজেট কার্যকর হয়, তার আগে প্রায় দু’মাস সময় আমরা প্রস্তুতির জন্য পেয়ে যাই। আমরা আরও একটি চেষ্টা করছি, তা হল, বাজেটের আলোতে সমস্ত স্টেক-হোল্ডার্স বা সংশ্লিষ্ট সকলে মিলেমিশে সরকারি, বেসরকারি, রাজ্য সরকার, কেন্দ্রীয় সরকার, সরকারের ভিন্ন ভিন্ন দপ্তর একসঙ্গে বসে আলোচনা করা। বাজেটের আলোতে আমরা কিভাবে দ্রুত আমাদের পরিকল্পনাকে কার্যকর করতে পারব, ‘সিমলেসলি’ বা অবাধ প্রক্রিয়ায় বাস্তবায়িত করব আর ‘অপটিমাম আউটকাম’ বা এগুলি থেকে কিভাবে সর্বশ্রেষ্ঠ ফল পাব তারই অন্বেষণ করছি। এতে আপনাদের কাছ থেকে যত পরামর্শ পাব, তা সম্ভবত সরকারকে নিজের সিদ্ধান্ত প্রক্রিয়াকেও সরল করতে সাহায্য করবে। ‘ইমপ্লিমেন্টেশন’ বা বাস্তবায়নের রোডম্যাপ উৎকৃষ্টতম হবে। কখনও কখনও যেমন ‘ফুলস্টপ’, ‘কমা’র কারণে কোনও কোনও জিনিস ৬-৭ মাস ফাইলবন্দি থাকে, এ ধরনের প্রতিবন্ধকতা থেকে বাঁচার জন্য আমরা আপনাদের সকলের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে চাই। আপনাদের পরামর্শগুলি সঙ্গে নিয়ে চলতে চাই। এই আলোচনায় বাজেটে এমন হওয়া উচিৎ ছিল, আর তেমন হওয়ার দরকার ছিল - এ ধরনের পরামর্শ চাই না! কারণ, এখন এ ধরনের কোনও পরামর্শ নেওয়া সম্ভব নয়, এই কাজটি সংসদ করে নিয়েছে। কিন্তু তারপর আমরা যা কিছু হাতে পেয়েছি তা থেকে জনগণ কিভাবে সবচাইতে বেশি উপকৃত হবেন, দেশবাসী কিভাবে লাভবান হবেন, আমরা সবাই মিলে কিভাবে কাজ করব – এইসব ঠিক করাই আমাদের এই আলোচনার মূল লক্ষ্য। আপনারা হয়তো লক্ষ্য করেছেন, এবারের বাজেটে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সংক্রান্ত যত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, এই সিদ্ধান্তগুলি প্রকৃতই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাজেট ঘোষণার বাস্তবায়নও যেন ততটাই দ্রুতগতিতে হয়, এই ওয়েবিনার সেই লক্ষ্যে একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টা মাত্র।
বন্ধুগণ,
আমাদের সরকারের জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি একটি নিছকই বিচ্ছিন্ন ও স্বতন্ত্র ক্ষেত্র নয়। আজ অর্থনীতির ক্ষেত্রে আমাদের দৃষ্টিকোণ ডিজিটাল অর্থনীতি এবং ফিনটেক-এর মতো বিষয়গুলির সঙ্গে যুক্ত। এগুলির ভিত্তিতেই আমাদের দৃষ্টিকোণ গড়ে উঠেছে। পরিকাঠামো ক্ষেত্রেও আমাদের ‘ডেভেলপমেন্ট ভিশন’ বা উন্নয়নের দৃষ্টিভঙ্গি, ‘অ্যাডভান্সড টেকনলজি’ বা অত্যাধুনিক প্রযুক্তি-ভিত্তিক ‘পাবলিক সার্ভিসেস’বা সরকারি পরিষেবা এবং ‘লাস্ট মাইল ডেলিভারি’ বা সমাজের প্রান্তিকতম ব্যক্তির কাছে সরকারি প্রকল্পগুলির সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার সমস্ত প্রক্রিয়া এখন তথ্যের মাধ্যমে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলির সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। আমাদের জন্য প্রযুক্তি দেশের সাধারণ থেকেও সাধারণতম নাগরিকদের ক্ষমতায়নের একটি শক্তিশালী মাধ্যম। আমাদের জন্য