সর্দার প্যাটেল কেবল ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বই নন, প্রত্যেক দেশবাসীর হৃদয়ে তিনি বাস করেন
১৩০ কোটি ভারতীয়ের এই ভূমি আমাদের আত্মা, স্বপ্ন ও আশা-আকাঙ্খার অভিন্ন অঙ্গ
সর্দার প্যাটেল এক শক্তিশালী, সার্বিক, সহানুভূতিশীল ও সতর্ক ভারত গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন
সর্দার প্যাটেলের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ভারত অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সম্পূর্ণ সক্ষম হয়ে উঠছে
জল, আকাশ, ভূমি ও মহাকাশে দেশের সংকল্প ও সক্ষমতা অভাবনীয় এবং দেশ আত্মনির্ভরতার এক নতুন অভিযানের পথে এগিয়ে চলা শুরু করেছে
আজাদি কা অমৃত মহোৎসব উদযাপন কালে অভাবনীয় অগ্রগতি, কঠিন লক্ষ্য পূরণ এবং সর্দার সাহেবের স্বপ্নের ভারত গড়ে তোলার প্রকৃত সময়
সরকারের সঙ্গে মানুষের 'গতিশক্তিকে' যদি একত্রিত করা যায় তাহলে কোন কিছুই অসম্ভব নয়

নমস্কার!

‘রাষ্ট্রীয় একতা দিবস’ উপলক্ষে সমস্ত দেশবাসীকে আমার অনেক অনেক শুভকামনা! ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’-এর জন্য যিনি জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত সমর্পণ করেছেন, সেই দেশনায়ক সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলকে আজ দেশ তার শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করছে।

সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলজি শুধু ইতিহাসেই নন, আমাদের মতো অসংখ্য দেশবাসীর হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। আজ সারা দেশে একতার বার্তা নিয়ে এগিয়ে যাওয়া আমাদের প্রাণশক্তিতে পরিপূর্ণ বন্ধুরা সর্দার প্যাটেলজি প্রদর্শিত পথ অনুসরণ করে ভারতের অখণ্ডতার প্রতীক, ঐক্যের প্রতীক হয়ে উঠেছেন। এই ভাবনাকে আমরা দেশের নানা প্রান্তে আয়োজিত ‘রাষ্ট্রীয় একতা প্যারেড’-এ, স্ট্যাচু অফ ইউনিটিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানেও অত্যন্ত উৎসাহ ও উদ্দীপনার সঙ্গে প্রতিফলিত হতে দেখতে পাচ্ছি।

বন্ধুগণ,

ভারত নিছকই একটি ভৌগোলিক খণ্ড নয়; এটি অনেক আদর্শ, সঙ্কল্প, সভ্যতা ও সংস্কৃতির উদার মাপদণ্ডে স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি দেশ। পৃথিবীর যে ভূখণ্ডে আমরা ১৩০ কোটিরও বেশি ভারতবাসী বসবাস করি, সেই ভূখণ্ড আমাদের আস্থার, আমাদের স্বপ্নের, আমাদের আকাঙ্ক্ষার অখণ্ড অংশ। হাজার হাজার বছর ধরে ভারতের সমাজে বিভিন্ন ঐতিহ্যে গণতন্ত্রের যে শক্তিশালী ভিত্তি বিকশিত হয়েছে তা ‘এক ভারত’-এর ভাবনাকে সমৃদ্ধ করেছে। কিন্তু আমাদের এটাও মনে রাখতে হবে যে, নৌকায় বসে থাকা প্রত্যেক যাত্রীকে নৌকাটির রক্ষণাবেক্ষণের দিকেও খেয়াল রাখতে হয়। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি তবেই এগিয়ে যেতে পারব, দেশ তার নির্দিষ্ট লক্ষ্যগুলি তবেই বাস্তবায়িত করতে পারবে।

