নমস্কার!
রাজ্য প্রতিষ্ঠার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানে সমস্ত মেঘালয়বাসীকে অভিনন্দন। মেঘালয় রাজ্য প্রতিষ্ঠা ও বিকাশে যাঁরা অবদান রেখেছেন আজ আমি তাঁদের প্রশংসা জানাই। এখন থেকে ৫০ বছর আগে মেঘালয় রাজ্য প্রতিষ্ঠার জন্য যাঁরা জোরালো সমর্থন জানিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ আজ এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত রয়েছেন। আমি তাঁদেরকেও বিনম্র প্রণাম জানাই!
বন্ধুগণ,
একাধিকবার মেঘালয় সফরের সৌভাগ্য আমার হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সেবা করার দায়িত্ব যখন আপনারা দিয়েছিলেন, তখন আমি প্রথমবার উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদের বৈঠকে যোগ দিতে শিলং-এ এসেছিলাম। ৩-৪ দশক পর শিলং-এ পরিষদের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা এখনও অমলিন। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, গত ৫০ বছরে মেঘালয়বাসী প্রকৃতির সঙ্গে নিজেদের পরিচয় আরও নিবিড় করেছেন। মেঘালয় প্রকৃতির বিভিন্ন রূপে ভরপুর শোভা, ঝর্ণা, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা এবং অপরূপ পরিবেশের সঙ্গে নিজেদের অনন্য ঐতিহ্যের যোগসূত্র গড়ে তুলে দেশে ও বিদেশে অত্যন্ত আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে।
এই মেঘালয় রাজ্যটি প্রকৃতি ও অগ্রগতি, সংরক্ষণ ও বাস্তুতন্ত্রের বিশিষ্ট্য ধরে রাখতে বিশ্বের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছে। খাসী, গারো এবং জয়ন্তিয়া সম্প্রদায়ের আমাদের ভাই বোনেরা প্রকৃতি ও পরিবেশের সংরক্ষণে নিঃসন্দেহে কৃতিত্বের অধিকারী। এই সম্প্রদায়ের মানুষ প্রকৃতির সঙ্গে জীবনের সম্প্রীতি বজায় রাখতে উৎসাহিত করেছেন, সেই সঙ্গে শিল্প ও সঙ্গীতের ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রেখেছেন। হুইসিলিং গ্রামের ঐতিহ্য প্রকৃতির সঙ্গে আমাদের চিরন্তন নিবিড় সম্পর্ককে তুলে ধরে। মেঘালয়ের প্রতিটি গ্রামেই নিজস্ব সমৃদ্ধ পরম্পরা রয়েছে।
প্রতিভাবান শিল্পীদের নিয়ে সমৃদ্ধ মেঘালয় রাজ্যের শিলং চেম্বার কঁয়্যার এই ঐতিহ্যকে এক নতুন পরিচিতি দিয়ে উচ্চতার শিখরে পৌঁছে দিয়েছে। শিল্পের পাশাপাশি রাজ্যের যুব সম্প্রদায়ের প্রতিভা দেশকে ক্রীড়া ক্ষেত্রেও গর্বিত করেছে। দেশ যখন ক্রীড়া ক্ষেত্রে মহাশক্তিধর হয়ে উঠতে চলেছে, তখন এই রাজ্যের সমৃদ্ধ ক্রীড়া সংস্কৃতি থেকে আমাদের অনেক প্রত্যাশা রয়েছে। রাজ্যের বোনেরা একদিকে যখন বাঁশ ও বেত শিল্পের পুনরুজ্জীবন ঘটাচ্ছেন, তখন কঠোর পরিশ্রমী কৃষকরা জৈব কৃষি কাজে মেঘালয়কে সতন্ত্র পরিচিতি দিচ্ছেন। এই রাজ্যের গোল্ডেন স্পাইস এবং লাকাডং হলুদের চাষ এখন সারা বিশ্বে অত্যন্ত জনপ্রিয়।
বন্ধুগণ,
কেন্দ্রীয় সরকার গত সাত বছরে মেঘালয়ের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে আন্তরিক প্রয়াস নিয়েছে। এই রাজ্যে সড়ক, রেল ও বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করতে কেন্দ্রীয় সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। দেশে ও বিদেশে স্থানীয় কৃষিজ পণ্য সামগ্রির আরও ভালো বিপণনে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী কনরড সাংমার সুদক্ষ নেতৃত্বে সমস্ত কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সুযোগ সুবিধা যাতে আরও দ্রুত মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়, তা সুনিশ্চিত করা হচ্ছে। এই রাজ্যটি প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনা এবং জাতীয় জীবন-জীবিকা মিশন থেকে অত্যন্ত উপকৃত হয়েছে। জলজীবন মিশন কর্মসূচি চালু হওয়ার ফলে এই রাজ্যে পাইপবাহিত জল সংযোগের পরিধি বেড়ে ৩৩ শতাংশ হয়েছে। ২০১৯ পর্যন্ত গত তিন বছরে এই রাজ্যে কেবলমাত্র এক শতাংশ পরিবারে পাইপবাহিত জল সংযোগের সুবিধা ছিল। দেশ যখন ব্যাপকভাবে সরকারি সুযোগ সুবিধা পৌঁছে দিতে ড্রোন প্রযুক্তি কাজে লাগাচ্ছে, তখন এই প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে করোনা টিকা সরবরাহে মেঘালয় দেশের প্রথম রাজ্য হয়ে ওঠে। আর এটাই পরিবর্তিত মেঘালয়ের প্রকৃত চিত্র।
ভাই ও বোনেরা,
মেঘালয় অনেক সাফল্য পেয়েছে, তবে এখনও অনেক কিছুই করা বাকি রয়েছে। পর্যটন ও জৈব পদ্ধতিতে কৃষি কাজের পাশাপাশি রাজ্যে নতুন নতুন ক্ষেত্রের বিকাশে পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আপনাদের সমস্ত প্রয়াসে আমি পাশে রয়েছি। আপনারা যে লক্ষ্য স্থির করেছেন, তা পূরণে আমরা একযোগে কাজ করব। আপনাদের সকলকে শুভেচ্ছা জানাই।
ধন্যবাদ, খুবলেই শিবুন, মিথলা,
জয় হিন্দ!