প্রযুক্তি দেশকে আত্মনির্ভর করে তোলার একটি প্রধান ভিত্তি, আর যখন আমি ভারতের আত্মনির্ভরতার কথা বলছি, তখন আজ সকালেই আপনারা হয়তো আমেরিকার রাষ্ট্রপতি বাইডেনের ভাষণ শুনেছেন। তিনিও আমেরিকাকে আত্মনির্ভর করে তোলার কথা বলেছেন। আমেরিকাতে একটি ‘মেক ইন আমেরিকা’ আন্দোলন শুরু করার ওপর তিনি আজ জোর দিয়েছেন। তাই আমরা জানি, আজ যে নতুন বিশ্ব ব্যবস্থা গড়ে উঠছে সেখানে আমাদের জন্যও এটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় যে আমাদের আত্মনির্ভরতাকে সঙ্গে নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। সেজন্য এবারের বাজেটে সেই বিষয়গুলির ওপরি বেশি জোর দেওয়া হয়েছে - আপনারা হয়তো লক্ষ্য করেছেন।
বন্ধুগণ,
আমাদের এবারের বাজেটে ‘সানরাইজ সেক্টর’-এর ওপরও বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। ‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স’ বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ‘জিও-স্পেশিয়াল সিস্টেমস’ আর ড্রোন থেকে শুরু করে সেমি-কন্ডাক্টর্স হয়ে মহাকাশ প্রযুক্তি পর্যন্ত, ‘জিওনমিক্স’ থেকে ফার্মাসিউটিক্যালস আর ‘গ্রিন টেকনলজি’ বা পরিবেশ-বান্ধব প্রযুক্তি থেকে শুরু করে ৫জি পর্যন্ত – এই সকল ক্ষেত্রকে দেশ এখন অগ্রাধিকার দিয়েছে। বাজেটে ‘সানরাইজ সেক্টর’-এর জন্য ‘থিমেটিক ফান্ডস’কেও প্রমোট করার কথা বলা হয়েছে। আপনারা জানেন যে বাজেটে এ বছর ৫জি স্পেকট্রামের অকশন নিয়েও অত্যন্ত স্পষ্ট রোডম্যাপ বর্ণনা করা হয়েছে। দেশে শক্তিশালী ৫জি ইকো-সিস্টেম এবং তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ‘ডিজাইন-লেড ম্যানুফ্যাকচারিং’-এর জন্যও বাজেটে ‘প্রোডাকশন লিঙ্কড ইনসেন্টিভ স্কিম’ (পিএলআই) বা উৎপাদন-ভিত্তিক উৎসাহ ভাতার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। আমি আমাদের দেশের বেসরকারি ক্ষেত্রকেও বিশেষভাবে অনুরোধ জানাব যে এই সিদ্ধান্তগুলি থেকে যে নতুন নতুন সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে, সেগুলির ওপর বিস্তারিত আলাপ-আলোচনায় আপনারা অবশ্যই অংশগ্রহণ করবেন আর কার্যকরী পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি আমরা যেন সবাই মিলে একটি সামগ্রিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে এগিয়ে যাই।
বন্ধুগণ,
একথা বলা হয় যে, ‘সায়েন্স ইজ ইউনিভার্সাল বাট টেকনলজি মাস্ট বি লোকাল’। অর্থাৎ, বিজ্ঞান যতই বিশ্বজনীন হোক, প্রযুক্তিকে স্থানীয় প্রয়োজন অনুসারে তৈরি হতে হবে। আমরা সবাই বিজ্ঞানের সিদ্ধান্তগুলির সম্পর্কে পরিচিত, কিন্তু প্রযুক্তির অধিকাংশ ব্যবহার আমরা কিভাবে ‘ইজ অফ লিভিং’-এর অনুকূলে করব, তার ওপরও আমাদের জোর দিতে হবে। আজ আমরা আগের থেকে অনেক দ্রুত গৃহহীন্দের জন্য গৃহ নির্মাণ করছি। রেলপথ, সড়কপথ, বিমানপথ, জলপথ এবং অপটিক্যাল ফাইবারের ক্ষেত্রেও অভূতপূর্ব বিনিয়োগ হচ্ছে, কাজও হচ্ছে। এক্ষেত্রে আরও গতি আনার লক্ষ্যে