বন্ধুগণ,

সর্দার প্যাটেল সব সময়েই চাইতেন যে, ভারত যেন শক্তিশালী হয়, ভারত যেন ঐক্যবদ্ধও হয়। তিনি চাইতেন, ভারত যেন সংবেদনশীল হয়, আর ভারত যেন সতর্ক থাকে, বিনম্র থাকে, ভারত যেন উন্নয়নের পথেও এগিয়ে যায়। তিনি দেশহিতকে সর্বদাই সর্বোপরি রেখেছেন। আজ তাঁর প্রেরণায় ভারত অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক – সমস্ত ধরনের প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য সম্পূর্ণরূপে সক্ষম হয়ে উঠছে। বিগত সাত বছরে দেশ অনেক দশকের পুরনো অবাঞ্ছিত এবং কালবাহ্য আইনগুলি থেকে মুক্তি পেয়েছে,  জাতীয় ঐক্যের সংরক্ষণকারী আদর্শগুলিকে নতুন উচ্চতা প্রদান করেছে। জম্মু-কাশ্মীর থেকে শুরু করে উত্তর-পূর্ব ভারত কিংবা হিমালয়ের পাদদেশে বন্ধুর কোনও গ্রাম – আজ সর্বত্রই দেশের জনগণ আজ প্রগতির পথে এগিয়ে চলেছে। দেশে যত ধরনের আধুনিক পরিকাঠামো গড়ে উঠছে, সেগুলি সব দেশের সমস্ত ভৌগোলিক ও সাংস্কৃতিক দূরত্ব মেটানোর কাজ করছে। যদি দেশের মানুষকে এক অংশ থেকে অন্য অংশে যাওয়ার আগেই ১০০ বার ভাবতে হয় - তাহলে কেমন করে চলবে? যখন দেশের যে কোনও প্রান্তে পৌঁছনো সহজ হবে, তখনই এক প্রান্তের মানুষের সঙ্গে আর এক প্রান্তের মানুষের হৃদয়ের দূরত্ব কমবে, দেশের ঐক্য মজবুত হবে। এই ভাবনাকেই শক্তিশালী করার জন্য ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’ দর্শন নিয়ে আজ দেশে সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং সাংবিধানিক একতা বৃদ্ধির মহাযজ্ঞ চলছে। জল, স্থল, আকাশ এবং মহাকাশ – প্রত্যেক ক্ষেত্রেই ভারতের সামর্থ্য এবং সঙ্কল্প আজ অভূতপূর্ব। নিজেদের হিতের সুরক্ষার জন্য ভারত আত্মনির্ভরতার নতুন মিশন নিয়ে এগিয়ে চলেছে।

আর বন্ধুগণ,

এমন সময়ে আমাদের সর্দার প্যাটেল সাহেবের একটি কথা অবশ্যই মনে রাখতে হবে। তিনি বলেছিলেন, “সকলের মিলিত প্রয়াসে আমরা দেশকে একটি নতুন উচ্চতায়, নতুন মহত্বে পৌঁছে দিতে পারি আর একতার অভাবে আমরা নতুন বিপর্যয়ে মুখ থুবড়ে পড়তে পারি।” একতার অভাব যেখানে নতুন সঙ্কট বয়ে নিয়ে আসে, সকলের সামগ্রিক প্রচেষ্টায় তেমনই দেশ নতুন উচ্চতায় পৌঁছে যেতে পারে। স্বাধীন ভারত গঠনে সকলের প্রচেষ্টা তখন যতটা প্রাসঙ্গিক ছিল তার চাইতে আজ স্বাধীনতার এই অমৃতকালে তা অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠতে চলেছে। স্বাধীনতার এই অমৃতকাল উন্নয়নের অভূতপূর্ব গতি অর্জনের কাল, কঠিন লক্ষ্য পূরণের কাল। এই অমৃতকাল সর্দার সাহেবের স্বপ্নগুলি বাস্তবায়নের মাধ্যমে নতুন ভারত নির্মাণের কাল।

