নমস্কার!
খুলুমখা!
ত্রিপুরার পূর্ণ রাজ্য স্বীকৃতির ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সমস্ত ত্রিপুরাবাসীকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা। ত্রিপুরাকে পূর্ণ রাজ্য হিসেবে গড়ে তোলা এবং এর উন্নয়নের জন্য যে মহাপুরুষদের অবদান রয়েছে, তাঁদের সবাইকে সাদর অভিনন্দন জানাই। তাঁদের প্রচেষ্টাকে প্রণাম জানাই।
ত্রিপুরার ইতিহাস সর্বদাই গৌরবপূর্ণ ছিল, গরিমাময় ছিল। মানিক্য বংশের সম্রাটদের প্রতাপ থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত একটি রাজ্য রূপে ত্রিপুরা তার ভূমিকাকে মজবুত করেছে। ত্রিপুরার জনজাতীয় সমাজ থেকে শুরু করে অন্যান্য সমাজের সদস্যরা সকলেই ত্রিপুরার উন্নয়নের জন্য অনেক পরিশ্রম করেছেন, ঐক্যবদ্ধভাবে অনেক চেষ্টা করেছেন। মা ত্রিপুরা সুন্দরীর আশীর্বাদে ত্রিপুরাবাসী প্রত্যেক প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে হিম্মত নিয়ে মোকাবিলা করেছে।
ত্রিপুরা আজ উন্নয়নের যে নতুন দিগন্তে পৌঁছেছে, নতুন লক্ষ্যের দিকে যেভাবে এগিয়ে চলেছে, এতে ত্রিপুরার জনগণের ভাবনাচিন্তায় পরিপক্কতার অনেক বড় অবদান রয়েছে। সার্থক পরিবর্তনের তিন বছর এই পরিপক্কতার প্রমাণ। আজ ত্রিপুরা অনেক সুযোগ সৃষ্টির রাজ্য হয়ে উঠেছে। আজ ত্রিপুরার সাধারণ মানুষের ছোট ছোট প্রয়োজন মেটাতে ডবল ইঞ্জিনের সরকার প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছে। সেজন্য উন্নয়নের অনেক ক্ষেত্রে ত্রিপুরা আজ খুব ভালো ফল দেখাচ্ছে। আজ যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমের বড় বড় পরিকাঠামো গড়ে তোলার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে এখন এই রাজ্য ‘ট্রেড করিডর’-এর হাব হয়ে উঠছে। এত দশক ধরে ত্রিপুরাবাসীর জন্য অবশিষ্ট ভারতের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার একমাত্র উপায় ছিল সড়কপথ। বর্ষার সময় যখন ধ্বস নেমে সড়কপথ বন্ধ হয়ে যেত তখন ত্রিপুরা সহ গোটা উত্তর-পূর্ব ভারতে প্রয়োজনীয় পণ্যের অভাব সর্বস্তরে অনুভূত হত। আজ সড়কপথের পাশাপাশি রেল, বিমান এবং ইনল্যান্ড ওয়াটারওয়ের মতো অনেক মাধ্যম ত্রিপুরা পাচ্ছে। পূর্ণ রাজ্য হিসেবে গড়ে ওঠার পর অনেক বছর ধরে ত্রিপুরা বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করার দাবি জানিয়ে আসছিল। ডবল ইঞ্জিনের সরকার এই দাবি পূরণ করেছে। যখন ২০২০-তে আখাউড়া ইন্টিগ্রেটেড চেক পোস্টে বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রথম ট্র্যানজিট কার্গো পৌঁছেছে, সেদিন রাজ্যবাসীর আনন্দের সীমা ছিল না। রেল যোগাযোগের ক্ষেত্রে ত্রিপুরা দেশের অগ্রণী রাজ্যগুলির মধ্যে অন্যতম হয়ে উঠছে। কিছুদিন আগে মহারাজা বীর বিক্রম এয়ারপোর্টেরও সম্প্রসারণ করা হয়েছে।
বন্ধুগণ,
আজ একদিকে ত্রিপুরা গরীবদের পাকা বাড়ি গড়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রশংসনীয় কাজ করছে, অন্যদিকে নতুন প্রযুক্তিকেও দ্রুতগতিতে স্থাপন করে নিচ্ছে। হাউজিং কনস্ট্রাকশনের ক্ষেত্রে নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার দেশের যে ছয়টি রাজ্যে হচ্ছে তার মধ্যে ত্রিপুরা অন্যতম। তিন বছরে ত্রিপুরায় যা কিছু হয়েছে তাকে সামান্য সূত্রপাতই বলা যেতে পারে। ত্রিপুরার আসল সামর্থ্যের মোকাবিলা, সেই সামর্থ্যকে সম্পূর্ণ শক্তি দিয়ে প্রকট করে তোলা, সেই সামর্থ্যকে সামনে তুলে ধরা এখনও বাকি রয়েছে।
প্রশাসনের স্বচ্ছতা থেকে শুরু করে আধুনিক পরিকাঠামো নির্মাণ পর্যন্ত আজ যে ত্রিপুরা গড়ে উঠছে, তা আগামী দশকগুলির জন্য রাজ্যকে গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। বিপ্লব দেবজি এবং তাঁর টিম অনেক পরিশ্রম করছেন। সম্প্রতি ত্রিপুরা রাজ্য সরকার প্রত্যেক গ্রামে অনেক অনেক সুবিধা ১০০ শতাংশ পৌঁছে দেওয়ার অভিযান শুরু করেছে। সরকারের এই প্রচেষ্টা ত্রিপুরার জনগণের জীবনকে সহজ করে তোলার ক্ষেত্রে অনেক সাহায্য করবে। যখন ভারত তার স্বাধীনতার ১০০ বছর পূরণ করবে, তখন ত্রিপুরা পূর্ণ রাজ্য হিসেবে স্বীকৃতির ৭৫ বর্ষ পূর্তি পালন করবে। সেজন্য এটাই নতুন নতুন সঙ্কল্পের জন্য, নতুন নতুন সুযোগ সৃষ্টির জন্য অনেক ভালো সময়। আমাদের নিজেদের কর্তব্যগুলিকে পালনের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে হবে। আমরা সবাই মিলেমিশে উন্নয়নের গতিকে অব্যাহত রাখব এই বিশ্বাস নিয়ে আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক শুভকামনা।
ধন্যবাদ!