আমরা এখন ‘পিএম গতি শক্তি’ নামক একটি সমন্বয়ধর্মী দৃষ্টিকোণ নিয়ে এগিয়ে চলেছি। এই দৃষ্টিকোণকে প্রযুক্তির মাধ্যমে নিরন্তর কিভাবে সাহায্য করা যায়, তা নিয়েও আমাদের চিন্তাভাবনা করতে হবে, সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আপনারা জানেন যে হাউজিং ক্ষেত্রে দেশে ছয়টি বড় বড় লাইটহাউজ প্রোজেক্টের কাজ করা হচ্ছে। গৃহ নির্মাণের ক্ষেত্রে আমরা নানা আধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগাচ্ছি। আমরা নতুন নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে এই প্রক্রিয়ার গতি আরও দ্রুত কী ভাবে করতে পারি, তার সম্প্রসারণ কী ভাবে করতে পারি, এক্ষেত্রেও আমাদের আপনাদের সকলের সহযোগিতা চাই, সক্রিয় অংশগ্রহণ ও অবদান চাই আর নানা উদ্ভাবক ভাবনাও চাই। আজ আমরা মেডিকেল সায়েন্সে নানা উদ্ভাবনের সুফল দেখতে পাচ্ছি। চিকিৎসা-বিজ্ঞানও আজ প্রায় প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রিত হয়ে উঠেছে। এখন অধিকাংশ চিকিৎসা সরঞ্জামের উৎপাদনও যাতে ভারতে হয়, আর ভারতের প্রয়োজনগুলি মাথায় রেখে উৎপাদন হয়, তা সুনিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে কিভাবে প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া যেতে পারে, সেদিকেও আমাদের সবাইকে মিলেমিশে লক্ষ্য রাখতে হবে। হয়তো আপনারা এক্ষেত্রে অনেক বেশি অবদান রাখতে পারবেন। আজ আপনারা দেখুন! একটি ক্ষেত্র যা অত্যন্ত দ্রুত বিকশিত হয়েছে সেটি হল, ‘গেমিং’। এখন সারা পৃথিবীতে ‘গেমিং’-এর অনেক বড় বাজার তৈরি হয়েছে। নবীন প্রজন্ম অত্যন্ত দ্রুত এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। এবারের বাজেটে আমরা ‘এভিজিসি’ – অর্থাৎ, অ্যানিমেশন, ভিস্যুয়াল এফেক্টস, গেমিং, কমিক্স-এর ওপর অত্যন্ত জোর দিয়েছি। এই লক্ষ্যেও যখন ভারতের তথ্যপ্রযুক্তির সমন্বয়ে বিশ্বে আমরা সম্মান অর্জন করেছি, তখন আমরা এরকম সুনির্দিষ্ট ক্ষেত্রে আমাদের শক্তিকে দৃঢ় সন্নিবেষ্টিত করতে পেরেছি। আপনারা কি নিজেদের উদ্যোগে এ ধরনের প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন? একইরকমভাবে আজ ভারতীয় খেলনারও অনেক বড় বাজার রয়েছে। আজ যারা শিশু, তারা খেলার সময় কোনও না কোনও প্রযুক্তি-নির্ভর খেলনা পছন্দ করে।
আমরা কি আমাদের দেশের শিশুদের ব্যবহারের অনুকূল প্রযুক্তি-নির্ভর খেলনা তৈরি করতে পারি, আর সেই খেলনাগুলিকে বিশ্বের বাজারে পৌঁছে দেওয়ার কথাও ভাবতে পারি? তেমনই, কমিউনিকেশন সেক্টরেও নতুন প্রযুক্তি আনার জন্য আমাদের সবাইকে নিজেদের প্রচেষ্টাকে আরও গতি প্রদানের প্রয়োজন রয়েছে। সার্ভার ভারতেই থাকতে হবে। বিদেশের ওপর নির্ভরতা যেন ন্যূনতম হয়, আর কমিউনিকেশনের ক্ষেত্রে নিরাপত্তার দৃষ্টিকোণটিকেও সাবধানতার সঙ্গে ভাবতে হবে, প্রয়োজনে নতুন নতুন বিষয় যুক্ত করতে হবে। আমাদের অত্যন্ত সচেতনভাবে এদিকে নিজেদের প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। ফিনটেক