বন্ধুগণ,

সর্দার প্যাটেল সাহেব আমাদের দেশকে একটি শরীর রূপে দেখতেন। একটি জীবন্ত একক রূপে দেখতেন। সেজন্য তাঁর ‘এক ভারত’ উচ্চারণের মানে এটাও ছিল যেখানে প্রত্যেক দেশবাসীর জন্য সমান সুযোগ থাকবে, সমান স্বপ্ন দেখার অধিকার থাকবে। আজ থেকে অনেক দশক আগে সেই সময়েও তাঁদের আন্দোলনের শক্তি এটাই ছিল যে তাঁদের আন্দোলনে মহিলা-পুরুষ, সমাজের প্রত্যেক অংশ এবং প্রত্যেক ধর্মের মানুষদের সামগ্রিক প্রাণশক্তির সমাহার ঘটেছিল। সেজন্য আজ যখন আমরা ‘এক ভারত’-এর কথা বলি, তখন সেই ‘এক ভারত’-এর স্বরূপ কেমন হওয়া উচিৎ? সেই ‘এক ভারত’-এর স্বরূপ হওয়া উচিৎ - একটি এমন ভারত, যেখানে মহিলারা পুরুষদের সমান সুযোগ পাবেন! একটি এমন ভারত যেখানে দলিত, বঞ্চিত, আদিবাসী-বনবাসী, দেশের প্রত্যেক নাগরিক নিজেকে অন্যদের সমকক্ষ বলে অনুভব করবেন! একটি এমন ভারত যেখানে বাড়ি যে, বিদ্যুৎ, পানীয় জলের মতো পরিষেবাগুলির ক্ষেত্রে কোনও বৈষম্য থাকবে না, সর্বত্র সমান অধিকার থাকবে!

এটাই তো আজ সরকার করছে। এই লক্ষ্যেই তো প্রতিদিন নতুন লক্ষ্য নির্ধারণ করা হচ্ছে আর এসব কিছু হচ্ছে কারণ, আজ দেশের প্রতিটি সঙ্কল্পে ‘সবকা প্রয়াস’ যুক্ত হয়েছে।

বন্ধুগণ,

যখন ‘সবকা প্রয়াস’ বা সকলের প্রচেষ্টা সম্মিলিত হয়, তখন তা থেকে কেমন পরিণাম পাওয়া যায় তা আমরা করোনার বিরুদ্ধে দেশের লড়াইয়ে সাফল্যের মাধ্যমেও দেখেছি। নতুন নতুন কোভিড হাসপাতাল গড়ে তোলা থেকে শুরু করে ভেন্টিলেটরের যোগান, প্রয়োজনীয় ওষুধ উৎপাদন থেকে শুরু করে ১০০ কোটি টিকার ডোজ দিতে পারার পর্যায় অতিক্রম করা পর্যন্ত – এসব সাফল্য সকল ভারতবাসী, সমস্ত পর্যায়ের সরকার, সব ধরনের শিল্পোদ্যোগ অর্থাৎ, সকলের প্রচেষ্টাতেই সম্ভব হতে পেরেছে।

‘সব কা প্রয়াস’-এর এই ভাবনাকে দেশের উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত করতে এবং আত্মনির্ভর ভারত গঠনের মহাযজ্ঞের ভিত্তি করে  হবে। সম্প্রতি সমস্ত সরকারি বিভাগগুলির সম্মিলিত প্রচেষ্টায়, তাদের মিলিত শক্তি দিয়ে পিএম গতি শক্তি ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যান রূপে একটি কমন প্ল্যাটফর্মের অন্তর্ভুক্ত করা  হয়েছে। বিগত বছরগুলিতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনেক নতুন নতুন সংস্কার আনা হয়েছে। এগুলির সামগ্রিক পরিণাম হিসেবে ভারত আজ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য হয়ে উঠেছে।