বা অর্থনৈতিক প্রযুক্তি ক্ষেত্রেও ভারত বিগত দিনগুলিতে অনেক উল্লেখযোগ্য সাফল্য পেয়েছে। সবাই স্বীকার করছে যে আমাদের দেশে এই ক্ষেত্রটি অত্যন্ত সুফলদায়ক। কিন্তু মোবাইল ফোন থেকেও অর্থনৈতিক গতিবিধি বাড়াতে যেভাবে আমাদের গ্রামগুলিও যুক্ত হচ্ছে, তা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। এর মানে হল, ফিনটেক-এর ক্ষেত্রেও যত বেশি সম্ভব আধুনিক প্রযুক্তির সমাবেশ করা যাবে, তত আমরা সুফল পাব। এটাই আজ আমাদের জন্য সময়ের চাহিদা আর এতে নিরাপত্তাও সুরক্ষিত থাকবে। ২০২০-র ফেব্রুয়ারি মাসে দেশ ‘জিও-স্পেশিয়াল ডেটা’ সম্পর্কিত পুরনো ভাবনাচিন্তা ও পদ্ধতি বদলে দিয়েছে। এর ফলে ‘জিও-স্পেশিয়াল’-এর জন্য অসীম নতুন নতুন সম্ভাবনা ও নতুন নতুন সুযোগ খুলেছে। আমাদের বেসরকারি ক্ষেত্রগুলিও এগুলি থেকে সম্পূর্ণ সুযোগ নিতে পারে।
বন্ধুগণ,
কোভিডের সময় আমাদের ‘সেলফ সাসটেনিবিলিটি’ থেকে শুরু করে টিকা উৎপাদন পর্যন্ত আমাদের নির্ভরযোগ্যতাকে সারা পৃথিবী দেখেছে। এই সাফল্যকে আমাদের প্রতিটি ক্ষেত্রে ‘রেপ্লিকেট’ করতে হবে, প্রতিবিম্বিত, প্রতিফলিত ও পুনরুৎপাদিত করতে হবে। এই ক্ষেত্রে আমাদের শিল্প জগতের, আপনাদের সকলের অনেক বড় দায়িত্ব রয়েছে। দেশে একটি ‘রোবাস্ট ডেটা সিকিউরিটি ফ্রেমওয়ার্ক’ বা বৃহৎ তথ্য নিরাপত্তা পরিকাঠামো গড়ে তোলার অত্যন্ত প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তথ্য থেকে যত বেশি সম্ভব উপকারসাধনের জন্য ‘ডেটা গভর্ন্যান্স’-এরও প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এক্ষেত্রে এর ‘স্ট্যান্ডার্ডস’ এবং ‘নর্মস’ও আমাদের নির্ধারণ করতে হবে। আমরা এই লক্ষ্যে কিভাবে এগিয়ে যাব, সেটা আপনারা সবাই মিলে একটি রোডম্যাপ তৈরি করতে পারেন।
বন্ধুগণ,
আজ ভারতের কাছে বিশ্বের তৃতীয় সর্ববৃহৎ এবং ‘ফাস্টেস্ট গ্রোয়িং স্টার্ট-আপ ইকো-সিস্টেম’ বা দ্রুত বর্ধনশীল স্টার্ট-আপ ব্যবস্থা রয়েছে। আমি আমাদের দেশের স্টার্ট-আপগুলিকে ভরসা দিতে চাই যে সরকার সমস্ত শক্তি নিয়ে তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছে। বাজেটে যুব সম্প্রদায়ের দক্ষতা উন্নয়ন; ‘স্কিলিং’, ‘রি-স্কিলিং’ এবং ‘আপ-স্কিলিং’-এর জন্যও স্বতন্ত্র পোর্টালের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। এগুলির মাধ্যমে যুব সম্প্রদায়কে ‘এপিআই-বেসড ট্রাস্টেড স্কিল ক্রেডেনশিয়ালস’, ‘পেমেন্ট’ এবং ‘ডিসকভারি লেয়ার্স’-এর মাধ্যমে সঠিক কর্মসংস্থান এবং সুযোগ দেওয়া সম্ভব হবে।
বন্ধুগণ,