ভাই ও বোনেরা,

সরকারের সঙ্গে যদি সমাজের গতি শক্তিও যুক্ত হয়, তাহলে বড় বড় সঙ্কল্পকেও বাস্তবায়িত করা কঠিন নয়। সবকিছু সম্ভব। আর এজন্য আজকের প্রয়োজন হল, যখনই আমরা কোনও কাজ করব তখন অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে এই কাজ আমাদের ব্যাপক জাতীয় ক্ষেত্রে কি প্রভাব ফেলবে। যেমন স্কুল-কলেজে পড়াশোনা করা নবীন বন্ধুরা একটি লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন যে তাঁরা কোন ক্ষেত্রে কী ধরনের নতুন উদ্ভাবন করতে পারেন। সাফল্য কিংবা অসাফল্য বড় কথা নয়, কিন্তু উদ্ভাবনের চেষ্টা করাই অনেক প্রয়োজনীয়। তেমনই আমরা যখন বাজারে কেনাকাটা করি তখন নিজেদের পছন্দ-অপছন্দের পাশাপাশি এটাও দেখা উচিৎ যে আমাদের কেনাকাটা আত্মনির্ভর ভারত অভিযানকে সহযোগিতা করছে নাকি এর ওপর প্রতিকূল প্রভাব ফেলছে। ভারতের শিল্পোদ্যোগগুলিও বিদেশি কাঁচামাল কিংবা উপাদানগুলির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে দেশীয় কাঁচামাল ও উপাদান বেশি বেশি ব্যবহার করার লক্ষ্য নির্ধারণ করতে পারে। আমাদের কৃষকরাও দেশের প্রয়োজন অনুসারে নতুন নতুন শস্যের চাষ এবং নতুন পদ্ধতি অনুসরণ করে আত্মনির্ভর ভারতে তাঁদের অংশীদারিত্ব মজবুত করতে পারেন। আমাদের সমবায় সংস্থাগুলিও দেশের ছোট ছোট কৃষকদের আরও শক্তিশালী করে তুলতে পারে। আমরা যত বেশি আমাদের ছোট কৃষকদের গুরুত্ব দেব, তাঁদের কল্যাণের উদ্দেশ্য নিয়ে এগিয়ে আসব, তত গ্রামের অত্যন্ত প্রান্তিক স্থানগুলি পর্যন্ত আমরা একটি নতুন বিশ্বাস জাগিয়ে তুলতে পারব, তত বেশি আমাদের এই লক্ষ্যপূরণ সম্ভব হবে।

বন্ধুগণ,

এই কথাগুলি খুবই সাধারণ কথা বলে মনে হতে পারে, কিন্তু এগুলির পরিণাম অত্যন্ত সুদূরপ্রসারী এবং অভূতপূর্ব হবে। বিগত বছরগুলিতে আমরা দেখেছি, যে কাজটিকে ছোট মনে করা হত – পরিচ্ছন্নতা, এই পরিচ্ছন্নতার মতো বিষয়কেও গণ-অংশীদারিত্বের মাধ্যমে কিভাবে দেশের শক্তিতে রূপান্তরিত করা সম্ভব হয়েছে! একজন সাধারণ নাগরিক রূপে যখন আমরা ‘এক ভারত’ গড়ে তোলার জন্য এগিয়ে আসব, তখন আমরা সাফল্যও পাবো এবং প্রত্যেকেই ভারতের শ্রেষ্ঠত্বে নিজেদের অবদান রাখতে পারব। আপনারা সবসময় মনে রাখবেন, ছোট ছোট কাজগুলিই মহান হয়ে উঠতে পারে যদি সেগুলির পেছনে সুন্দর ভাবনা থাকে। দেশের সেবা করার মধ্যে যে আনন্দ আছে, যে সুখ আছে, তার বর্ণনা কোনও শব্দ দিয়ে করা যায় না। দেশের অখণ্ডতা এবং একতার জন্য নিজেদের নাগরিক কর্তব্যগুলিকে সম্পাদনের মাধ্যমে আমাদের প্রতিটি প্রচেষ্টাই সর্দার প্যাটেলজির প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধাঞ্জলি হয়ে উঠবে। নিজেদের সাফল্য থেকে প্রেরণা নিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। দেশের একতা, দেশের শ্রেষ্ঠত্বকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিতে হবে। এই কামনা নিয়ে আপনাদের সবাইকে আরেকবার ‘রাষ্ট্রীয় একতা দিবস’ উপলক্ষে অনেক অনেক শুভকামনা জানাই।

ধন্যবাদ!

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
Income inequality declining with support from Govt initiatives: Report

Media Coverage

Income inequality declining with support from Govt initiatives: Report
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
Chairman and CEO of Microsoft, Satya Nadella meets Prime Minister, Shri Narendra Modi
January 06, 2025

Chairman and CEO of Microsoft, Satya Nadella met with Prime Minister, Shri Narendra Modi in New Delhi.

Shri Modi expressed his happiness to know about Microsoft's ambitious expansion and investment plans in India. Both have discussed various aspects of tech, innovation and AI in the meeting.

Responding to the X post of Satya Nadella about the meeting, Shri Modi said;

“It was indeed a delight to meet you, @satyanadella! Glad to know about Microsoft's ambitious expansion and investment plans in India. It was also wonderful discussing various aspects of tech, innovation and AI in our meeting.”