দেশে উৎপাদন ক্ষেত্রকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা ১৪টি প্রধান ক্ষেত্রে ২ লক্ষ কোটি টাকার পিএলআই স্কিম শুরু করেছি। এই ওয়েবিনার থেকে এই লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার জন্য আমি কার্যকরী চিন্তাভাবনা ও উপদেশের প্রত্যাশা করি। আপনারা আমাদের ‘সিমলেস ইপ্লিমেন্টেশন’-এর পথ সম্পর্কে পরামর্শ দিন। ‘সিটিজেন সার্ভিসেস’ বা নাগরিক পরিষেবার জন্য আমরা কিভাবে অপটিক্যাল ফাইবারকে আরও বেশি করে ব্যবহার করতে পারি, সে সম্পর্কেও আপনাদের ইতিবাচক পরামর্শ চাই। আমাদের দূরদুরান্তের গ্রামগুলিতে বসবাসকারী ছাত্রছাত্রীরাও কিভাবে ভারতের ‘টপমোস্ট এডুকেশন সিস্টেম’-এর দ্বারা লাভবান হতে পারে, বাড়িতে বসে কিভাবে তারা নিজেদের শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি থেকে প্রশিক্ষিত করতে পারে, সে সম্পর্কেও আপনাদের ইতিবাচক পরামর্শ চাই। স্বাস্থ্য পরিষেবা কিভাবে আরও ভালোভাবে গ্রামে গ্রামে পৌঁছে দেওয়া যেতে পারে? কৃষিতে উদ্ভাবনকে সঙ্গী করে কৃষকরা, আমার ক্ষুদ্র কৃষক ভাই-বোনেরা কিভাবে বেশি উপকৃত হতে পারেন? যখন তাঁদের হাতে মোবাইল ফোন রয়েছে, তখন বিশ্বের সবকিছু তাদের হাতে পৌঁছে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমাদের এই সম্ভাবনাকে নিরন্তরভাবে সমস্ত পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত করে যেতে হবে। এরকমই আমি চাই! এর জন্য আমার আপনাদের মত সমস্ত গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছ থেকে ইতিবাচক ও উদ্ভাবক পরামর্শের প্রয়োজন।
বন্ধুগণ,
‘ই-ওয়েস্ট’-এর মতো প্রযুক্তি-সংশ্লিষ্ট যত প্রতিকূলতা বিশ্বের সামনে উপস্থিত হয়েছে, তার সমাধানও প্রযুক্তির মাধ্যমেই করতে হবে। আপনাদের সকলের প্রতি আমার বিশেষ অনুরোধ যে এই ওয়েবিনারে আপনারা ‘সার্কুলার ইকনমি’, ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং ইলেক্ট্রিক মোবিলিটির মতো সমাধানকেও গুরুত্ব দিন। দেশকে ইতিবাচক সমাধান খুঁজে দিন। আপনাদের ওপর আমার সম্পূর্ণ ভরসা আছে। আমার ভরসা আছে যে আপনাদের প্রচেষ্টার মাধ্যমে দেশ অবশ্যই তার লক্ষ্যে পৌঁছবে আর আমি আপনাদের প্রত্যেকের কাছে আরও একবার বলব যে এই ওয়েবিনার সরকারের পক্ষ থেকে আপনাদেরকে কোনও জ্ঞান বিতরণের জন্য আয়োজন করা হয়নি। এই ওয়েবিনারে আপনাদের থেকে সরকার নানা রকম ‘আইডিয়া’ বা ভাবনা-চিন্তার ফসল চাইছে। আপনাদের কাছ থেকে সরকার নতুন নতুন পদ্ধতি, প্রক্রিয়ার পরামর্শ চাইছে যাতে কাজে গতি বাড়ানো যায়। আমরা এক্ষেত্রে যে বিনিয়োগ করেছি, যে বাজেট বরাদ্দ করেছি, যা যা ভেবেছি, কত দ্রুত আমরা তা থেকে ফল পেতে পারি। প্রথম ত্রৈমাসিকেই কি আমরা কিছু করে দেখাতে পারি? সময় নির্ধারিত প্রোগ্রাম রচনা করতে পারি কি? আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আপনারা যখন ফিল্ডে রয়েছেন, আপনারা এই সমস্ত বিষয়ে সুক্ষ্মাতিসুক্ষ্মভাবে অবহিত। কোথায় কোথায় সমস্যা আপনারা জানেন। কী করলে সবচাইতে ভালোভাবে, দ্রুতগতিতে এই সমস্ত কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে, সে সম্পর্কেও আপনারাই জানেন। আমরা সবাই মিলেমিশে, কথা বলে এই কর্মযজ্ঞকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। আপনাদের সবাইকে আমি এই ওয়েবিনারের সাফল্যের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা জানাই।
ধন্যবাদ!